Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

কাশি কমাতে হোক বা বাতের ব্যথা বাসক পাতার গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন।।।

কাশি কমাতে হোক বা বাতের ব্যথা বাসক পাতার গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নিন।
বসাক পাতার ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে কথা বললে প্রথমেই বলা যায় যে, পাতা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ওষুধ তৈরিতে। তাজা এবং শুকনো পাতা উভয়ই ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বাসক পাতায় ভ্যাসিসিন (বসক পাতার গুণ) নামক একটি প্রাকৃতিক পদার্থ এবং কিছু প্রয়োজনীয় তেল রয়েছে।

বসাক পাতা ব্যবহার সাধারণত ঠান্ডা ও কাশি কমাতে ব্যবহৃত হয়। দীর্ঘদিন ধরে বুকে জমে থাকা কফকে তরল করতে বাসক পাতার রস ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাসক পাতায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান বুকে জমে থাকা কফ গলিয়ে ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।
বাসক পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন –
১। কাশি কমাতে বাসক পাতা
আগেই যেমন বলা হল সর্দি কাশি কমাতে বাসক পাতার ব্যবহার অনস্বীকার্য। যদি বহু পুরনো সর্দি বা কাশির সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে দু-চারটি বাসক পাতা খুব ভাল করে ধুয়ে বেটে নিয়ে সেই রস যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে উপশম হয়। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে বাসক পাতা প্রচন্ড তেতো হয়। কাজেই এক চামচ মধুর সঙ্গে এক চামচ বাসক পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালিপেটে বেশ কয়েকদিন খেতে পারেন। এরপর অবশ্যই এক গ্লাস জল খাবেন। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই কাশি কমে যাবে।
২। যক্ষ্মা রোধে বাসক পাতা
বাসক পাতার ঔষধি গুণ গুলির মধ্যে একটি হল বাসক পাতা যক্ষ্মা বা টিউবারকিউলোসিস রোগ সারাতে সাহায্য করে। বাসক পাতায় অ্যান্টি-মাইক্রোবাল উপাদান রয়েছে যা যক্ষ্মা কমাতে (বাসক পাতার গুনাগুন) সাহায্য করে। এছাড়াও ব্রঙ্কাইটিস ও হুপিং কাশির সমস্যা সমাধানেও বাসক পাতা সাহায্য করে।
৩। বাতের ব্যথায় উপশম করে
বাসক পাতার ঔষধিগুণ (Bashok Pata) গুলির মধ্যে আরও একটি হল এই পাতা বাতের ব্যথাও উপশম করতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে যা আরট্রাইটিস, বাতের ব্যথা, গাঁটে ব্যথা ইত্যাদি নিরাময় করতে সাহায্য করে। কয়েকটি বাসক পাতা (Basak Pata Benefits) বেটে তার সঙ্গে হলুদ ও চুন মিশিয়ে লাগালে বাতের ব্যথা কমে বলে অনেকে দাবী করেন।
৪। রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে
অনেকেরই মুখে ব্রণ হয় বা পেটে সমস্যা হয় অথবা নানারকম অ্যালারজির সমস্যা থাকে। এই সমস্যাগুলো বেশিরভাগ সময়েই তখন হয় যখন রক্ত পরিষ্কার থাকে না। বাসক পাতার (Bashok Pata) নিয়মিত সেবনে কিন্তু আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার হয়। শুধু তাই নয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে।
৫। জ্বর হলে বাসক পাতা খান
জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বাসক পাতা (Bashok Pata) যথেষ্ট সাহায্য করে। এছাড়াও অনেকসময়েই জ্বরের সঙ্গে সর্দি ও কাশির সমস্যা থাকে। সেক্ষেত্রে এক চামচ মধু, এক চামচ তুলসি পাতার রস এবং এক চামচ বাসক পাতার রস (Basak Pata Benefits) খেলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
৬। শ্বাসকষ্টে বাসক পাতা
বাসক পাতা কাশি, সর্দি, ব্রঙ্কাইটিস, হাপানি ইত্যাদি নিরাময় করতে সাহায্য করে। বাসক পাতার ঔষধি গুণ আমাদের শ্বাসনালী প্রশস্ত করতে (বাসক পাতার গুনাগুন) সাহায্য করে যার ফলে শ্বাসকষ্ট কমে এবং ব্রঙ্কাইটিস ও হাপানি রোগীদের উপশম পেতে সাহায্য করে। হাপানির ওষুধ তৈরি করতেও অনেকসময়ে বাসক পাতার ব্যবহার (Basak Pata Uses) দেখা যায়।
৭। শরীরের নানা ‘দোষ’ কাটাতে
আয়ুর্বেদ মতে আমাদের শরীরে নানা দোষ থাকে যার ফলে আমাদের নানারকমের শারীরিক সমস্যা ও অসুখ হয়। আয়ুর্বেদ অনুসারে, শরীরের সুস্থ থাকা নির্ভর করে বায়ু, পিত্ত এবং কফ, এই তিনটি বিষয়ের ভারসাম্যের উপর। এর কোনওটার মাত্রা যদি বেড়ে যায়, তা হলেই দেখা দেয় নানা সমস্যা। তবে বাসক পাতার (Bashok Pata) নিয়মিত সেবনে আমাদের শরীরে এই তিনটি বস্তুর ভারসাম্য বজায় থাকে এবং শরীর সুস্থ থাকে।
নিয়মিত বাসক পাতার রস খেলে খিঁচুনি বা মৃগীরোগ সারে বলে অনেকেই দাবী করেন।
অনেকের গায়ে খুব দুর্গন্ধ হয়, তাঁরা প্রতিদিন বাসক পাতা জলে ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে স্নান করলে গায়ের দুর্গন্ধ দূর হয়।
।। সংগৃহীত।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৩১ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ৩১ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–
(ক) জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস ৷
আজ যাদের জন্মদিন—-

১৫৯৬ – রেনে দেকার্ত, ফরাসি দার্শনিক ও আধুনিক দর্শনের জনক, গণিতজ্ঞ, বিজ্ঞানী।

১৯১৪ – অক্তাবিও পাজ, সাহিত্যে নোবেলজয়ী (১৯৯০) ম্যাক্সিকান কবি।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭১৩ – ইউট্র্যাক্ট নগরের সন্ধির মাধ্যমে স্পেনীয় উত্তরাধিকার সংক্রান্ত মহাযুদ্ধের অবসান হয়।
১৭২৭ – ইংরেজ পদার্থ ও গণিতবিদ বিশ্বের প্রধানতম বিজ্ঞানীদের অন্যতম আইজ্যাক নিউটনের মৃত্যু।
১৭৭৪ – কলকাতায় পোস্ট মাস্টার জেনারেলের পদ সৃষ্টি করা হয়।
১৮০৭ – খিদিরপুর থেকে প্রথম বাষ্পচালিত ব্রিটিশ-ভারতীয় জাহাজ জলে ভাসানো হয়।

১৮২৪ – প্রথম ভারতীয় টাকশালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়।
১৮৮২ – কলকাতায় প্রথম টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালু হয়।

১৮৮৯ – প্যারিসে আইফেল টাওয়ার উদ্বোধন করা হয়।
১৯২১ – মঙ্গোলিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
১৯৫৪ – জেনারেল গিয়াপের নেতৃত্বে ভিয়েত মীন নামে পরিচিত ভিয়েতনামের বাহিনী দিয়েন বিয়েন ফুতে ফরাসি বাহিনীকে অবরোধের সূচনা করে।

১৯৬৬ – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন লুন টেন নামের প্রথম চন্দ্র প্রদক্ষিণকারী একটি মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে।

১৯৭১ – সাহিত্যিক ও সাংবাদিক শহীদ সাবের নিহত হন।
১৯৭৯ – আরব লীগের সদস্যরা এই সংস্থায় মিশরের সদস্য পদ নাকচ করে দেয়।
১৯৭৯ – ইংল্যান্ডের রক্ষনশীল দলের এম.পি. এয়ারি নিভ কমন্সসভার বাইরে নিজ মোটর গাড়িতে বোমা বিস্ফোরনে প্রাণ হারান।
১৯৯১ – মধ্যরাতে ওয়ারশ জোট আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত করা হয়।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৬৩১ – জন ডান , ইংরেজ কবি।

১৬৬৩ – মোগল সেনাপতি মীর জুমলার প্রয়াত হন।

১৭২৭ – প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক আইজাক নিউটন।

১৯১৭ – এমিল ফন বেরিং, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান জীববিজ্ঞানী।

১৯৯১ – শিল্পপতি এ কে খান-এর মৃত্যু।
২০১৩ – ছোটদের বাংলা গানের যশস্বী কণ্ঠ শিল্পী সনৎ সিংহ।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে ভারতের’ফার্স্ট লেডি অফ ইণ্ডিয়ান স্কিন’খ্যাত অভিনেত্রী – দেবিকা রাণী।।।

দেবিকা রানী চৌধুরী, সাধারণত দেবিকা রানী নামে পরিচিত, ১৯৩০ থেকে ১৯৪০ এর দশক পর্যন্ত ভারতীয় চলচ্চিত্রের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হন। ভারতীয় পর্দার ফার্স্ট লেডি হিসাবে সমাদৃত, চলচ্চিত্র শিল্পে তার অবদানগুলি একটি পরিবর্তনশীল যুগে উল্লেখযোগ্য ছিল।
১৯০৮ সালের ৩০শে মার্চ ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ওয়াল্টেয়ারে একটি ধনী ও শিক্ষিত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণকারী দেবিকা রানীর শিকড় সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধিতে গভীরভাবে প্রোথিত ছিল।

তার পিতা কর্নেল এমএন চৌধুরী ছিলেন মাদ্রাজের প্রথম ভারতীয় সার্জন-জেনারেল, যখন তার পূর্বপুরুষ তার পিতামহ, রাজশাহী জেলার পাবনার একজন জমিদার এবং কলকাতার আইনি ও সাহিত্যিক বৃত্তে প্রভাবশালী তিন মামাদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের গর্বিত করেছিলেন। .
রানীর প্রথম বছরগুলি যুক্তরাজ্যে অতিবাহিত হয়েছিল, যেখানে তিনি লন্ডনের সাউথ হ্যামলেটের বোর্ডিং স্কুলে শিক্ষিত হন। আভিজাত্যের সাথে তার সংযোগ তার মাতৃ বংশের মাধ্যমে প্রসারিত হয়েছিল, বিশেষত নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মীয়। দেবিকা রানীর মা, লীলা চৌধুরীর নানী, ঠাকুরের বড় বোন ছিলেন।
১৯৩৩ সালে, দেবিকা এবং তার স্বামী হিমাংশু রাই জার্মানি থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং একটি সিনেমাটিক যাত্রা শুরু করেন যা ভারতীয় চলচ্চিত্রে একটি স্থায়ী ছাপ রেখে যাবে। তাদের ফিল্ম, “কর্মা,” শিল্পের প্রথম দিকের সূচনা করে। এটি ছিল একজন ভারতীয় দ্বারা নির্মিত প্রথম ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র এবং সেই সময়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রে দীর্ঘতম চুম্বনের দৃশ্য দেখানো হয়েছিল, একটি রেকর্ড যা 2014 সালের হিসাবে 80 বছরেরও বেশি সময় ধরে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। কর্ম,” বলিউডের প্রথম ইংরেজি গান বলে মনে করা হয়।
দেবিকা রানীর আন্তর্জাতিক প্রশংসা বৃদ্ধি পায় লন্ডনের প্রেস থেকে তার প্রশংসার মাধ্যমে। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের একজন সমালোচক তার “সৌন্দর্য” এবং “কবজ” এর প্রশংসা করেছেন, এবং একজন নেতৃস্থানীয় তারকা হিসাবে তার উত্থানের পূর্বাভাস দিয়েছেন। ১৯৩৩ সালে, বিবিসি ব্রিটেন তাকে তাদের প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচারে অভিনয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানায় এবং তিনি ভারতে বিবিসির শর্টওয়েভ রেডিও সম্প্রচারের উদ্বোধন করেন। ইংল্যান্ডে তার সাফল্য সত্ত্বেও, তার হিন্দি চলচ্চিত্র “নাগিন কি রাগিনী”, ১৯৩৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, ভারতীয় দর্শকদের মোহিত করতে ব্যর্থ হয়। যাইহোক, এটি ভারতীয় সিনেমার অন্যতম প্রধান অভিনেত্রী হওয়ার পথকে বাধা দেয়নি, যা শেষ পর্যন্ত সমালোচকরা স্বীকার করেছেন।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দেবিকা রানীর উত্তরাধিকার ভারতীয় সিনেমায় নারীর চিত্রায়নে তার অগ্রগামী চেতনা এবং স্থায়ী প্রভাবের প্রমাণ। রাজকীয় বংশ থেকে রূপালী পর্দায় তার যাত্রা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সিনেমাগত উদ্ভাবনের এক অনন্য মিশ্রণকে আবদ্ধ করে।
চলচ্চিত্র—-
অছুত কন্যা, সাবিত্রী, জীবন প্রভাত, ইজ্জত, প্রেম কাহানি, নির্মলা, মমতা অউর মিঞা বিবি, জীবন নাইয়া, জন্মভূমি, বচন, দুর্গা, অনজান, হমারি বাত, কর্ম ম, জওয়ানি কি হাওয়া।
১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার দেবিকা রাণীকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে সোভিয়েত রাশিয়া তাকে সোভিয়েত ল্যান্ড নেহরু পুরস্কার প্রদান করে।২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে তার সম্মানে একটি ডাকটিকিট চালু করে।
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই মার্চ শ্বাসনালীর সংক্রমণের ফলে এই শহরেই দেবিকার মৃত্যু ঘটে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার মৃতদেহের সৎকার করা হয়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

নির্জনতা প্রিয় জঙ্গল-প্রেমীদের আদর্শ আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতা।।।

তোর্সা নদীর তীরে অবস্থিত, চিলাপাতা বন ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ বনভূমি এলাকাগুলির মধ্যে একটি। কালাচিনি, বুড়ি বসরা এবং বেনিয়া সহ বেশ কয়েকটি নদী দ্বারা কাটা বনটি এতটাই বিস্তৃত যে এমনকি গাইডদের জন্য এটি একদিনে ঢেকে রাখা কঠিন বলে মনে হয়। জলদাপাড়া এবং গোরুমারার মতো ডুয়ার্সে তার আরও ঘন ঘন প্রতিপক্ষের বিপরীতে, চিলাপাতা কম দর্শক দেখে, যাঁদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ অফার করে যারা মার-ধর-পথের দুঃসাহসিক কাজ করতে চান।

এটি হাতি সাফারির জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত।
বন শুধু বন্যপ্রাণী উত্সাহীদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল নয় বরং এটি ইতিহাসে রক্ষিত একটি সাইট। কিংবদন্তি আছে যে চিলাপাতা কোচ রাজাদের শিকারের জায়গা হিসাবে কাজ করেছিল, বনের নাম চিল্লার নামে, একজন সেনাপতি তার দ্রুত আক্রমণের জন্য পরিচিত। বনে প্রবেশের জন্য, একজনকে অবশ্যই রেঞ্জ অফিস থেকে একটি পারমিট নিতে হবে, সাফারিগুলি সকাল 5টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করে।
চিলাপাতার ঘন ছাউনি এমন জায়গা তৈরি করে যেখানে সূর্যের আলো খুব কমই পৌঁছায়, কোচ রাজাদের যুগের ধ্বংসাবশেষ উন্মোচন করে। এই বনে গন্ডার, হাতি এবং ভাগ্য অনুমতি দিলে বাঘ এবং চিতাবাঘ সহ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল। বন্যের মধ্যে, কেউ নল রাজাদের অন্তর্গত দুর্গগুলির ধ্বংসাবশেষও খুঁজে পেতে পারে, যা জঙ্গল সাফারির অভিজ্ঞতায় রহস্যের একটি স্তর যুক্ত করে।
চিলাপাতার আরেকটি অনন্য দিক হল বিপন্ন রামগুয়া গাছ, যা এখন চোরাচালানের হুমকির সম্মুখীন। এর বাসিন্দাদের মধ্যে শক্তিশালী কিং কোবরা অন্তর্ভুক্ত থাকায়, গাইড সবসময় দর্শকদের সাবধানে চলার পরামর্শ দেয়। ডুয়ার্সের অন্যান্য বনের তুলনায়, চিলাপাতা আরও আদিম এবং অস্পৃশ্য মরুভূমির অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
চিলাপাতা দেখার জন্য, যাত্রীরা বাগডোগরা বিমানবন্দরে উড়ে যেতে পারে এবং তারপরে সড়কপথে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা ভ্রমণ করতে পারে। যারা রেল পছন্দ করেন তাদের জন্য, হাসিমারা থেকে বনটি ৫ কিমি, আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে ২৩ কিমি এবং নিউ আলিপুরদুয়ার থেকে 20 কিমি দূরে। রাস্তার যাত্রীদের প্রথমে আলিপুরদুয়ার পৌঁছতে হবে, যেখান থেকে চিলাপাতা ২০ কিমি দূরে। এই অঞ্চলে অসংখ্য মনোরম রিসর্ট এবং থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, যা একটি স্মরণীয় থাকার জন্য চমৎকার জঙ্গলের দৃশ্য প্রদান করে।
ইতিহাস উৎসাহী, বন্যপ্রাণী প্রেমিক বা অ্যাডভেঞ্চার সন্ধানকারীর জন্যই হোক না কেন, চিলাপাতা বন প্রকৃতির অস্পৃশ্য সৌন্দর্যের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দেয়।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাংলার খ্যাতিমান শিশু সাহিত্যিক ও লোককথার সংগ্রাহক – দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার, প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি ।।।

দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক এবং বাংলার লোককাহিনী সংগ্রাহক। তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছিল সুন্দরভাবে বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা লোককাহিনীর নথিবদ্ধ করা, তাদের মূল সারাংশ সংরক্ষণ করা। মৌখিক গল্প বলার ফর্ম্যাটে ধরে রাখা এই গল্পগুলি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির একটি মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠেছে।

১৫ এপ্রিল, ১৮৭৭ সালে, বর্তমানে বাংলাদেশের সাভারের কাছে উলাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, দক্ষিণারঞ্জন বিশিষ্ট মিত্র মজুমদার পরিবারে ছিলেন। তার পিতা-মাতা ছিলেন কুসুমময়ী এবং রামদারগঞ্জ মিত্র মজুমদার। দশ বছর বয়সে, তিনি ১৮৮৭ সালে ঢাকার কিশোরীমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং পরে ১৮৯৩ সালে সপ্তম শ্রেণীতে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে স্থানান্তরিত হন। একাডেমিকভাবে সংগ্রাম করে, তার বাবা তাকে তার খালা, রাজলক্ষ্মী চৌধুরানীর কাছে টাঙ্গাইলে থাকতে পাঠান। তিনি সন্তোষ জানহাবী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এখানে, তিনি দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন, অবশেষে ২১ বছর বয়সে তার বাবার সাথে মুর্শিদাবাদে চলে যান, যেখানে তিনি পাঁচ বছর বসবাস করেন।
লোককথার জগতে তার যাত্রা শুরু হয় প্রথমে তার মা কুসুমময়ী দেবীর সাথে এবং তার মৃত্যুর পর তার খালা রাজলক্ষ্মী দেবীর সাথে। সাহিত্যে দক্ষিণারঞ্জনের প্রবেশ তাঁর স্কুলের বছরগুলিতেই চিহ্নিত হয়েছিল, ২৫ বছর বয়সে তাঁর প্রথম বই ‘উত্তরণ কাব্য’ প্রকাশের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল। এর আগে, তিনি ‘সুধা’ মাসিক পত্রিকার জন্যও সম্পাদনা করেছিলেন। বাবার সঙ্গে মুর্শিদাবাদ।
এই আখ্যানটি দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের বাংলা লোকসাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদান, আঞ্চলিক গল্পের সারমর্মকে ধারণ করে এবং বাঙালি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৃহত্তর বর্ণালীতে তাদের একটি স্থান নিশ্চিত করে।
উল্লেখযোগ্য সাহিত্য–সম্পাদনা
ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরদাদার ঝুলি, ঠানদিদির থলে, দাদামশায়ের থলে, খোকাবাবুর খেলা, আমাল বই, চারু ও হারু, ফার্স্ট বয়, লাস্ট বয়, বাংলার ব্রতকথা, সবুজ লেখা, আমার দেশ, সরল চন্ডী, পুবার কথা,উৎপল ও রবি, কিশোরদের মন, কর্মের মূর্তি, বাংলার সোনার ছেলে, সবুজ লেখা, পৃথিবীর রূপকথা (অনুবাদ গ্রন্থ), চিরদিনের রূপকথা, আশীর্বাদ ও আশীর্বাণী ।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে মার্চ কলকাতায় প্রয়াত হন ।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রথিতযশা বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীনাথ ভাদুড়ী’র প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।

সতীনাথ ভাদুড়ী (২৭ সেপ্টেম্বর ১৯০৬ – ৩০ মার্চ ১৯৬৫) ছিলেন একজন বাঙালি ভারতীয় ঔপন্যাসিক এবং রাজনীতিবিদ। তিনি তাঁর সাহিত্যিক ছদ্মনামে চিত্রা গুপ্ত নামে পরিচিত ছিলেন।

প্রাথমিক জীবন –

সতীনাথ ভাদুড়ী ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯০৬ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির পূর্ণিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তার পিতা ইন্দুভূষণ ভাদুড়ি আইন অনুশীলন করতেন।

বিজয়া দশমী, মায়ের বিদায়ের দিন সন্ধেয়। চার দিকে উত্‍সব শেষের বিষণ্ণতা। তার মধ্যেই কোশী নদীর পাড়ে পূর্ণিয়ার ‘সবুজকুন্তলা’ ভাট্টাবাজারে ইন্দুভূষণ ভাদুড়ী ও রাজবালাদেবীর ঘরে এলেন ষষ্ঠ সন্তান সতীনাথ। তার পৈতৃক নিবাস ছিল নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে।১৯২৮ খ্রীস্টাব্দে মা রাজবালা এবং দিদি করুণাময়ীর সাতদিনের আগে-পরে মৃত্যু ঘটে। পিতা ইন্দুভূষণের অভিজাত গম্ভীর ব্যবহারে সতীনাথ প্রথম থেকেই ছিলেন নিঃসঙ্গ এবং অন্তর্মুখিন।
শিক্ষা-
তার বাল্যশিক্ষা, আইনকর্ম, রাজনীতিতে যোগদান ও ত্যাগ, সাহিত্য-সাধনা, এমনকি মৃত্যুও পূর্ণিয়া জেলাতেই নিবদ্ধ থাকে। ১৯২৪ খ্রীস্টাব্দে ডিভিশনার স্কলারশিপ নিয়ে ফার্স্ট ডিভিশনে ম্যাট্রিক পাশ, ১৯২৬-এ পাটনা সায়েন্স কলেজ থেকে আই. এস. সি., ১৯২৮-এ অর্থনীতিতে অনার্স নিয়ে বি. এ. ১৯৩০-এ অর্থনীতিতে এম. এ. এবং ১৯৩১-এ পাটনা ল কলেজ থেকে বি. এ. পাশ করে ওকালতিতে যোগদান করেন।
তিনি তার বিএল ডিগ্রি সম্পন্ন করে ১৯৩২ এবং ১৯৩৯ সালের মধ্যে পাটনায় আইন অনুশীলন শুরু করেন।
কর্মজীবন ও স্বাধীনতার অন্দলন –
এরপর তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন এবং পূর্ণিয়ার জেলা সম্পাদক হন। এর পর ব্রিটিশ সরকারের ‘নেক নজরে’ পড়লেন তিনি। গ্রেফতার করা হল। পাঠানো হল পূর্ণিয়া জেলে। তিনি ভাগলপুর কারাগারে দুইবার বন্দী ছিলেন: ১৯৪০-৪১ এবং ১৯৪২-৪৫। ১৯৪২ সাল। ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে উত্তাল হল দেশ। তিনিও তখন গভীর রাতে ‘জল কাদা ভেঙে বিনা টর্চের আলোয় ১৫-২০ মাইল’ হেঁটে গ্রামে গ্রামে গিয়ে সভা সংগঠিত করছেন। ১৯৪৮ সালে, তিনি কংগ্রেস থেকে ছিটকে পড়েন এবং সমাজতান্ত্রিক দলে যোগ দেন।

তার কাজ-

সতীনাথের প্রথম উপন্যাস জাগরী , যার জন্য তিনি প্রথম রবীন্দ্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। এই বইটি তাকে যথেষ্ট খ্যাতি এনে দেয় এবং ১৯৬৫ সালে UNESCO কালেকশন অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ওয়ার্কসের অংশ হিসেবে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়। একটি রাজনৈতিক উপন্যাস হিসেবে, জাগরী বাংলা সাহিত্যে একটি অনন্য স্থান দখল করে আছে। তিনি প্যারিসে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি ভ্রমণকাহিনী লিখেছেন, সত্যি ভ্রমন কাহিনী । তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে গণনায়ক, চিত্রগুপ্তর ফাইল , ধোরাই চরিত মানস, অচিন রাগিনী, অপরিচিত, সঙ্গত, পারুয়ার নোটবুক ইত্যাদি।
সমালোচনামূলক প্রশংসা-
তাঁর ছোট গল্পগুলি হল বিচার ব্যবস্থার ব্যঙ্গাত্মক সমালোচনা, পক্ষপাতদুষ্ট রাজনীতি, অশোধিত নারীবাদ ইত্যাদি। প্যারোডি-টেক্সট বা এই কালো কমেডিগুলি বিশ্লেষণ করা খুবই কঠিন বা প্রায় অসম্ভব কারণ সমালোচনাগুলি স্ব-স্বীকৃত প্রাতিষ্ঠানিক সংগঠিত অর্থায়নে পরিচালিত বিজ্ঞান বা অ্যানাটোমো-বায়ো সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারে না। ল্যাব-স্টেট বিজ্ঞানের রাজনীতি, জরিপ কৌশল, পরিসংখ্যান ইত্যাদি। ভাদুড়ির বক্তৃতার সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ প্যারোডির প্যারোডির দিকে পরিচালিত করেছিল। একটি সমালোচক প্রমিত এবং সেইসাথে প্রাক-অনুমিত আনুষ্ঠানিক সরঞ্জাম দিয়ে গল্প-লাইন পরিমাপ করার জন্য একটি দুঃখিত চিত্র কাটাতে পারে। ভাদুড়ীর গল্পগুলি দ্বৈত অধিবেশনের দৃষ্টান্ত, যেখানে বিদ্যমান নাগরিক ও রাজনৈতিক সমাজ এবং স্টিরিওটাইপিকাল সাহিত্য সমালোচকগুলি এক সময়ে সূক্ষ্ম বুদ্ধি দ্বারা আক্রমণ করা হয়। ভাদুড়ী মডেল-তাত্ত্বিক ফর্মুলারাইজড সমালোচনার মৃত্যু ঘোষণা করেন।
তার বেশিরভাগ লেখাই বাংলা ও পূর্ব বিহারের মানুষের জীবনধারাকে চিত্রিত করে।
সতীনাথ ভাদুড়ীর রচনাসমূহ:
(ক) সতীনাথ ভাদুড়ীর উপন্যাস : ‘জাগরী’ (১৯৪৫), ‘ঢেঁাড়াই চরিতমানস’ (প্রথম চরণ ১৯৪৯, দ্বিতীয় চরণ ১৯৫১), ‘চিত্রগুপ্তের ফাইল’ (১৯৪৯), ‘সত্যি ভ্রমণকাহিনী’ (১৯৫১), ‘অচিনরাগিণী’ (১৯৫৪), ‘সংকট’ (১৯৫৭), ‘দিকভ্রান্ত’ (১৯৬৬)।
(খ) সতীনাথ ভাদুড়ীর গল্প সংকলন : ‘গণনায়ক’ (১৯৪৮), ‘অপরিচিতা’ (১৯৫৪), ‘চকাচকি’ (১৯৫৬), ‘পত্রলেখার বাবা’ (১৯৬০), ‘জলভ্রমি’ (১৯৬২), ‘আলোকদৃষ্টি’ (১৯৬২), ‘সতীনাথ-বিচিত্রা’ (মৃত্যুর পর প্রকাশিত)।
ঔপন্যাসিক সতীনাথ বেশ কিছু সার্থক ছোটগল্পেরও স্রষ্টা। তাঁর গল্প সংখ্যা ৬২। দেশ, আনন্দবাজার, অমৃতবাজার, যুগান্তর, পরিচয়, বিচিত্রা, চতুরঙ্গ, পূর্বাশা, দৈনিক কৃষক, স্বাধীনতা, বিশ্বভারতী ইত্যাদি খ্যাতনামা পত্রিকায় তার গল্পগুলি প্রকাশিত হয়। তাঁর গল্পের উত্‍স বাস্তব অভিজ্ঞতা। বৈশিষ্ট্য : মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী, ব্যঙ্গপ্রবণতা, মননশীলতা ও নিরাসক্তি। তাঁর গল্পের পটভূমি পূর্ণিয়ার মাটি ও মানুষজন।

প্রয়াণ –

তাঁর প্রয়াণ ছিল বড়ই বেদনার। ১৯৬৫ সালের ৩০ মার্চ তিনি ইহলোক ত্যগ করেন।

।।তথ্য ঋণ : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন পেজ।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৩০ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ৩০ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) বিশ্ব চিকিৎসক দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭৪৬ – ফ্রান্সিস্কো গোয়া, স্প্যানিশ চিত্রকর।

১৮৪৪ – পল ভের্লেন, ফরাসী কবি।

১৮৫৩ – ভিনসেন্ট ভ্যান গখ ওলন্দাজ চিত্রশিল্পী।
১৮৭০ – বসুমতীর সম্পাদক ও লেখক সুরেশচন্দ্র সমাজপতি।
১৮৭৪ – নিকোলাই রদেস্কু, রোমানিয়ান সেনা কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ।
১৮৯১ – যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশলী ও যন্ত্র নির্মাতা আর্থার উইলিয়াম সিডনি হ্যাংরিটন জন্মগ্রহণ করেন।

১৮৯৯ – শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি লেখক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯০৮ – দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার এ সম্মানিত প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেত্রী দেবিকা রাণী।

১৯৭৯ – নোরা জোন্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত জ্যাজ্‌ (jazz) সঙ্গীত শিল্পী, পিয়ানো বাদক এবং অভিনেত্রী।
১৯৮৬ – সার্জিও র‌্যামোস, স্প্যানিশ ফুটবল খেলোয়াড়।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৮১২ – কলকাতায় এথেনিয়াম থিয়েটার নামে রঙ্গমঞ্চ খোলা হয়।
১৮৬৭ – রাশিয়ার কাছ থেকে আমেরিকার আলাস্কা খরিদ।
১৯৩০ – চীনে বামপন্থী চীনা সাহিত্যিক সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৭১ – শিক্ষাবিদ জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা শহীদ হন।
১৯৭৬ – ইসরাইল/প্যালেস্টাইন এলাকায় প্রথম ভূমি দিবস পালিত।
১৯৭৯ – ব্রিটিশ সাংসদ এ্যরি নীভ গাড়ি বোমা হামলায় নিহত।
১৯৮১ – যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রনাল্ড রেগান গুলিবিদ্ধ হন।
১৯৯২ – সত্যজিৎ রায় অস্কার পুরস্কার ‘মাস্টার অব ফিল্ম মেকার’ লাভ করেন।
১৯৯৬ – বিএনপি সরকারের প্রথম সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে পদত্যাগ।
২০০৬ – যুক্তরাজ্যে টেরোরিজন এ্যাক্ট – ২০০৬ আইন হিসাবে গৃহীত হয়।
২০০৯ – ১২ জন সশস্ত্র লোক পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত মানাওয়ান পুলিশ একাডেমী আক্রমণ করে।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৬৬৩ – মীর জুমলা, মোগল সেনাপতি।
১৯৪৮ – ইরানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানতাপস এবং সংগ্রামী আলেম আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ হোসেইন তাবাতায়ী বুরোজার্দি মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৫৭ – দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার বাংলা ভাষার রূপকথার প্রখ্যাত রচয়িতা ও সংগ্রাহক।

১৯৬৫ – সতীনাথ ভাদুড়ী প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক।

১৯৬৭ – মমতাজ বেগম, মহান বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগ্রামী নারী।

১৯৭১ – এ. কে. এম. সামসুল হক খান জেলা প্রশাসক -কুমিল্লা জেলা।

২০০২ – আনন্দ বক্সী প্রখ্যাত ভারতীয় কবি,গীতিকার ও সুরকার।

২০০৫ – ফ্রেড কোরমাতসু, জাপানী বংশদ্ভূত মার্কিন এক্টিভিস্ট।

২০১৩ – ড্যানিয়েল হফম্যান, মার্কিন কবি ও শিক্ষাবিদ।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব চিকিত্‍সক দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং পালনের গুরুত্ব ও তাত্‍পর্য।।।

১৯৩৩ সালের ৩০ মার্চ জর্জিয়ার উইন্ডার ব্যার কাউন্টি অ্যালায়েন্স দিবসটি প্রথম উদযাপন করে। চিকিত্‍সকদের সম্মান জানাতে এই দিনটি উত্‍সর্গ করার ধারণা দেন ডা. চার্লস বি অ্যালমন্ডের স্ত্রী ইউডোরা ব্রাউন অ্যালমন্ড। চিকিত্‍সা সেবা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে চিকিত্‍সক ও রোগীর সম্পর্ক হচ্ছে বিশ্ব চিকিত্‍সক দিবস এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

চিকিত্‍সা সেবা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে চিকিত্‍সক ও রোগীর সম্পর্ক হচ্ছে বিশ্ব চিকিত্‍সক দিবস এর অন্যতম উদ্দেশ্য।১৯৯০ সালে ৩০ অক্টোবর মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশ (সিনিয়র) সেদেশে ৩০ মার্চকে জাতীয় ডাক্তার দিবস পালনের জন্য আইন পাস করেন। উদ্দেশ্য ছিল ডাক্তারি পেশাকে সম্মান জানানো। সেবা দিয়ে রোগীদের সারিয়ে তোলা এসব মহত্‍ মানুষদের কার্ড, ছোটো উপহার কিংবা সংবর্ধনা ইত্যাদি দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
মানুষের সেবা করার মতো মহত্‍ এই পেশাকে সম্মান জানাতে ১৯৩৩ সাল থেকে এই দিবস পালিত হচ্ছে। চিকিত্‍সক, সার্জনরা রোগীদের জন্য ২৪/৭ কাজ করেন। তাদের এই ত্যাগ এবং পরিশ্রমকে সম্মান জানাতে দিনটি উদযাপন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৪২ সালের ৩০ মার্চ শল্য চিকিত্‍সায় প্রথম ইথার অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহার করেছিলেন ডা. ক্রফোর্ড ডব্লিউ লং। ঘটনাটি স্মরণীয় করে রাখতে সেই দিনটিকেই তারা বেছে নিয়েছিলেন।
তবে ৩০ মার্চ বিশ্ব চিকিত্‍সক দিবস হলেও বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশ বছরের বিভিন্ন দিনে জাতীয় চিকিত্‍সক দিবস পালন করেন। তাদের দেশের একজন চিকিত্‍সককে উত্‍সর্গ করেন সেই দিনটিকে। স্পেন, কিউবা এবং আর্জেন্টিনায় ৩ ডিসেম্বর পালিত হয় চিকিত্‍সক দিবস। ডা. কার্লোস জুয়ান ফিনলের জন্মদিন উপলক্ষে পালিত হত দিনটি। তিনি মশাবাহিত ভাইরাস যে হলুদ জ্বরের কারণ সেটি আবিষ্কার করেছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ায় , বিভিন্ন তারিখ রয়েছে যেখানে জাতীয় ডাক্তার দিবস স্বীকৃত হতে পারে, সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণকারী ৩০ শে মার্চ ।
কুয়েতে , জাতীয় ডাক্তার দিবস ৩ শে মার্চ পালিত হয়। কুয়েতি ব্যবসায়ী মহিলার জন্য এই উদযাপনের ধারণাটি এসেছিল; জাহরা সুলাইমান আল-মুসাভি। এবং তারিখটি তার কন্যা ডাঃ সুন্দুস আল-মাজিদির জন্মদিন হওয়ার কারণে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
ব্রাজিলে , জাতীয় ডাক্তার দিবস ১৮ অক্টোবর ছুটির দিন হিসাবে পালিত হয়, যেদিন ক্যাথলিক চার্চ সেন্ট লুকের জন্মদিন উদযাপন করে । চার্চের ঐতিহ্য অনুসারে প্রেরিত এবং ধর্মপ্রচারক সেন্ট লুক একজন ডাক্তার ছিলেন, যেমনটি নিউ টেস্টামেন্টে লেখা আছে।
জাতীয় চিকিত্সক দিবস ১ মে কানাডায় পালিত হয়। কানাডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা কানাডায় অনুশীলন করা প্রথম মহিলা চিকিত্সক ডঃ এমিলি স্টো- এর স্বীকৃতির জন্য তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছিল । সিনেট পাবলিক বিল S-248 প্রণীত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটিকে স্বীকৃতি দেবে।
চাইনিজ ডাক্তার দিবস [ zh ] বার্ষিক ১৯ আগস্ট চীনে একটি জাতীয় ছুটি হিসাবে পালিত হয় । তারিখটি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি প্ল্যানিং কমিশন (পিআরসি) দ্বারা ২০১৬ সালের চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য ও সুস্থতা সম্মেলনে নির্বাচিত হয়েছিল এবং ২০ নভেম্বর, ২০১৭-এ পিআরসি-এর স্টেট কাউন্সিল দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল ।
হরি ডক্টর ন্যাশনাল বা জাতীয় ডাক্তার দিবস প্রতি বছর ২৪ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ায় পালিত হয়। দিনটি ইন্দোনেশিয়ান ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আইডিআই) এর জন্মদিন উদযাপনের সাথেও চিহ্নিত।
ইরানে , আভিসেনার জন্মদিন (ইরানি মাস: শাহরিভার 1লা = আগস্ট ২৩) ডাক্তারদের জন্য জাতীয় দিবস হিসাবে স্মরণ করা হয় ।
মালয়েশিয়ায় , ডক্টর কানাগাসাবাই অনুসারে প্রতি বছর অক্টোবরের ১০ তারিখে ডাক্তার দিবস পালিত হয় । N. এটি প্রথম ২০১৪ সালে ফেডারেশন অফ প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশন , মালয়েশিয়া দ্বারা চালু করা হয়েছিল ।
তুরস্কে , ১৯১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১৪ মার্চ মেডিসিন দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ভিয়েতনাম ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫৫ সালে ডাক্তার দিবস প্রতিষ্ঠা করে। দিবসটি ২৭ ফেব্রুয়ারি বা কখনও কখনও এই তারিখের কাছাকাছি তারিখে পালিত হয়।
১০ মার্চ ভেনেজুয়েলার ডাক্তার দিবস। এই দিনটি হোসে মারিয়া ভার্গাসকে সম্মান জানাতে বেছে নেওয়া হয়েছিল , যিনি শুধুমাত্র একজন অসামান্য চিকিত্সক ছিলেন না বরং ভেনেজুয়েলা প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতিও ছিলেন।
নেপাল ২০ ফাল্গুন (৪ মার্চ) নেপালী তারিখে নেপালী জাতীয় ডাক্তার দিবসও উদযাপন করে। নেপাল মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে নেপাল প্রতি বছর এই দিবসের আয়োজন করে আসছে। ডাক্তার-রোগীর যোগাযোগ, ক্লিনিকাল চিকিত্সা এবং সম্প্রদায়-ভিত্তিক স্বাস্থ্য প্রচার এবং যত্ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে জাতীয় চিকিত্‍সক দিবস পালিত হয় ২৪ অক্টোবর। ইরানে ২৩ অগাস্ট পালন করা হয় জাতীয় চিকিত্‍সক দিবস।
ভারতে এই দিনটি ১ জুলাই তারিখে কিংবদন্তি চিকিত্‍সক ও পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের (১ জুলাই, ১৮৮২ – ১ জুলাই, ১৯৬২) সম্মানার্থে পালন করা হয়। কিউবা তে ৩রা ডিসেম্বরে ও ইরানে ২৩এ অগাস্ট এই দিনটি পালন করা হয়।
চিকিত্‍সাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সকল ব্যক্তিদের ভূমিকাকে সম্মান জানাতে জন্য ‘ চিকিত্‍সক দিবস’ পালন করা হয়। এদিন তাঁদের কাজ এবং দায়িত্বগুলি স্বীকৃতি দেওয়ার বিশেষ দিন।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

মূল্যবান মনুষ্য জীবনে বাসন্তীপূজা ও চৈত্র নবরাত্রি : স্বামী আত্মভোলানন্দ (পরিব্রাজক)।

ॐ সর্বমঙ্গল- মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ -সাধিকে।
শরণ‍্যে ত্র‍্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোহস্তু তে।।
শ্রীশ্রী চণ্ডীতে উল্লেখ পাওয়া যায় সমাধি নামক এক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে মেধা ঋষির আশ্রমে প্রথমবার বাসন্তী পুজো করেছিলেন রাজা সুরথ। দূর্গা সপ্তশতী, দেবী মাহাত্ম্য ও মার্কণ্ডেয় পুরাণে রাজা সুরথকে চিত্রগুপ্তের বংশধর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পৌরাণিক তথ্য অনুযায়ী রাজা সুরথ ছিলেন সুশাসক ও অপরাজেয় যোদ্ধা। কিন্তু একদা প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হন সুরথ। এই সুযোগে তাঁর সভাসদরাও লুটপাট চালায়। নিজের ঘনিষ্ঠদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে তিনি স্তম্ভিত হন। হতাশ হয়ে বনে বনে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেন। সুরথ রাজার রাজধানী ছিল বীরভূম জেলার বোলপুরের সুপুর। রাজা সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসাবে বেশ সুখ্যাতিসম্পন্ন ছিলেন। তিনি ছিলেন ক্ষত্রিয় বংশের। জীবনে কোনো যুদ্ধে তিনি পরাজিত হননি। কিন্তু সুরথ রাজার প্রতিবেশীরাজ্য (যবন রাজ্য) তার প্রতি হিংসাত্মক মনোভাবসম্পন্ন ছিল। যবন রাজ্য একদিন সুরথ রাজার রাজ্যকে আক্রমণ করে এবং তাদের কাছে সুরথ রাজের পরাজয় ঘটে। সেই সুযোগে তার (সুরথ) রাজসভার মন্ত্রী, ও অন্য সদস্যরা সব ধনসম্পত্তি লুঠ করে। কাছের লোকেদের এমন আচরণ দেখে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। অবশেষে সর্বহারা হয়ে বনে আশ্রয় নেন।

এমনই একদিন ঘুরতে ঘুরতে মেধা ঋষির আশ্রমে এসে উপস্থিত হন। মেধা ঋষি তাঁকে সেখানে থাকার আবেদন জানান। রাজা সেখানে বাস করলেও তাঁর মনে শান্তি ছিল না। নিজের রাজ্য ও প্রজার ভালো-মন্দের কথা তাঁকে ঘুমাতে দিত না। এরই মধ্যে একদা সমাধি নামক এক বণিকের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। সমাধি বণিকের স্ত্রী-পুত্রও তাঁর সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিবারের ভালোর জন্য চিন্তিত থাকতেন তিনি। রাজার মনে প্রশ্ন জাগল যে, তাঁরা দুজনেই আপনজনদের প্রতারণার শিকার হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁদের ভালোর কথা চিন্তাভাবনা করছেন? কেন তাঁদের প্রতি মনের মধ্যে কোনও ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে না? তাঁরা ঋষিকে একথা জিগ্যেস করেন যে, তাঁদের আপনজনেরা তাঁদের সঙ্গে এত খারাপ করা সত্ত্বেও কেন তাঁরা এখনও তাঁদের কল্যানের কথা ভাবছেন? এর উত্তরে মেধা ঋষি বলেন যে, সবই মহামায়ার ইচ্ছা। এর পর ঋষি মহামায়ার কাহিনি শোনান। তার পর তাঁদের কঠিন তপস্যা করার পরামর্শ দেন। মহামায়া দেবী দুর্গার আশীর্বাদ পেতে রাজা সুরথ ও বণিক সমাধি বসন্ত কালের শুক্ল পক্ষে দুর্গার আরাধনা করেন। বসন্ত কালে এই পুজো করা হয়েছিল বলে এটি বাসন্তী দুর্গা পুজো নামে পরিচিত। পরবর্তী কালে এই পুজোয় খুশি হয়ে দেবী তাঁদের রাজ্য, ধন-সম্পত্তি ফিরিয়ে দেন। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী তার পর থেকেই বসন্ত কালে দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। শ্রীরামচন্দ্রের দ্বারা শরৎ কালে দুর্গা পুজোর আগে পর্যন্ত বসন্ত কালেই দেবীর আরাধনা করা হত। বর্তমানে মুষ্টিমেয় কিছু স্থানে ও বাড়িতে বাসন্তী দুর্গা পুজোর আয়োজন করা হয়।

শ্রীশ্রী চণ্ডী এবং মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে মেধস মুনির আশ্রমেই পৃথিবীর প্রথম দুর্গাপুজো আয়োজিত হয়েছিল। সেটাকেই বাসন্তি পূজা বলা হয়। এটি পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর মহকুমার কাঁকসার গড় জঙ্গলে অবস্থিত। দুর্গাপুর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে গড়জঙ্গল। জঙ্গলের মধ্যে ২-৩ কিলোমিটার গেলেই পাওয়া যাবে মেধসাশ্রম। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের নিকটবর্তী গড় জঙ্গলে মেধসাশ্রমে ভূভারতের প্রথম দুর্গাপূজা হয়। এখানেই রাজা সুরথ বাংলা তথা মর্তে প্রথম দুর্গাপূজা করেছিলেন। কাঁকসার গড় জঙ্গলের গভীর অরণ্যের মেধাশ্রম বা গড়চণ্ডী ধামে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ‍্য পুজো শুরু করেন। বসন্তকালে পুজোর সূচনা হয়, তাই, বসন্তের নবরাত্রির পূজা বাসন্তিক বা বসন্ত কালীন দুর্গাপূজা নামে পরিচিত হয়। তারপর থেকেই বাংলা তথা ভূভারতে দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়। আগামী ৩০ মার্চ থেকে শুরু হবে চৈত্র নবরাত্রি। এই নবরাত্রির ষষ্ঠী থেকে দশমীর মধ্যে পালিত হবে বাসন্তী পুজো। চৈত্র নবরাত্রিতে হয় বাসন্তী পুজো। বাসন্তী পুজোকেই বাঙালির আসল দুর্গা পুজো বলে মনে করা হয়।

মহর্ষি মেধস মুনি বলিলেন, মহামায়া পরমা জননী অর্থাৎ আদিমাতা৷ যখন এই জগৎ ছিল না, তখন তিনি ছিলেন। যখন সূর্য্য ছিল না, চন্দ্র ছিল না, তারা নক্ষত্র এই পৃথিবী কিছুই ছিল না, তখন তিনি ছিলেন। তাঁহা হইতেই এই জগৎ সৃষ্ট হইয়াছে৷ তিনি এই জগৎকে মোহিত করিয়া রাখিয়াছেন বলিয়া তাঁহার নাম মহামায়া। জগৎকে তিনি সৃষ্টি করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই। সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জগৎকে ধরিয়া আছেন, এই জন্য তাঁহার আর এক নাম জগদ্ধাত্রী। তিনি ধারণ করিয়া না থাকিলে উৎপত্তির সঙ্গে সঙ্গেই এ জগতের লয় হইয়া যাইত। শক্তিরূপা সনাতনী আপনার বিশ্ব বিমোহিনী মায়া দ্বারা আপনাকে আচ্ছাদিত করিয়া নানারূপে আমাদের মধ্যে লীলা করিতে আসেন। কখনও তিনি পিতা মাতার কাছে নন্দিনী, ভ্রাতার কাছে ভগিনী, পতির কাছে জায়া, পুত্র কন্যার কাছে জননী। কখনও তিনি দীনের কাছে দয়া, তৃষিতের কাছে জল, রোগীর কাছে সেবা, ক্ষুধিতের কাছে ফল। কখন কত মূর্তিতে যে মা আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হন তাহা আর কি বলিব ? তাঁহার গুণ বর্ণনা করিয়া শেষ করিতে পারে, এমন শক্তি এ জগতে কার আছে ? তিনি আসিলেই জীবের সকল দুর্গতির অবসান হয়। এইজন্য তাঁহার আর এক নাম দুর্গা। দুর্গতিনাশিনী শ্রীদুর্গাই ভুবনমোহিনী ত্রিজগৎ প্রসবিনী আদ্যাশক্তি মহামায়া।

চৈত্র অমাবস্যার পরের দিন, অর্থাৎ চৈত্র শুক্লা প্রতিপদ থেকে শুরু হয় চৈত্র নবরাত্রি। এই বছর নবরাত্রি শুরু হবে আগামী ৩০ মার্চ থেকে। সেই দিনই করা হবে ঘট স্থাপন। দেবী মাতার নয়টি রূপ নবরাত্রি পূজা করা হয়। এই বছর ৩০ মার্চ প্রতিপদ শৈলপুত্রী, দ্বিতীয়া ৩১শে মার্চ ব্রহ্মচারিণী, তৃতীয়া ০১ এপ্রিল-চন্দ্রঘণ্টা, চতুর্থী ০২ এপ্রিল-কুষ্মাণ্ডা, পঞ্চমী ০৩ এপ্রিল-স্কন্দমাতা, ষষ্ঠী ০৪ এপ্রিল-কাত্যায়নী, সপ্তমী ০৫ এপ্রিল-কালরাত্রি, অষ্টমী ও নবমী ০৬ এপ্রিল-মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রী। চৈত্র নবরাত্রির নবমীতেই পালিত হয় রাম নবমী। মনে করা হয়, এই দিনেই জন্ম হয়েছিল রামচন্দ্রের। চৈত্র নবরাত্রি পুজোর প্রচলন উত্তর ও পশ্চিম ভারতে, শাস্ত্রে যে চারটি নবরাত্রিগুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে আমরা চৈত্র, আষাঢ়, আশ্বিন এবং মাঘ মাসের শুক্লা প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত চারটি নবরাত্রি দেখতে পাই। আষাঢ় ও মাঘ মাসের নবরাত্রিকে বলা হয় গুপ্ত নবরাত্রি। আশ্বিন মাসের নবরাত্রিকে শারদীয়া নবরাত্রি এবং চৈত্র মাসের নবরাত্রিকে বাসন্তী নবরাত্রি বলা হয়।

প্রাচীন কাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ, বিহারে চৈত্র মাসে দুর্গা পুজোর প্রচলন ছিল। এখনও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বাসন্তী দুর্গাপুজো করা হয়ে থাকে। বাঙালির সার্বজনীন পূজা ছাড়াও বর্তমানে রাজবাড়ী, জমিদার বাড়ি, কিছু প্রাচীন বনেদী বাড়ি এবং কিছু মঠ মন্দিরে এছাড়াও বিভিন্ন আশ্রম, মঠ ও মিশনে সন্ন্যাসীরা বাসন্তী দুর্গা পূজার আয়োজন করেন। এই বছর শ্রী শ্রী বাসন্তী দেবী দুর্গাপুজোর আমন্ত্রণ অধিবাস, ষষ্ঠী তিথি- ৩ এপ্রিল ২০২৫, সপ্তমীর পুজো, নবপত্রিকা স্নান- ৪ এপ্রিল ২০২৫, দুর্গাঅষ্টমী ও সন্ধি পুজো- ৫ এপ্রিল ২০২৫, নবমী পুজো- ৬ এপ্রিল ২০২৫, শ্রী বাসন্তী দেবী দুর্গা পুজো দশমী পুজো ও বিসর্জন- ৭ এপ্রিল ২০২৫।
জয় মা দুর্গা-জয় মা দূর্গা-জয় মা দূর্গা দূর্গতিনাশিনী… জগৎ জননী মাদূর্গা তোমার আশির্বাদ সকলের মস্তকে বর্ষিত হোক। জগৎ গুরু ভগবান স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের শুভ ও মঙ্গলময় আশির্বাদ আপনাদের সকলের শিরে বর্ষিত হোক, পিতা-মাতার আশির্বাদ সকলের শিরে বর্ষিত হোক, এই প্রার্থনা করি.!
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ।
স্বামী আত্মভোলানন্দ *পরিব্রাজক*

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৯ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ২৯ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক)  বোগান্ডা দিবস – সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক।
(খ) যুব দিবস – তাইওয়ান।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯২৭ – জন রবার্ট ভেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ ফার্মাকোলজিস্ট ও শিক্ষাবিদ।
১৯২৯ – উৎপল দত্ত, বাঙালি অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও লেখক।
১৯৩৫ – বাঙালি গীতিকার, সুরকার ও প্রযোজক বীরেশ্বর সরকার।

১৯৩৯ – নভেরা আহমেদ, বাংলাদেশি ভাস্কর। (মৃ. ২০১৫)
১৯৪১ – জোসেফ হুটন টেইলর জুনিয়র, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন পদার্থবিদ।
১৯৫১ – শাফী ইমাম রুমী, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা ৷
১৯৬০ – অ্যানাবেলা সচিওরা শাইওরা, মার্কিন অভিনেত্রী।
১৯৭৩ – মার্ক ওভারমার্স, ডাচ ফুটবলার।

১৯৮০ – ক্রিস ডি এলিয়া, মার্কিন অভিনেতা।
১৯৮৪ – ফিলিপ হানা, ইংরেজ গায়ক।
১৯৯৪ – সুলি, দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেত্রী, গায়ক ও নৃত্যশিল্পী।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৭৯৫ – পিয়ানো বাদক হিসেবে বেটোভেনের আত্মপ্রকাশ।
১৭৯৮ – সুইজারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়।
১৭৯৯ – দাসপ্রথা উচ্ছেদে নিউ ইয়র্কে আইন পাস হয়।
১৮০৭ – জার্মান জ্যোর্তিবিদ উইলহেম অলবার্স ক্ষুদ্রতম গ্রহ ভেস্টা আবিষ্কার করেন।
১৮৪৯ – লর্ড ডালহৌসি সমগ্র পাঞ্জাবকে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করে ঘোষণাপত্র প্রচার করেন।
১৮৫৪ – ডিরোজিও শিষ্য রামগোপাল ঘোষ ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
১৮৫৭ – ব্যারাকপুর সেনা ব্যারাকে মঙ্গল পান্ডে গুলি ছুড়ে সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা করেন।
১৮৭১ – রানি ভিক্টোরিয়া লন্ডনের আলবার্ট হল উদ্বোধন করেন।
১৯২০ – ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।
১৯৭৩ – সর্বশেষ মার্কিন সেনাদলের ভিয়েতনাম ত্যাগ।
১৯৭৪ – চালকবিহীন মার্কিন নভো অনুসন্ধান যান মেরিনার টেন বুধ গ্রহ ভ্রমণ করে।
১৯৮৪ – আতাউর রহমান খান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত।
১৯৯১ – বিশ্বের প্রাচীনতম কমিউনিস্ট পার্টি ব্রিটেন কমিউনিস্ট পার্টির নাম বদলে ‘ডেমোক্র্যাটিক লেফট’ রাখা হয়।
২০১৫ – অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে একাদশ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে অস্ট্রেলিয়া ৫ম বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭৭২ – ইমান্যুয়েল সুইডেনবার্গ, সুইডিস জ্যোতির্বিদ, দার্শনিক ।
১৯১২ – সুমেরু অভিযাত্রী রবার্ট স্কট।

১৯৪৮ – হ্যারি প্রাইস, ইংরেজ লেখক।
১৯৭০ – আন্না লউইসে স্ট্রং,আমেরিকান সাংবাদিক।

১৯৭১ – বাঙালি আইনজীবী সমাজকর্মী, ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।

১৯৭৮ – ইবরাহীম খাঁ, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক।

১৯৮৭ – প্রখ্যাত বাঙালি সরোদশিল্পী তিমির বরণ ভট্টাচার্য।
১৯৮৯ – বার্নার্ড বলিয়ের, ফরাসি অভিনেতা।
২০০৫ – মিলতস সাছতউরিস,গ্রিক কবি।
২০০৫ – জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বাংলাদেশি কণ্ঠশিল্পী খালিদ হাসান মিলু।
২০০৯ – অ্যান্ডি হাল্লেত্ত, আমেরিকান অভিনেতা ও গায়ক।
২০১১ – ইয়াকভস কাম্বানেলিস, গ্রিক কবি, নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার, গীতিকার ও ঔপন্যাসিক।
২০১৪ – মাক প্লাট, আমেরিকান অভিনেতা, গায়ক ও নৃত্যশিল্পী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This