Categories
অনুগল্প নারী কথা প্রবন্ধ

ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব এবং মা সারদাদেবী সম্পর্কে কিছু কথা : রাণু সরকার।

ভারতের ৪২ সাধক এবং কিছু সাধিকা জীবদ্দশায় জীবন্মুক্ত। ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব এবং তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ মা সারদাদেবী উক্ত জীবন্মুক্ত মানুষদের মধ্যে অন্যতম। তাঁরা দুজন যথাক্রমে ভগবান্ ও ভগবতী, কারণ পরিপূর্ণ ঐশ্বর্য, পরিপূর্ণ ধর্ম, পরিপূর্ণ যশঃ, পরিপূর্ণ শ্রী, পরিপূর্ণ বৈরাগ্য এবং পরিপূর্ণ জ্ঞান — এই ৬ টি ‘ভগ’ নামে কথিত হয়, আর এই ৬টি ‘ভগ’ পরিপূর্ণরূপে তাঁদের দুজনের মধ্যে বিদ্যমান। তাঁরা দুজন ভিন্ন ভিন্ন শরীরে দৃশ্যমান হলেও এক এবং অদ্বিতীয় ঈশ্বর বটে কারণ তাঁরা স্বরূপতঃ রজোগুণ ও তমোগুণ দ্বারা অনভিভূত বিশুদ্ধসত্ত্বগুণপ্রধান সমষ্টি অজ্ঞান উপহিত চৈতন্য, বিশুদ্ধসত্ত্বগুণসম্পন্ন মায়াতে পতিত চৈতন্যের প্রতিবিম্ব ; অব্যক্ত, অন্তর্যামী, জগৎকারণ, সর্বজ্ঞ। তাঁরা দুজন সদ্গুরু অর্থাৎ শ্রোত্রীয় এবং ব্রহ্মনিষ্ঠ কারণ অস্তি নাস্তি এবং এতদুভয়ের পারে যে ব্রহ্ম অবস্থিত, তাঁকে তাঁরা দুজন উত্তমরূপে জানেন। তাঁদের সকল অবস্থিতি অর্থাৎ স্থানই পরম পবিত্র। অষ্টসিদ্ধ ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব হলেন ব্রহ্মবিদ্বরিষ্ঠ, তিনি প্রত্যগাত্ম-জ্ঞানসহায়ে তিনগুণের পরিণামরূপ ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সর্ববিষয়ে তৃষ্ণারাহিত্যরূপ পরবৈরাগ্যবান্ পরমহংস সন্ন্যাসী। ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব মহামায়ার সন্তান। মহামায়া, যিনি মহাপ্রণব ॐকারের কলাবিভাগ বা ষট্চক্রাদি ভূমিজয়ক্রমের ১১শ কলা অর্থাৎ যথাক্রমে ব্রহ্মমূখী ও সৃষ্টিমূখী অর্থাৎ যথাক্রমে বিন্দু ও বিসর্গ অর্থাৎ যথাক্রমে উন্মনা ও সমনা যিনি দক্ষিণেশ্বরের মা দক্ষিণাকালিরূপে এবং তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ মা সারদাদেবীরূপে বিরাজমান। ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেবের ভাব হল মাতৃভাব, এই মাতৃভাব সাধনের শেষ কথা হল, “তুমি মা, আমি তোমার সন্তান।” ব্যবহারিক শব্দে আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বলা যায় যে ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব হলেন ব্রহ্ম এবং তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ মা সারদাদেবী হলেন শক্তি, আবার এমনও বলা যায় যে ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণদেব এবং তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ মা সারদাদেবী দুজনই অনন্ত শক্তি যা অদ্বৈত অস্তিত্ব অর্থাৎ স্বরূপতঃ ব্রহ্ম। শাস্ত্র বলেন, “ব্রহ্ম ও শক্তি অভিন্ন।”_

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *