১৮৩৫ সালের ৩১শে আগস্ট তৎকালীন বিদ্ধদ্জনদের উপস্থিতিতে কলকাতার টাউন হলে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় । এই সভাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, সর্বসাধারণের জন্য একটি গ্রন্থাগার বা পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণ করা হবে । সেই সিদ্ধান্তক্রমে গড়ে ওঠে “ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি” । অনেক জায়গায় সেই থেকে ৩১শে আগস্ট দিনটিকে গ্রন্থাগার দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে ।
তারপর ১৮৩৬ সালে “ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি” নামে প্রথম গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয় । সেই সময় এটি ছিল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান । প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন এই লাইব্রেরির প্রথম মালিক। ভারতের তদনীন্তন গভর্নর- জেনারেল “লর্ড মেটকাফ” ফোর্ট উইলিয়াম কলেজর ৪৬৭৫টি বই দান করেন, যেটা দিয়ে এই লাইব্রেরী গোড়াপত্তন ।
সেই সময় বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষার বই গ্রন্থাগারের জন্য ক্রয় করা হত । কলকাতার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা গ্রন্থাগারকে অর্থসাহায্য করতেন । এমনকি সরকারের কাছ থেকেও অনুদান পাওয়া যেত । সেই সময় এই গ্রন্থাগারে বহু দেশি ও বিদেশি দুষ্প্রাপ্য বই সংগৃহীত হয়েছিল, যা আজও সংরক্ষিত আছে । উল্লেখ থাকে যে, ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি ছিল শহরের প্রথম নাগরিক পাঠাগার ।
তারপর ১৮৯১ সালে কলকাতার একাধিক সচিবালয় গ্রন্থাগারকে একত্রিত করে গঠিত হয় “ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি” । এই গ্রন্থাগারের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল গৃহ মন্ত্রকের গ্রন্থাগার ।
পরবর্তী সময়ে ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি ও ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরির সংযুক্তিকরণ ঘটে । জানা যায়, ১৯০৩ সালের ৩০ জানুয়ারি লর্ড কার্জনের প্রচেষ্টায় ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি ও ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরিকে সংযুক্ত করে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয় । সেই সময় সংযুক্ত লাইব্রেরিটি ‘ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি’ নামেই পরিচিত হয় । এই সময় গ্রন্থাগারটি উঠে আসে আলিপুরের বেলভেডিয়ার রোডস্থ মেটকাফ হলের বর্তমান ঠিকানায় । এখানে উল্লেখ থাকে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লাইব্রেরিটি এসপ্ল্যানেডের জবাকুসুম হাউসে স্থানান্তরিত হয়েছিল ।
এবার আসছি জাতীয় গ্রন্থাগার সম্বন্ধে …………?
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি পুনরায় মেটকাফ হলে উঠে আসে এবং লাইব্রেরির নতুন নামকরণ হয় জাতীয় গ্রন্থাগার বা ন্যাশানাল লাইব্রেরি । ১৯৫৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ জাতীয় গ্রন্থাগারকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেন ।
স্বাধীনতার পর ভারত সরকার “ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরি (নাম পরিবর্তন) অ্যাক্ট, ১৯৪৮” চালু করে । তারপর “ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগার আইন, ১৯৭৬”এর ১৮ ধারা মোতাবেক ন্যাশনাল লাইব্রেরির নাম পরিবর্তন করে “ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগার” করা হয় ।
গ্রন্থাগার কার্যত সমস্ত ভারতীয় ভাষায় বই, সাময়িকী, শিরোনাম, ইত্যাদির সংগ্রহশালা । জানা যায়, ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগারের সংগ্রহগুলি অনেকগুলি ভাষায় । হিন্দি বিভাগে বই রয়েছে যেগুলি উনবিংশ শতাব্দীর পুরো সময়কার এবং সেই ভাষায় ছাপা হওয়া প্রথম বই ।
আগেই বলেছি, ১৮৩৬ সালে ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি নামে প্রথম গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয় । সেই সময় লাইব্রেরিটি ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান । প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন লাইব্রেরির প্রথম মালিক । ভারতের তদনীন্তন গভর্নর-জেনারেল ‘লর্ড মেটকাফ’ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ লাইব্রেরির ৪,৬৭৫টি বই গ্রন্থাগারে দান করেছিলেন । এই দানের ফলেই গ্রন্থাগারের গোড়াপত্তন । বর্তমানে এই গ্রন্থাগারে কমপক্ষে ২০ লক্ষ বা তারও বেশী বই রয়েছে । “ভারত সরকারের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রক”এর অধীনে “কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি” এখন একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত ।
এবার আসছি লাইব্রেরির গুরুত্ব প্রসঙ্গে —
‘বই’ মানুষের নিত্যসঙ্গী । জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বই । এখানে একটা কথা পরিষ্কার, লেখক লেখেন, প্রকাশক সেই লেখা ছাপেন, প্রকাশক ও বিক্রেতা উভয়েই বই বিক্রি করেন । আর অন্যদিকে গ্রন্থাগারিক সেই বই সংগ্রহ করে যথাযথ বিন্যাস করেন এবং পাঠক সমাজ ঐসব উপাদান থেকে মনের খোরাক এবং জ্ঞানলাভে সমর্থ হন ।
শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে গ্রন্থাগার যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তেমনি জ্ঞানী ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও গ্রন্থাগারের ভূমিকা অনস্বীকার্য । গ্রন্থাগারে থাকে জ্ঞান-বিজ্ঞান সহ বিভিন্ন বিষয়ের বই । আগ্রহী পাঠকের জন্যে গ্রন্থাগার জ্ঞানার্জনের যে সুযোগ করে দেয়, সেই সুযোগ অন্য কোথাও পাওয়া দুর্লভ । গ্রন্থাগার গ্রন্থের বিশাল সংগ্রহশালা, যা মানুষের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম । গ্রন্থাগারের মাধ্যমে মানুষ জ্ঞানসমুদ্রে অবগাহন করে জ্ঞানের মণিমুক্তা সংগ্রহের সুযোগ পায়। গ্রন্থাগারের সংগৃহীত বই সর্বসাধারণের জন্যে অবারিত । চিন্তাশীল মানুষের কাছে এমনকি সাধারণ মানুষের কাছে গ্রন্থাগারের উপযোগিতা অনেক বেশি । গ্রন্থাগার হচ্ছে জ্ঞান আহরণের উপযুক্ত মাধ্যম । আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে গ্রন্থাগারের উপযোগিতা উন্নত দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি । কারণ সংসারের মৌলিক চাহিদা মেটাতে আমরা হিমশিম খাই । সেখানে বই কিনে পড়া অনেক সময় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় ! সুতরাং আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কাছে লাইব্রেরির গুরুত্ব অপরিসীম । অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক প্রতিদিনের টিফিন পিরিয়ড বা অন্য অবসর সময়টা আড্ডা ও গল্পগুজবের মধ্যে না কাটিয়ে লাইব্রেরি থাকলে সময়টা পড়ালেখায় কাটাতে পারেন । এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, শিক্ষা বিকাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি বা লাইব্রেরির অবস্থান অপরিহার্য ।
গণতন্ত্রের সাফল্যে গ্রন্থাগারের ভূমিকা গণমাধ্যমের চেয়ে কম নয় । আধুনিক বিশ্বে গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা দিনে দিনে বাড়ছে । গ্রন্থাগার সকলের জন্য উন্মুক্ত । ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা নেই এখানে, নেই হানাহানি কলহ । সুতরাং প্রতিটি সুশীল নাগরিকের নিয়মিত গ্রন্থাগারে উপস্থিত হয়ে লেখাপড়া ও জ্ঞানার্জন করা, তাঁদের নিয়মমাফিক রুটিনে আসুক ।
প্রমথ চৌধুরী যথার্থই বলেছেন, “আমরা যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব, দেশের তত বেশি উপকার হবে । আমার মনে হয়, এদেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল-কলেজের চাইতে একটু বেশি ।“
পরিশেষে আমি মনে করি, লাইব্রেরি হচ্ছে শিক্ষা বিকাশের ও জ্ঞানার্জনের উপযুক্ত পীঠস্থান । (তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত) ।
Month: August 2024
জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মের প্রাণপুরুষ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি। তিনি নিজেই ভগবদ্গীতায় বলেছেন:-
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত|
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজম্যহম্ ||
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুস্কৃতাম্ |
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে ||
(গীতা-৪/৭-৮)
অনুবাদ: “যখনি পৃথিবীতে অধর্ম বেড়ে যায় সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য এবং দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।” শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে, রোহিণী নক্ষত্র যোগে বৃষ লগ্ন ও বুধবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মধুরায় (বর্তমান উত্তর প্রদেশ,ভারত) কংসের কারাগারে, মাতা দেবকীর অষ্টম সন্তান রূপে রাত বারোটার পর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর এই জন্মদিনকে জন্মাষ্টমী বলা হয়। এই বছর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথি পড়ছে ২৬ অগস্ট ২০২৪। ২৬ তারিখ সোমবার জন্মাষ্টমী পালিত হবে।আমরা হিন্দু সনাতন ধর্বাবলম্বীরা দিনটিকে বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালন করে থাকি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মাতা হলেন দেবকী, পিতা বসুদেব, যশোদা পালক-মাতা, নন্দ পালক-পিতা। সহোদর ভাই বলরাম, বোন সুভদ্রা, যোগমায়া হলেন পালক-বোন।
পৌরাণিক ব্যাখ্যা মতে, কংসের বোন দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তানের হাতে নিজের বিনাশের দৈববাণী শুনে সে সর্বদাই আতঙ্কে থাকত। ফলে সে তার বোনের গর্ভে সদ্যভূমিষ্ট প্রতিটি সন্তানকেই নৃশংসভাবে হত্যা করত। তবে গর্ভ স্থানান্তরিত করায় রোহিনীর গর্ভে জন্ম নেয় দেবকীর সপ্তম সন্তান বলরাম। সবশেষে অধর্মের বিনাশ ঘটাতে জন্ম হয় কৃষ্ণের। তবে তার প্রাণরক্ষার্থে ভগবান বিষ্ণুর নির্দেশ অনুসারে বাসুদেব কৃষ্ণপক্ষের সেই দুর্যোগ পূর্ণ প্রলয়ের রাতে সদ্যভূমিষ্ট সন্তানকে মা যশোদার কাছে রেখে আসেন। পাশাপাশি মা যশোদার কন্যাকে নিয়ে আসেন। এদিকে দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তানের ভুমিষ্ঠ হওয়ার সংবাদ পেয়ে কারাগারে ছুটে আসেন কংস। তারপর যখনই সেই কন্যা সন্তানকে আছাড় মারার উদ্দেশ্যে ঊর্ধ্বে তুলে ধরলেন, তখনই সেই কন্যা মহাশূন্যে ভাসতে ভাসতে দৈববাণী হয় “কংস, তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে!” এই কন্যাসন্তান ছিলেন স্বয়ং দেবী যোগমায়া। তার পর থেকেই আমাদের সমাজে যে কোনো অন্যায়কারী ও অপশাসককে উদ্দেশ করে বলা হয়, “তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে!” এটা আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় প্রবচন।
যাই হোক, কৃষ্ণের সন্ধান না পাওয়ায় রাজা কংস কুখ্যাত পুতনা রাক্ষসীকে ছয়মাস বয়সী সব শিশুকে হত্যার আদেশ দেন। রাজা কংসের নির্দেশমতো রাক্ষসী পুতনা বিষাক্ত স্তন পান করানোর ছলে একের পর এক শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করতে থাকে। অবশেষে যখন পুতনা কৃষ্ণের সন্ধান পান এবং তাকে স্তন পান করাতে যান, তখন মাত্র ছয়মাস বয়সেই কৃষ্ণ স্তনপানের মাধ্যমে সব বিষ শুষে নিয়ে পুতনার প্রাণনাশ করেন। এরপর একে একে তিনি কালীয়া নাগ, রাজা কংস সহ জগতের নানা দুষ্টকে তাঁর অসীম লীলার মাধ্যমে নিঃশেষ করেন।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় চারিদিকে অরাজকতা, নিপীড়ন, অত্যাচার ছিল চরম পর্যায়ে। মানুষের স্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। সর্বত্র ছিল অশুভ শক্তির বিস্তার। শ্রীকৃষ্ণ সব অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে সমাজকে কলুষমুক্ত করেন। জন্মাষ্টমী অশুভের উপর শুভবুদ্ধির জয় হিসাবে পালিত হয়।
কিংবদন্তি অনুযায়ী বর্তমান বছরটি বাংলার ১৪৩১ (২০২৪ সাল) ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৫০ তম জন্মাষ্টমী। কারণ, বিভিন্ন পুরাণ ও প্রাচীন গ্রন্থ মতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর ধরাধামে লীলা করেন। ১২৫ বছর ধরাধামে অবস্থান করে বৈকুন্ঠে গমন করেন। মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তিনি ইহধাম ত্যাগ করে অন্তর্ধান করেন। সেই দিনই কলি প্রবেশ করে। সেই দিন ছিল শুক্রবার। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০১ সালে কলিযুগ আরম্ভ হয়। বর্তমান ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। তা হলে কলির বয়স ৩১০১+২০২৪ =৫১২৫ বছর। শ্রীকৃষ্ণের অর্ন্তধানের দিন কলির আবির্ভাব। শ্রীকৃষ্ণ ১২৫ বছর ধরাধামে লীলা করেছেন। তা হলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ৫১২৫+১২৫=৫২৫০ বছর পূর্বে হয়েছিল। জন্ম ১৮ জুলাই, ৩২২৮ খ্রিস্টপূর্ব মথুরা, শূরসেন রাজ্য (বর্তমান উত্তর প্রদেশ, ভারত) মৃত্যু ১৮ ফেব্রুয়ারি, ৩১০২ খ্রিস্টপূর্ব ভালকা, সৌরাষ্ট্র রাজ্য, (বর্তমান ভেরাভাল, গুজরাত, ভারত)। ভগবদ্গীতায জন্মাষ্টমী অশুভের উপর শুভবুদ্ধির জয় হিসাবে পালিত হয়। পূর্ণব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণ মথুরার যাদববংশের বৃষ্ণি গোত্রের মানুষ, তিনি ছিলেন পরোপকারী, রাজনীতিজ্ঞ ও প্রেমিক।
মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পূর্ণব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণ ইহধাম ত্যাগ করে অন্তর্ধান করেন। সেই দিনই শ্রীকৃষ্ণের অর্ন্তধানের দিন কলির আবির্ভাব। আর এই কলি যুগের অবতার জগৎ গুরু স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের আবির্ভাব ও মাঘ মাসের পূর্ণিমা, ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দ পুণ্যময়ী মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে৷ তিনি ও সব অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে সমাজকে কলুষমুক্ত করার চেষ্টা করে গেছেন, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত শুভবুদ্ধির জয়ের চেষ্টা করে গেছেন। হিন্দুর সংহতি চেতনা জাগাবার জন্যে স্বামী প্রণবানন্দ ও বলেছিলেন -“হিন্দুর বিদ্যা বুদ্ধি, অর্থ ও সামর্থ যথেষ্ট আছে, কিন্তু নেই সংহতি শক্তি। এই সংহতি শক্তি জাগিয়ে দিলে হিন্দু আবার জাগ্রত হবে”। আচার্য স্বামী প্রণবানন্দ বলেছিলেন, আমি হিন্দুকে “হিন্দু হিন্দু” জপ করাব, তবেই তাদের মধ্যে মহাশক্তির সঞ্চার হবে। জাতিভেদ প্রথাকে হাতিয়ার করে হিন্দুসমাজকে টুকরো করার যে বিষবৃক্ষ তৈরি করা হয়েছিল, তার মূলে কুঠারাঘাত করতে এগিয়ে এলেন যুগপুরুষ স্বামী প্রণবানন্দ। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন হিন্দুবাদে বাকি ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীরা সঙ্ঘবদ্ধ ও সুরক্ষিত। কিন্তু ভারতের হিন্দু জনগণ অরক্ষিত, বিচ্ছিন্ন, ছিন্নভিন্ন, বিবাদমান, দুর্বল। হিন্দুদের জ্ঞানচক্ষু খুলে দেওয়ার তাগিদে স্বামী প্রণবানন্দ বলিষ্ঠ কন্ঠে বলেছিলেন-“যে যা, তাকে তাই বলে ডাকলে সে সাড়া দেয়। মুসলমানকে মুসলমান বলে ডাক দেওয়া হচ্ছে, তাই সে সাড়া দিচ্ছে। খ্রিষ্টানকে খ্রিষ্টান বলে ডাক দেবার লোক আছে, তাই সে ডাকে সাড়া দিচ্ছে, নিজেদের অস্তিত্বও সেভাবে অনুভব করছে। কিন্তু, হিন্দুকে হিন্দু বলে ডাক দেবার লোক নেই। গত একশ বছর ধরে কেউ ডাক দিয়েছে-‘ব্রাহ্ম’ বলে, কেউ ডেকেছে ‘আর্য্য’ বলে, কেউ ডেকেছে ‘ভারতীয় জাতি’ বলে, কোন পক্ষ তাকে আখ্যা দিয়ে রেখেছে অমুসলমান। বিরাট ভারতীয় জাতটা অসাড়, অবশ হয়ে আত্মভোলা হয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে। আজ সময় এসেছে হিন্দুকে হিন্দু বলে ডাক দেবার।” হিন্দুর সংহতি, হিন্দু ধর্মের জাগরণের লক্ষ্যে স্বামী প্রণবানন্দ ও তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন।
আমাদের মূল্যবান মনুষ্য জীবনে ভারতীয় সংস্কৃতি সভ্যতায় ধর্মীয়, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সত্য সনাতন হিন্দু ধর্মে এই উৎসবটি ভাই ও বোনের শুভ রাখীবন্ধন উৎসব। ভারতবর্ষে এই উৎসব শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার দিন পালন করা হয়। এজন্য অনেক সময় রাখী বন্ধন উৎসব কে রাখী পূর্ণিমা ও বলা হয়। আবার ঝুলন পূর্ণিমা ও বলা হয়। ঝুলন পূর্ণিমা কিছু মন্দিরে শুধুমাত্র একদিনের জন্য ঝুলন যাত্রা উৎসব পালন করা হলেও, কিছু মন্দিরে একাদশীর দিন থেকে পূর্ণিমার দিন পর্যন্ত পালন করা হয়, যা শ্রাবণ মাসে পাঁচ দিন ধরে চলে। ঝুলন যাত্রা একটি ধর্মীয় উৎসব যা ভগবান কৃষ্ণ এবং ভগবান জগন্নাথকে উৎসর্গ করা হয়। ঝুলন যাত্রা উত্তর প্রদেশের মথুরা এবং বৃন্দাবন শহরগুলির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপ ধাম ও মায়াপুরে অত্যন্ত আড়ম্বর ও আনন্দের সাথে উদযাপিত হয়। সারা দেশে ভগবান কৃষ্ণ মন্দির, ভগবান জগন্নাথ মন্দির এবং অন্যন্য মন্দিরেও ঝুলন যাত্রা পালিত হয়। সারা বিশ্ব এবং সারা দেশ থেকে ভক্তরা এই মন্দিরগুলিতে উৎসব উদযাপন করতে সমবেত হন।
রক্ষাবন্ধন পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী দৈত্যরাজা বলি ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে বলির রাজ্য রক্ষা করতে চলে এসেছিলেন। বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে বলিরাজের কাছে আসেন। লক্ষ্মী বলিরাজের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। বলিরাজা ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে আশ্রয় দিতে রাজি হন। শ্রাবণ পূর্ণিমা উৎসবে লক্ষ্মী বলিরাজার হাতে একটি রাখী বেঁধে দেন। বলিরাজা এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে লক্ষ্মী আত্মপরিচয় দিয়ে সব কথা খুলে বলেন। এতে বলিরাজা মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। বলিরাজা বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেন। সেই থেকে শ্রাবণ পূর্ণিমা তিথিটি বোনেরা রাখীবন্ধন উৎসব হিসেবে পালন করে।
মহাভারতের ব্যাখ্যা অনুযায়ী একবার যুদ্ধে ভগবান কৃষ্ণের কবজিতে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হলে পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এতে ভগবান কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে যান। দ্রৌপদী তাঁর অনাত্মীয়া হলেও, তিনি দ্রৌপদীকে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন এবং দ্রৌপদীকে এর প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। বহু বছর পরে, পাশাখেলায় কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করে তাঁর বস্ত্রহরণ করতে গেলে কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে সেই প্রতিদান দেন। এইভাবেই রাখীবন্ধনের প্রচলন হয়।
ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী ৩২৬ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে মহামতি আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করলে আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোজানা রাজা পুরুকে একটি পবিত্র সুতো পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করেন আলেকজান্ডারের ক্ষতি না করার জন্য। পুরু ছিলেন কাটোচ রাজা। তিনি রাখীকে সম্মান করতেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি নিজে আলেকজান্ডারকে আঘাত করেননি।
ঐতিহাসিক মর্যাদায় সবচেয়ে বেশি প্রচলিত মেওয়ারের রাজপুত রাণী কর্ণাবতী ও সম্রাট হুমায়ুনের ইতিহাস।
১৫৩৫ সালে গুজরাটের সুলতান বাদশা চিতোর আক্রমণ করলে চিতোরের রানী কর্ণাবতী হুমায়ুনের সাহায্য প্রার্থনা করেন এবং তার কাছে একটি রাখী পাঠান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হুমায়ুন চিতোর রক্ষা করতে পারেননি কারণ তিনি চিতোর পৌঁছানোর আগেই বাহাদুর শাহ চিতোর জয় করে নিয়েছিলেন। বিধবা রানী কর্ণাবতী নিজেকে রক্ষা করতে না পেরে এবং বাহাদুর শাহ এর হাত থেকে বাঁচার জন্য ১৩০০০ স্ত্রীকে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জহর ব্রত পালন করেন। পরে হুমায়ুন চিতোর জয় করে কর্ণাবতীর ছেলে বিক্রম সিংহ কে রাজা ঘোষণা করেন। রাণী কর্ণাবতী ও সম্রাট হুমায়ুনের সম্পর্কের বুনিয়াদ ছিল শুধুই একটি রাখি আর সাথে থাকা একটি চিঠি। ভিন্ন ধর্ম কিংবা রাজনৈতিক সম্পর্ক কিছুই মুখ্য হয়নি ভাইকে পাঠানো বোনের রক্ষাবার্তায়। বোনকে রক্ষায় ছুটে এসেছেন ভাই। শেষ রক্ষা না হলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েছেন অপরাধীকে।
পরবর্তী কালে আমরা জানি ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। আজ কাল আমরা সবাই রাখী বন্ধন উৎসবে মেতে উঠি। কিন্তু অনেক সময় তা উৎসব হয়েই থেকে যায়। অনেক সময় দামী ও রংচঙে রাখীর নিচে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে পবিত্র রাখি বন্ধন উৎসব এর সেই পুরোনো মহিমাময় ঐতিহ্য ও গৌরব।
এই রাখীবন্ধন উৎসব ভাই ও বোনের মধ্যে প্রীতিবন্ধনের উৎসব। ভাই ও বোন,দাদা,দিদি এই উৎসব পালন করেন। এই দিন দিদি বা বোনেরা তাদের ভাই বা দাদার হাতে পবিত্র রাখী বেঁধে দেয়। এই রাখীটি ভাই বা দাদার প্রতি দিদি বা বোনের ভালবাসা ও ভাইয়ের মঙ্গলকামনা এবং দিদি বা বোনকে আজীবন রক্ষা করার ভাই বা দাদার শপথের প্রতীক হিসাবে পরিগণিত হয়। এই বছর রাখি পূর্ণিমা তিথি পড়েছে পঞ্জিকা অনুযায়ী বাংলা ২রা ভাদ্র সোমবার,১৪৩১। ইংরেজি 19ই আগস্ট 2024. আপনাদের সবাইকে শুভ ঝুলন পূর্ণিমা ও রক্ষাবন্ধনের শুভেচ্ছা। আজ এই শুভ দিনে জগৎগুরু ভগবান স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের শুভ ও মঙ্গলময় আশির্বাদ সবার শিরে বর্ষিত হোক এই প্রার্থনা করি।
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ….!
স্বামী আত্মভোলানন্দ(পরিব্রাজক) l
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে ক্ষুদিরাম বসু প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। ক্ষুদিরাম বসু ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
ক্ষুদিরাম বসু, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অমর নাম। দেশের স্বাধীনতার জন্য ফাঁসির মঞ্চে যারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে প্রথম বিপ্লবী ছিলেন তিনি। ভারতবর্ষকে স্বাধীন করতে ক্ষুদিরাম বসুর এই আত্মত্যাগ আজও অনুপ্রেরণা যোগায় এবং উৎসাহিত করে দেশপ্রেমের অগ্নিমন্ত্রে শপথ নিতে। এখন জেনে নেব ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কে কিছু কথা।
ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মেদিনীপুর শহরের কাছাকাছি (বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ত্রৈলোক্যনাথ বসু ছিলেন নাড়াজোলের তহসিলদার। তার মার নাম লক্ষ্মীপ্রিয় দেবী। তিন কন্যার পর তিনি তার মায়ের চতুর্থ সন্তান। তার দুই পুত্র অকালে মৃত্যুবরণ করেন। অপর পুত্রের মৃত্যুর আশঙ্কায় তিনি তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তার পুত্রকে তার বড়ো দিদির কাছে তিন মুঠো খুদের (চালের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল বলে শিশুটির নাম পরবর্তীকালে ক্ষুদিরাম রাখা হয়।ক্ষুদিরামের বয়স যখন মাত্র পাঁচ বছর তখন তিনি তার মাকে হারান।45
এক বছর পর তার পিতার মৃত্যু হয়। তখন তার বড়ো দিদি অপরূপা তাকে দাসপুর থানার এক গ্রামে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। অপরূপার স্বামী অমৃতলাল রায় ক্ষুদিরামকে তমলুকের হ্যামিল্টন হাই স্কুলএ ভর্তি করে দেন।
১৯০২ এবং ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রী অরবিন্দ এবং সিস্টার-নিবেদিতা মেদিনীপুর ভ্রমণ করেন। তারা স্বাধীনতার জন্যে জনসমক্ষে ধারাবাহিক বক্তব্য রাখেন এবং বিপ্লবী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে গোপন অধিবেশন করেন, তখন কিশোর ছাত্র ক্ষুদিরাম এই সমস্ত বিপ্লবী আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। স্পষ্টভাবেই তিনি অনুশীলন সমিতিতে যোগদান করেন এবং কলকাতায় বারীন্দ্র কুমার ঘোষের কর্মতৎপরতার সংস্পর্শে আসেন। তিনি ১৫ বছর বয়সেই অনুশীলন সমিতির একজন স্বেচ্ছাসেবী হয়ে ওঠেন এবং ভারতে ব্রিটিশ শাসন বিরোধী পুস্তিকা বিতরণের অপরাধে গ্রেপ্তার হন। ১৬ বছর বয়সে ক্ষুদিরাম থানার কাছে বোমা মজুত করতে থাকেন এবং সরকারি আধিকারিকদেরকে আক্রমণের লক্ষ্য স্থির করেন।
১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে ক্ষুদিরাম তার বোন অপরূপার স্বামী অমৃতলাল রায়ের সঙ্গে তমলুক শহর থেকে মেদিনীপুরে চলে আসেন।ক্ষুদিরাম বসু তমলুকের হ্যামিল্টন স্কুল এবং মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষালাভ করেন।
মেদিনীপুরে তার বিপ্লবী জীবনের অভিষেক। তিনি বিপ্লবীদের একটি নবগঠিত আখড়ায় যোগ দেন। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু এবং রাজনারায়ণ বসুর প্রভাবে মেদিনীপুরে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন গড়ে উঠেছিল। সেই সংগঠনের নেতা ছিলেন হেমচন্দ্র দাস কানুনগো এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন হেমচন্দ্র দাসের সহকারী। এটি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ব্রিটিশবিরোধীদের দ্বারা পরিচালিত হতো। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ক্ষুদিরাম তার গুণাবলীর জন্য সবার চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন। ক্ষুদিরাম সত্যেন্দ্রনাথের সাহায্যে বিপ্লবী দলভুক্ত হয়ে এখানে আশ্রয় পান। ক্ষুদিরাম তারই নির্দেশে ‘সোনার বাংলা’ শীর্ষক বিপ্লবাত্মক ইশতেহার বিলি করে গ্রেপ্তার হন। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে কাঁসাই নদীর বন্যার সময়ে রণপার সাহায্যে ত্রাণকাজ চালান। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে বারীন্দ্র কুমার ঘোষ তার সহযোগী হেমচন্দ্র কানুনগোকে প্যারিসে নির্বাসনে থাকা একজন রাশিয়ান নিকোলাস সাফ্রানস্কি-এর কাছ থেকে বোমা তৈরির কায়দা শেখার জন্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
কিংসফোর্ডকে গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা
অনুশীলন সমিতি কিংসফোর্ডকে হত্যা করার প্রচেষ্টা জারি রেখেছিল। এপ্রিলে দুই সদস্যের একটা পরিদর্শক দল মুজাফফরপুর সফর করে, যাতে যুক্ত ছিলেন প্রফুল্ল চাকী। তাদের ফিরে আসায় বোমা দিয়েছিলেন হেমচন্দ্র, যেগুলো বানানো হয়ছিল ৬ আউন্স ডিনামাইট, একটা বিস্ফোরক এবং কালো পাউডার ফিউজ। প্রফুল্ল চাকি মুজাফফরপুরে ফিরেছিলেন একটা নতুন ছেলেকে নিয়ে, যার নাম ক্ষুদিরাম বসু।
অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্র ঘোষ এবং তাদের সহযোগীদের কাজকর্মে পুলিশের সন্দেহ হতে থাকে।কলকাতা পুলিশ কিংসফোর্ডের জীবন বাঁচানোর জন্যে সচেতন হয়ে ওঠে। কমিশনার এফ এল হলিডে মুজাফফরপুর পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্টের উপেক্ষার বদলে সতর্ক হয়েছিলেন। যাইহোক, চারজন লোককে ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়ি পাহারা দেওয়ার জন্যে ব্যবস্থা করা হয়।ইতিমধ্যে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি নতুন নাম ধারণ করে যথাক্রমে হরেণ সরকার ও দীনেশ চন্দ্র রায় হয়েছেন, এবং কিশোরীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত এক দাতব্য সরাইখানায় (ধর্মশালা) তারা বাসা নেন। তাদের অজ্ঞাতবাসের দিনগুলোতে ওই বিপ্লবীদ্বয় তাদের লক্ষ্যের কার্যকলাপ এবং দৈনন্দিন রুটিনের ওপর নজরদারি করতেন। দুই বিপ্লবী সফলভাবে তিন সপ্তাহের ওপর তাদের পরিচয় গোপন রাখতে পেরেছিল। মুজাফফরপুরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট আর্মস্ট্রঙের কাছ থেকে একটা চিঠি নিয়ে সিআইডি অফিসার কলকাতায় ফিরে এসেছিল, যাতে বলা হয়েছিল যে, বিপ্লবীদ্বয় ওখানে পৌঁছায়নি।[১৫] ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল তাদের পরিকল্পনা কার্যকর করার জন্যে জায়গামতো হাজির হয়েছিল। স্কুল ছাত্রের ভান করে মুজাফফরপুর পার্কে তারা সমীক্ষা করেছিলেন যে, এটা ব্রিটিশ ক্লাবের উলটো দিকে, যেখানে কিংসফোর্ড ঘনঘন আসেন। একজন কনস্টেবল তাদের দেখেছিল।
মুজাফফরপুরে কিংসফোর্ডকে গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা
ভাগ্য ভালোর দিনে, প্রিঙ্গল কেনেডি নামে একজন ব্রিটিশ ব্যারিস্টারের মেয়ে এবং স্ত্রীর সঙ্গে কিংসফোর্ড এবং তার স্ত্রী ব্রিজ খেলছিলেন। তারা রাত ৮.৩০ নাগাদ বাড়ি ফিরতে মনস্থ করেন। কিংসফোর্ড এবং তার স্ত্রী একটা গাড়িতে ছিলেন যেটা কেনেডি এবং তার পরিবারের গাড়ির মতোই দেখতে ছিল। কেনেডি মহিলাগণ কিংসফোর্ডের বাড়ির চত্বর থেকেই যাচ্ছিলেন। যখন তাদের গাড়ি ওই চত্বরের পূর্ব ফটকে পৌঁছায়, ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল গাড়িটার দিকে দৌড়ে যান এবং গাড়িতে বোমাগুলো ছোড়েন। একট প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে এবং গাড়িটা সঙ্গে সঙ্গে কিংসফোর্ডের বাড়িতে আনা হয়। গাড়িটা ভেঙে গিয়েছিল এবং কেনেডি মহিলাগণ ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। মিস কেনেডি এক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান এবং মিসেস কেনেডি গুরুতর আঘাতের ফলে ২ মে তারিখে প্রয়াত হন।
ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল নিজেদের রাস্তায় পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। মধ্যরাতের মধ্যে সারা শহর ঘটনাটা জেনে গিয়েছিল, এবং খুব সকাল থেকেই সমস্ত রেলস্টেশনে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল যাতে প্রত্যেক যাত্রীর ওপর নজর রাখা যায়। শিমুরিঘাট রেল স্টেশনে প্রফুল্ল যখন জল খাওয়ার জন্যে ট্রেন থেকে নামেন, তখন মিস্টার ব্যানার্জি মুজফফরপুর থানায় একটা টেলিগ্রাম পাঠান। মোকামাঘাট রেল স্টেশনে প্রফুল্লকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেন মিস্টার ব্যানার্জি। প্রফুল্ল তার কাছে থাকা রিভলভার দিয়ে নিজের মতো লড়াই করার চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষে যখন দেখেন যে, রিভলভারে একটামাত্র গুলি আছে, তখন তিনি নিজের মুখের মধ্যে গুলি করেন।
হাতে হাতকড়ি লাগানো ক্ষুদিরামকে পয়লা মে মুজফফরপুর থেকে আনা হয়। পুরো শহর থানায় ভিড় করেছিল একদল সশস্ত্র পুলিশকর্মীর ঘিরে থাকা একটা কিশোর ছেলেকে শুধু একপলক দেখার জন্যে।
দুজন মহিলাকে হত্যা করার জন্যে তার বিচার হয় এবং চূড়ান্তভাবে তার ফাঁসির আদেশ হয়।
ফাঁসি হওয়ার সময় ক্ষুদিরামের বয়স ছিল ১৮ বছর, ৭ মাস এবং ১১ দিন, যেটা তাকে ভারতের কনিষ্ঠতম ভারতের বিপ্লবী অভিধায় অভিষিক্ত করেছিল।
তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট
10 আগস্ট কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং টেকসই শক্তির প্রচারের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় একটি উল্লেখযোগ্য দিন চিহ্নিত করে – আন্তর্জাতিক জৈব-জ্বালানি দিবস। এই দিনটি প্রথম জৈব-জ্বালানী ফ্লাইটের বার্ষিকীকে স্মরণ করে, যা 10 আগস্ট, 2018-এ হয়েছিল। বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, তখন জৈব-জ্বালানি স্বল্প-কার্বনে রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অর্থনীতি
জৈব জ্বালানী কি?
জৈব-জ্বালানি হল জৈব পদার্থ, যেমন উদ্ভিদ, শেওলা বা কৃষি বর্জ্য থেকে উৎপাদিত জ্বালানি। তারা জীবাশ্ম জ্বালানির একটি ক্লিনার বিকল্প অফার করে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং অ-নবায়নযোগ্য সম্পদের উপর নির্ভরতা হ্রাস করে। জৈব-জ্বালানি পরিবহন, গরম করা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তরল জ্বালানি সহ বিভিন্ন রূপে ব্যবহার করা যেতে পারে।
জৈব-জ্বালানির ইতিহাস
জৈব-জ্বালানির ধারণাটি 20 শতকের গোড়ার দিকে, কিন্তু এটি 1970 এর দশকে তেল নিষেধাজ্ঞার সাথে গতি লাভ করে। তখন থেকে, গবেষণা ও উন্নয়ন জৈব-জ্বালানি উৎপাদন, দক্ষতা এবং সামর্থ্যের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করেছে।
জৈব-জ্বালানির প্রকারভেদ
1. প্রথম প্রজন্মের জৈব জ্বালানি: ভুট্টা, আখ এবং সয়াবিনের মতো খাদ্য শস্য থেকে উৎপাদিত।
2. দ্বিতীয় প্রজন্মের জৈব-জ্বালানি: কৃষি বর্জ্য, শেওলা এবং সুইচগ্রাস জাতীয় খাদ্যবহির্ভূত জৈববস্তু থেকে উদ্ভূত।
3. তৃতীয় প্রজন্মের জৈব-জ্বালানি: ব্যাকটেরিয়া এবং ইস্টের মতো অণুজীব থেকে উৎপন্ন।
জৈব জ্বালানীর উপকারিতা
1. গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস: জৈব জ্বালানী জীবাশ্ম জ্বালানীর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম CO2 নির্গত করে।
2. শক্তি নিরাপত্তা: জৈব-জ্বালানি আমদানি করা তেলের উপর নির্ভরতা কমাতে পারে, শক্তির স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাড়াতে পারে।
3. গ্রামীণ উন্নয়ন: জৈব-জ্বালানি উৎপাদন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে উদ্দীপিত করতে পারে।
4. উন্নত বায়ুর গুণমান: জৈব-জ্বালানি কম দূষক নির্গত করে, বায়ুর গুণমান এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ
1. খরচ এবং পরিমাপযোগ্যতা: জৈব-জ্বালানি উৎপাদন প্রথাগত জ্বালানির তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল।
2. ভূমি ব্যবহার এবং খাদ্য নিরাপত্তা: বড় আকারের জৈব-জ্বালানি উৎপাদন জমি এবং সম্পদের জন্য খাদ্য শস্যের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারে।
3. প্রযুক্তিগত অগ্রগতি: চলমান গবেষণার লক্ষ্য হল দক্ষতা উন্নত করা, খরচ কমানো, এবং নতুন জৈব-জ্বালানি উত্স বিকাশ করা।
বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ এবং নীতি
1. পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানী স্ট্যান্ডার্ড (RFS): একটি মার্কিন নীতি যা পরিবহন জ্বালানীতে জৈব-জ্বালানির মিশ্রণ বাধ্যতামূলক করে।
2. ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি নির্দেশিকা: পরিবহনে জৈব-জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করে।
3. ভারতের জাতীয় জৈব জ্বালানী নীতি: জৈব-জ্বালানি উৎপাদন এবং মিশ্রণ বৃদ্ধির লক্ষ্য।
উপসংহার
আন্তর্জাতিক জৈব-জ্বালানি দিবস টেকসই শক্তি সমাধানের গুরুত্বের অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে। যেহেতু বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, জৈব-জ্বালানি জীবাশ্ম জ্বালানির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প প্রস্তাব করে। যদিও চ্যালেঞ্জগুলি অব্যাহত থাকে, চলমান গবেষণা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সহায়ক নীতিগুলি এই বাধাগুলি অতিক্রম করতে সাহায্য করতে পারে। জৈব-জ্বালানি গ্রহণ করে, আমরা আমাদের কার্বন পদচিহ্ন কমাতে পারি, শক্তি নিরাপত্তা উন্নত করতে পারি এবং আরও টেকসই ভবিষ্যত তৈরি করতে পারি।
10 আগস্ট আর্জেন্টিনার সামরিক ক্যালেন্ডারে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন – বিমান বাহিনী দিবস। এই জাতীয় ছুটির দিনটি 1945 সালে আর্জেন্টিনার এয়ার ফোর্স (ফুয়ের্জা এরিয়া আর্জেন্টিনা, এফএএ) প্রতিষ্ঠার স্মৃতিচারণ করে। এফএএর একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, যা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রারম্ভিক বছর (1945-1955)
আর্জেন্টিনার সশস্ত্র বাহিনীর একটি শাখা হিসেবে আর্জেন্টিনার বিমান বাহিনী 10 আগস্ট, 1945 সালে গঠিত হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, এফএএ আর্জেন্টাইন আর্মি এভিয়েশন এবং নেভাল এভিয়েশন থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে বিমান এবং কর্মীদের উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল। প্রাথমিক বছরগুলি অবকাঠামো নির্মাণ, পাইলটদের প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক বিমান অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করেছিল।
বৃদ্ধি এবং আধুনিকীকরণ (1955-1982)
Gloster Meteor এবং F-86 Sabre-এর মতো জেট বিমানের প্রবর্তনের মাধ্যমে 1950 এবং 1960-এর দশকে FAA উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। চিলির সাথে সীমান্ত বিরোধের সময় আর্জেন্টিনা সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে, 1960-এর দশকে বিমান বাহিনী প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। 1970-এর দশকে, এফএএ তার বহরের আধুনিকীকরণ করে, মিরাজ III এবং A-4 স্কাইহকের মতো উন্নত বিমান অন্তর্ভুক্ত করে।
ফকল্যান্ডস যুদ্ধ (1982)
1982 সালে ফকল্যান্ডস যুদ্ধের (গুয়েরা দে লাস মালভিনাস) সময় FAA-এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যস্ততা ছিল। আর্জেন্টাইন বাহিনী বিতর্কিত ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ দখল করে, যার ফলে যুক্তরাজ্যের সাথে সংঘর্ষ হয়। এফএএ যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, বোমা মিশন পরিচালনা, আকাশ থেকে আকাশে যুদ্ধ এবং পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল। যদিও যুদ্ধ আর্জেন্টিনার জন্য পরাজয়ের মধ্যে শেষ হয়েছিল, FAA এর সাহসিকতা এবং দক্ষতা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত হয়েছিল।
যুদ্ধ-পরবর্তী যুগ (1983-বর্তমান)
ফকল্যান্ডস যুদ্ধের পরে, এফএএ উল্লেখযোগ্য পুনর্গঠন এবং আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েছিল। বিমান বাহিনী নতুন বিমান যেমন এফএমএ আইএ 63 পাম্পা এবং সাব 340 অর্জন করেছে এবং এর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উন্নত করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, FAA হাইতিতে জাতিসংঘের স্থিতিশীলতা মিশন (MINUSTAH) সহ আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেছে।
প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা
এফএএ প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার উপর খুব জোর দেয়। আর্জেন্টাইন এয়ার ফোর্স একাডেমি (Escuela de Aviación Militar) হল অফিসার প্রশিক্ষণের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান, যা অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিমান চালনা এবং সামরিক বিজ্ঞানে প্রোগ্রাম অফার করে। এফএএ বেশ কয়েকটি ফ্লাইট প্রশিক্ষণ স্কুলও পরিচালনা করে, বিভিন্ন ধরনের বিমানের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করে।
বিমান এবং সরঞ্জাম
FAA বিভিন্ন ধরনের বিমান পরিচালনা করে, যার মধ্যে রয়েছে:
1. ফাইটার জেট: A-4AR Fightinghawk, FMA IA 63 Pampa, এবং Mirage III
2. পরিবহন বিমান: C-130 হারকিউলিস, ফকার F28, এবং সাব 340
3. প্রশিক্ষণ বিমান: T-34C Turbo Mentor, EMB 312 Tucano, এবং FMA IA 63 Pampa
4. হেলিকপ্টার: বেল 212, Hughes 500, এবং Mil Mi-17
উদযাপন এবং ঐতিহ্য
এয়ার ফোর্স ডে আর্জেন্টিনা জুড়ে বিভিন্ন ইভেন্ট এবং অনুষ্ঠানের সাথে পালিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
1. সামরিক প্যারেড এবং ফ্লাইপাস্ট
2. বিমান প্রদর্শন এবং প্রদর্শনী
3. বিশিষ্ট কর্মীদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান
4. বিমান বাহিনী ঘাঁটিগুলিতে খোলা দিনগুলি, জনসাধারণকে সুবিধাগুলি ভ্রমণ এবং কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি দেয়৷
উপসংহার
আর্জেন্টিনার এয়ার ফোর্স ডে দেশের সমৃদ্ধ বিমান চলাচলের ইতিহাস এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় FAA-এর প্রতিশ্রুতির প্রমাণ। যেহেতু বিমান বাহিনী আন্তর্জাতিক মিশনে আধুনিকীকরণ এবং অংশগ্রহণ অব্যাহত রেখেছে, আর্জেন্টিনার গর্ব এবং শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হিসেবে এর উত্তরাধিকার টিকে আছে।
10 আগস্ট, 1950, ভারতে চিকিৎসা শিক্ষার ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এই দিনে, প্রখ্যাত চিকিত্সক ও শিক্ষাবিদ ডঃ নীলরতন সরকারের সম্মানে কলকাতার ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রাখা হয়। এই নামকরণ ভারতে চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রচারে ডঃ সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রমাণ।
প্রারম্ভিক বছর
ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলটি 1948 সালে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল ভারতের পূর্বাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে। যাইহোক, বিদ্যালয়টি অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং অনুষদের ঘাটতি সহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছিল। এই সময়েই ডাঃ নীলরতন সরকার, একজন দূরদর্শী চিকিত্সক এবং শিক্ষাবিদ, প্রতিষ্ঠানটিকে রুপান্তরিত করার জন্য পদক্ষেপ নেন।
সরকারের অবদান ড
ডঃ নীলরতন সরকার ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে একজন অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একজন দক্ষ চিকিত্সক, একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্কারের জন্য একজন উত্সাহী উকিল ছিলেন। চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় ডাঃ সরকারের অবদান অপরিসীম। নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সহ ভারতে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ডাঃ সরকারের নেতৃত্বে মেডিকেল কলেজের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হয়। তিনি নতুন শিক্ষণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন, পাঠ্যক্রম প্রসারিত করেন এবং নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। ডঃ সরকার গবেষণার গুরুত্বের উপরও জোর দেন এবং শিক্ষার্থীদের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে জড়িত হতে উৎসাহিত করেন।
পুনঃনামকরণ এবং সম্প্রসারণ
ডাঃ সরকারের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, ক্যাম্পবেল মেডিকেল স্কুলের নামকরণ করা হয় 1950 সালে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। এই নামকরণ প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করে, যা এর সুযোগ-সুবিধা, অনুষদ এবং ছাত্র সংগঠনকে প্রসারিত করে। মেডিকেল কলেজ চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল, যা সারা ভারত থেকে ছাত্র ও শিক্ষকদের আকর্ষণ করে।
উত্তরাধিকার
আজ, নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভারতের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। কলেজটি মেডিসিন, সার্জারি এবং অন্যান্য সহযোগী স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্স অফার করে। হাসপাতালটি সারা অঞ্চলের রোগীদের জন্য অত্যাধুনিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।
ডাঃ নীলরতন সরকারের উত্তরাধিকার প্রজন্মের মেডিকেল ছাত্র এবং পেশাদারদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে। চিকিৎসা শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি ভারত এবং তার বাইরের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে আছে।
উপসংহার
1950 সালের 10 আগস্ট ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রাখা হয়েছিল, একজন অসাধারণ ব্যক্তির প্রতি উপযুক্ত শ্রদ্ধা ছিল যিনি চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রচারের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ডাঃ সরকারের দৃষ্টি, নেতৃত্ব এবং অবদান ভারতীয় চিকিৎসায় একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছে। আমরা যখন এই মাইলফলকটি উদযাপন করি, আমরা ভারতীয় স্বাস্থ্যসেবায় একজন সত্যিকারের অগ্রগামীর উত্তরাধিকারকে সম্মান করি।
9 আগস্ট, 1945, এমন একটি দিন যা ইতিহাসের ইতিহাসে চিরকাল খোদিত হয়ে থাকবে। এই দিনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলে, হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে এবং বিশ্বে স্থায়ী প্রভাব ফেলে।
পটভূমি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে, মিত্ররা জাপানের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করছিল। যাইহোক, জাপান সরকার আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করে, যার ফলে জাপানের দুটি শহরে পারমাণবিক বোমা ফেলার সিদ্ধান্ত হয়: হিরোশিমা এবং নাগাসাকি।
1945 সালের 6 আগস্ট হিরোশিমায় প্রথম বোমাটি ফেলা হয়েছিল, যা অবিলম্বে আনুমানিক 70,000 থেকে 80,000 লোককে হত্যা করেছিল। তিন দিন পরে, 9 আগস্ট, নাগাসাকিতে একটি দ্বিতীয় বোমা ফেলা হয়, এতে অতিরিক্ত 39,000 থেকে 80,000 মানুষ মারা যায়।
নাগাসাকির বোমা হামলা
“ফ্যাট ম্যান” নামে পরিচিত বোমাটি স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ০২ মিনিটে একটি বি-২৯ বোমারু বিমান থেকে ফেলা হয়। এটি 21 কিলোটন TNT এর সমতুল্য শক্তি দিয়ে বিস্ফোরিত হয়, 1.6 কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সবকিছু ধ্বংস করে দেয়।
শহরের অনন্য ভূগোলের কারণে নাগাসাকিতে বোমা হামলা বিশেষভাবে বিধ্বংসী ছিল। শহরটি পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত, যা বিস্ফোরণকে কেন্দ্রীভূত করতে এবং এর ধ্বংসাত্মক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেছিল।
ইমিডিয়েট আফটারম্যাথ
বোমা হামলার পরপরই ছিল বিশৃঙ্খল এবং বিধ্বংসী। হাজার হাজার মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে এবং আরও অনেকে গৃহহীন হয়েছে।
হিবাকুশা নামে পরিচিত বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা গুরুতর পোড়া, বিকিরণ অসুস্থতা এবং অন্যান্য আঘাতে ভুগছিলেন। বোমা হামলার পর দিন ও সপ্তাহে তাদের আঘাতের কারণে অনেকে মারা যায়।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
নাগাসাকিতে বোমা হামলা বিশ্বে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এটি জাপানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দিকে পরিচালিত করে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটায়।
যাইহোক, বোমা হামলা বেঁচে থাকা এবং পরিবেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিণতিও নিয়েছিল। অনেক হিবাকুশা সারাজীবন ক্যান্সার সহ বিকিরণজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আন্দোলনেও বোমা হামলার গভীর প্রভাব পড়ে। এটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিধ্বংসী প্রভাব এবং নিরস্ত্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে।
নাগাসাকির কথা মনে পড়ছে
আজ, নাগাসাকি দিবসকে যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক প্রভাব এবং শান্তির গুরুত্বের প্রতিফলন করার জন্য একটি মর্মান্তিক উপলক্ষ হিসাবে স্মরণ করা হয়।
নাগাসাকিতে, বোমা হামলায় নিহতদের সম্মান জানাতে প্রতি বছর একটি স্মারক সেবা অনুষ্ঠিত হয়। পরিষেবাটিতে সকাল 11:02 টায় একটি মুহূর্ত নীরবতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, ঠিক কখন বোমাটি ফেলা হয়েছিল।
নাগাসাকি পিস পার্কও শহরের একটি বিশিষ্ট ল্যান্ডমার্ক, যেখানে একটি জাদুঘর, মেমোরিয়াল হল এবং শান্তি মূর্তি রয়েছে।
উপসংহার
1945 সালের 9 আগস্ট নাগাসাকিতে বোমা হামলা ছিল ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায় তবে বেঁচে থাকা, পরিবেশ এবং বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ আন্দোলনের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
আমরা যেমন নাগাসাকি দিবসকে স্মরণ করি, তেমনি আমাদের অবশ্যই শান্তির গুরুত্ব এবং পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন বিশ্বের দিকে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আমাদের অবশ্যই বোমা হামলার শিকারদের সম্মান জানাতে হবে এবং এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে কাজ করতে হবে যেখানে এমন বিধ্বংসী ঘটনা আর কখনও না ঘটে।
9 আগস্ট বিশ্ব ক্যালেন্ডারে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন হিসেবে চিহ্নিত, কারণ এটি আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। এই দিনটি বিশ্বজুড়ে আদিবাসী সংস্কৃতির বৈচিত্র্য, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিস্থাপকতাকে স্বীকৃতি ও উদযাপনের জন্য নিবেদিত।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের ইতিহাস
1994 সালে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিশ্বব্যাপী আদিবাসীদের সংগ্রাম ও অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ 9 আগস্টকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিনটি আদিবাসী জনসংখ্যা সম্পর্কিত জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকের সাথে মিলে যায়, যা 9 আগস্ট, 1982 সালে হয়েছিল।
আদিবাসীরা: তারা কারা?
আদিবাসীরা হল একটি অঞ্চল বা দেশের আদি বাসিন্দা, যাদের একটি স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, ভাষা এবং ঐতিহ্যগত জীবনধারা রয়েছে। তাদের পৈতৃক ভূমি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সাথে তাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, যা তাদের পরিচয়, আধ্যাত্মিকতা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য অপরিহার্য।
বিশ্বব্যাপী 370 মিলিয়নেরও বেশি আদিবাসী রয়েছে, 90 টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। তারা বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় 5% প্রতিনিধিত্ব করে, তবে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর 15% এর জন্য দায়ী।
আদিবাসীদের দ্বারা সম্মুখীন চ্যালেঞ্জ
বিশ্বের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধিতে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান থাকা সত্ত্বেও, আদিবাসীরা অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
1. ভূমি অধিকার এবং বাস্তুচ্যুতি: আদিবাসীরা প্রায়ই উন্নয়ন প্রকল্প, খনি এবং বন উজাড়ের কারণে তাদের পৈতৃক জমি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
2. সাংস্কৃতিক দমন: আদিবাসী ভাষা, ঐতিহ্য, এবং বিশ্বাস প্রায়ই প্রান্তিক বা অবদমিত হয়।
3. দারিদ্র্য এবং অসমতা: আদিবাসীরা উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের সম্মুখীন হয়।
4. জলবায়ু পরিবর্তন: আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়, কারণ তাদের ঐতিহ্যগত জীবনধারা প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
আদিবাসী সংস্কৃতি উদযাপন
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হল আদিবাসী সংস্কৃতির বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধি উদযাপন করার একটি সুযোগ। এখানে তা করার কিছু উপায় রয়েছে:
1. আদিবাসী সংস্কৃতি সম্পর্কে জানুন: বই পড়ুন, ডকুমেন্টারি দেখুন, এবং আদিবাসীদের সাথে তাদের ঐতিহ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কে জানতে তাদের সাথে যুক্ত হন।
2. আদিবাসী শিল্পী এবং কলাকুশলীদের সমর্থন করুন: আদিবাসী শিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী এবং কারিগরদের প্রচার ও সমর্থন করুন, যারা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
3. আদিবাসী অধিকারের জন্য উকিল: আদিবাসীদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ান এবং তাদের অধিকার, বিশেষ করে ভূমি অধিকার এবং স্ব-নিয়ন্ত্রণের জন্য উকিল৷
4. আদিবাসী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন: সাংস্কৃতিক উত্সব, পাওওয়া, এবং অন্যান্য ইভেন্টে যোগ দিন যা আদিবাসী সংস্কৃতি উদযাপন করে৷
উপসংহার
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হল বিশ্বব্যাপী আদিবাসী সংস্কৃতির স্থিতিস্থাপকতা এবং বৈচিত্র্যের উদযাপন। এটি আদিবাসীদের সংগ্রাম ও অর্জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এবং তাদের অধিকার ও আকাঙ্ক্ষার জন্য বৃহত্তর বোঝাপড়া, সম্মান এবং সমর্থন প্রচার করার একটি সুযোগ।
আমরা এই দিনটি উদযাপন করার সময়, আসুন আমরা দেশীয় সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং আমাদের বিশ্ব সম্প্রদায়ে বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তি এবং বৈচিত্র্যের প্রচারের গুরুত্বকে স্মরণ করি। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে, আমরা সকলের জন্য আরও ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।
মহিমান্বিত হিমালয়ে অবস্থিত, কেদারনাথ হল একটি শ্রদ্ধেয় তীর্থস্থান এবং ভগবান শিবের বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের একটি। ভারতের উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় অবস্থিত এই পবিত্র শহরটি আধ্যাত্মিকতা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং অ্যাডভেঞ্চারের ভান্ডার। এই নিবন্ধে, আমরা আপনাকে কেদারনাথ ভ্রমণে নিয়ে যাব, এর তাৎপর্য, আকর্ষণ এবং ভ্রমণের টিপস অন্বেষণ করব।
কেদারনাথের তাৎপর্য
কেদারনাথকে ভারতের সবচেয়ে পবিত্র শিব মন্দিরগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এবং ট্রেকারদের আকর্ষণ করে। মন্দিরের তাৎপর্য মহাভারত যুগে খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে ভগবান শিব একটি ষাঁড় রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং পরে তার কুঁজ রেখে মাটিতে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়, যা কেদারনাথ লিঙ্গ হিসাবে পূজা করা হয়।
কেদারনাথের আকর্ষণ
1. কেদারনাথ মন্দির: প্রধান আকর্ষণ, এই প্রাচীন মন্দিরটি একটি উঁচু প্ল্যাটফর্মে নির্মিত এবং এতে জটিল পাথরের খোদাই এবং ভাস্কর্য রয়েছে।
2. আদি শঙ্করাচার্যের সমাধি: একটি পবিত্র স্থান যেখানে শ্রদ্ধেয় দার্শনিক-সন্ত আদি শঙ্করাচার্য জ্ঞান অর্জন করেছিলেন।
3. ভৈরবনাথ মন্দির: কেদারনাথের অভিভাবক দেবতা ভৈরবকে উৎসর্গ করা একটি কাছাকাছি মন্দির।
4. ভাসুকি তাল: পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত একটি মনোরম হ্রদ, শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য প্রদান করে।
5. চোরাবাড়ি তাল: স্ফটিক-স্বচ্ছ জল সহ একটি সুন্দর হ্রদ, ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিংয়ের জন্য উপযুক্ত।
কেদারনাথে ট্রেকিং
কেদারনাথ ভ্রমণ একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা, যা হিমালয় এবং আশেপাশের উপত্যকার অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়। গৌরীকুন্ড থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত 16 কিমি ট্র্যাক আপনার গতি এবং ফিটনেস স্তরের উপর নির্ভর করে 6-8 ঘন্টার মধ্যে সম্পন্ন করা যেতে পারে।
কেদারনাথ ভ্রমণের টিপস
1. ভ্রমণের সেরা সময়: মে থেকে জুন এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর, বর্ষাকাল এড়িয়ে।
2. বাসস্থান: বাজেট-বান্ধব গেস্টহাউস এবং বিলাসবহুল রিসর্ট সহ বিভিন্ন বিকল্প থেকে বেছে নিন।
3. ট্রেকিং এর প্রয়োজনীয়তা: আরামদায়ক জুতা, স্তর এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি যেমন জল, স্ন্যাকস এবং একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কিট প্যাক করুন।
4. পারমিট: উত্তরাখণ্ড সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পারমিট নিন।
5. নিরাপত্তা: স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং গাইডের নির্দেশিকা এবং নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
উপসংহার
কেদারনাথ হল একটি আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, দুঃসাহসিক কাজ এবং আধ্যাত্মিক বৃদ্ধির এক অনন্য মিশ্রণ প্রদান করে। আপনি একজন ভক্ত, ট্র্যাকার, বা কেবল একটি শান্ত রিট্রিট খুঁজছেন না কেন, কেদারনাথে সবার জন্য কিছু না কিছু আছে। এই অবিশ্বাস্য যাত্রা শুরু করুন এবং নিজের জন্য কেদারনাথের জাদু অনুভব করুন।