প্রতিবছর ২৩ মার্চ সারা পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় বিশ্ব আবহাওয়া দিবস।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং চরম আবহাওয়া—-
Intergovernmental Panel on Climate Change (IPCC) এর ষষ্ট মুল্যায়ন প্রতিবেদন অনুসারে, ক্রমবর্ধমান বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়তে থাকবে।
সামান্য উষ্ণতা বৃদ্ধিও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের দ্বারা সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে অনেক আবহাওয়া এবং জলবায়ুকে প্রভাবিত করেছে। ২০১৪ সালে পঞ্চম মুল্যায়ন প্রতিবেদনের পর থেকে চরম মাত্রায় তাপ প্রবাহ, ভারী বৃষ্টিপাত, খরা এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে।
আইপিসিসি অনুসারে ১৯৫০ সালের সময় থেকে বেশীরভাগ ভুমি অঞ্চলের তাপমাত্রা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। চল্লিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস এমনকি পঞ্চাশ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা বিশ্বের অনেক অংশে অনেক বেশী নিয়মিত হয়ে উঠেছে, যা পৃথিবীর মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্যে যথেষ্ট ক্ষতিকারক। জলবায়ু পরিবর্তন জলচক্রের মাধ্যমেও ঘটে- একটি উষ্ণ বায়ুমণ্ডল বেশী মাত্রায় আর্দ্রতা ধরে রাখে। যেমন ১৯৫০ এর দশক থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই অবস্থা অব্যাহত থাকবে বলেই ধারনা। আইপিসিসি বলেছে, প্রতি এক ডিগ্রী সেলসিয়াস গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্যে চরম বৃষ্টিপাতের ঘটনা গুলি প্রায় সাত শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
পূর্ব সতর্কতা জীবন ও জীবিকা রক্ষা
ভয়াবহ সতর্কতার পেছনেও রয়েছে আশার বার্তা। বর্তমানে উন্নত বহু বিপত্তি প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যাবস্থা মৃত্যুহারকে উল্লেখযোগ্য হ্রাসের দিকে পরিচালিত করেছে।
খুব সহজভাবে জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক সফল। সুপার কম্পিউটার এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তি আমাদের আবহাওয়া সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আগাম পূর্বাভাস দিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েক দশক ধরেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা। ১৯৭০ সালে গড়ে বছরে ৫০০০০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতো আবহাওয়ার বিপর্যয়ের কারনে, কিন্তু ২০১০ সালে সেই মৃত্যুহার কমিয়ে ২০০০০-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির কারনে। ১৯৭০-১৯৮০ সালে প্রতিদিন গড়ে ১৭০ জন মানুষের মৃত্যু হতো। সেই সংখ্যা কমিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে ২০২০ সালে প্রতিদিন ৪০ জনে। আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাস জানতে নিরলস কাজ করে চলেছে আবহাওয়াবিদরা। বিজ্ঞানীদের আশা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এই বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও অনেক বেশী স্থিতিশিল হবে বলেই আশা ডব্লিও এম ও’র। তবে মানুষের সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ করাটা আজকের দিনে সবচেয়ে জরুরী। কারণ পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।