Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত সংবাদ পাঠক আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আবৃত্তিকার তথা কিংবদন্তি বাচিক শিল্পী দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন আকাশবাণীর সংবাদ পাঠক, ঘোষক। আজও তিনি আমর হয়ে আছেন মানুষের মনে।

জন্ম——

 

দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে। পিতার নাম নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতা নীহারবালা।

 

শিক্ষা—–

 

স্কুলের পড়াশোনার পর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। কিন্তু সংসারের অর্থকষ্ট মেটাতে তিনি বন্ধ করেছিলেন পড়াশুনা।

কর্ম জীবন—

 

রোজগারের জন্য তখন যা পেতেন তাই করতেন। কখনো গৃহশিক্ষকতা, টাইপিস্ট, স্টোরকিপার এবং চায়ের দোকানেও কাজ করতে হয়েছে অর্থকষ্ট এতটাই ভয়াবহ ছিল।সারাদিন চায়ের দোকানে কাজ করতেন।১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঘোষক হিসাবে আকাশবাণীর চাকরিতে প্রবেশ করেন। তারপর একটানা বত্রিশ বছর আকাশবাণীতে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন।

 

সংবাদ পাঠক রূপে নিজেকে তুলে ধরা—–

 

অচিরেই কুশলতায় হয়ে ওঠেন আকাশবাণীর সংবাদ ও ভাষ্যপাঠক। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি দিল্লীতে বাংলা বিভাগে সংবাদ পাঠক রূপে নির্বাচিত হন। তারপর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শেষদিকে ফিরে আসেন কলকাতার বেতার কেন্দ্রে। তার কণ্ঠে ‘ কলকাতার আকাশবাণীতে ‘‘আকাশবাণী কলকাতা, খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’’—ভরাট কণ্ঠের এই সম্ভাষণ যে কি প্রভাবে মানুষকে আচ্ছন্ন করত তা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। আর সংবাদ পাঠকে তিনি এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে, ঘরে ঘরে সংবাদ পরিক্রমা শোনার জন্য রেডিও খোলা হতো।

 

সম্মাননা—–

 

বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে “পদ্মশ্রী” সম্মানে ভূষিত করে।  বাংলাদেশ গঠিত হওয়ার পর তিনি ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ১০ ই জানুয়ারি বাংলাদেশে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন ও সংবর্ধনা জানান।

সম্পাদনা——

 

অবসরের পর যৌথ বা একক ভাবে সম্পাদনা করেছেন বিভিন্ন বিষয়ের বই। সেগুলি হল- বিষয়:আবৃত্তি (অমিয় চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথভাবে), বাংলাদেশের গল্প, একাত্তরের যুদ্ধে ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।

 

মৃত্যু—–

 

দক্ষিণ কলকাতার ল্যানসডাউনে নিজের বাসভবনে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২ রা জুন ৭৭ বৎসর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *