এক বর্ষার বিকেলে হঠাৎ প্রচন্ড ঝড় উঠলো,ধুলো উড়ছে, লোকজন ছুটছে, কালপুরষ ও ছুটতে ছুটতে এসে আশ্রয় নিলো এক বাড়ির বারান্দায়।
নির্জন এই গলির আসপাশ সব বাড়ির জানলা দরজা বন্ধ। ঘন ঘন মেঘ ডাকছে, বজ্রপাত হচ্ছে,
জ্বলসে উঠছে আলো, আকাশে আঁকাবাঁকা বিদ্যুতের নীল রেখা টানছে মশালের মতো।
মূলধারায় বৃষ্টি নামলো,বৃষ্টির ঝাপটায় কালপুরষ ভিজে যাচ্ছে,বৃষ্টির জলে একেবারে নেয়ে ঠান্ডায় থর থর করে কাঁপছে।
ভীষণ অসহায় সে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,বৃষ্টিতে কোথাও যেতে পারছে না,কালপুরুষ ডাক দিলো শুনছেন- অনেক বার ডাকার পর নারীর সুমিষ্ট কন্ঠ ভেসে এলো কানে।
ডাক শুনে খোলা জানালার দিকে তাকালো কালপুরুষ
এক সুন্দর অপরূপ নারী চোখে পড়ল তার।
প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল, ভাবল, এই আমি
কাকে দেখছি এ তো অরুন্ধতী, এটা তোমার বাড়ি?
হ্যাঁ আমার বাড়ি,
ভাবতেই পারছি না তোমার সাথে দেখা হবে,কেমন দেখো আকস্মিক ভাবে সব ঘটে গেলো।
অরুন্ধতী’ তোমার চোখ রহস্যময় একটুও বদলাওনি তুমি আগের মতই দেখছি তোমার চোখ বিদ্যুত হানে মৃদু হেসে অরুন্ধতী বললো তুমি তো বৃদ্ধ হয়েগিছো সেও মৃদু হেসে বললো বয়স বাড়াছে বৃদ্ধ তো হবই।
তুমি ছাড়া আর এখানে কে আছে?
কোন উত্তর দিলো না অরুন্ধতী মাথা নিচু করে আছে
দু’চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছে।
অনেকক্ষণ বাদে উত্তর দিলো সেই কলেজ লাইফের কথা তোমার মনে আছে? মনে নেই আবার খুব আছে।
তুমি মেরুদণ্ডহীন পুরুষ তা না হলে সেই রাতে তোমার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলো তোমার মা,কিছু বলতে ও করতে পারলে না।
ভাইয়েরা সব আলাদা হলো, আমার এই অবস্থা মা সহ্য করতে পারেনি স্টোকে আগে মা মারা গেলো বাবা নয় মাস পর সহ্য করতে পারেননি মায়ের মৃত্যু
কিছু টাকা আর এই বাড়িটা রেখে গেছেন ভারা আছে নিচের ঘর গুলো চলছে একা মানুষ আর কি।
দরজা খুলে দিলো বললো ভেতরে এসো-
ফ্রেশ হও খাওয়াদাওয়া করে যাবে,তুমি তাড়িয়ে দিয়েছো বলে তো আমি তা করতে পারি না।
এভাবে বলছো?হ্যাঁ বলছি আজ তোমার জন্য আমার সব হারিগেছে। আচ্ছা বলতো তুমি বিয়ে করছো?
না গো করিনি,কেনো?কি করে করবো তোমাকে ভুলতে পারিনি।এখন কি এক হতে পারি আমরা?
তা আর সম্ভব না নতুন করে যন্ত্রণার জন্ম দিতে চাই না
আমি বেশ আছি। তুমি আর এসো না,
তাহলে যে যন্ত্রণার উপদ্রব আরো বাড়বে।
ভীষণ কষ্ট করে যন্ত্রণা সেলাই করেছি ফোঁড় গুলো খুলে যাবে,এই বয়সে সুচের ফোঁড় সহ্য করতে পারবো না।