দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলো সেই কোন ছোট বেলায়,
পেটের দায়ে এই রাস্তা তৈরির কাজে লেগেছে মহিলাটি।
মাঝে মধ্যে চা খেত আর কাগজ পড়ত।
মহিলাটির কাগজ পড়া একদিন কন্ট্রাক্টটর বাবুর চোখে পড়ল-অন্যদের থেকে একটু আলাদা ধীর স্থির কাজ করে মন দিয়ে ফাঁকি নেই ওর কাজে।
কন্ট্রাক্টটর বাবু ডেকে বললো মনে হয় তুমি পড়াশোনা কিছু হলেও করেছো? মহিলা একটু হেঁসে মাথা নেড়ে বললো আর পড়াশোনা, পারলাম কই করতে সেও এক উপন্যাস।
তার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম অনেক কবি সাহিত্যিকের কথা এবং অনেক জ্ঞানের কথাও, কন্ট্রাক্টর বাবু শুনে আশ্চর্য হলো।
যত কথা বলে তত চিনতে পারে আর মনে মনে ভাবেন এতো প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও এই কাজ করে গুণ আছে বলতে হবে। বাবু বললো
ওনাদের উপন্যাস এখন পড় না?
-আগে পড়তাম বাবু লাইব্রেরীতে গিয়ে, এখন খাবার আর সময় সবকিছুর সঙ্গে চলে লড়াই কি পড়বো বাবু।
একটু কষ্টের হাসি হেসে বললো, বাবু আমি নিচু ঘরের মানুষ পেটে ভাত নেই, ভাবছি পড়ে কি হবে- পেট তো ভরাবে না।
আমিই তো জলজ্যান্ত উপন্যাস-আর কি পড়বো, বরং আপনি আমায় নিয়ে কিছু লিখুন।
একবার যদি লিখতে শুরু করেন বাবু আমার উপন্যাস কোনদিন শেষ করতে পারবেন না।
লিখতে লিখতে অধৈর্য হয়ে পড়বেন কেনো না প্রতিদিনই আমার নতুন বাস্তব উপন্যাস জন্ম নিচ্ছে।
বাসি উপন্যাস পড়লে বাস্তবের তাজা উপন্যাসের কথা জানতে পারবেন না বাবু, বড্ড কঠিন আমার বাস্তব।
যদি পারেন আমার উপন্যাসের একটা বই ছাপা করুন লিখে,
একটু মৃদু হেসে চোখের কোলে জল মুছতে মুছতে রোজের মত কাজ সুরু করলো মহিলা।