Categories
প্রবন্ধ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর 4 জুলাই তার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে। এই দিনটি 4 জুলাই, 1776-এ স্বাধীনতার ঘোষণা গৃহীত হওয়ার স্মরণে, যখন মহাদেশীয় কংগ্রেস গ্রেট ব্রিটেন থেকে 13টি আমেরিকান উপনিবেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে।

আমেরিকান স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস——
আমেরিকান স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল একটি ঔপনিবেশিক বিদ্রোহ যা 1765 এবং 1783 সালের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। আন্দোলনের শিকড়গুলি 18 শতকের মাঝামাঝি সময়ে খুঁজে পাওয়া যায় যখন ব্রিটিশ সরকার এবং আমেরিকান উপনিবেশগুলির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। ব্রিটিশ সরকার তাদের সম্মতি ছাড়াই উপনিবেশের উপর বিভিন্ন কর আরোপ করেছিল, যার ফলে উপনিবেশবাদীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়তে থাকে।
1770 সালে বোস্টন গণহত্যা এবং 1773 সালে বোস্টন টি পার্টির সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে 1774 সালে প্রথম মহাদেশীয় কংগ্রেস গঠিত হয়। কংগ্রেস 12টি উপনিবেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত, যারা ব্রিটিশ সরকারের পদক্ষেপের জন্য একীভূত প্রতিক্রিয়ার সমন্বয়ের জন্য মিলিত হয়েছিল।
4 জুলাই, 1776-এ, কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে, যা টমাস জেফারসন, জন অ্যাডামস, বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন, রবার্ট লিভিংস্টন এবং রজার শেরম্যানের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি দ্বারা রচিত হয়েছিল। নথিটি গ্রেট ব্রিটেনের কাছ থেকে উপনিবেশগুলির স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে।
আমেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ——-
স্বাধীনতার ঘোষণাটি আমেরিকান বিপ্লবী যুদ্ধ দ্বারা অনুসরণ করা হয়েছিল, যা 1775 থেকে 1783 সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। যুদ্ধটি উপনিবেশ এবং গ্রেট ব্রিটেনের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল, উপনিবেশগুলি ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করতে চেয়েছিল। 1783 সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন——
স্বাধীনতা দিবস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে প্যারেড, আতশবাজি এবং অন্যান্য দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপিত হয়। দিনটি আমেরিকান পতাকা প্রদর্শনের দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং অনেক লোক তাদের দেশপ্রেম দেখানোর জন্য লাল, সাদা এবং নীল পোশাক পরে।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ঐতিহ্য 18 শতকে ফিরে আসে, যখন মহাদেশীয় কংগ্রেস 4 জুলাইকে উদযাপনের দিন হিসাবে ঘোষণা করেছিল। দিনটি আতশবাজি, সঙ্গীত এবং বনফায়ার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং বিপ্লবী যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগেই উপনিবেশগুলি দ্বারা উদযাপন করা হয়েছিল।
আধুনিক সময়ে, স্বাধীনতা দিবস পালিত হয় গ্র্যান্ড প্যারেড, আতশবাজি প্রদর্শন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অন্যান্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। দিনটি আমেরিকান পতাকা প্রদর্শনের দ্বারাও চিহ্নিত করা হয় এবং অনেক লোক তাদের দেশপ্রেম দেখানোর জন্য লাল, সাদা এবং নীল পোশাক পরে।
স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য——
স্বাধীনতা দিবস শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। দিবসটি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গ্রহণের স্মরণে, যা আমেরিকার ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্বাধীনতার ঘোষণা স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের একটি শক্তিশালী প্রতীক, এবং এটি গ্রহণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় চিহ্নিত করেছে। নথির প্রভাব ফরাসি বিপ্লব, হাইতিয়ান বিপ্লব এবং লাতিন আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে দেখা যায়।
উপসংহার—–
উপসংহারে, স্বাধীনতা দিবস হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি উল্লেখযোগ্য জাতীয় ছুটির দিন যা 4 জুলাই, 1776 তারিখে স্বাধীনতার ঘোষণা গৃহীত হওয়ার স্মরণে পালন করে। দিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে প্যারেড, আতশবাজি এবং অন্যান্য দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় এবং চিহ্নিত করা হয়। আমেরিকান পতাকা প্রদর্শনের মাধ্যমে। স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও প্রসারিত, কারণ এটি স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের একটি শক্তিশালী প্রতীক যা বিশ্বজুড়ে আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছে।
এখানে স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য রয়েছে:
– প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন 4 জুলাই, 1777 তারিখে ফিলাডেলফিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
– স্বাধীনতার ঘোষণায় আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সহ 56 জন ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন।
– 1777 সালে গৃহীত হওয়ার পর থেকে আমেরিকান পতাকার 27টি নকশা পরিবর্তন হয়েছে।
– দীর্ঘতম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ব্রিস্টল, রোড আইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় এবং 1785 সাল থেকে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে।
– সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নিউ ইয়র্ক সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে 3 মিলিয়নেরও বেশি লোক বার্ষিক মেসির 4 ঠা জুলাই ফায়ারওয়ার্কস শোতে অংশগ্রহণ করে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্বামী বিবেকানন্দ শুধু বাঙালির জীবনের এক আদর্শ মহামানবই নন, তিনি যুগাবতার – আজও প্রাসঙ্গিক।।।।

স্বামী বিবেকানন্দ শুধু বাঙালির জীবনের এক আদর্শ মহামানবই নন, তিনি যুগাবতার । তিনি ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের একমাত্র শিষ্য । তাঁর দেখানো আদর্শের রাস্তা যুক্তিবোধের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় মানুষকে।

আধ্যত্মকে এক অন্য পর্যায়ে উন্নত করে বিবেকানন্দ সকলের জীবনকে আরও বেশি করে আলোর দিকে ঠেলে দিয়েছেন । স্বামী বিবেকানন্দ জীবপ্রেমের দীক্ষা পান শ্রীরামকৃষ্ণের কাছ থেকে, যেখানে তিনি বলেছেন ‘যত্র জীব, তত্র শিব’। জীবের সেবা করলে স্রষ্টারও সেবা করা হয় । স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ । সবার আগে মানব সেবা । সুতরাং মানুষের সেবার মাধ্যমে ঈশ্বরের সেবা করা সম্ভব। জীবপ্রেমের দর্শন প্রকাশ পেয়েছে তাঁর দুটি চমৎকার লাইনেঃ
“বহুরুপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ?
জীবপ্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর ।”
তাই আমরা কেউ বিবেকানন্দকে পরিপূর্ণভাবে বুঝিনি । কারণ তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব । তিনি প্রচুর বই পড়তেন । দর্শন, ধর্ম, ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, শিল্পকলা, সাহিত্য, ইত্যাদি বিষয়ে । তা ছাড়া তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল বেদ, উপনিষদ, ভাগবতগীতা, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, প্রভূতি হিন্দু ধর্ম গ্রন্থে । যার জন্য সংগীত, চিত্রকলা, দর্শন, রাষ্ট্রনীতি, ইতিহাস, অর্থনীতি, সমাজতত্ব, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ছিলো গভীর ব্যুৎপত্তি । তাই তিনি নিজেই বলেছেন, “বিবেকানন্দকে বুঝতে হলে আরেক বিবেকানন্দকে দরকার” । কর্মী বিবেকানন্দ, সন্ন্যাসী বিবেকানন্দ, গুরু বিবেকানন্দ, শিষ্য বিবেকানন্দ, জ্ঞানী বিবেকানন্দ, যোগী বিবেকানন্দ, কবি বিবেকানন্দ সবই বাহ্য । কারণ এই সমস্ত গুণেই তিনি শীর্ষস্থানের অধিকারী হলেও তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয়, ‘ভালোবাসায় ভরা হৃদয় বিবেকানন্দ’ ।
বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের “শিব জ্ঞানে জীব সেবা” মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন । তাই তিনি মানুষের কল্যাণ সাধনকেই প্রকৃত ঈশ্বর সাধনা বলে মনে করেছিলেন ।
বিবেকানন্দ ছিলেন মানব প্রেমিক সন্ন্যাসী । মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি ধর্ম ও বিজ্ঞান উভয়কেই সমানভাবে প্রয়োজন বলে মনে করেছিলেন । তাঁর মতে “ধর্ম”” মানুষের অন্তর্নিহিত দেবত্বকে ফোটাবে । বিজ্ঞান মানুষকে সুখ ও সমৃদ্ধি উপহার দেবে । শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ প্রথমে আত্মবিশ্বাসী হবে । আর আত্মবিশ্বাস থেকে আসবে আত্মনির্ভরশীলতা । বিবেকানন্দের মতে, শিক্ষাই সমাজের সকল সমস্যা দূরীকরণের মূল চাবি কাঠি । শিক্ষার আলো মানুষের মনের অন্ধকারকে দূর করে এবং মানুষকে স্বনির্ভর করতে সাহায্য করে । বিবেকানন্দের শিক্ষা পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যেই ছিল সমাজে যথার্থ “মানুষ” তৈরি করা -যাতে চরিত্র গঠিত হয়, মনের শক্তি বাড়ে । বুদ্ধি বিকশিত হয়, মানুষ নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াতে শেখে । উপরন্ত বিবেকানন্দের শিক্ষা ছিল সার্বজনীন । তিনি চেয়েছিলেন বিশেষভাবে যুব সমাজের নবচেতনার অভ্যুদয় । নিষ্ঠা, সততা ও আত্মনির্ভরতা ছিল তাঁর আরাধ্য । এসব গুণ জগতের সব সমাজের সব মানুষেরই সম্পদ ।

( ২ )
এখানে বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য – বিবেকানন্দ যেভাবে ভারতবর্ষকে চিনেছিলেন বা অনুভব করেছিলেন, অন্য কোনো ব্যক্তি ঠিক সেভাবে ভারতবর্ষকে অনুভব করতে পারেননি । পুণ্যভূমি ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করে বিবেকানন্দ ধন্য মনে করেছিলেন । ভগিনী নিবেদিতার ভাষায়, “তিনি নিজেই হয়ে উঠেছিলেন ভারতবর্ষ – রক্তমাংসে গড়া ভারত প্রতিমা ।” আর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ রোমাঁ রোলাঁকে (ফরাসী সাহিত্যিক) বলেছিলেন, “যদি ভারতবর্ষকে জানতে চাও বিবেকানন্দকে জানো । বিবেকানন্দের লেখা আগে পড়ো । ”
বিবেকানন্দ সহজে ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবকে গুরু মানেননি । প্রথমদিকে নরেন্দ্রনাথ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে গুরু বলে মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন । এমনকি তাঁর চিন্তাভাবনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রকাশ করেছিলেন । অথচ উল্টে তিনি রামকৃষ্ণ দেবের ব্যক্তিত্বের কাছে বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন । যার জন্য ঘনঘন তিনি দক্ষিণেশ্বরে যাতায়াত শুরু করেন । ব্রাহ্ম সমাজের সদস্য নরেন্দ্রনাথ সেইসময় মূর্তিপূজা, বহুদেববাদ, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কালী পুজা সমর্থন করতেন না । এমনকি অদ্বৈত বেদান্তমতবাদকেও তিনি ঈশ্বরদ্রোহিতা ও পাগলামি বলে উড়িয়ে দিতেন । নরেন্দ্রনাথ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে পরীক্ষা করতেন । রামকৃষ্ণ দেবও শান্তভাবে তার যুক্তি শুনে বলতেন, “সত্যকে সকল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করবি ।”
১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে । চিকিৎসার প্রয়োজনে তাঁকে প্রথমে উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর ও পরে কাশীপুরের একটি বাগান বাড়িতে স্থানান্তরিত করা হয় । সেখানেই নরেন্দ্র নাথের ধর্ম শিক্ষা চলতে থাকে । কাশীপুরে নরেন্দ্রনাথ নির্বিকল্প সমাধি লাভ করেন । তারপর রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে সন্ন্যাস ও গৈরিক বস্ত্র লাভ করেন । রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব নরেন্দ্রনাথকে শিক্ষা দেন “মানব সেবাই ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ সাধনা” । এরপর ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই আগষ্ট শেষ রাত্রে কাশীপুরেই রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব প্রয়াত হন । ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে নরেন্দ্রনাথের গুরুভ্রাতা বাবুরামের মা নরেন্দ্রনাথ ও অন্যান্য সন্ন্যাসীদের আঁটপুরে আমন্ত্রণ জানান । সেখানেই তাঁরা রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মতো জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নেন । তখন নরেন্দ্রনাথ “স্বামী বিবেকানন্দ” নাম গ্রহণ করেন ।
এরপরে পরিব্রাজকরূপে তাঁকে আমরা কী দেখলাম । ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে পরিব্রাজকরূপে মঠ ত্যাগ করেন বিবেকানন্দ । পরিব্রাজক হিন্দু সন্ন্যাসীর এক ধর্মীয় জীবন — এই জীবনে তিনি স্বাধীনভাবে পর্যটন করে বেড়ান কোনো স্থায়ী বাসস্থান ও বন্ধন ছাড়াই । পরিব্রাজক জীবনে বিবেকানন্দের সঙ্গী ছল একটি কমন্ডলু, লাঠি এবং তাঁর প্রিয় দুটি গ্রন্থ -ভাগবদ্গীতা ও ইশানুসরণ । বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায় ও সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে সুপরিচিত হন । এই সময় ভিক্ষোপজীবী হয়ে সারা ভারত পদব্রজেই পর্যটন করেন বিবেকানন্দ । সেইজন্য বিবেকানন্দকে সারা বিশ্বের মানুষ “পরিব্রাজক” হিসেবে জানে । ভারতবর্ষ পর্যটনের সময় তিনি বিভিন্ন পণ্ডিত, দেওয়ান, রাজা এবং হিন্দু-মুসলমান, খ্রিষ্টান এমনকি নিম্নবর্গীয় ও সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গেও মেলামেশা ও একসঙ্গে বাস করেন ।

( ৩ )
১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বারাণসী থেকে যাত্রা শুরু করেন । তখন সাক্ষাৎ হয় বিশিষ্ট বাঙালী লেখক ভূদেব মুখোপাধ্যায় ও বিশিষ্ট সন্ত ত্রৈলঙ্গস্বামীর সাথে । বৃন্দাবন, হথরাস ও হৃষীকেশে ভ্রমণের সময় হথরাসে তাঁর সঙ্গে স্টেশন মাস্টার শরৎচন্দ্র গুপ্তের সাক্ষাত হয় । তিনি পরে বিবেকানন্দের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে সদানন্দ নামে পরিচিত হন । তিনি ছিলেন বিবেকানন্দের প্রথম যুগের শিষ্য । ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে আবার নৈনিতাল, আলমোড়া, দেরাদুন, ঋষীকেশ, হরিদ্বার এবং হিমালয় ভ্রমণে যান । তারপর রওনা দেন দিল্লি । এইভাবে পশ্চিম ভারত, দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ সারেন ।
১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ৩০শে জুন থেকে ১৪ই জুলাই শিকাগো যাওয়ার পথে বিবেকানন্দ জাপান ভ্রমণ করেন । তিনি ঘুরে দেখেছিলেন কোবে, ওসাকা, কিওটো, টোকিও আর য়োকোহামা শহর । ১০ই জুলাই ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে য়োকোহামার ওরিয়েন্টাল হোটেল থেকে তাঁর ভক্ত মাদ্রাজের আলাসিঙ্গা পেরুমলকে লেখা চিঠিতে বিবেকানন্দ জানিয়েছিলেন জাপান নিয়ে তাঁর মুগ্ধতার কথা । তিনি জাপানীদের “পৃথিবীর সবচেয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন জনগণের অন্যতম” বলে অভিহিত করেছিলেন । তারপর চিন, কানাডা হয়ে তিনি শিকাগো শহরে পৌঁছান ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে । কিন্তু শিকাগো শহরে পৌঁছে মূলত দুটি সমস্যায় পড়েন । মহাসভা শুরু হতে দেড় মাস বাকী । অন্যটা কোনো খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্র বা পরিচয়পত্র ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তিকে প্রতিনিধি হিসাবে বিশ্বধর্ম মহাসভায় গ্রহণ করা হবে না । তারপর তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন হেনরি রাইটের সংস্পর্শে এলেন । তাঁকে হার্ভার্ডে আমন্ত্রণ জানানোর পর এবং ধর্মসভায় বক্তব্যদানে বিবেকানন্দের প্রশংসাপত্র না থাকা প্রসঙ্গে রাইটের বক্তব্য, “আপনার কাছে প্রশংসাপত্র চাওয়াটা হচ্ছে স্বর্গে সূর্যের আলো দেওয়ার অধিকার চাওয়ার মতো অবস্থা ।” রাইট তখন প্রতিনিধিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিকট এক চিঠিতে লিখলেন, “আমাদের সকল অধ্যাপক একত্রে যতটা শিক্ষিত ইনি তাঁদের থেকেও বেশী শিক্ষিত ।”
বিশ্বধর্ম মহাসভা ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বর শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটে উদ্বোধন হয় । তিনি ভারত এবং হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন । পাশ্চাত্যে অভিযানের নিরিখে যেসব অভিজ্ঞতা, তাতে শিকাগো বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ভারতীয় সনাতন ও বেদান্তের উপর ভাষণ দেওয়া ভীষন তাৎপর্যপূর্ণ । তাঁর বক্তব্য শুরু করলেন, “আমেরিকার ভ্রাতা ও ভগিনীগণ …।” — সম্ভাষন করে । তাঁর বক্তব্যে সহিষ্ণুতা ও মহাজাগতিক গ্রহণযোগ্যতা প্রসঙ্গ ওঠে । গীতা থেকে উদাহরণমূলক পংক্তি তুলে ধরেন । তাঁর বক্তব্যে বিশ্বজনীন চেতনা ধ্বনিত হয় ।
প্রেসের কাছে তিনি “ভারতের সাইক্লোন সন্ন্যাসী” হিসেবে অভিহিত হন । “নিউ ইয়র্ক ক্রিটিক” লিখেছিল “ঐশ্বরিক অধিকারবলে তিনি একজন বক্তা এবং তাঁর শক্তিশালী, বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার চেয়ে বরং আগ্রহোদ্দিপক ছিল ঐ সকল ছন্দময়ভাবে উচ্চারিত শব্দসমূহ ।” আমেরিকার পত্রিকাসমূহ বিবেকানন্দকে “ধর্মসভার সবচেয়ে মহান ব্যক্তিত্ব” হিসেবে প্রতিবেদন লিখেছিল । পরবর্তীতে শ্রীমতি অ্যানি বেসান্ত ভারতে ফিরে এসে লিখেছিলেন, “গেরুয়াধারী কম বয়স্ক প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলন মঞ্চে বিবেকানন্দ ছিলেন সূর্যের মতো তেজস্বী এক পুরুষ ।”
তারপর ১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর আমেরিকা ও ইংল্যান্ড ভ্রমণ শেষে ইংল্যান্ড থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেন । তারপর ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জানুয়ারী কলম্বো তিনি পৌঁছান ।

( ৪ )
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই বিবেকানন্দের সদর্থক ভূমিকা । রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের একনিষ্ঠ ভক্ত সুভাষ চন্দ্র বসু । সেই বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন, বিবেকানন্দ ছিলেন “আধুনিক ভারতের স্রষ্টা ।” জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনার প্রতি তিনি ছিলেন সতত সংবেদনশীল । সুতরাং বিবেকানন্দের স্বদেশমন্ত্র দেশ স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ । বলা চলে বিবেকানন্দ স্বাধীনতা আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিলেন । যার জন্য মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, “বিবেকানন্দের রচনা তাঁর “দেশপ্রেম হাজারগুণ” বৃদ্ধি করেছিল ।” যখন পরাধীন ভারতবাসী আত্মশক্তি হারিয়ে ফেলেছিল, তখন বিবেকানন্দ চেয়েছেন মানুষের আত্মশক্তির বিকাশ । তাই তিনি বলেছেন, “তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, অমৃতের অধিকারি, পবিত্র ও পূর্ণ । তুমি নিজেকে দুর্বল বলো কী করে ? ওঠো, সাহসী হও, বীর্যবান হও ।”
স্বদেশমন্ত্রে তিনি বলেছেন, হে ভারত, এই পরানুবাদ, পরানুকরণ, পরমুখাপেক্ষা, এই দাসসুলভ দুর্বলতা, এই ঘৃণিত জঘন্য নিষ্ঠুরতা … এইমাত্র সম্বলে তুমি উচ্চাধিকার লাভ করবে ? এই লজ্জাকর কাপুরুষতা সহায়ে তুমি বীরভোগ্যা স্বাধীনতা লাভ করিবে ? হে ভারত, ভুলিও না তোমার নারীজাতির আদর্শ সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী । ভুলিও না, তোমার উপাস্য উমানাথ সর্বত্যাগী শঙ্কর । ভুলিও না, তোমার বিবাহ, তোমার ধন, তোমার জীবন ইন্দ্রিয়সুখের —নিজের ব্যক্তিগত সুখের জন্য নহে । ভুলিও না, তুমি জন্ম হতেই “মায়ের” জন্য বলিপ্রদত্ত । ভুলিও না, নীচজাতি, মুর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই । হে বীর, সাহস অবলম্বন করো, সদর্পে বলো —- আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই । বলো, মুর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চন্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই । সদর্পে বলো, ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারাণসী । বলো ভাই, ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বর্গ । ভারতের কল্যান, আমার কল্যান । ”
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ই জুলায় রাত ৯.১০ মিনিটে ধ্যানরত অবস্থায় দেহত্যাগ করেন । তাঁকে বেলুড়ে গঙ্গা নদীর তীরে একটি চন্দন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চিতার উপর দাহ করা হয় । যার বিপরীত পাশে ষোলো বছর আগে রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মরদেহ দাহ করা হয়েছিল ।
আজ তাঁর শুভ জন্মদিন (জন্মঃ ১২ই জানুয়ারী, ১৮৬৩) । তাঁর শুভ জন্মদিনে আমার শতকোটি প্রণাম ।

কলমে : দিলীপ রায়।
———–০————–

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ৩ জুলাই, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ৩ জুলাই। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) বিশ্ব প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭২৮ – স্কট স্থপতি রবার্ট অ্যাডাম।
১৮৫৪ – চেক সঙ্গীত স্রষ্টা লেইওস ইয়ানাচেক।

১৮৮৩ – ফ্রান্‌ৎস কাফকা, জার্মান ও চেক উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক।

১৯১২ – অজিতকৃষ্ণ বসু, একজন বাঙালী রসসাহিত্যিক, জাদুকর এবং সঙ্গীতজ্ঞ।

১৯৪১ – আদুর গোপালকৃষ্ণন, আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক।

১৯৫২ – অমিত কুমার, ভারতীয় বাঙালি গায়ক, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, চলচ্চিত্র প্রযোজক, সঙ্গীত প্রযোজক এবং সুরকার।
১৯৬২ – টম ক্রুজ, একজন বিখ্যাত ও জনপ্রিয় মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেতা ও প্রযোজক।
১৯৮৪ – সৈয়দ রাসেল, বাংলাদেশী ক্রিকেট খেলোয়াড়।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৭৫৭ – মীরজাফর এর পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নামের ঘাতক সিরাজউদ্দৌলাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
১৯১৯ – বিশ্বভারতীর যাত্রা শুরু হয়।
১৯২১ – মস্কোয় বিপ্লবী ট্রেড ইউনিয়নগুলোর আন্তর্জাতিক কংগ্রেস শুরু হয়।
১৯৪১ – মিত্রবাহিনীর কাছে সিরিয়ার আত্মসমর্পণ।
১৯৪৭ – ভারতবর্ষকে দু’টি ডেমিনিয়নে বিভক্ত করার জন্য ‘মাউন্টবাটেন পরিকল্পনা’ প্রকাশ।
১৯৫৩ – পৃথিবীর নবম উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ নাঙ্গা পর্বতের শীর্ষে একদল অস্ট্রীয় ও জার্মান অভিযাত্রী সর্বপ্রথম আরোহণ করেন।
১৯৬২ – আলজেরিয়া স্বাধীনতা লাভ।
১৯৭১ – ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশের বীরশ্রেষ্ঠ, ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ এ প্রবেশ করেন দেশের জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৩২ – স্বর্ণকুমারী দেবী, বাঙালি কবি ও সমাজকর্মী।

১৯৭১ – জিম মরিসন, মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী।

১৯৯১ – ডলি আনোয়ার, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

১৯৯৭ – বিশিষ্ট বাঙালি চিত্রশিল্পী রথীন মৈত্র।
২০০৯ – আলাউদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশের খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, কবি, নাট্যকার, গবেষক।
২০২০ – সরোজ খান,বলিউডের প্রখ্যাত নৃত্য পরিচালক।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্বর্ণকুমারী দেবী: বাংলা সাহিত্য ও সমাজ সংস্কারের অগ্রদূত।।।।

স্বর্ণকুমারী দেবী ছিলেন একজন পথপ্রদর্শক বাঙালি কবি, লেখক এবং সমাজকর্মী যিনি ভারতের সাহিত্য ও সামাজিক ল্যান্ডস্কেপে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছেন। 28শে আগস্ট, 1855 সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ছিলেন বিশিষ্ট সংস্কারক ও দার্শনিক দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা এবং বিখ্যাত কবি ও নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোন।

স্বর্ণকুমারীর প্রাথমিক জীবন শিক্ষার প্রতি অনুরাগ এবং সমাজে পরিবর্তন আনার প্রবল ইচ্ছার দ্বারা চিহ্নিত ছিল। তিনি বাড়িতেই শিক্ষিত হয়েছিলেন, যেখানে তিনি সাহিত্য, সঙ্গীত এবং শিল্পের প্রতি গভীর ভালবাসা তৈরি করেছিলেন। তার বাবার প্রভাব তার মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি দৃঢ় বোধ জাগিয়েছিল, যা তার ভবিষ্যত প্রচেষ্টাকে রূপ দেবে।

সাহিত্য কর্মজীবন—-

স্বর্ণকুমারী অল্প বয়সে লেখালেখি শুরু করেন এবং 1876 সালে তার প্রথম কবিতার সংকলন “নচঘন্টারা” প্রকাশ করেন। তার কবিতার গীতিবাদ, গভীরতা এবং প্রেম, প্রকৃতি এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলির অন্বেষণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। তিনি “কাব্যবলী” এবং “বসন্তাবলী” সহ আরও কয়েকটি সংকলন প্রকাশ করেছিলেন।
তার লেখা কবিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি ছোট গল্প, উপন্যাস এবং প্রবন্ধও লিখেছেন। তার “দীপনির্বাণ” (1885) উপন্যাসটি একজন মহিলার লেখা প্রথম বাংলা উপন্যাসগুলির মধ্যে একটি। তার লেখা প্রায়ই নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা এবং সামাজিক সংস্কারের বিষয়বস্তু অন্বেষণ করে।

সামাজিক কাজ—-

সামাজিক কাজের প্রতি স্বর্ণকুমারীর অঙ্গীকার ছিল অটুট। তিনি নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন এবং মেয়েদের শিক্ষা ও নারী অধিকারের প্রচারে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি 1883 সালে লেডিস থিওসফিক্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন, যার লক্ষ্য ছিল নারী শিক্ষা এবং সামাজিক কল্যাণ প্রচার করা।

তিনি 1886 সালে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল স্বর্ণকুমারী দেবী বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়টি সুবিধাবঞ্চিত পটভূমির মেয়েদের শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে। শিক্ষা এবং সামাজিক সংস্কারে তার কাজ তার সমসাময়িকদের কাছ থেকে তাকে স্বীকৃতি এবং সম্মান অর্জন করেছে।

উত্তরাধিকার—-

বাংলা সাহিত্য ও সমাজ সংস্কারে স্বর্ণকুমারী দেবীর অবদান অপরিসীম। তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের নারী লেখক ও সমাজকর্মীদের জন্য পথ প্রশস্ত করেছেন। তার কবিতা এবং লেখা পাঠক ও পণ্ডিতদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
তার উত্তরাধিকার সাহিত্য ও সমাজকর্মের বাইরেও প্রসারিত। তিনি একজন সত্যিকারের অগ্রগামী ছিলেন, বাধাগুলি ভেঙে দিয়েছিলেন এবং সামাজিক নিয়মগুলিকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তার জীবন এবং কাজ উৎসর্গের শক্তি, কঠোর পরিশ্রম এবং একটি পার্থক্য করার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ হিসাবে কাজ করে।

উপসংহারে বলা যায়, স্বর্ণকুমারী দেবী ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তি যিনি বাংলা সাহিত্য ও সমাজ সংস্কারে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছেন। তার কবিতা, লেখা এবং সামাজিক কাজ আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত ও প্রভাবিত করে চলেছে। তার উত্তরাধিকার সমাজে একজন ব্যক্তির প্রভাবের অনুস্মারক এবং উত্সর্গ এবং উদ্দেশ্যের সাথে নিজের আবেগ অনুসরণ করার গুরুত্ব।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস : প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়া বিশ্বকে উৎসাহিত করা।।।।

৩রা জুলাই আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস পালন করে, একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করার লক্ষ্যে একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ। 2008 সালে শুরু হওয়া আন্দোলনটি পরিবেশ, বন্যপ্রাণী এবং মানব স্বাস্থ্যের উপর প্লাস্টিকের ব্যাগের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চায়।

প্লাস্টিকের ব্যাগের ইতিহাস—-
প্লাস্টিকের ব্যাগের উদ্ভাবন 1933 সালের দিকে যখন পলিথিন, প্লাস্টিকের ব্যাগে ব্যবহৃত প্রাথমিক উপাদান, ইংল্যান্ডের নর্থউইচে প্রথম সংশ্লেষিত হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী প্রাথমিকভাবে ব্যবহার করেছিল, প্লাস্টিক ব্যাগগুলি 1960-এর দশকে পণ্য বহনের সুবিধাজনক এবং স্বাস্থ্যকর উপায় হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যাইহোক, তাদের জনপ্রিয়তা একটি উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত খরচে এসেছে।

পরিবেশগত প্রভাব——

প্লাস্টিক ব্যাগগুলি দূষণের একটি উল্লেখযোগ্য অবদানকারী, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক 5 ট্রিলিয়ন ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। তারা পচন প্রক্রিয়ার সময় মাটি এবং জল সিস্টেমে ক্ষতিকারক বিষাক্ত পদার্থ পচতে এবং ছেড়ে দিতে শত শত বছর সময় নেয়। অধিকন্তু, প্লাস্টিক ব্যাগ বন্যপ্রাণীর ক্ষতি করে, অ-নবায়নযোগ্য সম্পদের অবক্ষয় করে এবং ক্যান্সার, জন্মগত ত্রুটি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমন করতে পারে এমন রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে মানব স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে।

আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস উদযাপন——
বিভিন্ন কার্যক্রম ও উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি পালিত হয়। প্রতিষ্ঠান, পরিবেশগত গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিরা প্লাস্টিকের ব্যাগের প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করতে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগের মতো বিকল্পগুলিকে প্রচার করতে ইভেন্ট, কর্মশালা এবং সচেতনতা প্রচারের আয়োজন করে। সম্প্রদায়, শহর এবং দেশগুলিও এই দিনে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ বা প্রবিধানে অংশ নিতে পারে, একক-ব্যবহারের প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার নীতিগুলি বাস্তবায়ন করে।

উদযাপনের উপায়——

– প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করুন এবং পরিবর্তে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ বেছে নিন।
– প্লাস্টিক আইটেম হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহার করুন।
– আশেপাশের পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে অংশগ্রহণ করুন।
– পরিবেশ বান্ধব উপকরণ ব্যবহার করে আপনার নিজস্ব পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ তৈরি করুন।
– তাদের পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ নিয়ে আসা গ্রাহকদের জন্য ডিসকাউন্ট অফার করে এমন ব্যবসাগুলিকে সমর্থন করুন।

প্লাস্টিকের ব্যাগের বিকল্প—–

– উদ্ভিদ-ভিত্তিক উপকরণ থেকে তৈরি বায়োপ্লাস্টিক ব্যাগ
– মাইসেলিয়াম থেকে তৈরি মাশরুম-ভিত্তিক ব্যাগ
– কাগজের ব্যাগ
– তুলো বা কৃত্রিম উপকরণ থেকে তৈরি ক্যানভাস ব্যাগ

উপসংহার—-

আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস হল প্লাস্টিকের ব্যাগের উপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে এবং টেকসই বিকল্পগুলি গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে, আমরা প্লাস্টিকের ব্যাগ ছাড়াই একটি বিশ্ব তৈরি করতে পারি, আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে পারি, সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর গ্রহ নিশ্চিত করতে পারি। সুতরাং, আসুন আমরা এই দিবসটি উদযাপনের জন্য বাহিনীতে যোগদান করি এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করার সচেতন প্রচেষ্টা করি।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখা ও ভালো রাখার কিছু উপায়।।।।

কঠিন পরিস্থিতিতে আপনাকে শান্ত থাকতে সাহায্য করার জন্য এখানে কিছু টিপস রয়েছে:

 

1. একটি গভীর শ্বাস নিন: আপনার নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং আপনার মুখ দিয়ে বের করুন। এটি আপনার হৃদস্পন্দনকে মন্থর করতে এবং আপনার মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে।

2. ফিরে যান: কখনও কখনও, পরিস্থিতি থেকে শারীরিক পদক্ষেপ নেওয়া আপনাকে দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করতে এবং আপনার মাথা পরিষ্কার করতে সহায়তা করতে পারে।
3. মননশীলতার অভ্যাস করুন: বর্তমান মুহুর্তে ফোকাস করুন এবং অতীত বা ভবিষ্যতের উদ্বেগ ত্যাগ করুন। ধ্যান বা যোগের মতো মননশীলতা কৌশলগুলি সাহায্য করতে পারে।
4. আপনার চিন্তাভাবনা পুনর্বিন্যাস করুন: পরিস্থিতিটিকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করুন। একটি রূপালী আস্তরণের বা বৃদ্ধির জন্য একটি সুযোগ আছে কিনা নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন.
5. একটি বিরতি নিন: সম্ভব হলে, এমন কিছু করার জন্য একটি ছোট বিরতি নিন যা আপনাকে আরাম দেয়, যেমন হাঁটতে যাওয়া বা শান্ত সঙ্গীত শোনা।
6. ইতিবাচক স্ব-কথোপকথনের অভ্যাস করুন: সদয় শব্দ দিয়ে নিজেকে উত্সাহিত করুন, যেমন “আমি এটি পেয়েছি” বা “আমি এটি পরিচালনা করতে পারি।”
7. সহায়তা সন্ধান করুন: সমর্থন এবং নির্দেশনার জন্য একজন বিশ্বস্ত বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাথে যোগাযোগ করুন।
মনে রাখবেন, কঠিন পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার জন্য অনুশীলন লাগে, তবে সময় এবং প্রচেষ্টার সাথে, আপনি অনুগ্রহ এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে তাদের পরিচালনা করার দক্ষতা বিকাশ করতে পারেন।
এখানে নিজের যত্ন নেওয়ার কিছু উপায় রয়েছে:
1. শারীরিক স্ব-যত্ন:
– নিয়মিত ব্যায়াম করুন (হাঁটা, যোগব্যায়াম ইত্যাদি)
– একটি সুষম খাদ্য খাওয়া
– পর্যাপ্ত ঘুম পান (7-8 ঘন্টা)
– জলয়োজিত থাকার
2. মানসিক স্ব-যত্ন:
– মননশীলতা এবং ধ্যান অনুশীলন করুন
– এমন ক্রিয়াকলাপগুলিতে জড়িত হন যা আপনাকে আনন্দ দেয় (শখ, পড়া ইত্যাদি)
– সীমানা নির্ধারণ করুন এবং আপনার প্রয়োজনগুলিকে অগ্রাধিকার দিন
– প্রয়োজনে পেশাদার সাহায্য নিন
3. আবেগজনিত স্ব-যত্ন:
– আত্ম-সহানুভূতি এবং আত্ম-ক্ষমা অনুশীলন করুন
– স্বাস্থ্যকর উপায়ে আপনার আবেগ প্রকাশ করুন (জার্নালিং, বন্ধুর সাথে কথা বলা ইত্যাদি)
– ইতিবাচক সম্পর্কের সাথে নিজেকে ঘিরে রাখুন
– আত্ম-প্রতিফলন এবং আত্ম-বৃদ্ধির জন্য সময় নিন
4. আধ্যাত্মিক স্ব-যত্ন:
– প্রকৃতির সাথে সংযোগ করুন
– কৃতজ্ঞতা এবং প্রশংসা অনুশীলন করুন
– এমন ক্রিয়াকলাপগুলিতে জড়িত হন যা আপনাকে উদ্দেশ্য এবং অর্থের বোধ দেয়
– অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং প্রশান্তির অনুভূতি গড়ে তুলুন
মনে রাখবেন, স্ব-যত্ন একটি এক-আকার-ফিট-সব পদ্ধতি নয়। পরীক্ষা করুন এবং আপনার জন্য সবচেয়ে ভাল কি কাজ করে তা খুঁজুন!

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস, জানুন কেন পালিত হয় এবং দিনটির গুরুত্ব।।।।

ক্রীড়া সাংবাদিকতা যে কোনো সংবাদ মাধ্যমের প্রতিষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি খেলাধুলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে। এটিকে হাস্যকরভাবে খেলনা বিভাগ নামকরণ করা হয়েছে কারণ খেলাধুলার বিষয়বস্তু একটি খেলা হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে। আজ ২ জুলাই, বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস (World Sports Journalists Day)।

আজ থেকে ৯৯ বছর আগে প্যারিস অলিম্পিকের সময় ১৯২৪ সালের এই দিনে ফ্রান্সে এআইপিএস (আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সাংবাদিক সংস্থা) প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই দিনটিকে স্মরণে রেখেই প্রতি বছর ২ জুলাই ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস পালিত হয়।
সাংবাদিকরা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আমাদের সামনে সুগবেষণাকৃত তথ্য তুলে ধরে। ক্রীড়া সাংবাদিকরা বিভিন্ন স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলার বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। ক্রীড়া লেখকদের তৎপরতা এবং রিপোর্টিং দক্ষতার কারণে বিশ্বব্যাপী ক্রীড়া অনুরাগীরা ক্রীড়া ইভেন্ট এবং ক্রীড়া খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হয়। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ক্রীড়া জগতের বর্তমান সেনসেশন এবং ক্রীড়া লেখকরা এটিকে কভার করতে কোন কসরত ছাড়ছেন না। ক্রীড়া প্রচারে ক্রীড়া সাংবাদিকদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে প্রতি বছর ২ জুলাই বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস পালন করা হয়। এই উপলক্ষ্যে, আমরা বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস সম্পর্কে কিছু তথ্য নিয়ে এসেছি।
বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবসের ইতিহাস—
১৯৯৪ সালে, ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (A.I.P.S.) তার ৭০তম বার্ষিকীর সম্মানে প্রথমবারের মতো বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস উদযাপন করে। ১৯২৪ সালে, A.I.P.S. প্যারিস, ফ্রান্সে L’Association Internationale de la Presse Sportive হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যাইহোক, সমিতির সদর দপ্তর এখন অলিম্পিক রাজধানী লুসানে, সুইজারল্যান্ডে। A.I.P.S. ১৬০টি সদস্য সমিতি সহ একটি স্বাধীন সংস্থা, যেখান থেকে এটি সদস্যতা ফি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং ফেডারেশনের অবদানের মাধ্যমে অর্থায়ন পায়।
এর ওয়েবসাইট অনুসারে, A.I.P.S এর লক্ষ্য। “ক্রীড়া এবং সদস্যদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষায় এর সদস্য অ্যাসোসিয়েশনগুলির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা, সমস্ত জাতির ক্রীড়া সাংবাদিকদের মধ্যে বন্ধুত্ব, সংহতি এবং সাধারণ স্বার্থ জোরদার করা এবং সদস্যদের জন্য সর্বোত্তম সম্ভাব্য কাজের পরিস্থিতি নিশ্চিত করা।”
ক্রীড়া সাংবাদিকতা এমন এক ধরনের লেখা যা ক্রীড়া-কেন্দ্রিক বিষয়গুলিতে ফোকাস করে। ক্রীড়া সাংবাদিকতা ১৮০০-এর দশকে, বিশেষ করে ১৮২০ এবং ১৮৩০-এর দশকে বিকশিত হয়েছিল। শুরুতে, রিপোর্টিং প্রাথমিকভাবে ঘোড়দৌড় এবং বক্সিং-এর মতো অভিজাত ক্রীড়াগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, প্রধানত উচ্চ শ্রেণীকে লক্ষ্য করে কারণ সংবাদপত্রগুলি জনসাধারণের নাগালের বাইরে ছিল। যাইহোক, পেনি প্রেসের বিকাশ সাশ্রয়ী মূল্যের সংবাদপত্র উত্পাদনের দ্বার উন্মুক্ত করেছে, শেষ পর্যন্ত তাদের সমাজের নিম্ন স্তরের কাছে আরও অ্যাক্সেসযোগ্য করে তুলেছে। বিংশ শতাব্দীতে ক্রীড়া সাংবাদিকতার জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৮৮০ সালে, সংবাদপত্রে খেলাধুলার জন্য মাত্র ০. ৪% স্থান উৎসর্গ করা হয়েছিল। এই সংখ্যা ১৯২০ সালের মধ্যে ২০%-এ উন্নীত হয়, কারণ সংবাদপত্রগুলি ক্রীড়া কভারেজের জন্য একচেটিয়াভাবে সাংবাদিকদের নিয়োগ করা শুরু করে। আজ, ক্রীড়া সাংবাদিকতা শুধুমাত্র প্রিন্ট মিডিয়াই নয়, রেডিও, টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটকেও ব্যবহার করে।
বিশ্বব্যাপী ক্রীড়া সাংবাদিকরা একত্রিত হয়েছে ISPA।
আজ, স্পনসরশিপ থেকে শুরু করে অলিম্পিক গেমস এবং বিশ্বকাপের মঞ্চায়ন পর্যন্ত বিপুল অর্থের সাথে খেলাধুলা একটি ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
এই ইভেন্টগুলি বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত অনুসন্ধানী এবং দক্ষ সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস প্রতি বছর অনেক আড়ম্বর ও আনন্দের সাথে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। এই দিনটি বিশেষ করে ক্রীড়া মিডিয়ার সদস্যদের অর্জন উদযাপন করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
এটির লক্ষ্য ক্রীড়া সাংবাদিকদের তাদের কাজের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য প্রচেষ্টা করতে এবং বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ স্থাপন করতে উত্সাহিত করা। এই দিনটি সাংবাদিকদের আরও কঠোর পরিশ্রম করতে উৎসাহিত করে এবং আরও বেশি লোককে পেশায় আমন্ত্রণ জানায়।
বেশিরভাগ দেশে ক্রীড়া সাংবাদিকদের জন্য তাদের পৃথক জাতীয় সমিতি রয়েছে। স্পোর্টস জার্নালিস্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (SJFI) ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
ভারতেও বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থা, এবং SJFI খেলাধুলার প্রতি লেখকদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে এই দিনটি উদযাপন করে।
খেলাধুলা নিবন্ধের অর্থ—
খেলাধুলা প্রতিটি মানুষের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি তাদের সুস্থ ও সুন্দর রাখে এবং শারীরিক শক্তিও রাখে। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি মানুষের মেজাজকেও প্রসারিত করে। খেলাধুলা আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সজাগ রক্ষা করে এবং বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার মাধ্যমে আমাদের হৃদয় সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ক্রীড়া সাংবাদিকতা—
ক্রীড়া সাংবাদিকতা হলো সাংবাদিকতার এমন ধারা, যারা ক্রীড়া এবং প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর প্রতিবেদন করে। ১৮০০ এর দশকের গোড়ার দিকে ক্রীড়া সাংবাদিকতা শুরু হয় এবং এটি খবরের কাগজের নিবেদিত সংস্থাগুলির সাথে সংবাদ ব্যবসায়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে রূপান্তরিত হয়। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে খেলাধুলার বর্ধমান জনপ্রিয়তার কারণে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাধুলার সামগ্রীর আরও বেশি প্রচার শুরু করে, খেলাধুলার প্রতি মানুষের এই আগ্ৰহের ফলে কেবল খেলাধুলার সংবাদ প্রচারের জন্য ইএসপিএন এবং স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেডের মতো ক্রীড়া প্রকাশনা সংস্থা তৈরি হয়। ক্রীড়া সাংবাদিকতার বিভিন্ন রূপ রয়েছে, যা খেলা থেকে শুরু করে খেলা থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলো বিশ্লেষণ এবং খেলায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পর্যন্ত চলে। প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের যুগে ক্রীড়া সাংবাদিকতার জায়গাগুলি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে কারণ এটি এখন মুদ্রণ সাংবাদিকতার বিস্তৃত বিভাগের সাথে একই সমস্যার সাথে লড়াই করে চলেছে, এরা এখন সাবস্ক্রিপশনের ব্যয় কাটাতে সক্ষম হচ্ছে না। বর্তমান সহস্রাব্দে ইন্টারনেট ব্লগিং এবং টুইটের নতুন রূপগুলি ক্রীড়া সাংবাদিকতাকে শেষ সীমানা পর্যন্ত ঠেলে দিয়েছে।
ক্রীড়া সাংবাদিকতা কি?
দেশের ক্রীড়াঙ্গনের বিকাশ ঘটলে ক্রীড়া সাংবাদিকতা দিনে দিনে বিকশিত হতে পারে। ক্রীড়া বিভাগ সবসময় একটি প্রবণতা বিষয়. যেকোনো দেশের মানুষ যখন খেলাধুলাকে গুরুত্ব সহকারে নেবে, তখন ক্রীড়া সাংবাদিকতা তার অবস্থান শক্তভাবে ধরে রাখবে এবং মিডিয়া সংস্থার একটি প্রধান অংশ হয়ে উঠবে। একটি উন্নয়নশীল সরকার সর্বদা ক্রীড়া বিভাগগুলির উন্নতির জন্য কঠোর চেষ্টা করে। ১৯৯০ সাল থেকে খেলাধুলার গুরুত্ব বাড়ছে। এটি অলিম্পিক, ফুটবল বিশ্বকাপ এবং ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইত্যাদির মাধ্যমে বিপুল আয়ের সাথে জড়িত একটি বিশ্বব্যাপী ব্যবসা। ক্রীড়া সাংবাদিকতা যেকোন সংবাদ মাধ্যম সংস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি খেলাধুলার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে। খেলাধুলার বিষয়বস্তু একটি খেলা হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে বলে হাস্যকরভাবে এর নামকরণ করা হয়েছে খেলনা বিভাগ। এটা সম্পদ, শক্তি এবং প্রভাব উচ্চতর হয়েছে।
ক্রীড়া সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ—-
গত দশকে খেলাধুলার মধ্যে একটি বড় পরিবর্তন ঘটেছে কারণ আরও ক্রীড়া দলগুলো বিশ্লেষণগুলি ব্যবহার করে চলেছে। একটি খেলার কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্লেষণগুলো ব্যবহারের বর্ধিত সুবিধা সম্পর্কে অনেক নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ায় এখানে স্থানান্তরিত হওয়ার এটি একটি বড় কারণ(ক্রীড়া সাংবাদিকতায়)। যেহেতু প্রতিটি খেলায় প্রতিটি উদাহরণের তথ্য সংগ্রহ করা হয়, স্পোর্টসের ডেটা বিশ্লেষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দলগুলি পরিচালনা করছে এমন বিশ্লেষণের নিবন্ধ প্রকাশের জন্য স্পোর্টস পাবলিকেশনগুলি এখন পরিসংখ্যান এবং গণিতে বিস্তৃত পটভূমির লোকদের নিযুক্ত করছে। খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সের গুণমান অধ্যয়নের জন্য নতুন মেট্রিক তৈরি করা হয়েছে। মেট্রিকগুলি খেলোয়াড় এবং দলগুলির র‌্যাঙ্কিং সংকলন করতেও ব্যবহৃত হয়। ফাইভ থার্টিইটির মতো ব্লগ সাইটগুলি ফুলটাইম স্পোর্টস অ্যানালিটিক সাইট হিসাবে অঙ্কিত হতে শুরু করেছিল যারা উপলব্ধ ডেটা নিয়েছিল এবং ক্রীড়া সম্পর্কিত বিশ্লেষণী ভারী নিবন্ধগুলি তৈরি করেছিল। ইএসপিএন তাদের অনুষ্ঠানগুলিতে ‘স্পোর্টস সায়েন্স’ নামে একটি বিভাগ প্রয়োগ করেছে যেখানে উন্নত বিশ্লেষণগুলি ক্ষেত্রের পারফরম্যান্সকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা পরীক্ষা করতে প্রতিটি খেলার তারকারা উপস্থিত হন। খেলাধুলায় বিশ্লেষণ ব্যবহারের কারণে অনেকেরই প্রচুর পুশব্যাক রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠিত কোচ দ্রুত বিশ্লেষণকে গুরুত্ব দেন এবং এক্ষেত্রে পেশাদার ক্রীড়া সাংবাদিক নিয়োগের অনেক উদাহরণ রয়েছে।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

নিকুঞ্জ সেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একজন বাঙালি বিপ্লবী ও লেখক, প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে নিকুঞ্জ সেন প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।

নিকুঞ্জ সেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
বাংলা বহু প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধার জন্মভূমি। তবুও, নায়কদের কথা কম বলা হয়, নামগুলি বিস্মৃতিতে ঝাপসা। নিকুঞ্জ সেন তেমনই একটি নাম। ১ অক্টোবর ১৯০৬ সালে অবিভক্ত বাংলার ঢাকার খামারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন প্রবল সমর্থক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য কলকাতায় এসে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি হেমচন্দ্র ঘোষ প্রতিষ্ঠিত যুগান্তর দলের মুক্তি সংঘের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং পরে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সদস্য হন। কুমিল্লার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ স্টিভেনসকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শান্তি ঘোষ এবং সুনীতি চৌধুরী ললিত বর্মনের নেতৃত্বে। সেন ঢাকার বিক্রমপুরের বানারীপাড়া স্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে বিপ্লবী সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য যোগ দেন। এখানে তাঁর ছাত্র হিসাবে, তিনি করিডোর যুদ্ধের নায়ক বাদল গুপ্তকে পেয়েছিলেন যার মধ্যে তিনি দেশাত্মবোধক মূল্যবোধ গেঁথেছিলেন।
অত্যাচারী কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল সিম্পসনকে হত্যা করার জন্য রাইটার্স বিল্ডিং-এ করিডোর যুদ্ধের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মিশনের জন্য ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর নির্ধারিত ছিল। একটি অ্যাকশন স্কোয়াড গঠন করা হয়েছিল যার মধ্যে নিকুঞ্জ সেন, হরিদাদ দত্ত, রাসময় সুর, প্রফুল্ল দত্ত এবং সুপতি রায় ছিলেন। বিনয় বসুকে মিশনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল যখন বাদল গুপ্ত এবং দীনেশ গুপ্ত তাকে সহায়তা করবেন। মিশনের দুই দিন আগে, নিকুঞ্জ সেন বাদল ও দীনেশকে ভবনের চারপাশে নিয়ে যান যাতে মিশনের সময়ই ঘরগুলো সহজেই চিনতে পারে।
প্রফুল্ল দত্তের তৈরি রাইটার্স বিল্ডিংয়ের একটি নকশা বিনয় বসুর কাছে পাঠানো হয়েছিল যিনি লেম্যান এবং হাডসনকে হত্যার অভিযোগের কারণে একটি আস্তানায় ছিলেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বরে নিকুঞ্জ সেন বাদল এবং দীনেশের সাথে পাইপ রোড, কিদারপুরে পৌঁছান। বিনয়ের সাথে রসময় স্যার। ত্রয়ী একটি ট্যাক্সিতে চড়ে যখন নিকুঞ্জ সেন এবং রাসময় সুর চিড়িয়াখানায় পৌঁছে যেখানে সুপতি রায় অপেক্ষা করছিলেন। জিতেন সেন রাইটার্স বিল্ডিংয়ের কাছে লালদিঘিতে অপেক্ষা করছিলেন চিড়িয়াখানায় অপেক্ষারত দুজনকে খবরটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে মুহূর্তে তিনি লেখকদের কাছ থেকে ‘বন্দেমাতরম’ শুনতে পাবেন।
নিকুঞ্জ সেন সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং পুরো পরিকল্পনাটির মাস্টারমাইন্ড করেন। সেন ও তার কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেফতার করতে না পেরে তারা বাগুতে লুকিয়ে ছিলেন। তিনি ১৯৩১ সালে গ্রেফতার হন এবং সাত বছরের জন্য জেলে ছিলেন। আবার, তিনি ১৯৪০ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কারাবরণ করেন। পরে তিনি শরৎ বসুর গঠিত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেন এবং পার্টি বুলেটিন ‘মহাজাতি’-এর সম্পাদক ছিলেন। তিনি আরও কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এরপর তিনি বাগুর সপ্তগ্রাম সর্বেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্থানীয়দের কল্যাণে সমাজকল্যাণ সংস্থা ‘পল্লীনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি ‘জেলখানা কারাগার’ (জেল জেল), ‘বক্সার পোর দেউলিয়া’ (বক্সার পরে দেউলিয়া), ‘ইতিহাশে আর্তনোইটিক ব্যাক্ষা’ (ইতিহাসে অর্থনৈতিক ব্যাখ্যা), ‘নেতাজি ও মার্কসবাদ’ (নেতাজি ও মার্কসবাদ) ইত্যাদি বই লিখেছেন। রাজারহাটের এলাকার নামকরণ করা হয়েছে ‘বিপ্লবী নিকুঞ্জ সেন পল্লী’।
বিপ্লবী নিকুঞ্জ সেন ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের ২ রা জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আবিষ্কারক জার্মানীর স্যামুয়েল হ্যানিম্যান – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (জন্ম 10 এপ্রিল, 1755, মেইসেন , স্যাক্সনি [বর্তমানে জার্মানিতে] – মৃত্যু 2 জুলাই, 1843, প্যারিস , ফ্রান্স) ছিলেন একজন জার্মান চিকিত্সক, যিনি থেরাপিউটিক পদ্ধতির প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে পরিচিত।

হ্যানিম্যান লাইপজিগ এবং ভিয়েনায় মেডিসিন অধ্যয়ন করেন , 1779 সালে এরলাঙ্গেনে এমডি ডিগ্রি নেন।

বিভিন্ন জায়গায় অনুশীলন করার পরে, তিনি 1784 সালে ড্রেসডেনে স্থায়ী হন এবং তারপর 1789 সালে লাইপজিগে চলে আসেন। পরের বছর, উইলিয়াম কালেনের বক্তৃতাগুলি অনুবাদ করার সময় । মেটেরিয়া মেডিকা জার্মান ভাষায়, তিনি এই সত্য দ্বারা আঘাত করেছিলেন যে সুস্থ শরীরে কুইনাইন দ্বারা উত্পাদিত উপসর্গগুলি ব্যাধিযুক্ত রাজ্যগুলির মতো ছিল যে কুইনাইন নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এই পর্যবেক্ষণ তাকে এই তত্ত্বের উপর জোর দিয়েছিল যে “পছন্দগুলি পছন্দ দ্বারা নিরাময় হয়,” সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরান্টুর ; অর্থাৎ, রোগগুলি নিরাময় করা হয় (বা চিকিত্সা করা উচিত) সেই ওষুধগুলি দ্বারা যা সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে রোগের অনুরূপ লক্ষণগুলি তৈরি করে। তিনি 1796 সালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে তার নীতি প্রকাশ করেছিলেন ; এবং, চার বছর পরে, দৃঢ়প্রত্যয়ী যে অল্প মাত্রায় ওষুধগুলি কার্যকরভাবে তাদের নিরাময় ক্ষমতা প্রয়োগ করে, তিনি তাদের “গতিশীলকরণের ক্ষমতা” সম্পর্কে তার মতবাদকে অগ্রসর করেছিলেন। তার প্রধান কাজ,Organon der rationellen Heilkunst (1810; “অর্গানন অফ রেশনাল মেডিসিন”), তার সিস্টেমের একটি এক্সপোজিশন রয়েছে, যাকে তিনি হোমিওপ্যাথি বা হোমিওপ্যাথি বলেছেন। তারReine Arzneimittellehre, 6 vol. (1811; “বিশুদ্ধ ফার্মাকোলজি”), বিপুল সংখ্যক ওষুধের “প্রমাণ” দ্বারা উত্পাদিত লক্ষণগুলির বিশদ বিবরণ দেয়-অর্থাৎ, তাদের স্বাস্থ্যকর বিষয়গুলিতে পদ্ধতিগতভাবে পরিচালনা করে।
1821 সালে apothecaries শত্রুতা তাকে Leipzig ত্যাগ করতে বাধ্য করে এবং Anhalt-Köthen এর গ্র্যান্ড ডিউকের আমন্ত্রণে তিনি Köthen এ বসবাস করতে যান । চৌদ্দ বছর পরে তিনি প্যারিসে চলে আসেন, যেখানে তিনি তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অত্যন্ত জনপ্রিয়তার সাথে চিকিৎসা অনুশীলন করেন।
হোমিওপ্যাথি , থেরাপিউটিকের একটি পদ্ধতি , 19 শতকে উল্লেখযোগ্যভাবে জনপ্রিয়, যেটি “লাইক নিরাময়” সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরান্টুর , এবং যা রোগীদের ওষুধ বা অন্যান্য চিকিত্সার জন্য নির্ধারিত নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে রোগের লক্ষণগুলি তৈরি করে। রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছে।
1796 সালে জার্মান চিকিত্সক দ্বারা “সাদৃশ্যের আইন” এর উপর ভিত্তি করে চিকিত্সার এই পদ্ধতিটি চালু করা হয়েছিলস্যামুয়েল হ্যানিম্যান । তিনি দাবি করেছিলেন যে কুইনাইন এর একটি বড় ডোজ , যা ম্যালেরিয়ার সফল চিকিত্সার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল , তার মধ্যে ম্যালেরিয়া রোগীদের লক্ষণগুলির মতো প্রভাব তৈরি করেছিল। এইভাবে তিনি উপসংহারে পৌঁছেছিলেন যে সমস্ত রোগের চিকিত্সা করা হয় ওষুধের মাধ্যমে যা সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে সেই রোগের লক্ষণগুলির মতো প্রভাব ফেলে। এটা প্রমাণ করার প্রয়াসে তিনি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেন। হ্যানিম্যান বিশ্বাস করতেন যে ওষুধের বড় ডোজ অসুস্থতা বাড়ায় এবং ওষুধের কার্যকারিতা এইভাবে পাতলা করার সাথে বৃদ্ধি পায়। তদনুসারে, বেশিরভাগ হোমিওপ্যাথিস্টরা ওষুধের মিনিটের ডোজ গ্রহণে বিশ্বাস করতেন ।
অনেক রোগী এবং কিছু চিকিত্সকের কাছে, হোমিওপ্যাথি ছিল রক্তপাত, শোধন, পলিফার্মাসি এবং দিনের অন্যান্য ভারী-হাতের থেরাপির একটি হালকা, স্বাগত বিকল্প । তবে, 20 শতকে, হোমিওপ্যাথিকে সামান্য অনুগ্রহের সাথে দেখা হয়েছিল এবং রোগের অন্তর্নিহিত কারণগুলির পরিবর্তে লক্ষণগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করার জন্য সমালোচনা করা হয়েছিল। হোমিওপ্যাথির এখনও কিছু অনুসারী রয়েছে, এবং আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল লীগ সহ বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমিতি রয়েছে, যার সদর দফতর জার্মানির কোথেনে অবস্থিত।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২ জুলাই, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ২ জুলাই। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭৩০ – জোসিয়া ওজেউড, ইংল্যান্ডের পটুয়া।
১৮৬২ – উইলিয়াম হেনরি ব্র্যাগ, নোবেলজয়ী ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী।

১৮৬৫ – জর্জ ওয়াশিংটন কার্ভার, আফ্রো-আমেরিকান বিজ্ঞানী, আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে প্রভূত উন্নত সাধন করেন।

১৮৭৭ – হেরমান হেস, জার্মানিতে জন্মগ্রহণকারী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইজারল্যান্ডীয় কবি এবং চিত্রকর।
১৯০৬ – জার্মান-মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী হান্স আলব্রেশ্‌ট বেটে জার্মানির স্ট্রাসবুর্গে জন্মগ্রহণ করেন ।

১৯২২ – পিয়েরে কার্দিন বিশ্ব বিখ্যাত ফরাসি ফ্যাশন ডিজাইনার।
১৯২৩ – নোবেল বিজয়ী পোলিশ কবি বিস্লাভা সিমবরস্কা।

১৯২৫ – কঙ্গোর স্বাধীনতা সংগ্রামী জননেতা প্যাট্রিস লুমুম্বা।

১৯৯৬ – জেরিন তাসনিম নাওমি, বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৫৬ – নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতার নাম দেন আলীনগর।
১৭৭৬ – মন্টিনেন্টাল কংগ্রেস কর্তৃক আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা।
১৭৮১ – মহিশুরের হায়দার আলী ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে পরাজিত।
১৮৮৯ – ব্রাজিলে এক রক্তপাতহীন আন্দোলনের মাধ্যমে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটে এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৯০ – আফ্রিকায় ক্রীতদাস প্রথা বিলোপ এবং মাদক ব্যবসা বন্ধের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ব্রাসেলস চুক্তি পাস।
১৯৩৭ – আটলান্টিক অতিক্রমকারী প্রথম নারী বৈমানিক আমেলিয়া ইয়ারহার্ট রহস্যজনকভাবে বিমানসহ নিখোঁজ।
১৯৬১ – সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আসামের ভাষা পরিষদ ভাষা দাবী দিবস পালন করে।
১৯৬৪ – মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত আইন স্বাক্ষর করেন।
১৯৬৭ – আদমশুমারী জালিয়াতির বিরুদ্ধে আসামের দাবী সপ্তাহ ১২ দিন দীর্ঘায়িত করা হয় এবং কাছাড় জেলার সর্বত্র পাবলিক সভা সমাবেশ করা হয় ।
১৯৭২ – ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
১৯৭৬ – দক্ষিণ ভিয়েতনাম ভেঙে যায়। সমাজতান্ত্রিক উত্তর ভিয়েতনাম সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক অব ভিয়েতনাম ঘোষণা করে।
১৯৭৭ – পশ্চিমবঙ্গের সীমানার মধ্যেই দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলকে স্বশাসিত অঞ্চল ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয় রাজ্য ক্যাবিনেটে।
১৯৯০ – মক্কা নগরীর নিকটে মিনার সুড়ঙ্গ দূর্ঘটনায় ১৪১৬ জন হাজী মারা যান।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

৯৩৬ – জার্মানির রাজা হেনরি দ্য ফাউলার।

১৫৬৬ – ফরাসি ভবিষ্যদ্বক্তা, জ্যোতিষী, লেখক এবং ঔষধ প্রস্তুতকারক ও চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রেতা নস্ট্রাদামুস বা মিকেল দে নস্ট্রাদাম।
১৫৯১ – বিখ্যাত ইতালীয় সংগীতজ্ঞ ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি (বিজ্ঞানি গ্যালিলিও গ্যালিলির বাবা)।

১৭৫৭ – সিরাজ-উদ-দৌলা, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব।
১৭৭৮ – জঁ-জাক রুসো, সুইজারল্যান্ডীয় দার্শনিক।
১৮৪৩ – হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আবিষ্কারক জার্মানীর স্যামুয়েল হ্যানিম্যান।
১৮৮১ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০তম প্রেসিডেন্ট জেমস আব্রাহাম গারফিল্ড।

১৯১২ – টম রিচার্ডসন, ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৯২৯ – অমৃতলাল বসু, বাঙালি নাট্যকার ও নাট্য অভিনেতা।
১৯৪৩ – জিমন্যাস্টিক্স হল্যান্ড মহিলা দলের কোচ গেরিট ক্লীরকপারকে ১৯২৮ সালের অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতার অপরাধে পোল্যান্ডের সবিবর বন্দী শিবিরে হত্যা করা হয়।
১৯৬১ – আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, মার্কিন উপন্যাসিক, ছোটগল্প রচয়িতা এবং সাংবাদিক।
১৯৬৯ – প্রবোধচন্দ্র গুহ, প্রখ্যাত নাট্য প্রযোজক ও পরিচালক।

১৯৭৭ – ভ্‌লাদিমির নাবোকভ্‌, রুশ সাহিত্যিক।
১৯৮২ – চেরাবাণ্ডা রাজু, বিপ্লবী কবি, গীতিকার ও নাট্যকার যিনি তেলুগু ভাষায় সাহিত্য রচনা করেছেন।

১৯৮৬ – নিকুঞ্জ সেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবী, রাইটার্স বিল্ডিংস অভিযানের রূপকার।
১৯৯৪ – কলম্বিয়ার ফুটবল খেলোয়াড় এসকোবা একজন অস্ত্রধারীর গুলিতে নিহত হন ।
১৯৯৯ – আমেরিকার লেখক মারিও পুজো।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This