Categories
প্রবন্ধ

রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী। রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।  তিনি গোপন বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন।  ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল, সূর্য সেনের বিপ্লবী দলের একজন বেসামরিক ব্যক্তি হিসাবে ১৯৩০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বোমা প্রস্তুত করার সময় চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণে নেতা মারাত্মকভাবে আহত হন।  ১৯৩০ সালের ১২ জানুয়ারি, মাস্টারদারের নির্দেশে চাঁদপুর স্টেশনে ইন্সপেক্টর জেনারেল ক্রেগকে হত্যা করার সময় তিনি এবং কালী চক্রবর্তী তারিণী মুখার্জীকে হত্যা করেন।  তাকে ২২ মাইল দূরে ধরা পড়ে।

জন্ম—–

রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের জন্ম ১৬ জানুয়ারি, ১৯১০ সালে চট্টগ্রামের সারোয়াতলীতে। তার পিতার নাম দুর্গাকৃপা বিশ্বাস।

রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সান্নিধ্যে প্রীতিলতা—-

১৯৩০ সালে, টিজে ক্রেগ বাংলার পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসাবে নতুন দায়িত্ব নিয়ে চট্টগ্রাম সফর করেন।  মাস্টার রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ও কালীপদ চক্রবর্তীকে হত্যার জন্য মনোনীত করেন।  পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা ২ রা ডিসেম্বর ১৯৩০ তারিখে চাঁদপুর রেলস্টেশনে রিভলবার নিয়ে আক্রমণ করে কিন্তু ভুলবশত তারা মিস্টার ক্রেগের পরিবর্তে চাঁদপুরের এসডি ও তারিণী মুখার্জিকে হত্যা করে।  ওই দিনই পুলিশ বোমা ও রিভলবারসহ রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ও কালীপদ চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করে।  মনোরঞ্জন রায় এই বোমাগুলো কলকাতা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন।  তারিণী মুখোপাধ্যায় হত্যা মামলায় রামকৃষ্ণ বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড এবং কালীপদ চক্রবর্তীকে নির্বাসনে দেওয়া হয়েছিল।  আলিপুর জেলের ডেথ সেলে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকা রামকৃষ্ণকে দেখতে চট্টগ্রাম থেকে আসা স্বজনদের কারো পক্ষেই বেশি খরচ হওয়া সম্ভব হয়নি।  এই খবর শোনার পর মনোরঞ্জন রায় প্রীতিলতাকে চিঠি লিখে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেন।  মনোরঞ্জন রায়ের মা হিজলী জেলে ছেলের সাথে দেখা করতে গেলে গোপনে প্রীতিলতার হাতে লেখা চিঠি তুলে দেন।

গুনু পিসির পরামর্শে, প্রীতিলতা আলিপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষের কাছে “অমিতা দাস” ছদ্মনামে “চাচাতো ভাই” হিসাবে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে দেখা করার জন্য আবেদন করেছিলেন।  জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি প্রায় চল্লিশ বার রামকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করেন।  এই সাক্ষাত সম্পর্কে তিনি লিখেছেন “তাঁর (রামকৃষ্ণ বিশ্বাস) গম্ভীর চেহারা, খোলামেলা কথা, মৃত্যুকে অদম্য আলিঙ্গন, ঈশ্বরের প্রতি অটল ভক্তি, শিশুসুলভ সরলতা, মমতা এবং কৃতিত্বের তীব্র অনুভূতি আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।  আমি আগের চেয়ে দশগুণ বেশি সক্রিয় হয়েছি।  এই আত্মত্যাগী তরুণ দেশপ্রেমের সাথে যোগাযোগ আমার জীবনের পরিপূর্ণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।”  ১৯৩১ সালের ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণ বিশ্বাসকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এই ঘটনাটি প্রীতিলতার জীবনে এক আমূল পরিবর্তন আনে।

মৃত্যু—-

১৯৩১ সালের ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসী হয়।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *