Categories
কবিতা

কদম ::: রাণু সরকার।।

গত বছর আমার অজান্তেই জন্ম নেয় কদম গাছ,
ফুল ধারণ করতে পারবে কিনা ভাবছিলাম-
তবে ফুল ফুটে ছিলো গোলাপী রঙের!
এই তো এই বর্ষায়!

ভাবনায় ছিলো একান্ত আপনজনকে
উপহার দেবার!
অকপটে একদিন খুলেছিলো তার
হৃদয়-
সে যন্ত্রণাদায়ক উৎপাঠিত করেছে
আমার অন্তর-
যদিও তারই দয়ায় বেঁচে থাকা,

মান্দার গাছও তো জন্ম নিতে পারতো!
সেটা তো হয়নি,জন্ম হলো কদম গাছের
তাও গোলাপী কদম-
ফুলটি অনেক দিন ছিলো গাছে, কারর স্পর্শ পায়নি
আকাঙ্ক্ষা যে ছিলো না সেটা না বলতে পারবো না
একদিন সে নিজের ইচ্ছেতে ঝড় পরে!
এখনো রাখা আছে শুকিয়ে যাওয়া কদম ফুলটি!

Share This
Categories
কবিতা

অস্ত :: রাণু সরকার।।

এই পৃথিবীতে এসেছি অনেক গুলো বছর,
পৃথিবীর বুকে কম বেশি করে অনেক পথ
চলেছি মন্থর গতিতে কখন দ্রুত গতিতে।

এখন প্রশান্ত- নতুনদের সাথে তাল মিলাতে
পারি না পারা সম্ভবও না।
তবে বিরামের সময় মনের ব্লাকবোর্ডে কিছু পষ্ট
কিছু অস্পষ্ট ভেসে ওঠে চিত্রপট,

কিছু হারিয়ে গেছে তাদের ধরে রাখার ক্ষমতা
এখন আর নেই,
তবে দিন রাত এদের সাথেই চলা-
আনন্দের কিছু দুঃখের নানান জলছবি,
একদিন হারিয়ে যেতে হবে অসীমে অগ্নিরথে চেপে।

Share This
Categories
কবিতা

দেখো হৃদয়ের গহীনে ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

এত রক্তের নেশা কেন?
তোমাদের মায়েরা কি ক্ষমার চোখে দেখবে –
এত মমতাময়ীর বুকখালি?
আসলে তোমরা তো প্রসব যন্ত্রনা জানোনা –
অনুভব করোনি কখনো ,কোন মুহূর্তে ।

স্বর্গে যাওয়ার যে মিথ্যা অভিলাষে তুমি,
আসলে মৃত্যুর সাঁকোতে গড়িয়ে যাচ্ছো –
নরকের গন্তব্যে ।
রক্ত নদীর তুফানেই তোমার –
পারাপারের নৌকা ডোবে, ভীষণ ক্ষোভে।

বয়সের ভারে,ভারে একদিন অনুশোচনায় জ্বলবে,
চোখের জলে কোনদিন কি জয় আসবে?
সব রক্তই যে আদি পিতার মহাদান,
আজ বেদনায় আদম ও ইভের অশ্রুস্নান।
দেখ হৃদয়ের গহীনে ঘুমিয়ে আছে মহাজ্ঞানী মহান …..।

Share This
Categories
কবিতা

আমরা প্রতিবাদী ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

আজ দেখি অমানবিকতার হিংস্র আস্ফালন
জল্লাদের মুক্ত তরবারি জ্বালাচ্ছে দাবানল।
বসন্তের নীল আকাশে রক্তের আলপনা-
নরপিশাচ ,হিংস্র পশুর আনাগোনা।
রাজপথে অবুঝ শিশুর করুন বাঁচার আবেদন –
মার বুক খালি কত , শিশুর অকাল নিধন।

অশুভ সুম্ভ,নিশুম্ভ ,একি করেছে আরম্ভ ?
দিকেদিকে মৃত্যুবার্তা, শুধু ধ্বংসের দম্ভ।
গোলা, বারুদ আর অস্ত্রের অহংকার
রাজপথে মৃত্যুর মিছিল,দিকে দিকে শিশুর চিৎকার ।
মায়ের বুক বিদীর্ণ পদঘাতে-
অবুঝ শিশু আঘাতে আঘাতে
আজ নিষ্প্রাণ । অসহায় বিধাতা –
আজ মৃত্যু মাগে রোদনভরা বসন্তে।
বেদনার অশ্রুজলে ভেসে যায় দীর্ঘশ্বাস ,কত অভিশাপ জমে অজান্তে।

এখনো কি থাকবে নীরব স্বার্থপর পৃথিবী ?
আগামী যে হয় প্রেমহীন তামাদি
এখনও হয়নি সময় প্রতিবাদের মশাল নেওয়ার?
শুভবুদ্ধি জ্বলে ওঠ, সময় হয়েছে জবাব দেওয়ার ।
নিষ্ঠুর জল্লাদ,দেখো হাসে কি আহ্লাদে-
নীরব থেকো না অসহায় শিশুর আর্তনাদে ,
এস দ্বারখুলে সহানুভূতির হাত বাড়াই
শেষ শয্যায় শাহিত শিশুর বুকে স্নেহের হাত বোলাই ।
শেষ বারের মতো চিৎকারে বলি-
হুঁশিয়ার ,বন্ধ কর এ রক্তের হলি ,
বন্ধ কর এই বীভৎস নারকীয় হত্যাকান্ড
যত বুর্জুয়া, স্বার্থানেশি,ভাঙবো এবার তোদের মিথ্যাভ্যান্ড ।

প্রাণ রক্ষায় অপারক নপুংসক, অক্ষম –
নিপাত যাক তোদের ক্ষমতা পৃথিবীর কাটুক বিভ্রম।
আগামীর প্রতিবাদ হানবে আঘাত-
অভিশাপে বিদীর্ণ হবে তোদের বক্ষ।
সময়ের হিসাব চাইবে জবাব-
প্রতিবাদী হচ্ছে জড়ো লক্ষ লক্ষ্ ।

এস প্রতিবাদের দরজা খুলি-
সমস্বরে সবাই বলি ,
দিকে দিকে ঘুম ভেঙে আসুক আহ্বান ,
এ পৃথিবীর নিষ্পাপ সকল শিশু আমাদের সন্তান।
মানবতা জাগুক,হিংসা মরুক হোক বিবেকের উত্থান।

সংরক্ষিত/প্রবীর কুমার চৌধুরী।

Share This
Categories
কবিতা

এক্ষণে ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

ছলে, বলে, কৌশলে –
এখন নবসজ্জিত বিলাসী জীবন ।
হাহাকারের রাতে কামনার অসহায়তা খরিদ-
লজ্জার বিপনী এখন শোভা পায় অর্থের প্রলোভনে।
আহবকালের বিভীষিকা ভুলিয়ে দেয় কুটিল ক্ষুধা,
নগ্ন শরীরের প্রহসন দেখে আত্মজা দেয় অবিশ্রান্ত অভিশাপ ।

নিষিদ্ধ রাতের বঞ্চনায় পবিত্র প্রেম ক্ষত বিক্ষত-
ভালোবাসার অভিনয়ে দেহের ক্রয়-বিক্রয়, শেষ রাতে-
শ্মশানে নিষ্কৃতি মেলে, দুবাহু মেলে অগ্নিশয্যায় নিশ্চিন্ত নিদ্রা।
অভিমানী বুক ,ছিন্ন করে সুখ,বিবেক বেদনার সুরে-
প্রাতের আহির ভৈরবে আকাশ ভরায়।

প্রেমসিক্ত জীবন মেগে হয়ো না বিবসন এইটুকুই আবেদন,
এ ধরণী কাঁপে, অভিশাপে, বৃথাই নগ্নতার নগ্ন কামনা?
হে পঞ্চপাণ্ডব,হে কৃতজ্ঞ কর্ণ ,স্থবির ভীষ্ম শুধু একবার –
পৌরুষদীপ্ত নবমহাভারতে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ বন্ধ কর।

সংরক্ষিত।

Share This
Categories
কবিতা

আমি ডাক বয়ে যাই :: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

আজ সকালে চিঠি এল-
খবর পেলাম লেফাফা খুলে,জীবন সন্ধিক্ষণে –
বেকার নাশে কর্মআশে আমি হরকরার কর্ম পেয়েছি।
দোরে দোরে বার্তা দেওয়া-
পৃথিবীর মনের কথা,সময়ের দুঃখ,হাসি-
ভাঙ্গাগড়ার নিত্যদিনের সংবাদ।
ঝরা পাতার নিত্য চোখের জল-
কাব্যছায়ায় নিশ্চিন্তর আশা আর শব্দ ছায়ায় স্নিগ্ধতার সম্বল।
সবার অব্যক্ত কথা,যত দুঃখ মাঝে জমানো প্রতিবাদ-
ক্রন্দসীর রুদ্ধ শ্রবণে মেঘগর্জনে তরঙ্গায়িতই করাই আমার শেষ কর্তব্য।

প্রহর কেমন আয়েশে,আরামে গভীর ঘুমে অচেতন ,
ষড়যন্ত্রের নিষ্ঠুরতা, বিষাক্ততায় নিত্য হাতছানি ,
ভয়ার্ত ন্যুব্জ মানবিকতার দুহাতে প্রসারিত সাবধান বাণী –
সমানেই বয়ে আনে রোগগ্রস্ত অসহায় শত শত অভিমানী।
আমারই পিঠে,আছে মিঠে মিঠে পদক্ষেপ বার্তাখানি ।
এবার মুক্তির স্বাদে , এ মন কোকোনদে উঠবে ক্ষিপ্ত গজরানী।

সময় দিয়েছে ডাক, আমি তো কর্মে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ,
হোক না শূন্য বাতিস্তম্ভ, দেদীপ্যমান জ্যোৎস্নার আলো মেখে পথের যত খানাখন্দ,যত উঁচু নিচু ঢিবি ,আঁধারেই পথ দেখে
শেষবারের মত বিলাব দোরে দোরে প্রতিশ্রুতির সমস্ত খবরখানি।

তারপর-
আগামী সূর্যোদয়ে আগামীর পথশিশু মুক্তির গান গাইতে গাইতে
চলবে –
আজি কি আনন্দ এ প্রেমভরা বসন্তে ,
ওই দেখ মুক্তির আনন্দাশ্রু ঝরে দিগন্তে ,দিগন্তে।
শঙ্খ,ঘন্টা,কাসর আর আজানের শব্দে আমি-
কর্তব্য অবসানে শেষবারের মতো ঘুমাবো নিশ্চিন্ত,নিরুদ্বেগ,শান্তমনে।

সংরক্ষিত।

Share This
Categories
কবিতা

আছে এখনো আছে ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

এখনো প্রেম আছে, টান আছে, আছে ব্যাকুলতা
এখনো মানুষ আছে, সত্য আছে, আছে উদারতা।

এখনো নির্মল আকাশ আছে,আকাশে মেঘ আছে,আছে বলাকার ডানা
এখনো আকাশ ভরা আলো আছে,মন আছে,কাছে যেতে নেই মানা।

এখনো ভোরের সূর্য আছে ,বিরহ আছে ,আছে প্রাণে আকুলতা
এখনো সবুজ আছে,চোখে জল আছে, আছে প্রেম বিহ্বলতা।

এখনো জীবন আছে, সংসার আছে,আছে দায়িত্ববোধ
আমি তুমির বাইরে প্রতিবেশীর কাছে আছে সম্মানবোধ।

এখনো দেখা আছে, আবেগ আছে, আছে নাড়ীর টান
এখনো প্রতিবাদে মিছিল আছে,আছে কর্মের আহ্বান।

এখনো মা আছে,বুক ভরা স্নেহ আছে,আছে জন্মস্থান
সাড়ে তিনহাত জমির অধিকার আছে,আছে অনেক অভিমান।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ঘুম ভেঙে এসো ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

অবক্ষয়ের করাল ছায়ায়-
আজ সব কবলিত, তবুও মায়ায় নিরুপায় ।
সীমাহীন আস্পর্ধায়-
কলঙ্কিত এ অধ্যায়,
তুমি চুপ কেন দুঃসময়ে, শিক্ষার দম্ভ?
এইতো সময় দক্ষযজ্ঞের,হয় হোক আরম্ভ।

চাতকের মতো অপেক্ষার জল না চেয়ে
কলমে রক্ত ভরে বিদ্রোহে এসো ধেয়ে।
সবলা, অবলা,যত নিচের তলা, হোক উত্থান,
সূর্যের আগুনে ঝলসিয়ে করব মহাপ্রস্থান।
ইতিহাস কথা বল,আর নয় চোখ ছলছল,
অমৃত ছেঁচে অশনিকে দেব হলাহল।

সংরক্ষিত/ প্রবীর কুমার চৌধুরী

Share This
Categories
কবিতা

আবার এসো মা তুমি :: রাণু সরকার।।

এলে তুমি দেখাদিয়ে গেলে,তোমার লক্ষ্যে কত কিছু ঘটছে কিছুই কি করার শক্তি নেই তুমিতো সবই জানো- তুমি শক্তি দাতা মা- দুর্গতিনাশিনী-
জাতিধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে পারলে না তো করতে সবার সাথে সবার মিত্রতা রক্ষা করতে-
তুমি কেমন মা গো সন্তানের কষ্ট দেখে থাকো নিস্তব্ধ?
কোনবারই হয়না আশা পুরণ তুমি তো শক্তির আধার-
কেনো পারো না সবার মুখে ফোটাতে ফুল?

কারুর চোখ সর্বদা অশ্রুসিক্ত
কারুর কাষ্ঠহৃদয় ফেটে চৌচির,
কারুর খিদের জ্বালায় পেটের কিট করে নৃত্য।
দামি পোশাক জোটে যাদের আনন্দে থাকে তারা-

আবার কারুর জোটেনি কিছুই-
তবুও হৃদয়ের ব্যথা চেপে একবার দেখে আসে তোমাকে দালানে গিয়ে।
তোমার কি একটু দয়া হয় না মাগো,
এতো যাদের ব্যথা তাদের প্রতি একটুও কি হয়
তোমার করুণা।

কবে করবে মাগো দুষ্টের দমন? তুমি মা তুমি নারী
তোমার দৃষ্টির সম্মুখে হয় শ্লীলতাহানি তবু তুমি করো না বিনাশ- বারংবার দুষ্টেরা করে জয়লাভ-
ওদের মন যেন হয় পবিত্র অপবিত্রতা করো দূর তা না হলে দূষণ ছড়িয়ে পড়বে ছোট বড় বসার মধ্যে।

তুমি তো চলে যাবে মাগো যাবার আগে কিছু একটা
করে যেও, তোমার শ্রীচরণ ধরে করি মিনতি।

কবে যে থামবে দুষ্টের কোলাহল অপেক্ষায় একা একা কাটে সারাবেলা-
অতীতে তোমার আসার আগে থেকেই আনন্দে থাকতাম মাতোয়ারা কাশফুল শিউলিফুল ওদের সাথে ওদের মধ্যে তুমি তুমি গন্ধ মাখা।
এখন শুধুই হিংস্রেদের নিশ্বাসে নরখাদকের গন্ধ বাতাস ঘঠায় অগ্নিকাণ্ড।

অনেক কষ্ট এই হৃদয়ে- আজ বিশ্ব জুড়ে হাহাকারের ধ্বনি, হঠাৎ করে মৃদু হেসে বলি আবার এসো মা তুমি।

Share This
Categories
কবিতা

আতর বাড়ি :: রাণু সরকার।।

এই মেয়ে, শোন-
কেনোরে তুই, আতর দিয়ে গা ধুয়েছিস?
তোর গায়ের গন্ধে পাড়ায় থাকা দায় হয়েছে-
সবাই করে কানাকানি,এই গন্ধ কি লুকিয়ে রাখা যায়-
রাতবিরেতে দরজা এঁটে থাকবি তুই খাটে সেঁটে।

শোন বাবু, মাটা আমার গেলো মরে,
ছ’মাস পরে গেলো বাপটাও-
বাপের ছিলো টানের রোগ-কাজ ছিলো তার পরের রিক্সা টানা।

চলছিলো বেশ বাপ-বেটিতে,
বাপের আমি ছিলাম চোখের মনি, একা ফেলে গেলো চলে।

জানিস বাবু গভীর রাতে দমকা বাতাস
গন্ধ নিয়ে-ঢোকে আমার দরজা ঠেলে,
রঙবেরঙের ডালপালা সব গুঁতায় তারা ঘাড়ে-পিঠে।

ভোরের আলো ফোটার আগেই দমকা বাতাস পালায় ছুটে-
ভোরের আলো ফুটলে পরে গায়ের ক্ষত জ্বলতে থাকে–

ক্ষতরা সব আমায় দেখে ব্যথায় ব্যথায় দিন যে কাটে,
ভয়ে ভয়ে থাকি রাত যেন আর না আসে
বলতে পারো বাবুমশাই আমার কি দোষ?
কোন পাপেতে ডুবে আছি-
নিয়ে যাবে বাবুমশাই, তোমার বাড়ি?

সব কাজ করে দেবো গিন্নি মাকে-
সব কাজ আমি করতে পারি,
গায়ে আমার ব্যথা-ভীষণ কষ্ট হয়-
তোমার কাছে আমার কষ্ট একটুও কি কষ্ট নয়?

তোমারও তো মেয়ে আছে,
নেবে আমায় বাবুমশাই, তোমার সাথে?

এই বয়সে তোকে নিলে বদনাম হবে-
তুই যেমন আছিস তেমনই থাক-
আসবো না আর বলতে তোকে-
তোকে নিলে আমার বাড়ির নাম যে দেবে আতর বাড়ি।

Share This