Categories
প্রবন্ধ

শুধু ফুটবল নয়, ক্লাবের হয়ে হকি স্টিক হাতেও মাঠে নেমেছেন চুনী গোস্বামী।

জন্ম:   বর্তমান বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে (১৫ জানুয়ারি, ১৯৩৮) চুনী গোস্বামী জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম সুবিমল গোস্বামী। চুনী গোস্বামী একজন বিখ্যাত বাঙালি ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি ভারতের জাতীয় দলেও খেলেছেন। ক্রিকেটার হিসেবেও তিনি সফল ছিলেন। বাংলা দলের হয়ে রনজি ট্রফি তে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে ফুটবল ও ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সুবিমল ওরফে চুনী।

 

ফুটবলে প্রবেশ: ফুটবল-কে ভালবেসে ১৯৪৬ সালে মোহনবাগান জুনিয়ার দলে যোগ দেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত জুনিয়র দলে খেলেন। ভারতীয় ফুটবলার বলাইদাস চট্টোপাধ্যায় ও বাঘা সোমকে কোচ হিসেবে পান তিনি।

 

 

ফুটবল জীবন: এরপর ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ অবধি মোহনবাগানের মূল দলে খেলেন। তিনি মূলত স্ট্রাইকার পজিসনে খেলতেন। তিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ অবধি মোহনবাগানের অধিনায়ক ছিলেন। এই সময়ে মোহনবাগান ডুরান্ড কাপ সহ বহু প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করেছিল।আজীবন মোহনবাগানকে ভালোবেসেই খেলে গেছেন তিনি, অন্য ক্লাব থেকে ডাক এলেও পা বাড়াননি।

 

১৯৫৬ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত ভারতীয় দলে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। চিনা অলিম্পিক দলের বিরুদ্ধে জাতীয় দলে অভিষেক হয় চুনীর। তার ফুটবল জীবনের সবথকে বড় কৃতিত্ব ভারতের অধিনায়ক হিসাবে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের সোনা জয়। ফাইনালে ভারত দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে পরাস্ত করেছিল।

 

 

এছাড়া তিনি অধিনায়ক হিসাবে তেল আভিভে এশিয়া কাপের রৌপ্য পদক জয় করেছিলেন। ৫০টি ম্যাচ খেলেন দেশের জার্সিতে। দেশের হয়ে অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস, এশিয়া কাপ ও মারডেকা কাপে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দুটি এশিয়া কাপ ও মারডেকা কাপে চুনী দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

 

কোচিং কেরিয়ার: ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ছিলেন চুনী।

 

 

সফল ক্রিকেটার: ফুটবল খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি ক্রিকেট খেলায় মনোনিবেশ করেন এবং রঞ্জি ট্রফিতে তিনি বাংলার অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৬২-৬৩ মরশুম থেকে ১৯৭২-৭৩ পর্যন্ত বাংলা ক্রিকেট দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। মূলত অল-রাউন্ডার ছিলেন। তিনি দুবার রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলেছিলেন। তিনি ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন এবং ডানহাতে মিডিয়াম পেস বল করতেন। তিনি ৪৬টি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ খেলে একটি সেঞ্চুরি সহ ১৫৯২ রান করেছিলেন। তিনি বল করে ৪৭টি উইকেটও নিয়েছিলেন।

 

অন্যান্য খেলা: শুধু ফুটবল নয়, ক্লাবের হয়ে হকি স্টিক হাতেও মাঠে নেমেছেন চুনী। সাউথ ক্লাবে টেনিস খেলতেন নিয়মিত। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি। সব খেলায় তিনি সমান দক্ষ ছিলেন।

 

 

পুরস্কার ও সম্মান: ১৯৬২ সালে এশিয়ার সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার জেতেন।১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে চুনী গোস্বামী অর্জুন পুরস্কার এবং ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি মোহনবাগান রত্ন পান। বাংলার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে জীবনকৃতি সম্মানে ভূষিত করে। ২০০৫ সালে কলকাতারা শেরিফ নিযুক্ত হন।

 

মৃত্যু: ৩০ এপ্রিল, ২০২০ সালে ৮২ বছর বয়েসে হৃদরোগাক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মারা যান চুনী গোস্বামী।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *