রোদের নিচে জমে থাকা শীত।
(একটি শীতের দুপুরের প্রেমকাহিনি)। শীতের দুপুরগুলো অদ্ভুত। সকাল যেমন কুয়াশায় ঢাকা থাকে, সন্ধে যেমন হিম হয়ে আসে— দুপুর ঠিক তেমন নয়। দুপুরে রোদ থাকে, অথচ শীত যায় না। যেমন কিছু মানুষ—ভালোবাসা দেখায়, তবু দূরে থাকে। সেদিনও এমনই এক শীতের দুপুরে, কলকাতার উত্তর দিকের ছোট্ট পাড়াটার রাস্তায় হাঁটছিল নীলয়। রোদ পড়েছে ঠিকই, কিন্তু বাতাসে এখনো কাঁপুনি। […]
গল্প : দোতলা বাস আর প্রথম প্রেম।
কলেজ থেকে বাড়ি ফিরতে দোতলা বাস ধরত রিয়া। একদিন উপরের সিটে বসে দেখল—একটা ছেলে তাকে দেখে হাসছে। নাম—সমর। ধীরে ধীরে প্রতিদিন একই বাসে দেখা হতে হতে তারা কথা বলতে শুরু করল। একদিন বাস খুব ভিড়। সামান্য ধাক্কায় রিয়ার হাত থেকে বই পড়ে গেল। সমর ঝুঁকে বই তুলে দিয়ে বলল—“তোমার বই, কিন্তু কাহিনীটা আমার মতো মনে […]
গল্প : আধখানা গল্প।
লেখক অভিজিৎ বছরের পর বছর ধরে নিজের উপন্যাস লিখছে—কিন্তু শেষ অধ্যায়টা লিখতেই পারছে না। কারণ? গল্পে যে মেয়েটি আছে—মীরা—তার বাস্তব রূপকে সে হারিয়েছে পাঁচ বছর আগে। এক সন্ধ্যায় বইমেলায় গিয়ে অভিজিৎ চমকে উঠল। সামনে দাঁড়িয়ে আছে মীরা—হুবহু একই। মীরা বলল—“তোমার লেখা পড়েছি। সেখানে আমি কেন হারিয়ে যাই?” অভিজিৎ বলল— “কারণ বাস্তবে তুমিই হারিয়ে গিয়েছিলে… কারণ […]
গল্প : ভুল নামের নোটবুক।
অনিকের অফিসে নতুন ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দিল তির্থা। প্রথম দিনেই সে ভুল করে অনিকের ডেস্কে নিজের নোটবুক রেখে চলে যায়। নোটবুকের ওপরে বড় করে লেখা—“তির্থার ডায়েরি – কেউ খুলবে না।” অনিক প্রথমে ফেরত দিতে চাইছিল, কিন্তু কৌতূহলে একটু উঁকি মারতেই দেখল প্রথম পাতায় লেখা— “নিজের মনের কথা কারও কাছে বলতে পারি না… তাই ডায়েরির কাছে […]
গল্প : হারিয়ে পাওয়া কণিকা।
অরূপ ট্রেনে বসে ছিল। তাকে বিপরীতে বসা মেয়েটির চোখ বারবার কিছু বলতে চাইছিল। নাম—কণিকা। দু’জনের কথাবার্তা মিলল, গল্প জমল, হাসি থামছিল না। স্টেশন এলে কণিকা নেমে গেল। কিন্তু তার ব্যাগে ভুল করে অরূপের দেওয়া বইটা থেকে গেল। বইয়ের ভিতরে অরূপের নম্বর। দু’দিন পর অরূপের ফোনে একটি মিষ্টি কণ্ঠস্বর— “আমি কণিকা… আপনার বইটা আছে আমার কাছে।” […]
গল্প : ফুলওয়ালার প্রেম।
রাজীব শহরের একটি ফুলের দোকানে কাজ করত। প্রতিদিন সকালে সে ফুল সাজাতে ব্যস্ত থাকত। একদিন দেখল—একটা মেয়ে প্রতিদিন একই সময় একটা গোলাপ কিনে নিয়ে যায়। মেয়েটির নাম—মেঘলা। রাজীবের মনে প্রশ্ন—কার জন্য এত গোলাপ? একদিন সাহস করে জিজ্ঞেস করল—“আপনি কি কারো জন্য ফুল নেন?” মেঘলা একটু দুঃখ নিয়ে বলল—“না। আমার মা গোলাপ খুব ভালোবাসতেন… তাই তাঁর […]
গল্প : নীল শাড়ির মেয়ে।
অভি প্রতিদিন কলেজে যাওয়ার পথে বাসস্ট্যান্ডে একই মেয়েটিকে দেখত—নীল শাড়ি, কপালে ছোট টিপ, আর শান্ত দু’টো চোখ। মেয়েটির নাম ছিল—ঋদ্ধিমা। অভি সাহস করে কোনও দিন কথা বলেনি, শুধু দূর থেকে দেখেই যেত। একদিন কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অভি গান গাইছিল। গান শেষে কেউ একজন বলল— “তুমি খুব সুন্দর গাও।” অভি তাকিয়ে দেখল—ঋদ্ধিমা! তারপর থেকেই দু’জনের মধ্যে […]
গল্প : বৃষ্টিভেজা দুপুরে।
মেঘভাঙা বৃষ্টির দুপুরে অফিস ছুটি হয়ে গিয়েছিল। ঝর্ণা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিল—ভিজে যাওয়ার ভয় নেই, কিন্তু একা থাকার ভয় ছিল। বৃষ্টি সবসময়ই তাকে অতীতের কোনো অদ্ভুত স্মৃতিতে ফিরিয়ে দিত। হঠাৎ একটা ছাতা মাথার উপরে থামল। তপন—ওদের অফিসের নতুন ছেলেটা। সে হাসলো—“এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে তো পুরোপুরি ভিজে যাবে।” ঝর্ণা একটু অপ্রস্তুত হলেও ছাতার নিচে দাঁড়াল। বৃষ্টির শব্দে […]
গল্প: “শেষ বিকেলের চিঠি”
সন্ধ্যার শেষে রং মাখা আকাশের নিচে রুদ্রর হাতে কাঁপছিল একটি পুরনো খাম। গ্রামের স্কুলের শেষ বেঞ্চে বসে পড়াশোনা করা দুই বন্ধু—রুদ্র আর মহুয়া। তাদের বন্ধুত্বটা ছিল খুব স্বাভাবিক, কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অদৃশ্য একটা অনুভূতি ভিড় জমিয়েছিল দু’জনের হৃদয়ে। মহুয়া কলকাতায় নার্সিং পড়তে যাবে—এই খবরটা শোনার পর থেকেই রুদ্রর ভিতরটা ফাঁকা হয়ে গেল। বহুদিন ধরে […]
“শেষ বিকেলের আলো” — একটি প্রেমের গল্প।
শহরের ব্যস্ত রাস্তাটা প্রতিদিনের মতোই শব্দে ভরা। কিন্তু সেই দিনের শেষ বিকেলটা অদ্ভুত নরম ছিল। রোদটা যেন একটু বেশি কোমল, আর বাতাসে ছিল কেমন যেন অজানা এক টান। নীলা কলেজ থেকে ফিরছিল। হাতে আঁকা খাতাটা বুকে জড়িয়ে হাঁটছিল ধীর পায়ে। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিল অয়ন—তার পুরোনো স্কুল বন্ধু। বহুদিন পর দেখা হওয়ায় তারা দু’জনেই একটু […]