আজ ১৯ নভেম্বরআন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস । দিনটি আমাদের সমাজের প্রতি পুরুষদের এই দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পুরুষদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও এই দিনটি পালন করা হয়। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও তাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক চাপ মোকাবেলা করতে হয়। অফিসে কাজের চাপ ছাড়াও বাড়ির নানা দায়িত্ব, সন্তানদের ভবিষ্যৎ, ঋণের বোঝা নিয়ে ভাবতে হয় তাদের। সারাদিন এত চাপ সত্ত্বেও তারা হাসতে থাকে। পরিবারের অন্যদের খুশি রাখুন। আমাদের চারপাশে এমন পুরুষরাই প্রকৃত পুরুষ। তারাও আমাদের রোল মডেল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মতো গোটা বিশ্বে জায়গা করে নিয়েছে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস (International Men’s Day)। সমাজে পুরুষের অবদান কতটা উল্লেখযোগ্য, তা স্মরণ করে প্রতি বছর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। গোটা বিশ্ব জুড়ে ১৯ নভেম্বর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। ১৯৯২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম পালিত হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। পরে পালটে যায় উদযাপনের দিন। তবে পুরুষ দিবস উদযাপনের দিনের বদল হলেও, শুরুর দিন থেকে এখনও পর্যন্ত প্রত্যেক বছর এই বিশেষ দিনটিকে পালন করা হয় সাড়ম্বরে। থমাস ওসস্টার প্রথম ১৯৯২ সালে পুরুষ দিবস পালন করেন। প্রথমে ৭ ফেব্রুয়ারি এই দিনটিকে পালন করা হলেও পরে ১৯ নভেম্বর তারিখে পালটে ফেলা হয় এই বিশেষ দিনের তারিখ।
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গ ভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবসটি উদ্যাপন করা হয়ে থাকে।
পুরুষ দিবস পালনের প্রস্তাব প্রথম করা হয় ১৯৯৪ সালে। তবে ইতিহাস বেশ পুরোনো। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে। এই দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে।
২০০২ সালে দিবসটির নামকরণ করা হয় ‘ডিফেন্ডার অফ দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’। রাশিয়া, ইউক্রেনসহ তখনকার সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এই দিবসটি পালন করা হতো। বলা যায়, নারী দিবসের অনুরূপভাবেই দিবসটি পালিত হয়। ষাটের দশক থেকেই পুরুষ দিবস পালনের জন্য লেখালেখি চলছে। ১৯৬৮ সালে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস নিজের লেখায় এ দিবসটি পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যদিও অনুষ্ঠানগুলো খুব একটা প্রচার পায়নি। অংশগ্রহণও ছিল কম। পরবর্তী সময়ে ১৯ নভেম্বর পুরো বিশ্বে পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসম্পাদনা
এই দিবসের উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছেঃ
পুরুষ ও বালকদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি;
নারী-পুরুষের লৈঙ্গিক সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ক প্রচারণা;
নারী-পুরুষের লৈঙ্গিক সাম্যতার প্রচার;
পুরুষদের মধ্যে ইতিবাচক আদর্শ চরিত্রের গুরুত্ব তুলে ধরা;
পুরুষ ও বালকদের নিয়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংস্কার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরী;
পুরুষ ও বালকদের অর্জন ও অবদানকে উদ্যাপন;
সমাজ, পরিবার, বিবাহ ও শিশু যত্নের ক্ষেত্রে পুরুষ ও বালকদের অবদানকে তুলে ধরা।
গোটা বিশ্বে (World) প্রায় ৭০টি দেশে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। ভারত (India), আমেরিকা (US), রাশিয়া, চিন (China), ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া সহ একাধিক দেশে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। সমাজে পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি স্পষ্ট করতেই এই বিশেষ দিনটিকে পালন করা হয়। একজন পুরুষ হিসেবে সমাজে তাঁর দায়িত্ব, কর্তব্য কতটা এবং তিনি কীভাবে পালন করবেন, তা বোঝাতেই এই দিনটিকে উদযাপন করা হয়।
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস মূলত ৬টি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে তৈরি। কর্মক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি সমাজ, সম্প্রদায়, পরিবার, বিবাহ, শিশু যত্ন এবং পরিবেশে পুরুষদের অবদান উদযাপিত হয় এদিন। এছাড়া, পুরুষের সামাজিক, মানসিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক সুস্থতার যত্ন নেওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচিত হয় এমনকি, নানা ক্ষেত্রে তাদের বৈষম্যের শিকার হওয়ার বিষয়ও তুলে ধরা হয় এদিন।
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস লিঙ্গ সমতার কথা বলে। তাছাড়া, একটি উন্নত ও নিরাপদ বিশ্ব তৈরির লক্ষ্যেও পালিত হয় দিনটি। পুরুষ দিবসের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো মৌলিক মানবিক মূল্যবোধ এবং পুরুষদের সচেতনতা প্রচার করা।
।।তথ্য সংগৃহীত: উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট।।