Categories
রিভিউ

আজ ১৯ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ১৯ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

(ক) বিশ্ব মানবতা দিবস।

(খ) বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস ৷

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০০ – সুশোভন সরকার, প্রখ্যাত বাঙালি ঐতিহাসিক।

১৯০৯ – (ক) হাজারী প্রসাদ দ্বিবেদী ভারতের হিন্দি সাহিত্যের খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সাহিত্য সমালোচক।

(খ) ভারতীয় বাঙালি শিশু ও কিশোর সাহিত্যিক মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়।

১৯১৫ – রিং লার্ডনার জুনিয়র, একজন মার্কিন সাংবাদিক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯১৮ – শঙ্কর দয়াল শর্মা, ভারতের নবম রাষ্ট্রপতি।

১৯২৪ – উইলার্ড বয়েল, কানাডীয় মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী এবং চার্জ কাপল্‌ড ডিভাইস এর সহ-উদ্ভাবক।

১৯৩৫ – জহির রায়হান, প্রখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক, এবং গল্পকার।

১৯৪৬ – উইলিয়াম জেফারসন ক্লিনটন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম রাষ্ট্রপতি।

১৯৫০ – গ্রেম বিয়ার্ড, সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৫৭ – ইয়ান গোল্ড, সাবেক ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৯৬৯ – ম্যাথু পেরি, মার্কিন অভিনেতা।

১৯৯৬ -এ আর ফারুক,লেখক,সাংবাদিক।

১৯৭৩ – কার্ল বাফিন, সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৮৩০ – ইউলিয়ুস লোটার মাইয়ার, একজন জার্মান রসায়নবিদ।

১৮৬৩ – আশরাফ আলী থানভী, ভারত উপমহাদেশ দেওবন্দী আলেম, সমাজ সংস্কারক, ইসলামি গবেষক এবং পুরোধা ব্যক্তিত্ব।

১৮৭১ – অরভিল রাইট, উড়োজাহাজ আবিষ্কারক রাইট ভ্রাতৃদ্বয়-এর একজন।

১৮৭৮ – ম্যানুয়েল এল. কুয়েজন, ফিলিপাইনের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ।

১৬৩১ – ইংরেজ কবি জন ড্রাইডেন।

১৬৪৬ – জন ফ্ল্যামস্টিড, ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯১৬ – রুমানিয়া মিত্রশক্তিদের সাথে মৈত্রীচুক্তি স্বাক্ষর করে এবং পুরস্কারস্বরূপ তাকে বুকোভিনা (Bukovina), ত্রাণ্সিলভানিয়া (Transylvania) এবং বানাত (Banat) দেয়ার কথা বলা হয়।

১৯৩৯ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিধানচন্দ্র রায় প্রমুখ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে কলকাতায় সুভাষচন্দ্র বসু পরিকল্পিত মহাজাতি সদনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।

১৯৪০ – সোমালিল্যান্ড থেকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করা হয়।

১৯৪৪ – প্যারিসে সশস্ত্র অভ্যুত্থানের সূচনা হয়।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় আপারভোল্টা।

১৯৯১ – গানাদি ইয়ানাউফের নেতৃত্বে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনাবাহিনী সর্ব শেষ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্ভাচেভের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটায়।

১৭৫৭ – কলকাতার পুরোনো টাকশাল থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিল্লির নবাবের নামাঙ্কিত প্রথম মুদ্রা প্রস্তুত করেন।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০৩ – সেরগিও ভিয়েরা দ মেলো ব্রাজিলের জাতিসংঘের কূটনীতিক ও মানবিক কর্মী।

২০১২ – টনি স্কট, ইংরেজ চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।

২০১৩ – আবদুর রহমান বয়াতী, বাংলাদেশের একজন প্রসিদ্ধ লোকসঙ্গীত শিল্পী।

২০২১ – জুনায়েদ বাবুনগরী, দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমীর

১৯২৩ – ভিলফ্রেদো পারেতো, ইতালীয় শিল্পপতি, প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ এবং দার্শনিক।

১৯৩৬ – ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকা, আধুনিক স্প্যানিশ সাহিত্যের অন্যতম কবি।

১৯৬৩ – মৌলভি তমিজউদ্দিন খান, বাঙালি রাজনীতিবিদ, অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রী, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার।

১৯৬৮ – জর্জ গ্যামফ, ইউক্রেনীয় পদার্থবিজ্ঞানী এবং বিশ্বতত্ত্ববিদ।

১৯৭৬ – কেন ওয়াডসওয়ার্থ, নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৮৬ – হারমায়োনি ব্যাডলি, ইংরেজ অভিনেত্রী।

১৯৯৩ – উৎপল দত্ত, বাংলা গণনাট্য আন্দোলনের সময়কার বিশিষ্ট অভিনেতা এবং নাট্যকার।

১৯৯৪ – লিনাস পাউলিং, আমেরিকান বিশ্ববিখ্যাত রসায়নবিদ।

১৮৮৭ – পুরাতত্ত্ব বিষয়ক রচনার জন্য খ্যাতিমান লেখক রামদাস সেন।

১৬৬২ – ব্লেজ পাস্কাল, ফরাসি গণিতজ্ঞ, পদার্থবিদ, উদ্ভাবক, লেখক এবং ক্যাথলিক দার্শনিক।

খ্রিস্টাব্দ ১৪ – আউগুস্তুস, রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

উৎপল দত্ত; কিংবদন্তী অভিনেতা এবং নাট্যকার, প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভূমিকা—-

 

উৎপল দত্ত (২৯ মার্চ ১৯২৯ – ১৯ আগস্ট ১৯৯৩) বাংলা গণনাট্য আন্দোলনের সময়ে বিশিষ্ট অভিনেতা এবং নাট্যকার।তিনি একজন ভারতীয় অভিনেতা, পরিচালক এবং লেখক-নাট্যকার ছিলেন।  তিনি মূলত বাংলা থিয়েটারের একজন অভিনেতা ছিলেন, যেখানে তিনি আধুনিক ভারতীয় থিয়েটারে একজন অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন, যখন তিনি ১৯৪৯ সালে “লিটল থিয়েটার গ্রুপ” প্রতিষ্ঠা করেন। এই দলটি অনেক ইংরেজি, শেক্সপিয়র এবং ব্রেখ্টের নাটক রচনা করেছিল, যা বর্তমানে থিয়েটার নামে পরিচিত।  “এপিক থিয়েটার” সময়কাল, এটি অত্যন্ত রাজনৈতিক এবং উগ্র থিয়েটারে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত করার আগে।  তাঁর নাটকগুলি তাঁর মার্কসবাদী মতাদর্শের প্রকাশের জন্য একটি উপযুক্ত বাহন হয়ে ওঠে, যা কল্লোল (১৯৬৫), মানুষের অধিকার, লৌহা মনোব (১৯৬৪), টিনার টোলোয়ার এবং মহা-বিদ্রোহার মতো সামাজিক-রাজনৈতিক নাটকগুলিতে দৃশ্যমান।  এছাড়াও তিনি ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে ১০০ টিরও বেশি বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন এবং মৃণাল সেনের ভুবন শোম (১৯৬৯), সত্যজিৎ রায়ের আগন্তুক (১৯৯১),  চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।   এবং হৃষিকেশ মুখার্জির হিন্দি কমেডি যেমন গোল মাল (১৯৭৯) এবং রং বিরাঙ্গি (১৯৮৩)।  তিনি তাঁর মৃত্যুর কিছু আগে ১৯৯৩ সালে দূরদর্শনে ব্যোমকেশ বক্সীর (টিভি সিরিজ) সীমান্ত হীরার পর্বে একজন ভাস্কর স্যার দিগিন্দ্র নারায়ণের ভূমিকাও করেছিলেন। তিনি ১৯৭০ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং তিনটি ফিল্মফেয়ার সেরা কমেডিয়ান পুরস্কার পান।  ১৯৯০ সালে, ভারতের ন্যাশনাল একাডেমি অফ মিউজিক, ড্যান্স অ্যান্ড থিয়েটার সঙ্গীত নাটক আকাদেমি তাকে তার সর্বোচ্চ পুরস্কার, থিয়েটারে আজীবন অবদানের জন্য সঙ্গীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ প্রদান করে।

 

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা—-

 

উৎপল দত্ত বাংলা গণনাট্য আন্দোলনের সময়ে বিশিষ্ট অভিনেতা এবং নাট্যকার। উৎপল দত্ত ১৯২৯ সালের ২৯ মার্চ বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতা গিরিজারঞ্জন দত্ত।  তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কলকাতা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স নিয়ে স্নাতক হন।

 

ব্যক্তিগত জীবন–

 

১৯৬০ সালে, দত্ত থিয়েটার এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শোভা সেনকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র মেয়ে, বিষ্ণুপ্রিয়া দত্ত, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ আর্টস অ্যান্ড অ্যাসথেটিক্স, নয়া দিল্লিতে থিয়েটার এবং পারফরম্যান্স স্টাডিজের (‘Theater and Perfomance Studies’  at the ‘School of Arts & Asthetics’ ) একজন অধ্যাপক।

 

কর্মজীবন—

 

গণনাট্য আন্দোলন ছিল মূলত রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন, মার্ক্সবাদ থেকে প্রণীত এক ধারা যেখানে মঞ্চ হয়ে ওঠে প্রতিবাদের মাধ্যম তিনি মঞ্চের কারিগর ,বাংলা মঞ্চনাটকে অভিনয় করতেন। তিনি শেক্সপিয়ার আন্তর্জাতিক থিয়েটার কোম্পানির সাথে ভ্রমণ করেছেন বেশ কয়েকবার। তাকে গ্রূপ থিয়েটার অঙ্গনের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের অন্যতম হিসাবে গন্য করা হয়। কৌতুক অভিনেতা হিসাবেও তার খ্যাতি রয়েছে।

তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র গুড্ডি, গোলমাল, শওকিন ও রং বিরঙ্গিতে (১৯৮৩) -তে অভিনয় করেছেন। তিনি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় হীরক রাজার দেশে, জয় বাবা ফেলুনাথ এবং আগন্তুক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। মননশীল ছবি ছাড়াও অজস্র বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন উৎপল দত্ত।

 

রাজনৈতিক দর্শন—-

 

রাজনৈতিক দর্শনের দিক থেকে তিনি ছিলেন বামপন্থী ও মার্ক্সবাদী।তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট মার্ক্সবাদী পার্টীর একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তাঁর বামপন্থী চিন্তাধারার বিকাশ ঘটত থিয়েটারের মঞ্চে। সমসাময়িক সামাজিক ঘটনাবলি নিয়ে তিনি বিভিন্ন নাটক মঞ্চস্হ করতেন। কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থনে বিভিন্ন পথনাটিকাকে তিনি মঞ্চস্থ করেছিলেন। ১৯৬৫ সালে কংগ্রেস সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে বেশ কিছু মাস কারাবাস ভোগ করতে হয়। উৎপল দত্তের বিখ্যাত নাটকের মধ্যে রয়েছে টিনের তলোয়ার, মানুষের অধিকার ইত্যাদি।

 

 ‘দ্য শেক্সপিয়ারিয়ান্স’ থিয়েটার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা—

 

নিজের কেরিয়ারের প্রথমার্ধে বাংলা থিয়েটারে অভিনয় করলেও বেশ কিছু ইংরাজী থিয়েটারেও তিনি অভিনয় করেছেন। কৈশোর জীবনেই ১৯৪০ সালে উৎপল দত্ত ইংরাজী থিয়েটারের প্রতি বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সেখানে কাজ করতে করতেই তিনি একসময় প্রতিষ্ঠা করেন ‘দ্য শেক্সপিয়ারিয়ান্স’ নামের এক থিয়েটার গ্রুপ।

 

উৎপল দত্ত রচিত নাটকের তালিকা—

 

তাঁর কাজ তাকে সাধারন মানুষের অনেক কাছে এনে দিয়েছিল। তাঁর নাটকগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। পূর্নাঙ্গ নাটক, পথ নাটিকা, যাত্রাপালা। বাংলা রাজনৈতিক নাটকের ইতিহাস সুপ্রাচীন। নীলদর্পণ থেকেই এই রাজনৈতিক নাটকের সূচনা। কিন্তু উৎপল দত্তকে বলতে হয় অবিমিশ্র রাজনৈতিক নাট্যকার। তাঁর সমস্ত নাটকের মধ্যেই থাকে সচেতন উদ্দেশ্য। পূর্ণাঙ্গ, একাঙ্ক, পথনাটক ইত্যাদি মিলে উৎপল দত্তের নাটকের সংখ্যা প্রায় সন্তরটি। বিষয়বস্তুর দিক থেকেও নাটকগুলি বিচিত্র, কিন্তু রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সর্বত্রই সেখানে অতন্দ্র থেকেছে। মৌলিক এই নাটকগুলি ছাড়াও আছে অসংখ্য অনুবাদ নাটক। আরাে উল্লেখ্য, রাজনৈতিক বক্তব্য উপস্থাপন করতে গিয়ে উৎপল দত্ত কখনও শিল্পসৃষ্টির অজুহাতে বা শাসক শক্তির কোপদৃষ্টি থেকে আত্মরক্ষার জন্য কোনাে অস্পষ্টতা বা অবরণের আশ্রয় নেন নি। তার বক্তব্য স্পষ্ট, সুবােধ্য এবং অকুতােভয়।

 

লাল দূর্গ, বণিকের মাণদন্ড,  এংকোর (অনুবাদ গল্প), দিল্লী চলো, ছায়ানট(১৯৫৮), অঙ্গার(১৯৫৯), ফেরারী ফৌজ(১৯৬১), ঘুম নেই (১৯৬১), মে দিবস (১৯৬১), দ্বীপ (১৯৬১), স্পেশাল ট্রেন (১৯৬১), নীলকন্ঠ(১৯৬১), ভি.আই.পি (১৯৬২), মেঘ (১৯৬৩), রাতের অতিথি (১৯৬৩), সমাজতান্ত্রিক চাল (১৯৬৫), কল্লোল(১৯৬৫), হিম্মৎবাই (১৯৬৬), রাইফেল (১৯৬৮), মানুষের অধিকার (১৯৬৮), জালিয়ানওয়ালাবাগ (১৯৬৯), মাও-সে-তুং (১৯৭১), পালা-সন্ন্যাসীর তরবারি (১৯৭২), বৈশাখী মেঘ (১৯৭৩), দুঃস্বপ্নের নগরী(১৯৭৪), এবার রাজার পালা, স্তালিন-১৯৩৪, তিতুমির, বাংলা ছাড়ো, দাঁড়াও পথিকবর, কৃপান, শৃঙ্খলছাড়া, মীরকাসিম, মহাচীনের পথে, আজকের শাজাহান, অগ্নিশয্যা, দৈনিক বাজার পত্রিকা, নীল সাদা লাল, একলা চলো রে, ক্রুশবিদ্ধ কুবা, নীলরক্ত, লৌহমানব, যুদ্ধং দেহি, লেনিনের ডাক, চাঁদির কৌটো, রক্তাক্ত ইন্দোনেশিয়া, মৃত্যুর অতীত, ঠিকানা, টিনের তলোয়ার, ব্যারিকেড, মহাবিদ্রোহ, মুক্তিদীক্ষা, সূর্যশিকার, কাকদ্বীপের এক মা, ইতিহাসের কাঠগড়ায়, কঙ্গোর কারাগারে, সভ্যনামিক, নয়াজমানা, লেনিন কোথায়, সীমান্ত, পুরুষোত্তম, শৃঙ্খল ঝঙ্কার, জনতার আফিম, পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাস, মধুচক্র, প্রফেসর মামালক, শোনরে মালিক, সমাধান, অজেয় ভিয়েতনাম, তীর।

 

পুরষ্কার এবং স্বীকৃতি—-

 

 

শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার – জিতেছেন
১৯৭০ ভুবন শোম – ভুবন শোম

ফিল্মফেয়ার সেরা কমেডিয়ান পুরস্কার – জিতেছে
১৯৮০ গোল মাল – ভবানী শঙ্কর
১৯৮২ নরম গরম – ভবানী শঙ্কর
১৯৮৪ রং বিরঙ্গি – পুলিশ ইন্সপেক্টর ধুরন্ধর ভাতাওদেকর

বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড: সেরা অভিনেতার পুরস্কার- জিতেছেন
১৯৯৩ আগন্তুক – মনোমোহন মিত্র

ফিল্মফেয়ার সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার – মনোনীত৷
১৯৭৫ অমানুষ – মহিম ঘোষাল
১৯৮০ গোল মাল – ভবানী শঙ্কর
১৯৮৬ সাহেব – বদ্রী প্রসাদ শর্মা

উৎপল দত্ত ১৯৯০ সালে সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমী ফেলোশিপ পান থিয়েটার জগতে তাঁর অসামান্য অব্দানের জন্য।

 

মৃত্যু—–

 

যাত্রায়, নাটকে, সিনেমায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। এ হেন প্রবাদ প্রতিম কিংবদন্তী অভিনেতা ১৯৯৩ খ্রীস্টাব্দের ১৯শে আগস্ট তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।  হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমন করেন তিনি।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব মানবতা দিবস ও বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস, জেনে নেবো দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে কিছু কথা ৷

 

(ক) বিশ্ব মানবতা দিবস।

 

মানবতাবাদীরা জীবন বাঁচাতে এবং রক্ষা করার জন্য একটি ভাগ করা মিশন দ্বারা একত্রিত হয়।  তারা মানবিক নীতির সাথে কখনই আপস করবে না এবং সর্বদা তারা যে লোকেদের সেবা করে তাদের জন্য সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করে।  যাইহোক, মানবিক কাজটি কঠিন এবং বিপজ্জনক, কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে এবং প্রয়োজনে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি ত্যাগ করি না, #NoMatterWhat। এদের মূল নীতি হল মানবতা, নিরপেক্ষতা, নিরপেক্ষতা এবং স্বাধীনতা।

 

জাতিসংঘের নির্দেশনায় প্রতি বৎসর ঊনিশে আগস্ট সারা বিশ্বে উদযাপিত হয় – বিশ্ব মানবতা দিবস (ইংরেজি: World Humanitarian Day)। যাঁরা চরম আত্মত্যাগ করে, মানব সেবায় ব্রতী হয়েছেন, যাঁরা মানব কল্যাণে, মানবের উন্নতি সাধনে নিজেদের জীবন উত্‍‌সর্গ করেছেন জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসারে তাঁদের উদ্দেশ্যে বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত শ্রদ্ধায় পালিত হয় দিনটি।

 

প্রেক্ষাপট—-

 

১৯ আগস্ট ২০০৩-এ, ইরাকের বাগদাদের ক্যানাল হোটেলে বোমা হামলায় ২২ জন মানবিক সহায়তা কর্মী নিহত হয়, যার মধ্যে ইরাকের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি সার্জিও ভিয়েরা ডি মেলোও ছিলেন।  পাঁচ বছর পর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯ আগস্টকে বিশ্ব মানবিক দিবস (WHD) হিসেবে মনোনীত করে একটি রেজোলিউশন গ্রহণ করে।
প্রতি বছর, WHD একটি থিমের উপর ফোকাস করে, মানবিক ব্যবস্থা জুড়ে অংশীদারদের একত্রিত করে সঙ্কটে আক্রান্ত মানুষের বেঁচে থাকা, মঙ্গল এবং মর্যাদার জন্য এবং সাহায্য কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার পক্ষে।
এই বছরের WHD-এর জন্য, আমরা মানবিক কাজের গুরুত্ব, কার্যকারিতা এবং ইতিবাচক প্রভাব দেখাই।
WHD হল জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের অফিস (OCHA)-এর একটি প্রচারাভিযান।

 

স্মৃতিরক্ষা—–

 

তার সেই মহান ব্রত যাতে থমকে না যায়, সেজন্য গঠিত হয়েছে সেরগিও ভিয়েরা দ মেলো ফাউন্ডেশন। তাদের উদ্যোগে এবং ফ্রান্স, সুইত্‍‌জারল্যান্ড, জাপান এবং ব্রাজিলের মতো সদস্য দেশের সহায়তায় সেরগিও ভিয়েরা দ মেলো ও তার সহকর্মীদের প্রয়াণ দিবসটিকে জাতিসংঘ ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের A/63/L.৪৯ নম্বর সিদ্ধান্ত অনুসারে “বিশ্ব মানবতা দিবস” হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের ১৯ শে আগস্ট প্রথম বিশ্ব মানবতা দিবস পালিত হয়। তদনুসারে প্রতি বৎসর বিভিন্ন ভাবনায় তথা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে সারা বিশ্বে সদস্যদেশগুলি বিশ্ব মানবতা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপন করে আসছে।

 

ভাবনার মূল লক্ষ্য—

 

সারা বিশ্বে কমবেশি তেরো কোটি মানুষ কেবল মানবিক সহায়তার উপর ভর করে বেঁচে আছে। এদের যদি এক সাথে দলবদ্ধ করে পৃথিবীর কোন স্থানে আশ্রয় দেওয়া হয়,তাহলে সেটি পৃথিবীর দশম জনবহুল দেশ হিসাবে পরিগণিত হবে। যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং তীব্র অরক্ষিত অবস্থার মধ্যে বসবাসকারী এমন অসহায় মানুষের জীবনে প্রয়োজন সেরগিও ভিয়েরা দ মেলো এর মত মানুষের একটু সাহায্যের হাতের পরশ। প্রতি বৎসর ভিন্ন ভিন্ন ভাবনায় প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে উদযাপিত হলেও আসল লক্ষ্য কিন্তু স্থির।

 

এই বছর, আমাদের বিশ্ব মানবিক দিবসের প্রচারণা বিশ্ব মানবিক সম্প্রদায়কে একত্রিত করে ইরাকের বাগদাদে জাতিসংঘের সদর দফতরে হামলার বিংশতম বার্ষিকী উপলক্ষে এবং আমরা যে সম্প্রদায়গুলিকে সেবা করি তাদের জন্য আমাদের অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করতে, যেই হোক না কেন।
মানবতাবাদীদের জীবন বাঁচানো ও রক্ষা করা এবং জীবনের মৌলিক প্রয়োজনীয়তা সরবরাহ করা ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই, তারা যে সম্প্রদায়ের সেবা করে এবং আশা নিয়ে আসে তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ায়।
১৯ আগস্ট, আমরা বিশ্বজুড়ে মানবতাবাদীদের সম্মান জানাতে একত্রিত হই যারা ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে চেষ্টা করে।  বিপদ বা কষ্ট যাই হোক না কেন, মানবতাবাদীরা দুর্যোগ-পীড়িত অঞ্চলে গভীরভাবে এবং সংঘাতের প্রথম সারিতে, প্রয়োজনে মানুষকে বাঁচাতে এবং রক্ষা করার চেষ্টা করে।

 

 

(খ) বিশ্ব আলোকচিত্র দিবস ৷

 

বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস ডেগুয়েরোটাইপের উদ্ভাবনকে স্মরণ করে, একটি ফটোগ্রাফিক প্রক্রিয়া যা ১৮৩৭ সালে লুই ডাগুয়েরের দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল যা ফটোগ্রাফির ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত।  দিনটি ফটোগ্রাফির শিল্প এবং বিজ্ঞানের জন্য উত্সর্গীকৃত।

প্রতি বছর ১৯ আগস্ট বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস পালিত হয়।

 

ইতিহাস:—

 

বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস ১৯ আগস্ট, ১৮৩৯ তারিখে ফ্রেঞ্চ একাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা জনসাধারণের কাছে ড্যাগুয়েরোটাইপ প্রক্রিয়ার ঘোষণার স্মরণে।  আলো-সংবেদনশীল পৃষ্ঠে স্থায়ী ছবি তোলার প্রথম পদ্ধতির মধ্যে একটি ছিল ডাগুয়েরোটাইপ প্রক্রিয়া।
দিনটির উৎপত্তি ১৮৩৭ সালে যখন প্রথম ফটোগ্রাফিক প্রক্রিয়া, ‘ড্যাগুয়েরোটাইপ’ ফরাসী লুই ডাগুয়ের এবং জোসেফ নিসেফোর নিপস দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল।  ৯ জানুয়ারী, ১৮৩৯-এ, ফ্রেঞ্চ একাডেমি অফ সায়েন্সেস এই প্রক্রিয়াটি ঘোষণা করে এবং পরে একই বছরে, ফরাসি সরকার এই আবিষ্কারের জন্য পেটেন্ট কিনেছিল এবং এটি “বিশ্বকে বিনামূল্যে” উপহার হিসাবে দেয়।
যাইহোক, প্রথম টেকসই রঙিন ফটোগ্রাফটি ১৮৬১ সালে তোলা হয়েছিল এবং প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা আবিষ্কারের ২০ বছর আগে ১৯৫৭ সালে প্রথম ডিজিটাল ফটোগ্রাফ উদ্ভাবিত হয়েছিল তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে।

 

তাৎপর্য:—

 

বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস ফটোগ্রাফিকে শিল্পের একটি বৈধ রূপ হিসাবে তুলে ধরে, ফটোগ্রাফারদের বিভিন্ন কৌশল, রচনা এবং শৈলী নিয়ে পরীক্ষা করতে উত্সাহিত করে।  এটি গল্প বলার, আবেগ ক্যাপচার এবং স্মৃতি সংরক্ষণে ফটোগ্রাফির শক্তির প্রশংসা করতে লোকেদের উত্সাহিত করে।
এটি ফটোগ্রাফির প্রযুক্তিগত দিক, সরঞ্জামের অগ্রগতি এবং ফটোগ্রাফিক কৌশলগুলির বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করার একটি দিন যখন ফটোগ্রাফার এবং উত্সাহীরা প্রায়শই তাদের প্রিয় ছবি, চিত্রগুলির পিছনের গল্প এবং তাদের সৃজনশীল প্রক্রিয়ার অন্তর্দৃষ্টিগুলি ভাগ করে।

 

উদযাপন:—

 

সারা বিশ্বের ফটোগ্রাফার এবং ফটোগ্রাফি উত্সাহীরা ফটো তোলার মাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাদের কাজ ভাগ করে এবং ফটোগ্রাফি-সম্পর্কিত ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে দিনটি উদযাপন করে।  ফটোগ্রাফারদের প্রতিভা প্রদর্শন করতে, তাদের নৈপুণ্যের তাৎপর্য এবং ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার নথিপত্রে ফটোগ্রাফি যে ভূমিকা পালন করে তা প্রতিফলিত করার জন্য বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবসে অনেক ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী, কর্মশালা এবং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

এই দিনে, জীবনের সমস্ত স্তরের লোকেরা ফটোগ্রাফি অফার করে এমন দৃশ্যের গল্প বলার প্রশংসা করতে একত্রিত হয় এবং ফটোগ্রাফারদের উদযাপন করে যারা এমন মুহূর্তগুলি ক্যাপচার করে যা অনুপ্রেরণা দেয়, অবহিত করে এবং আবেগকে উস্কে দেয় এবং তাদের কাজের প্রভাবকে স্বীকৃতি দেয়।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
কবিতা

এলে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে ::: রাণু সরকার।।।

চলে তো গিয়েছিলে,
আবার কেনো এলে-
কুড়ি বছর পর?
কষ্ট গুলোকে সংগ্রহ করতে গিয়ে আরো কষ্ট জন্ম নিলো।

দেখছোনা ওরা জ্বলছে–
দিলেতো সব ভণ্ডুল করে,

নমিত শরীর বারবার ওঠাবসা করতে পারি না যে–
কিছু কষ্ট কোথায় যে লুকিয়ে পড়লো কী জানি–
কিছুক্ষণ আগেও ওরা ছিলো।
ওদেরও ভয় আছে জ্বলার, যে কী জ্বালা একমাত্র আমিই জানি।
ভাবছিলাম বসে,
ওরা কোথায় থাকতে পারে।

তুমি এলে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে-
হয়তো তোমার ভয়ে তারা লুকিয়ে পড়েছে।
একটুও পালটাওনি তুমি, আগের মতই আছো।
এই বয়সে এসেও গর্হিত বস্ত্র পরিধান করেছো
যাগ্গে-আমার বলাটাই অপ্রয়োজনীয়,

কষ্ট গুলো ভালোই জ্বলছিলো-
প্রথমে তো আসতেই চাইছিলো না,
জোরপূর্বক জ্বালাতে হলো,
কেনো না এদের সান্নিধ্যে আর থাকতে
পারছি না।

কেনো এলে তুমি?

আমি তো অট্টালিকা ও মূল্যবান যাকিছু ছিলো সব তো দিয়ে এসেছি।
সাথে করে কিছুতো আনিনি,
তবে কেনো এলে আমার জীর্ণ কুটিরে?
এসেই আমার কষ্টের আগুনে দিলে জল ঢেলে।
এই ধোঁয়ায় কষ্ট গুলো ছটফট করছে-
একবারে পুড়ে গেলে এতো কষ্ট হতো না।

এ- তুমি কী করলে অর্ধমৃত করে রেখেদিলে !

Share This
Categories
কবিতা

জানা নেই গন্তব্যস্থল :: রাণু সরকার।।।

শরতের আকাশ দেখতে ভীষণ ভালো লাগে,
প্রতি শরতেই আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি
দল বেঁধে কারা যেন চলছে খড়ের আঁটি মাথায় নিয়ে।
অস্পষ্ট দৃষ্টিতে দেখি, অতোদূরে।
কষ্ট করে দৃষ্টিনিক্ষেপ করি,

ওদের গন্তব্যস্থল জানা নেই, চলছে তো চলছেই
দলের মধ্যে বৃদ্ধ বেশি,
কিশোর কম।
আবার কখন দেখি,
তুলোর পুঞ্জ মথায় নিয়ে ধীরগতিতে চলছে বৃদ্ধদের দল-
কিশোররা চলছে ক্ষিপ্রবেগে।

বৃদ্ধদের মুখ গম্ভীর দেখে মনে হচ্ছে অব্যক্ত
কত ভাষা অন্তরালে,
আমি ডেকেছিলাম-
একটু থমকে দাঁড়াল
কীজানি কী মনে হলো, আবার মন্থর গতিতে
চলতে লাগলো।

ওরা যাচ্ছে কোথায়?
আমায় ভাবনারা কুঁড়ে কুঁড়ে খায়!

Share This
Categories
কবিতা

হারিয়ে গেছে বিশ্বাস : রাণু সরকার।

ঘুণ ধরেছে সংসারাশ্রমে
শৃংখলায় রাখবে বেঁধে পরিশ্রমে

একা কি পারে কিছু-করতে নারী!
রসাতলে গেছে বোধ যার-
দোষ তো তারি।

মাতব্বরেরা বলে-
একা নারী কিছু করতে পারে-
নানা জন নানা কথা বলে-
নারী বেরুলে পথের ধারে।

দর্পভরে স্বামী-
দেখায় স্ত্রীকে তার ক্ষমতা,
ভরে আছে চরাচর
শুধুই দ্বিচারিতা।

কেন দেখাও নানা অজুহাত,
মনেতে রেখেছো বাড়িয়ে লালসার হাত।

জ্বলছে নারী নিপীড়নে,
করছে হাহাকার,
রক্ত-মাংসের নারী-
হৃদয় কি নেই তার?

কোন দিকে যাবে নারী, সবেতে দামিনী দক্ষিণা,
খাদকের স্বর্গভূমি সব দিক,
নারীর চেনা।

পুরুষের হাতেই ফাঁদ পাতা বোনা,
নারীর ভাগ্য করবে কে রচনা!

Share This
Categories
কবিতা

আত্মদর্প : রাণু সরকার।

সংসার করছি তাই জানি সংসারের সার
মনে কি পরে অলক্ষ্যে নির্দেশ করছেন ঈশ্বর-

সব ফেলে চলে যাব একদিন এটাও
সর্বসাধারণের জানা
সময় যে দ্রুত ফুরায় সেও নয় আমাদের অজানা।

তবে থাকবে কেনো এতো আত্ম অহংকারের ঘোর,
দরিদ্র মানুষ কিছু চাইলে কেনো করি হাতজোড়
রক্তের তেজ যতদিন আছে ততদিন বুঝি দেখাবে ক্ষমতার জোর।

মানুষকে কেন ভাবিনা ঈশ্বর- কেন করিনা নিবেদন নর-নারায়ন?
দেখ আমরা আসন পেতে কত রকমের করি
পূজন-

আমাদের বিশ্বাস প্রাণের প্রবাহ,
ঈশ্বরের ছোঁয়াতে কাটবে বুঝি হৃদয়ের দাহ।

আমাদের আবার কিসের বাড়ি কিসের ঘর
আমার আমিকে চিনতে কেটে যায় কত প্রহর।

কেনো ভাবতে পারি না ভালো ভালো কথা,
আমার আমিকে সরিয়ে দিলেই হবেনা মাথা ব্যথা।

Share This
Categories
অনুগল্প কবিতা

অকবি : রাণু সরকার।

আমি কবি নই,
বুঝিনা কিছুই,
আমার মনের ভাবনাকে ধরে রাখার চেষ্টা করি মাত্র-
সেটা কবিতা হয় কিনা তাই নিয়ে মাথার ঘাম ঝরাই না।
কিছু ভাবনাকে রূপ, রস দিয়ে সাজাই বটে আরকি,
একরকম নেশা বলতে পারি বা ভাবনাবিলাস!
টুকরো টুকরো ভাবনারা উড়ে বেড়ায় মনের মণিকোঠায় ছবির মতো,
কখনও তারা নৃত্যও করে আবার চপল কিশোর কিশোরীর মত ভ্রু কুঁচকে হাতপা নেড়ে মনকে দেয় নাড়িয়ে তখন চুপ থাকতে পারিনা।
আমি চুপ থাকার চেষ্টা করি বটে- কিন্তু সে দেয় না চুপ থাকতে, নিজেই বসে পড়ে মহানন্দে ডায়েরির পাতায়। তখন হৃদয় আমার তোলপাড় করে ঝড় তোলে,বাধ্য হয়ে তাকে নিয়ে বসি নানারূপে চিত্রিত করি ভাষা দিয়ে,সে তখন ভীষণ খুশি,হবেই বা না কেন-সেতো সাজতেই বেশি ভালোবাসে।

Share This
Categories
কবিতা

নতুন বৌ : রাণু সরকার।

নতুন বৌ, ও নতুন বৌ, বাবাহ্- একটা ফোন করতে পারোনিকো? তোমাদের বলিহারি বাপু এই বয়সে এতো ধকল কি নিতে পারে শরীর, বলো দেকি বাপু? কোথায় একটু এগিয়ে আসবে- তা না-
কোথায় গেলো গো সব- সেই আবলা ছোকরাটাই বা কোথায়?
ধর ধর, আমার হাতটা ভেঙি গেলো যে-
বিস্তর ভারি ব্যাগডা, কি করতিছো ডাল বসয়েছো বুঝি?
আরে আরে তোমার ডাল তো হাসতেছে গো, একটু দেরি করলেই লুটায়ে পড়তো হাসতে হাসতে, হায় রে-
কেমন বৌ গা তুমি, খেয়াল রাখবেনে!

কী কাটতেছো নতুন বৌ? তোমার শাশুড়িকে তো দেখতেছি না, সে কোথায় বাতাস লাগাইতে গেছে গায়ে? তার বুদ্ধিশূন্য হইলো কবে থেকেইকে-
এই নতুন বৌ আসতে না আসতেই পাকের ঘরে ঢুকাই দিলো। সেই স্বভাবডা গেলো না। তোমার শ্বশুড় বাঁইচা থাইকে কতনা অশান্তি কইরতো তখন একসাথে ছিলাম চোপাও কম না- তোর শাউড়ির কিছু বইলে সাত পাঁচ কথা শোনাইতো। যাগ্গে বাবা, আমিতো বেইচে গেছি।
আমার ছেলেরা তো চাকরি করে শুনেছো না?
ফ্ল্যাট কিনিছে দুই ছেলেই। আমার যার কাছে ইচ্ছা হয় তখনই তার কাছে থাকি, বৌ দুইজন একেবার ভালো তা বলইনা তবে মন্দও না। আইচকালকার বৌ তো- তবে বাপু তুমি কেমন বুঝইতে সময় লাগবে। যাগ্গে- শাউড়ি কখন আইবে?

আমি এতো কথা বইলাম তুমি মুচকি মুচকি হাসতাছো, উত্তর করছো না- তোমার রাগ হইছে না?

না গো জেঠিমা- কেনো রাগ করবো আপনি গুরুজন, আপনার কথায় রাগ করা যায়।
আপনি বেশ বলতে পারেন-

কী বলতে পারি গা, নতুন বৌ?

এতো কষ্ট করে এলেন- কোথায়ও এতোটুকুও
ক্লান্তি নেই- আর ব্যাগটা ধরবার জন্য ছোট দেওরকে ডাকছেন, এসে থেকেই বকবক করেই চলছেন তাই বলছি আপনার ক্লান্তি নেই।

বাবা আমি তো ভাইবছিলুম তুমি কথাই বলইতে পারো না।

ও– আপনি ভেবেছিলেন আমি বোবা-
আপনারা তো দেখেই এনেছেন-বোবা হলে কি আনতেন, বলুন জেঠিমা?
তবে আপনার একটি কথা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

কোনডা রে, নতুন বৌ?

ঐ যে– বললেন আরে আরে তোমার ডাল তো হাসছে গো- একটু দেরি করলেই লুটায়ে পড়তো হাসতে হাসতে–
তুমি কেমন বৌ গা খেয়াল রাখবেনে?

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী শিমলার কয়েকটি দর্শনীয় স্থান (প্রথম পর্ব)।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।। তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে  রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়। কেউ চায় বিদেশে ভ্রমণে, আবার কেউ চায় দেশের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণে। এমনি এক ভ্রমণ এর জায়গা হলো  শিমলা। এখন আমরা জানব শিমলার কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে।

 

 

শিমলা  উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী। উত্তরে মান্ডি এবং কুল্লু জেলা, পূর্বে কিন্নুর, দক্ষিণ-পশ্চিমে উত্তরখান্ড এবং সোলান-সিমুর জেলা দ্বারা পরিবেষ্টিত। ইংরেজ শাসনামলে শিমলাকে গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৮৭১ সাল থেকে শিমলা পাঞ্জাবের রাজধানী ছিল, পরে ১৯৭১ সালে হিমাচলের রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হয়। মাত্র দুই লক্ষ লোকের আবাস এই শিমলায়, যা ভারতের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার প্রাদেশিক রাজধানীও বটে।
শিমলা এর দর্শনীয় স্থানগুলো

 

 

ক্রাইস্ট চার্চ —

উত্তর ভারতের প্রাচীনতম গির্জাগুলোর মধ্যে একটি ক্রাইস্ট চার্চ। এটি দ্য রিজে অবস্থিত একটি সুন্দর নিও-গথিক শৈলীর চার্চ।  ক্রাইস্ট চার্চটি ১৮৪৪ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি উত্তর ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম গির্জা। ক্রাইস্ট চার্চটি রিজ্-এ অবস্থিত এবং এটি তার এলিজাবেথীয় স্থাপত্য ও তার নকশায়িত কাঁচের জানলার জন্য পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও গির্জাটিতে একটি পাইপ অর্গান রয়েছে, যেটি দেশের সবচেয়ে এক অন্যতম বৃহৎ হিসাবে বিবেচিত হয়। জানালা, অলঙ্কৃত স্থাপত্য, এবং নির্মল পরিবেশ এখানে স্থাপত্য এবং ইতিহাস উত্‍সাহীদের জন্য এটিকে অবশ্যই দেখার মতো করে তোলে।

সেন্ট মাইকেল ক্যাথিড্রাল—-

সেন্ট মাইকেল চার্চ ১৮৫০ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটা শিমলার প্রথম ক্যাথলিক গির্জা। এটিতে পাঁচটি মার্বেলের বেদী আছে যেগুলি ১৮৫৫ সালে ইতালি থেকে আনা হয়েছিল। এছাড়াও গির্জাটিতে সুন্দর নকশায়িত কাঁচের জানলা রয়েছে, যেগুলি চোখদুটিকে উচ্ছাসিত করে তোলে।

জাখু মন্দির—

জাখু পাহাড়ে অবস্থিত সিমলার সর্বোচ্চ বিন্দু জাখু মন্দির একটি জনপ্রিয় মন্দির। জাখু পাহাড় হল শিমলার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং পারিপার্শ্বিক ভূ-প্রকৃতির এক অত্যাশ্চর্য নিদারুণ দৃ্শ্য পরিদর্শন করা যায় । পাহাড়ের চূড়ায় স্থিত জাখু মন্দির প্রভু হনুমানের প্রতি উৎসর্গীকৃত। স্থানীয় কিংবদন্তিদের অনুমান অনুযায়ী, সঞ্জীবনী ঔষধি বিদ্যমান এই পাহাড়টিকে তুলে নিয়ে আসার সময় প্রভু হনুমান এখানে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এর ফলস্বরূপ, এই স্থানটি একইভাবে ভক্ত এবং ভ্রমণকারীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মন্দিরটি থেকে সিমলা এবং আশপাশের পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে এই মন্দিরে যাওয়াই একটি দুঃসাহসিক কাজ।

সামার হিল—-

সিমলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সামার হিল একটি নির্মল এবং মনোরম জায়গা, যা তার সবুজ ও নির্মল পরিবেশের জন্য পরিচিত। বাণিজ্যিক সিমলার শত ব্যস্ততা থেকে দূরে কোনও স্থান অন্বেষণকারী পর্যটকদের মধ্যে সামার হিল হল খুবই জনপ্রিয়। এর পথের চারপাশে ওক, সেডার, রডোডেনড্রন এবং আরোও অনেক গাছপালা বেড়ে উঠেছে। এখানে অবস্থিত ম্যানরভিল্যে ম্যানশন হল এই এলাকার সবচেয়ে বিখ্যাত ভবন, কারণ এটিই সেই জায়গা যেখানে মহাত্মা গান্ধী শিমলা ভ্রমণের সময় ছিলেন। এটি প্রকৃতির পদচারণা, পিকনিক এবং উপত্যকার মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য একটি দুর্দান্ত স্থান।

দ্যা রিজ —

মল রোডের পাশে অবস্থিত দ্য রিজ একটি খোলা জায়গা, যা তুষারাবৃত হিমালয়ের প্যানোরামিক দৃশ্য দেখায়। রিজ একটি উন্মুক্ত স্থান, যেটি শিমলার সবচেয়ে বেশি কার্যকলাপ কেন্দ্র রূপে পরিচিত। দ্য রিজ্ বা শৈলশ্রেণীতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক আছে এবং বেশ কিছু কার্যক্রম আয়োজনের পাশাপাশি এখান থেকে পার্শ্ববর্তী পর্বতগুলির এক সুন্দর দৃশ্য পরির্শনেরও সুযোগ দেয়। শহরের এই অংশটি শিমলার জনজীবনের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটির নীচের জলাশয় শহরের একটি প্রধান অংশে জল সরবরাহের দায়ভারে রয়েছে।অবসরে হাঁটা, পিকনিক এবং সিমলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এটি একটি জনপ্রিয় স্থান।

ম্যাল রোড —

সিমলার সবচেয়ে বিখ্যাত আকর্ষণগুলোর মধ্যে একটি মল রোড। এটি দোকান, রেস্তোরাঁ এবং ঔপনিবেশিক যুগের ভবনে পূর্ণ একটি ব্যস্ত রাস্তা। শিমলার বিপূল সংখ্যক ল্যান্ডমার্ক এখানে অবস্থিত হওয়ায়, ম্যাল রোড পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু রেস্তোঁরা, ক্লাব, বার ও দোকান অবস্থিত হওয়ায় এটি শিমলার বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসাবেও বিবেচিত হয়। যেকোনও ক্রেতাদের জন্য ম্যাল রোড স্বর্গোদ্যানের ন্যায়।মল রোড অবসরে হাঁটা, স্থানীয় হস্তশিল্প কেনাকাটা করার এবং আশপাশের পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা।

 

 

 

 

ভ্যাইসরিগেল লজ—

অবসারভেটারী পাহাড়ের উপর অবস্থিত ভ্যাইসরিগেল লজ।এটি রাষ্ট্রপতির বাসভবন হিসেবেও পরিচিত। ১৮৯৮ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি ভারতের ভাইসরয়, লর্ড ডাফরিনের সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। বর্তমানে এই স্থানটি হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ আ্যডভান্স স্টাডিজ। লজটি সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের এক অত্যাশ্চর্য দৃ্শ্য পরিদর্শনেরও সুযোগ দেয়। ভাইসারেগাল লজ হলো একটি ঐতিহাসিক ভবন, যা ঔপনিবেশিক যুগে ব্রিটিশ ভাইসরয়ের গ্রীষ্মকালীন বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This