“প্রতিভা বসু (১৩ মার্চ, ১৯১৫ – ১৩ অক্টোবর, ২০০৬) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার ও প্রাবন্ধিক। পারিবারিক পরিচয়ে তিনি বুদ্ধদেব বসুর স্ত্রী।”
প্রতিভা বসু অবিভক্ত বাংলার (অধুনা বাংলাদেশের) ঢাকা শহরের অদূরে বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবার নাম আশুতোষ সোম ও মায়ের নাম সরযূবালা সোম। বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে বিবাহের আগে তিনি রাণু সোম নামে পরিচিত ছিলেন। তার দুই মেয়ে মীনাক্ষী দত্ত ও দময়ন্তী বসু সিং এবং এক ছেলে শুদ্ধশীল বসু। শুদ্ধশীল বসু মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান।
প্রতিভা বসু প্রথম যৌবনে সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তিনি দিলীপকুমার রায়, কাজী নজরুল ইসলাম, হিমাংশু দত্ত ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে গান শেখেন। রাণু সোম নামে তার একাধিক গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। ১২ বছর বয়সে প্রথম তিনি গ্রামাফোন ডিস্কে রেকর্ড করেন।স্বাধীনতার আগে বড়ো হওয়ার ফলে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। এমনকি নিজেও সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী লীলা নাগের অনুপ্রেরণায় বীর বিপ্লবী অনন্ত সিংহের ফাঁসি রদ করার জন্য গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন প্রতিভা বসু।
গান করার পাশাপাশি লিখতে শুরু করেন। প্রতিভা বসু’র জনপ্রিয়তা এমনই ছিল যে বই বিক্রেতা এবং প্রকাশকদের মধ্যে বই প্রকাশ ও বিতরণ নিয়ে ঝগড়ারও ঘটনা ঘটে। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল —–
উপন্যাস—-‐
মনোলীনা (১৯৪৪),
সেতুবন্ধ (১৯৪৭),
সুমিত্রার অপমৃত্যু,
মনের ময়ূর (১৯৫২),
বিবাহিতা স্ত্রী (১৯৫৪),
মেঘের পরে মেঘ (১৯৫৮),
মধ্যরাতের তারা (১৯৫৮),
সমুদ্রহৃদয় (১৯৫৯),
বনে যদি ফুটল কুসুম (১৯৬১),
‘ঘুমের পখিরা’ (১৯৬৫)
‘সমুদ্র পেরিয়ে (১৯৭৫)
‘ঈশ্বরের প্রবেশ’ (১৯৭৮)
‘পদ্মাসনা ভারতী’ (১৯৭৯)
‘প্রথম বসন্ত’
‘রাঙা ভাঙা চাঁদ’ (১৯৯৪)
‘মালতীদির উপাখ্যান (১৯৯৭)
‘উজ্জ্বল উদ্ধার’
‘সকালের সুর সায়াহ্নে’
‘দ্বিতীয় নক্ষত্র’
‘সাগরের স্বাক্ষর’ (১৯৯৮)
‘অগ্নিতুষার’
‘হৃদয়ের বাগান’
‘সোনালি বিকেল’
‘আলো আমার আলো’
‘অপেক্ষাগৃহ’
‘সমাগত বসন্ত’
‘আন্তোনিনা’
‘সূর্যাস্তের রং’
‘মাধুরীলতার ডায়েরী’
‘অতলান্ত’
‘পথে হল দেরী’
ইত্যাদি।
ছোটোগল্প———-
মাধবীর জন্য (১৯৪২),
বিচিত্র হৃদয় (১৯৪৬),
প্রতিভূ’
‘ভালবাসার জন্ম’
‘ঘাসমাটি’
‘বিকেলবেলা’
‘স্বর্গের শেষ ধাপ’
‘রূপান্তর’
‘খন্ডকাব্য’
‘অন্তহীন’
‘স্বামী-স্ত্রী’
‘ইস্টিশানের মিষ্টিফুল’
‘সেইদিন সকালে’
‘গুণীজনোচিত’
‘উৎস’
‘শব্দব্রহ্ম’
‘নিখাত সোনা’
‘আয়না’
‘সকালবেলা’
‘ঈশ্বর ও নারী’
‘মাৎসুমোতো’
‘মিসেস পালিতের গার্ডেন পার্টি’
‘সত্য মিথ্যা,মিথ্যা সত্য’
‘প্রথম সিঁড়ি’
‘মাদমোয়াজেল গতিয়ে’
‘কাঁচা রোদ’
‘সন্ধ্যাবেলা’
‘স্বপ্ন ভেঙে যায়’
‘ভেজানো দরজা’
‘সত্যাসত্য’
‘ন্যায় অন্যায়’
‘গর্ভধারিণী
‘অন্ধকারে’
‘সুমিত্রার অপমৃত্যু’
‘মহাভোজ’
‘নতুন পাতা’
প্রবন্ধ——–
মহাভারতের মহারণ্যে।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।