Categories
কবিতা

ভাগ আর ভাগ্য :: কবি মৌসুমী ডিংগাল।।

ভাগ হয়ে যায় বাস্তুভিটে, ভাগ হয়ে যায় মা
ভাগ হয়ে যায় মায়ের স্নেহ, শাড়ি আর গহনা!
ভাগ হয়ে যায় মায়ের কাজ, শাসনের অধিকার
ভাগ হয়ে যায় সোনালী দিন, যা ছিল আপন তার।

ভাগ হয়ে যায় বাবার টাকা, আসবাব, বাড়ি-গাড়ি
ভাগ হয়ে যায় যা কিছু আছে, সঞ্চিত কানাকড়ি।
ভাগ হয়ে যায় থাকার জায়গা, পুরনো অভ্যেস
ভাগ হয়ে যায় ঘুমোনোর স্থান, ভাগ হয় ভাগ শেষ।

কষ্ট করেই পড়ানো ছেলেরা হিসাবটা ঠিক বোঝে
তাই তো তারা ভাগ করেই ভাগফলটা খোঁজে ;
ভাগের খাতায় বাবা-মা, আসবাব- টাকাকড়ি
ভাগ হয়ে যায় যতকিছু, ভাগ হয় আড়াআড়ি ।

নিজেরা ভালো থাকবে বলে কত না হিসেব কষা
বাবা- মায়ের আত্মত্যাগ, বাবা মায়ের আশা!
লাভের অঙ্ক বাড়াতে গিয়ে, ভাগ শুধু হয় না
বাবার জমানো কষ্ট আর মায়ের লুকোনো কান্না।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৩০ নভেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ৩০ নভেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক)  বনিফেসিও দিবস

(খ) কমেমোরেশন দিবস

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৩ – রাধারাণী দেবী,বিশ শতকের বাঙালি মহিলা কবি।

 

১৯০৮ – বুদ্ধদেব বসু, বিশ শতকের বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক।

 

১৯১৫ – হেনরি টাউব, তিনি ছিলেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান রসায়নবিদ ও একাডেমিক।

 

১৯২৮ – অমর গঙ্গোপাধ্যায়, বাংলা নাট্যমঞ্চের বিখ্যাত অভিনেতা।

 

১৯৩৭ – রিডলি স্কট, ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক।

 

১৯৪৩ – টেরেন্স মালিক, আমেরিকান পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

 

১৯৪৪ – জর্জ গ্রাহাম, স্কটিশ ফুটবল খেলোয়াড় ও ম্যানেজার।

 

১৯৫৩ – নন্দিত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী।

 

১৯৮৪ – নিগেল ডি জং, ডাচ ফুটবলার।

 

১৯৮৮ – ফিলিপ হিউজ, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।

 

১৯৯১ – মোহাম্মাদ নাসির হোসেন, বাংলাদেশ।

 

১৮১৭ – টেওডোর মম্‌জেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান আইনজ্ঞ, ঐতিহাসিক ও পণ্ডিত।

 

১৮৩৫ – স্যামুয়েল ল্যাঙ্গহোর্ণ ক্লিমেন্স, একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক। ইনি অবশ্য ‘মার্ক টোয়েইন’ নামে বেশি পরিচিত।

 

১৮৫৮ – স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু,আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় বাঙালি পদার্থ ও জীব বিজ্ঞানী।

 

১৮৬৯ – নিল্স গুস্তাফ দালেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইডিশ পদার্থবিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী।

 

১৮৭৪ – উইন্‌স্টন চার্চিল, ইংরেজ রাজনীতিবিদ ও লেখক।

 

১৮৮৯ – এডগার ডগলাস আদ্রিয়ান, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ শারীরবিজ্ঞানী ও একাডেমিক।

 

১৬৬৭ – বিখ্যাত আইরিশ লেখক জোনাথন সুইফট।

 

১৫০৮ – আন্ড্রেয়া পালাডিও, ইতালীয় স্থপতি।

 

১৫৫৪ – ফিলিপ সিডনি, ইংরেজ সৈনিক, সভাসদ ও কবি।

 

১৪৮৫ – ইতালির মহিলা কবি ভোরোনিকা গামবারা।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯১৭ – কলকাতায় জগদীশচন্দ্র বসুর ৬০তম জন্মদিবসে বসু বিজ্ঞান মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হয়।

১৯৬২ – উথান্ট জাতিসংঘের মহাসচিব নির্বাচিত হন।

১৯৬৬ – বারবাডোজ স্বাধীনতা লাভ করে।

 

১৯৭৩ – শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশে দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন সকল রাজবন্দীর প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়।

১৯৭৭ – আর্ন্তজাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল–IFAD প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৭৭ – হ্যাঁ–না ভোটে জিয়াউর রহমানের গণ আস্থা লাভ।

১৮৩৮ – মেক্সিকো ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

১৮৬৩ – উমাচরণ ভট্টাচার্য মুদ্রিত মাসিক পত্রিকা ‘সচিত্র ভারত সংবাদ’ প্রাকাশিত হয়।

১৮৬৬ – শিকাগোতে প্রথম জলের নিচে হাইওয়ে টানেল তৈরির কাজ শুরু হয়।

১৭৩১ – বেইজিংয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়।

১৭৭৬ – ক্যাপ্টেন কুক প্রশান্ত মহাসাগরে তৃতীয় ও শেষ অভিযান শুরু করেন।

১৭৮২ – ইংল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা স্বীকার করে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০৯ – আবদুল জব্বার (সাহিত্যিক) বাঙালি সাহিত্যিক ।

 

২০১২ – ইন্দ্র কুমার গুজরাল, ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও ১২ তম প্রধানমন্ত্রী।

 

২০১৪ – কাইয়ুম চৌধুরী, বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী।

 

২০১৭ – আনিসুল হক, বাংলাদেশী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র।

 

২০২১ – রফিকুল ইসলাম, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও জাতীয় (বাংলাদেশ) অধ্যাপক।

 

১৯০০ – অস্কার ওয়াইল্ড, আইরিশ প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও কবি।

 

১৯০৯ – রমেশচন্দ্র দত্ত,ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক,ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

 

১৯৩৩ – (ক) কবি মোজাম্মেল হক।

(খ) নারীশিক্ষার পথপ্রদর্শক শিক্ষাবিদ মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায় ।

 

১৯৩৫ – ফার্নান্দো পেশোয়া, তিনি ছিলেন পর্তুগিজ কবি, দার্শনিক ও সমালোচক।

 

১৯৫৩ – ফ্রান্সিস পিকাবিয়া, ফরাসি চিত্রশিল্পী ও কবি।

১৯৭৯ – যেপপো মার্কস, আমেরিকান অভিনেতা ও গায়ক।

 

১৯৮৪ – (ক)  অভিনেত্রী ও সঙ্গীতশিল্পী ইন্দুবালা দেবী।

 

(খ) প্রখ্যাত সংগতিয়া (তবলা বাদক) রাধাকান্ত নন্দী।

১৯৮৮ – মিশরের প্রখ্যাত ক্বারী আবদুল বাসেত মোহাম্মাদ আবদুস সামাদ।

 

১৯৮৯ – আহমাদউ আহিদজ, ক্যামেরুনের রাজনীতিবিদ ও ১ম রাষ্ট্রপতি।

১৯৯৪ – গায় ডেবরড, ফরাসি তাত্ত্বিক ও লেখক।

 

১৯৯৮ – আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন, বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞান লেখক ও বিজ্ঞান কর্মী।

১৭১৮ – ফ্রান্সের রাজা দ্বাদশ চার্লস যুদ্ধে নিহত হন।

 

১৭৫৯ – মোগল সম্রাট দ্বিতীয় আলমগীর নিজ মন্ত্রীর হাতে নিহত হন।

১০১৬ – এডমন্ড আয়রনসিডে, ইংরেজ রাজা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বেলজিয়াম কাঁচের ফানুসে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোকিত হয় মঠবাড়ি ও দীনদয়াল বিগ্রহ বাড়ির মন্ডপসজ্জা।

আড়ম্বর থাকলেও নেই বৈদতিক আলো, গোটা মন্ডপ বেলজিয়াম কাঁচের ফানুসে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোকিত হয় শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী মঠবাড়ি ও দীনদয়াল বিগ্রহ বাড়ির মন্ডপসজ্জা। শহরের মঠবাড়ি হোক কিংবা দীন দয়াল ঠাকুর বাড়ি। প্রায় প্রতিটি বিগ্রহ বাড়িতে ব্যবহৃত বেলজিয়াম কাচের ফানুসগুলোর একেকটির বয়স প্রায় ২০০ থেকে ৩৫০ বছর।

 

 

উচ্চতা হয় প্রায় দুই ফুটের মত। ঢেউ খেলানো বিভিন্ন আকৃতির রঙবাহারি কাচের উপর আঁকা থাকে বিভিন্ন নকশা। বেলজিয়াম কাচের ফানুসের প্রতিটির দাম ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কেন এত দাম? কারণ অবশ্যই তার সূক্ষ্ম কাজের কেরামতির জন্য। সারাবছর বাড়ির অন্দরমহলে সযত্নে রক্ষিত থাকে সেগুলো। রাস উৎসবের সন্ধ্যায় এই বেলজিয়াম ফানুস দিয়ে সাজানো হয় প্রতিটি বাড়ির মূল প্রাঙ্গন। ভেতরে টিমটিম করে জ্বলতে থাকে মোমবাতির আলো।

 

 

বাজারের সাধারণ মোম নয়, ফানুসের ভেতর বসানো হয় প্যারাসিন দিয়ে তৈরি সলতে পাকানো বিশেষ ধরনের মোম। এখনও বংশ-পরম্পরায় এই মোম তৈরি করেন শান্তিপুরের কয়েক ঘর মোমশিল্পী। ভাঙা রাসের দিন নগর পরিক্রমা দেখতে শহরের রাজপথে যে ভিড় উপচে পড়ে, আলো আঁধারির খেলা দেখতে বিগ্রহ বাড়ির রাস উৎসবে সেই ভিড়ে অন্তত তিনগুণ দর্শনার্থী থাকেন। নামে বেলজিয়াম ফানুস হলেও এগুলি একসময় নিয়ে আসা হয়েছিল ফ্রান্স এবং ভেনিস থেকে। এখনও সেখানে এই ফানুস তৈরি হয়। বিগ্রহবাড়ির সদস্যদের কথায়, এখন আর ইউরোপ থেকে বেলজিয়াম ফানুস নিয়ে আসা হয় না। পরিবর্তে জায়গা নিয়েছে শহর কলকাতায় তৈরি কাঁচের অন্যান্য ফানুস। দামে কম হলেও আভিজাত্যে  ধারেকাছেও যায় না।

 

 

রাসের তিনদিন সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে রাখা হয় শহরের মঠবাড়ি ও দীনদয়াল বাড়িকে। রাসের সময় অন্তত শতাধিক বেলজিয়াম কাচের ফানুসে আলোয় আলো হয়ে ওঠে এই বাড়ি। পরিবারের সদস্য সুশান্ত মঠ বলেন, দেখতে অতীব সুন্দর। কিন্তু ফানুসের ভেতর মোমবাতি বসানোর ধরণ একেবারেই সহজ নয়। অসাবধানতা কিংবা ভেতরের জ্বলন্ত মোমবাতি প্রায় এক ইঞ্চি ছোট হয়ে এলেই তাপের কারণে ভেঙে যেতে পারে সেগুলো। এভাবেই ৩০০ বছরের বহু পুরনো ফানুস ভেঙে গিয়েছে এই বাড়িতে। একসময় মঠবাড়িতে রাসের প্রাঙ্গণে নাকি অন্তত দেড়শখানা বেলজিয়াম কাঁচের ফানুস ঝোলানো হত।

 

 

আজ শুধুই যত্নের ওপর টিকে রয়েছে এই প্রথা। জানা গিয়েছে, ফানুসগুলোতে মোমবাতি জ্বালানোর ধরন যেমন আলাদা, তেমনিই মোমবাতি নেভানোর কায়দা। সরু আকৃতির একটি লাঠির মাথায় ন্যাকড়া বেঁধে স্পিরিটে চোবানো হয়। এরপর তাতে আগুন ধরিয়ে ঝুলন্ত ফানুসের ভেতরে থাকা মোমবাতি জ্বালানো হয়। স্থানীয় ভাষায় একে বলে ‘হুঁশ’। ঠিক একইভাবে লাঠির মাথায় ধাতব পাত্র ঝুলিয়ে কাচের ফানুসের উপরে আলতো চেপে ধরলে নিভে যায় মোমবাতি। এই পদ্ধতিকে স্থানীয়রা বলেন ফোঁস। শান্তিপুরের বাসিন্দারা বলছেন, এই শহরে রাসের মাহাত্ম্যের সঙ্গে যেন ওতপ্রোত সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে অভিজাত আলোকধারা।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতীয় বাঙালি পদার্থ ও জীব বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু’র জন্মদিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহারিক এবং গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের সূচনা তার হাত ধরে হয় বলে মনে করা হয়। ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স তাকে রেডিও বিজ্ঞানের একজন জনক হিসেবে অভিহিত করে।

তাঁর জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশেরই ময়মনসিংহ শহরে ১৮৫৮ সালে ৩০শে নভেম্বের। তাঁর পিতার নাম ভগবান চন্দ্র বসু (জেলার তৎকালীন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট) এবং মায়ের নাম বামা সুন্দরী দেবী।

ইংরেজ সরকারের অধীনে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও ভগবান চন্দ্র নিজের ছেলেকে ইংরেজি স্কুলে ভর্তি করান নি। জগদীশ চন্দ্রের প্রথম স্কুল ছিল ময়মনসিংহ জিলা স্কুল। বাংলা স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব যুক্তি ছিল।

তিনি মনে করতেন ইংরেজি শেখার আগে এদেশীয় ছেলে-মেয়েদের মাতৃভাষা আয়ত্ত্ব করা উচিত। বাংলা স্কুলে পড়ার ব্যাপারটি জগদীশ চন্দ্রের জীবনে যেমন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছে, তেমনি বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতেও সাহায্য করেছে। এর প্রমাণ বাংলা ভাষায় রচিত জগদীশের বিজ্ঞান প্রবন্ধগুলো। ভাষার প্রতি বিশেষ মমত্ববোধ ছাড়াও ভগবান চন্দ্র চেয়েছিলেন তার পুত্র দেশের আপামর জনসাধারণের সাথে মিলেমিশে মানুষ হোক এবং তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হোক। জগদীশ চন্দ্রের পরবর্তী জীবনে তার প্রথম বাংলা স্কুলের অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ছাপ ফেলেছিল।

তাঁর শিক্ষাজীবনের ধাপগুলো শুরু হয় ফরিদপুরে,তারপর ১৮৬৯ সালে হেয়ার স্কুল,সেখান থেকে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল। তিনি ১৮৭৫ ষোল বছর বয়সে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হোন। সেখান থেকে ১৮৭৭সালে অনার্স এবং ১৮৭৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি .এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৮৮০ সালে ভারত ছেড়ে লন্ডনে ডাক্তারি পড়ার জন্য মেডিকেল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হলেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তা বাদ দিয়ে ১৮৮১ সালে লন্ডন ত্যাগ করে কেম্ব্রিজে যান। ১৮৮৪ সালে কেম্ব্রিজ ক্রাইস্ট কলেজ থেকে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়ে ট্রাইপোস (কেম্ব্রিজের বিশেষ কোর্স) এবং একই সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এস.সি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরলেন।

১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে জগদীশ চন্দ্র ভারতে ফিরে আসেন। তৎকালীন ভারতের গভর্নর-জেনারেল জর্জ রবিনসন, প্রথম মার্কুইস অব রিপনের অনুরোধে স্যার অ্যালফ্রেড ক্রফট বসুকে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নিযুক্ত করেন। কলেজের অধ্যক্ষ চার্লস হেনরি টনি এই নিয়োগের বিপক্ষে ছিলেন। শুধু যে তাঁকে গবেষণার জন্য কোন রকম সুবিধা দেওয়া হত না তাই নয়, তিনি ইউরোপীয় অধ্যাপকদের অর্ধেক বেতনেরও কম অর্থ লাভ করতেন।এর প্রতিবাদে বসু বেতন নেওয়া বন্ধ করে দেন এবং তিন বছর অবৈতনিক ভাবেই অধ্যাপনা চালিয়ে যান। দীর্ঘকাল ধরে এই প্রতিবাদের ফলে তার বেতন ইউরোপীয়দের সমতুল্য করা হয়।প্রেসিডেন্সি কলেজে গবেষণার কোন রকম উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় ২৪-বর্গফুট (২.২ মি২) একটি ছোট ঘরে তাকে গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে হত। পদে পদে প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তার বিজ্ঞান সাধনার প্রতি আগ্রহ ভগিনী নিবেদিতাকে বিস্মিত করেছিল। কলেজে যোগ দেওয়ার এক দশকের মধ্যে তিনি বেতার গবেষণার একজন দিকপাল হিসেবে উঠে আসেন।
প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার প্রথম আঠারো মাসে জগদীশ যে সকল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেছিলেন তা লন্ডনের রয়েল সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই গবেষণা পত্রগুলোর সূত্র ধরেই লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ১৮৯৬ সালের মে মাসে তাঁকে ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে। এই গবেষণাগুলো একটু ভিন্ন আঙ্গিকে বিচার করতে হবে। প্রতিদিন নিয়মিত ৪ ঘণ্টা শিক্ষকতার পর যেটুকু সময় পেতেন তখন তিনি এই গবেষণার কাজ করতেন। তার উপর প্রেসিডেন্সি কলেজে কোন উন্নতমানের গবেষণাগার ছিলনা, অর্থ সংকটও ছিল প্রকট। সীমিত ব্যয়ে স্থানীয় মিস্ত্রিদেরকে শিখিয়ে পড়িয়ে তিনি পরীক্ষণের জন্য উপকরণ প্রস্তুত করতেন। তাঁর এই গবেষণা কর্মগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করেই ইংল্যান্ডের লিভারপুলে বক্তৃতা দেয়ার জন্য ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এই বক্তৃতার সাফল্যের পর তিনি বহু স্থান থেকে বক্তৃতার নিমন্ত্রণ পান। এর মধ্যে ছিল রয়েল ইন্সটিটিউশন, ফ্রান্স এবং জার্মানি। সফল বক্তৃতা শেষে ১৮৯৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি সস্ত্রীক দেশে ফিরে এসেছিলেন।

জগদীশের আঠারো মাসের সেই গবেষণার মধ্যে মুখ্য ছিল অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ নিয়ে গবেষণা। ১৮৯৫ সালে তিনি অতিক্ষুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টি এবং কোন তার ছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে তা প্রেরণে সফলতা পান। ১৮৮৭ সালে বিজ্ঞনী হের্‌ৎস প্রত্যক্ষভাবে বৈদ্যুতিক তরঙ্গের অস্তিত্ব প্রমাণ করেন। এ নিয়ে আরও গবেষণা করার জন্য তিনি চেষ্টা করছিলেন যদিও শেষ করার আগেই তিনি মারা যান। জগদীশচন্দ্র তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে সর্বপ্রথম প্রায় ৫ মিলিমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট তরঙ্গ তৈরি করেন। এ ধরনের তরঙ্গকেই বলা হয়ে অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ বা মাইক্রোওয়েভ। আধুনিক রাডার, টেলিভিশন এবং মহাকাশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই তরঙ্গের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূলত এর মাধ্যমেই বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ তথ্যের আদান প্রদান ঘটে থাকে।

বিজ্ঞান শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে জগদীশ চন্দ্রের সফলতার কথা কর্মজীবন অংশেই উল্লিখিত হয়েছে। এছাড়া তিনি বিজ্ঞান গবেষণায়ও প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছিলেন যার জন্য তাঁর সুখ্যাতি তখনই ছড়িয়ে পড়েছিল। জগদীশ চন্দ্র যে গ্যালিলিও-নিউটনের সমকক্ষ বিজ্ঞানী তার স্বীকৃতি দিয়েছিল লন্ডনের ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকা, ১৯২৭ সালে। আর আইনস্টাইন তার সম্পর্কে নিজেই বলেছেন:- “জগদীশচন্দ্র যেসব অমূল্য তথ্য পৃথিবীকে উপহার দিয়েছেন তার যে কোনটির জন্য বিজয়স্তম্ভ স্থাপন করা উচিত।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঋষিতুল্য বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে বলেছেন:- “ভারতের কোনও বৃদ্ধ ঋষির তরুণ মূর্তি তুমি হে আর্য আচার্য জগদীশ।”

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, এই ভারতীয় বাঙালি বৈজ্ঞানিক ছিলেন পরাধীন ভারতবর্ষে জন্ম নেওয়া শত শত স্বদেশপ্রেমিকদের মধ্যে অন্যতম৷ তার বিভিন্ন বক্তৃতায় বারবার তাঁর এই স্বদেশপ্রেমের দিকটি উন্মোচিত হয়েছে৷ আমাদের সৌভাগ্য যে পরাধীন ভারতবাসীর স্বদেশপ্রেমের প্রকাশ শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং রাজনৈতিক সীমানা ছাড়িয়ে তৎকালীন ভারতবর্ষের বিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রেই তা সমভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছিল৷

১৯৩৭ সালের ২৩শে নভেম্বর ভারতের ঝাড়খন্ডের গিরিডিতে এই বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে তাঁর আজীবন সঞ্চিত ১৭ লক্ষ টাকার মধ্যে ১৩ লক্ষ টাকা বসু বিজ্ঞান মন্দিরকে দান করেন। ১৯৫৮ সালে জগদীশ চন্দ্রের শততম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার “JBNSTS” নামে একটি বৃত্তি প্রদান আরম্ভ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

‘অপরাজিতা দেবী’ ছদ্মনামে সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মহিলা কবি – রাধারাণী দেবী – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

রাধারাণী দেবী বিশ শতকের অন্যতম বাঙালি কবি। ভাষার মাধুর্যে ভাবের স্নিগ্ধতায় আর ছন্দের সাবলীল দক্ষতায় ‘অপরাজিতা দেবী’ ছদ্মনামে সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মহিলা কবি। আজ তাঁর জন্ম দিন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন—-

 

রাধারানী দেবী ১৯০৩ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতা, ব্রিটিশ ভারতের জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতা আশুতোষ ঘোষও ছিলেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট, পণ্ডিত, সাহিত্যপ্রেমী এবং রবীন্দ্রনাথের গভীর ভক্ত।  রাধারাণী ছিলেন তাঁর এবং নারায়ণী দেবীর দশম সন্তান।  তার শৈশব কেটেছে কোচবিহার জেলার দিনহাটায়, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন।  তিনি  ছবিরউন্নিসা গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং মাইনর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।  এরপর স্ব-শিক্ষার মাধ্যমে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন।  পারিবারিক শিক্ষার পরিবেশে তার শৈশব কেটেছে আনন্দে।

 

বাড়িতে প্রত্যেক সদস্যদের জন্য আসত ‘প্রবাসী’, ‘শিশু’, ‘মৌচাক’ , ‘সন্দেশ’, ‘সোপান’, ‘ভারতবর্ষ’ প্রভৃতি নানান পত্র পত্রিকা। তার সেজদার হাতে-লেখা ভাইবোনদের পত্রিকা ‘সুপথ’-এ দশ বছর বয়সে লেখা দেন তিনি। তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ‘মানসী ও মর্মবাণী’ পত্রিকায়।

কিন্তু তেরো বছর বয়সে প্রকৌশলী সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।  তার স্বামী যখন কয়েক মাসের মধ্যে ‘এশিয়াটিক ফ্লু’-তে আকস্মিকভাবে মারা যান, তখন তিনি স্বেচ্ছায় কঠিন বিধবা জীবন যাপন করেন।

 

সাহিত্যজীবন—-

 

সাহিত্যক্ষেত্রে কবিতা দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করতে লাগলেন রাধারাণী দত্ত নামে ‘ভারতবর্ষ’, ‘উত্তরা’,’কল্লোল’, ‘ভারতী’ প্রভৃতি পত্রিকায়। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তার প্রথম গল্প ‘বিমাতা’ প্রকাশিত হয় ‘মাসিক বসুমতী’তে। প্রথম প্রবন্ধ ‘পুরুষ’ প্রকাশিত হয় ‘কল্লোল’-এ। এর পাঁচ বছর পরে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ –  ‘লীলাকমল’।
১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তার ও নরেন্দ্র দেবের যুগ্ম সম্পাদনায় বাংলা কাব্য সংকলন ‘কাব্যদীপালি’ প্রকাশিত হয়। একবার এক সান্ধ্য আড্ডায় রাধারাণীর রচনার পরিপেক্ষিতে প্রমথ চৌধুরী মন্তব্য করেন –

” ‘…আজ পর্যন্ত কোনও মেয়ের লেখায় তার স্বকীয়তার ছাপ ফুটে উঠলো না।’

এই অভিযোগের প্রতিবাদে তিনি ‘অপরাজিতা দেবী’ ছদ্মনামে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ছায়াপাতে শুরু করেন রচনা। তাঁর কবিতার মধ্যে অন্তঃপুরের অন্তরঙ্গ জগত আত্মপ্রকাশ করেছে বিশ্বস্ততার সাথে। যেমন মাধুর্য ও কৌতুক, তেমনই প্রতিবাদ আর বিদ্রোহে সাহিত্যজগৎে এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, যা কিনা সেসময় যেকোনো মহিলা কবির কলমে প্রায় অসম্ভব ছিল। ১৯৩০-৩৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাঁর প্রকাশিত ভালোবাসার কাব্যগ্রন্থ গুলি হল – —‘বুকের বীণা’ (১৯৩০), ‘আঙিনার ফুল’ (১৯৩৪), ‘পুরবাসিনী’ (১৯৩৫), ‘বিচিত্ররূপিনী’ প্রভৃতি।

রাধারাণী ছোটদের জন্য লিখেছেন ‘নীতি ও গল্প’ এবং ‘গল্পের আলপনা’। স্বামীর সম্পাদনায় ছোটদের জন্য মাসিক পত্রিকা ‘পাঠশালা’ প্রকাশে সহায়তা ছাড়াও যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন বাংলা গ্রন্থের সংকলন ‘কথাশিল্প’। বিবাহের মন্ত্রগুপ্তির স্বচ্ছন্দ অনুবাদ করা তাঁর বইটি হল ‘মিলনের মন্ত্রমালা’। এছাড়া বারোয়ারি উপন্যাসও লিখেছেন তিনি।

 

সম্মাননা—

 

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ভুবনমোহিনী স্বর্ণপদক ও লীলা পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ‘অপরাজিতা রচনাবলী’র জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার রবীন্দ্র পুরস্কারে সম্মানিত করে।

 

মৃত্যু—-

 

রাধারাণী দেবী ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে ৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় নিজ বাসভবন ‘ভালো-বাসা’য় প্রয়াত হন।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক পঁচেটগড়ের রাস উৎসব – জানব তার সম্পর্কে কিছু কথা।

রাস উৎসবকে ঘিরে মেতে উঠেছে গোটা রাজ্য। আর রাস উৎসবের কথা বললে পঁচেটগড় রাজবাড়ীর কথা না বললেই নয়। প্রাচীন বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের থানা এলাকার পঁচেটগড় একটি প্রসিদ্ধ স্থান। পঁচেটগড় রাজবাড়ী রাস উৎসবের জন্যই সকলের কাছে এক ডাকে পরিচিত। প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন পঁচেটগড় রাজবাড়ির ঐতিহ্যবাহি এই রাস উৎসব।

ইতিহাস বলছে, একসময় এই রাস উৎসবের জাঁকজমক দুর্গোৎসবের চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না। রাজপরিবারের বর্তমান বংশধরদের দাবি, ওডিশার কটক জেলার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালুমুরারি মোহন দাস মহাপাত্র। এই দুঃসাহসিক যুবক আকবর বাদশাহের রাজ কর্মচারী ছিলেন। ওডিশার রাজা মুকুন্দদেব আকবর বাদশাহের সঙ্গে সঙ্গবদ্ধ হয়ে উভয়ের সাধারণ শত্রু গৌড়ের রাজা গৌড়েশ্বর সুলেমন কররানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়। এখানে কালুমুরারির অসামান্য কৃতত্ব প্রকাশ পায়। কথিত আছে, সেই সময় কালুমুরারি পটাশপুর পরগনায় এসে বাদশাহ প্রদত্ত নানকর ভূমি লাভ করে জমিদারি সূচনা করেন। প্রথমে কল্যাণপুরে বাস করে। পরবর্তীকালে সেখান থেকে উদ্ধার হয় এক শিবলিঙ্গ। সেই শিবলিঙ্গ দিয়েই কালুমুরারি মোহন দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। এখানে বেনারস থেকে আরও চারটি শিব লিঙ্গ এনে স্থাপন করা হয়। ধীরে ধীরে পক্ষেশ্বর নামটির প্রচার হতে থাকে।

 

 

এখানেই তিনি তৈরি করেন পঁচেটগড় রাজবাড়ি। শ্রী চৈতন্যদেব যখন পটাশপুর হয়ে পঁচেট পরগনা দিয়ে পুরী গিয়েছিলেন তখন জমিদার বাড়ির সদস্যরা শৈব থেকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেন। পরে জমিদার বাড়ির কুলদেবতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন কিশোররাই জিউ। যাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর কার্তিক পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় রাস উৎসব। রাস উৎসব ছাড়াও রাজবাড়িতে হয় দুর্গপুজো, ঝুলন উৎসব,নন্দ উৎসব,
পঁচেটগড় রাজবাড়ির রাস উৎসব এখন সর্বসাধারণের উৎসব। এই উৎসব ধর্ম, সংস্কৃতি ও সামাজিক
ঐক্যের এক অপার মিলন ক্ষেত্র। প্রতিবছর এই উৎসব উপলক্ষে মেলায় শুধু জেলা নয়, জেলা ছাড়িয়ে পাশ্ববর্তী রাজ্য ওডিশা থেকেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। সাম্প্রতি কয়েক বছর আগে পঁচেটগড় রাজবাড়ীকে হেরিটেজ ঘোষণা করে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন। হেরিটেজ পঁচেটগড় রাজবাড়ীতে রয়েছে হোমস্ট্রের বেবস্থা। তাই বিদেশ থেকে অনেক পর্যটক আসেন রাজবাড়ীতে থাকার জন্য  এই  রাস উৎসবের সময় অসংখ্য বিদেশি পর্যটক ভিড় জমান রাজবাড়ীতে।রাস উৎসবের কয়েকদিন রয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য রয়েছে  বার্তি পাওনা রাজবাড়ীর পক্ষ থেকে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে রাজবাড়ীর সংগ্রহসালা।

 

রাস উৎসবে প্রতি সন্ধ্যায় কিশোররাই সহ কুড়ি জন ঠাকুরের  বিগ্রহ শোভাযাত্রা সহকারে পঁচেটগড় রাজবাড়ী থেকে রাস মঞ্চে আসেন ও প্রায় ঘন্টা তিনেক  মঞ্চে থাকেন। তবে রাতে ফের মূল মন্দিরে ফিরে আসেন কিশোররাই। এই রাস মেলার ১ লা ডিসেম্বর দধি উৎসবের দিন প্রতিবারের মতোই রাত ৩ টা থেকে  দুপুর  ১১টা পর্যন্ত রাস মঞ্চে থাকবেন কিশোররাই জিউ। মেলা শুর হয়েছে ২৭ শে নভেম্বর সোমবার থেকে। চলবে ৬ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলায় পত‍্যহ রয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলায় রয়েছে আলোকসজ্জা সারকাস,টোরাটোরা,ট্রয় ট্রেন ও প্রসাধন সামগ্রীর দোকান।
দশদিনের মেলায় নিরাপত্তায় এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় গোটা মেলাচত্বরে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

দানবীর হাজী মুহম্মদ মুহসীন- প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

হাজী মুহাম্মদ মহসিন  ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলার একজন প্রখ্যাত মুসলিম জনহিতৈষী, ধার্মিক, উদার ও জ্ঞানী ব্যক্তি, যিনি তাঁর নিজের দানশীলতার মহৎ গুণাবলীর জন্য দানবীর খেতাব পেয়েছিলেন।ইতিহাসে দাতা হাজী মুহাম্মদ মহসিনের নাম চিরস্মরণীয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের নাম তার স্মরণে রাখা হয়েছে। এছাড়াও মহসিন ফান্ডের অর্থে অসংখ্য দরিদ্র ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাটির নাম বিএনএস হাজী মহসিন।

হাজী মুহম্মদ মহসিন ৩ জানুয়ারি ১৭৩২ সালে হুগলি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। একজন অত্যন্ত নম্র জনহিতৈষী, হাজী মুহাম্মদ মহসিন তার উদারতার জন্য ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।

দানের ক্ষেত্রে তুলনা অর্থে মানুষ সর্বদা তার দৃষ্টান্ত ব্যবহার করে থাকে। এই সর্বশ্রেষ্ঠ দানবকে সমগ্র বাঙালি জাতি, হিন্দু-মুসলমান সকলেই শ্রদ্ধা করে।
হাজী মহসিন অনেক সম্পত্তির মালিক ছিলেন।  এসব সম্পদ তিনি দুই হাতে বিতরণ করেছেন।  মহসিনের পূর্বপুরুষরা অনেক ধনী ছিলেন।  তার পিতা হাজী ফয়জুল্লাহ, যিনি ইরান থেকে বাংলায় আসেন, তিনি ছিলেন একজন ধনী জায়গীরদার।
মাতা জয়নব খানম হুগলি, যশোর, মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়াতেও বিশাল জমির মালিক ছিলেন।  বোন মন্নুজানের মৃত্যুর পর মহসিন উত্তরাধিকারী হিসেবে তার বোনের সম্পত্তির মালিক হন।
এত সম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও মহসিন ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক ও নিরীহ।  তিনি সবসময় সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন।  তিনি ছিলেন চিরকুমার।  তিনি যে প্রাসাদে ইমাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেখানে তিনি থাকতেন না।  বাড়ির পাশে একটি ছোট কুঁড়েঘরে থাকতেন ইমাম।

বোন মুন্নুজানের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি প্রচুর সম্পদের মালিক হন।  মেধাবী মহসিন মুর্শিদাবাদে শিক্ষাজীবন শেষ করে বিশ্বভ্রমণে বের হন।  তিনি ইরান, ইরাক, আরব, তুর্কিয়ে প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেন এবং এর সাথে মক্কা, মদিনা, কুফা, কারবালা প্রভৃতি স্থানে যান।
তিনি ছিলেন চিরকুমার।  ফলে এ সম্পদ মানবকল্যাণে ব্যয় করার যথেষ্ট সুযোগ তার ছিল।
১৭৬৯-৭০ সালের সরকারী নথি থেকে জানা যায় যে সেই সময়ের মহা দুর্ভিক্ষের সময় তিনি অনেক লঙ্গরখানা স্থাপন করেছিলেন এবং সরকারি ত্রাণ তহবিলে অর্থ প্রদান করেছিলেন।
কঠোর তপস্বী মহসিন ১৮০৬ সালে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন এবং দুজন মুতওয়াল্লি নিয়োগ করেন।  তিনি তার সম্পত্তি নয় ভাগে ভাগ করেন।  তিনটি শেয়ার ছিল ধর্মীয় কাজে ব্যবহারের জন্য।

হাজী মুহাম্মদ মহসিন প্রতিষ্ঠিত ইমামবারা, হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ।

পেনশন, বৃত্তি এবং দাতব্য ব্যয়ের জন্য চারটি শেয়ার রাখা হয় এবং মুতাওয়াল্লিদের বেতন হিসাবে দুটি শেয়ার রাখা হয়।
তাঁর ওয়াকফের অর্থ ব্যবহার করা হয়েছিল হুগলিতে মহসিন কলেজ এবং চট্টগ্রামে হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য।  তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয় দৌলতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়।  মহসিন তহবিলের পৃষ্ঠপোষকতায়, ধর্ম নির্বিশেষে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রদান করা হয়।
মহসিন খুবই সাদাসিধে ও ধার্মিক জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন।  নিজ হাতে রান্না করে খেতেন। তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রচুর সম্পত্তি পেয়েছিলেন, যা তাকে সেই সময়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম করেছিল।  এই বিশাল সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি কেবল একটি অতি সাধারণ এবং অসাধারন জীবনযাপনই করেননি, বরং সঠিক শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা এবং দরিদ্র জনগণের দুঃখ-কষ্ট ও দারিদ্র্য দূর করার জন্য তার সম্পত্তির বিপুল ত্যাগ স্বীকার করেছেন।

হাজী মুহম্মদ মহসিন ২৯ নভেম্বর ১৮১২ সালে মারা যান।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও বাংলাপিডিয়া।

 

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় – জন্মদিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সিনেমা প্রিয় বাঙালির কছে শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় এক অতি পরিচিত নাম। অসাধারণ ও সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে সকলের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়   ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেতা, যিনি মূলত বাংলা ভাষায় অভিনয় করতেন। আজ তাঁর জন্মদিবসে জানব তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা।

 

বাক্তিগত জীবন—

 

শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায় ২৯ নভেম্বর ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। শুভেন্দুর বাবা শৈলেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মা মণিমালা দেবী।  ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন।  ১৯৫৩ সালে তিনি কলকাতার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যোগদান করেন।  ১৯৬০ সালে এমবিবিএস পাস করেন। প্রথমে সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন এবং তারপর কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশনে যোগ দেন।  চিকিৎসক জীবন ছেড়ে রুপালি পর্দায় আসেন তিনি। প্রখ্যাত অভিনেতা জ্ঞানেশ মুখোপাধ্যায়ের কাছে অভিনয় শিক্ষা। অংশ নিয়েছিলেন IPTA মুভমেন্টেও। সত্যজিৎ রায়ের ‘চিড়িয়াখানা’ ছবির শুটিং চলাকালীন উত্তম কুমারের হার্টের সমস্যা দেখা দিলে শুভেন্দু ছিলেন প্রাথমিক নার্স।  এবং তার পরামর্শে অবিলম্বে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।  সেই যাত্রায় বেঁচে যান উত্তমকুমার।

 

তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকা সমূহ—

 

 

 

চৌরঙ্গী, আরোগ্য নিকেতন, অরণ্যের দিনরাত্রি, রাজনন্দিনী, অমর সঙ্গী, কাঁচ কাটা হীরে, আকাশ কুসুম, চিড়িয়াখানা,  হংসমিথুন, একান্ত আপন, গণশত্রু, আশা ও ভালবাসা, কুহেলি, ছদ্মবেশী, অনিন্দিতা, কোরাস, আপন পর, জামাইবাবু, মনের মানুষ, দহন, ভালবাসা,   লাল দরজা,  কাঞ্চনমালা, দেশ,  আমার মায়ের শপথ, আবর অরণ্যে।

 

পুরস্কার ও সম্মননা—

 

আনন্দলোক পুরস্কার: সেরা অভিনেতা – ১৯৯৮ (লাল দরজা চলচ্চিত্র)।

 

প্রয়াণ—

৫ জুলাই ২০০৭ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৯ নভেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৯ নভেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) প্যালেস্টিনিয়ানদের সঙ্গে বিশ্ব সংহতি দিবস৷

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০১ – মিলড্রেড হ্যারিস, মার্কিন নির্বাক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

 

১৯৩২ – জ্যাক শিরাক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি।

 

১৯৩৬ – শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়,ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেতা।

 

১৯৪৪ – মানিক সরকার, ভারতীয় বাঙালি বংশোদ্ভূত আমেরিকান অ্যানিমেটর ও লেজারশিল্পী ।

 

১৯৭৩ – রায়ান গিগস, ওয়েলশ ফুটবলার।

১৮৭৪ – অ্যাগাস মোনেশ, পর্তুগিজ স্নায়ুতত্ত্ববিদ।

 

১৮৯৪ – বোরিস পিলনিয়াক, রুশ ঔপন্যাসিক।

 

১৪২৭ – ঝেংটংয়ে, চীনের রাজা ।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৪ – বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন বিল-২০০৪ পাস হয়।

১৯১০ – ট্রাফিক বাতি প্যাটেন্ট হয়।

১৯১৩ – যুগোস্লাভিয়ায় মার্শাল টিটোর নেতৃত্বে এন্টি ফ্যাসিজম ফ্রন্ট গঠিত হয়।

১৯১৮ – লিথুয়ানিয়া প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষিত।

১৯৩২ – সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ফ্রান্সের চুক্তি হয়।

১৯৪৪ – আলবেনিয়া নাৎসি কবল থেকে মুক্ত হয়।

১৯৪৭ – পাশ্চাত্য ও ইহুদিবাদীদের প্রভাবাধীন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, ফিলিস্তিন ভূখন্ডকে বিভক্ত করার পক্ষে রায় দেয় এবং বায়তুল মোকাদ্দাসকে জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা বলে ঘোষণা করে।

১৯৮৮ – প্রলংকারী ঘূর্নিঝড় ও জলোচ্ছাসে বিধ্বস্ত হয় দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ন জনপদ।

১৯৯৪ – নেপালে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মহমোহন অধিকারী প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

১৯৯৬ – সীমান্ত সমস্যা চীন ভারত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৮৩৯ – গৌরীশঙ্কর তর্কবাগীশের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘সম্বাদ রসরাজ’ প্রকাশিত হয়।

১৮৯৭ – ইংল্যান্ডের সারেতে প্রথম মোটরসাইকেল রেস হয়।

১৭৭৫ – স্যার জেমস জে অদৃশ্য কালি আবিষ্কার করেন।

১৭৯২ – মার্ক উডের করা সমগ্র কলকাতার নকশা প্রথম প্রকাশ করেন মি. বেইলি।

১৫২০ – স্প্যানিশ নাবিক মাজলান নতুন একটি প্রণালীর সন্ধান পান।

১৫৯৬ – রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ সে দেশের মুদ্রা অবমূল্যায়িত করেন।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০১ – জর্জ হ্যারিসন, বিংশ শতাব্দীর অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন জনপ্রিয় গায়ক এবং গিটারিস্ট।

 

১৯২৪ – ইটালির মিউজিক কম্পোজার জিয়াকোমো পুচিনো।

১৯৪৯ – রস-সাহিত্যিক কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

১৯৫১ – প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়া,ভারতের একজন বিখ্যাত অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্য লেখক।

 

১৯৮৭ – মোহাম্মদ তোয়াহা, বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং রাজনীতিবিদ।

 

১৯৯৩ – জাহাঙ্গীর রতনজী দাদাভাই টাটা, ভারতের অগ্রগণ্য শিল্পপতি।

 

১৮১২ – ভারতীয় বাঙালি মুসলমান শিক্ষাব্রতী ও সমাজসেবী দানবীর হাজী মুহম্মদ মুহসীন।

 

১৬৪৩ – ইটালির বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ক্লাওদিও মোন্তেভেরদ।

 

১০৫৮ – ফ্রান্সের রাজা চতুর্থ ফিলিপ।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বীরেন্দ্রনাথ সরকার,ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং কলকাতার নিউ থিয়েটার্সের প্রতিষ্ঠাতা – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

বীরেন্দ্রনাথ সরকার একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং কলকাতার নিউ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা।  তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে অনেক নতুন চলচ্চিত্র পরিচালককে সুযোগ দিয়েছিলেন এবং তাদের অনেকেই পরে চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদানের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। ভারত সরকার তাঁকে ১৯৭০ সালে “দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার” এবং ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত করে।  , ১৯৭২ সালে।

 

৫ জুলাই ১৯০১, ভাগলপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বি.এন.সরকার। তার পিতা ছিলেন তৎকালীন বাংলার অ্যাডভোকেট-জেনারেল, স্যার এন.এন.সরকার।

কলকাতার একটি হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা শেষ করার পর, তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন করেন এবং ভারতে ফেরার পর তাকে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে বলা হয়।  এই প্রকল্পে কাজ করার ফলে চলচ্চিত্রের প্রতি তার গভীর আগ্রহ তৈরি হয় এবং তিনি বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য একটি সিনেমা থিয়েটার নির্মাণে এগিয়ে আসেন।  ১৮৩০ সালের ৩০ ডিসেম্বর, সুভাষ চন্দ্র বসু কলকাতায় ‘চিত্রা’ নামে একটি সিনেমা থিয়েটার খুলেছিলেন এবং হিন্দি ছবি দেখানোর জন্য নতুন সিনেমার নির্মাণ শুরু হয়েছিল।  এরপর বীরেন্দ্রনাথ সরকার দুটি নির্বাক চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।

 

১৯৩১ সালে ১০ ফেব্রুয়ারি,  কলকাতায়, বি.এন.সরকার প্রতিষ্ঠা করেন নিউ থিয়েটার্স। তিনি তখনকার দিনের বিখ্যাত সব ব্যক্তিকে নিউ থিয়েটার্সে নিয়ে আসেন, যেমন পরিচালক প্রমথেশ চন্দ্র বরুয়া, প্রেমাঙ্কুর আতর্থী, দেবকী বোস, ধীরেন গাঙ্গুলি, বিমল রায় এবং ফনি মজুমদার। কে এল সায়গাল, পাহাড়ি সান্যাল, অমর মল্লিক, কানন দেবী, চন্দ্রাবতী দেবী, লীলা দেসাই এবং পৃথ্বীরাজ কাপুরের মতো অভিনেতারাও ছিলেন। হলিউড এবং ইউরোপে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন সম্পর্কে ভালভাবে অবগত, মুকুল বোস (সাউন্ড রেকর্ডিস্ট-ডিরেক্টর), ইউসুফ মুলজি (ক্যামেরাম্যান), নিতিন বোস (ক্যামেরাম্যান-ডিরেক্টর) এবং সুবোধ মিত্র (সম্পাদক) এর মতো প্রযুক্তিবিদরাও ছিলেন এবং তারা নিউ থিয়েটার স্টুডিও তে সীমাবদ্ধতা থাকলেও কিছু প্রযুক্তি চালু করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। রাইচাঁদ বড়াল, তিমির বরন এবং পঙ্কজ মল্লিকের মতো সংগীত সুরকার ও গায়করাও নতুন থিয়েটারের প্রযোজনার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি নিজে ১৯৪০ এর দশকের শেষদিকে বিএমপিএ-র সভাপতি ছিলেন।

 

২৮ নভেম্বর ১৯৮০ বীরেন্দ্রনাথ সরকার প্রয়াত হন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This