Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৯ জুন, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৯ জুন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) বিশ্ব সিকেল সেল দিবস ৷
আজ যাদের জন্মদিন—-

১৫৯৫ – গুরু হরগোবিন্দ, ষষ্ঠ শিখ গুরু।  .
১৬২৩ – ব্লেজ পাস্কাল, ফরাসি গণিতজ্ঞ, পদার্থবিদ, উদ্ভাবক, লেখক এবং ক্যাথলিক দার্শনিক।  .

১৮৫১ – বিলি মিডউইন্টার, ইংরেজ ক্রিকেটার।  .

১৮৯৬ – রজনীপাম দত্ত, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বৃটিশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা-সভ্য।

১৮৯৬ – ওয়ালিস সিম্পসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমাজকর্মী।
১৮৯৭ – সিরিল নরম্যান হিনশেলউড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ ভৌত রসায়নবিদ।

১৯০১ – রাজচন্দ্র বসু, প্রখ্যাত ভারতীয় গণিতবিদ ও পরিসংখ্যানবিদ।
১৯০৩ – ওয়ালি হ্যামন্ড, ইংল্যান্ডের একজন টেস্ট ক্রিকেটার এবং অধিনায়ক।
১৯০৬ – এর্নস্ট বরিস কাইন, জার্মান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রাণরসায়নবিদ।
১৯১০ – পল জন ফ্লোরি, মার্কিন রসায়নবিদ।
১৯১৭ – যিহোশূয় নিকোমো, জিম্বাবুয়ের গেরিলা নেতা এবং রাজনীতিবিদ।

১৯১৯ – পলিন কেল, আমেরিকান চলচ্চিত্র সমালোচক।
১৯২২ – অউ নিলস বোর, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী।
১৯২৬ – এরনা স্নেইডার হুভার, আমেরিকান গণিতবিদ এবং উদ্ভাবক।
১৯৩০ – জেনা রোলান্ডস, আমেরিকান অভিনেত্রী।
১৯৪৫ – অং সান সু চি, বর্মী রাজনীতিক, কূটনীতিক এবং লেখিকা।
১৯৪৭ – আহমেদ সালমান রুশদি, বৃটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক।
১৯৫১ – আয়মান আল-জাওয়াহিরি, মিশরীয় ও বর্তমান আল কায়েদার প্রধান নেতা।
১৯৫৪ – ক্যাথলিন টার্নার, আমেরিকান অভিনেত্রী।

১৯৬২ – আশিষ বিদ্যার্থী, ভারতীয় অভিনেতা।
১৯৬৪ – বরিস জনসন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এবং লন্ডনের প্রাক্তন মেয়র।
১৯৭০ – রাহুল গান্ধী, ভারতীয় রাজনীতিবিদ।
১৯৭২ – জঁ দ্যুজার্দাঁ, ফরাসি অভিনেতা।
১৯৭৪ – মোশতাক আহমেদ রুহী, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য।
১৯৭৮ – জো সালডানা, আমেরিকান অভিনেত্রী।
১৯৮৫ – কাজল আগরওয়াল, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।
১৯৯২ – কিটন জেনিংস, দক্ষিণ আফ্রিকা বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটার।
১৯৭৬ – স্মরণজিৎ চক্রবর্তী বাঙালি সাহিত্যিক।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৪৬৪ – ফ্রান্সের রাজা একাদশ লুই ডাক ব্যবস্থা চালু করেন।
১৬২১ – তুরস্কের সেনাবাহিনীর কাছে পরাজিত হয় গ্রিস।
১৮২৯ – বৃটেনে আইন পাশের মাধ্যমে মেট্রোপলিটান পুলিশ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
১৮৬১ – অ্যানহেইম পোস্ট অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৬২ – যুক্তরাষ্ট্রে দাস প্রথা বিলুপ্ত হয়।
১৮৬৭ – অস্ট্রিয়ার যুবরাজ ম্যাক্সিমিলানকে ফাঁসী দেয়া হয়।
১৮৭৭ – ভূমি থেকে আকাশে উলম্বভাবে উড্ডয়নের ও আকাশ থেকে ভূমিতে অবতরণের এবং আকাশে স্থির থাকার যান তথা আদি যুগের হেলিকপ্টার পরীক্ষা করা হয়।
১৯১১ – পর্তুগালকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।
১৯২১ – ব্রিটেনে আদশুমারি হয়।
১৯৪৩ – টেক্সাসে জাতিগত দাঙ্গা হয়।
১৯৪৪ – ফিলিপিন সাগরে যুদ্ধ শুরু হয়।
১৯৫১ – নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশান বা ন্যাটো নামক সামরিক জোট গঠন করা হয়।
১৯৫৩ – গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে আমেরিকার বিপ্লবী দম্পতি জুলিয়াস রোজেনবার্গ ও এথেল রোজেনবার্গের মৃত্যুদণ্ড।
১৯৬১ – কুয়েত স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৬৮ – পাকিস্তানের ইতিহাসের বহুল আলোচিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার (রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য) শুনানি শুরু।
১৯৮৯ – পোলান্ডের সাধারণ নির্বাচনে লেস ওয়ালেসার নেতৃত্বাধীন সলিডারিটি নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৩৫০ – ফাখরুল মুহাক্বেক্বীন, ইসলামি আইনবিদ ও পণ্ডিত।

১৭৪৭ – নাদের শাহ, ইরানের শাহ ও আফসারিদ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা।
১৮৪৪ – এতিয়েন জফ্রোয়া সাঁ-হিলের, ফরাসি প্রাণীবিদ ও জীববিজ্ঞানী।
১৯০২ – জন ডালবার্গ, ইংরেজ ইতিহাসবিদ।
১৯০৭ – উমেশচন্দ্র দত্ত, সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ।
১৯১৯ – অক্ষয় কুমার বড়াল, ঊনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি।
১৯৬২ – ফ্রাংক বোরজেগি, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা।
১৯৮১ – সুভাষ মুখোপাধ্যায় ভারতে প্রথম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় নল-জাত শিশু দুর্গার সৃষ্টিকর্তা হিসেবে স্বীকৃত ভারতীয় চিকিৎসক।
১৯৮২ – নলিনী দাস, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী।
১৯৯৬ – স ম আলাউদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা, সাতক্ষীরার সাবেক এমএলএ।
২০০৮ – বরুণ সেনগুপ্ত, ভারতীয় সাংবাদিক, কলকাতার বাংলা দৈনিক “বর্তমান”-এর প্রতিষ্ঠাতা।
২০২০ – রাম চাঁদ গোয়ালা, বাংলাদেশের প্রথম বাম-হাতি স্পিনার।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী কমরেড নলিনী দাস এক কিংবদন্তী নায়ক।।।।

ভূমিকা- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে নলিনী দাস প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী।

নলিনী দাস (১ জানুয়ারি ১৯১০ – ১৯ জুন, ১৯৮২) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। ১৯২৯ সনে মেছুয়াবাজার বোমার মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপন করেন। পলাতক অবস্থায় ১৯৩০ সনে কলকাতার পুলিস কমিশনার চার্লস টেগার্ট সাহেবকে হত্যা-প্রচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হন।

জন্ম—

একনিষ্ঠ দেশ সেবক এই অকৃতদার মহান বীরের জন্ম ১৯১০ সালের ১লা জানুয়ারি উত্তর শাহবাজপুর বর্তমান ভোলার সদর উপজেলায়। স্থানীয় জমিদার স্টেটের নায়েব দূর্গা মোহন দাসের পুত্র নলিনী দাস ভোলা শহরের কালীনাথ বাজার এলাকায় শৈশব কাটিয়েছিলেন। তার শিক্ষা জীবনের শুরুও ভোলাতেই। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় হরতাল ধর্মঘটে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেন। এ কারনে তিনি ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতমাতাকে মুক্তি করার জন্য অগ্নি শপথ নেন। ১৯২৪ সালে তিনি যুক্ত হন বিপ্লববাদী যুগান্তর দলে। পড়াশুনা আর দেশের স্বাধীনতার জন্য দৃঢ়চিত্তে শুরু অক্লান্ত পরিশ্রম। ১৯২৮ সালে ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে বরিশাল বি. এম. কলেজে আই.এস.সি. ক্লাসে ভর্তি হন। বরিশালে সে সময় তিনি একজন ভালো ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। পরীক্ষার আগেই মামলা পড়ায় আর পরীক্ষা দিতে পারেননি।.এস.সি পরীক্ষার পূর্বেই কলিকাতা মেছুয়া বাজার বোমা মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। শুরু হয় পালাতক জীবন। পলাতক অবস্থায় ১৯৩০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতার পুলিশ কমিশনার ট্রেগার্ড সাহেবকে হত্যার প্রচেষ্টা মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। ওই মামলার বিচারে তিনি খালাস পান।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা —
ভোলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র নলিনী দাস ১৯২১ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ও খেলাফত আন্দোলন কমিটির আহ্বানে পাঞ্জাবের জালিওয়ানবাগে ব্রিটিশের নৃশংসয় গণহত্যার প্রতিবাদে হরতাল ও ধর্মঘটে অংশ গ্রহণ করেন। এই অপরাধে ব্রিটিশ পুলিশ অপর ৫ ছাত্রের সাথে নলিনী দাসও গ্রেফতার করে। মাত্র ১১ বছর বয়সে শুরু হয় নলিনী দাসের কারা জীবন। এই মহান সৈনিক আন্দামানের কারা নির্বাসনসহ ৭২ বছর জীবনের ২৩ বছরই কাটিছেন কারাগারের অন্ধকারে। অপর দিকে ২১ বছর ছিলেন আত্মগোপনে। সেখানে থেকেও তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে কাজ—

নলিনী দাস ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিধ্বস্ত কলকাতায় প্রতিরোধ কমিটির কাজে তৎপর ছিলেন।

বরিশালে কর্মজীবন—

নলিনী দাস দেশবিভাগের পর বরিশালে চলে যান। ভোলা জেলায় কৃষক আন্দোলনের কাজে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধকালে এক মিথ্যা মামলায় পাকিস্তান সরকার ১০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করে। হাইকোর্ট থেকে মুক্তি পেলেও জেল গেটে পুনরায় গ্রেপ্তার হন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিনা বিচারে রাজবন্দি হিসেবে আটক থাকেন। এরপর মুক্তি পান এবং আবার আটক করা হয়। ১৯৫৬ খ্রিস্টবাদের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্দী জীবনযাপন করেন। সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভার আমলে ছাড়া পান। ১৯৫৮ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। ১৯৫৮ সাল থেকে আত্মগোপন অবস্থায় বরিশালের গ্রামে গ্রামে কমিউনিস্ট পার্টির সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

জেল ও পলাতক জীবন—

সত্তর বছরের জীবনের ভেতরে ২৩ বছর আন্দামান সেলুলার জেল, ব্রিটিশ ভারতের অন্যানয জেল, ভারতের জেল ও পাকিস্তানের কারাগারে অতিবাহিত করেন। ২০ বছর নয় মাস কাটান গোপন পলাতক জীবন।
একটানা ১৪ বছর জেল খাটার পর তিনি আপর জন্মভূমিতে ফিরে এলে ভোলাবাসী তাকে বিশাল সংবর্ধনা প্রদান করে। ব্রিটিশরা চলে গেলেও নলিনী দাসের ফের পাকিস্তানের সৈরাচারী সরকারের বিভিন্ন অন্যায়ের প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন। ৪৭ সালেই পাকিস্তান মুসলিমলীগ সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। শুরু হয় তার আবারও পলাতক জীবন। ৫০ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালে বরিশালের নিভৃত এক পল্লীতে গোপন সভা চলাকালীন সময়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। পরে তাকে ১০ ছরের কারা দ- দেয়া হয়। ৫৯ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকার তাকে মুক্তি দেন। ৬৯ সালে আইয়ুব খানের শাসনামলে পুনরায় তিনি আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তার রচিত ” স্বাধীনতা সংগ্রামে দ্বীপান্তরে বন্দী” গ্রন্থ থেকে বিপ্লবী জীবনের নানা রোমঞ্চকর তথ্য পাওয়া যায়।
জনকল্যাণে আত্মনিয়োগ—
নলিনী দাস শুধু ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনই করেন নি। তিনি এদেশের অবহেলিত কৃষক শ্রমিকের মুক্তির আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। বিভিন্ন সময়ের দুর্ভিক্ষ, খরা, মহামারি আর দাঙ্গার সময় তিনি সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। স্বাধীনতার পরে দেশ পুনর্গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ভোলা শহরে তার পৈত্রিক কোটি টাকার সম্পদ তিনি জনকল্যাণে ব্যায় করেছেন। গঠন করেছেন দূর্গামোহন দাস জনকল্যাণ ট্রাস্ট। দানবীর হিসেবে পরিচিত এই মহান ব্যক্তির দানকৃত সম্পদ নিয়ে গড়ে তোলা হয় লায়ন্স হোমিও কলেজ ও নলিনী দাস হাসপাতাল, নলিনী দাস বালিকা বিদ্যালয়, নলিনী দাস স্মৃতি পাঠাগারসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান।জনগণের কল্যাণে স্মস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দুর্গামোহন ট্রাস্টের নিকট প্রদান করেন।

মৃত্যু—

ইস্পাত দৃঢ় সংকল্প ও অফুরন্ত কর্মশক্তির অধিকারী, আমৃত্যু ত্যাগী এই বিপ্লবী যোদ্ধা তাঁর সারাটি জীবন মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। মানব সভ্যতাকে সাম্যবাদে উত্তোরণের ক্ষেত্রে বিপ্লবী সংগ্রামে তিনি ছিলেন আত্মনিবেদিত। মার্কসবাদের মতবাদকে গ্রহণ করে কমিউনিজমের মহান ব্রত নিয়ে নিবেদিত করেছেন জীবনের প্রতিটি মূহূর্ত। আপোষহীণ দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের এই মহান ব্যক্তি দূরারোগ্য যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গেলে ১৯৮২ সালের ১৯ জানুয়ারি মৃত্যু বরণ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে ভারতে প্রথম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় নল-জাত শিশু দুর্গার সৃষ্টিকর্তা সুভাষ মুখোপাধ্যায়।।।

সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর জন্ম জানুয়ারি ১৬, ১৯৩১ সালে। তিনি একজন ভারতীয় চিকিৎসক ছিলেন, যিনি ভারতে প্রথম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় নল-জাত শিশু দুর্গার সৃষ্টিকর্তা হিসেবে স্বীকৃত। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের নিকট তার গবেষণার ফল জানানোর ক্ষেত্রে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দ্বারা প্রচণ্ড ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হন এবং হতাশ হয়ে ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে জুন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।

তার জীবন ও মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তপন সিংহ এক ডক্টর কি মউত নামক হিন্দি চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন।
প্রথম জীবন——–
তিনি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে কলিকাতা জাতীয় আয়ুর্বিজ্ঞান বিদ্যামন্দির থেকে এমবিবিএস পাশ করেন এবং ধাত্রীবিদ্যায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি ঐ বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শারীরবিদ্যা বিষয়ে বিএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সচ্চিদানন্দ ব্যানার্জীর অধীনে প্রজনন শারীরবিদ্যা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইংল্যান্ড যান এবং ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক জন লোরেনের সঙ্গে গবেষণা করে লিউটিনাইজিং হরমোনের পরিমাপ নির্ণয়ের এক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে দ্বিতীয়বার পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।
গবেষণা——-
১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা অক্টোবর তিনি ভারতের প্রথম চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী হিসেবে এক নল-জাত শিশুর জন্ম দিয়ে ইতিহাস স্থাপন করেন। তিনি এই শিশুটির নাম রাখেন দুর্গা (কানুপ্রিয়া আগরওয়াল)। ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক প্যাট্রিক স্টেপটো ও রবার্ট জিওফ্রি এডওয়ার্ডস দ্বারা ওল্ডহ্যাম জেনারেল হসপিটালে পৃথিবীর প্রথম নল-জাত শিশু লুইস জন ব্রাউনের জন্ম দেওয়ার ৬৭ দিন পরে সুভাষের গবেষণার দ্বারা দুর্গার জন্ম হয়।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে তার গবেষণার সম্বন্ধে বক্তৃতা দিতে চাইলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে অস্বীকার করে। এই গবেষণার স্বীকৃতি প্রদান না করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্যদপ্তর তার গবেষণার সত্যতা সম্বন্ধেই সন্দেহ প্রকাশ করে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই নভেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সুভাষের সমস্ত গবেষণা মিথ্যা বলে এই কমিটি রায় দেয়। শাস্তি স্বরূপ সুভাষকে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি নামক প্রতিষ্ঠানের চক্ষু বিভাগে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়, যার ফলে প্রজনন শারীরবিদ্যা সমন্ধে সমস্ত গবেষণা তাকে বন্ধ করে দিতে হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমলাতান্ত্রিকতা ও পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক সমাজ দ্বারা ক্রমাগত বিদ্রুপ ও অপমানে হতাশ হয়ে সুভাষ ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে জুন কলকাতায় নিজের বাসভবনে আত্মহত্যা করেন।

স্বীকৃতি———

টি. সি. আনন্দ কুমারের গবেষণার ফলে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই আগস্ট হর্ষবর্ধন রেড্ডি বুরি জন্মগ্রহণ করলে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম নলজাত শিশু বলে গণ্য করা হয়।

১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ কুমার কলকাতা শহরে অনুষ্ঠিত একটি বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগ দিতে এলে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের গবেষণা নথিগুলি তার হাতে আসে। এই সমস্ত নথিগুলি যাচাই করে ও দুউরগার পিতা-মাতার সাথে আলোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ই ছিলেন প্রথম নল-জাত শিশুর স্রষ্টা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরকে পাঠানো গবেষণা সংক্রান্ত সুভাষের চিঠির কথা তিনি সংবাদমাদ্যমে প্রচার করেন। কানুপ্রিয়া আগরওয়ালা বা দুর্গা তার ২৫ তম জন্মদিনে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের এক স্মৃতিসভায় নিজের পরিচয় সর্বসমক্ষে জানিয়ে ঘোষণা করেন যে, সুভাষের গবেষণা মিথ্যে ছিল না।
জুন ১৯, ১৯৮১ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব সিকেল সেল দিবস কি, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং পালনের গুরুত্ব।।।।।

সিকল সেল ডিজিজ হল থ্যালাসেমিয়া ও হিমোফিলিয়ার মতোই জিন বাহিত। এই রোগটি উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং ওডিশায় বেশ সুপরিচিত। জনসংখ্যার প্রায় ০.৪% এসসিএতে ভোগেন এবং আমাদের দেশে ১০% বাহকই নতুন রোগীর জন্ম দেয়।

সরকার ২০৪৭ সালের মধ্যে সিকেল সেল অ্যানিমিয়া দূর করার জন্য মিশন মোডে কাজ করবে।

কিন্তু কী এই সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, কেন হয়, কী করেই বা চিনবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সিকেল সেল অ্যানিমিয়া কী?
সিকেল সেল অ্যানিমিয়া ( Sickle Cell Anaemia), এটি অ্যানিমিয়া গোষ্ঠীরই একটি রোগ। যা আমাদের শরীরে হিমগ্লোবিনকে আক্রান্ত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই অসুখটি বংশগত অর্থাৎ উত্তরাধিকারসূত্রে রক্তের ব্যাধি বলা যেতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে লোহিত রক্তকণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে না। এর ফলে শরীরে অক্সিজেন বহন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের শরীরে লাল রক্ত কোষগুলি নমনীয় এবং ডিস্ক-আকারযুক্ত। সাধারণত, তারা সহজেই রক্তনালীগুলির মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। তবে সিকেল সেল অ্যানিমিয়ায় লাল রক্ত কোষগুলি কাস্তের আকার ধারণ করে। কোনও ক্ষেত্রে ক্রিসেন্ট চাঁদের (Sickle Or A Crescent Moon) আকারে দেখা যায়। চিকিৎসকদের মতে, এই রোগে আক্রান্ত হলে কোষগুলি আঠালো এবং অনমনীয় হয়ে যায়। সেগুলি ছোট রক্তনালীগুলির মধ্য দিয়ে যেতে পারে না। তাই দেহের বিভিন্ন অংশে রক্ত এবং অক্সিজেন প্রবাহকে ধীর এবং ব্লক করে দেয় ।
সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার প্রকারভেদ—
হিমোগ্লোবিন এসএস: এটি সবচেয়ে সাধারণ। এটি হলে রোগী মায়ের পাশাপাশি বাবার কাছ থেকে হিমোগ্লোবিন এস জিনের অনুলিপি অর্জন করে। এটি অত্যন্ত গুরুতর ধরণের এসসিডি।
হিমোগ্লোবিন এসসি: এটি এসসিডির দ্বিতীয় রূপ। পিতা-মাতার একজনের থেকে এর উত্তরাধিকারী হয় রোগী।
হিমোগ্লোবিন এসবি + (বিটা) থ্যালাসেমিয়া: এটি বিটা-গ্লোবিন জিনের উৎপাদনকে প্রভাবিত করে। বিটা প্রোটিনের কম উৎপাদন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোহিত রক্ত কণিকার আকার হ্রাস পায়।
হিমোগ্লোবিন এসবি 0 (বিটা-শূন্য) থ্যালাসেমিয়া: এটি বিটা-গ্লোবিন জিনের সঙ্গে জড়িত।
Finger Pain: আঙুলে চরম ব্যথা হয়, কিছুতেই কমছে না? এই ঘরোয়া কৌশল ব্যবহার করে দেখুন তো
সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার লক্ষণ—
লোহিত রক্ত কণিকা কমে যাবে-জন্মের ৫ মাস বয়সেই সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার প্রথম লক্ষণগুলি টের পাওয়া যায়। যখন সিকেলের কোষগুলি সহজেই ভেঙে যাবে তখন শরীরে লোহিত রক্তকণিকা কমে যাবে।
ক্লান্তি-এটি রক্তাল্পতা বা লোহিত রক্ত কণিকার সংকট তৈরি করে দেয়। এ কারণে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পায় না যার ফলে ক্লান্তি তৈরি হয়।
ব্যাথা-যখন সিকেল আকৃতির কোষগুলি রক্তনালীগুলির মাধ্যমে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেবে তখন episodic ব্যথা অনুভব করা যায়। এই ব্যথা কখনও কখনও কয়েক সপ্তাহের জন্য স্থায়ী হতে পারে।
ফোলা-সিকেল-আকৃতির কোষগুলি আপনার দেহের বিভিন্ন অংশে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয় তাই ফোলাভাব দেখা দেবে শরীরে।
দৃষ্টির ঘাটতি- সিকেল সেলের কোষগুলি চোখে সরবরাহকারী রক্তনালীগুলিতে আটকে যেতে পারে। তাই ভিজ্যুয়াল চিত্রগুলি ঠিক মতো তৈরি হয় না।, যার ফলে কম দেখতে শুরু করবেন।
রোগ নির্ণয়—-
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। ডাক্তারবাবুরা অবশ্য এই রোগটি নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য এইচবি ইলেক্ট্রোফোরসিসটি (Hb electrophoresis) করতেও বলতে পারেন।
কেমন করে এই রোগ ঠেকিয়ে রাখতে হয়?
বাচ্চাদের ৫ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত পেনিসিলিন দিতে হবে।
এটি এসসিডির (SCD) কারণে ক্ষতিগ্রস্থ অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপনের সঙ্গে জড়িত। কোনও দাতা প্রতিস্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর অস্থি মজ্জা দান করবেন।
শাকসবজি, ফলমূল সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর ডায়েট এই রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
উচ্চ তাপমাত্রা এড়িয়ে চলতে বলেন চিকিৎসকরা, যা এপিসোডিক ব্যথার ঝুঁকি বাড়ায়।
সব শেষে বলা যায় উপসর্গ দেখা মাত্র চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, আরও বিস্তারিত জানতে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।

।।তথ্য :: সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম ভারতীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ক্রীড়াবিদ মিলখা সিং – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।।

ভক্তদের কাছে ফ্লাইং শিখ নামে পরিচিত, মিলখা সিং একজন ভারতীয় ট্র্যাক এবং ফিল্ড স্প্রিন্টার ছিলেন এবং এশিয়ান গেমসের পাশাপাশি কমনওয়েলথ গেমসে ৪০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণপদক জিতে তিনিই একমাত্র ক্রীড়াবিদ। মিলখা সিং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম ভারতীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ক্রীড়াবিদ।

তাকে স্বাধীন ভারতের প্রথম তারকা ক্রীড়াবিদ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন—–

১৯২৯ সালের ২০ নভেম্বর ততকালীন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গোবিন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভারত বিভাগের সময় পাকিস্তানে তার পিতামাতা ও সাত ভাইবোনকে তার সামনেই হত্যা করা হয়; সেসময় তার পিতা তাকে বলেন, ভাগ মিলখা, ভাগ। ভারত ভাগের সময় অনাথ , সিং ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগে তিনি রাস্তার পাশের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেনাবাহিনীতে সিং একজন স্প্রিন্টার হিসাবে তার দক্ষতা উপলব্ধি করেছিলেন। ২০০-মিটার এবং ৪০০-মিটার স্প্রিন্টে জাতীয় ট্রায়াল জয়ের পর, মেলবোর্নে ১৯৫৬ সালের অলিম্পিক গেমসে সেই ইভেন্টগুলির জন্য প্রাথমিক উত্তাপের সময় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল ।

অর্জন——

মিলখা সিং ১৯৫৮ সালের এশিয়াডে ২০০ মি. ও ৪০০ মি. দৌড়ে স্বর্ণপদক অর্জনের পর ১৯৬২ সালের এশিয়াডে ৪০০ মি. ও ৪ x ৪০০ মি. রিলে দৌড়েও স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

সম্মাননা—–

সিং ১৯৫৯ সালে পদ্মশ্রী (ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানের মধ্যে একটি) ভূষিত হন। অবসর গ্রহণের পর তিনি পাঞ্জাবের ক্রীড়া পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । সিংয়ের আত্মজীবনী, দ্য রেস অফ মাই লাইফ (তাঁর মেয়ে সোনিয়া সানওয়ালকাকে নিয়ে লেখা), ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।

মৃত্যু—-

১৮ জুন ২০২১ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী অনিলকুমার দাসের আবাদান আজও ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন ই এক বাঙালি বিপ্লবী ছিলেন অনিলকুমার দাস ।অনিলকুমার দাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী, যিনি ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ব্রিটিশ শাসকের অমানুষিক অত্যাচারে মারা যান।

জন্ম ——–

অনিলকুমার দাস ১৯০৬ সালের ১৮ জুন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় তাঁর পিতার কর্মস্থলে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় পাইকপাড়া। পিতা ছিলেন নিবারণচন্দ্র দাস, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী। মা কিরণবালা দেবী। তাদের তিন পুত্রের মধ্যে (অন্য দুইজন হলেন সুনীল দাস এবং পরিমল দাস) এবং এক কন্যা (লতিকা সেন), অনিলকুমার ছিলেন জ্যেষ্ঠ। এরা সবাই স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িত ছিলেন।

শিক্ষা——–

অনিলকুমার ঢাকার একজন ধনী ব্যবসায়ী প্রবোধচন্দ্রের তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ছাত্রজীবন শুরু হয় এবং তখন থেকেই তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিত হন। ঢাকার পাইকপাড়ায় যুবদল ‘শ্রীসংঘ’-এর ব্যানারে বিপ্লবী সাধনায় জড়ো হয়। বিশিষ্ট ছাত্রনেতা সুবোধ মজুমদার (ডাক নাম মন) এই যুবদলের অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তিনি স্নাতক পর্যন্ত তার মায়ের সাথে পড়াশোনা করেছেন। এরপর অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে। এখানে তার সহপাঠী ছিলেন বিপ্লবী শৈলেশ রায়, রেবতী মোহন বর্মণ, হরিপদ চক্রবর্তী এবং অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯২৮ সালে রসায়নে M.Sc পাশ করেন।

বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ——

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও সরকারি চাকরি না করে ‘শ্রীসংঘ’-এর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেন। বিপ্লবী অনিল চন্দ্র রায় এবং নেতা লীলা নাগকে সহকর্মী হিসেবে পান। নিজের আয়ের জন্য তিনি গণিতের কিছু পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। এদিকে, ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে এবং ফলস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার সমস্ত বিপ্লবীদের গ্রেফতার করতে থাকে। যথারীতি অনিলকুমারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি। পুলিশ তার বাড়ি ঘেরাও করলে সে আত্মগোপনে চলে যায়। ১৯৩০ সালের ১০ মে তার নেতৃত্বে ভৈরবাজারে ট্রেন ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় গত ৬ জুন বিক্রমপুরের তালতলা স্টিমার ঘাট থেকে তাকে আটক করা হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ওপর চলতে থাকে অমানবিক নির্যাতন। অবশেষে, ১৯৩২ সালের ১৭ জুন, তিনি নির্যাতনের ফলে মারা যান।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে, স্বশিক্ষিত খ্যাতিমান ভারতীয় চিত্রশিল্পী – সুনয়নী দেবী।।।।

সুনয়নী দেবী একজন বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চিত্রশিল্পী।   সুনয়নী দেবী ভারতের কলকাতার সম্ভ্রান্ত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।   তিনি একজন স্বশিক্ষিত শিল্পী, তিনি কারও কাছ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেননি।   বরং, তার শিল্পী ভাই অবনীন্দ্রনাথ, জ্ঞানেন্দ্রনাথ এবং সমরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, তিনি ৩০ বছর বয়সে ছবি আঁকা শুরু করেন। ১২ বছর বয়সে রাজা রামমোহন রায়ের নাতি রজনীমোহন চ্যাটার্জির সাথে তার বিয়ে হয়।

সুনয়নী দেবী ১৮৭৫ সালের ১৮ জুন ভারতের সম্ভ্রান্ত ঠাকুর পরিবারের গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সৌদামিনী দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।

গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন যুবরাজ দ্বারকানাথ ঠাকুরের প্রপৌত্র এবং মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৃতীয় ভাই গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র।   সেদিক থেকে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর পিতা।   বারো বছর বয়সে রজনীমোহন চ্যাটার্জির সাথে তার বিয়ে হয়।   যদিও চিত্রকলা বা শিল্পের অন্য কোনও ফর্মে তার কোনও আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না, তবে শিল্পের ক্ষেত্রে একজন মহিলা হিসাবে তিনি যে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন তা পার্থ মিত্রের ‘দ্য ট্রায়াম্ফ অফ মডার্নিজম: ইন্ডিয়া’জ আর্টিস্ট অ্যান্ড দ্য অ্যাভান্ট গ্রেড’ (1922-1947) বই থেকে পাওয়া যায়।  )   জানতে পারেন।

চিত্র শৈলী এবং বিষয়—
‘বেঙ্গল আর্ট স্কুল’ এর একজন প্রকৃত প্রাচীন চিত্রশিল্পী হওয়ার অনুপ্রেরণায় তিনি লোক পট আঁকেন যা ঠাকুর বাড়ির মহিলাদের মধ্যে খুবই প্রচলিত ও গৃহস্থালিসংক্রান্ত বিষয় ছিল।
২৩শে ফেব্রুয়ারি ১৯৬২ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৮ জুন, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১৮ জুন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮৭৫ – সুনয়নী দেবী, স্বশিক্ষিত খ্যাতিমান ভারতীয় চিত্রশিল্পী।
১৯০১ – অ্যানেস্তেশিয়া নিকোলায়েভনা, রুশ সম্রাট নিকোলাস দ্বিতীয় এর সবচেয়ে ছোট মেয়ে।
১৯০৩ – আলোন্‌জো চার্চ, মার্কিন গণিতবিদ এবং যুক্তিবিদ।

১৯০৬ – অনিলকুমার দাস, স্বাধীনতা সংগ্রামী।
১৯০৭ – ফ্রিটজফ শুয়ন, সুইজারল্যান্ডের আধ্যাত্মবাদী দার্শনিক।

১৯১৮ – অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়, ভারতের বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক ।
১৯৩২ – ডাডলি হের্শবাখ, মার্কিন রসায়নবিদ।
১৯৪১ – আতাউর রহমান, একুশে পদক বিজয়ী বাংলাদেশী মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা ও মঞ্চনাটক নির্দেশক।
১৯৪২ – রজার এবার্ট, আমেরিকান সাংবাদিক, সমালোচক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৪২ – পল ম্যাককার্টনি, ইংরেজ পপ সঙ্গীত তারকা।
১৯৫০ – মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশী সাংবাদিক।
১৯৫২ – ক্যারল কেইন, আমেরিকান অভিনেত্রী।
১৯৬২ – লিসা র‌্যান্ডল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক।
১৯৮৬ – রিশার গাস্কে, ফরাসি টেনিস খেলোয়াড়।
১৯৮৭ – (ক) মঈন আলী, পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত একজন ইংরেজ ক্রিকেটার।
(খ) কাইল এ্যাবট, দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—

১৫৭৬ – রানা প্রতাপ ও সম্রাট আকবরের মধ্যে হলদিঘাটের যুদ্ধ শুরু হয়।
১৭৭৮ – আমেরিকার বিপ্লব যুদ্ধে ব্রিটিশরা ফিলাডেলফিয়া ত্যাগ করে।
১৮১২ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৮১৫ – ইংরেজ ও জার্মানদের মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে ওয়াটারলুর যুদ্ধে নেপোলিয়ন চূড়ান্ত পরাজয় বরণ করেন।
১৮৩০ – ফ্রান্স আলজেরিয়া দখল করে।
১৮৮৭ – জার্মানি ও রাশিয়ার মধ্যে রি-ইনস্যুরেন্স চুক্তি সম্পাদিত হয়।
১৯০৮ – ইউনিভার্সিটি অব ফিলিপিনস প্রতিষ্ঠা হয়।
১৯১৩ – মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘ভারতবর্ষ’ প্রকাশিত হয়।
১৯৪৪ – সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজ ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্তির সংগ্রাম শুরু করে।
১৯৫৩ – জেনারেল এম নাগিরকে প্রেসিডেন্ট করে মিসরকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা।
১৯৬৫ – এয়ার ভাইস মার্শাল এনগুয়েন কাওকির দ. ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী পদে ক্ষমতারোহণ।
১৯৭২ – বঙ্গবন্ধু সুপ্রিমকোর্ট উদ্বোধন করেন।
১৯৭৫ – সৌদি বাদশা ফয়সালকে হত্যার দায়ে তার ভাতিজা প্রিন্স মুসায়েদের প্রকাশ্যের শিরশ্ছেদ।
১৯৭৯ – যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ভিয়েনায় দ্বিতীয় সল্ট চুক্তি সম্পাদিত হয়।
১৯৯৭ – ক্রিকেটে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে স্ট্যাটাস মর্যাদা লাভ।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯০২ – ইংরেজ ব্যঙ্গকবি স্যামুয়েল বাটলার।
১৯২২ – ইয়াকোবুস কাপ্টাইন, ওলন্দাজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
১৯২৮ – রুয়াল আমুনসেন, নরওয়েজিয়ান পাইলট এবং এক্সপ্লোরার।
১৯৩৬ – মাক্সিম গোর্কি, বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক।
১৯৪৬ – খান বাহাদুর আবদুল মোমেন, বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের সদস্য, সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অপারেশনের অফিসার।

১৯৫৩ – স্যার আবদুল হালিম গজনভি, বাঙালি রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি।
১৯৫৯ – ইথেল ব্যারিমোর, আমেরিকান অভিনেত্রী।
১৯৭৮ – রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী জাহেদুর রহিম।
১৯৮০ – গোপালদাস মজুমদার খ্যাতনামা প্রকাশক।
১৯৮৬ – ফ্রান্সেস স্কট ফিট্‌জেরাল্ড, মার্কিন লেখিকা, সাংবাদিক ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য।
১৯৮৭ – বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, গীতিকার,সঙ্গীতকার,গল্পকার,ঔপন্যাসিক অভিনেতা হীরেন বসু।
২০০২ – নীলিমা ইব্রাহিম, বাঙালি শিক্ষাবিদ।
২০০৫ – মুশতাক আলী, ভারতীয় ক্রিকেটার।
২০০৯ – আলী আকবর খাঁ, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী।
২০১০ – হোসে সারামাগো, পর্তুগীজ কথাসাহিত্যিক।
২০২১ – ভারতের প্রথম ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ক্রীড়াবিদ মিলখা সিং।
২০২৩ – স্টকটন রাশ; ওশানগেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা; টাইটান নিমজ্জনে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বিশ্ব মরুময়তা ও অনাবৃষ্টি প্রতিরোধ দিবস কি, কেন পালিত হয় এবং পালনের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন।।।।।।

আজ বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস। দিবসটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্ববাসীর চোখের সামনে মরুকরণ সম্পর্কে তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলা। মরুকরণ এবং খরা মোকাবেলা করার বিশ্ব দিবস হল একটি জাতিসংঘের পালন যা প্রতি বছর ১৭ জুন পালিত হয়। এর উদ্দেশ্য হল মরুকরণ এবং খরার উপস্থিতি সম্বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মরুকরণ প্রতিরোধের পদ্ধতিগুলি হাইলাইট করা এবং খরা থেকে পুনরুদ্ধার করা।

প্রতি বছরের বৈশ্বিক উদযাপনের একটি অনন্য, অভিনব জোর রয়েছে যা আগে গড়ে ওঠেনি। ১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের পক্ষ থেকে খরা ও মরুকরণের প্রতি সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। এরপর ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৯৫ সাল থেকে ১৭ জুন বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধ দিবস পালন করা হচ্ছে। এই দিনটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের রেজোলিউশন A/RES/৪৯/১১৫ দ্বারা ৩০ জানুয়ারী, ১৯৯৫ তারিখে ঘোষণা করা হয়েছিল, যেদিন মরুকরণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জাতিসংঘ কনভেনশনের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল।
টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা ঘোষণা করে যে “আমরা গ্রহটিকে অবক্ষয় থেকে রক্ষা করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, যার মধ্যে রয়েছে টেকসই ব্যবহার ও উৎপাদন, টেকসইভাবে এর প্রাকৃতিক সম্পদ পরিচালনা করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে এটি বর্তমানের চাহিদাগুলিকে সমর্থন করতে পারে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের”. বিশেষভাবে, SDG লক্ষ্য ১৫ : ল্যান্ড অন লাইফ ভূমির অবক্ষয় বন্ধ করতে এবং বিপরীত করার জন্য জাতিসংঘ এবং SDG স্বাক্ষরকারী দেশগুলির সংকল্পকে বলে।

মরুকরণ মোকাবেলায় জাতিসংঘের কনভেনশন (UNCCD)
মরুকরণ এবং খরার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য, ১৯৯৪ সালে ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট মরুকরণ (UNCCD) স্থাপিত হয়েছিল। এটি একমাত্র আইনিভাবে বাধ্যতামূলক আন্তর্জাতিক চুক্তি যা পরিবেশ এবং উন্নয়নকে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত করে। ইউএনসিসিডির লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী কর্মকাণ্ডকে একত্রিত করা এবং মরুকরণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং খরার প্রভাব কমানোর জন্য জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা তৈরিতে দেশগুলিকে সহায়তা করে। তবে, জাতিসংঘ এ দিবসকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালনের আহ্বান জানালেও দুঃখজনকভাবে দেশে দিবসটি ততটা গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয় না। ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতা তৈরির ক্ষেত্রেও নেই তেমন উদ্যোগ।

আজকের পৃথিবীতে পরিবেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মরুকরণ। জাতিসংঘের দেয়া তথ্যমতে, পৃথিবীর প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য ক্ষয়িষ্ণু ভূমির ওপর নির্ভরশীল। আর পৃথিবীর অতিদরিদ্রদের ৪২ ভাগই বাস করে ক্ষয়ে যাওয়া এলাকায়, যারা মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। পৃথিবী প্রতিনিয়ত তার রূপ পাল্টাচ্ছে। আর পৃথিবীবাসীর জন্য অশনি সংকেতস্বরূপ সিডর, সুনামি, ভূমিকম্প, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বন্যাসহ বিভিন্ন রকমের রোগবালাই দেখা দিচ্ছে দুর্যোগ আকারে। এর ফলে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ, ক্ষতির মুখে পড়ছে মাঠ-ফসল; বাড়ছে জনসংখ্যা, বাড়ছে খাদ্যসংকট। তবে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে জলবায়ুর কুপ্রভাবে বিশ্বে মরুকরণ একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা যদি এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দিন দিন আমাদের ফসলি জমি কমে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য; একই সঙ্গে উজাড় হচ্ছে গাছপালা ও বন-জঙ্গল। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, আমাদের নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন যেমন আমাদের ফসলি জমি কমছে, তেমনি খরায় উর্বরতা হারাচ্ছে জমি। এ অবস্থায় পরিবেশের প্রতি মনোযোগী হওয়া আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।মরুকরণ সমস্যাটি বিশাল এক ক্ষতিকর ভৌগোলিক পরিবর্তনের নাম। এজন্য এখনই প্রয়োজন মরুকরণ বিস্তার রোধকল্পে সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা যদি এভাবে বেড়ে যায়, তাহলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। এতে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, সুপেয় জল ও প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি তাদের অধিকার, গৃহায়ন ও অন্যান্য অবকাঠামোগত সুবিধা হুমকির মুখে পড়বে। ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি উপসাহারীয় আফ্রিকায় খরার কারণে প্রায় ৩০ লক্ষ লোকের মৃত্যু ঘটে। সুতরাং মরুকরণ সমস্যাটি বিশাল এক ক্ষতিকর ভৌগোলিক পরিবর্তনের নাম। মরুময়তা ঠেকাতে অধিক পরিমাণে গাছ লাগানোর কথা বলা হয়। যদিও আদতে গাছ আপনারই উপকার করবে। গাছের ফল যেমন আপনি প্রজন্মান্তরে খেতে পারেন। আন্তর্জাতিকভাবে যত পরিকল্পনাই নেওয়া হোক ব্যক্তিগতভাবে তার বাস্তবায়ন না করলে তা পরিকল্পনায়ই থেকে যাবে। বিশেষ করে প্রত্যেকে পরিবেশের প্রতি সচেতন হয়ে প্রত্যেকটি কাজ পরিবেশসম্মতভাবে করলে তা যেমন ব্যক্তির লাভ, তেমনি পরিবেশেরই লাভ। মানুষ যখনই পরিবেশের সঙ্গে নির্দয় আচরণ করে তখনই পরিবেশ তার প্রতিশোধ নেয়। সিডর, আইলাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাক্ষী আমরা। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার চিত্রও দেখা যায়। এমনকি নেপালের মতো ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হওয়াও হয়তো অসম্ভব নয়।

কিন্তু যত দিন যাচ্ছে আমাদের যেনো কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।বিশ্ব মরুকরণ ও খরা প্রতিরোধের অঙ্গীকার না করে নির্বিচারে গাছপালা নিধন করে চলেছি। যার ফলসরুপ দেখা দিচ্ছে ভূমিক্ষয়, বৃষ্টি হীনতা, ও নানান প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আর এর ফল ভুক্তে হচ্ছে অমদেরকেই।
বাড়ির পরিবেশ ঠিক রাখতে আমরা এসি লাগিয়ে আরাম করছি। কাজের গতি বাড়াচ্ছি। শান্তির ঘুমে স্বপ্ন সুন্দর হয়ে উঠছে। আমরা পৃথিবীর কথা ভাবছি না। শহর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গড়ে উঠছে সভ্যতার বিশ্বায়ন আর ঠিক তখনই ধ্বংস হচ্ছে সবুজ। গাছের থেকে বড় বন্ধু এই পৃথিবীতে আর তেমন নেই।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দিন দিন আমাদের ফসলি জমি কমে যাচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য; একই সঙ্গে উজাড় হচ্ছে গাছপালা ও বন-জঙ্গল। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, আমাদের নদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন যেমন আমাদের ফসলি জমি কমছে, তেমনি খরায় উর্বরতা হারাচ্ছে জমি। এ অবস্থায় পরিবেশের প্রতি মনোযোগী হওয়া আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এখন ই যদি সচেতন না হই আমরা তা হলে আগামী দিনে নেমে আসবে আরো প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আগামী প্রজন্ম সম্মুখীন হবে অস্তিত্তের সংকটে। তাই আসুন এই বিশেষ দিনে আমরা সকলে শপথ নেই প্রকৃতিকে রক্ষার।

বার্ষিক থিম—-

২০২৩ – তার জমি। তার অধিকার.
২০২২ – একসাথে খরা থেকে উঠে আসা
২০২১ – পুনরুদ্ধার, জমি এবং পুনরুদ্ধার। আমরা সুস্থ জমি দিয়ে আরও ভালভাবে গড়ে তুলি
২০২০ – খাদ্য। খাওয়ান। ফাইবার – খরচ এবং জমির মধ্যে সংযোগ
২০১৯ – আসুন ভবিষ্যত টি ফার্টস বাড়াই)
২০১৮ – জমির প্রকৃত মূল্য আছে। এতে বিনিয়োগ করুন
২০১৭ – ভূমি ক্ষয় এবং অভিবাসনের মধ্যে লিঙ্ক (সিরিয়ার কৃষি ব্যবস্থার পরিবেশগত কারণে ব্যর্থতার পর সিরিয়ার ব্যাপক দেশত্যাগের আলোকে) #2017WDCD
২০১৬ – পৃথিবী রক্ষা করুন। জমি পুনরুদ্ধার করুন। মানুষ জড়িত.
২০১৫ – টেকসই খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন। – “ফ্রি লাঞ্চ বলে কিছু নেই। সুস্থ মাটিতে বিনিয়োগ করুন”
২০০৯ – জমি এবং শক্তি সংরক্ষণ = আমাদের সাধারণ ভবিষ্যত সুরক্ষিত
২০০৮ – টেকসই কৃষির জন্য ভূমি ক্ষয় মোকাবিলা
২০০৭ – মরুকরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন – একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ
২০০৬ – মরুভূমির সৌন্দর্য – মরুকরণের চ্যালেঞ্জ
২০০৫ – নারী ও মরুকরণ
২০০৪ – মরুকরণের সামাজিক মাত্রা: মাইগ্রেশন এবং দারিদ্র
২০০৩ – মরুভূমি এবং মরুকরণের আন্তর্জাতিক বছর (IYDD)
২০০২ – জমির অবক্ষয়

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে কিংবদন্তি বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা – অনুপ কুমার।।।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন——-

বাংলা চলচ্চিত্রের জগতে এক অতি পরিচিত নাম অনুপ কুমার। তাঁকে চিনেন না এমন বাঙালি পাওয়া খুব দুষ্কর। তিনি তাঁর অভিনয় দক্ষতায় মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

অনুপ কুমার ছিলেন একজন ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা। যদিও তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, তিনি মূলত একজন থিয়েটার কর্মী ছিলেন।

অনুপকুমার ব্রিটিশ ভারতের উত্তর কলকাতায় ১৯৩০ সালের ১৭ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম সত্যেন দাস। পিতা নজরুল সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার ধীরেন্দ্রনাথ দাস এবং মাতা বিজয়া দেবী। তাদের আদি নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার পান্ডুয়া। অনুপকুমার কলকাতার ডাফ স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তিনি খুব অল্প বয়সে অভিনয় শুরু করেছিলেন এবং তার বাবার দ্বারা হাতেখড়ি হয়েছিল। ১৯৩৮ সালে যখন তিনি মাত্র আট বছর বয়সে ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত “হাল বাংলা” ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। শিশিরকুমার ভাদুড়ীর ‘শ্রীরঙ্গম’-এ শিক্ষা শুরু হয়।

অভিনয় জীবন——

চোদ্দ বৎসর বয়সেই পেশাদারি মঞ্চে “টিপু সুলতান” নাটকে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন অনুপ কুমার। শ্রীরঙ্গম, বিশ্বরূপা, কাশী বিশ্বনাথ মঞ্চে নিয়মিত অভিনয় করতেন। পেশাদারি মঞ্চে আনুমানিক ৫০ টি নাটকে অভিনয় করেছেন।অনুপকুমার ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ থেকেই পেশাদার মঞ্চে নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।

তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলি হল –

ছদ্মবেশী মল্লিকা, অঘটন, নূরজাহান, শ্যামলী, হঠাৎ নবাব, চন্দনপুরের চোর, কী বিভ্রাট, জয় মা কালী বোডিং, রাম শ্যাম যদু।
সময়ের সাথে সাথে তিনি নিজেকে একজন বিশিষ্ট কৌতুক অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। অভিনয়ে খুব ভালো ছিলেন। বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র ও ‘যাত্রাপালা’ ছবিতে অভিনয় করেন। “নিমন্ত্রণ” ছবিতে সেরা অভিনেতার জন্য জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অভিনয় মূলত পার্শ্ব চরিত্রে। তবে কয়েকটি ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং অনেক চলচ্চিত্র ইতিহাসে পাতায় স্থান করে নিয়েছেন।

তাঁর অভিনিত উল্লেখযোগ্য ছায়াছবিগুলি হল –

বরযাত্রী, কানামাছি, পলাতক, অমৃতকুম্ভের সন্ধানে, শহর থেকে দূরে, বালিকাবধূ, নিমন্ত্রণ, বসন্ত বিলাপ, এক যে ছিল দেশ, মৌচাক, দাদার কীর্তি, প্রতিশোধ।

হিন্দি সিনেমা-

চন্দ্রশেখর, পরিবর্তন, কিতনে পাস কিতনে দূর।
পুরস্কার ও সম্মাননা—-
বিএফজেএ’পুরস্কার পান (১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ), স্টার থিয়েটার থেকে পান রূপার পদক(১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে), পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি পুরস্কার ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ), শিরোমণি পুরস্কার (১৯৯১ খ্রিস্টাব্দ), দীনবন্ধু পুরস্কার ( ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ), শ্রেষ্ঠ পরিচালকের স্বীকৃতি (১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ)।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This