Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

মূল্যবান মনুষ্য জীবন ও আমাদের সুন্দর সমাজ : স্বামী আত্মভোলানন্দ।

ওঁ নমঃ শ্রী ভগবতে প্রণবায় ….।

***আমাদের ভারতীয় সত্য সনাতন হিন্দু ধর্মের মধ্যে যখন কোন মানুষকে ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য এই ছয়টি গুনের অধীশ্বর রূপে  আরাধনা করা হয়  তখন তাকে ভগবান বলা হয়। যেমন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দ। আমাদের ভারতীয় সত্য সনাতন  হিন্দু ধর্ম হল সেই বিজ্ঞান যেটা বহু বছর ধরে সাধু, সন্ন্যাসী, জ্ঞানী, মহাত্মাদের সঠিক মার্গ দর্শনে আমাদের দেশে ক্রমশ বেড়ে উঠেছে। তাই হিন্দুধর্ম হল একটা বিজ্ঞান সম্মত ধর্ম যার নাম সনাতন ধর্ম , শাশ্বত চিরন্তন ধর্ম। তাই, আমাদের হিন্দু ধর্মের কোন প্রবর্তক নেই।  আমাদের সত্য সনাতন  হিন্দু ধর্মে সামাজিক জীবনে ধর্মীয় প্রভাব অপরিসীম।আমাদের সমাজে আমরা মহিলা,পুরুষ,শিশু,বৃদ্ধ, উচ্চ,নিচ, ধনী,দরিদ্র সকল, পেশার মানুষ  জাতি, ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে আবহমান কাল ধরে  সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ
হয়ে বসবাস করে আসছি। আমাদের এই সত্য সনাতন হিন্দু ধর্ম হল যার ভিত্তি।এই সত্য সনাতন হিন্দু ধর্ম হল অনন্ত,অসীম,সীমাহীন,অন্যগুলো অনেকপরে এবং এক একজন বিশেষ ব্যক্তির / প্রবর্তক এর সৃষ্টি।

আমাদের সমাজে বর্ণাশ্রম প্রথা হল বৈদিকযুগের শ্রমবিভাগ।(Division of labour)
স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বলেছেন
চার্তুবর্নাং ময়া সৃষ্টং গুনকর্মবিভাগশঃ……..
অর্থাৎ:- গুন ও কর্মের ভিত্তিতে আমি চার বর্নের সৃষ্টি করেছি।স্বভাবজাত গুন অনুসারে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ‍্য, শূদ্র  এর কাজকর্ম পৃথক করা হয়েছে । অর্থাৎ সমাজে সবলোকের স্বভাবজাত প্রবনতা,দক্ষতা এক নয় তাদের স্বভাবজাত প্রবনতা এবং  দক্ষতা ভিন্নধর্মী, এর ফলেই শ্রমবিভাজন বা বর্ণাশ্রম। যিনি জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চায় প্রবল ও সাত্বিকী শ্রদ্ধা বিদ‍্যমান তিনিই ব্রাহ্মণ।পরাক্রম, তেজ, ধৈর্য্য, কলাকুশলতা, যুদ্ধে পরান্মুখতা ইত্যাদি গুন যার মধ‍্যে আছে এবং যিনি দানে আগ্রহী এবং নেতৃত্বদানের ক্ষমতা সম্পন্ন তিনিই ক্ষত্রিয়। কৃষি গোপালন, ব‍্যাবসা বানিজ‍্যে যার মন তিনিই বৈশ‍্য এবং যার নিজশ্ব প্রচেষ্টা উদ্দ‍্যম নেই পরের সেবা বা কাজ  দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তিনিই শূদ্র।

আমাদের সমাজে এবং পৃথিবীর সবদেশেই অজ্ঞাতসারে বা অলিখিত ভাবে বর্নাশ্রম প্রথা বিদ‍্যমান। ব্রাহ্মণ গুনসম্পন্ন ব‍্যাক্তিরা গবেষণা শিক্ষকতা/অধ‍্যাপনায় নিযুক্ত। ক্ষত্রিয় গুনসম্পন্ন ব‍্যাক্তিরা সামরিক বা পুলিশ ও আধিকারিক পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন। বৈশ‍্য গুনসম্পন্ন ব‍্যাক্তিরা ব‍্যাবসা বানিজ‍্যে নিযুক্ত হচ্ছেন। এবং  শূদ্র গুনসম্পন্ন ব‍্যাক্তিরা সেবামূলক বা শ্রমশীল কাজে নিযুক্ত হচ্ছেন। বর্নাশ্রম প্রথা শুধুমাত্র হিন্দু শাস্ত্রাদি দ্বারাই নির্দিষ্ট, কিন্তু জাতি বা অশ্পৃশতা হিন্দু শাস্ত্রে অনুপস্থিত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ  শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বলেছেন কর্মের ভিত্তিতে আমি চার বর্নের সৃষ্টি করেছি । বর্তমানে ও আমাদের সমাজে  যোগ্যতা, দক্ষতা, কর্ম কুশলতা, কর্ম নৈপুণ্যতার ভিত্তিতে সামাজিক ভারসাম্য  আছে, জাতির ভিত্তিতে নয়l

মানুষ আমরা সামাজিক জীব। আমাদের সত্য সনাতন হিন্দু ধর্মে সামাজিক জীবনে পরিবারের সাথে ধৈর্য্য ধরা হল ভালবাসা, অন্যের সাথে ধৈর্য্য ধরা হল সম্মান।নিজের সাথে ধৈর্য্য ধরা হলো আত্মবিশ্বাস আর ভগবান সাথে ধৈর্য ধরা হলো বিশ্বাস। আমাদের সমাজে কখনো কোন মানুষ কিন্তু একা থাকে না, তার সাথে জড়িয়ে থাকে তার প্রতি একান্ত নির্ভরশীল মানুষ গুলো ও। তাই যদি আপনি কারো ক্ষতি করার চিন্তা করেন, তার সাথে যারা জড়িত এবং তার প্রতি যারা একান্ত নির্ভরশীল আপনি তাদেরও ক্ষতি  করছেন। তাই, কখনো কারো জীবনের ব্যাথার কারন হবেন না।যদি পারেন তাকে উৎসাহিত করেন। নিজের স্বার্থ রক্ষার্থে  কখনো অন্যকে ব্যবহার করবেন না।কারো স্বপ্নকে ভাঙ্গবেন না,যদি পারেন কারো জীবনের অনুপ্রেরনা হবেন কখনো নিরাশার আঁধার হয়ে আসবেন না। তাই কাউকে দেবার মতন যদি আপনার কিছু না থাকে তবে অবশ্যই নিজের ভালো ব্যবহার উপহার দিন।

কারন,আমাদের হিন্দু ধর্মে সামাজিক জীবনে পাপ এর বোঝা আপনার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হবে। মানুষের মুখের কথার মাঝে এমন শক্তি আছে, যে মুখের কথায়  কোন মানুষ জীবন ফিরে পায়। আবার সেই মুখের এই কথার কারনেই  কোন মানুষ মৃত্যুর দ্বার অব্দি পৌঁছায়। তাই কথা বলার সময় অবশ্যই বুঝে বলবেন। জীবনে কিছু ভালো কাজ না করতে পারলেও কোনও দরিদ্র মানুষকে একবারের জন্যও কিছু সহায়তা করুন, কোনও তৃষ্ণার্তকে এক গ্লাস জল প্রদান করুন,  কোনও ক্ষুধার্তকে একটু ফল প্রদান করুন, হয়তো কখনও  হঠাৎ অসুস্থ হওয়া কারো একটু সেবা করতে পারেন, হয়তো বর্ষায় ভিজে যাওয়া  কারো মাথায় একটু ছাতা ধরতে পারেন,এমনভাবে কিছু কিছু সহায়তা করুন
আমাদের চারপাশের মানুষকে। সর্বদা মনে রাখবেন, আমাদের চারপাশে যা যায় তাই ফিরে আসে আমাদের জীবনে।

তাই, সামাজিক জীবনে দয়ালু হন, ন্যায্য হন, সৎ হন, এবং তবেই এই সমস্ত জিনিস আপনার জীবনে আপনার কাছে ফিরে আসবে। আমাদের সমাজে জীবনে খারাপ সময় আসলেই পুরো পৃৃথিবীকে চেনা যায়। বন্ধু- বান্ধুব, আপন মানুষ, প্রিয় মানুষ সবার আসল রুপটা বেড়িয়ে আসে। দেখা যায় কে আমাদের জন্য কতটুকু  করতে পারে, আর কে আমাদের জন্য কি করে। যাদের বিপদে আপদে আপনি সবসময় পাশে ছিলেন দেখবেন আপনার খারাপ সময়ে বেশিরভাগ সময়ই আপনি তাদেরকে পাশে পাবেন না। কেউ ব্যস্ততা দেখাবে, কেউ বিভিন্ন সমস্যা দেখাবে, কেউ যোগাযোগ রাখাই বন্ধ করে দিবে। তখন নিজের উপর খুব রাগ হবে, নিজেকে খুব অসহায় মনে হবে।আবার খারাপ সময়ে এমন কিছু মানুষকে খুঁজে পাই যারা আমাদের আপন না হয়েও আমাদের আপন মানুষ গুলোর চেয়ে ও অনেক বেশি কিছু করে।জীবনে খারাপ সময় আর খারাপ মুহূর্তগুলো আমাদেরকে দিয়ে যায় মানুষ চেনার সবচাইতে বড় শিক্ষা। যে শিক্ষা জীবনে খারাপ সময় না আসলে আমরা হয়ত কোনদিনও অর্জন করতে পারতাম না। সত্যিকারের বন্ধু বা সত্যিকারের আপন মানুষ খুঁজে পাওয়ার জন্য  আমাদের জীবনে খারাপ সময় আসাটা খুব দরকার।

সামাজিক জীবনে আমাদের অনেক সময় অহঙ্কারে গর্বে আমাদের অনেকের মানসিকতা একেবারে হীন হয়ে পড়ে ! ধরা কে সরা জ্ঞান করি আমরা ! আমাদের নিজেদের স্থায়িত্ব ই বা কতটুকু আমরা কি কিছু জানি ! অন্যকে সন্মান দিন সন্মান পাবেন ! সংসার ভরে উঠবে সুখে শান্তিতে আনন্দে  ! এই বিশ্ব সংসারে আমি কি ? আমি কে ? আমার উদ্ভব কোথা থেকে? আর আমার বিনাশই বা কোথায় কি ভাবে? আমরা কি কেউ জানি ?
তাই, আমাদের সামাজিক জীবনে আমরা যদি অত্যধিক চাওয়া পাওয়ার বাসনা থেকে নিজেকে  দুরে রাখতে
পারি, মনে রাখবেন তাহলে তিনি সমাজে আসল সুখের জগতে প্রবেশর পথ খুঁজে পেলেন। তাই, সদ গুরুদেব এর কাছে, ভগবান এর কাছে সকলের মঙ্গল কামনা করি আমাদের সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এই প্রার্থনা করি ! জগৎগুরু ভগবান স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের শুভ ও মঙ্গলময় আশির্বাদ সকলের শিরে বর্ষিত হোক! এই প্রার্থনা করি…***
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ….!
স্বামী আত্মভোলানন্দ

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাংলা চলচ্চিত্র জগতে পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ(Rituparno Ghosh) একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।

ঋতুপর্ণ ঘোষ ১৯৬৩ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতায় একটি বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  তার বাবা সুনীল ঘোষ ছিলেন একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা এবং চিত্রকর।  তিনি সাউথ পয়েন্ট স্কুলে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন এবং কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন।  একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও লাভ করেন।  তিনি ভারতীয় সিনেমায় প্রকাশ্যে এলজিবিটি ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ছিলেন এবং ভারতের কুইয়ার সম্প্রদায়ের আইকন হিসেবে বিবেচিত হন।

 

ঋতুপর্ণ ঘোষ ছিলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, লেখক এবং গীতিকার।  অর্থনীতিতে ডিগ্রী অর্জনের পর, তিনি একটি বিজ্ঞাপন সংস্থায় সৃজনশীল শিল্পী হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।  তিনি তার দ্বিতীয় ফিচার ফিল্ম ইউনিশে এপ্রিলের জন্য স্বীকৃতি পেয়েছিলেন যেটি সেরা ফিচার ফিল্মের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিল।  তাঁর সমসাময়িক অপর্ণা সেন এবং গৌতম ঘোষের সাথে ১৯টি জাতীয় পুরস্কার জিতে, ঋতুপর্ণ সমসাময়িক বাংলা সিনেমাকে আরও উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন।  ঘোষ   ৩০ ​​মে ২০১৩ কলকাতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।  ঘোষ ভারতীয় সিনেমায় প্রকাশ্যে সমকামী ব্যক্তিত্বদের একজন ছিলেন।  ঘোষ সত্যজিৎ রায়ের রচনা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একজন আগ্রহী পাঠক ছিলেন।  ঠাকুরের কাজ প্রায়শই তার চলচ্চিত্রে উল্লেখ করা হয়।  তিনি ঠাকুরের জীবনের উপর জীবনস্মৃতি নামে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করেন।  প্রায় দুই দশকের কর্মজীবনে তিনি ১২টি জাতীয় এবং অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন।  তাঁর অপ্রকাশিত বাংলা চলচ্চিত্র সানগ্লাস (তাক ঝাঁক নামেও পরিচিত) ১৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত এবং মুক্তি পায়।  তার চলচ্চিত্র নির্মাণ অপর্ণা সেন, তপন সিনহা, সত্যজিৎ রায়, সঞ্জয় লীলা বনসালি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।

 

১৯৯৪ থেকে ২০১৩, মাত্র ১৯ বছর। এর মধ্যেই ঋতুপর্ণ ঘোষের মেধা এবং প্রতিভার ফসল মোট ১৯টি ছবি। প্রত্যেকটি ছবিই সতন্ত্র,অনবদ্য। ১৯টি ছবির মধ্যে ১২টি জাতীয় পুরষ্কার জয় করেছিল। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক পরবর্তী বাংলা সিনেমার নতুন এক ধারা তৈরি করেছিলেন ঋতুপর্ণ। ‘হীরের আংটি”-র হাত ধরে পথ চলা শুরু। শেষ হয়ে গেল ”চিত্রাঙ্গদায়”-য় এসে।তিনি মারা যাওয়ার ঠিক আগে, তিনি বাঙালি গোয়েন্দা ব্যোমকেশ বক্সীর উপর ভিত্তি করে তার শেষ চলচ্চিত্র সত্যান্বেষীর নির্মাণ কাজ শেষ করেছিলেন।

 

অভিনেতা ঋতুপর্ণ—

 

২০১১- আর একটি প্রেমের গল্প

২০১১- মেমরিস ইন মার্চ

২০১২- চিত্রাঙ্গদা

 

পরিচালক ঋতুপর্ণ—

 

১৯৯৪- হীরের আংটি, উনিশে এপ্রিল (জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ পরিচালক, জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী- দেবশ্রী রায়), ১৯৯৭- দহন (জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ স্ক্রিন প্লে, জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী- ইন্দ্রাণী হালদার, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত), ১৯৯৯- বাড়িওয়ালি (জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী-কিরণ খের, শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেত্রী- সুদীপ্তা চক্রবর্তী),  অসুখ (জাতীয় পুরস্কার – বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ সিনেমা), ২০০০- উৎসব (শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার), ২০০২- তিতলি, ২০০৩- শুভ মহরত (জাতীয় পুরস্কার – বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ সিনেমা, শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেত্রী- রাখী), চোখের বালি (জাতীয় পুরস্কার – শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা), ২০০৪- রেনকোট (হিন্দি ভাষায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কার), ২০০৫- অন্তরমহল, ২০০৬- দোসর (জাতীয় পুরস্কার, বিশেষ জুরি পুরস্কার – প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী), ২০০৭- দ্য লাস্ট লিয়র (ইংরেজি ভাষায় শ্রেষ্ঠ ছবির জাতীয় পুরস্কার), ২০০৮- খেলা, সব চরিত্র কাল্পনিক (জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা), ২০১০- আবহমান (জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ পরিচালক, বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ ছবির জাতীয় পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার), নৌকাডুবি, ২০১২- সানগ্লাস, চিত্রাঙ্গদা (বিশেষ জুরি পুরস্কার, অভিনেতা ঋতুপর্ণ ঘোষ), জীবনস্মৃতি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী অবলম্বনে নির্মিত তথ্যচিত্র)।

 

ঋতুপর্ণ ঘোষ ৩০ ​​মে ২০১৩ তারিখে তার কলকাতার বাসভবনে মারা যান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।  তার পরিচারক দিলীপ এবং বিষ্ণু তাকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।  মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৪৯ বছর।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৩১ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ৩১ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

(ক)  মালয়শিয়ার স্বাধীনতা দিবস

(খ) কিরগিজিস্তান-এর স্বাধীনতা দিবস

(গ) ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর স্বাধীনতা দিবস

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯১৩ – বার্নার্ড লভেল্, ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

১৯৩৬ – ভ্লাদিমির অরলভ, রাশিয়ান লেখক।

১৯০৭ – রামোন ডেল ফিরো ম্যাগসেসে, ফিলিপিনো অধিনায়ক, প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদ ও ৭ম সভাপতি।

১৯১৯ – অমৃতা প্রীতম, ভারতীয় কবি ও লেখক।

১৯২৮ – জেমস হ্যারিসন কোবার্ন, আমেরিকান অভিনেতা।

১৯৪৪ – ক্লাইভ লয়েড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ক্রিকেটার।

১৯৪৫ – ভ্যান মরিসন, উত্তর আইরিশ গায়ক ও গীতিকার।

১৯৪৯ – এইচ ডেভিড পলিতজার, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯৪৯ – রিচার্ড গিয়ার, আমেরিকান অভিনেতা ও প্রযোজক।

১৯৬০ – হাসান নাসরুল্লাহ, লেবাননের রাজনৈতিক ও আধাসামরিক প্রতিষ্ঠান, হিজবুল্লাহর তৃতীয় মহাসচিব।

১৯৬৩ – ঋতুপর্ণ ঘোষ, বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র নির্মাতা ।

১৯৬৯ – জাভাগাল শ্রীনাথ, সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার।

১৯৭০ – নিকোলা গ্রুয়েভস্কি, ম্যাসাডোনিয়া অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ ও ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।

১৯৭৭ – জেফ হার্ডি, আমেরিকান কুস্তিগির ও গায়ক।

১৯৮২ – পেপে রেইনা, স্প্যানিশ ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৮৫ – রোলানদো জর্জ পিরেস দা ফনসেকা, পর্তুগিজ ফুটবলার।

১৮৪৩ – গেয়র্গ ভন হেরটলিং, জার্মান শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও ৭ম চ্যান্সেলর।

১৮৪৪ – শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজসেবী চন্দ্রনাথ বসু।

১৮৭০ – মারিয়া মন্টেসরি,ইতালীয় চিকিৎসক এবং শিক্ষাবিদ, নিজের নামে প্রতিষ্ঠা করা শিক্ষা দর্শন – “মন্টেসরি শিক্ষাপদ্ধতি”র জন্য সুপরিচিত।

১৮৭৯ – আল্‌মা মাহ্‌লের, অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান সুরকার ও চিত্রশিল্পী।

১৮৮৮ – কানাইলাল দত্ত, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী।

১৮৯৭ – ফ্রেডরিক মার্চ, আমেরিকান লেফটেন্যান্ট, অভিনেতা ও গায়ক।

১৮২১ – হারমান ভন হেল্মহোল্টয, জার্মান চিকিৎসক ও পদার্থবিজ্ঞানী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৫ – ইরাকের কাজেমাইন শহরে এক শোকানুষ্ঠানে প্রায় এক হাজার ইরাকি মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়।

১৯০৫ – বঙ্গভঙ্গ বিল পাস হয়।

১৯০৭ – ইংল্যান্ড ও রাশিয়ার মধ্যে ইঙ্গ-রুশ মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৫৭ – মালয়েশিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৫৯ – কলকাতায় খাদ্যের দাবিতে কৃষক মিছিলে ভারতের কংগ্রেস সরকারের গুলি চালনায় ৮০ জন নিহত হয়।

১৯৬২ – লাতিন আমেরিকার দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৬৩ – ক্রেমলিন ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে হট লাইন প্রতিষ্ঠা করা হয়।

১৯৬৫ – মালয়েশিয়ার জাতীয় পতাকা যুক্তরাজ্যে সর্বপ্রথম উত্তোলন করা হয়।

১৯৬৮ – ভারতে তৈরী উপগ্রহ ‘রোহিনী’ আকাশপথে যাত্রা করে।

১৯৬৮ – ইরানের খোরাশানে মারাত্মক ভূমিকম্পে ১৮ হাজার নিহত হয়।

১৯৭১ – সঙ্গীতশিল্পী আলতাফ মাহমুদ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন।

১৯৭৫ – গণচীন কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান।

১৯৯১ – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রজাতন্ত্র কিরগিজিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে।

১৮৪৮ – সংবাদপত্রে প্রথমবারের মত আবহাওয়া বার্তা ছাপা শুরু করে।

১৮৫৮ – ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ সরকার ভারতের শাসনভার গ্রহণ করে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০২ – জর্জ পোর্টার, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ রসায়নবিদ।

২০০৫ – জোসেফ রটব্লাট, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পোলিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ পদার্থবিদ।

২০০৮ – কেন ক্যাম্পবেল, ইংরেজ লেখক, অভিনেতা, পরিচালক ও কৌতুকাভিনেতা।

২০১৩ – ডেভিড প্যারাডাইন ফ্রস্ট, ইংরেজ রসায়নবিদ ও শিক্ষাবিদ।

২০২০ – মহামান্য প্রণব মুখোপাধ্যায়,ভারতের প্রথম বাঙালি ও ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি।

১৯২০ – উইলহেম উন্ট, জার্মান চিকিৎসক, মনোবৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক।

১৯৪১ – মারিনা টসভেটাভা, রাশিয়ান কবি ও লেখক।

১৯৬৩ – জর্জ ব্রাকুয়ে, ফরাসি চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর।

১৯৭১ –

বশীশ্বর সেন,খ্যাতনামা ভারতীয় বাঙালি কৃষি বিজ্ঞানী।

আবদুল হালিম চৌধুরী জুয়েল, ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা, বীর বিক্রম, ক্রিকেটার।

১৯৭৩ – জন ফোর্ড, আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৮৫ – ফ্রাঙ্ক ম্যাকফারলেন বার্নেট, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জীববিজ্ঞানী।

১৯৮৬ – উরহো কেকোনেন, ফিনিশ সাংবাদিক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও ৮ম সভাপতি।

১৯৯৩ – স্টেলা ক্রামরিশ, অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ইতিহাসবিদ ও কিউরেটর যিনি মূলত ভারতীয় শিল্পের ইতিহাস নিয়ে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।

১৯৯৭ – প্রিন্সেস ডায়ানা, যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন যুবরাজ্ঞী।

১৮১১ – লুই আন্তনিও ডি বোউগাইনভিলে, ফরাসি নৌসেনাপতি ও এক্সপ্লোরার।

১৮১৪ – আর্থার ফিলিপ, ইংরেজ এডমিরাল, রাজনীতিবিদ ও নিউ সাউথ ওয়েল্স-এর ১ম গভর্নর।

১৮৬৪ – ফের্দিনান্দ লাসালে, জার্মান বিচারক, দার্শনিক, এবং সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক কর্মী।

১৮৬৭ – শার্ল বোদলেয়ার, ফরাসী কবি।

১৭৯৫ – ফ্রাসোয়া-আঁদ্রে ডানিকান ফিলিডোর, ফরাসি বংশোদ্ভূত ইংরেজ দাবা খেলোয়াড় ও সুরকার।

১৬৮৮ – জন বুনয়ান, ইংরেজ প্রচারক, ধর্মতত্ত্ববিদ ও লেখক।

১৪২২ – পঞ্চম হেনরি, ইংল্যান্ডের রাজা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
উপন্যাস

 দামাল মেয়ে কুহেলি (ধারাবাহিক উপন্যাসঃচতুর্দশ পর্ব) :  দিলীপ রায় (৯৪৩৩৪৬২৮৫৪)।।।

পাটকাঠির ঢিপির মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় থাকার জন্য জগন্নাথের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না । এমনকি কুহেলি ফোনে কথা বলতে বা মেসেজ পাঠাতে পারছে না । ঐদিকে অদূরে দুষ্কৃতিরা আড়ালে বসে তাদের উপর নজর রাখছে । টের পেলে কুহেলিদের রক্ষে নেই । আবার নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়তে হবে । কুহেলি কিছুতেই পাচারকারীদের হাতে পুনরায় ধরা পড়তে নারাজ । কুহেলি নিজেকে বাঁচাতে যেকোনো প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হতে মানসিকভাবে তৈরী !
হঠাৎ পুবালীর হাঁচি ! সারা রাত দৌড়-ঝাঁপ করার জন্য পুবালীর শরীর ঠিক নেই । শরীরে জ্বর জ্বর ভাব । অনেকক্ষণ থেকে নাক টানছে । নাকের ভিতর ভীষণ অস্বস্তি । আর হাঁচি ধরে রাখতে পারলো না । হাঁচির শব্দ পাটকাঠির ঢিপি ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে গেলো । হাঁচি দেওয়ার সাথে সাথে পুবালীর শরীর নড়েচড়ে উঠলো । শারীরিক নড়াচড়ার জন্য খাড়া করা পাটকাঠিগুলোও কেঁপে উঠলো ।
ওত পেতে বসে থাকা দুষ্কৃতিরা হাঁচির শব্দে উজ্জীবিত হয়ে উঠলো । শারীরিক ভাষা বুঝিয়ে দিচ্ছে, তাদের হারানো ধনের সন্ধান তারা পেয়ে গেছে ! উঠে দাঁড়িয়ে আশেপাশে ভালভাবে দেখে নিলো । চাষের জমিতে যেমন চাষ করার কোনো লোকজন নেই তেমনি আশেপাশেও কোনো লোকজনের সাড়াশব্দ নেই । শুরু হলো তাদের তল্লাশি । হাঁচির শব্দকে কেন্দ্র করে কুহেলিদের খুঁজতে শুরু করলো । তিনজন দুষ্কৃতি একসঙ্গে তাদের দিকে ধেয়ে আসছে । দুষ্কৃতিদের চলাফেরা দেখলে মনে হচ্ছে, তারা হাতে চাঁদ পেয়ে গেছে । জলাশয়ের কিনারে পাটকাঠির প্রায় পনেরটা ঢিপি । একটা একটা করে ঢিপি খুঁজতে লাগলো । তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, পাটকাঠির ঢিপির মধ্যে কুহেলিরা লুকিয়ে । তাই তারা প্রতিটা ঢিপি ধরে ধরে খুঁজছে । কুহেলি ঝুঁকি নিতে চাইছে না । তাই দুষ্কৃতিরা পৌঁছানোর আগে তাদের পালানোর উদ্যোগ । কিন্তু কিছুতেই পালাবার পথ পাচ্ছে না । কুহেলি রীতিমতো টেনশনে ঘামছে । আর মাত্র দুটো পাটকাঠির ঢিপি খোঁজা অবশিষ্ট । অথচ কুহেলি দুষ্কৃতিদের হাতে ধরা দিতে নারাজ । পালাতে যথাযথ সুযোগ না পাওয়ার কারণে উদ্বিগ্নতায়, টেনশনে কুহেলির ছটফটানি ।
অবশেষে মনকে শক্ত করলো কুহেলি । পুবালী ও কুহেলি পালিয়ে যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ! যদিও পুবালী কুহেলির মতো অতোটা মানসিকভাবে শক্তিশালী নয় । বারংবার কুহেলিকে উত্ত্যক্ত করছে, “ধরা পড়লে কী হবে ?” পুবালী জানে, কুহেলি যেমন শারীরিকভাবে শক্ত, তেমনি তার মনে ভয়-ডর কম । যেকোনো পরিস্থিতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ার এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে । অতীতে বেয়াদপ ছেলেদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে কুহেলিকে অনেক প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে এবং সাহসিকতার সাথে সেই প্রতিকূল অবস্থাকে সে সামলিয়েছে । তাই কুহেলি দুষ্কৃতিদের হাত থেকে রেহাই পেতে পালাবার জন্য মানসিকভাবে চাঙা ! তবুও দুষ্কৃতিদের হাতে ধরা দিতে নারাজ !
গুটি গুটি পায়ে কুহেলিরা দুষ্কৃতিদের পেছন দিয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়ে, তারপর দৌড় । শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে সজোরে দৌড় । যেটা দুষ্কৃতিরা প্রথমে বুঝতে পারেনি । কিন্তু দৌড়াবার আওয়াজ পেয়ে দুষ্কৃতিরা কুহেলিদের পেছন পেছন ধাওয়া । দুজনের ষণ্ডামার্কা চেহারা । তিনজনের মধ্যে দুজন প্রাণপন ছুটছে । যেভাবে হোক, কুহেলিদের ধরতে মরিয়া !
অল্পতেই হাঁপিয়ে যাচ্ছে পুবালী । কুহেলির সাথে পেরে উঠছে না । দৌড়াতে গিয়ে পুবালীর পড়ে যাওয়ার উপক্রম । পুবালীকে পড়ে যেতে দেখে কুহেলির ধমক, “আরও জোরে, আরও জোরে পুবালী ।“ কুহেলি জানে, সে যেভাবে হোক পালিয়ে বাঁচবে । দৌড়িয়ে অন্তত দুষ্কৃতিরা তাকে ধরতে পারবে না ! কিন্তু পুবালী দৌড়াতে না পারলে আখেরে কুহেলির বিড়ম্বনা । পুবালীকে নিয়ে ভুগতে হবে । কেননা পুবালীকে সঙ্গে নিয়েই তাকে ফিরতে হবে । তাই পুবালীকে দৌড়ানোর গতি বাড়াবার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছে । কিন্তু পুবালী কুহেলির সাথে দৌড়াতে পারছে না । হাঁপিয়ে যাচ্ছে । তারপর হঠাৎ ………?
হঠাৎ পুবালী হোঁচট খেয়ে জমিতে কাদার মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো । খুব দ্রুত দুষ্কৃতিরা পুবালীকে ধরে ফেললো । পুবালীর পড়ে যাওয়াটা টের পায়নি কুহেলি । তাই সে এলোপাথারি ছুটছে । তার টার্গেট, আগে দুষ্কৃতিদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচানো । তারপর খোঁজ নিয়ে জানবে, “তারা এখন কোথায় ?”
কিন্তু পরক্ষণেই …………?
দুষ্কৃতিরা চিৎকার করে কুহেলির উদ্দেশে বললো, “আর একপাও এগোবি না । পালাবি কোথায় ? তোদের নিয়ে আমরা সোজা ভিন রাজ্যে । সেখানে তোদের বিয়ে । আর তোদের বাঁচার আশা নেই ।“
ঘুরে তাকিয়ে কুহেলি দেখলো, পুবালী দুষ্কৃতিদের হেফাজতে ! ভয় পেয়ে আতকে উঠলো কুহেলি । বিষম বিপদ । পুনরায় দুষ্কৃতিদের জালে জড়িয়ে পড়লে ভবিষ্যতে সেই জাল থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব ! এদের অনেক দূর পর্যন্ত জাল বিস্তার । সুতরাং ধরা পড়লে সর্বনাশ ! তাই সেই মুহূর্তে কীভাবে নিজেদের বাঁচাবে সেই চিন্তায় অস্থির । পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো কুহেলি । যেভাবে হোক পুবালীকে দুষ্কৃতিদের হাত থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র পালাতে হবে । ষণ্ডামার্কা দুজন কুহেলিকে ধরার জন্য প্রস্তুত । বয়স্ক দুষ্কৃতিটার জিম্মায় পুবালিকে রেখে অপর দুজন খুব দ্রুত এগোচ্ছে । কিন্তু এই মুহূর্তে কুহেলির কাছে সবচেয়ে মুস্কিল ব্যাপার সেটা হচ্ছে, ঝৌড়-ঝাঁপ টানা-হ্যাচড়ার জন্য ঐ ষণ্ডামার্কা দুজনের সাথে সামনাসামনি লড়াই করার শারীরিক ক্ষমতা তার এখন কম । তবুও কুহেলি নাছোড়বান্দা । তার ঘাবড়ালে চলবে না । যেভাবে হোক পুবালীকে উদ্ধার করা চাই । তা ছাড়া কুহেলির হাতে সময় খুব কম । ভাববার সময় নেই । তাই ভাল করে দুজন দুষ্কৃতির আক্রমণ করার ধরনটা বুঝে নিলো । কুহেলি নিশ্চিত, ওদের হাতে এই মুহুর্তে পিস্তল-জাতীয় কোনো বিপজ্জনক আগ্নেয়াস্ত্র নেই । শুধুমাত্র শারীরিক হম্বিতম্বি !
প্রায় কাছাকাছি । কুহেলি পায়ের কাছের ইটটিকে দু-টুকরো করে একজনের মাথা টার্গেট করে ছুড়লো । দুষ্কৃতির মাথা ফেটে রক্ত । নিমেষেই মাটিতে গড়াগড়ি । আর একজন দুষ্কৃতি সমস্ত বলপ্রয়োগ করে কুহেলিকে ডান হাত দিয়ে ঘুষি ! ঘুষি মারবার আগেই কুহেলি পা দিয়ে কোমরের নীচে তাকে লাথি । লাথি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেলো বেশী হম্বিতম্বি করা দুষ্কৃতিটা । তারপর কোনো কিছু ভাববার আগেই কুহেলির বয়স্ক দুষ্কৃতির কাছ থেকে নেওয়া পিস্তল থেকে শূন্যে এক রাউণ্ড গুলি ! সঙ্গে সঙ্গে বয়স্ক দুষ্কৃতিকে পিস্তল উঁচিয়ে চিৎকার করে বললো, “এক্ষুণি পুবালীকে ছেড়ে দে, নতুবা পিস্তলের একটা গুলিতে তোর প্রাণ শেষ !” ভয় পেয়ে বয়স্ক দুষ্কৃতি দিশেহারা । বাধ্য হলো পুবালীকে ছেড়ে দিতে । পুবালীকে কাছে পেয়ে কুহেলির চিৎকার, যে যেখানে যেভাবে আছিস, চুপচাপ থাক । নড়াচড়া করেছিস তো পিস্তলের গুলিতে সব কটাকে শেষ !”
ছুটে পাটের জমির আড়াল দিয়ে কুহেলিরা দৌড়াচ্ছে । পেছনে পেছনে দুষ্কৃতিরা তিনজন । শূন্যে আবার এক রাউণ্ড গুলি ! কিন্তু দুষ্কৃতিরা পিছু হটছে না । কুহেলি আতঙ্কে কাহিল হয়ে পড়লো । পুনরায় দুষ্কৃতিদের হাতে ধরা পড়লে ভয়ংকর বিপদ ! অগ্রিম বিপদের কথা ভেবে কুহেলির হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে । কোনো লোকজনের দেখা নেই । শুধু ধু ধু মাঠ ! দূরে তাল গাছের সারি দেখে কুহেলির অনুমান, নিশ্চয় পাশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে । কুহেলি ভাবছে, জমিতে বড় বড় পাট গাছ থাকায় তাদের পালাতে সুবিধা । কিছুটা যাওয়ার পর পরেই বড় বড় পাটের জমি । সুতরাং পাট গাছের আড়াল-আবডালের জন্য লুকিয়ে পালাতে তাদের অনেকটাই সুবিধা । পুবালী ও কুহেলি, দুজনে পাটের জমিতে দুষ্কৃতিদের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে দুষ্কৃতিরাই কীভাবে যেনো তাদের টপকে ভিন্ন পথ দিয়ে আগে চলে গেলো । সুযোগ পেয়ে কুহেলি পেছন দিকের অন্য রাস্তা ধরে ঘুরপথে সোজা নদীর কিনারে । নদী কেমন বা নদী কোথায় গেছে ভাববার আগেই দুজনে নদীতে ঝাঁপ । সাঁতার কাটতে গিয়ে হাতের মোবাইল, পিস্তল সমস্ত কিছু জলে ডুবে উধাও ! নদী পার হতে অনেক সময় লেগে গেলো । তবুও রক্ষে, দুষ্কৃতিরা একটুও টের পায়নি । অবশেষে কুহেলিরা সাঁতার কেটে নদী পার হলো । নদীর পারে উঠেই দূরে যাত্রী বোঝাই বাস যেতে দেখে কুহেলি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে পুবালীর দিকে তাকিয়ে বললো, “এবার আমরা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাবো !” কিন্তু পুবালির দিকে তাকিয়ে কুহেলি অবাক ! মেয়েটা কাঁদছে । তারপর ক্রন্দনরত অবস্থায় কুহেলির কাঁধে মাথা রেখে পুবালী বললো, “আমি আর পারছি না ।“ কুহেলি সান্ত্বনা দিয়ে পুবালীকে মানসিকভাবে শক্ত হতে বললো । পুবালীকে আরও বললো, “তাদের বিপদ এখনও কাটেনি । নিরাপদ আশ্রয়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত তাদের বিপদের ঝুঁকি ষোলোআনা ।“
রাস্তায় হাত দেখানো মাত্র একটি খালি লরি দাঁড়িয়ে পড়লো ।
“কোথায় যাবেন দিদি ?” লরির ড্রাইভার জানতে চাইলো ।
পরের শহরটায় ।
পরের শহরটা কোচবিহার । এখান থেকে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার । আমরা তার আগে অন্য রাস্তা ধরে অন্যত্র চলে যাবো । আপনারা বরং লরি থেকে নেমে অন্য বাসে কোচবিহার পৌঁছাতে পারবেন ।
মাথা নেড়ে সায় দিলো কুহেলি । আগে তাদের এখান থেকে পালানো দরকার ! নতুবা ঐ দুষ্কৃতিরা আবার ধাওয়া করলে আর রক্ষে নেই । ওদের নেটওয়ার্ক দেশের সর্বত্র । কুহেলিদের খবর তাদের কানে গেলে যেভাবে হোক তারা কুহেলিদের খুঁজে বের করবেই । সুতরাং অযথা সময় নষ্ট না করে পুবালী ও কুহেলি লরিতে উঠে বসলো । লরি ছুটলো কোচবিহারের দিকে ।
এদিকে পুবালী সোজা হয়ে বসে থাকতে পারছে না । তার খুব ক্ষিদে । তার ক্ষিদের কথা অন্তত তিনবার কুহেলিকে বলা হয়ে গেছে । ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় জেরবার পুবালী । ঠিক মতো বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে । কুহেলি সান্ত্বনা দিয়ে বললো, “কোচবিহারে পৌঁছালে তবেই খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ।“
কোচবিহারে পৌঁছে কুহেলিদের চোখে শর্ষে ফুল । কিচ্ছু চেনে না । তার উপর অঝোর ধারায় বৃষ্টি । ভারী বর্ষণের দরুন রাস্তা দিয়ে চলাচলে অশান্তি । পান্তা মাসির কাছে একবার শুনেছিল, কোচবিহার শহরের প্রাণকেন্দ্রস্থলে মদনমোহনের মন্দির । ১৮৮৯ সালে মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন । রাজবংশের পারিবারিক দেবতা “মদনমোহন” কোচবিহার মানুষের প্রাণের ঠাকুর । সেখানে সর্বক্ষণ ভক্তদের ভিড় । মন্দিরের দরজা সকাল ৯টায় খুলে রাত্রি ৮টায় বন্ধ । প্রয়োজনে ভক্তদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে । তবে সে শুনেছিল প্রসাদ পেতে গেলে নাকি ১০টাকার কুপন কাটতে হয় । কুহেলি প্রমাদ গুণলো, এই মুহুর্তে মদনমোহনের মন্দিরে আশ্রয় নেওয়াটা তদের ক্ষেত্রে নিরাপদ ও যুক্তিযুক্ত ।
এদিকে পুবালী কুহেলিকে জ্বালিয়ে খাচ্ছে থানায় সমস্ত ঘটনা জানিয়ে দেওয়ার জন্য । এই মুহূর্তে পুলিশকে রিপোর্ট করার ঘোর বিরোধী কুহেলি । কেননা থানায় জানালে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা । পুলিশ মহল নারী পাচার চক্রের উদ্ধারের তাগিদে কুহেলি ও পুবালীকে তুলে নিয়ে পুলিশি হেপাজতে রেখে জেরা শুরু করতে পারে । পুলিশি জেরার মুখে পড়লে আরেক হ্যাপা ! অশান্তির শেষ নেই । নানান ধরনের প্রীতিকর ও অপ্রীতিকর প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে হেনস্তা করতে পারে । যদিও পুবালীর চাইছে, পুলিশ আমাদের জেরা করুক এবং নারী পাচার চক্র ধরুক । কিন্তু কুহেলি ধারণা, নারী পাচার চক্র উদ্ধারে ইতিমধ্যে পুলিশ চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে । তাঁরা চিরুনি তল্লাশি যেভাবে করছে, করুক । সুতরাং পুলিশের কাজ পুলিশ করুক । তারা আগে সুস্থ ও স্বাভাবিক হোক এবং নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাক, তারপর থানায় গিয়ে রিপোর্ট করবে । যার জন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কুহেলি জগন্নাথের সাথে যোগাযোগ করছে না । জগন্নাথের সাথে যোগাযোগ করলে তাদের ফিরে যাওয়া নিশ্চিত হতো জেনেও কুহেলি নীরব ! একটাই কারণ, এখন তাদের শরীরে অতিরিক্ত ধকল নেওয়া খুব কঠিন । তাই পুবালীকে বুঝিয়ে পুলিশি ঝঞ্ঝাট এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিলো । অবস্থা স্বাভাবিক হলে অবশ্যই তারা পুলিশকে জানাবে ।
পুলিশকে না জানানোর ক্ষেত্রে কুহেলির মাথায় অন্য একটি চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে । নারী পাচার চক্রের নেটওয়ার্ক বিশাল বড় । তাদের চেলা-চামুণ্ডা নিশ্চয় কোচবিহার জেলার আনাচে-কানাচে ঘুরপাক খাচ্ছে । উত্তরবঙ্গের মেয়েদের তুলে নেওয়ার খবর বেশী শোনা যায় । কুচক্রীদের নাকি উত্তরবঙ্গের মেয়েদের কব্জা করা সহজ এবং ঝুঁকিও কম । সেইজন্য উত্তরবঙ্গে নারী পাচারকারীদের বিচরণ যত্রতত্র । তারা যদি টের পায় কুহেলিরা থানায় যোগাযোগ করছে, তাহলে অবধারিতভাবে পুনরায় কুহেলিদের পাচার চক্রের কবলে পড়তে হবে । সেই সময় দুষ্কৃতিরা কীভাবে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কুহেলিদের তুলে তাদের ডেরায় তুলবে কাক-পক্ষীও টের পাবে না । এই ব্যাপারে কুহেলির অভিজ্ঞতা যথেষ্ট । যদিও পুরোটাই মেয়ে-মহল থেকে শোনা । তবুও কুহেলি খুব সতর্কভাবে নিজেদের চালনা করতে চায় ! কিছুতেই পুনরায় নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়তে চায় না । কুহেলি এখন মানসিকভাবে শক্ত । এই মুহূর্তে সে বুঝতে পারছে, তারা এখন নারী পাচার চক্রের হাত থেকে মুক্ত । বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত তাদের খুব সাবধানে গা-ঢাকা দিয়ে চলতে হবে । তারপর বাড়ি ফিরে শক্তভাবে নিরাপদে বাঁচতে চায় কুহেলি ।
কুহেলি অবাক ! এত বড় নারী পাচার চক্র দেশের আনাচে-কানাচে সক্রিয়, সেটা নিয়ে দেশের সুশীল নাগরিক সমাজ নীরব ! তাঁদের মুখে কুলুপ আঁটা । কোনো টু শব্দ নেই । অথচ বর্তমান নাগরিক সমাজ ভালভাবেই জানেন, যেসব মেয়েরা পাচার হচ্ছে তারা তাদের হয় প্রতিবেশী নতুবা পাশের গ্রামের মেয়ে । পরোক্ষভাবে তাঁদের হয় বোন, না হয় মেয়ে সমতুল্য । অবাধে পাচার হচ্ছে । পুলিশকে দোষ দিয়ে তাঁরা নীরব থাকছেন ! এখানেই কুহেলির খটকা ! তাহলে কী সুশীল নাগরিক সমাজ এটাকে প্রছন্ন মদত দিচ্ছেন ? হৈচৈ হচ্ছে না কেন ? শুধুমাত্র যবতী মেয়েরাই পাচার হচ্ছে না, পাচারের তালিকায় মেয়ে শিশু থেকে বুড়ি সকলেই আছে । সুতরাং মেয়েদের পাচারের মতো জঘন্য ও ঘৃণ্য কাজ সমাজ থেকে খুব শীঘ্র উপড়ে ফেলা উচিত । নতুবা পাচারকারীদের শিকড় অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে যাবে । কুহেলি এইসব নিয়ে যতো ভাবে, ততই হতাশায় ভোগে ।
কুহেলির চোখে জল । এই বিশাল পৃথিবীতে সে বেঁচে থাকতে চায় । বেঁচে থাকার জন্য কারও উপর নির্ভরশীল নয় । একান্ত আপন মানুষ তাকে ছেড়ে চলে গেছে । গোটা পৃথিবীতে কুহেলি এখন একা । বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে লড়াইটা তার একার । পাশে কেউ নেই । তবুও এক শ্রেণীর কুচক্রী মানুষ তার বেঁচে থাকার পথে বাধা । চেষ্টা করলেও তার একার দ্বারা এই কুচক্রী মানুষদের ধ্বংস করা অসম্ভব । এইজন্য জনমত দরকার । সবচেয়ে কুহেলির আশ্চর্য লাগে, মিডিয়াও সেভাবে নারী পাচার নিয়ে সোচ্চার না । যার জন্য মেয়েদের অবাধে পাচার করার ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর অসাধু চক্র ভীষণভাবে সক্রিয় । মাথা চাড়া দিচ্ছে । সবাই জেনেবুঝে চুপচাপ । এখানেই কুহেলির দুশ্চিন্তা ! তার দুশ্চিন্তা আরও বাড়ছে ভবিষ্যতের কথা ভেবে । কেননা কুহেলি সারা জীবনের মতো নারী পাচার চক্রের কাছে টার্গেট হয়ে গেলো । তারা ঝোঁপ বুঝে যেকোনো মুহূর্তে কোপ মারতে পারে । সুতরাং তার বেঁচে থাকাটাই এখন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ । মানুষ চ্যালেঞ্জ দেয়, বিভিন্ন কারণে – যেমন পড়াশুনায় রেজাল্ট ভাল করার ক্ষেত্রে, চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে, দুইজন বন্ধুর মধ্যে রেষারেষি করে ভালবাসার মানুষটাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে, অথচ অন্ন বাসস্থানের কথা ছেড়ে দিয়ে কুহেলির জীবনে নারী সত্বা বাঁচিয়ে বেঁচে থাকাটাই এখন চ্যালেঞ্জ !
( চলবে )

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ইতিহাস গর্ভে ফিরে দেখা! : তন্ময় সিংহ রায়।।।

”ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা!”

 

এই রাখি’র বন্ধনে কিভাবে মানুষ বাঁধা পড়ল? পুরাণ থেকে ইতিহাস গর্ভে এ নিয়ে
রয়ে গেছে বেশ কিছু রহস্যময় ও উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ!
এবারে উঁকি মারা যাক পৌরাণিক সেই কাহিনীগুলি’র দরজায়!
প্রথমত, হিন্দু ধর্মের মহাকাব্যদ্বয়ের মধ্যে মহাভারতে লুকিয়ে থাকা রাখি বন্ধনের যে ঘটনা আমরা দেখতে পাই তা হল,
কথিত আছে রাজসূয় যজ্ঞের সময় শিশুপালকে হত্যার পরে স্বয়ং শ্রী-কৃষ্ণের একটি আঙুল কেটে ঝরতে থাকে রক্ত!
এমতবস্থায়, পঞ্চপান্ডবের স্ত্রী দ্রৌপদী
তখন তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের আঙুলে বেঁধে দেন ও অভিভূত কৃষ্ণ তাঁর অনাত্মীয়া, কিন্তু বোন হিসাবে মেনে নেওয়া দ্রৌপদীকে পরিবর্তে
প্রতিশ্রুতি দেন যে, ভবিষ্যতে সর্বরকম বিপদে তিনি রক্ষা করবেন তাঁকে।
এই ঘটনার বহু বছর পর, পাশাখেলায় হারের মাধ্যমে কৌরবরা যখন দ্রৌপদীকে অপমান করে তাঁর বস্ত্রহরণ করতে উদ্যত হন, সে মুহুর্তে  কৃষ্ণ অসমাপ্ত বস্ত্র সরবরাহের দ্বারা দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে বজায় রাখেন সেই প্রতিদান।

দ্বিতীয়ত, যমুনা তাঁর ভাই স্বয়ং যমের হাতে  বেঁধে দিয়েছিলেন রাখি।

তৃতিয়ত, শুভ ও লাভ নামে গণেশের পুত্রদ্বয়
এক সময় বায়না ধরে যে, নিজেদের বোনের হাতে তারা পরাতে চায় রাখি!
এ পরিস্থিতিতে উপায়ান্তর না দেখে গণেশ তাঁর দুই স্ত্রী ঋদ্ধি ও সিদ্ধি’র অন্তর থেকে নির্গত অগ্নি থেকে সৃষ্টি করেন বোনরূপি সন্তোষী মা-কে, যিনি সন্তোষের অধিষ্ঠাত্রী দেবী নামে অভিহিত হিন্দুধর্মের একজন অ-শাস্ত্রীয় ও লৌকিক নবীন দেবী।

এবারে আলোকপাত করা যাক কিংবদন্তী’র ইতিহাস কি বলছে সে বিষয়ে,
প্রথমত, শত্রুর হাত থেকে নিজের রাজ্যের মান-মর্যাদা রক্ষা করার একান্ত উদ্দ্যেশ্যে,
মুঘল সম্রাট বাবর পুত্র সম্রাট হুমায়ুনের কাছে একবার সাহায্যপ্রার্থী হন চিতোরের বিধবা রানি কর্ণবতী এবং সেই সময়ে তিনি একটি রাখিও পাঠান হুমায়ুনকে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করেই পরবর্তীতে এই ঘটনা পরিনত হয় উৎসবে এবং এর জনপ্রিয়তা হতে থাকে ক্রমবর্ধমান!

দ্বিতীয়ত, গ্রীক বীর আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণ ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বিশেষত এই কারণে বলে আমার মনে হয় যে, এর ফলে গ্রিকদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও চিন্তাধারার সাথে পরিচিত হয়ে ওঠার একটি সুযোগ আমরা পাই।
যাইহোক, বর্তমান ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ঝিলাম নদী (ঋগ্বেদে বিতস্তা নদী) সংলগ্ন উপকূলে গ্রিকদের বশ্যতা স্বীকার না করা ঝিলাম রাজ পুরুর সাথে ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডারের তুমুল যুদ্ধের ফলে সেই যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন পুরু।
কিন্তু ইতিহাস বলছে, তাঁর স্বামীর প্রাণ সংশয় হতে পারে, এই আশঙ্কা করে আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোক্সানা পুরুর কাছে যান এবং তাঁর হাতে বেঁধে দেন একটি পবিত্র সুতো ও পরিবর্তে পুরু
আলেকজান্ডারের কোনও ক্ষতি করবেন না বলে কথাও দেন।

এদিকে আধুনিক ইতিহাসে চোখ রাখলে আমরা দেখতে পাই,
১৯ শতকে বাংলায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন চরম পর্যায়ে থাকাটা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কাছে হয়ে উঠেছিল অপরিমিত ভয়ের একটি বিশেষ কারণ, আর যে কোনো উপায়ে এই  আন্দোলনকে দমন করার বিভিন্ন পথ খুঁজতে গিয়েই ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, তারা বাংলাকে দুই ভাগে ভাগ করে ঐক্য শক্তিকে হ্রাস করবে। এ হেন জটিল ও মর্মান্তিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ সহ গোটা ভারতের বিভিন্ন বিশিষ্টজন ও নেতৃবৃন্দ এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেছিলেন এবং শুরু করেছিলেন বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে এক সংঘবদ্ধ প্রতিবাদী আন্দোলন!
অতএব ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধের উদ্দ্যেশ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোলকাতা, সিলেট
ও ঢাকা ইত্যাদি থেকে হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম ভাই-বোনকে আহ্বান করেছিলেন ঐক্যতার প্রতীক হিসাবে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করার জন্যে!
বলাবাহুল্য সে সময় দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতাও যেন পৌঁছেছিল একেবারে চরম পর্যায়ে!
বলার আর কোনো অপেক্ষা রাখে না যে,
ধর্মীয় অরাজকতা সে সময়েও ছিল, আজও বজায় আছে তা বহাল তবিয়তে!

ক্রমবিবর্তনের মধ্যে দিয়ে একবিংশের ঠিক যে জায়গায় এসে পৌঁছেছে এই উৎসব তা এরূপ,
শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে হিন্দু ভাই-বোনদের মধ্যে অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে পালন করা হয় এই রাখী বন্ধন নামক উৎসবটি!
উৎসবের ধরণ হিসাবে উল্লেখ্য, সেই বিশেষ দিনে দিদি বা বোনেরা তাঁদের ভাই বা দাদা’র আ-জীবন মঙ্গল কামনা’র উদ্দ্যেশ্যে হাতের কব্জিতে বেঁধে দেয় রাখী নামক একটি পবিত্র সুতোর বন্ধন! পরিবর্তে ভাই বোনকে দেয় কিছু উপহার ও শপথগ্রহণ করে বা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় সারাজীবন বোনকে রক্ষা করায়!
এখানে একটি বিষয় জানানো ভালো, সেই ভাই-বোন যে একই মায়ের গর্ভের হতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
হিন্দু ছাড়াও জৈন ও শিখ প্রভৃতিরা পালন করে থাকেন এই উৎসব!
সর্বশেষ এই যুক্তি পরিলক্ষিত যে, রাখিকে ভাই-বোনের উত্‍সব হিসাবে মনে করা হলেও ইতিহাসে কিন্তু, পুরুষকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার শুভ প্রতীক হিসাবে তাঁদের কব্জিতে মহিলাদের সুতো বেঁধে দেওয়ার একটি যোগসূত্র থেকেই যাচ্ছে।
আর হয়তো এগুলিই পরে রূপ নেয় রাখি বন্ধন উত্‍সবের!!

Share This
Categories
প্রবন্ধ

রবীন্দ্রনাথের রাখিবন্ধন ছিল বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে এক ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ।

আজ যখন “হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী” ‘নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্বে’ লিপ্ত, সম্প্রদায়ে  সম্প্রদায়ে,ধর্মে ধর্মে বিভেদের বিষ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে তখন আমরা স্মরণ করবো কবিগুরু  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে সৃষ্ট রাখিবন্ধন উৎসব –যা একদিন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল এক ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ। যখন সাম্রাজ্যবাদী লর্ড কার্জন বাংলার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য, বাঙালিকে দূর্বল করার জন্য ও হিন্দু –মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য ঘোষণা করলেন ১৯০৫ খ্রিঃ ১৬ই অক্টোবর বঙ্গভঙ্গ হবে, তখন স্বদেশ প্রেমিক কবিগুরু  রবীন্দ্রনাথ আর চুপ করে থাকতে পারলেন না। তিনি সন্ত্রাসবাদী ছিলেন না,ছিলেন স্বদেশপ্রেমিক। তাই স্বদেশের প্রয়োজনে সেদিন তিনি সাহিত্যজগৎ থেকে নেমে এলেন রাজীতির অঙ্গনে। তিনি ব্রিটিশ সরকারের এই হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে নতুন কৌশল গ্রহণ করলেন।কার্জনের এই হীন চক্রান্তের কথা পূর্বেই জানতে পেরে রবীন্দ্রনাথ একটা বিশেষ দিনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষকে নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হলেন এবং রাখিবন্ধন উৎসবের সূচনা করলেন।সেদিন এই উৎসবে পরস্পরের হাতে রাখি পড়িয়ে তিনি ব্রিটিশদের জানিয়ে দিতে চাইলেন বাঙালির এক প্রাণ একতার কথা । তখনকার বিখ্যাত পত্রিকা বঙ্গদর্শনে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন – “ঈশ্বর যে  বাঙালিকে বিচ্ছিন্ন করে নাই, তাহাই বিশেষ রূপে স্মরণ ও প্রচার করার জন্য আমরা রাখিপূর্ণিমার দিনে পরস্পরের হাতে হরিদ্রাবর্নের সুত্র বাঁধিয়া দিব।” ১৬ই অক্টোবর,১৯০৫ খ্রিঃ কোলকাতার রাজপথে এক অপূর্ব দৃশ্য দেখা গেল।রবীন্দ্রনাথের নির্দেশে শত শত নর নারী গঙ্গানদীর গঙ্গার জলে স্নান করে হাতে কালো ব্যজ পড়ে মিলিত ভাবে গান গেয়ে চললেন – “বাংলার মাটি,বাংলার জল,বাংলার বায়ু,বাংলার ফল,
পুন্য হউক,পুণ্য হউক,হে ভগবান।”
বাংলা মাকে দ্বিখণ্ডিত করেছে বলে মনের দুঃখে সেদিন সকলে অরন্ধন ও অনশন পালন করে তাঁদের মনের শোক প্রকাশ করেছিলেন।   সমকালের পরিপ্রেক্ষিতে এই রাখিবন্ধন উৎসবকে শুধু এক  অভিনব কৌশল না বলে আধুনিক রাষ্ট্রতাত্বিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে রাখিবন্ধনকে রাজনৈতিক আন্দোলনের একটা নতুন  উদ্যোগ বলা যেতে পারে। তিনি রাখিবন্ধন উৎসবকে শুধুমাত্র পুরুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নারীজাতিকে এই আন্দোলনে সামিল হতে অনুরোধ করেন।ফলে সেদিন দেখা গেল শত শত নরনারী মহা উৎসাহে শঙ্খ বাজিয়ে এই উৎসবে যোগদান করলেন। তাছাড়া তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এই উৎসবের মধ্য দিয়ে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সমস্ত বিভেদ দুর করে ঐক্য স্থাপন করা। এই লক্ষ্য সামনে রেখে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যকে সুদৃঢ় করার জন্য তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের হাতে রাখি পড়িয়ে দিতে বলেছিলেন। এই প্রসঙ্গে কবিগুরুর একটি লেখা উদ্ধৃত করছি। তিনি লিখেছিলেন- “সামনে যাকে পেতাম তার হাতে বাঁধিতাম রাখি।…………মনে পড়ে একবার এক মুসলমান কনেষ্টবল হাত জোর করে বলেছিলেন-মাফ করুন হুজুর আমি মুসলমান।” মুসলমান হলেও তিনি তার হাতে রাখি পড়াতে ইচ্ছুক ছিলেন।এমনকি শোনা যায় তিনি একটা মসজিদে ঢুকে কিছু মুসলমানকে রাখি পড়িয়েছিলেন। এছাড়া তিনি অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর কাছে ডাকযোগে রাখি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেদিন বৈকালে ফেডারেশন হলের সভায় রবীন্দ্রনাথ ‘বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন’ বিষয়ক এক প্রবন্ধ পাঠ করেন। কিন্তু এ বছর COVID-19 বা করোনা ভাইরাসের অতিমারীর আবহে আর সেদিনের মতো পথে নেমে দল বেঁধে রাখিবন্ধন উৎসব করা সম্ভব হবে না এবং সেটা বাঞ্ছিতও নয়। তাই এবারে রাখি বন্ধন উৎসব করতে হবে নিভৃতে ঘরের চারি দেওয়ালের মধ্যে নিজ নিজ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে, প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায়  কিংবা ক্লাবের মধ্যে পাঁচ-দশজন সদস্য নিয়ে কিংবা কোনো সংস্থায় ৪০-৫০ জন সদস্য নিয়ে সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে। আর উন্নত প্রযুক্তিকে সাহায্য নিয়ে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে প্রতিটি ক্লাব, সমস্ত সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থান – মন্দির- মসজিদ- গির্জা সবত্র  এই রাখিপূর্ণিমায়  রাখিবন্ধন উৎসব উৎযাপন করতে হবে ।
তবে এবছর এই রাখিবন্ধন উৎসব করতে হবে সকল মানুষের মধ্যে একতা জাগ্রত করার উদ্দেশ্য নিয়ে। কারন  সেদিনের ব্রিটিশ শক্তির মতো বর্তমানে দেশে এক সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এই শক্তিও চাইছে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করতে এবং বাংলা তথা সমগ্র ভারতকে  আবার দ্বিখন্ডিত করতে। আবার যেন হিন্দু- মুসলমানের মধ্যে  দ্বিতীয় বঙ্গভঙ্গ হওয়ার উদ্যোগ চলছে গোপনে গোপনে । তাই এই দ্বিতীয় বঙ্গভঙ্গ রোধের জন্য সকলকে হিন্দু-মুসলমানের  বিভেদ ভুলে মনপ্রান দিয়ে রাখিবন্ধন উৎসব করতে হবে। সেদিন যেমন বাংলার নারীপুরুষ, হিন্দু-মুসলমান একযোগে ব্রিটিশের হীন চক্রান্তকে পরাভূত করেছিল এবং ১৯১১ খ্রিঃ আবার দ্বিখণ্ডিত বাংলাকে একত্র করেছিল আজও তেমনি ভাবে বর্তমানের সাম্প্রদায়িক শক্তির হীন চক্রান্তকে স্তব্ধ করে দিতে হবে । তাই অন্য বছরের মতো রাজপথে নেমে হাজার হাজার যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ একসাথে না করতে পারলেও সামাজিক দুরত্ব মেনে এবং অন্য সকল নিয়মকানুন রক্ষা করে নতুন উৎসাহে রাখিবন্ধন উৎসব করবো। এবারে প্রত্যেকে মুখে মাক্স পড়ে হাত সানিটাইজার করে হাতে তুলে দিতে হবে সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক  রাখি । রবীন্দ্রনাথের আদর্শকে সামনে রেখে সকলে এ বছর ৩রা আগষ্ট রাখিপূর্নিমার দিনে সকাল থেকে বিভিন্ন ক্লাবে, বিভিন্ন সংঘে কিংবা বাড়ির পরিজনকে সঙ্গে নিয়ে অনলাইনে গান গাইবো – “বাঙালির প্রাণ,বাঙালির মন,বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন
এক হউক,এক হউক,এক হউক,হে ভগবান।”
রবীন্দ্রনাথ সেদিন শুধু এই প্রার্থনাতেই থেমে থাকেন নি সেদিন তাঁর সংগীত বেজে উঠেছিল দৃঢ় সংকল্পের অমোঘ বাণী। সেই বাণীই হবে আমাদের আজকের মন্ত্র –
“ওদের বাঁধন যতই শক্ত হবে
ততই বাঁধন টুটবে
মোদের ততই বাঁধন টুটবে।
ওদের যতই আঁখি রক্ত হবে
মোদের আঁখি টুটবে
ততই মোদের আঁখি টুটবে।”
এই সব গানের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে বাঙালিরা বাংলার বুকে আবার নতুন করে বঙ্গভঙ্গ হতে দেবে না, বাংলার বুকে হিন্দু-মুসলমান-শিখ-জৈন-নেপালি-গুর্খা-সকলকে এক সুত্রে গেঁথে রাখবে। তাই এ বছরের রাখিবন্ধন উৎসব হোক সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে  নতুনভাবে  প্রতিবাদ।

।।কলমে : প্রশান্ত কুমার দাস।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আজ আন্তর্জাতিক ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্স দিবস, জানুন দিনটি পালনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য।

বলপ্রয়োগকৃত নিখোঁজের শিকারদের আন্তর্জাতিক দিবসটি প্রতি বছর ৩০ আগস্ট পালিত হয়। এই উদযাপনটি বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক অন্তর্ধানের গুরুতর সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত।  জোরপূর্বক অন্তর্ধান বলতে বোঝায় গ্রেপ্তার, আটক, অপহরণ, বা রাষ্ট্রের এজেন্ট বা ব্যক্তি/গোষ্ঠী কর্তৃক অনুমোদিত, সমর্থিত বা সহ্য করা ব্যক্তিদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা।  এটি প্রায়শই একজন ব্যক্তির আটকের বিষয়টি স্বীকার করতে বা তাদের ভাগ্য বা অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্যাখ্যানের দ্বারা অনুসরণ করা হয়, যাতে তাকে আইনি সুরক্ষা এবং সুরক্ষা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

 

১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯২-এ সাধারণ পরিষদের রেজোলিউশন ৪৭/১৩৩ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বলপূর্বক নিখোঁজ থেকে সমস্ত ব্যক্তির সুরক্ষা সম্পর্কিত ঘোষণাপত্রে বর্ণিত হিসাবে, বলপূর্বক অন্তর্ধান নিম্নলিখিত উপাদানগুলির দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে:
“ব্যক্তিদের তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্রেফতার করা হয়, আটক করা হয় বা অপহরণ করা হয় বা অন্যথায় সরকারের বিভিন্ন স্তর বা শাখার কর্মকর্তাদের দ্বারা, বা সংগঠিত গোষ্ঠী বা ব্যক্তিগত ব্যক্তিদের পক্ষে কাজ করে বা সরাসরি সমর্থন দিয়ে তাদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হয়।  বা পরোক্ষ, সরকারের সম্মতি বা সম্মতি।  এর পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাগ্য বা অবস্থান প্রকাশ করতে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকার করা বা তাদের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে তা স্বীকার করতে অস্বীকার করা।  ফলস্বরূপ, এই ব্যক্তিরা আইনের সুরক্ষা থেকে বাদ পড়েছেন।”

 

 

 

বলপূর্বক নিখোঁজের শিকারদের আন্তর্জাতিক দিবসের ইতিহাস—-

 

২১শে ডিসেম্বর, ২০১০-এ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, রেজোলিউশন ৬৫/২০৯ এর মাধ্যমে, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে বলপূর্বক বা অনিচ্ছাকৃত অন্তর্ধানের ক্রমবর্ধমান ঘটনা সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এর মধ্যে গ্রেপ্তার, আটক এবং অপহরণের সাথে জড়িত পরিস্থিতি অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেগুলিকে একত্রিত করা হলে বা বলপূর্বক অন্তর্ধানের পরিমাণ, একটি গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রেজোলিউশনটি নিখোঁজ হওয়ার প্রত্যক্ষদর্শী বা নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের দ্বারা হয়রানি, দুর্ব্যবহার এবং ভয় দেখানোর ক্রমবর্ধমান প্রতিবেদনগুলিও তুলে ধরে।

তদুপরি, সাধারণ পরিষদ জোরপূর্বক অন্তর্ধান থেকে সকল ব্যক্তির সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন গ্রহণকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে।  এই জটিল সমস্যা মোকাবেলার প্রতিশ্রুতি অনুসারে, অ্যাসেম্বলি 30 আগস্টকে বলপ্রয়োগকৃত নিখোঁজের শিকারদের আন্তর্জাতিক দিবস হিসাবে মনোনীত করেছে।  এই বার্ষিক পালনটি 2011 সালে শুরু হয়েছিল এবং এর উদ্দেশ্য হল বলপূর্বক গুমের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্দশার উপর আলোকপাত করা এবং মানবাধিকারের এই গুরুতর লঙ্ঘন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

 

বলপূর্বক গুম হওয়া ভিকটিমদের আন্তর্জাতিক দিবসের তাৎপর্য–

 

এনফোর্সড ডিসপিয়ারেন্সের শিকারদের আন্তর্জাতিক দিবস একটি আন্তর্জাতিক পালন যা প্রতি বছর ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়।  এটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্থাপিত হয়েছিল বলপূর্বক গুমের অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এবং ভিকটিম ও তাদের পরিবারকে সম্মান জানানোর জন্য।
জোরপূর্বক অন্তর্ধান হল রাষ্ট্রের এজেন্টদের দ্বারা বা রাষ্ট্রের অনুমোদন, সমর্থন বা সম্মতি নিয়ে কাজ করে এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের গোষ্ঠী দ্বারা গ্রেফতার, আটক, অপহরণ বা স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করার অন্য কোন প্রকার, এবং তারপরে স্বীকার করতে অস্বীকার করা।  স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা বা নিখোঁজ ব্যক্তির ভাগ্য বা অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেওয়া, দীর্ঘ সময়ের জন্য আইনের সুরক্ষা থেকে তাদের অপসারণের অভিপ্রায়ে।
বলপ্রয়োগকৃত নিখোঁজের শিকারদের আন্তর্জাতিক দিবস এই অপরাধের শিকারদের স্মরণ করার এবং তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচারের আহ্বান জানানোর একটি দিন।  এটি বলপূর্বক গুমের অপরাধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এটি প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আহ্বান জানানোরও একটি দিন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৩০ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ৩০ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

 

(ক)  আন্তর্জাতিক ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্স দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯৫১ – (ক)  ভারতীয় বাঙালি ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত।

(গ) ডানা রসেমারয় সচালন, ইংরেজ বংশোদ্ভূত আইরিশ গায়ক ও রাজনীতিবিদ।

১৯৬৩ – মাইকেল চিক্লিস, আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক।

১৯৭২ – (ক) শ্রীলেখা মিত্র, ভারতীয় বাঙালী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

(খ) চেক প্রাজন্ত্রের ফুটবলার ও সাবেক অধিনায়ক পাভেল নেদভেদ।

(গ) – ক্যামেরন ডাইজ অভিনেত্রী ও ফ্যাশন মডেল।

১৯৮২ – এন্ডি রডিক আমেরিকান টেনিস তারকা।

১৯৮৩ – ইমানুয়েল কুলিও, আর্জেন্টিনার ফুটবলার।

১৯৮৫ – হোলি ওয়েস্টন, ইংরেজ অভিনেত্রী।

১৯১২ – এডওয়ার্ড মিল্স পারসেল, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান পদার্থবিদ।

১৯১৩ – রিচার্ড স্টোন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ অর্থনীতিবিদ এবং পরিসংখ্যানবিদ।

১৯১৭ – ব্রিটিশ রাজনীতিক ডেনিস হিলি।

১৯৩০ – ওয়ারেন বাফেট, মার্কিন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং জনহিতৈষী ব্যক্তি।

১৮৪৪ – শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজসেবী চন্দ্রনাথ বসু।

১৮৫২ – ইয়াকোবুস হেনরিকুস ফান্ট হফ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ডাচ রসায়নবিদ।

১৮৫৬ – কার্ল ডেভিড টলমে রুঙ্গে, জার্মান গণিতবিদ ও পদার্থবিদ।

১৮৭১ – আর্নেস্ট রাদারফোর্ড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নিউজিল্যান্ড ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী ও রসায়নবিদ।

১৮৮৪ – থিওডোর সভেডবার্গ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইডিশ রসায়নবিদ ও পদার্থবিদ।

১৭৯৭ – ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ গ্রন্থের লেখিকা ও কবি শেলির স্ত্রী মেরি ওলস্টোনক্র্যাফট শেলি।

১৫৬৯ – জাহাঙ্গীর, মুঘল সাম্রাজ্যের চতুর্থ সম্রাট।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯০৭ – রাশিয়া ও বৃটিশ উপনিবেশবাদী সরকার এক চুক্তির মাধ্যমে ইরানকে তিন অংশে বিভক্ত করে।

১৯০৯ – বার্গেস শেল জীবাশ্ম চার্লস ডুলিটল ওয়ালকোট আবিষ্কার করেছিলেন।

১৯১৪ – প্রথম বিশ্বযুদ্ধ: জার্মানরা ট্যানেনবার্গের যুদ্ধে রাশিয়ানদের পরাজিত করেছিল।

১৯১৬ – আর্নেস্ট শ্যাকলটন অ্যান্টার্কটিকার এলিফ্যান্ট দ্বীপে আটকা পড়ে থাকা তার সমস্ত লোকের উদ্ধার কাজটি শেষ করেছেন।

১৯১৭ – ভিয়েতনামের কারাগারের রক্ষীরা স্থানীয় ফরাসী কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে থিয়ে নগুইন অনুশাসনে ট্রানহান কান সেনের বিদ্রোহের নেতৃত্বে।

১৯১৮ – ফ্যানি কাপলান বলশেভিক নেতা ভ্লাদিমির লেনিনকে গুলি করে মারাত্মকভাবে আহত করেছিলেন, তিনি বলশেভিকের সিনিয়র অফিসার মাইসেই উরিটস্কি হত্যার পাশাপাশি কয়েকদিন আগে ডিক্রিমিকে অনুরোধ করেছিলেন

১৯৩৩ – এয়ার ফ্রান্স গঠিত হয়।

১৯৪১ – জার্মান বাহিনী লেনিনগ্রাদ অবরোধ করে।

১৯৪৫ – হংকং বৃটিশ বাহিনীর সহায়তায় জাপানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৫৬ – সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক পরীক্ষা করে।

১৯৫৭ – যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক পরীক্ষা করে।

১৯৭১ – দিল্লীতে বাংলাদেশ মিশনের উদ্বোধন।

১৯৯১ – আযারবাইজান প্রজাতন্ত্র সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

১৯৯৭ – বসনিয়ায় মুসলিম ক্রোয়েট চুক্তি স্বাক্ষর।

১৯৯৯ – পূর্ব তিমুর ইন্দোনেশিয়া থেকে স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয়।

১৮০০ – গ্যাব্রিয়েল প্রসেসার ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে একটি পরিকল্পিত দাস বিদ্রোহ স্থগিত করে, তবে তা ঘটানোর আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

১৮১৩ – কুলমের প্রথম যুদ্ধ: ফরাসি বাহিনী অস্ট্রিয়ান-প্রুশিয়ান-রাশিয়ান জোটের কাছে পরাজিত।

১৮৩০ – বুলগেরিয়ার রাজপুত্র ওথো গ্রিসের রাজা নির্বাচিত হন।

১৮৩৫ – অস্ট্রেলিয়া: মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া প্রতিষ্ঠিত।

১৮৫০ – হনুলুলু শহরের মর্যাদা পায়।

১৮৬০ – ব্রিটেনে প্রথম ট্রাম চালু হয়।

১৮৬২ – আমেরিকান গৃহযুদ্ধ: রিচমন্ডের যুদ্ধ: জেনারেল উইলিয়াম “বুল” নেলসনের অধীনে এডমন্ড কার্বি স্মিথের অধীনে ইউনিয়ন বাহিনী সেনা সদস্যরা।

১৮৭৩ – অস্ট্রিয়ান অভিযাত্রী জুলিয়াস ফন পেয়ার এবং কার্ল ওয়েপ্রেক্ট আর্কটিক সাগরে ফ্রেঞ্চ জোসেফ ল্যান্ডের দ্বীপপুঞ্জটি আবিষ্কার করেন।

১৮৯৬ – ফিলিপাইনের বিপ্লব: সান জুয়ান দেল মন্টির যুদ্ধে স্প্যানিশ জয়ের পরে ফিলিপাইনের আটটি প্রদেশকে স্পেনীয় গভর্নর-জেনারেল জেনারেল রামন ব্লাঙ্কো ই এরেনাস সামরিক আইনে ঘোষণা করেছিলেন।

১৭২১ – লিস্টাভ-এর শান্তি চুক্তি সম্পাদিত।

১৭২৭ – গ্রেট ব্রিটেনের দ্বিতীয় রাজা জর্জের জ্যেষ্ঠ কন্যা অ্যানিকে প্রিন্সেস রয়্যাল উপাধি দেওয়া হয়।

১৭৯১ – এইচএমএস পান্ডোরা আগের দিন বাইরের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের উপর দৌড়ে যাওয়ার পরে ডুবে গেছে।

১৭৯৯ – দ্বিতীয় কোয়ালিশনের যুদ্ধের সময় স্যার রাল্ফ অ্যাবারক্রম্বি এবং অ্যাডমিরাল স্যার চার্লস মিচেলের কমান্ডে পুরো ডাচ বহরটি ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে ধরা হয়েছিল।

১৫৭৪ – গুরু রাম দাস চতুর্থ শিখ গুরু / মাস্টার হন।

১৫৯৪ – স্কটল্যান্ডের কিং জেমস প্রিন্স হেনরির ব্যাপটিজমে একটি মাস্ক ধারণ করেছিলেন।

১৪৬৪ – পোপ পল দ্বিতীয় পোপ পিয়াস দ্বিতীয়র উত্তরাধিকার হিসেবে এবং ২১১ তম পোপ হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন।

১৩৬৩ – পয়য়াং হ্রদের পাঁচ সপ্তাহের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, যেখানে দুই চীনা বিদ্রোহী নেতার (চেন ইউলিয়ানং এবং জু ইউয়ানজ্যাং) সেনাবাহিনী ইউয়ান রাজবংশকে সমর্থন করবে কে তা সিদ্ধান্ত নিতে মিলিত হয়।

১২৮২ – তৃতীয় আরাগোন পিটার ত্রাপানিতে সিসিলিয়ান ভেস্পারদের যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে নামেন।

৭০ খ্রিস্টপূর্ব- হেরোদের মন্দির ধ্বংস করার পরে টাইটাস জেরুজালেম অবরোধের অবসান ঘটিয়েছিলেন।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

 

২০০১ – আফম আহসানউদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশের ১১ তম রাষ্ট্রপতি।

২০০৬ – নাগিব মাহফুজ, নোবেল বিজয়ী মিশরীয় সাহিত্যিক।

২০১৩ – শেমাস্‌ হীনি, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আইরিশ কবি ও নাট্যকার।

২০১৭ – আব্দুল জব্বার, বাংলাদেশী সঙ্গীত শিল্পী।

১৯১১ – হরিনাথ দে বহুভাষাবিদ ভারতীয় বাঙ্গালী পণ্ডিত।

১৯২৮ – ভিলহেল্ম ভিন, ১৯১১ সালের নোবেলজয়ী জার্মান পদার্থবিদ।

১৯৭৬ – যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির অবিসংবাদী নেতা ও প্রখ্যাত চিকিৎসক।

১৯৮১ – নীহাররঞ্জন রায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি ইতিহাসবিদ, সাহিত্য সমালোচক ও শিল্পকলা-গবেষক পণ্ডিত।

১৯৮১ – ইরানের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আল রাজাই ও প্রধানমন্ত্রী মোহম্মদ জাভেদ বাহোনার পিপলস মোজাহিদিন অব ইরানের বোমা হামলায় নিহত হন।

১৯৮৭ – ফিলিস্তিনের খ্যাতনামা কার্টুনিষ্ট নাজিউল আলী লন্ডনে ইহুদীবাদী ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের হাতে নিহত হন।

১৮৬৮ – প্রসন্নকুমার ঠাকুর, ঊনবিংশ শতকের বাংলার সমাজ সংস্কারক ও হিন্দু কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

১৮৭৭ – তরু দত্ত, ইংরাজী ও ফরাসি ভাষার ভারতীয় বাঙালি কবি।

১৬৫৯ – দারা শিকোহ, আওরঙ্গজেবের ঘাতকের হাতে।

১৪৮৩ – ফ্রান্সের রাজা একাদশ লুই।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ জাতীয় ক্রীড়া দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং দিনটির গুরুত্ব।

হকি খেলোয়াড় ধ্যান চাঁদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর ২৯ আগস্ট ভারতে জাতীয় ক্রীড়া দিবস উৎযাপিত হয়।খেলার জগতের প্রতিটি খেলোয়াড় দের জীবনে এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচিত হয়। এই বিশেষ দিন টিতেই অর্জুন, দ্রোনাচার্জ, রাজীব খেলরত্ন, ধ্যান চাঁদ পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে খেলাধুলা এবং খেলাধুলার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি উদযাপিত হয়। আসলে দিনটি কিংবদন্তি হকি খেলোয়াড় মেজর ধ্যান চাঁদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

 

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে (এলাহাবাদ) ১৯০৫ সালের ২৯ অগাস্ট জন্ম হয়  ধ্যানচাঁদের। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির হয়ে হকি খেলেছিলেন ধ্যানচাঁদের পরিবারের সদস্যরা। বাবা সোমেশ্বর সিংহ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন।  মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯২২ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন ধ্যানচাঁদ। সময়ের অভাবে রাতের দিকে অনুশীলনে মগ্ন থাকতেন কিংবদন্তি এই হকি তারকা। রাতের দিকে অনুশীলন করতেন বলে তাঁর সতীর্থরা ‘চাঁদ’ নামে সম্বোধন করতেন ধ্যানচাঁদকে। তিনি পঞ্জাব রেজিমেন্টের মেজর পদে উন্নিত হয়েছিলেন।  ১৯৩২ সালে গোয়ালিয়রের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন ধ্যানচাঁদ। একদম ছোটবেলায় কুস্তিতে মূলত আগ্রহ ছিল ধ্যানচাঁদের। যদিও পরে হকিতে মনোনিবেশ করেন।

 

ইংরেজদের অধীনস্ত ভারতীয় হকি দলের হয়ে ১৯২৮, ১৯৩২ ও ১৯৩৬ অলিম্পিক খেলেন।  প্রতিবারই দেশকে সোনা এনে দিয়েছিলেন তিনি। ১৯২৬—১৯৪৯ পর্যন্ত তার ক্যারিয়ার জীবনে তিনি মোট ৫৭০টি গোল করেন।
আন্তর্জাতিক হকি অঙ্গনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি তিনি একাধিকবার তার দেশকে সাফল্যের শীর্ষে নিতে অবদান রেখেছেন। তিনি ভারতীয় এবং বিশ্ব হকির এক কিংবদন্তিতুল্য ব্যক্তিত্ব। তার স্মরণে ভারতের ক্রীড়াঙ্গনে আজীবন কৃতিত্বের জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কার— মেজর ধ্যানচাঁদ পুরষ্কারের প্রবর্তন করা হয়েছে এবং তার জন্মদিনেই দেশটিতে জাতীয় ক্রীড়া দিবস উৎযাপন করা হয়।  শোনা যায়, হিটলার ধ্যানচাঁদের খেলা দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তাঁকে জার্মান নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা নিতে অস্বীকার করেন ধ্যানচাঁদ। তাকে মেডেল পরিয়ে পুরষ্কৃত করেন রাষ্ট্র নায়ক হিটলার । তার পর স্টেডিয়ামে থেকে জিজ্ঞাসা করেন হিটলার, ভারতে কি করেন তিনি ? ধ্যান চাঁদ বলেন ভারতের সেনাবাহিনী তে যুক্ত তিনি । তারপর হিটলার তাকে জার্মানির সেনাবাহিনী তে উচ্চ পদের জন্য আমন্ত্রণ জানান । তবে ধ্যান চাঁদ তার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন । তার আত্মজীবনী ” গোল ” বই টিতে এই ঘটনার কথা লিপিবদ্ধ আছে ।

 

কিংবদন্তি এই হকি তারকার নামে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মূর্তি গড়া হয়েছে।

১৯৫৬ সালে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন।

১৯২৮ সালের আমস্টারডাম অলিম্পিক্সে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন ধ্যানচাঁদ। সেবারই হকির জাদুকর হিসেবে নামকরণ হয় ধ্যানচাঁদের।

নয়া দিল্লিতে তার নামে একটি জাতীয় হকি স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঝাঁসি তে তার নামেই রয়েছে জাতীয় হকি একাডেমি।

 

আজকের দিনেই রাষ্ট্রপতি অর্জুন ও রাজীব খেলরত্ন পুরস্কার, দ্রোণাচার্য পুরস্কার তুলে দেন ক্রীড়াজগতে দেশের কৃতিদের হাতে। ক্রীড়া সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দেশের ক্রীড়া সংস্কৃতি ও জাতীয় ক্রীড়া দলগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে , স্কুলে এই দিন টি পালন করা হয়। তবে ভারতের মতন জাতীয় ক্রীড়া দিবস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে উৎযাপিত হয়ে থাকে।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আজ আন্তর্জাতিক পারমাণবিক পরীক্ষা বিরোধী দিবস , জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং গুরুত্ব।

সারা বিশ্বে ২৯ আগস্ট পারমাণবিক পরীক্ষা বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালন করা হয় বিশ্ববাসীর মধ্যে পরমাণু অস্ত্র বিরোধী সচেতনতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে। ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার ৬৪তম অধিবেশনে ২৯ আগস্ট দিনটিকে পারমাণবিক পরীক্ষা বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

 

পারমাণবিক পরীক্ষা শুধু মানব সমাজেরই নয়, পরিবেশ, উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতেরও ব্যাপক ক্ষতি করে।  পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস আমাদের এই বিষয়ে সতর্ক হয়ে একটি নিরাপদ পারমাণবিক অস্ত্র-মুক্ত ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে হবে। পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিধ্বংসী প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ২৯শে আগস্ট আন্তর্জাতিক পরমাণু পরীক্ষার বিরুদ্ধে দিবস পালন করা হয়।  এই বছর ইভেন্টের ত্রয়োদশ বার্ষিকী চিহ্নিত করে।  এই দিনে, জাতিসংঘ একটি ইভেন্টের আয়োজন করে যা পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা এবং বিস্ফোরণের প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করে এবং এই ধরনের পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তাকে আরও হাইলাইট করে।

 

বেশিরভাগ দেশ যারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে তারা তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের কার্যকারিতা এবং বিস্ফোরক ক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য পরমাণু পরীক্ষা চালায়।  পারমাণবিক পরীক্ষা একটি দেশের পারমাণবিক শক্তির লক্ষণ।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ১৯৪৫ সালের জুলাই মাসে এবং ১৯৪৯ সালে প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা পরীক্ষা করে। এটি ১৯৫২ সালে যুক্তরাজ্য, ১৯৬০ সালে ফ্রান্স এবং ১৯৬৪ সালে চীন দ্বারা অনুসরণ করা হয়েছিল। ভারত ১৯৯৮ সালে পোখরান-২ পরীক্ষা করেছিল যা ছিল  দ্বিতীয়টি  ভারত প্রথমবার পরীক্ষা করেছিল ১৯৭৪ সালে।

 

পরমাণু পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবসটি জাতিসংঘ কর্তৃক মনোনীত প্রতি বছর ২৯শে আগস্ট পালন করা হয়।  রেজোলিউশনে “পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিস্ফোরণ বা অন্য কোনো পারমাণবিক বিস্ফোরণের প্রভাব এবং পারমাণবিক অস্ত্র-মুক্ত বিশ্বের লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম উপায় হিসাবে তাদের বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা এবং শিক্ষা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়েছে।”  দিবসটি জাতিসংঘ, সদস্য রাষ্ট্র, আন্তঃসরকারি ও বেসরকারী সংস্থা, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, যুব নেটওয়ার্ক এবং মিডিয়াকে একটি নিরাপদ বিশ্ব অর্জনের জন্য একটি মূল্যবান পদক্ষেপ হিসাবে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা নিষিদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত, শিক্ষিত এবং সমর্থন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা।  .

 

পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস: ইতিহাস

২ ডিসেম্বর ২০০৯-এ, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৪তম অধিবেশন ২৯ আগস্টকে তার রেজুলেশন ৬৪/৩৫ সর্বসম্মতভাবে গৃহীত করার মাধ্যমে পারমাণবিক পরীক্ষার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস ঘোষণা করে।  প্রস্তাবের প্রস্তাবনায় জোর দেওয়া হয়েছে যে “মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের উপর ধ্বংসাত্মক এবং ক্ষতিকারক প্রভাব এড়াতে পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা উচিত” এবং “পরমাণু পরীক্ষার সমাপ্তি হল পারমাণবিক পরীক্ষাগুলি অর্জনের অন্যতম প্রধান উপায়।  একটি পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের লক্ষ্য।”
ট্রিনিটি নামক প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষাটি ১৬ জুলাই, ১৯৪৫ সালে নিউ মেক্সিকোতে একটি মরুভূমিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।  ম্যানহাটন প্রকল্পের জে. রবার্ট ওপেনহেইমারের অধীনে পারমাণবিক প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছিল।  প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষার পর, ১৯৪৫ সালের ৬ এবং ৯ আগস্ট যথাক্রমে হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা হয়, যা কয়েক লক্ষ মানুষের জীবন দাবি করে।  জাপানের সেই শহরগুলির পরের প্রজন্মগুলি বিকিরণ-প্ররোচিত ক্যান্সার এবং জন্মগত ত্রুটিতে ভুগছিল।
পরবর্তীতে, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৪৯ সালে, যুক্তরাজ্য ১৯৫২ সালে, ফ্রান্স ১৯৬০ সালে এবং চীন 1964 সালে পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। শীতল যুদ্ধের পর্বে (১৯৪৭-১৯৯১) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা দেখা যায়।

 

নিউক্লিয়ার টেস্টিং এর বিপদ–

 

পারমাণবিক পরীক্ষা স্বাস্থ্যের জন্য বিপদ ডেকে আনে কারণ এটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ নির্গত করে যা সাধারণত বাতাসে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ে।  ১৯৪৫ সাল থেকে বায়ুমণ্ডলে, ভূগর্ভস্থ বা জলের নীচে সমস্ত পরিবেশে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে।  এই পরীক্ষার অবশিষ্ট বর্জ্য অনেক বছর ধরে থাকে। বিকিরণের এক্সপোজার অঙ্গ, হাড়, ত্বক এবং চোখের ক্ষতি করতে পারে।  বিকিরণ বিশেষ করে লিউকেমিয়া, থাইরয়েড, ফুসফুস এবং স্তন ক্যান্সারের মতো ক্যান্সারের প্রকোপ বৃদ্ধির সাথে যুক্ত। বিকিরণ একজন ব্যক্তির জিনেও মিউটেশন ঘটাতে পারে।  এই জিনগুলি তাদের সন্তানদের কাছে প্রেরণ করা যেতে পারে, যার ফলে জেনেটিক ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।  পৃষ্ঠের তেজস্ক্রিয় পদার্থ উদ্ভিদের শিকড়ে প্রবেশ করতে পারে এবং ফলস্বরূপ প্রাণীদের দ্বারা গ্রাস করতে পারে।  দূষিত গাছপালা এবং প্রাণীজ খাদ্যের উৎস খাওয়া পরোক্ষভাবে মানুষের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করতে পারে।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This