Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

জেনে নেবো আজকের দিনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস, আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস ও বাবা দিবস সম্পর্কে কিছু কথা।

জেনে নেবো আজকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস ও ফাদার্স ডে সম্পর্কে কিছু কথা।

 

 

শুভ বাবা  দিবস—

 

দুনিয়ার সব কিছু বদলে গেলেও, বাবার ভালোবাসা কখনও বদলায় না। বাবা মানে শত শাসন সত্বেও এক নিবিড় ভালবাসা।

প্রতি বছর, বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘পিতৃ দিবস’ বা ‘ফাদার্স ডে’ (Father’s Day)। পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন সময়ে এই দিন উদযাপন হলেও, জুন মাসের তৃতীয় রবিবার ভারতে পালিত হয়  ‘ফাদার্স ডে’। এই বছর এই বিশেষ দিনটি পড়েছে ১৮ জুন।

 

কয়েকটি শব্দে বাবাদের (Fathers) সংজ্ঞা দেওয়া মুশকিল। বাবা এমন একজন যিনি সারা জীবন নিজের পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে যান…নিজের সব খুশি অবধি বিসর্জন দিয়ে দেন ইনি।পৃথিবীতে সবাই তোমাকে ভালবাসবে, সেই ভালোবাসা মাঝে যে কোনো প্রয়োজন লুকিয়েথাকে। কিন্তু একজন ব্যক্তি কোনো প্রয়োজন ছাড়াই তোমাকে ভালো বাসবে সে হলো বাবা ।  বলা চলে নিখাদ ভালবাসা এবং স্নেহের সঠিক সংজ্ঞা বাবা (Baba)। ভিন্ন ভাষা ও সমাজে ডাকা হয় আলাদা নামে। কিন্তু প্রায় সব বাবারাই তাদের সন্তানের কাছে বটবৃক্ষসম। হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা।

এই দিনে আমরা সেই মানুষটিকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও সন্মান জানাই যে মানুষটি কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই ছোট বেলায় আমাদের হাঁটতে শেখায় ও প্রপ্তবয়সে আমাদের পথ চলতে শেখায়। পিতারা আমাদের জীবনে বিশেষ মানুষ। একজন বাবা তার ছেলের প্রথম নায়ক এবং তার মেয়ের প্রথম প্রেম।

 

 

আন্তর্জাতিক পিকনিক দিবস—

 

আজ আন্তর্জাতিক বনভোজন দিবস। প্রতি বছর  ১৮ জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক পিকনিক ডে বা বনভোজন দিবস। আই পিকনিক শব্দটি এসেছে ফরাসি শব্দ ‘pique-nique’ থেকে। ইতিহাস ঘটলে জানা যায় যে  ফ্রান্সে শুরুতে কিছু ব্যক্তি বাসা থেকে খাবার নিয়ে গিয়ে রাতে রেস্তোরাঁয় বসে খেতেন। সঙ্গে নিতেন ওয়াইন। সেই থেকেই পিকনিক শব্দটি মানুষের সংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ে। এই বনভোজন এর পেছনে কিছু মানসিক শান্তির ভাবনা কাজ করে। এর পেছনে থাকে কিছু প্রাপ্তি যা আমাদের জীবনকে আনন্দ মুখর করে তোলে। বনভোজন এর উদ্দেশ্য হলো ভালো খাবার খাওয়া ও প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া। সেই সঙ্গে মনকে চাঙা করা।  এই বিষয়টিকে আরো জনপ্রিয় করতে প্রতিবছরই ১৮ জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক বনভোজন দিবস। তবে বনভোজন এর এই ব্যপার গুলো আজ কেবল একটি মাত্র দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। অনেকেই জটিল জীবনের এর কর্মব্যস্ততার মাঝে বেরিয়ে পরে সপরিবারে পিকনিক বা বনভোজনের উদ্যেস্যে। এই বিশেষ দিন গুলো মানুষের চলার পথে এক ঝলক দমকা ঠান্ডা বাতাসের মতন, যা জীবনী শক্তিকে যেমন বাড়িয়ে দেয় তেমনি পরিবারের মধ্যেও একটা মিষ্টি সম্পর্কের বাতাবরন আরো গভীর করে তোলে। তাই সময় সুযোগ পেলে সকলের ই উচিৎ এই একটি নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বনভোজনের আয়োজনে বেরিয়ে পরা।

 

উৎপত্তির ইতিহাস—

 

তবে, দিবসটি কবে থেকে শুরু হলো, কারা শুরু করল- সেটা জানা যায়নি। তবে কেউ কেউ মনে করেন, ফরাসিরাই এর উদ্যোক্তা। তবে বলা হয়, এর শুরুটা হয়েছে ফরাসি বিপ্লবের শেষের দিকের কোনো একটা সময়। অর্থাৎ, ১৭৯৯ সালের আশপাশে।
ফরাসি বিপ্লবের আগে বড় পার্কগুলোয় সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারত না। ফরাসি বিপ্লবের পর সাধারণ মানুষের জন্য প্রথমবারের মতো পার্কগুলো খুলে দেওয়া হয়। আর মানুষজন তখন পার্কে গিয়ে খানাপিনা করত, মজা করত। ‘পিকনিক’ শব্দের উৎপত্তিও কিন্তু ফরাসি ভাষা থেকে। কেউ কেউ মনে করেন পিকনিকের প্রচলনটি ভিক্টোরিয়ান যুগেরও হতে পারে। ভিক্টোরিয়ান যুগে পিকনিক খুব গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক International-Picnic-Day অনুষ্ঠান ছিল। তারা গৃহের বাইরে একসঙ্গে সময় কাটাত। ভালো খাওয়া-দাওয়া করত। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পিকনিকটি হয়েছিল ২০০৯ সালে পর্তুগালের লিসবনে। এতে ২২ হাজার মানুষের অংশগ্রহণ ছিল।

 

বনভোজনের সময়—

 

আমরা চাইলেই যে কোনো সময় পিকনিকে মেতে উঠতে পরি। তবে বিশেষ দিন গুলোতে এই আয়োজন হলে তার মজা বা আনন্দ টা আলাদা অনুভূত হয়। তবে, বনভোজনের সময় কিন্তু দুনিয়ার সব দেশে এক রকম নয়। শীতপ্রধান দেশে বনভোজন হয় গরমকালে। আর আমাদের দেশসহ নাতিশীতোষ্ণ দেশে শীতকালে। শীতপ্রধান দেশে জুন মাসটাই হচ্ছে বনভোজনের সবচেয়ে সুন্দর সময়। শীতের সময় তো ওদের দেশের বনজঙ্গল সব বরফে ঢাকা থাকে। তখন বনভোজন কোথায় হবে? সে কারণে ওরা গ্রীষ্মেই বনভোজনে যায়। বিশেষ করে জুন-জুলাই মাসে। সে কারণে ১৮ জুন ওরা বনভোজন দিবস হিসেবে পালন করে।  সেখানে তাদের কাছে এটা মজার হলিডে। একই ধরনের ছুটি হিসেবে প্রতিবছর আগস্ট মাসের প্রথম সোমবার ‘অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটরি’ পালিত হয়। এ অঞ্চলের পিকনিকের দিন সরকারি ছুটি হয়।

 

জায়গা—

 

বনভোজন মানে আনন্দ-উৎসব সহযোগে বনে কিংবা বাড়ির বাইরে ভোজন। সাধারণত মনোরম ও সুন্দরতম স্থানকেই বনভোজনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। পার্ক বা উদ্যান, হ্রদ কিংবা নদীর কিনারের মতো চিত্তাকর্ষক স্থানকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। নিজেদের পছন্দের জায়গা নির্বাচন করে নিয়ে আয়োজন করা হয়। সাধারণত

বনভোজন পরিবারের সদস্যদের ঘিরে হয়ে থাকে। তবে পরিবারের বাহিরে বন্ধু বান্ধব দের নিয়েও বনভোজনের আয়োজন করে থাকে অনেকেই। অন্যান্য ক্ষেত্রে দুজন ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এটি বড় ধরনের মিলনস্থলে রূপান্তরিত হয়। বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে এই আয়োজন বিশালাকারে পরিলক্ষিত হয়। সারাদিন ধরে ভূরি ভোজের মধ্য দিয়েই চলে গোটা দিন। সঙেথকে বিভিন্ন ধরনের ছোটো খাটো অনুস্ঠান, গান বাজ্না আরো কতোকি। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীদের নির্মল আনন্দ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। নির্দিষ্ট স্থানে রান্না আয়োজনের মধ্যবর্তী সময়কালে অথবা ভোজন পরবর্তী সময়ে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।  সাধারণত বনভোজনে যাত্রাকালীন কিংবা ফিরে আসার সময় আনন্দ, হাসি-তামাশা ইত্যাদি বিষয়াবলি থাকে। মোট কথা আমরা জানি যতো দিন যাচ্ছে মানুষের কর্ম ব্যাস্ততা বাড়ছে বই কমছে না। মাঝে মাঝে যদি এমন একটা নির্ভেজাল দিন কাটানো যায় তা হলে জীবনে যেমন আননদ মুখর হয়, তেমনি গোটা পরিবারের মধ্যেও সম্পর্ক আরো গভীর হয়ে ওঠে। তাই আমাদের জীবনে এই বিশেষ দিন গুলোর গুরুত্ব অবদান অনস্বীকার্য।

।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *