Categories
রিভিউ

আজ ৩০ জুন, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ৩০ জুন। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

(ক) হুল দিবস বা সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস।(ভারত – পশ্চিমবঙ্গ)

(খ) আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রকাব্যপাঠ দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৬ – অ্যান্টনি মান, মার্কিন অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক।

১৯১১ – চেসোয়াফ মিওশ, পোলীয়-মার্কিনী কবি, লেখক, শিক্ষাবিদ এবং অনুবাদক।

১৯১৭ – সুজান হেওয়ার্ড, আমেরিকান অভিনেত্রী।

১৯২৬ – পল বার্গ, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান প্রাণরসায়নী।

১৯৩৩ – এম. জে. কে. স্মিথ, সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।

১৯৩৯ – হোসে এমিলিও পাচেকো, মেক্সিকোর তরুণ প্রজন্মের শীর্ষসারির কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও প্রাবন্ধিক।

১৯৪১ – পিটার পোলক, সাবেক ও বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।

১৯৪৩ – আহমদ ছফা, বাংলাদেশী লেখক, চিন্তক ও ঔপন্যাসিক।

১৯৫৪ – সেরযহ সারগসয়ান, আর্মেনিয় রাজনীতিবিদ ও ৩য় প্রেসিডেন্ট।

১৯৬৩ – য়ংওইয়ে মাল্মস্টেন, সুইডিশ গিটারিষ্ট ও গীতিকার।

১৯৬৪ – মার্ক ওয়াটার্স, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক।

১৯৬৫ – গ্যারি প্যালিস্টার, ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৬৬ – মাইক টাইসন, মার্কিন পেশাদার বক্সিং খেলোয়াড়।

১৯৬৯ – সনাথ জয়াসুরিয়া, শ্রীলংকান সাবেক ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ।

১৯৭৭ – জুস্টো ভিলার, প্যারাগুয়ের ফুটবলার।

১৯৭৮ – লুসিয়ানা লেওন লুসি, ছোটবেলা থেকে রাজনীতির মাঠে এবং অসংখ্য তরুণের মনে ঝড় তোলেন।

১৯৮০ – রায়ান টেন ডেসকাট, নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটার।

১৯৮৩ – শেরিল কোল, ইংরেজ গায়ক, গীতিকার, ড্যন্সার ও মডেল।

১৯৮৫ – মাইকেল ফেলপস, মার্কিন সাঁতারু এবং ২৩ টি অলিম্পিক স্বর্ণ পদক বিজয়ী।

১৯৮৬ – ফ্রেডয় গুয়ারিন, কলম্বিয়ান ফুটবলার।

১৮০১ – ফ্রেডেরিক বাস্টিয়াট, ফরাসি অর্থনীতিবিদ ও তাত্তিক।

১৮১৭ – জোসেফ ডালটন হুকার, ব্রিটিশ উদ্ভিদ্বিজ্ঞানী এবং অভিযাত্রী।

১৮৮৪ – জর্জ ডুহামেল, ফরাসি লেখক।

১৮৯৩ – ওয়াল্টার উলব্রিচত, জার্মান কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ।

১৪৭০ – অষ্টম চার্লস, ফ্রান্সের রাজা।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০০ – সমাপ্য অর্থ বত্সরের কার্যাদি নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল হইতে অর্থ প্রদান ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্ব প্রদানের জন্য আইন প্রণয়ন করা হয় ৷

২০০২ – বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাটকল আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দেয় বিএনপি জোট সরকার৷

২০০৪ – গণপূর্ত অধিদপ্তর মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে।

২০০৮ – র‌্যাব সাইকি ভবনের মালিক পীরজাদা, মহাগুরু, জ্যোতিষ সম্রাট আর ভণ্ড বাবা ড. জীবন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে ।

২০০৯ – গ্রামীণ মহিলা উন্নয়ন প্রকল্প সমাপ্ত হয়।

২০১১ – বাংলাদেশ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়।

১৯৭১ – ‘নিউইয়র্ক টাইমস’- এর প্রতিনিধি সিডনি শ্যানবার্গকে ঢাকা থেকে বহিষ্কার করা হয়।

১৯৭১ – মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে নীলমনিগঞ্জ, হালসা ও আলমডাঙ্গা রেল লাইন বিষ্ফোরকের সাহায্যে উড়িয়ে দিয়ে পাকসেনাদের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

১৯৭৪ – বিশিষ্ট রাজনীতিক ভাষাসৈনিক জাতীয় লীগ প্রধান জনাব অলি আহাদ বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক হন।

১৯৭৯ – সুদানের জেনারেল ওমর আল বাশীর অভ্যন্তরীন সংকটের সম্মুখীন সুদানের সাদেক আল মাহদীর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।

১৯৯১ – দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের অবসান ঘটে।

১৯৯৩ – ভারতে বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার প্রতিবাদে ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে লাখো জনতা অযোধ্যা অভিমুখে প্রতীকি লংমার্চ শুরু করেন।

১৯৯৭ – বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চীনের কাছে হংকং হস্তান্তর করা হয়।

১৯০৮ – রাশিয়ার সাইবেরিয়ার বৈকাল হ্রদের উত্তর-পশ্চিমের দুর্গম পার্বত্য এলাকা টাঙ্গুস্কায় এক প্রচন্ড শক্তির বিস্ফোরন ঘটে।

১৯১৬ – রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯২০ – আয়াতুল্লাহ মীর্যা মোঃ ত্বাক্বী শিরাজীর নেতৃত্বে ইরাকের জনগণ বৃটিশ দখলদারদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে।

১৯৩৪ – জার্মানিতে ফ্যাসিবাদী হিটলারের বিরোধীতা করায় প্রায় এক হাজার লোককে হত্যা করা হয়।

১৯৩৭ – বিশ্বে প্রথম আপৎকালীন টেলিফোন নম্বর ‘৯৯৯’ চালু হয় লণ্ডনে।

১৯৪১ – নাজি গ্রুপের অনুসারীরা ইউক্রেনের স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

১৯৫৭ – আওয়ামী লীগের প্রাদেশিক প্রধান, মাওলানা ভাসানী দলের সভাপতি হিসেবে পদত্যাগ করেন।

১৯৬০ – কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র বা জায়ার স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

১৯৬৯ – নাইজেরীয় সরকার বায়াফ্রায় পাঠানো রেডক্রসের সব ধরনের সাহায্য বন্ধ করে দেন।

১৮৫৫ – ব্রিটিশবিরোধী সাঁওতাল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।

১৮৮৬ – ন্যায়বান গভরমেন্ট দক্ষিণ সাহাবাজপুর পরগনা কোর্ট অব ওয়ার্ডসের শাষনাধীনে গ্রহণ করে বাবু পিতাম্বর বন্ধ্যোপাধ্যায়কে অস্থায়ী ম্যানেজার নির্ধারণ করে দৌলতখায় প্রেরণ করে।

১৮৯৪ – কোরিয়া চীন থেকে স্বাধীনতা পেয়ে জাপানের সহযোগিতা কামনা করে।

১৮৯৪ – লন্ডন টাওয়ার ব্রিজ উদ্বোধন করা হয়।

১৭৫৫ – ফিলিপাইনে ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী সব চায়নিজ রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়।

১৭৫৭ – বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ত্রিশ হাজার সেনা নিয়ে ইংরেজ অধিকৃত কোলকাতা দখল করেন।

১৭৫৭ – নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা স্বীয় পত্নী ও কন্যাসহ পালিয়ে যাবার সময় পথিমধ্যে রাজমহলে রাত কাটাতে গিয়ে তিনি ধরা পড়েন।

১৭৭২ – বাংলাদেশের রংপুরে ফকির মজনু শাহ জেহাদ শুরু করেন।

১২৯৪ – সুইজারল্যান্ডের বার্ন থেকে ইহুদিদের বিতাড়ন করা হয়।

০৬৫৬ – ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.) খেলাফত লাভ করেন।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০১ – চ্যাট অ্যাটকিন্স, আমেরিকান গায়ক, গীতিকার, গিটার ও প্রযোজক।

২০০৩ – বাডি হাকেট, আমেরিকান অভিনেতা ও কৌতুকাভিনেতা।

২০০৯ – পিনা বাউসচ্, জার্মান ড্যন্সার, কোরিওগ্রাফার ও পরিচালক।

২০১৪ – পল মাযুরস্কয়, আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯১৭ – দাদাভাই নওরোজি, বৃটিশ পার্লামেন্টের প্রথম ভারতীয় সদস্য।

১৯১৯ – জন উইলিয়াম স্ট্রাট ৩য় ব্যারন রেলি, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯৩৪ – কার্ট ভন সচলেইচের, জার্মান জেনারেল, রাজনীতিবিদ ও ২৩ তম চ্যান্সেলর।

১৯৫৯ – খ্যাতনামা বাঙালি অভিনেতা ও নাট্যাচার্য শিশিরকুমার ভাদুড়ী।

১৯৬২ – প্রমীলা নজরুল, বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের পত্নী।

১৯৭১ – ভ্লাডিস্লাভ ভোল্কোভ, রাশিয়ান প্রকৌশলী ও মহাকাশচারী।

১৯৭৪ – এ্যালবার্ট কিং, মার্টিন লুথার কিং এর মা।

১৮৩৯ – দ্বিতীয় মাহমুদ খাঁ, তুর্কি সুলতান।

১৭১৭ – নবাব মুর্শিদ কুলি খান, বাংলার প্রথম নবাব।

১৬৬০ – উইলিয়াম অউগট্রেড, ইংরেজ মন্ত্রী ও গণিতবিদ।

০৭১৩ – ইমাম জয়নুল আবেদিন, ইসলামের মহান বার ইমামদের মধ্যে অন্যতম।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বীরভূমের  রাঙা মাটির রাঙ্গা-পথে সিধু-কানুর নেতৃত্বে সাঁওতাল বিদ্রোহ : প্রশান্ত কুমার দাস।

উনিশ শতকে বঙ্গীয় ‘রেনেসান্স’ বা রেনেসাঁ যে সময়ে প্রকৃত জাতিয়তাবাদের ভিত্তি রচনা করতে ব্যর্থ হয়েছিল ঠিক সেই সময়েই ইংরেজ শাসকের অপশাসন ও জমিদার শ্রেণী আর মহাজনদের শোষণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র কৃষক- সংগ্রাম সমগ্র জাতির সামনে এক নতুন সংগ্রামী ঐতিহ্য  সৃষ্টি করেছিল যাকে ভারতের বৈপ্লবিক জাতিয়তাবাদের ভিত্তিভূমি বলা চলে।
ব্রিটিশ শাসনকালে যে সমস্ত কৃষক বিদ্রোহ হয়েছিল তাদের মধ্যে অত্যন্ত  উল্লেখযোগ্য ছিল সাঁওতাল বিদ্রোহ বা খেরওয়ারি হুল বিদ্রোহ।
১৮৫৫ সালের সাঁওতাল বিদ্রোহ ও ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ বা মহাবিদ্রোহ – দুটোকেই ভারতের প্রথম ঐক্যবদ্ধ স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা চলে। এই উভয় সংগ্রামই শুরু হয়েছিল ইংরেজ শাসনের কবল থেকে, শোষণ থেকে মুক্তি ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার ধ্বনি নিয়ে।
সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রকৃত কারণ ছিল জমির উপর একছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠার অকাঙ্খা এবং তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল স্বাধীনতা স্পৃহা- যার ফলে তারা ধ্বনি তুলেছিল – “আমাদের নিজ সম্পত্তির অধীনে স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য চাই।”

 

এই প্রসঙ্গে ওল্ডহাম সাহেব মন্তব্য করেছিলেন – “পুলিশ ও মহাজনের অত্যাচারের স্মৃতি যাহাদের দেশপ্রেম জাগাইয়া তুলিয়াছিল সেই আন্দোলন তাহাদের সকলকেই আকৃষ্ট করিল,কিন্তু যে মূল ভাবধারাকে কার্যে পরিণত করিবার চেষ্টা হইতেছিল তাহা ছিল সাঁওতাল অঞ্চল ও সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠার চিন্তা।”
সাঁওতালী ভাষার বিদ্রোহকে বলা হয় ‘হুল’,সুতরাং সাঁওতাল বিদ্রোহ ‘সাঁওতাল হুল’ নামেই বেশি পরিচিত । ১৮৫৪ সাল থেকেই এই বিদ্রোহের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ উঠতে আরম্ভ করেছিল,তারপর ১৮৫৫ সালে সেই বিদ্রোহ পরিপূর্ণ ভাবে আত্মপ্রকাশ করে দাবাগ্নির মতো চতুর্দিকে বিস্তৃত হলো।শত শত বছরের প্রায় বিচ্ছিন্ন সমাজ জীবনের ধারা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সাঁওতালরা পথ খোঁজে মুক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে। জমির অধিকার,জঙ্গলের অধিকার,ফসলের অধিকার,জমিদার ও মহাজনদের শোষণমুক্তির অধিকার  ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন যেন এই প্রথম ঘুম থেকে হঠাৎ জেগে ওঠে তারা দেখতে পায়।

 

সাঁওতালরা তাদের সমাজের দুর্দশার কথা গানের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে কোম্পানির কুশাসনের স্বরূপ তুলে ধরেছিল । যেমন –
“নেরা নিয়া নুরু নিয়া
ডিণ্ডা নিয়া ভিটা নিয়া
হায়রে হায়রে! মাপাঃ গপচদ,
নুরিচ নাড়াঁড় গাই কাডা নাচেল লৌগিৎ পাচেল লৌগিৎ
সেদায় লেকা বেতাবেতেৎ ঞাম রুওয়ৌড় লৌগিৎ
তবে দ বোন লুনাগেয়া হো।”
এর অর্থ হচ্ছে –  “স্ত্রীপুত্রের জন্য
জমি জায়গা বাস্তুভিটার জন্য
হায় হায় ! এ মারামারি কাটাকাটি
গো-মহিষ-লাঙ্গল ধন-সম্পত্তির জন্য
পূর্বের মত আবার ফিরে পাবার জন্য
আমরা বিদ্রোহ করবো।“
গানটির প্রতিটি লাইনে প্রতিটি শব্দে শোষণ আর উৎপীড়নে গুমড়ে ওঠা সাঁওতালদের মনের গোপন কথা প্রকাশ পেয়েছিল। সেদিন এই প্রকার আরও অনেক গান তারা রচনা করেছিল সংগ্রাম করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে।
এরূপ আরো একটা গান এখানে তুলে ধরা হলে –
“আদ বাংবন পৌচঃ সিধু আদ বাংবন থিরঃ,
বাইরি ঞেলতে লৌড়হাই ঘন বাংবন ঞিরঃ।
বহঃক্ ঞুরুঃ রেহঁ সিধু মায়াম লিঙ্গি রেহঁ,
বাংবন পাচঃ লৌড়হাই আবন দেবন সহরঃ।।

এই গানের অর্থ হচ্ছে –
“আর আমরা পিছু হঠব না সিধু আর চুপ থাকবে না,
শত্রু দেখে লড়াই থেকে পালাব না,
মাথা উড়ে গেলেও সিধুর রক্ত বইতে থাকলেও,
আমরা আর পিছু হটবনা,লড়াই মুখো হব।।”

 

এই সব কবিতা বা গানের মধ্য থেকে বোঝা যাচ্ছে আদিবাসী সহজ সরল সাঁওতালরা যুগ যুগ ধরে শোষণ-অত্যাচারের শিকার হওয়ার জন্য তারা বাধ্য হয়ে সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিল। এভাবে ইংরেজ শাসক,জমিদার ও মহাজনদের শোষন –অত্যাচার-অবিচার থেকেই এই বিদ্রোহের সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিদ্রোহের মধ্য থেকেই জন্ম নিয়েছিল নেতৃত্ব। সাঁওতাল পরগনার ধূমায়িত বিদ্রোহের মধ্য থেকে বার হয়ে এলেন ঐতিহাসিক সাঁওতাল বা হূল বিদ্রোহের নায়ক সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব নামে চার ভাই। এছাড়া এই নেতাদের মধ্যে ছিলেন কালো প্রামানিক, ডোমন মাঝি,বীরসিংহ মাঝি, গোক্ক ইত্যাদি সাওতাঁল আদিবাসী ।
১৮৫৫ সালের ৩০ শে জুন এই সব নেতাদের নেতৃত্বে প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল ভাগনাডিহির মাঠে সমবেত হয়েছিল। তাদের মধ্যে রটনা করে দেওয়া হয়েছিল যে , সিধু, কানু, দৈব নির্দেশপ্রাপ্ত। বিভিন্ন এলাকার কামার, কুমোর, তাঁতি, ছুতোর প্রভৃতি নিম্নশ্রেণির মানুষও এই বিদ্রোহে যোগদান করেছিল, শোনা যায়, দুই লক্ষ সাঁওতাল এই বিদ্রোহে সামিল হয়েছিল,ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে সাঁওতালরা গেরিলা পদ্ধতিতে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে জমিদার ও মহাজনদের আক্রমণ করে। এই বিদ্রোহীরা এক সময় রাজমহল ভাগলপুরের মধ্যে রেল ও ডাক যোগাযোগের ব্যবস্থা বিছিন্ন করে দেয়,তাদের হাতে শতাধিক ইংরেজ নিহত হয়।”ক্যলকাটা রিভিউ” পত্রিকা থেকে জানা যায় যে, একজন ইংরেজ সেনাপতি মেজর বরোজ সাঁওতালদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হন।

 

এই বিদ্রোহের সংবাদ বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো সমস্ত শাসকগোষ্ঠীকে স্তম্ভিত করে দেয়। “ক্যালকাটা রিভিউ” পত্রিকার একজন ইংরেজ মন্তব্য করেছিলেন – “এই রূপ আর কোনো অদ্ভুত ঘটনা ইংরেজের স্মরণকালের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের সমৃদ্ধিকে বিপদগ্রস্ত করিয়া তোলে নাই।“
এই সংবাদে সেনাপতি মেজর বরোজ ভাগলপুরের দিকে সাঁওতাল বাহিনীর গতিরোধ করেন। ১৮৫৫ সালের ১৬ই আগষ্ট ভাগলপুর জেলায় পীরপাইতির ময়দানে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রচন্ড রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। শোনা যায়, মেজর বরোজের বাহিনী চূড়ান্তভাবে অপদস্থ ও  পরাজিত হয়, এতে একজন ইংরেজ অফিসারসহ কয়েক জন ইংরেজ সৈন্য এবং  বেশকিছু সাওতাঁল বিদ্রোহী নিহত হয়। ভাগলপুরের কমিশনার এই যুদ্ধের একটা বিবরণ দিয়েছিলেন – “বিদ্রোহীরা নির্ভিক চিত্তে প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়াছিল।তাহাদের যুদ্ধাস্ত্র কেবল তীর ধনুক আর কুঠার। তাহারা মাটির উপর বসিয়া পায়ের দ্বারা ধনুক হইতে তীর ছুড়িতে অভ্যস্ত।”
এক সময়ে বীরভূম জেলার সমগ্র উত্তর পশ্চিমাংশে বিদ্রোহীদের দখলভুক্ত হয়েছিল। সরকারের আত্মসমর্পণ নির্দেশকে বিদ্রোহীরা ঘৃণাভরে পরিত্যাগ করেছিল। সিধু ও কানুর নেতৃত্বে সাঁওতাল বাহিনী পাকুড়ে পৌঁছায় এবং তিনদিন ও তিনরাত্রি পাকুড়কে অবরোধ করে রাখে। এভাবে তারা বীরভূম থেকে ভাগলপুর পর্যন্ত এক বিরাট ভূখন্ডকে অধিকার করে। ডাক-তার ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট প্রভৃতি সমস্ত রকমের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিছিন্ন করে দেয়।
কিন্তু কয়েকদিন পরেই ইংরেজশাসক চরমপন্থা গ্রহণ করে সামরিক আইন জারি করে অবাধে লুণ্ঠন, নরহত্যা ও ধ্বংস সাধন করে মানুষের মনে এক বিভীষিকার সৃষ্টি করে। তখন সাঁওতালরা বাধ্য হয়ে পশ্চাৎপদ হতে থাকে।জনৈক ইংরেজ সেনাপতি নিজেই স্বীকার করেছিলেন – “আমরা যুদ্ধ করিনি, করেছিলাম গণহত্যা।”

 

১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একদল সাঁওতাল হতাশাগ্রস্ত হয়ে সিধুর গোপন আশ্রয় স্থল জানিয়ে দেয়। তাই ইংরেজরা সহজেই সিধুকে গ্রেপ্তার করে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। এভাবে পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বীরসন্তান সিধু ইংরেজ শত্রুর হাতে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে ভারতের ইতিহাসে অমর হয়ে রয়েছেন। এর কিছুদিন পরে আর এক নায়ক কানু বীরভূমের ওপারবাঁধের নিকটে সশস্ত্র পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।তাকেও ইংরেজ বাহিনী নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। প্রকৃতপক্ষে,এই সাওতাঁল বিদ্রোহে অন্ততপক্ষে ২৫ হাজার সাঁওতাল নিহত হয়েছিলেন ।এভাবে বীরভূম থেকে ভাগলপুর পর্যন্ত বিশাল অঞ্চল সাঁওতালদের রক্তস্রোতে রঞ্জিত হয়েছিল।
সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রচন্ড আঘাত থেকে ইংরেজ সরকার উপলব্ধি করে যে, যারা অনায়াসে প্রাণ দিতে পারে, যারা আত্মসমর্পণ করতে চায় না তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের মিশ্রণের ফলে সারাভারতে আরও বিদ্রোহের বীজ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই তারা কৌশল করে সাঁওতালদের জনজীবন থেকে বিছিন্ন করার উদ্দেশ্যে সাঁওতাল পরগণাকে ‘সাঁওতাল ডিহি পরগণা’ নামে একটা পৃথক পরগণা গঠন করে।
দুঃখের বিষয় মৃত্যুভয়হীন বীরত্ব ও শৌর্য থাকা সত্ত্বেও সেদিন সাঁওতাল বিদ্রোহের ভবিষ্যৎ ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন, কারন ভারতের অন্য অঞ্চলসমূহ এই বিদ্রোহের সময়েও ছিল শান্ত, নির্লিপ্ত,ও নিস্তরঙ্গ । তাই ইংরেজ শাসক এই বিদ্রোহকে সহজেই দমন করতে সক্ষম হয়েছিল। তা সত্ত্বেও একথা বলা যেতে পারে শুধুমাত্র তীর-ধনুক-টাঙ্গিকে সম্বল করে ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার সাওতাঁল আধুনিক কামান-বন্দুক সজ্জিত পনের হাজার  সুশিক্ষিত সেনার বিরুদ্ধে বীরবিক্রমে যুদ্ধ পরিচালনা করে সমগ্র ভারতবাসীর সম্মুখে যে পথনির্দেশ করেছিল, সেই পথ ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ভারতের মুক্তি সংগ্রামের সুপ্রশস্ত রাজপথে পরিণত হয়েছিল আর সেই রাজপথই পরবর্তীকালে বিংশ শতাব্দীর মধ্য দিয়ে প্রসারিত হলো। ভারতের এই অশিক্ষিত দরিদ্র আদিবাসী সাঁওতাল তথা কৃষক সমাজ সেই রাজপথেরই অভিযাত্রী-  তাঁরাই হচ্ছেন ভারত মাতার  মহান বীর সন্তান, বীরযোদ্ধা – তাই আমরা তাঁদেরই জয়গান গাইবো।

Share This
Categories
কবিতা

কালপুরষ : রাণু সরকার।

কালপুরুষ, আমি কে? চেনো আমাকে?
আমি যন্ত্রণাতুরা, এবার চিনেছো আমাকে?

আমার হৃদয়ে সদা বসবাস এক যন্ত্রণায় কাতর নারী।

আমার চোখ দেখে বুঝতে পারবে চোখের জলের আচ্ছাদন?

আমি আছি আমার মত-
আমার চোখের আচ্ছাদন গাঢ় রাতের মত- তাকে নিয়ে আমার বসবাস।

Share This
Categories
অনুগল্প

বাঘ : রাণু সরকার।

সুন্দরবন, এশিয়ার সবথেকে বড় নিরবিচ্ছিন্ন বাঘ-বন, আর পৃথিবীর একমাত্র বাদাবন যেখানে দেখা মেলে বাঘের।এখানে বাঘ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে সবথেকে বেশি প্রাণ হারায় মানুষ- এই জোয়ার ভাটার জঙ্গলে।

খাবারের অভাব হলে বনের পার্শ্ববর্তী মানুষের বসতিতে এসে আক্রমণ করে। সাধারণত এরা মানুষের চোখে পড়তে চায় না- তবে কিছু বাঘ আছে মানুষখেকো।
সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে নদী গুলো বয়ে গেছে সেই নদী হলো বিদ্যাধরী,মাতলা,
মাথাভাঙা প্রভৃতি।

সুন্দরবনের ঐতিহ্য হলো বাঘ ও গাছগাছালি নৈসর্গিক দৃশ্যাবলি সুন্দরী, খলসি, গেওয়া, কেওড়া,গরান, হোগলা,
গোলপাতা প্রভৃতি।

মধু সংগ্রহ করতে ও মাছ ধরতে গিয়ে মানুষের প্রাণ হারাতে হয়।

বাঘের স্মৃতিশক্তি অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে তুলনামূলক বেশি। দেহজুড়ে রঙের বাহারি নকশাখচিত ডোরাকাটা পেটের দিকে হালকা হলুদ পায়ের ভেতরের দিকে সাদা গায়ে কমলা রঙের লম্বালম্বি কালো ধূসর বা বাদামি ডোরাকাটা।
দুটো বাঘের ডোরাকাটা দাগ এক নয়। যাইহোক বাঘের বিবরণ যতটা পেরেছি লিখলাম।

একটি ঘটনা লিখলাম,
সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিল বাবা ছেলে ও কাকা তিনজন নৌকা নিয়ে সামনেই বাঘ ছিলো গাছের আড়ালে লুকিয়ে তারা কেউই দেখতে পায়নি পেছন থেকে আক্রমণ করলো বাবাকে। কাকা দেখতে পেয়ে ভয়ে দিশাহারা, কোথায় পালাবে ঠিক করতে পারছে না। অবশেষে এক জায়গাতে কোনক্রমে আশ্রয় নিলো ছেলের বয়স কম তাই ভয়কে সাথে নিয়েই চললো লড়াই। প্রথম বাপের ঘারে কামর দিয়ে কিছুক্ষণ বসে রইল আস্তে আস্তে মাথাটি মুখে পুরে দিলো। ছেলেটি দেখছে ভয়ে ভয়ে ভাবছে কিভাবে বাঘের হাত থেকে বাবাকে রক্ষা করা যায়।

বাঘটি এমন ভাবে বসে ছিলো ছেলেটি কিছুই করতে পারছিলো না পাশে নদী ও গাছগাছালি অবশেষে বৈঠা দিয়ে জলে বারি দিতে থাকে বাঘ একটু ভয় পেয়ে বাপকে মুখে করে জলে নেমে পরে জলের নিচে দিয়ে চলছে ওপারে যাবে ছেলের বৈঠাটি ভেঙে গেলো ভাবছে বাবা তো মারা গেছে বাঘের মুখেই বাবার দেহটি রক্ষা করতে হবে খেতে দেওয়া যাবেনা ছেলেটির যত শক্তি ছিলো সব শক্তি দিয়ে চিৎকার করলো বাঘের মত করে, বাঘ ভয়ে আবার পাড়ের দিকে উঠে এলো দেহটি কোনক্রমে মুখ থেকে ফেলে পাশে বসে আছে। এমন ভাবে বসেছে কিছুই করতে পারছে না ছেলে, বাঘ ভীষণ চালাক।

ভাঙা বৈঠা দিয়ে জলে বারি দিতে থাকে বাঘ ধীরে ধীরে একটু দূরে গাছের আড়ালে বসে আছে। বিশাল আকারের বাঘটি ছেলেটি কোনক্রমে বাপের দুহাত ধরে টানতে টানতে নৌকায় তুললো এবার কাকা কাকা বলে ডাক দিলো। কাকা ভয়ে জড়সড় হয়ে বলছে এখানে আমি ছেলে নৌকায় বাবার দেহটি ভয়ে ভয়ে রেখে কাকাকে নৌকায় তুলে তাড়াতাড়ি রওনা দিলো বাড়ির দিকে ভয় তো সাথেই আছে সবসময়ের জন্য। আবার যদি আসে হাত পা কাঁপছে, যেকোরেই হোক বাবার দেহটি বাড়ি নিয়ে যেতেই হবে। বাঘ কিন্তু ওদের পিছু ছাড়ছে না, এপাশ ওপাশ করতে থাকে মানুষটিকে পাবার জন্য,ওর মুখের আহারটি তো ওরা নিয়ে নিলো।

অবশেষে কোনক্রমে নৌকা মাঝ নদীতে নিয়ে একটু স্বস্তি পেলো, তারপর কষ্টকে সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো বাবার মৃতদেহটি নিয়ে।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৮ জুন, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ২৮ জুন। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৬ – মারিয়া গ্যোপের্ট-মায়ার, নোবেলজয়ী জার্মান বংশোদ্ভুত মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানী।

১৯১২ – কার্ল ফ্রিডরিখ ফন ভাইৎস্যেকার, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক।

১৯২১ – পি. ভি. নরসিংহ রাও, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের দ্বাদশ প্রধানমন্ত্রী।

১৯২৬ – মেল ব্রুক্স, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সুরকার, গীতিকার, কমেডিয়ান, অভিনেতা এবং প্রযোজক।

১৯২৭ – শেরউড রোল্যান্ড, মার্কিন রসায়নবিদ।

১৯২৮ – প্যাট্রিক হেমিংওয়ে, আমেরিকান লেখক।

১৯২৮ – জন স্টুয়ার্ট বেল, আয়ারল্যান্ডীয় পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯২৮ – পিটার হেইন, প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার।

১৯৩০ – ইতামার ফ্রাঁকু, ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি।

১৯৩৪ – রয় গিলক্রিস্ট, জ্যামাইকান ক্রিকেটার।

১৯৪০ – মুহাম্মদ ইউনুস, বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ।

১৯৪১ – ফেরদৌসী রহমান, বাংলাদেশী প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী।

১৯৪৩ – ক্লাউস ফন ক্লিৎসিং, তিনি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯৪৬ – ব্রুস ডেভিসন, মার্কিন অভিনেতা ও পরিচালক।

১৯৪৮ – ক্যাথি বেট্‌স, আমেরিকান অভিনেত্রী।

১৯৫৭ – ক্যাথি ক্রস, নিউজিল্যান্ডীয় প্রমিলা ক্রিকেটার ও আইসিসি মনোনীত আম্পায়ার।

১৯৬৬ – জন কিউস্যাক, মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার।

১৯৭০ – মুশতাক আহমেদ (ক্রিকেটার), পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।

১৯৭১ – ফাবিয়ঁ বার্থেজ, প্রখ্যাত ফরাসি ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৭১ – ইলন মাস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকান প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি খাতে উদ্যোক্তা।

১৯৮৫ – ফিলিপ ফিল অ্যান্টোনিও বার্ডসলে, ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৮৯ – মার্কিপ্লায়ার, একজন খ্যাতনামা মার্কিন ইউটিউব ব্যক্তিত্ব।

১৯৯১ – কেভিন ডি ব্রুইন, বেলজিয়ান পেশাদার ফুটবলার।

১৮৬৭ – লুইগি পিরান্ডেলো, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইতালিয়ান লেখক, কবি ও নাট্যকার।

১৮৭৩ – অ্যালেক্সিস কারেল, খ্যাতনামা ফরাসি চিকিৎসাবিদ।

১৮৮৩ – পিয়েরে লাভাল, ফরাসি সৈনিক, রাজনীতিক ও ১০১ তম প্রধানমন্ত্রী।

১৮৮৮ – জর্জ চ্যালেনর, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৮৯৪ – গোকুলচন্দ্র নাগ, প্রখ্যাত ‘কল্লোল’ পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী সম্পাদক ।

১৮৯৯ – আবদুল মোনেম খান, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর।

১৭১২ – জঁ-জাক রুসো, সুইজারল্যান্ডীয় দার্শনিক।

১৬৫৩ – মুহাম্মদ আজম শাহ, মোগল সম্রাট।

১৫৭৭ – পিটার পল রুবেনস, তিনি ছিলেন ফ্লেমিশ চিত্রশিল্পী ও কূটনীতিক।

১৪৯১ – অষ্টম হেনরি, ইংল্যান্ডের রাজা।

১৪৭৬ – পোপ চতুর্থ পল।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯১৯ – ভার্সাই চুক্তি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর যুদ্ধের মিত্রশক্তি ও তৎসংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহ এবং জার্মানির মধ্যে সম্পাদিত হয়।

১৯৫৪ –  জওহরলাল নেহরু ও চৌ এন লাই ভারত ও চীনের মধ্যে পঞ্চশীলা নীতি ঘোষণা করেন।

১৯৬৩ –  ক্রুশ্চেভ পূর্ব বার্লিন সফর করেন।

১৯৬৭ –  ইসরাইল কর্তৃক পূর্ব জেরুজালেম দখল হয়।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রোমানিয়া।

১৯৭৬ – ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জে সেচিলিসের ১০২ বছর ব্রিটিশ শাসনাধীন থাকার পর স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৭৬ – আমেরিকার বিমান ও নৌবাহিনীতে প্রথম মহিলা ক্যাডেট অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৯৭৮ – পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের দেহভস্ম ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহারে সংরক্ষণ করা হয়।

১৯৯৬ – তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সুলাইমান ডেমিরেলের ৭৩ বছরের মধ্যে প্রথম দেশে ইসলামিক নেতৃত্বাধীন সরকার অনুমোদিত হয়।

১৮২০ – প্রমাণিত হয় যে টমেটো বিষাক্ত নয়।

১৮৩৮ – ওয়েস্ট মিনস্টার অ্যাবেতে ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়ার অভিষেক ঘটে।

১৭৫৭ – মীর জাফর নবাব হন এবং রবার্ট ক্লাইভ বেঙ্গলের গভর্নর নিযুক্ত হন।

১৬৫৭ – দারা শিকোহ অনূদিত ‘শিক-ই আকবর’ প্রকাশিত হয়।

১৩৮৯ – অটোমান সামরিক বাহিনী সার্বিয়ান বাহিনীকে পরাজিত করে।

১২৬৬ – মুসতানসির বিল্লাহ আব্বাসীয় খিলাফত লাভ করেন।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০১ – জোয়ান সিমস, ইংরেজ অভিনেত্রী।

২০০৬ – ফুলরেণু গুহ, পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত সমাজ সেবিকা ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের ও রাজ্যসভার সদস্যা।

২০০৬ – তাপস সেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভারতের বাঙালি আলোকসম্পাত শিল্পী।

২০০৯ – এ. কে. লোহিত দাস, ভারতীয় পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

২০১২ – রবার্ট সাবায়টিয়ার, ফরাসি লেখক ও কবি।

১৯১৫ – ভিক্টর ট্রাম্পার, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯১৭ – স্টেফান লুচিয়ান, রোমানিয়ান চিত্রশিল্পী।

১৯৩৬ – আলেকজান্ডার বেরকমান, আমেরিকান লেখক ও সমাজ কর্মী।

১৯৭২ – প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবীশ, ভারতীয়বিজ্ঞানী, পরিসংখ্যানবিদ এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৭৪ – ভ্যানিভার বুশ, মার্কিন প্রকৌশলী ও বিজ্ঞান প্রশাসক।

১৯৭৫ – রড সেরলিং, আমেরিকান অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক।

১৯৮১ – টেরি ফক্স, কানাডিয়ান ক্রীড়াবিদ, মানবহিতৈষী এবং ক্যান্সার গবেষাণা কর্মী।

১৯৮৬ – হাজী মোহাম্মদ দানেশ, অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের একজন কৃষক নেতা।

১৯৯২ – মিখাইল তাল, লাতভীয় দাবাড়ু।

১৯৯৬ – বিশিষ্ট বাঙালি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী নীলিমা সেন।

১৮৩৬ – জেমস ম্যাডিসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ রাষ্ট্রপতি।

১৮৩৯ – মহারাজা রণজিৎ সিং, পাঞ্জাব কেশরী এর রাজা।

১৫৮৬ – প্রিময টরুবার, স্লোভেনীয় লেখক ও সংস্কারক।

১৫৯৮ – আব্রাহাম অরটেলিউস, ফ্লেমিশ মানচিত্রকর ও ভূগোলবিদ।

১৩৮৫ – আন্ড্রোনিকস চতুর্থ পালাইওলোগোস, বাইজান্টাইন সম্রাট।

০৭৬৭ সালে এই দিনে মৃত্যুবরণ ইতালিয়ান পোপ প্রথম পল।

০৫৪৮ – প্রথম থিওডোরা, বাইজেন্টাইন জাষ্টিনিয়ানের স্ত্রী।

০৫৭২ – আল্বোইন, লোম্বারডের রাজা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ঘুরে আসুন প্রজাপতিরদের স্বর্গরাজ্য ইয়েলবং।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।। তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে  রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়।  আসুন ঘুরে আসি ভারতের ই জম্মু ও কাশ্মীরের এক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান ইয়েলবং।

 

 

ইয়েলবং হল কালিম্পং পাহাড়ের একটি ছোট গ্রাম, যা ফ্রান্সিস রাই অন্বেষণ করেছিলেন।  আপনি শিলিগুড়ি বা নিউ মাল জংশন স্টেশন থেকে সাধারণত ৩ ঘন্টার মধ্যে এই জায়গায় পৌঁছাতে পারেন।  বাগরাকোটের দিকে রাস্তা ধরুন যা এই উভয় জায়গা থেকে ১৮ কিমি দূরে এবং এখান থেকে ইয়েলবং মাত্র ৭ কিমি দূরে।  ইয়েলবং কালিম্পং এর উপত্যকা এবং হিমালয়ের কুয়াশা দ্বারা লুকিয়ে আছে, ইয়েলবং হল উত্তরবঙ্গের একটি অজানা রত্ন যা জলপ্রপাত, গভীর জঙ্গল, প্রজাপতি প্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গ, ইয়েলবং রিভার ক্যাম্পিং, Yelbong রিভার ক্যাম্পিং,  এবং এর মধ্যে সেরা হল ইয়েলবং নদী ক্যানিয়ন গুহা।  গুহাটি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এটিই একমাত্র নদী গিরিখাত গুহা যা উত্তরবঙ্গে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ।

ইয়েলবং, পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার একটি ছোট্ট গ্রামীণ পাহাড়ি জনপদ যেখানে সুন্দর গ্রামবাসীরা আপনাকে স্বাগত জানাতে এবং লুকানো ধন, মাতৃ প্রকৃতি তাদের চারপাশে রাখা এবং তারা তাদের খুব ভালভাবে রক্ষা করছে।  আপনি যদি সিনেমার মতো বনের মধ্যে লুকানো জলপথ এবং উঁচু জলপ্রপাত দ্বারা বেষ্টিত অন্বেষণ এবং ট্রেকিংয়ের পাগল হন, তাহলে আপনাকে উত্তরবঙ্গের ইয়েলবং ছাড়া আর যেতে হবে না।  জলপ্রপাতের মধ্য দিয়ে এর উত্তেজনাপূর্ণ সরু পথের কারণে নদীর গিরিখাত দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে, জায়গাটি এখন দ্রুত একটি অ্যাডভেঞ্চারের জন্য এলাকার পছন্দসই স্থান হয়ে উঠছে।  এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনার আত্মাকে ভরিয়ে দেবে।  এটি পাহাড়ি ঢাল, বন এবং নদী দ্বারা বেষ্টিত।  সূর্যোদয়ের আশ্চর্যজনক দৃশ্য, সেইসাথে সূর্যাস্ত, আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে তুলবে।  পাখির কিচিরমিচির, সুন্দর প্রজাপতির চুম্বন, পাহাড়ের ঢালে বয়ে যাওয়া নদীর শব্দ, মনোরম, যত্নশীল মানুষ সব মিলে এই জায়গাটিকে একটি স্বপ্নময় গন্তব্য করে তোলে।

 

ইয়েলবং রিভার ক্যানিয়ন ট্রেকিংয়ের জন্য বিখ্যাত, রুমটি নদীর ধার বরাবর পাথরের উপর দিয়ে পায়ের টাল সামলে কেভে পৌঁছানো একটা চ্যালেঞ্জ। এটি প্রায় ২ কিলোমিটার বিস্তৃত নদীর পাড় ঘেঁষে ট্রেকপথ যার শেষে একটি গুহার দেখা মিলে যেরকমটা হয়ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সেরকম খুব একটা নেই। পাহাড়ী নদী তার আপন ছন্দে কখনো উত্তাল কখনো নিস্তরঙ্গ ঝিরিঝিরি হয়ে বয়ে চলেছে গুহার বুক চিরে। তবে এতোটুকু বলা যেতেই পারে – কেভে প্রবেশ করার পর নিজেকে খুঁজে পাবেন অন্য এক দুনিয়ায়। কেভের পথও বেশ চ্যালেঞ্জিং। নিজেকে মেন্টালি ও ফিজিক্যালি আগে থেকে তৈরি করে এই ট্রেকে আসা বাধ্যতামূলক। ।  সিনেমার মতোই লুকানো জলপথ এবং বনের মধ্যে উঁচু জলপ্রপাত দ্বারা বেষ্টিত এবং এটি অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জনের প্রধান কারণ।
একটি গিরিখাত হল একটি গভীর, সরু উপত্যকা যার চারপাশে পাথুরে খাড়া দেয়াল রয়েছে, সাধারণত একটি নদী যার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।  নদীর গিরিখাত একই সাথে ভুতুড়ে এবং রোমাঞ্চকর।  ইয়েলবং এ উত্তরবঙ্গের সেরা ক্যানিয়ন ট্রেক রয়েছে।  আপনি জঙ্গলের গভীরে অনেক সুন্দর এবং দর্শনীয় জলপ্রপাত দেখতে পাবেন, যা বিশ্রাম এবং শান্তিপূর্ণ সময় উপভোগ করার জন্য উপযুক্ত।  এই ট্র্যাক চলাকালীন ২ প্রকৃতির লুকানো ধন আপনাকে লালন করবে, একটি হল ‘রেনবো জলপ্রপাত’ – একটি জলপ্রপাত যা রংধনু রঙ ছড়িয়ে দেয় এবং অন্যটি ‘থ্রি-স্টেপ জলপ্রপাত’।  মূল অ্যাডভেঞ্চার ট্রেক এখান থেকে শুরু হয় যা র‌্যাপেলিং, সাঁতার কাটা, বোল্ডারিং, গুহায় স্ক্রলিং, রিভার ক্রসিং এবং অ্যাডভেঞ্চার অ্যাক্টিভিটিগুলির আরও অনেক শর্তকে একত্রিত করে।

 

 

ইতিহাস—

“ইয়েলবং এর স্থানীয় ছেলে ফ্রানচিস ছোট বেলায় কয়লার খনিতে হিরে খুঁজতে গিয়ে প্রথম এই রিভার ক্যানিয়নটি আবিষ্কার করেন। প্রথমে ভয়ে ফিরে এলেও পরে দলবল নিয়ে পুরো টাই খুঁজে বের করেন। আগে এই পুরো রিভার বেড টাই কয়লার খনি হলেও পরে ১৯৬২ সালের দিকে ধস নেমে খননকার্য বন্ধ হয়ে যায়। পুরো ট্রেক টাই বেশ রোমহর্ষক এবং খুব সোজা মোটেই নয়। প্রথমে গ্রাম থেকে ট্রেক করে ৫ কিলোমিটার এর মতো নামতে হবে রিভার বেডে। এরপর ক্যানিয়নে জল, পাথর ডিঙিয়ে এগিয়ে চলতে হবে পুরোটা দেখতে। পুরো ব্যাপার টাই বেশ থ্রিলিং এবং অনবদ্য।

 

ইয়েলবং যাওয়ার উপায়—

এবার জেনে নেবো ইয়েলবং যাওয়ার উপায়। ট্রেনে করে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন, তারপর ওখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ইয়েলবং। গাড়ি বাগরাকোট স্টেশন থেকে ইয়েলবং এর দিকে যাবে। গোটা রাস্তা ৩০ কিলোমিটার মতো , তবে সময় লাগবে ৩ ঘন্টার মতো। গাড়ি একদম গ্রামের ভিতর এর রাস্তায় না যেতে চাইলে অগত্যা ৪ কিলোমিটার মতো পায়ে হাঁটাই ভরসা।

 

কোথায় থাকবেন—

ইয়েলবং একটি ইকো ফ্রেন্ডলি গ্রাম। ইয়েলবং রিভার ক্যানিয়ন প্রকৃতির এক বিরল সৃষ্টি যা ভারতে খুব কমই পাওয়া যায়। এখানে এখন বেশ কিছু হোম স্টে চালু হয়েছে।

 

 

ইয়েলবং-এ কি করবেন–

ইয়েলবং রিভার ক্যানিয়নে ট্রেক করুন।
প্রজাপতি দেখুন।
পাখি দেখুন।
ফরেস্ট হাইক করুন।
মাউন্টেন ভিউ।
ট্রেক করুন বা ইয়েলবং-এ অন্যান্য লুকানো জায়গাগুলি অন্বেষণ করুন।
নদীর ধারে নাইট ওয়াক করুন। আপনাদের মন ভোরে যাবে।

 

সর্বপরি বলা যেতে পারে ইয়েলবং প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এক টুকরো স্বর্গ।  সেগুলি পর্যবেক্ষণ করতে এবং কিছু স্ন্যাপ নিতে ভুলবেন না।  আপনার ফটোগ্রাফিক দক্ষতা অন্বেষণ একটি নিখুঁত জায়গা। আপনি অফবিট লুকানো জলপ্রপাত দেখতে পারেন।  স্থানীয় বন্ধু তৈরি করুন, দেশীয় ছেলেদের সাথে খেলুন। জীবনের সরলতা পর্যবেক্ষণ করতে ইয়েলবং গ্রামের চারপাশে হাঁটুন।

 

।।ছবি ও তথ্য : সংগৃহীত গুগল ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

 

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৭ জুন, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

 

আজ ২৭ জুন। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

 

(ক) স্বাধীনতা দিবস (জিবুতি)

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৩ – সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত, ইংরাজী সাহিত্যের দিকপাল শিক্ষক, শেক্সপিয়ার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক।

১৯১৫ – আইদেউ সন্দিকৈ, ভারতীয় অভিনেত্রী।

১৯১৯ – অমলা শংকর, ভারতীয় ব্যালে নর্তকী।

১৯২২ – জহুর হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশী সাংবাদিক, সম্পাদক, কলাম লেখক ও রাজনীতিবিদ।

১৯২৪ – বব এপলইয়ার্ড, ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৯৩৯ – রাহুলদেব বর্মন, ভারতীয় সুরকার, সঙ্গীতশিল্পী।

১৯৩৯ – নীল হক, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার এবং ফুটবলার।

১৯৪১ – ক্রিস্তফ কিয়েশ্‌লফ্‌স্কি, পোল্যান্ডের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা।

১৯৫৫ – ইজাবেল আদজানি, ফরাসি অভিনেত্রী।

১৯৫৯ – আমেরিকান গায়িকা লরে মরগান।

১৯৬৪ – পি. টি. ঊষা, ভারতীয় ট্র্যাক এবং ফিল্ড ক্রীড়াবিদ।

১৯৭৫ – টোবি ম্যাগুইয়ার, মার্কিন অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক।

১৯৭৭ – রাউল গনজালেস, স্প্যানিশ ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৮০ – কেভিন পিটারসন, দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৮৩ – ডেল স্টেইন, দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটার।

১৮০৬ – অগাস্টাস ডি মর্গান, ভারতে জন্মগ্রহণকারী ব্রিটিশ গণিতবিদ ও যুক্তিবিজ্ঞানী।

১৮৩৮ – পল মাউজার, জার্মান অস্ত্র নকশাকার ও প্রস্তুতকারক।

১৮৬৯ – এমা গোল্ডম্যান, একজন নৈরাজ্যবাদী রাশিয়ান লেখক যিনি লেখা, বক্তৃতা এবং রাজনৈতিক।

১৮৮০ – হেলেন কেলার, আমেরিকান একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী।

১৮৮৬ – চার্লি ম্যাককার্টনি, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ছিলেন।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৭ – গর্ডন ব্রাউন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯০০ – সেন্ট্রাল লন্ডনে ইলেকট্রিক রেলওয়ে চালু হয়।

১৯৫৪ – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়।

১৯৬৭ – পৃথিবীর প্রথম এটিএম (অটোমেটেড টেলার মেশিন) স্থাপন করা হয় ইংল্যান্ডের এনফিল্ড শহরে।

১৯৭৪ – যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিঙ্ন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণে যান।

১৯৭৭ – জিবুতি (সাবেক ফরাসী সোমালিল্যান্ড) স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৯১ – সোভেনিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।

১৯৯১ – বিখ্যাত ‘কমিউনিস্ট ইস্তেহারে’র প্রথম সংস্করণের একটি কপি লন্ডনে নিলামে ৬৮১০০ ডলারে বিক্রি হয়।

১৭৫৯ – কুইবেক যুদ্ধ শুরু হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০০ – বাঙালি ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক এবং সাহিত্যিক শঙ্কর ভট্টাচার্য।

২০০১ – জ্যাক লেমন, আমেরিকান অভিনেতা।

২০০৮ – শ্যাম মানেকশ’ পারস্য বংশোদভূত ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম ফিল্ড মার্শাল।

২০১২ – মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রখ্যাত বাঙালি ধ্রুপদী কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী।

১৯১২ – জর্জ বোনর, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ছিলেন।

১৯২৮ – উৎকলমণি গোপবন্ধু দাস, ভারতের ওড়িশা রাজ্যের প্রখ্যাত সমাজ সংস্কারক ও কর্মী, কবি,সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক।

১৯৫৭ – ব্রিটিশ কথাসাহিত্যিক ম্যালকম লাউরি।

১৯৭৯ – বন্দে আলী মিয়া, বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি, ঔপন্যাসিক, শিশু সাহিত্যিক সাংবাদিক ও চিত্রকর।

১৯৮০ – ইরানের সাবেক শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি।

১৯৮৯ – এ. জে. এয়ার, ব্রিটিশ দার্শনিক।

১৯৯৮ – নিখিল চক্রবর্তী খ্যাতনামা সাংবাদিক ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার ও প্রসার-ভারতীর বোর্ডের প্রথম চেয়ারম্যান।

১৮২৯ – ইংলিশ বিজ্ঞানী ও দার্শনিক জেমস স্মিথসন।

১৮৩৯ – শিখ মহারাজা রণজিৎ সিং।

১৮৪৪ – জোসেফ স্মিথ, আমেরিকান ধর্মীয় নেতা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের এক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান তুরতুক — এক ভ্রমণ কাহিনী।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।। তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে  রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়।  আসুন ঘুরে আসি ভারতের ই জম্মু ও কাশ্মীরের এক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান তুরতুক।

 

তুর্তুক বাল্টিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত, একটি অঞ্চল প্রায় সম্পূর্ণরূপে পাকিস্তান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।  তুর্তুক হল ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন পাঁচটি বাল্টি-জনবহুল গ্রামের মধ্যে একটি, বাকি চারটি হল বোগদাং, ত্যাক্ষী, চালুনখা এবং ধোথাং।  এটি গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং এটির দাবি রয়েছে শ্যাওক উপত্যকার দক্ষিণ চোরবাট অংশের ঐতিহাসিক রাজধানী।  যদিও বোগডাং ১৯৪৮ সাল থেকে ভারত-শাসিত লাদাখের অংশ ছিল, অন্য চারটি গ্রাম ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী দখল করে নেয়।

 

তুর্তুক হল একটি গ্রাম এবং লাদাখের ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে একটি নামী সম্প্রদায় উন্নয়ন ব্লকের সদর দফতর।  এটি কারাকোরাম রেঞ্জ এবং হিমালয়ের মধ্যে স্যান্ডউইচ করা একটি ছোট গ্রাম এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছাকাছি ভারতের উত্তরের গ্রামগুলির মধ্যে একটি।  তুর্তুক লেহ জেলার নুব্রা তহসিলে, শেওক নদীর তীরে অবস্থিত।  ভৌগোলিকভাবে, গ্রামটি বালতিস্তান অঞ্চলে, যেটি পাকিস্তানি প্রশাসনের অধীনে ছিল, তুরতুক ব্লকের পাঁচটি গ্রাম ছাড়া যা ভারতের অংশ।  এই গ্রামগুলিই ভারতের একমাত্র অঞ্চল যেখানে বাল্টি জনগোষ্ঠী রয়েছে।  Turtuk তার ফলের জন্য পরিচিত, বিশেষ করে এপ্রিকট। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ পর্যন্ত তুর্তুক পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে ছিল, যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী গ্রামটি দখল করে নেয়।  এটি সিয়াচেন হিমবাহের প্রবেশদ্বারগুলির মধ্যে একটি।

 

“তুরতুক (Turtuk) বিধাতার বিশেষ আশীর্বাদপ্রাপ্ত ভারতের সীমানার শেষ গ্রাম যা সমুদ্র সীমা থেকে ৯৮৪৬ ফিট (৩০০১ মিটার) উচুতে অবস্থিত। অদ্ভুত সুন্দর তুরতুক গ্রামটি সায়ক ভ্যালীতে অবস্থিত যা নুব্রা ভ্যালী এর অংশ বিশেষ। লেহ শহর থেকে এই গ্রামের দূরত্ব ২০৫ কিলোমিটার এবং নুব্রা ভ্যালীর ডিস্কিট শহর থেকে ৮৮ কিলোমিটার। ৩০০০ এর চেয়ে কিছু বেশি লোকের বসবাস আছে এই গ্রামে। ২০১০ সালে ট্যুরিস্টদের জন্যে এই গ্রামকে খুলে দেয়া হয়।

 

তুর্তুকের আশেপাশে পর্যটন—-

 

২০১০ সালে তুর্তুক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। গ্রামটি শ্যাওক উপত্যকার দৃশ্য দেখায়।
শ্যাওক নদীর উপরে মালভূমিতে অবস্থিত কয়েকটি গোম্পা রয়েছে এবং গ্রামে একটি পুরানো রাজকীয় বাড়ি রয়েছে।  তুর্তুক ভারতের কয়েকটি স্থানের মধ্যে একটি যেখানে কেউ বাল্টি সংস্কৃতির সাক্ষী হতে পারে এবং গ্রামে কয়েকটি হোমস্টে এবং গেস্ট হাউস পাওয়া যায়।  এটিই শেষ বড় গ্রাম যেখানে নিয়ন্ত্রণ রেখার আগে পর্যটন কার্যকলাপের অনুমতি দেওয়া হয়

 

 

এই গ্রামের চারপাশ পাহাড় দিয়ে ঘেরা। এই গ্রামের সবটুকু সবুজে মোড়ানো। এখানে ধান থেকে শুরু করে গম, জব, আলু, কপিসহ অন্যান্য তরকারি, আপেলসহ নানা রকম ফলমূল হয় নিয়মিত। নানা রকম ফুল, পাথুরে বাড়ি, ঝরনার বিশুদ্ধ পানি সবই আছে এখানে। গায়ে গায়ে লেপটে থাকা পাহাড়ের সারি, পাহাড় থেকে বয়ে চলা ঝরনা, ঝিরি ও নদী। এই গ্রামের বাইরের পাহাড়গুলো যখন বরফে বরফে মোড়ানো থাকে, তখনো এখানে বরফ পড়লেও সেটা খুব বেশি নয়, যাতে করে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। বরফ পড়ে ঠিকই, কিন্তু একটু রোদের পরশ পেলেই সেই বরফ দ্রুত গলে গিয়ে পাশের সায়ক নদীতে গিয়ে পতিত হয়।”

 


সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ—-

 

“তুরতুক এর সব ঘর বাড়িই একদম নিখাদ পাথরের তৈরি। শুধু পার্থক্য এই যে, যাদের আর্থিক অবস্থা একটু ভালো, তারা পাথর সাইজ মতো করে কেটে নিয়ে কিছু সিমেন্টের ব্যবহার করে সাজানো বাড়ি বানাতে পারে। আর যাদের সেই অবস্থা নেই তারা নিজেদের মতো করে পাথর সংগ্রহ করে একটার পর একটা বসিয়ে দেয়, কখনো নদীর কাদার সাহায্যে বা শুধু পাথরের স্তূপ সাজিয়েই বানিয়ে ফেলে বসবাসের জন্য আস্ত ঘর বা বাড়ি। এখানে আছে বিদ্যুৎ, টিভি, ডিশের সংযোগসহ আর নানা রকম সুযোগ সুবিধা। এমনকি আছে মোবাইলও। এই গ্রামের যারা একটু অবস্থা সম্পন্ন বা যাদের নিজেদের থাকার ঘর ছাড়াও আছে দু-একটি বেশি বা তার চেয়ে বেশি রুম, সেগুলো ওরা টুরিস্টদের জন্য ভাড়া দিয়ে থাকে। যেখানে একদম কোলাহলমুক্ত একটি দিন বা রাত কাটিয়ে দেওয়া যেতে পারে নিশ্চিন্তে।

 

কিভাবে যাবেন—-

তুরতুক এ যেতে হলে আপনাকে বেশ রোমাঞ্চপ্রিয় হতে হবে। কলকাতা থেকে ট্রেনে দিল্লি, দিল্লি থেকে শ্রীনগর বা মানালি হয়ে বাসে বা রিজার্ভ জিপে করে লেহ শহরে। দিল্লি থেকে বাই রোডে লেহ যেতে সময় লাগবে অন্তত তিনদিন। দুই জায়গায় রাতে থাকতে হবে, শ্রীনগর বা মানালিতে এক রাত আর লেহ যেতে পথে আর এক রাত। রাতের থাকার খরচ নির্ভর করবে রুচি আর মানসিকতার ওপরে ৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত পাবেন, মানালি বা শ্রীনগর থাকতে। তবে এই রাস্তায় যেতে হলে বেশ কিছু ঝুকির ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে।”
খাওয়া দাওয়া—–

 

তুরতুকে থাকার পাশাপাশি টুরিস্টদের জন্য আছে কিছু খাবার হোটেলও, যেখানে বেশ সহনীয় মূল্যে পাবেন নানা রকম পছন্দের খাবার।

 

ইতিহাস—

 

ব্রগপা যুগ—-

 

তুর্তুকে বসবাসকারী প্রাচীনতম পরিচিত উপজাতি ছিল একটি দারদিক উপজাতি, স্থানীয়ভাবে ব্রোগপা নামে পরিচিত, যারা এখন পাকিস্তানের চিলাস থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে বলে মনে করা হয়।  তারা তুর্তুকে একটি অজানা সময় থেকে, বেশিরভাগ সম্ভবত, খ্রিস্টীয় ১৩ শতক পর্যন্ত বাস করত।  খ্রিস্টীয় ১৩ শতকের দিকে কোন এক সময়ে, চুলি এবং ইয়াংদ্রুং নামে দুই যোদ্ধা তুর্তুকে আসেন।  তারা রাজাকে হত্যা করে এবং অবশেষে স্থানীয়দের বেশিরভাগই তুর্তুককে স্রোতের ধারে এবং পাহাড়ের ওপারে, এখন হানু, দাহ এবং ডোমখার নামক গ্রামে পালিয়ে যায়।  এই মুহূর্তে, তুর্তুকের জনসংখ্যার অধিকাংশই চুলি এবং ইয়াংড্রং-এর সরাসরি বংশধর।  সময়ের সাথে সাথে, বাইরে থেকে লোকেরা কাজের সন্ধানে তুর্তুকে আসে, আরও বৈচিত্র্য আনে।  শিখ সাম্রাজ্য কর্তৃক বাল্টিস্তান জয়ের আগ পর্যন্ত তুর্তুক একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল বলে মনে করা হয়।
তুর্তুকের লোকেরা ইসলামের আগে বন ধর্মের অনুসারী ছিল।  বনের আচারগুলি ঐতিহ্যের পাশাপাশি স্থাপত্য উভয় ক্ষেত্রেই দেখা যায়।  বিখ্যাত পারস্যের সুফি কবি ও ধর্ম প্রচারক সৈয়দ আলী শাহ হামদানির কারণে তুর্তুকে ইসলাম এসেছে।  বাল্টিস্তানের অন্যান্য জায়গার মতো তুর্তুকের লোকেরাও শাহ হামদানির একজন শিষ্য সৈয়দ মোহাম্মদ নূরবকশের নামানুসারে সুফি সম্প্রদায়ের সুফি নূরবকশিয়া অনুশীলন করে।  কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে, শিয়া, হানাফী এবং পরবর্তীতে ওহাবিদের মত বাইরের প্রভাবশালী সম্প্রদায় বাল্টিস্তানের সুফি নূরবকশিয়া এবং তুরতুকের নূরবকশিয়াকেও ধর্মান্তরিত করতে শুরু করে।  অতি সম্প্রতি, তুরতুকের হানাফীরাও সুন্নিদের আরও চরম উপসেটে রূপান্তরিত হয়েছে।  এই মুহুর্তে, জনসংখ্যার মাত্র অর্ধেকই নূরবকশিয়াদের চর্চা করে আর বাকিরা হয় সুন্নি বা ওয়াহাবি সম্প্রদায়ের।

 

ইয়াবগো রাজবংশ—-

 

তুর্তুক সহ বাল্টিস্তানের চোরবাত-খাপলু অঞ্চলটি এক হাজার বছর ধরে তুর্কিস্তানি ইয়াবগো রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছিল।  তাদের শাসন শুরু হয়েছিল যখন বেগ মানথাল ৯ম শতাব্দীতে ইয়ারকান্দ থেকে এই অঞ্চলে আসেন এবং খাপলু জয় করেন।  ১৩শ শতাব্দীতে ইসলামী পণ্ডিত ও কবি মীর সাইয়্যেদ আলী হামাদানির আগমনের আগ পর্যন্ত এই অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের আধিপত্য ছিল।

 

ডোগরা রাজবংশ—

 

হাজার বছরের ইয়াবগো শাসন ১৮৩৪ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, যখন শিখ সাম্রাজ্যের একজন ভাসাল জম্মুর রাজা গুলাব সিং এই অঞ্চলটি জয় করেছিলেন।  রাজত্ব হারানোর পর, ইয়াবগো আবদুল্লাহ খান পরিবারের নাম পরিবর্তন করে কাচো (“হালকা ওজনের জন্য বাল্টি) রেখেছিলেন, যদিও পরিবারটি একটি ধনী, শক্তিশালী পরিবার ছিল।
প্রথম অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধের পর, ব্রিটিশরা গুলাব সিং-এর অধীনে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।  গুলাব সিংয়ের ডোগরা রাজবংশ ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ রাজের অধীনে এই অঞ্চল শাসন করেছিল।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

Share This
Categories
কবিতা

আশা : রাণু সরকার।

আশা এতো ক্ষুধাতুর কেঁদে মরে অন্তরে,
স্বাভাবিক নিয়মে দিনের পর দিন ;
ওর ক্ষুধা বেড়ে যাচ্ছে-
কষ্ট হলো বটে,
তবুও মনের কষ্টে কিছু বহিষ্কার করলাম-
যেতে কী আর চায়,
ঘুরেফিরে আবার এলো জ্বালাতে।
ওর এতো জ্বালা পাগোলের মতো লাগছিলো,
তখন ইচ্ছে হলো-
আশাকে আগুনে নিক্ষেপ করতে,
করলামও-
এতো প্রবঞ্চক অন্তর ভেঙে করছে হাজার খণ্ড কি করে ভালোবাসি?
আমি তো চিনি ওকে-
একরকম হত্যা করেছে আমাকে বাঁচিয়ে রেখে।

Share This
Categories
কবিতা

কালপুরষ : রাণু সরকার।

কালপুরুষ, আমি কে? চেনো আমাকে?
আমি যন্ত্রণাতুরা, এবার চিনেছো আমাকে?

আমার হৃদয়ে সদা বসবাস এক যন্ত্রণায় কাতর নারী।

আমার চোখ দেখে বুঝতে পারবে চোখের জলের আচ্ছাদন?

আমি আছি আমার মত-
আমার চোখের আচ্ছাদন গাঢ় রাতের মত- তাকে নিয়ে আমার বসবাস।

Share This