আজ ‘বিশ্ব টয়লেট দিবস’। প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর তারিখটি বিশ্ব টয়লেট দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শতভাগ টয়লেট সুবিধা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করে থাকে।উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিশ্বে টয়লেট ব্যবহার ও স্যানিটাইজেশন সম্পর্কে ক্যাম্পেইন শুরু করে ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশন।
বিশ্ব শৌচাগার দিবস বা বিশ্ব টয়লেট দিবস হল প্রতিবছর ১৯ নভেম্বরে পালিত জাতিসংঘের একটি আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক দিবস, যা বিশ্বব্যাপী পয়ঃনিষ্কাশন সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুপ্রেরণা যোগায়। সারা বিশ্বে ৪.২ বিলিয়ন মানুষ “নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন” ছাড়াই বাস করে এবং প্রায় ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ এর অন্যতম লক্ষ্য “সবার জন্য জল ও পয়ঃনিষ্কাশনের উপলব্ধতা এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা”।বিশেষ করে, লক্ষ্য ৬.২ “খোলা জায়গায় শৌচকর্ম বিলোপ করা ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধি রপ্ত করা”। যখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য প্রতিবেদন ২০২০ প্রকাশিত হয়, তখন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “আজ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ অত্যন্ত শোচনীয়” এবং এটি “২০৩০ সালের এজেন্ডা, মানবাধিকার উপলব্ধি এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে”।
বিশ্ব শৌচালয় দিবস মানুষকে এই লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্য পদক্ষেপ নিতে অবহিত, জড়িত এবং অনুপ্রাণিত করার জন্য কাজ করে। সিঙ্গাপুর প্রস্তাবটি উপস্থাপন করার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১৩ সালে বিশ্ব শৌচালয় দিবসকে জাতিসংঘের একটি দাপ্রিক দিন হিসেবে ঘোষণা করে (১৯৩ টি সদস্য রাষ্ট্রের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সামনে এর প্রথম প্রস্তাব)। এর আগে, ২০০১ সালে বিশ্ব শৌচালয় সংস্থা (সিঙ্গাপুর ভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থা) অনানুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব শৌচালয় দিবস প্রতিষ্ঠা করেছিল।
সারা বিশ্বে ৪.২ বিলিয়ন মানুষ “নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন” ছাড়াই বাস করে এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করে। খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করা বিশেষভাবে নারী এবং মেয়েদের পক্ষে কঠিন। নারীরা অধিক গোপনীয়তার জন্য অন্ধকারকে বেছে নেয়, কিন্তু তারপরেও রাতে একা থাকলে আক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।
এটা অনুমান করা হয় যে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী ডায়রিয়া সংক্রমণের মোট ঘটনার ৫৮% অনিরাপদ পানি, দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন এবং দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের (যেমন অপর্যাপ্ত হাত ধোয়া) কারণে হয়েছিল। এর ফলে পাঁচ বছরের কম বয়সী অর্ধ মিলিয়ন শিশু প্রতি বছর ডায়রিয়াতে মারা যায়। পয়ঃনিষ্কাশন প্রদানের ফলে ডায়রিয়াতে আক্রান্ত শিশুদের সম্ভাবনা ৭-১৭% এবং পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুর হার ৫-২০% হ্রাস পেয়েছে বলে অনুমান করা হয়।
২৮ জুলাই ২০১০ তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পয়ঃনিষ্কাশন (শৌচালয়) সুবিধার অভাব জনস্বাস্থ্য, সম্ভ্রম এবং সুরক্ষার উপর প্রভাব ফেলে। মাটিবাহিত হেলমিনথিয়াসিস, ডায়রিয়া, শিস্টোসোমিয়াসিস এবং শিশুদের অস্বাভাবিক স্বল্পবৃদ্ধিসহ বহুবিধ রোগের কারণ ও বিস্তারের সঙ্গে শৌচালয়ের অভাব অনেকাংশে সম্পর্কিত।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ এর লক্ষ্য হল সকলের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন বা স্যানিটেশন সরবরাহ করা।
।।সংগৃহীত: উইকিপিডিয়া।।