Categories
প্রবন্ধ

গ্রামোন্নয়নে  কৃষির ভূমিকা  —একটি সমীক্ষা : দিলীপ  রায়।।

আমরা জানি, ভারত সরকার আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে গ্রামের মানুষের জীবিকার নিরাপত্তা ও আর্থিক ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষপাতী । এই কথা মাথায় রেখে, সরকার গ্রামে সকলের অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশের দিকে নজর দিয়ে কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ক্ষেত্রে রূপান্তর ত্বরান্বিত করার কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিচ্ছে  । এটা ঘটনা, কেন্দ্রিয় সরকার ঘোষিত কল্যাণ প্রকল্প ও কর্মসূচিগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামাঞ্চলকে লাভ, উৎপাদনশীলতা ও সমৃদ্ধির কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা । এই লক্ষ্য পূরণে বাজেট বরাদ্দ সেইভাবে বাড়ানো হচ্ছে । তৈল বীজ ও ডাল উৎপাদন বাড়াতে এবং রান্নার তেলে স্বনির্ভর হতে দেশকে সাহায্য করার জন্য আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সমবায় সমিতিগুলোকে ডাক দিয়েছেন (০৩-০৭-২০২৩) । এখানে একটা ঘটনা জানিয়ে রাখি, খাদ্যশস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে  ২০২২-২৩ সালে  শস্য ও শাক, সবজি, ফুল ও ফলের ফলন রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে । গত বছরের চেয়ে শস্যের উৎপাদন বেড়েছে ৪ শতাংশের বেশি । আর অন্যদিকে শাক, সবজি, ফুল ও ফল ফলেছে ১শতাংশের বেশি । প্রধান খাদ্যশস্য ধান ও গমের ফলনের রেকর্ডও  উল্লেখযোগ্য  । ধান ও গম উৎপাদন (২০২২-২৩) যথাক্রমে ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ টন এবং ১১ কোটি টন । (তথ্যসূত্রঃ যোজনা-১২/২৩) । সুতরাং খাদ্যশস্য উৎপাদনে আমাদের দেশ একটা আত্মসন্তুষ্টির জায়গায় রয়েছে ।
এই কথাগুলি তুলে ধরার একটাই উদ্দেশ্য, গ্রামীণ বিকাশে কৃষিজাত ফসলের  উৎপাদন বৃদ্ধির সরকারি দৃষ্টির  ইতিবাচক  দিকগুলির উপর এবং বাস্তব অবস্থান সম্পর্কে  একটা ধারণা ।  আর একটি পরিসংখ্যানে (নীচে উল্লেখ করা হলো)  দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে  দারিদ্রতার হার কমছে ।
ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের প্রকাশিত ফ্যাক্টশিট থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১১-১২’এর তুলনায় ২০২২-২৩ সালে ভারতীয় পরিবারগুলির মাথাপিছু মাসিক ব্যয় অনেক বেড়েছে । একই সঙ্গে দারিদ্রের হার নেমে গেছে ২২.৯% থেকে ৫শতাংশের কাছাকাছি ।  এখন জানা যাক, দরিদ্র কাদের বলা হচ্ছে ? যে পরিবারের দৈনিক মাথাপিছু খরচ ২.১৫ ডলার বা তার কম, বিশ্ব ব্যাঙ্ক তাকে দরিদ্র বলছে । অর্থাৎ কোনো পরিবারের মাসিক মাথাপিছু খরচ ১৪৭৬ টাকা বা তার কম হলে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মাপকাঠি অনুযায়ী তাকে দরিদ্র বলা যায় । বিনামূল্যে পাওয়া ভোগ্যবস্তু বাদে তাদের ব্যয় মাসে ১৩৭৩ টাকা, বিনামূল্যের পণ্য ধরলে তা ১৪৪১ টাকা । অর্থাৎ ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের নতুন তথ্য অনুযায়ী দারিদ্রের হার ৫%-এ নেমে এসেছে । (সূত্রঃআঃবঃপঃ২৪.০৫.২০২৪) । সুতরাং আমরা যদি  গ্রামীণ এলাকার মানুষের দিকে চোখ রাখি তাহলে আমরা বুঝতে পারব, সত্যিই কী দারিদ্রের হার কমেছে !
( ২ )
আমাদের দেশ মূলত কৃষিপ্রধান দেশ । তাই অনেক অর্থনীতিবিদ   মনে করেন, কর্মসংস্থান-ভিত্তিক বিকাশের ক্ষেত্রে কৃষি অগ্রগণ্য । তাই গ্রামোন্নয়নের মূল স্তম্ভ হচ্ছে কৃষি । বলা চলে গ্রামীণ অর্থনীতি প্রায় সম্পূর্ণভাবে কৃষিনির্ভর । কৃষিই  গ্রামীণ মানুষের জীবিকার মূল অবলম্বন । অধিকাংশ মানুষ সরাসরি চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে । অনেকে আবার কৃষির সঙ্গে যুক্ত আনুসঙ্গিক কাজ কর্মে নিয়োজিত । তাই কৃষি গ্রামীণ  অর্থনীতির মেরুদন্ড । বিভিন্ন সমীক্ষার রিপোর্টে জানা গেছে, কৃষি থেকে প্রায় ৬৯ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবিকা নির্বাহ করে । এটাও ভাববার বিষয়, কম জমিতে বেশি ফলন কীভাবে করা যায় ?  তাই কৃষি অঞ্চল যেমন বাড়াতে হবে তেমনি উৎপাদনশীলতার উপর জোর দিতে হবে । যেমন পাঞ্জাবে ধান ও গম ফসলের যখন আবর্তন শুরু হয়, তখন খড় পোড়ানো শুরু হয়  । একটাই উদ্দেশ্য জমির উর্বরতা বাড়ানো । যেখানেই এই ধান ও গমের আবর্তন রয়েছে, সেখানেই প্রয়োজন একটি রাইস বয়ো পার্কের । রাইস বয়ো পার্ক মানে ধানের প্রতিটি অংশ যেমন গাছ, খড়, খোসা, তুষ, পাতা, সবকিছুকেই কাজে লাগানো । এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন, খড় পোড়ানোর ব্যাপারটা আবার দক্ষিণ ভারতে নেই । চাষি পরিবারে এখনও খড় ছোট ছোট করে কেটে গরুকে খাওয়ানোর রেওয়াজ বর্তমান । সুতরাং আমরা বলতে পারি এগুলির অর্থনৈতিক মূল্য রয়েছে  । অতএব গ্রামীণ  উন্নয়নে ও আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গীতে  এই জাতীয় অর্থকরী ফসলের রক্ষণাবেক্ষণ খুব জরুরি । শুধু তাই নয়, জমিতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে যথাযথ ধ্যান দেওয়া আশুকর্তব্য । (তথ্যসূত্রঃ যোজনা-১১/২৩) ।
কৃষিক্ষেত্রে  উন্নয়নের আরও ধাপ হিসাবে আমরা দেখতে পাই  উচ্চ ফলনশীল বীজের ব্যবহার, সার ও ঔষধের প্রয়োগ ।  তা ছাড়া বহুফসলি চাষের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির উপর জোর দেওয়া  । কিন্তু বাস্তবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ব্যাপকতা সেভাবে বাড়েনি । যার জন্য কৃষি ব্যবস্থা এখনও অনুন্নত এবং সেকেলের ।  শীর্ণদেহি বলদের কাঁধে লাঙ্গল জোয়াল জুড়িয়ে চলছে কৃষিকাজ । তবে একটা কথা এখানে প্রাসঙ্গিক, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য খাদ্য শস্যের উৎপাদন যেমন ধান, গম , জোয়ার, বাজরা, ভুট্টা  অনেকটাই বেড়ে গেছে । মহাজনি প্রথা বিলোপের জন্য কৃষি ঋন দেওয়ার ক্ষেত্রে সমবায় গঠনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে । কৃষি ঋনের সহজলভ্যতার জন্য রয়েছে  “জাতীয় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক”  (NABARD) । শস্যবীমা ও শস্যের ন্যুনতম দাম বেঁধে দেওয়ার ফলে গরীব কৃষকেরা অনিশ্চয়তার হাত থেকে যদিও কিছুটা রক্ষা পাচ্ছে । কিছুটা হলেও বর্তমানে চিরাচরিত কৃষি প্রথার বদলে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষের উপর ঝোঁক দেখা যাচ্ছে ।  অন্যদিকে এটাও ঘটনা, কৃষিজাত দ্রব্যের দাম কিন্তু অন্যান্য দ্রব্যের দামের সঙ্গে সমানতালে বাড়ে না । অথচ যত  দিন যাচ্ছে চাষিদের চাষের খরচ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে । চাষে নিযুক্ত কৃষি শ্রমিকের দাম যেমন বাড়ছে, তেমনি চাষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অর্থাৎ রাসায়নিক সার, ফসলের পোকা-মাকড় মারবার ঔষধপত্রের দামও বাড়ছে । ফলে চাষ থেকে উঠে আসা লভ্যাংশ ক্রমহ্রাসমান । চাষীর চাষজাত ফসলের দামের উপর গ্রামীণ অর্থনীতি নির্ভরশীল । অর্থকরী ফসলের উৎপাদনের অবস্থা তথৈবচ । আমরা জানি, অর্থকরী ফসল বলতে বিশেষ করে বাংলায় পাট চাষ । পাটের বাজারের তীব্র মন্দার কারণে পাট চাষও তলানীতে । সুতরাং গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গার স্বার্থে কৃষির উপর যথাযথ গুরুত্ব আরোপ ভীষণ জরুরি  ।
( ৩ )
এবার আসছি কৃষিকাজে সারের ব্যবহারে । নিয়মিত জমির মাটির  স্বাস্থ্য পরীক্ষা চাষযোগ্য জমিতে উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদে বাঞ্ছনীয় । মাটি পরীক্ষার পর সঠিক সার নির্ধারন চাষের পক্ষে উপোযোগী । যার জন্য মাটি পরীক্ষার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে । এই কারণেই ‘রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা’ চালু হয়েছে । মাটির স্বাস্থ্য কার্ড বিলি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে । আমরা জানি, কৃষিজমিতে জৈব সার ব্যবহার ফসলের ফলনকে বাড়াতে সাহায্য করে । এই প্রসঙ্গে একটা কথা খুব জরুরি, খাদ্যের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে গেলে খাদ্যের যোগান-বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী । আবার কিছু কিছু ফসল আছে যেগুলো সরাসরি খাদ্যের ব্যবহারে আসে না, যেমন  তুলো, ইত্যাদি । তবুও আমাদের দেশের কৃষক সমাজ লাভের কথা মাথায় রেখে প্রযুক্তির সাহায্যে তুলো চাষকে লাভযোগ্য ফসল হিসাবে চাষ করছে । এইভাবে চাষের উন্নয়ন গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে প্রভাব ফেলবে ।
এবার দেখা যাক কৃষিক্ষেত্রকে চাঙ্গা করার স্বার্থে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা । কেন্দ্রিয় সরকারের তথ্য থেকে দেখা যায় মোট প্রদত্ত ঋনের মধ্যে কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলির ঋনের পরিমান ২০১০-১১ সালে মাত্র ২১.৭৬ শতাংশ । পশ্চিম বঙ্গে ২০১২-১৩ সালে (এপ্রিল—ডিসেম্বর) তথ্যে প্রকাশ,  বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি কৃষিঋন প্রকল্পে নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪৯ শতাংশ ঋন প্রদান করেছে । আঞ্চলিক ব্যাঙ্কগুলি লক্ষ্যমাত্রার ২৮ শতাংশ ও সমব্যয় ব্যাঙ্কগুলি ৫০ শতাংশ ঋনপ্রদানে সাফল্যে লাভ করেছে । এছাড়া সমব্যয় ব্যাঙ্কগুলি রাজ্যের প্রাথমিক  কৃষিঋন সমব্যয় সমিতিগুলির (প্যাকস্‌) মাধ্যমে কৃষিঋন ও কৃষিকাজের অন্যান্য উপাদানের জন্যে ঋন প্রদান করে । নাবার্ড উৎপাদনের মাধ্যমে সম্পদ সৃষ্টি করার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক, জমি ভাড়া বা ইজারা নিয়ে চাষ করে এমন কৃষক  ও ভাগচাষিদের ঋন পরিষেবা দেবার জন্য প্রকল্প গ্রহন করেছে । এতে কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়বে । দেশের আর্থিক উন্নয়নের হার বৃদ্ধির সুবিধা হবে (তথ্যসূত্রঃ যোজনা -৬/১৪) ।
( ৪ )
এবার একঝলক ভারতীয় অর্থনীতির চিত্রটা দেখে নেওয়া যাক । ভারতের অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় । কৃষিকাজ, হস্তশিল্প, বস্ত্রশিল্প, উৎপাদন এবং বিভিন্ন সেবা ভারতের অর্থনীতির অংশ । ভারতের খেটে খাওয়া মানুষের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে কিংবা পরোক্ষভাবে কৃষিজমি থেকে জীবিকা নির্বাহ করে । এখনও ভারতের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ৬৯ শতাংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল । তবে সেবাখাত ক্রমশ প্রসারলাভ করছে, ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠছে । ডিজিটাল যুগের আর্বিভাবের পর শিক্ষিত লোকের সহজলভ্যতাকে কাজে লাগিয়ে ভারত আউটসোর্সিং  ও কারিগরি সহায়তাদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসাবে  পরিণত হয়েছে বা হচ্ছে । এটা ঘটনা, ভারত সফটওয়্যার ও আর্থিক  সেবার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে অতি দক্ষ শ্রমিক সরবরাহ করে থাকে । এছাড়া  ঔষধ শিল্প, জীবপ্রযুক্তি, ন্যানোপ্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন শিল্পগুলিতে জোড়ালো প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ।
এবার আসছি আমাদের রাজ্যের দৃষ্টিভঙ্গিতে কৃষিব্যবস্থা । রাজ্যে কোনো অর্থকরী ফসলের জন্য সংশ্লিষ্ট কৃষককে আর বিমার প্রিমিয়াম দিতে হবে না ।  রাজ্য সরকার (পঃবঃ) এই সংক্রান্ত খরচ বহন করবে । বিধানসভায় কৃষি মন্ত্রী একথা জানিয়ে আরও বলেছেন, আগামী অর্থবর্ষের শুরুতে আলুসহ সমস্ত অর্থকরী ফসলের চাষীরা এই সুবিধা পাবেন । তিনি আরও বলেছেন, ২০২৩ সালের খারিফ মরশুমে প্রায় ৬০ লক্ষ কৃষক বাংলার শস্য বীমা যোজনা প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করেছেন । আরও জানা যায়, ২০১৯ সালে এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত ৯৮ লক্ষ কৃষককে এই প্রকল্পের আওতায় ফসলের ক্ষতি বাবদ ২৮৩৮ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে । (তথ্যসূত্রঃ যোজনা-৩/২৪) ।
কোনো একটা সূত্র থেকে জানা গেছে কেন্দ্রের সরকার  কৃষকদের সব ধরনের সমস্যা দূর করতে উদ্যোগী হয়েছে । পিএম কিষাণ সম্মাননিধির আওতায় প্রত্যেক কৃষককে নগদ মূল্য দিয়ে সহযোগিতা করার উদ্যোগ নিয়েছে । কৃষিপণ্যের গুদামজাত করার সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নতিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে । আরও জানা গেছে বর্তমানে কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত অড়হর ডাল বিক্রির ক্ষেত্রে অন লাইনে সরাসরি সরকারকে বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছে  । এতে কৃষকরা ভাল দাম পাচ্ছেন । (তথ্যসূত্রঃ যোজনা-২/২৪) ।
এই মুহূর্তে যেটা দরকার, কৃষিজাত ফসলের সঠিক দাম । ফসলের ন্যায্য দাম নিয়েই কৃষকদের মধ্যে যতো অশান্তি । ফসলের ন্যায্য দামের জন্য চাই ‘কৃষি বাজার’ । আমাদের দেশের চাষিরা উপযুক্ত বাজারের অভাবে তাঁদের বহু  কষ্টার্জিত ফসলের দাম ঠিকমতো পায় না । ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা যাতে না ঠকে, তার জন্য চাই সুসংহত কৃষি বিপননের পরিকাঠামো । প্রয়োজনে কৃষি-বাণিজ্য নীতির খোলনলচে পাল্টানো । যাতে কৃষকের কৃষি-পণ্যের জন্য সরকার কর্তৃক উপযূক্ত “লাভজনক দাম” বা সংগ্রহ মূল্যের নির্ধারন ও নিশ্চয়তা প্রদান সম্ভব হয়  । সবশেষে যেটা জরুরি, সেটা হচ্ছে কৃষি বীমার  সম্প্রসারণ । কৃষি কাজ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ । কৃষি ক্ষেত্রে অনেক অর্থ ও শ্রম বিনিয়োগ করে আশানুরূপ ফল না পেলে কৃষকের দুর্দশা বাড়ে । এজন্য শস্য বীমা, কৃষি বীমা, ইত্যাদি বীমার আরও জোরদার করা সময়োপযোগী । বীমার আওতায় যাতে সমস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি আসে সেদিকে সরকারি সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি আশুকর্তব্য ।
পরিশেষে কৃষি ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে পারলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে  । কৃষি ব্যবস্থা চাঙ্গা হলে গ্রামোন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে । অন্যদিকে গ্রামীণ  অর্থনীতি চাঙ্গা হলে গ্রামীণ মানুষদের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়বে । তাঁদের মুখে হাসি ফুটবে।

কলমেঃ  দিলীপ  রায়   (+৯১ ৯৪৩৩৪৬২৮৫৪)

(তথ্যসুত্রঃ সংগৃহীত ও উল্লেখিত যোজনা)  ।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৭ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৭ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৩৩২ – ইবনে খালদুন, আরব মুসলিম পণ্ডিত। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস ও অর্থনীতির জনকদের মধ্যে তিনি অন্যতম বিবেচিত হন।

 

১৮৫২ – বিলি বার্নস, পেশাদার ইংরেজ ক্রিকেটার।

 

১৮৬৩ – আর্থার মোল্ড, ইংরেজ ক্রিকেট খেলোয়াড়।

 

১৮৯০ – যতীন্দ্রপ্রসাদ ভট্টাচার্য, একজন বাঙালি কবি ।

 

১৯০৩ – যোগেশচন্দ্র বাগল প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সম্পাদক ।

 

১৯৯৫ – সাবিলা নূর বাংলাদেশী মডেল ও অভিনেত্রী

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭০৩ – পিটার দি গ্রেট কর্তৃক সেন্ট পিটার্সবুর্গ (লেনিনগ্রাদ) শহরের পত্তন হয় ।

১৭৬৭ – কলকাতায় প্রথম প্রটেস্টান্ট গির্জা নির্মিত।

১৮৩৭ – আলজেরিয়ার স্বাধীনতাকামী নেতা আবদুল ক্বাদেরের সাথে ফ্রান্স সরকারের একটি শান্তিচূক্তি হয়।

 

১৮৮৩ – তৃতীয় আলেকজান্ডার রাশিয়ার রাজা হন।

১৯১৯ – জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করে বড়লাট লর্ড চেমস ফোর্ডকে চিঠি দেন।

১৯১৯ – এনসি-৪ এয়ারক্রাফট অবতরণ করে লিসবনে, প্রথম উড্ডয়ন শেষ করে।

১৯২৬ – মরোক্কোর রিফ এলাকায় ফরাসী ও স্পেনীয় উপনিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের ঐতিহাসিক গণপ্রতিরোধ বা বিদ্রোহ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

১৯২৭ – বৈমানিক চার্লস লিন্ডবার্গ একাকী বিমান চালিয়ে বিশ্বে প্রথম আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করেন।

১৯৩০ – নিউইয়র্কে ১০৪৬ ফুট বিল্ডিংটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়, যেটি সে সময় মানুষের তৈরি দীর্ঘতম ভবন।

১৯৩২ – খ্যাতনামা সাহিত্যিক ও মানবতাবাদী রমাঁ রল্যাঁ ও অঁরি বারব্যুস যৌথভাবে আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরোধী সমাবেশ আহবানে করেন।

১৯৫২ – ইউরোপীয় প্রতীরক্ষা গোষ্ঠী গঠিত হয়।

১৯৭২ – যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সল্ট-১ চুক্তি স্বাক্ষর।

১৯৮৯ – বার্মার সামরিক শাসকগোষ্ঠী দেশের নাম পরিবর্তন করে দ্য ইউনিয়ন অব মায়ানমার রাখে এবং রেঙ্গুনের নাম পালটে রাখে ইয়াঙ্গুন।

২০০৬ – ‘জাভা’ ভূমিকম্প ভোর ৫টা ৫৩ মিনিটের সময় তীব্র আঘাত করে ইওগাকার্তায়। প্রায় ৬ হাজার ৬০০ লোকের প্রাণহানি ঘটে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯১০ – রবার্ট কখ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান জীব বিজ্ঞানী।

 

১৯৩০- স্পেনীয় কথাসাহিত্যিক গাব্রিয়েল মিরো।

 

১৯৬৪ – জহরলাল নেহরু, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

 

১৯৭৫ – নৃপতি চট্টোপাধ্যায়, বাঙালি অভিনেতা।

 

১৯৮৬ – অজয় মুখোপাধ্যায়, পশ্চিম বাংলার চতুর্থ ও ষষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী।

 

১৯৯৫ – শ্যামাদাস চট্টোপাধ্যায় – আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি পরমাণুবিজ্ঞানী।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে অগ্রনী বিপ্লবী রাসবিহারী বসু – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।

ভারতে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতাকামী আন্দোলনের একজন অগ্রগণ্য বিপ্লবী নেতা এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির অন্যতম সংগঠক ছিলেন রাসবিহারী বসু। রাসবিহারী বসু ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দের ২৫ শে মে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলায় অবস্থিত তার পৈতৃক গ্রাম সুবলদহে জন্মগ্রহণ করেন৷ পিতা বিনোদবিহারী বসু এবং তার মায়ের নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। তিনকড়ি দাসী ছিলেন তার ধাত্রী মাতা৷ তার পিতামহ নাম ছিলেন কালীচরণ বসু৷ এই বসু পরিবারের আদিবাস ছিল অধুনা পূর্ব বর্ধমান জেলার সুবলদহেতে৷ তাঁদের পূর্বপুরুষ নিধিরাম বসুই সর্বপ্রথম সুবলদহে বসবাস শুরু করেন৷ রাসবিহারী বসুকে তার নামটি দিয়েছিলেন পিতামহ কালীচরণ বসু। গর্ভাবতী অবস্থায় তার মা ভুবনেশ্বরী দেবী কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

তাই সুবলদহ গ্রামের পশ্চিম পাড়াতে অবস্থিত বিষ্ণুমন্দির বা কৃষ্ণ মন্দিরে তার নামে প্রার্থনা(মানত) করা হয়েছিল যাতে তিনি(ভুবনেশ্বরীদেবী) সুস্থভাবে সন্তানের জন্ম দেন, তাই পরবর্তীকালে তার নাতির নাম রাখেন, কৃষ্ণের অপর নামে। রাসবিহারী হল কৃষ্ণের অপর নাম। রাসবিহারী বসু এবং তার ভগিনী সুশীলা সরকারের শৈশবের বেশির ভাগ সময় কেটেছিল সুবলদহ গ্রামে। তারা সুবলদহ গ্রামে বিধুমুখী দিদিমণির ঘরে বসবাস করতেন। বিধুমুখী ছিলেন একজন বাল্যবিধবা, তিনি ছিলেন কালিচরণ বসুর ভ্রাতৃবধূ। রাসবিহারী বসুর শৈশবের পড়াশোনা সুবলদহের গ্রাম্য পাঠশালায় (বর্তমানে সুবলদহ রাসবিহারী বসু প্রাথমিক বিদ্যালয়) ঠাকুরদার সহচর্যে সম্পন্ন হয়েছিল। রাসবিহারী বসু শৈশবে লাঠিখেলা শিখেছিলেন সুবলদহ গ্রামের শুরিপুকুর ডাঙায়। তিনি সুবলদহ গ্রামে তার ঠাকুরদা কালিচরণ বসু এবং তার শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী গল্প শুনে তার বিপ্লবী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন গ্রামবাসীদের নয়নের মণি। শোনা যায় যে, তিনি ইংরেজদের মূর্তি তৈরি করতেন এবং লাঠি খেলার কৌশলে সেই মূর্তিগুলোকে ভেঙে ফেলতেন। তিনি ডাংগুলি খেলতে খুব ভালোবাসতেন। তিনি শৈশবে সুবলদহ গ্রামে ১২ থেকে ১৪ বছর ছিলেন, এছাড়াও তিনি পরবর্তীকালে ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে প্রয়োজনে সুবলদহ গ্রামে এসে আত্মগোপন করতেন। পিতা বিনোদবিহারী বসুর কর্মক্ষেত্র ছিল হিমাচল প্রদেশের সিমলায়। তিনি সুবলদহ পাঠশালা, মর্টন স্কুল ও ডুপ্লে কলেজের ছাত্র ছিলেন। জীবনের প্রথম দিকে তিনি নানা বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং আলিপুর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে অভিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি দেরাদুনে যান এবং সেখানে বন্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে হেড ক্লার্ক হিসেবে কাজে যোগদান করেন। দেরাদুনে তিনি গোপনে বাংলা, উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবের বিপ্লবীদের সংস্পর্শে আসেন।বিপ্লবী হিসেবে তার অন্যতম কৃতিত্ব বড়লাট হার্ডিঞ্জের ওপর প্রাণঘাতী হামলা। বিপ্লবী কিশোর বসন্ত বিশ্বাস তার নির্দেশে ও পরিকল্পনায় দিল্লিতে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে বোমা ছোড়েন হার্ডিঞ্জকে লক্ষ্য করে। এই ঘটনায় পুলিশ তাকে কখনোই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সমগ্র ভারতব্যাপী সশস্ত্র সেনা ও গণ অভ্যুত্থান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাসবিহারী বসু। জনৈক বিশ্বাসঘাতকের জন্যে সেই কর্মকাণ্ড ফাঁস হয়ে যায়। বহু বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকায় তিনি ব্রিটিশ সরকারের সন্দেহভাজন হয়ে ওঠেন এবং শেষ পর্যন্ত দেশত্যাগে বাধ্য হন। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বন্যা বিধ্বস্ত সুবলদহ গ্রামে ফিরে আসেন এবং ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নেন।[৯] ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ১২ মে কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে জাপানি জাহাজ ‘সানুকি-মারু’ সহযোগে তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন। তার আগে নিজেই পাসপোর্ট অফিস থেকে রবীন্দ্রনাথের আত্মীয়, রাজা প্রিয়নাথ ঠাকুর ছদ্মনামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন।
তারই তৎপরতায় জাপানি কর্তৃপক্ষ ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের পাশে দাঁড়ায় এবং শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় সমর্থন যোগায়। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৮-২৯ মার্চ টোকিওতে তার ডাকে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগ বা ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি সেই সম্মেলনে একটি সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব দেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২২ জুন ব্যাংককে তিনি লীগের দ্বিতীয় সম্মেলন আহ্বান করেন। সম্মেলনে সুভাষচন্দ্র বসু কে লীগে যোগদান ও এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়। যেসব ভারতীয় যুদ্ধবন্দি মালয় ও বার্মা ফ্রন্টে জাপানিদের হাতে আটক হয়েছিল তাদেরকে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগে ও লীগের সশস্ত্র শাখা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মিতে যোগদানে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জাপানি সেনাকর্তৃপক্ষের একটি পদক্ষেপে তার প্রকৃত ক্ষমতায় উত্তরণ ও সাফল্য ব্যাহত হয়। তার সেনাপতি মোহন সিংকে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির নেতৃত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু তার সাংগঠনিক কাঠামোটি থেকে যায়। রাসবিহারী বসু ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আজাদ হিন্দ ফৌজ নামেও পরিচিত) গঠন করেন। জাপানে সোমা নামে এক পরিবার তাকে আশ্রয় দেয়। ওই পরিবারেরই তোশিকা সোমাকে তিনি বিবাহ করেন। রাসবিহারী বসুকে জাপান সরকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘সেকেন্ড অর্ডার অব দি মেরিট অব দি রাইজিং সান’ খেতাবে ভূষিত করে। জানুয়ারি ২১, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জাপানে রাসবিহারী বসুর মৃত্যু হয়।

তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কবি নজরুল ইসলামের ভূমিকা।।।

১৮৯৯ সালের ২৪ মে কবি নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়া গ্রামে।  আর যখন ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ  করে দ্বিখণ্ডিত হয়, তখন বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের বয়স মাত্র  ৪৮ বছর দুই মাস ৯ দিন ।

কবি নজরুল ইসলামের কাব্যজীবন ,সাহিত্য ও গান তাঁর সৃষ্টি বিশ্লেষণে দেখা যায় কবি নজরুল ইসলামকে দলগত কিংবা ব্যক্তিগতভাবে কখনোই বিদ্রোহী বলা যায় না। প্রকৃতপক্ষে কবি নজরুল ইসলাম কোন রাজনৈতিক দলের ছিলেন না বা  বিদ্রোহী দলও গঠন করেননি বা কোনো বিদ্রোহী সন্ত্রাসী দলে যোগদানও করেন নাই।
তৎকালীন সময়ে কবির সবচেয়ে নিকটের বন্ধু ছিলেন  ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমরেড মুজফর আহম্মেদ।  কবি তাঁর সংস্পর্শে থেকেও কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন নাই।

কবিকে আত্মাভিমানী বললে ভুল বা কখনোই অত্যুক্তি হবে না, যদি বা কবি নজরুল তাত্ত্বিক বা দার্শনিক হিসেবে গণ্য নন, কিন্তু তাঁর সাম্যবাদী, ঈশ্বর, মানুষ, পাপ, বারাঙ্গনা, নারী, কুলি-মজুর প্রভৃতি কবিতায় সুস্পষ্টভাবে অভেদ মানবতত্ত্ব এবং সাম্যবাদী চৈতন্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে তাঁর মানবিক সংশোধনের প্রাচুর্যই বেশি চোখে পড়ে।
কবির নান্দনিক কাব্যিক শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাঁর অভিমান ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে , দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যের কারণে।
তাই বোধকরি তাকে বিদ্রোহ কবি বলে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর রচনাসমগ্র বিশ্লেষণ করলে চোখে পড়ে যে,তিনি একাধারে বিদ্রোহের উন্মাদনা তৎসঙ্গে অন্যধারে প্রেমের অবাধ্য আকুতি।
এই পরস্পরবিরোধী দ্বৈত অবস্থানের চৌম্বিকতায় একপর্যায়ে লক্ষ্যণীয় সৃষ্টি কবি নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা..যেমন,
আমি চির দুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা প্রলয়ের আমি নটরাজ,
আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!…আমি দুর্বার ,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার।
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়মকানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি নাকো কোন আইন…

বৃটিশরাজের আমলাতান্ত্রিক ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থায় রাজা-প্রজার এতই ব্যবধান যে সাধারণত রাজার সম্মান ছিল ঈশ্বরেরই সমকক্ষ তৎসঙ্গে রাজকর্মচারীরা নিজেদেরকে রাজার প্রতিভূ অর্থাৎ জনগণের তথা প্রজার প্রভু বলে মনে করত নিজেদের আর তাদের আচার-আচরণও ছিল রাজন্যবর্গসুলভ। নজরুল এই অবস্থানকে কটাক্ষ করে লিখেছেন সেই কথাগুলো এবং উপসংহারে ঘোষণা করেছিলেন ,–
গণতন্ত্রের জয়,বন্ধু, এমনি হয়-
জনগণ হ’ল যুদ্ধে বিজয়ী,রাজার গাহিল জয়!
প্রজারা যোগায় খোরাক- পোশাক,
কি বিচার বলিহারি,
প্রজার কর্মচারী নন তাঁরা রাজার কর্মচারী!
মোদেরি বেতনভোগী চাকরেরে সালাম করিব মোরা,
ওরে পাবলিক সার্ভেন্টদের আয় দেখে যাবি তোরা!..

এরপর নজরুল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছিলেন,-
“-এ আশা মোদের দুরাশাও নয়,সেদিন সুদূরও নয়,
সমবেত রাজ-কণ্ঠে যেদিন শুনিব প্রজার জয়।”

কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন মূলত বিদ্রোহী কবি। তার বিদ্রোহ ছিল সমাজ ও রাষ্ট্রের সব অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। আর সেই বিদ্রোহকে কেন্দ্র করেই তার স্বাধীনচেতা হৃদয়ের আগুন প্রজ্বলিত হয়েছিল আপন পরাধীন দেশের স্বাধীনতা কামনায়। এমন সরাসরি স্বাধীনতার প্রবক্তা হওয়া সেই আমলে আর কোনো কবির পক্ষে সেকালে সম্ভব হয়নি। কারণ, প্রভু ইংরেজরা অসন্তুষ্ট হবেন এমন কোনো কথা উচ্চারণ করার।
অথচ সেই সময় বিশের দশকে কবি নজরুল ইসলাম ধূমকেতু পত্রিকা বের করেছেন তখন সংবাদপত্রে “স্বাধীনতা”র কথা বলা রীতিমতো ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে কংগ্রেসের জাঁদরেল নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে অটোনমি বা স্বায়ত্তশাসন আর সেলফ গভর্নমেন্টের কথা বললেন, ঋষি অরবিন্দও তাই বলেছিলেন, আর স্বয়ং মহাত্মা গান্ধীও বলেছিলেন।
অথচ ১৯২১ সালের শেষ সপ্তাহে আহমেদাবাদে মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের বার্ষিক সম্মেলনে প্রখ্যাত ঊর্দু কবি ফজলুল হাসান হসরৎ মোহানী তার বক্তব্যে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করেছিলেন।

১৯২২ সালের ১৩ অক্টোবর নজরুল ইসলামের সম্পাদিত ধূমকেতু পত্রিকার ১ম বর্ষ ১৩শ সংখ্যায় “ধূমকেতুর পথ” প্রবন্ধে সেদিন লিখেছিলেন,
–“সর্বপ্রথম ধূমকেতু পত্রিকাতেই ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চাওয়া হয়েছিল। লিখেছিলেন, —
“স্বরাজ টরাজ বুঝি না, কেননা ও কথাটার মানে এক এক মহারথী এক এক রকম করে থাকেন। ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশও বিদেশির অধীনে থাকবে না। ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রক্ষা ও শাসনভার সমস্তই থাকবে ভারতীয়দের হাতে। তাতে কোনো বিদেশি মোড়লীর অধিকারটুকু পর্যন্ত থাকবে না। যারা এখন রাজা বা শাসক হয়ে এদেশে মোড়লী করে দেশকে শ্মশান ভূমিতে পরিণত করেছেন তাদের পাততাড়ি গুটিয়ে বোঁচকা পুটুলি বেঁধে সাগর পাড়ে পাড়ি দিতে হবে। প্রার্থনা বা আবেদন-নিবেদন করলে শুনবো না। তাদের অতটুকু সুবুদ্ধি হয়নি এখনো যে, আমাদের এই প্রার্থনা করার, ভিক্ষে করার কুবুদ্ধিটুকুকে ওদের দূর করতে হবে।”

সেইসময় সংবাদপত্রে এমন দুঃসাহসিক স্বাধীনতা ঘোষণার কথা উচ্চারণ, বোধ করি ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

নজরুল ইসলামের লড়াই ছিল সমাজে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায়।তাই কবির সাহিত্যে সকল বঞ্চিত ব্যথিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে ছিল আপসহীন সংগ্রামে অধিকার সমন্বিত।
নজরুল ইসলাম নিঃস্বার্থ সাম্যবাদের আলো জ্বালিয়ে জগতকে আলোকিত করতে চেয়েছিলেন।

কবি নজরুল ছিলেন জ্ঞানবান সাম্যবাদী মানুষ যার লড়াই ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অসাম্যের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে এবং সর্বোপরি অত্যাচারীর বিরুদ্ধে যেখানে মানুষের জ্ঞানালোকিত স্বাধীনতা থাকবে অবাধ ও পক্ষপাত বিবর্জিত। যেখানে অন্যায়ের কণাটুকুও ঠাঁই পাবে না মনুষ্যত্বের আধারে। নজরুলের সাম্যে ধর্ম-বর্ণ শ্রেণীহীন সমাজ ব্যবস্থায় সব মানুষ সমান, যেখানে অর্থনৈতিক বৈষম্য নেই, যেখানে ধর্মের ব্যবধান নেই, কোনো বিভেদ নেই বর্ণের…
“গাহি সাম্যের গান
বুকে বুকে হেথা তাজা সুখ ফোটে,
মুখে মুখে তাজা প্রাণ।
বন্ধু এখানে রাজা-প্রজা নাই, নাই দরিদ্র ধনী,
হেথা পায় নাকো’ কেহ খুদ ঘাঁটা,কেহ দুধ-সর-ননী।

ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে তিনি সম্যক উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে ভারতের দুই বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায় তথা হিন্দু ও মুসলমান যদি একতাবদ্ধ হয়ে একদেহে একই স্বার্থে স্বাধীনতার লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় তাহলে বৈরী অমানবিক শক্তি নস্যাৎ হতে বাধ্য। তাই তিনি গান বেঁধেছিলেন ,–
“কাণ্ডারী হুঁশিয়ার”
দুর্গম গিরি কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীতে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।
এখানে আরো লিখেছেন–
“হিন্দু না ওরা মুসলিম?” ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কাণ্ডরী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র।”

বিদেশি শত্রুর মোকাবেলা করতে হলে চাই জাতির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম। তাই স্বাধীনতার পক্ষে কবি নজরুল ইসলাম চেয়েছিলেন, সমগ্র জাতি তথা হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের ঐকান্তিক মিলন।

১৯২৬ সালের এপ্রিল মাসে কৃষ্ণনগরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে নজরুল সামরিক কায়দায় যে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে তোলেন তাদের সমবেত কণ্ঠে উদ্বোধনী সঙ্গীতও ছিল এই “কান্ডারী হুঁশিয়ার”।

আজ আমরা সাম্যের গান শুধুই মুখে গাই বলি। হৃদয় থেকে গাই না …!!

গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই,
নহে কিছু মহীয়ান।
নাই দেশ-কাল পাত্রের ভেদ,
অভেদ ধর্ম জাতি;
সব দেশে, সব কালে,
ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

সব শেষে আবারো বলি আমাদের সুমতি হোক্ আমরা আমাদের জীবনে কবি নজরুলের সত্য-সুন্দর , সাম্য আদর্শকে উপজীব্য করে বাঁচতে শিখি, মানুষকে ভালোবাসতে শিখি আর মানুষের অধিকারকে লুণ্ঠিত লাঞ্ছিত না করে যথার্থ সম্মান করতে শিখি । তবেই আমরা যেমন গৌরবান্বিত হবো, তেমনি প্রকৃত শ্রদ্ধাজ্ঞাপনও করা হবে কবির প্রতি …

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কবি নজরুল ইসলামের ভূমিকা : কামনা দেব।।।

১৮৯৯ সালের ২৪ মে কবি নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়া গ্রামে।  আর যখন ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ  করে দ্বিখণ্ডিত হয়, তখন বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের বয়স মাত্র  ৪৮ বছর দুই মাস ৯ দিন ।

কবি নজরুল ইসলামের কাব্যজীবন ,সাহিত্য ও গান তাঁর সৃষ্টি বিশ্লেষণে দেখা যায় কবি নজরুল ইসলামকে দলগত কিংবা ব্যক্তিগতভাবে কখনোই বিদ্রোহী বলা যায় না। প্রকৃতপক্ষে কবি নজরুল ইসলাম কোন রাজনৈতিক দলের ছিলেন না বা  বিদ্রোহী দলও গঠন করেননি বা কোনো বিদ্রোহী সন্ত্রাসী দলে যোগদানও করেন নাই।
তৎকালীন সময়ে কবির সবচেয়ে নিকটের বন্ধু ছিলেন  ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কমরেড মুজফর আহম্মেদ।  কবি তাঁর সংস্পর্শে থেকেও কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন নাই।

কবিকে আত্মাভিমানী বললে ভুল বা কখনোই অত্যুক্তি হবে না, যদি বা কবি নজরুল তাত্ত্বিক বা দার্শনিক হিসেবে গণ্য নন, কিন্তু তাঁর সাম্যবাদী, ঈশ্বর, মানুষ, পাপ, বারাঙ্গনা, নারী, কুলি-মজুর প্রভৃতি কবিতায় সুস্পষ্টভাবে অভেদ মানবতত্ত্ব এবং সাম্যবাদী চৈতন্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে তাঁর মানবিক সংশোধনের প্রাচুর্যই বেশি চোখে পড়ে।
কবির নান্দনিক কাব্যিক শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তাঁর অভিমান ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে , দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্যের কারণে।
তাই বোধকরি তাকে বিদ্রোহ কবি বলে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর রচনাসমগ্র বিশ্লেষণ করলে চোখে পড়ে যে,তিনি একাধারে বিদ্রোহের উন্মাদনা তৎসঙ্গে অন্যধারে প্রেমের অবাধ্য আকুতি।
এই পরস্পরবিরোধী দ্বৈত অবস্থানের চৌম্বিকতায় একপর্যায়ে লক্ষ্যণীয় সৃষ্টি কবি নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা..যেমন,
আমি চির দুর্দ্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা প্রলয়ের আমি নটরাজ,
আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!…আমি দুর্বার ,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার।
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়মকানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি নাকো কোন আইন…

বৃটিশরাজের আমলাতান্ত্রিক ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থায় রাজা-প্রজার এতই ব্যবধান যে সাধারণত রাজার সম্মান ছিল ঈশ্বরেরই সমকক্ষ তৎসঙ্গে রাজকর্মচারীরা নিজেদেরকে রাজার প্রতিভূ অর্থাৎ জনগণের তথা প্রজার প্রভু বলে মনে করত নিজেদের আর তাদের আচার-আচরণও ছিল রাজন্যবর্গসুলভ। নজরুল এই অবস্থানকে কটাক্ষ করে লিখেছেন সেই কথাগুলো এবং উপসংহারে ঘোষণা করেছিলেন ,–
গণতন্ত্রের জয়,বন্ধু, এমনি হয়-
জনগণ হ’ল যুদ্ধে বিজয়ী,রাজার গাহিল জয়!
প্রজারা যোগায় খোরাক- পোশাক,
কি বিচার বলিহারি,
প্রজার কর্মচারী নন তাঁরা রাজার কর্মচারী!
মোদেরি বেতনভোগী চাকরেরে সালাম করিব মোরা,
ওরে পাবলিক সার্ভেন্টদের আয় দেখে যাবি তোরা!..

এরপর নজরুল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছিলেন,-
“-এ আশা মোদের দুরাশাও নয়,সেদিন সুদূরও নয়,
সমবেত রাজ-কণ্ঠে যেদিন শুনিব প্রজার জয়।”

কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন মূলত বিদ্রোহী কবি। তার বিদ্রোহ ছিল সমাজ ও রাষ্ট্রের সব অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। আর সেই বিদ্রোহকে কেন্দ্র করেই তার স্বাধীনচেতা হৃদয়ের আগুন প্রজ্বলিত হয়েছিল আপন পরাধীন দেশের স্বাধীনতা কামনায়। এমন সরাসরি স্বাধীনতার প্রবক্তা হওয়া সেই আমলে আর কোনো কবির পক্ষে সেকালে সম্ভব হয়নি। কারণ, প্রভু ইংরেজরা অসন্তুষ্ট হবেন এমন কোনো কথা উচ্চারণ করার।
অথচ সেই সময় বিশের দশকে কবি নজরুল ইসলাম ধূমকেতু পত্রিকা বের করেছেন তখন সংবাদপত্রে “স্বাধীনতা”র কথা বলা রীতিমতো ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে কংগ্রেসের জাঁদরেল নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে অটোনমি বা স্বায়ত্তশাসন আর সেলফ গভর্নমেন্টের কথা বললেন, ঋষি অরবিন্দও তাই বলেছিলেন, আর স্বয়ং মহাত্মা গান্ধীও বলেছিলেন।
অথচ ১৯২১ সালের শেষ সপ্তাহে আহমেদাবাদে মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের বার্ষিক সম্মেলনে প্রখ্যাত ঊর্দু কবি ফজলুল হাসান হসরৎ মোহানী তার বক্তব্যে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করেছিলেন।

১৯২২ সালের ১৩ অক্টোবর নজরুল ইসলামের সম্পাদিত ধূমকেতু পত্রিকার ১ম বর্ষ ১৩শ সংখ্যায় “ধূমকেতুর পথ” প্রবন্ধে সেদিন লিখেছিলেন,
–“সর্বপ্রথম ধূমকেতু পত্রিকাতেই ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চাওয়া হয়েছিল। লিখেছিলেন, —
“স্বরাজ টরাজ বুঝি না, কেননা ও কথাটার মানে এক এক মহারথী এক এক রকম করে থাকেন। ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশও বিদেশির অধীনে থাকবে না। ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রক্ষা ও শাসনভার সমস্তই থাকবে ভারতীয়দের হাতে। তাতে কোনো বিদেশি মোড়লীর অধিকারটুকু পর্যন্ত থাকবে না। যারা এখন রাজা বা শাসক হয়ে এদেশে মোড়লী করে দেশকে শ্মশান ভূমিতে পরিণত করেছেন তাদের পাততাড়ি গুটিয়ে বোঁচকা পুটুলি বেঁধে সাগর পাড়ে পাড়ি দিতে হবে। প্রার্থনা বা আবেদন-নিবেদন করলে শুনবো না। তাদের অতটুকু সুবুদ্ধি হয়নি এখনো যে, আমাদের এই প্রার্থনা করার, ভিক্ষে করার কুবুদ্ধিটুকুকে ওদের দূর করতে হবে।”

সেইসময় সংবাদপত্রে এমন দুঃসাহসিক স্বাধীনতা ঘোষণার কথা উচ্চারণ, বোধ করি ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

নজরুল ইসলামের লড়াই ছিল সমাজে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায়।তাই কবির সাহিত্যে সকল বঞ্চিত ব্যথিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে ছিল আপসহীন সংগ্রামে অধিকার সমন্বিত।
নজরুল ইসলাম নিঃস্বার্থ সাম্যবাদের আলো জ্বালিয়ে জগতকে আলোকিত করতে চেয়েছিলেন।

কবি নজরুল ছিলেন জ্ঞানবান সাম্যবাদী মানুষ যার লড়াই ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অসাম্যের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে এবং সর্বোপরি অত্যাচারীর বিরুদ্ধে যেখানে মানুষের জ্ঞানালোকিত স্বাধীনতা থাকবে অবাধ ও পক্ষপাত বিবর্জিত। যেখানে অন্যায়ের কণাটুকুও ঠাঁই পাবে না মনুষ্যত্বের আধারে। নজরুলের সাম্যে ধর্ম-বর্ণ শ্রেণীহীন সমাজ ব্যবস্থায় সব মানুষ সমান, যেখানে অর্থনৈতিক বৈষম্য নেই, যেখানে ধর্মের ব্যবধান নেই, কোনো বিভেদ নেই বর্ণের…
“গাহি সাম্যের গান
বুকে বুকে হেথা তাজা সুখ ফোটে,
মুখে মুখে তাজা প্রাণ।
বন্ধু এখানে রাজা-প্রজা নাই, নাই দরিদ্র ধনী,
হেথা পায় নাকো’ কেহ খুদ ঘাঁটা,কেহ দুধ-সর-ননী।

ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে তিনি সম্যক উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে ভারতের দুই বৃহৎ ধর্মীয় সম্প্রদায় তথা হিন্দু ও মুসলমান যদি একতাবদ্ধ হয়ে একদেহে একই স্বার্থে স্বাধীনতার লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় তাহলে বৈরী অমানবিক শক্তি নস্যাৎ হতে বাধ্য। তাই তিনি গান বেঁধেছিলেন ,–
“কাণ্ডারী হুঁশিয়ার”
দুর্গম গিরি কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীতে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার।
এখানে আরো লিখেছেন–
“হিন্দু না ওরা মুসলিম?” ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কাণ্ডরী! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র।”

বিদেশি শত্রুর মোকাবেলা করতে হলে চাই জাতির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম। তাই স্বাধীনতার পক্ষে কবি নজরুল ইসলাম চেয়েছিলেন, সমগ্র জাতি তথা হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের ঐকান্তিক মিলন।

১৯২৬ সালের এপ্রিল মাসে কৃষ্ণনগরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে নজরুল সামরিক কায়দায় যে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে তোলেন তাদের সমবেত কণ্ঠে উদ্বোধনী সঙ্গীতও ছিল এই “কান্ডারী হুঁশিয়ার”।

আজ আমরা সাম্যের গান শুধুই মুখে গাই বলি। হৃদয় থেকে গাই না …!!

গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই,
নহে কিছু মহীয়ান।
নাই দেশ-কাল পাত্রের ভেদ,
অভেদ ধর্ম জাতি;
সব দেশে, সব কালে,
ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

সব শেষে আবারো বলি আমাদের সুমতি হোক্ আমরা আমাদের জীবনে কবি নজরুলের সত্য-সুন্দর , সাম্য আদর্শকে উপজীব্য করে বাঁচতে শিখি, মানুষকে ভালোবাসতে শিখি আর মানুষের অধিকারকে লুণ্ঠিত লাঞ্ছিত না করে যথার্থ সম্মান করতে শিখি । তবেই আমরা যেমন গৌরবান্বিত হবো, তেমনি প্রকৃত শ্রদ্ধাজ্ঞাপনও করা হবে কবির প্রতি …

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৬ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৬ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭০৩ – স্যামুয়েল, ইংরেজ দিনলিপিকার ।

 

১৭৯৯ – আলেকজান্ডার পুশকিন, রাশিয়ার তথা রুশ সাহিত্যের অমর কবি ও ঔপন্যাসিক।

 

১৮৭৭ – খ্যাতনাম্নী মার্কিন নৃত্যশিল্পী ইসাডোরা ডানকান।

 

১৯০০ – চেক লেখক ভিতেস্লা ইসাডোরা ডানকান

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৩৯ – মোগল সম্রাট মহম্মদ শাহ ও ইরানের নাদির শাহের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের ফলে আফগানিস্তান ভারত থেকে পৃথক হয়ে যায়।

 

১৮০৫ – নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ইতালির রাজা হিসাবে রাজ্যাভিষিক্ত হন।

১৮৬৫ – আমেরিকার গৃহযুদ্ধের অবসান।

১৮৭০ – দিনেসিসিলির এটনা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু।

১৮৮১ – ফ্রান্স তিউনিসিয়াকে করায়ত্ত করে এবং নিজ নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে।

১৮৯৬ – রাশিয়ার শেষ জার দ্বিতীয় নিকোলাস অভিষিক্ত হন।

১৮৯৭ – আইরিশ লেখক ব্রাম স্টকারের বিখ্যাত উপন্যাস ‘ড্রাকুলা’ প্রকাশিত হয়।

১৯১৩ – এমিলি ডানকান ব্রিটেনের প্রথম মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত।

১৯১৮ – জার্জিয়া ও আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা।

১৯৪৮ – দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী জাতীয়তাবাদী সরকার ক্ষমতায় আসে।

১৯৬৯ – অ্যাপোলো-১০ নভোযানটি আট দিনের সফল ভ্রমণ শেষ করে পৃথিবীতে অবতরণ করে।

১৯৭২ – যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন অ্যান্টি ব্যালস্টিক মিসাইল চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় হাইতি।

১৯৮১ – পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে।

১৯৮২ – ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় বামফ্রন্ট মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করেছিল।

১৯৮৬ – বাংলাদেশের বরিশালে লঞ্চডুবিতে ২৩০ জনের মৃত্যু।

১৯৯১ – থাইল্যান্ডে অস্ট্রীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২২৩ জনের মৃত্যু।

১৯৯৪ – নোবেল পুরস্কার জয়ী সাহিত্যিক আলেক্সান্ডার সোলজিনেৎসিন ২০ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে নিজ মাতৃভূমি রাশিয়াতে প্রত্যাবর্তন।

১৯৯৪ – বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম দুটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর।

১৯৯৯ – কাশ্মীরের কারগিল সেক্টরে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ শুরু।

 

২০১৮ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধি দেয় কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

৭৩৫ – বিড, ইংরেজ বেনেডিক্টিয়ান সন্ন্যাসী।

 

১৯০৮ – (ক)  বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নীলমণি ন্যায়ালঙ্কার।

 

(খ) মির্জা গোলাম আহমদ।

 

১৯৭১ – বিমল মুখোপাধ্যায়, মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের কিংবদন্তি ফুটবলার।

 

১৯৭২ – প্রখ্যাত বাঙালি অভিনেত্রী রাজলক্ষ্মী দেবী।

 

১৯৭৬ – মার্টিন হাইডেগার, জার্মান দার্শনিক।

 

১৯৯৯- শচীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙালি কবি কথা-সাহিত্যিক ও নাট্যকার ।

 

২০০৪ – নিকলাই চের্নিখ, রুশ বংশোদ্ভূত সোভিয়েত জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

 

২০২১ – প্রখ্যাত বাঙালি প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানী, অভিনেতা বিকাশ রায়ের পুত্র সুমিত রায়।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস প্রতি বছর ২৫ মে থাইরয়েড গ্রন্থি এবং এটিকে প্রভাবিত করে এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে পালন করা হয়।  থাইরয়েড গ্রন্থি হল একটি ছোট, প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যা ঘাড়ের গোড়ায় ঘাড়ের গোড়ার কাছে অবস্থিত।  এটি দুটি হরমোন, থাইরক্সিন এবং ট্রাইওডোথাইরোনিন উৎপাদনের জন্য দায়ী, যা শরীরের স্বাভাবিক কার্য যেমন বিপাক, বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং প্রজননের জন্য অপরিহার্য।
থাইরয়েডের ব্যাধি ঘটে যখন থাইরয়েড গ্রন্থি এই হরমোনগুলির পর্যাপ্ত বা খুব বেশি উত্পাদন করে না।  হাইপোথাইরয়েডিজম হল এমন একটি অবস্থা যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি করে না যখন হাইপারথাইরয়েডিজম হল এমন একটি অবস্থা যেখানে থাইরয়েড গ্রন্থি এই হরমোনগুলির খুব বেশি উৎপাদন করে।  বিশ্ব থাইরয়েড দিবস ২০২৪ এর থিম, ইতিহাস, তাৎপর্য, পর্যবেক্ষণের উপায় এবং উদ্ধৃতি জানুন।

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস ২০২৪ : থিম—

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস (WTD) ২০২৪-এর থিম হল “অসংক্রামক রোগ (NCDs)”  “Non-Communicable Diseases (NCDs)”.   থিমটি হাইলাইট করে যে থাইরয়েড সমস্যাগুলি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে সাধারণ অন্তঃস্রাবী ব্যাধিগুলির মধ্যে, ডায়াবেটিসের পরে দ্বিতীয়।  এই থিমটি থাইরয়েড সমস্যা সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়ায় এবং প্রাথমিক থাইরয়েড রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় সাহায্য করে।

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস ২০২৪ : ইতিহাস—

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস 2007 সালে থাইরয়েড ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল (TFI) দ্বারা থাইরয়েড গ্রন্থির গুরুত্ব এবং এটিকে প্রভাবিত করে এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  ১৯৬৫ সালে ইউরোপীয় থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশন (ETA) এর প্রতিষ্ঠার স্মরণে ২৫ মে বেছে নেওয়া হয়েছিল। ইটিএ প্রথম সংস্থা যা বিশ্ব থাইরয়েড দিবসকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়
TFI হল একটি অলাভজনক সংস্থা যা থাইরয়েড স্বাস্থ্য এবং গবেষণার প্রচারে কাজ করে।  বিশ্বের ১০০ টিরও বেশি দেশ থেকে সংস্থাটির সদস্য রয়েছে।  TFI-এর লক্ষ্য হল “থাইরয়েড রোগের প্রতিরোধ, নির্ণয় এবং চিকিত্সার প্রচার করা এবং থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।”

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস ২০২৪: তাৎপর্য——

বিশ্ব থাইরয়েড দিবস থাইরয়েড গ্রন্থি এবং এর সাথে সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি বোঝার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য উপলক্ষ হিসাবে কাজ করে।  ঘাড়ের গোড়ার কাছাকাছি অবস্থিত, এই গ্রন্থিটি আকারে প্রজাপতির মতো।  এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার মধ্যে থাইরক্সিন এবং ট্রায়োডোথাইরোনিন হরমোন উৎপাদন জড়িত, যা বিপাক, বৃদ্ধি, বিকাশ এবং প্রজননের মতো মৌলিক শারীরিক প্রক্রিয়াগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
থাইরয়েড ব্যাধি সাধারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ২০ মিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করে।  সবচেয়ে সাধারণ থাইরয়েড ডিসঅর্ডার হল হাইপোথাইরয়েডিজম, যা ঘটে যখন থাইরয়েড গ্রন্থি যথেষ্ট হরমোন তৈরি করে না।  হাইপোথাইরয়েডিজম ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বিষণ্নতা সহ বিভিন্ন উপসর্গের কারণ হতে পারে।
বিশ্ব থাইরয়েড দিবস হল থাইরয়েড গ্রন্থি এবং এটিকে প্রভাবিত করে এমন অবস্থা সম্পর্কে আরও জানার একটি সুযোগ।  এটি থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সমর্থন দেখানোর এবং প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিত্সাকে উত্সাহিত করারও একটি সময়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

তোয়ালে দিবস, লেখক ডগলাস অ্যাডামসের স্মরণে, লেখকের ভক্তরা, প্রথম পালন শুরু করেন।

তোয়ালে দিবস হল এমন একটি দিন যা The Hitchhiker’s Guide to the Galaxy লেখক ডগলাস অ্যাডামসকে উৎসর্গ করা হয়। প্রতি বছর ২৫ মে পালিত হয়, এটি ভক্তদের একত্রিত হয়ে শ্রদ্ধা জানানোর একটি সুযোগ।

তবে কেন একটি তোয়ালে হিচহাইকারস গাইডের প্রতীকী এবং কেন ভক্তরা এই দিনে অ্যাডামসকে উদযাপন করেন?

 

ডগলাস অ্যাডামস কে ছিলেন?

 

ডগলাস অ্যাডামস ১১ মার্চ, ১৯৫২ সালে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি একজন কমিক লেখক ছিলেন যিনি The Hitchhiker’s Guide to the Galaxy সিরিজের কমিক সাই-ফাই বই লেখার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত, যেটি তার মূল রেডিও নাটকের উপর ভিত্তি করে তৈরি, তবে তিনি BBC এর জন্যও লিখেছেন, এবং মন্টি পাইথন এবং ডক্টর হু এর মতো আইকনিক সিরিজ।

লেখক একজন প্রখর পরিবেশবিদও ছিলেন।

তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় ১১ মে, ২০০১-এ 4৪৯9 বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।

 

তোয়ালে দিবস কখন?

 

ডগলাস অ্যাডামস মারা যাওয়ার ঠিক দুই সপ্তাহ পর ২৫ মে, ২০০১ সাল থেকে তোয়ালে দিবস বার্ষিকভাবে পালিত হচ্ছে।

 

তোয়ালে দিবস কি?

 

তোয়ালে দিবস উদযাপন করে দ্য হিচহাইকারস গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি লেখক ডগলাস অ্যাডামস।

ভক্তরা অ্যাডামসের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি তোয়ালে বহন করা বেছে নিয়েছিলেন কারণ, দ্য হিচহাইকারস গাইড অনুসারে, এটি “একজন আন্তঃনাক্ষত্রিক হিচহাইকার বহন করতে পারে এমন সবচেয়ে ব্যাপকভাবে দরকারী জিনিস”।

শুধুমাত্র একটি তোয়ালে ব্যবহারিক নয় – “আপনি উষ্ণতার জন্য এটিকে আপনার চারপাশে জড়িয়ে রাখতে পারেন যেমন আপনি জগলান বিটার ঠান্ডা চাঁদ জুড়ে আবদ্ধ হন”, উদাহরণস্বরূপ – তবে এটির “অত্যন্ত মনস্তাত্ত্বিক মূল্য”ও রয়েছে।

গাইড বলেছেন যে একজন নন-হিচহাইকার ভাববেন যে “যে কোনও মানুষ যে গ্যালাক্সির দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থকে আটকাতে পারে, এটিকে রুক্ষ করতে পারে, এটিকে বস্তি করতে পারে, ভয়ানক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে, জয়লাভ করতে পারে এবং এখনও জানে যে তার গামছাটি কোথায় আছে, সে স্পষ্টতই একটি  মানুষ হিসাবে গণ্য করা হবে”.

 

 

ভক্তরা কিভাবে গামছা দিবস উদযাপন করবেন?

 

The Hitchhiker’s Guide to the Galaxy-এর ভক্তরা আজ একটি তোয়ালে বহন করে উদযাপন করবে৷  তারা #TowelDay হ্যাশট্যাগ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের তোয়ালে সহ নিজেদের ছবি শেয়ার করবে।

ভক্তরাও সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের প্রিয় উদ্ধৃতিগুলি ভাগ করতে পারেন, বা উপন্যাসগুলি পুনরায় পড়তে বা সিরিজ বা চলচ্চিত্রটি পুনরায় দেখার জন্য সময় ব্যয় করতে পারেন।

 

 তোয়ালে দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলি—

 

২০১৮ সালে, স্টিফেন ফ্রাই টুইট করেছিলেন “শুভ #TowelDay world, galaxy and cosmos” এবং ২০১৯ সালে, তিনি বলেছিলেন: “শুভ #TowelDay one and all… আজ আমরা ডগলাস নোয়েল অ্যাডামস ১৯৫২-এর উপহারের জন্য মহাবিশ্বকে স্মরণ করি এবং ধন্যবাদ জানাই-  ২০০১, একজন মহান বন্ধু, একজন মহান মানুষ।”
২০১৬ সালে, রয়্যাল ইনস্টিটিউশন আইএসএস-এ থাকা মহাকাশচারী টিম পিককে “আতঙ্কিত হবেন না” বাক্যাংশ সহ একটি তোয়ালে পাঠিয়েছিল, দ্য হিচহাইকারস গাইড টু দ্য গ্যালাক্সির প্রচ্ছদে শব্দগুলি উল্লেখ করে যে চরিত্রটি ফোর্ড প্রিফেক্ট তার সাথে বহন করে এবং এটিও।  ডগলাস এবং সিরিজের একটি বইয়ের শিরোনাম।
স্টিফেন ম্যাঙ্গান ২০১৬ সালে বলেছিলেন: “প্রথম দিকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছিল।  এটি অনেক লোককে খুব ক্ষুব্ধ করেছে এবং ব্যাপকভাবে একটি খারাপ পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হয়েছে৷  #টাওয়েলডে।”

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৫ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৫ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক)  ২০০১ – তোয়ালে দিবস, লেখক ডগলাস অ্যাডামসের স্মরণে, লেখকের ভক্তরা, প্রথম পালন শুরু করেন।

(খ) বিশ্ব থাইরয়েড দিবস৷

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭৫১ – ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হালেদ, বাংলায় মুদ্রিত প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থের রচয়িতা।

 

১৮০৩ – যুক্তরাষ্ট্রে খ্যাতনামা কবি এবং লেখক রালফ ওয়ালডো এমারসন।

 

১৮৬৫ – পিটার জেমান, নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী।

 

১৮৮৬ – রাসবিহারী বসু, ভারতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একজন বিপ্লবী নেতা এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সংগঠক।

 

১৭৫১ – ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হালেদ, বাংলায় মুদ্রিত প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থের রচয়িতা।

 

১৮০৩ – যুক্তরাষ্ট্রে খ্যাতনামা কবি এবং লেখক রালফ ওয়ালডো এমারসন।

 

১৮৬৫ – পিটার জেমান, নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী।

১৮৮৬ – রাসবিহারী বসু, ভারতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একজন বিপ্লবী নেতা এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির সংগঠক।

১৮৮৯ – হেলিকপ্টারের উদ্ভাবক রুশ-মার্কিন বিজ্ঞানী ইগর সিকোরস্কি।

১৮৯৯ – (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ)কাজী নজরুল ইসলাম, বিদ্রোহী কবি, সাহিত্যিক, সম্পাদক, ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি।

১৯০২ – অধ্যাপক, গবেষক ও সাহিত্যিক অমূল্যধন মুখোপাধ্যায়।

 

১৯০৬ – রামকিঙ্কর বেইজ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ,বাঁকুড়া জেলা, বিখ্যাত ভাস্কর।

১৯৬৩ – মাইক মায়ার্স্‌, মার্কিন কৌতুকাভিনেতা।

 

১৯৬৯ – আমেরিকান প্রযোজক ও অভিনেত্রী অ্যানি হেচে।

১৯৭৫ – আমেরিকান মিউজিশিয়ান, গায়িকা ও অভিনেত্রী লরেন হিল।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৬৮ – ক্যাপটেন কুক তার বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে প্রথম অভিযান শুরু করেন।

১৯১১ – মেক্সিকোতে বিদ্রোহের মুখে প্রেসিডেন্ট পোরদিরিও দিয়াজ উৎখাত।

১৯২৩ – আমীর আবদুল্লাহর নেতৃত্বে ট্রান্স জর্দানের স্বাধীনতা ঘোষণা।

১৯৩৬ – নিগ্রো ক্রীড়াবিদ জেসি ওয়েন বার্লিন অলিম্পিকে ৫টি বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করে।

১৯৪৪ – জার্মানি যুগোশ্লাভিয়ার কম্যুনিষ্ট নেতা জোসেপ ব্রজ টিটোকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালিয়েছিলো।

১৯৪৫ – হিটলারের নাৎসী বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা গেস্টোপোর প্রধান হেনরিখ হিমলার আত্মহত্যা করেছিলেন।

১৯৬৩ – ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ঐক্য সংস্থা বা ওএইউ গঠিত হয়।

১৯৬৯ – সুদানে সেনা অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাত।

১৯৭১ – মুজিবনগর থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় আর্জেন্টিনা।

১৯৭৯ – শিকাগোতে আমেরিকায় ডিসি-১০ বিধ্বস্ত হয়ে ২৭২ যাত্রীর সবাই নিহত।

১৯৮৯ – গর্বাচেভ সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম প্রশাসনিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

১৯৯৪ – দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

১৯৯৭ – সিয়েরালিওনে বিদ্রোহীদের সহিংস অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাত।

২০০০ – বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে প্রথম মহিলা বিচারপতি (নাজমুন আরা সুলতানা) নিয়োগ।

২০১৮ – শান্তি নিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৪৫ – স্কট চিত্রশিল্পী টমাস ডানকানের মৃত্যু।

 

১৯৮৩ – মুহাম্মদ ইদ্রিস আল-সেনুস, লিবিয়ার বাদশাহ।

 

১৯২৪ – আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, শিক্ষাবিদ, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ সময়ের ভাইস-চ্যান্সেলর।

 

১৯৪১ – গুরুসদয় দত্ত, ব্রতচারী আন্দোলনের পথিকৃৎ ও সমাজকর্মী।

২০০১ – আলবের্তো কোর্দা,কিউবান আলোকচিত্র শিল্পী।

 

২০২১ – কল্পবিজ্ঞানের বাঙালি লেখিকা এণাক্ষী চট্টোপাধ্যায়।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৪ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৪ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) ভারতীয় কমনওয়েলথ দিবস: 24 মে।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৫৪৪ – উইলিয়াম গিলবার্ট, ইংরেজ চিকিৎসক।

১৬৮৬ – ড্যানিয়েল গ্যাব্রিয়েল ফারেনহাইট, পদার্থবিজ্ঞানী।

 

১৮১৩ – কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, ঊনবিংশ শতকের অন্যতম বাঙালি শিক্ষাবিদ, ভাষাতত্ত্ববিদ ও খ্রিষ্টধর্মপ্রচারক।

 

১৮১৯ – রাণী ভিক্টোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাণী।

১৮৫৮ – সারদারঞ্জন রায়, বাংলার যুবসমাজে ক্রিকেট খেলার প্রচলক।

 

১৮৯৯ – (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) কাজী নজরুল ইসলাম- বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী কবি। বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে তাঁর জন্ম হয়।

১৯০৫ – মিখাইল শলোখভ, নোবেলজয়ী সোভিয়েত ঔপন্যাসিক।

 

১৯২০ – সোমেন চন্দ, মার্ক্সবাদী বাঙালি সাহিত্যিক।

১৯৪০ (ক)  জোসেফ ব্রডস্কি, বিখ্যাত রুশ কবি ও প্রাবন্ধিক।

(খ) মওদুদ আহমেদ, বাংলাদেশের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি, অষ্টম প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

 

১৯৪১ – বব ডিলান, মার্কিন গায়ক, গীতিকার, লেখক, সঙ্গীতজ্ঞ ও কবি।

 

১৯৪২ – আলী বাখের, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৪৯ – জিম ব্রডবেন্ট, ইংরেজ অভিনেতা।

১৯৫১ – মুনতাসীর মামুন, বাংলাদেশী অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক।

 

১৯৫৫ – রাজেশ রোশন, ভারতীয় সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক।

১৯৬৬ – এরিক কাঁতোয়াঁ, সাবেক ফরাসি ফুটবলার।

১৯৬৯ – মার্টিন ম্যাককেগ, আইরিশ বংশোদ্ভূত সাবেক পেশাদার ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৭৭ – জিৎ গাঙ্গুলী, ভারতীয় সংগীত পরিচালক এবং গায়ক।

১৯৯১ – সাফিয়ান শরীফ, স্কটিশ ক্রিকেটার।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৮২২ – ইকুয়েডর স্বাধীনতা অর্জন করে।

১৮৪৪ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের সংসদভবন থেকে মার্কিন আবিষ্কারক মোর্স (মোরিস) ৪০ মাইল দূরের বাল্টিমোর শহরে বিশ্বের প্রথম দূরপাল্লার টেলিগ্রাম পাঠান।

১৮৬২ – টমস নদীর ওপর ওয়েস্ট মিনিস্টার সেতু উন্মুক্ত করা হয়।

১৮৭৫ – স্যার সৈয়দ আহমদ খান আলিগড়ে মোহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল স্কুল স্থাপন করেন। এটিই পরে (১৯২০) আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়।

১৯০২ – ব্রিটেনে প্রথম ‘এম্পায়ার ডে’ পালিত হয়।

১৯৬৪ – রিও ডি জেনিরোর জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সংঘটিত দাঙ্গায় ৩২৮ জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক আহত হন।

১৯৭২ – কবি কাজী নজরুল ইসলাম কে ভারত থেকে ঢাকায় আগমন। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে জাতীয় কবির স্বীকৃতি দান।

১৯৮৫ – বাংলাদেশের উড়িরচরে জলোচ্ছ্বাসে ১১ হাজার লোকের প্রাণহানি।

১৯৯১ – বর্ণবাদী ইসরাইল সরকার, দ্বিতীয় বারের মতো ১৪ হাজার চার’শ ইহুদিকে ইথিউপিয়া থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনে নিয়ে আসে।

১৯৯৩ – উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া,ইথিউপিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৯৪ – মক্কায় পদদলিত হয়ে ২৭০ হাজীর মৃত্যু।

২০০০ – ইসরাইলী বাহিনী দক্ষিণ লেবানন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৫৪৩ – নিকলাস কপারনিকাস, জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

 

১৮৯৪- বিহারীলাল চক্রবর্তী, বাংলার গীতিকবি।

১৯০৩ – হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, উনিশ শতকের বাঙালি কবি।

১৯৩২ – কার্ল বেন্ডা, জার্মান অণুজীববিজ্ঞানী।

 

১৯৪০ – অমিতা সেন, ১৯৩০-এর দশকের খ্যাতনামা রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।

১৯৫৯ – জন ফস্টার দুললেস, মার্কিন কূটনীতিক।

১৯৭১ – জাকির হোসাইন, পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর।

১৯৮৯ – তৃপ্তি মিত্র, বাঙালি মঞ্চ অভিনেত্রী।

 

১৯৯২ – শৈলজারঞ্জন মজুমদার, ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ ও রবীন্দ্র সংগীত প্রশিক্ষক।

১৯৯৫ – হ্যারল্ড উইলসন, যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।

 

২০১০ – তপেন চট্টোপাধ্যায়, “গুপী গায়েন” খ্যাত বাঙালি অভিনেতা।

২০১০ – বেবী ইসলাম, বাংলাদেশি চিত্রগ্রাহক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।

 

২০১৪ – ডেভিড অ্যালেন, ইংরেজ ক্রিকেটার।

২০১৬ – খালেদা একরাম, বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য।

২০২০ – মকবুল হোসেন, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও ঢাকা-৯ আসনের সাবেক এমপি, কোভিড-১৯।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This