Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৮ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ১৮ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯৮০ – এস্তেবান কাম্বিয়াসো, সাবেক আর্জেন্টিনীয় ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৮৩ – ক্যামেরন হোয়াইট, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ও মেলবোর্ন স্টার্সের অধিনায়ক।

১৯৯৩ – মিয়া মিচেল, কজন অষ্ট্রেলিয়ান অভিনেত্রী এবং গায়িকা।

১৯০০ – বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত, ভারতীয় কূটনৈতিক, রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদে ভারতের প্রথম মহিলা সভাপতি।

১৯০৮ – বিল মেরিট, নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।

১৯২৭ – রোজালিন কার্টার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টারের সহধর্মণী।

১৯৩৩ – রোমান পোলান্‌স্কি, পোল্যান্ডীয় চলচ্চিত্র পরিচালক।

১৯৩৩ – জুস্ত ফোঁতেন, ফ্রান্সের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়।

১৯৩৪ – গুলজার, প্রখ্যাত ভারতীয় কবি, সুরকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক।

১৯৩৫ – গেইল ফিশার, আমেরিকান অভিনেত্রী।

১৯৩৬ – রবার্ট রেডফোর্ড, আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক।

১৯৫৪ – ভিকে শশিকলা, ভারতীয় ব্যবসায়ী মহিলা রাজনীতিবিদ হয়ে উঠেছেন

১৯৪৮ – ফারুক, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ।

১৯৪৯ – সেলিম আল দীন, বাংলাদেশী নাট্যকার, গবেষক।

১৯৫৬ – সন্দ্বীপ পাতিল, ভারতের সাবেক ও প্রথিতযশা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৬৭ – দলের মেহেন্দী, ভারতীয় কন্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, লেখক, প্রযোজক, সম্পাদক এবং পরিবেশবিদ।

১৯৬৯ – এডওয়ার্ড নর্টন, মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা, ও সমাজকর্মী।

১৭০০ – প্রথম বাজিরাও, একজন প্রসিদ্ধ ভারতীয় সেনাপতি।

১৭৫০ – আন্তোনিও সালিয়েরি, ইতালীয় ধ্রুপদী সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং শিক্ষক।

১৭৯৪ – জন ক্লার্ক মার্শম্যান ইংরেজ সাংবাদিক ও ঐতিহাসিক, জনপ্রিয় সংবাদপত্র “ফ্রেন্ড অব ইন্ডিয়া” র প্রকাশক।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৮ – পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশাররফ চাপের মুখে পদত্যাগ করেন।

১৯৪৫ – তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু নিহত হন বলে সংবাদ প্রচারিত হয়।

১৯৫৮ – ব্রজেন দাস প্রথম বাঙালি ও প্রথম এশীয় হিসাবে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার কেটে অতিক্রম করেন।

১৯৫৮ – ব্লাদিমির নবোকভের বিখ্যাত ও বিতর্কিত উপন্যাস ‘ললিতা’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ হয়।

১৯৬১ – বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-এর কার্যক্রম শুরু হয়।

১৯৬৩ – জেমস মেরেডিথ প্রথম কালো নাগরিক যিনি মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৭১ – ভিয়েতনাম যুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড তাদের সেনা দল ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

১৯৭৪ – ভারত পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজস্থান প্রদেশের মরুভূমিতে প্রথম পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায় ।

১৮০০ – লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করেন।

১৮০৪ – ফ্রান্সের সংসদ সিনেটে এক আইন পাশের মধ্য দিয়ে নেপোলিয়ান বেনাপোর্ট সেদেশের সম্রাট হিসাবে আত্ম প্রকাশ করেন ।

১৮১২ – স্মোলেনস্কের যুদ্ধে রুশরা নেপোলিয়ানের কাছে পরাজিত হন।

১৮৩০ – ফ্রান্স আলজেরিয়া দখলের জন্য ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ।

১৫৮৭ – আমেরিকায় প্রথম ইংরেজ শিশু ভার্জিনিয়া ডেয়ারের জন্ম।

১২০১ – রিগা শহর প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০৯ – কিম দায়ে জং, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

২০১৫ – শুভ্রা মুখোপাধ্যায়, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী।

১৯৪৫ – সরলা দেবী চৌধুরানী, বিশিষ্ট বাঙালি বুদ্ধিজীবী।

১৯৪৫ – সুভাষচন্দ্র বসু, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা।

১৯৬৮ – মওলানা মুহাম্মদ আকরাম খাঁ, একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ।

১৯৬৯ – হুমায়ুন কবির, ভারতীয় বাঙালি শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, লেখক ও দার্শনিক।

১৯৭৫ – শওকত আলী, রাজনীতিবিদ এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা।

১৯৮০ – দেবব্রত বিশ্বাস, স্বনামধন্য ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়ক ও শিক্ষক।

১৯৯৮ – পার্সিস খামবাট্টা, একজন ভারতীয় মডেল ও অভিনেত্রী।

১৮৫০ – অনরে দ্য বালজাক, ঊনবিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক এবং নাট্যকার।

১৮৯৮ – রামতনু লাহিড়ী, বাঙালি সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাসংগঠক।

১৬৪৮ – ইব্রাহিম (উসমানীয় সুলতান), অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান ছিলেন।

১২২৭ – চেঙ্গিজ খান, প্রধান মঙ্গোল রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা বা মহান খান, ইতিহাসেও তিনি অন্যতম বিখ্যাত সেনাধ্যক্ষ ও সেনাপতি।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ রিভিউ

লুকিয়ে থাকা একটি স্মৃতি : শীলা পাল।

জায়গাটার নাম লুকলা।নেপালের বিশাল বিশাল পাহাড়ের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে থাকা গ্রামের এটি একটি ছোট্ট গ্রাম।কিখেয়াল হলো কাঠমান্ডু তো অনেক বার ঘোরা হলো এবারে ছোট ছোট ফ্লাইটে এই গ্রাম গুলো ঘুরে দেখার। একঘন্টা ও লাগলো না আমরা একেবারে হিমালয়ের গহনে চলে এলাম ।দুটো পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে দশ বারো জন যাত্রী নিয়ে ছোট ছোট প্লেনগুলো
আসে।দিনে দু তিন বার। এতো সরু নামার পথ ভয় হয় এইবুঝি পাহাড়ের ধাক্কা লেগে যাবে ।কিন্তু নিয়মিত এই পরিবহণ ব্যবস্থা চলেছে।যেমন কাঠমান্ডু থেকে পোখরা বা জুমসুং এটিও তাই।প্রায় কুড়ি বছর আগের কথা বলছি।শুনেছি ওখান থেকে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে যাওয়া শুরু হয়। তখন আমার একান্ত প্রিয় মানুষ টি আমার সঙ্গী ছিলেন ।আমরা দু জনে থাকলে পৃথিবীর যে কোন জায়গাতেই ইচ্ছে হলে চলে যেতাম। তখন লুকলার সন্ধান পেয়ে ঐখানে যাওয়া ই মনস্থ করলেন ।অনেক অনেক পাহাড়ে ঘুরেছি এতো নির্জন বিচ্ছিন্ন পাহাড়ে কখনও যাই নি।তখন দুটি হোটেল ছিল নাম মনে নেই।একদম খালি ।সব অভিযাত্রী দল বেরিয়ে গেছে।ওরাই হোটেল দুটিতে থাকেন ।সবাই চলে গেছে অভিযানে।আমরা খুব সহজেই সুন্দর আপ্যায়ন পেলাম।ম্যানেজার আমাদের মতো ট্র্যাভেলার পেয়ে ভীষণ খুশী ।সাধারণত এরকম ট্র্যাভেল কেউ করে না।ওনার সাথে সারাদিন বসে কতো গল্প শুনে আমাদের এই নির্জন পাহাড়ের দিনগুলো এতো মোহনীয় হয়ে উঠেছিল আজ এতোবছর পরেও স্মৃতি অম্লান হয়ে আছে ।
এতো সুন্দর পাহাড়ের রূপ আগে দেখিনি ।যেন বিশাল হিমালয়ের একদম
অভ্যন্তরে ঢুকে পড়লাম।চারিদিক পাহাড়ে পাহাড়ে ঘেরা তার মাঝে ছোট্ট একটি গ্রাম ।লুকলা এয়ারপোর্টে বললে
ঠিক বলা হবে না।ছোট্ট প্লেনটি কোনমতে হেলে দাঁড়িয়ে পরে।ওই ঝুলন্ত
অবস্থায় যাত্রীরা নামা ওঠা করে।চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না ।বিশ্বের
একমাত্র বিপজ্জনক এয়ারপোর্টে নামে খ্যাত এই লুকলা এয়ারপোর্টে ।
।এখানে সাধারণত
গ্রামবাসী আর এভারেস্ট অভিযাত্রী রাই আসেন ।এখান থেকেই শুরু হয় এভারেস্ট বেস ক্যাম্প যাত্রা । অভিযাত্রীরা এখান থেকেই ট্রেকিং শুরু করেন।এখন অবশ্য এয়ারপোর্ট হয়ে গেছে ‘তেনজিং নোরগে এয়ারপোর্ট’। আমি পঁচিশ তিরিশ বছর আগের কথা বলছি।যখন শুধুই নাম শুনেছি।গুগুল ছিল না ইন্টারনেট ছিল না কেবল ম্যাপ দেখে দেখে ঘুরে বেড়িয়েছি।একটা নেশার মতো পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে এতো আনন্দ পেতাম আজ এই স্মৃতি যে কী মধুর বুঝতে পারছি।
আমার লেখা কিন্তু অন্য প্রসঙ্গে চলে যাবে এখুনি ।যার জন্য এতো রাতে কলম ধরেছি।বেশ মধুর আতিথেয়তা তে দিন কটি কাটছে।নেপালী মালিক আমাদের দু জনের জন্য তাঁর হোটেলের সেরা সেরা পদ রান্না করে খাওয়াচ্ছেন।কী যে যত্ন করেছিলেন তা বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমরা চলে আসার আগের দিন একটি মহিলা অভিযাত্রী দল ফিরলো।আমরা আমাদের ঘর থেকেই দেখলাম শ্রান্ত বিধ্বস্ত দলটি সামনের সবুজ লনে হাত পা ছড়িয়ে অনেক ক্ষণ চোখ বুজে শুয়ে রইলো।ঘোড়াওলা কুলীরা সব মালপত্র রেখে কোথায় চলে গেল ।সুইস অভিযাত্রী ।সব মেম সাহেব ।আমার খুব ওদের দেখতে ভালো লাগছে ।কী সুন্দর সব দেখতে।তখনও অভিযানের পোষাক গড়া।আমি অবাক হয়ে দেখছি।তুমি এসে বললে এই পাগলী এখনও দাঁড়িয়ে আছো।ব্রেকফাস্ট করতে হবে তো।না এদের দেখেই পেট ভরে যাবে ।চলো ম্যানেজার ডাকছে।আজ নতুন কি একটা খাওয়াবে।আমি লজ্জা পেয়ে তাড়াতাড়ি ওর সঙ্গে ডাইনিংহলে গেলাম।কিন্তু চোখে ওই পরিশ্রান্ত সুন্দর মুখগুলো লেগে রইলো ।
তারপর আর ওদের দেখিনি।বিকেল বেলা চা দিতে এসে বেয়ারা বললো ম্যানেজার সাব আপনাদের ডেকেছেন । চা খেয়ে আমরা ওনার ঘরে গেলাম ।বিশাল ঘরে চারিদিকে কাচের বড় বড় জানালা ।সামনে পাহাড়ের নীচে বিস্তৃত সবুজের ময়দান। একঝলক দেখে মনে হলো এতো সুন্দর ও হতে পারে! উনি বসেছিলেন । আমরা ঢুকতেই আইয়ে দিদি আইয়ে দাদা বলে উঠে এসে ভেতরে জানালার ধারে সোফাতে বসালেন ।আমাকে বললেন দিদিকে দেখে আমার মনে হয়েছে দিদির মনে অনেক প্রশ্ন আছে এই মহিলা অভিযাত্রীদের নিয়ে।আমার তাই মনে হলো এটা দিদিকে দেখাই।পরে বুঝলাম এবারেগাইড পোর্টারদের সঙ্গে অভিযাত্রীনীদের বিদায়ের পালা।সে যে কী বিরল দৃশ্য ।সবাই কাঁদছে জড়াজড়ি করে।একটি খুব সুন্দরী বয়সও সবার থেকে কম ও তো ওর গাইডকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে চুমোয় চুমোয় ভরে দিচ্ছে ।সবার বিদায়।পালা শেষ হয়ে গেল । ওর আর শেষ হয়না।যেন অনন্ত কাল এই ভাবেই থাকবে।আর তার সঙ্গে কান্না ।চোখের জলে দুজনেই ভেসে যাচ্ছে । এরকম একাত্ম হয়ে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে আছে সমস্ত বিশ্ব পৃথিবী ভুলে। আমি অবাক হয়ে দেখতে দেখতে ভাবছি এই কালো রোগা ছেলেটির মধ্যে কী পেল এতো কষ্ট ছেড়ে যেতে ! আমার মনটা ও কেমন খারাপ হতে লাগলো ।তখন ঐ দাদা বললেন অনেক দিন ভয়ংকর পরিবেশে পাশাপাশি থাকতে থাকতে কতো বিপদের মুহূর্তে প্রান দিয়ে যখন ওদের আগলে রাখে সেই মুহূর্ত গুলো ওরা ভুলতে পারে না ।ওদের ওপর অগাধ ভরসা আর বিশ্বাস করতে করতে কখন যে ভালোবেসে ফেলে বুঝতেও পারে না।এই ছেড়ে যাওয়ার সময়ে ওদের প্রচন্ড কষ্ট হয় দিদি। আমি তো অনেক দেখেছি কী পুরুষ কী মহিলা কদিনের সফরে ওরা অভিন্ন হৃদয় হয়ে যায়।তাই এই চলে যাওয়াটা বড়োই বেদনার দিদি।আমি চুপ করে বসে থাকি ।তখনও ওরা দুজন দুজনকে এক ভাবে ধরে আছে।আমার বুকের মধ্যে কেমন একটা কষ্ট হতে লাগলো ।যেন আমার কোনও প্রিয়জন ছেড়ে চলে যাচ্ছে । যার সঙ্গে আর জীবনে কোনও দিন দেখা হবে না।
কতো কী জানা ছিলো না দেখা ছিলো না।এই লুকলা একটা সম্পূর্ণ অচেনা জগতের ছবি উপহার দিয়েছিল। আমার প্রিয় মানুষ টি আজ আমার কাছে নেই।অনেক দূরে আমায় রেখে চলে গেছে।আমি জানি এখন সে আমার সাথে লুকলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমার কাঁধে হাত রেখে সেই বিদায়বেলার করুণ দৃশ্য টি দেখতে দেখতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।কান্নার শেষ হয় কি? আমার জানা নেই। ।

আমার পাহাড়ের একটি স্মৃতি সবার সাথে শেয়ার করলাম ।

Share This
Categories
কবিতা

ভোরের শ্রাবণ : শীলা পাল।

উতলা মনের মত এলে অন্ধকারে ঢেকে
দিশা হারা আমি খুঁজি
তোমাকে দিকে দিকে।
বৃষ্টির ধারা ঝরঝর হয়ে
ঝরে পড়ে মনের মাঝে
ভেজা শরীরে কদম্বের
নীচে একাকী বনমাঝে।
অনেক টা বছর পেরিয়ে
এসে তোমায় পেয়ে ভাবি
সবই কি থাকে সঞ্চিত হয়ে
হঠাৎই পেয়ে গেলাম চাবি?
ঝরঝর ঝরে শ্রাবণ বেলা
হৃদয়ের সাথে কেবলই তার খেলা
অকূলের মাঝে যেতে যেতে কেবলই ভাবে
শ্রাবণ শেষে কোথায় সে হারাবে?

বনমাঝে???

Share This
Categories
কবিতা

যাপন কথা : শীলা পাল।

কতো কথাই তো জমে থাকে মনের ভিতর
বলা হয় না বলি বলি করেও।
ঠিক মুহূর্ত টা বুঝতে পারি না
যখন বললে তুমি শুনবে।
এরকম করেই দিনগুলো কেটে যায় ।
কথাগুলো কিছুটা সবুজ শ্যাওলা ধরা জবুথবু বৃদ্ধার অস্পষ্ট কন্ঠের মতো
রিনরিনে সুর টি চাপা পড়ে গেছে
বৃদ্ধ কদমগাছের ডালে ।
সে তখন যুবক ছিল অনেক শুনেছে যেমন দোয়েলের গানে বুলবুলের শীসে, মন ভাসানদীর মতো টলটলে ছলছলে তার যৌবন।
এখন কে শুনবে বল তোমার কথা
আর কী সময় আছে? ভুল করেও পরে বলব
একথা মনেও এনো না ।এই যে সময় সেতো
চলে যাবার তাড়ায় অস্থির
যেটুকু সাধ যেটুকু আহ্লাদ ওকে ধরে বেঁধে
করে নাও নাহলে যা হল না তা আর কোনও দিন হবে না।
যে হাসি ঠোঁটের কোনে জাগে তা রেখে যেতে পারাটাই সুখের ,এই কৌশল জানতে
যাপনের যে আর্ট আছে সেইটুকু রপ্ত করতে হবে মাত্র ।

Share This
Categories
কবিতা

সাধ : শীলা পাল।

প্রকাশ্যে আসতে তোমার অনেক বাধা জানি
তাই সরে সরে রহি নিজ নিকেতনে ,
বৈরাগ্য বাস করে অবচেতনে।
শুধু সমাপন করে সাঙ্গ করি খেলা
সেখানেও হারানোর ভয় ,
আছ অগোচরে এই ভালো মনে তাই মানি
শুধু থেকো কাছাকাছি অনুভবে পাই যেন
ডাকি যখনই।

Share This
Categories
কবিতা

বৃদ্ধ বয়স : শীলা পাল।

কত সোনার মত দিন কেটে গেল হেলাফেলায়
বুঝি নি কখনও এত ছোট্ট
আমাদের জীবন !
কত কিছুই রয়ে গেল বাকি
ভাল করে ছুঁয়ে দেখার আগেই মনে হল এতটুকু মোটে সময়!
জীবন এত দ্রুত চলে যায়
কেউ বোঝে না কত কী করার ছিল কত কী বলার ছিল
কিছুই হল না ।
মনে হত অনেক বাকি আছে পথ চলা চলতে চলতে কখন যে এসে গেছি নদীতীরে জানি না।
অস্পষ্ট অচেনা ধূসর এক জগত হাতছানি দেয়
জানি না কেমন সে।
বড় মন কেমন করে কেন এত দ্রুত চলে গেল দিনগুলি!

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ব্রিটিশ শাসকদের ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী  প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী  ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।ব্রিটিশ শাসকদের ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী। লোকে যাকে মহারাজ বলে ডাকে। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের কারণে অগ্নিযুগে যে কয়েকজন মানুষ ভারতবর্ষে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন, ব্রিটিশ শাসকদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী তাদের অন্যতম।

 

ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী।

 

জন্ম —

 

বাংলার নির্যাতিত-নিপীড়িত, মুক্তিকামী মানুষের প্রিয় মহারাজের জন্ম ১৮৮৯ সালের ৫ মে তদানীন্তন ময়মনসিংহ জেলা, বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার কাপাসাটিয়া গ্রামে। এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম হয় তার। তার পিতার নাম দুর্গাচরণ চক্রবর্তী এবং মাতার নাম প্রসন্নময়ী। এঁদের পঞ্চম সন্তান ছিলেন ত্রৈলোক্যনাথ। তার পিতাও স্বদেশী আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন।

 

শিক্ষাজীবন—

 

১৯০৫ সালে ত্রৈলোক্যনাথ বছরখানেক ধলা হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ১৯০৬ সালে স্বদেশী আন্দোলনের সময় তার অনুজ চন্দ্রমোহন চক্রবর্তী তাকে সাটিরপাড়া হাই স্কুলে ভর্তি করে দেন। প্রবেশিকা পরীক্ষার ঠিক আগে ১৯০৮ সালে বিপ্লবী কাজের জন্য গ্রেপ্তার হলে প্রথাগত শিক্ষার ইতি হয়। সেসময় সাটিরপাড়া স্কুলে দুজন শিক্ষক ছিলেন মহিম চন্দ্র নন্দী এবং শীতল চক্রবর্তী। মহিম চন্দ্র নন্দী বিলাতী লবণ ফেলার অপরাধে ঢাকা জেলে বন্দি ছিলেন কিছুদিন। ১৯০৯ সালে ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী প্রথমবার জেল থেকে ছাড়া পেলে জেলগেটে শীতল চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

 

কর্মজীবন—

 

মহান এই বিপ্লবীকে সবাই পছন্দ করতেন। প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পর্যন্ত তাকে সমীহ করতেন। স্বাধীনতা ব্রিটিশদের কাছ থেকে ফিরিয়ে আনতে জীবনের সবটুকু সময় বিসর্জন দিয়েছেন ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী। বছরের পর বছর জেলে বন্দি থাকা থেকে শুরু করে অসহনীয়, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে হয়েছে তাকে। তবু আদর্শিক অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসেননি। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবার বিপুল উদ্যমে সংগঠনের কাজ করেছেন অকুতোভয় মহারাজ। ১৯০৬ সালে অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন। জাতীয়ভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে ব্যায়াম প্রতিষ্ঠান গঠন করে নিজ জেলায় বিপ্লবী ঘাঁটি তৈরি করতে থাকেন। ১৯০৯ সালে ঢাকায় আসেন এবং ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলায় পুলিশ তার সন্ধান শুরু করলে আত্মগোপন করেন। এ সময়ে আগরতলায় উদয়পুর পাহাড় অঞ্চলে গিয়ে ঘাঁটি তৈরি করেন। ১৯১২ সালে গ্রেপ্তার হন। পুলিশ একটি হত্যা মামলায় জড়ালেও প্রমাণের অভাবে মুক্তি পান। ১৯১৩-১৪ সালে মালদহ, রাজশাহী ও কুমিল্লায় ঘুরে গুপ্ত ঘাঁটি গড়তে থাকেন।

 

আন্দামান জেল—

 

ব্যক্তি পর্যায়ে মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে কারও বিরোধ ছিল না। অসাধারণ এক ব্যক্তিত্বগুণে তিনি তা অর্জন করেছেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মতো বিশ্ববরেণ্য নেতারা তাকে স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন।

১৯১৪ সালে পুলিশ তাকে কলকাতায় গ্রেপ্তার করে বরিশাল ষড়যন্ত্র মামলার আসামিরূপে আন্দামানে সেলুলার জেলে পাঠায়। পুলিনবিহারী দাস এবং তিনি উভয়েই ছিলেন অনুশীলন সমিতির প্রথম যুগের নেতা যারা সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন। ত্রৈলোক্যনাথ ১৯২৪ সালে জেল থেকে মুক্তি পান।
মুক্তির পর দেশবন্ধু চিত্ত রঞ্জন দাশের পরামর্শে দক্ষিণ কলকাতা জাতীয় বিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯২৭ সালে গ্রেপ্তার হয়ে বার্মার মান্দালয় জেলে প্রেরিত হন। ১৯২৮ সালে তাকে ভারতে এনে নোয়াখালী হাতিয়া দ্বীপে অন্তরীণ করে রাখা হয়। ঐ বছরই মুক্তি পেয়ে উত্তর ভারতে যান এবং চন্দ্রশেখর আজাদ প্রমুখের সংগে হিন্দুস্তান রিপাবলিকান আর্মিতে যোগ দেন। পরে বিপ্লবী দলের আদেশে বার্মার বিপ্লবীদের সংগে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে বার্মায় যান। ১৯২৯ সালে লাহোর কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৩০ সালে গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৩৮ সালে মুক্তি পান।

 

সুভাষ চন্দ্র বসু এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কাজ—-

 

তিনি সেই বছরেই সুভাষ চন্দ্র বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করে রামগড় কংগ্রেসে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সিপাহি বিদ্রোহ ঘটাবার চেষ্টায় ভারতীয় সৈন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সুবিধা করতে পারেননি। এ সময়ে চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার হন। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৪৬ সালে মুক্তি পান।

 

পাকিস্তানকালীন কর্মজীবন—-

 

অসামান্য দেশপ্রেমিক এই মানুষটি ব্রিটিশ শাসনের সময় তিরিশ বছর জেল খেটেছেন। আত্মগোপনেও থেকেছেন পাঁচ-ছয় বছর। এর পর স্বাধীন দেশেও তাকে অত্যাচার- নির্যাতন সইতে হয়েছে। পাকিস্তান সরকার তাকে কারান্তরীণ করেছে। আজীবন অকৃতদার মহারাজ মানুষের জন্য একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, উন্নত সমাজ নির্মাণের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন।১৯৪৬ সালেই নোয়াখালীতে সংগঠন গড়বার চেষ্টা করেন। স্বাধীনতালাভের পর পূর্ব পাকিস্তানে নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। ১৯৫৪ সালে সংযুক্ত প্রগতিশীল দলের প্রার্থী হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান এসেম্বলিতে নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৫৮ সালে তার নির্বাচন অগ্রাহ্য হয় এবং রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ এমনকি সামাজিক কাজকর্মেও তার ওপর বাধা আরোপ করা হয়। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় খোদ নিজের নিজের দেশের সরকারই এই বৃদ্ধ বিপ্লবীকে আবার কারারুদ্ধ করে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হওয়া বৈমাতৃসুলভ ব্যবহারের বিস্মৃত ও ব্যথিত হন তিনি। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত স্বগ্রামে প্রকৃতপক্ষে নির্জনবাস করেন।

 

জীবনসায়াহ্নে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারত যান ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী। প্রথমে অসম্মতি জানালেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিশেষ তদারকিতে ভিসা দিতে সম্মত হয় পাকিস্তান সরকার। ১৯৭০ সালের ২৪ জুন যশোরের বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে মহারাজ ভারতে প্রবেশ করেন। এ সময় সীমান্তে উপস্থিত ভক্তরা অশ্রুসজল নয়নে তাকে বিদায় জানান। ভারতে পৌঁছে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। পুরোনো বন্ধু, সহযোদ্ধা, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করেন। সফরে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে। সেখানে পাকিস্তানি শাসক দ্বারা নির্যাতিত পূর্ব-বাংলার মানুষের পাশে থাকার জন্য ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান। তবে সে আহ্বান প্রকাশ্যে ছিল না। মহারাজকে শ্রদ্ধা করতেন বাংলার আরেক স্বাধীনতাকামী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পূর্ব বাংলার স্বাধীনতাকামী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে তিনি আলোচনা করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তার পাশে থাকার জন্য তাদের পরামর্শ দেন মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ। প্রায় ৪৭ দিনের ভারত সফরের প্রতিটি দিন পার করেছেন ব্যস্ততার সঙ্গে। ভারতের পার্লামেন্টে তিনি ভাষণ দেন। মৃত্যুর তিন দিন আগে ১৯৭০ সালের ৬ আগস্ট দিল্লির পার্লামেন্টে এমপিদের সংবর্ধনার উত্তরে তিনি এই ভাষণ প্রদান করেন। অবশেষে ভারতের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ৯ আগস্ট রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অনন্তের পথে পাড়ি জমান মহারাজ।

 

প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ—

 

মহারাজ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী কেবল বিপ্লবী ছিলেন না। তিনি একাধারে লেখক, কবি, চিন্তাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্নেষক। তিনি যেমন কবিতা লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন গীতার ভাষ্য। লিখেছেন জেলখানার অভ্যন্তরীণ সমস্যা ও সংকট নিয়ে। স্কুলের জন্য পাঠ্যবইও রচনা করেছেন। সবকিছু ছাপিয়ে ‘জেলে ত্রিশ বছর ও পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম’ বইটির জন্য তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। কালের বিবর্তনে গ্রন্থটি অগ্নিযুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে উঠেছে।।।

তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আজ ১৬ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ১৬ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৪ – ওয়েন্ডেল মেরেডিথ স্ট্যানলি, মার্কিন রসায়নবিদ এবং ভাইরাসবিদ।

১৯১৩ – মেনাখেম বেগিন, ইসরায়েলের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ।

১৯৩০ – ইংরেজ কবি ট্রেড হিউজ।

১৯৪৬ – মাসউদ বারজানি, ইরাকে স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিশ সরকারের রাষ্ট্রপতি এবং কুর্দিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান নেতা।

১৯৫০ – জেফ থমসন, সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট তারকা।

১৯৫৪ – জেমস ক্যামেরন, একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী কানাডীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্য লেখক।

১৯৫৮ – ম্যাডোনা, আমেরিকান গায়ক-গীতিকার, প্রযোজক, অভিনেত্রী, এবং পরিচালক।

১৯৬০ – টিমোথি হাটন, আমেরিকান অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক।

১৯৬২ – স্টিভ কারেল, আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক এবং চিত্রনাট্যকার।

১৯৬২ – আইয়ুব বাচ্চু, বাংলাদেশী সঙ্গীত শিল্পী।

১৯৬৬ – তারানা হালিম, বাংলাদেশী টেলিভিশন অভিনেত্রী, নাট্য পরিচালক, লেখক, আইনজীবী এবং সমাজকর্মী।

১৯৬৮ – অরবিন্দ কেজরীওয়াল, ভারতীয় রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী, ভারতীয় রাজস্ব সেবার প্রাক্তন কর্মকর্তা, দিল্লির সপ্তম মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৭০ – সাইফ আলি খান, ভারতীয় অভিনেতা এবং প্রযোজক।

১৯৭০ – মনীষা কৈরালা, ভারতীয় অভিনেত্রী।

১৯৭৪ – শিবনারায়ণ চন্দরপল, সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার।

১৯৮০ – শাহিদা বেগম, কক্সবাজারের শ্রেষ্ঠ সহকারী প্রাথমিক শিক্ষিকা।

১৯৯৭ – গ্রেসন চ্যান্স, আমেরিকান সংগীতশিল্পী।

১৮২১ – আর্থার কেলি, ব্রিটিশ গণিতবিদ।

১৮৪৫ – গাব্রিয়েল লিপমান, ফরাসি-লুক্সেমবার্গীয় পদার্থবিজ্ঞানী এবং উদ্ভাবক।

১৮৬০ – মার্টিন হক, ইংরেজ শৌখিন ক্রিকেট তারকা ও অধিনায়ক।

১৮৮৮ – টমাস এডওয়ার্ড লরেন্স, ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ব বিশারদ, সামরিক নীতি নির্ধারক ও লেখক।

১৮৯২ – মার্কিন কার্টুনিস্ট অটো মেসমার।

১৮৯৫ – অস্ট্রিয়ান অভিনেত্রী লিয়ান হেইড।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৮ – গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে পুরুষদের ৫০ মিটার ও মহিলাদের ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতা শেষ হয়। মহিলাদের ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতার ফাইনালে যুক্তরাজ্যের রেবেকা অ্যাডলিংটন হিটে তার করা নতুন অলিম্পিক রেকর্ড আবার ভেঙ্গে ৮:১৪.১০ সময়ে নতুন অলিম্পিক তথা নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েন।

১৯০৪ – নিউ ইয়র্কে গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু।

১৯৪৬ – মুসলীম লীগ ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে পালনের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কলকাতা দাঙ্গা শুরু হয়।

১৯৬০ – সাইপ্রাস দ্বীপ স্বাধীন হয়।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় উগান্ডা।

১৯৭৫ – সৌদি আরব, সুদান কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান।

১৮২৫ – বলিভিয়ার প্রজাতন্ত্র ঘোষণা।

১৮৪৩ – ব্রাহ্মধর্মের প্রচার এবং তত্ত্ববোধিনী সভার সভ্যদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার উদ্দেশ্যে অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদনায় তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।

১৮৫৮ – ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেমস বুচাননকে টেলিগ্রাফ পাঠান।

১৮৬৭ – কার্ল মার্কস ‘ক্যাপিটাল’ গ্রন্থের প্রথম খণ্ড লেখা শেষ করেন।

১৮৯৮ -এডউইন প্রেসকট রোলার কোস্টারের প্যাটেন্ট পান।

১৬৮৭ – জব চার্নকের সঙ্গে মোগল শাসনকর্তাদের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ইংরেজরা সূতানুটিতে অস্ত্রাগার ও পোতাশ্রয় নির্মাণের অনুমতি লাভ করে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০১ – ভারতীয় পদার্থবিদ ও আবহাওয়াবিজ্ঞানী আন্না মনি।

২০০২ – আবু নিদাল, ফিলিস্তিনি ফাতাহ: বিপ্লব পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা।

২০০৩ – ইদি আমিন, উগান্ডার প্রয়াত সামরিক স্বৈরশাসক।

২০১৬ – জোয়াও হ্যাভেলাঞ্জ, ব্রাজিলীয় ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া কর্মকর্তা।

২০১৮ – ভারতরত্ন সম্মানে সম্মানিত অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতের প্রাক্তন (দশম) প্রধানমন্ত্রী।

২০১৯ – পিটার ফন্ডা, মার্কিন অভিনেতা, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার।

২০২০ – চেতন চৌহান ভারতের প্রথিতযশা সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৪৮ – বেব রুথ, মার্কিন বেসবল খেলোয়াড়।

১৯৪৯ – মার্গারেট মিচেল, আমেরিকান লেখিকা ও সাংবাদিক।

১৯৫৭ – আর্ভিং ল্যাংমিউয়র, মার্কিন রসায়নবিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯৬১ – মৌলভী আবদুল হক, পাকিস্তানি পণ্ডিত এবং ভাষাতত্ত্ববিদ।

১৯৭৭ – এলভিস প্রেসলি, কিংবদন্তিতুল্য মার্কিন রক্‌ সঙ্গীত শিল্পী।

১৯৭৯ – জন জর্জ ডিফেনবাকার, কানাডার রাজনীতিবিদ এবং ১৩তম প্রধানমন্ত্রী।

১৯৯৭ – সুলতান আহমদ নানুপুরী, বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব।

১৯৯৭ – নুসরাত ফাতেহ আলী খান, পাকিস্তানের কাওয়ালি সঙ্গীত শিল্পী।

১৮৮৬ – শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস, ঊনবিংশ শতকের এক প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি যোগসাধক, দার্শনিক ও ধর্মগুরু।

১৮৮৮ – জন পেম্বারটন, আমেরিকান ঔষধ প্রস্তুতকারক।

১৮৯৯ – রবার্ট বুনসেন, জার্মান রসায়নবিদ।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৫ আগস্ট, জানুন ভারতের স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস।

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারতে ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে, শুরু হয় স্বাধীন ভারতের কালযাত্রা, ভারতের ইতিহাসে সূচনা হয় আরেক নতুন অধ্যায়ের।

স্বাধীনতা দিবস হল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসনকর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। সেই ঘটনাটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১৫অগাস্ট তারিখটি ভারতে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে প্রধানত অহিংস, অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলন এবং বিভিন্ন চরমপন্থী গুপ্ত রাজনৈতিক সমিতির সহিংস আন্দোলনের পথে পরিচালিত এক দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পর ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।

 

স্বাধীনতার ঠিক পূর্ব-মুহুর্তে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্য ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত হয় এবং তার ফলে ভারত ও পাকিস্তান অধিরাজ্যের জন্ম ঘটে। দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। অনেক মানুষ প্রাণ হারান এবং ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুহারা হন। পরাধীন ভারতবর্ষ ভেঙে গঠিত হয় দুটি দেশ ভারত ও পাকিস্তান, ১৪ই আগস্ট মধ্যরাতে বিভক্ত হয়ে যায় দুটি দেশ, ভারতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয় ১৫ই আগস্ট (পাকিস্তানে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয় ১৪ই আগষ্ট)।১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লাল কেল্লার লাহোরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তদবধি প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।

দিনটিকে স্মরণে রেখে প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট সারা ভারতবর্ষ জুড়ে পালিত হয় স্বাধীনতার উৎসব, সেজে ওঠে গ্রাম, শহর, নগর, গলি, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত, কলকারখানা সমস্ত কিছু। ভারতের প্রতিটি কোণা থেকে জাতীয় সঙ্গীতের সুরেলা আওয়াজ ভেসে আসে,

জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!

পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ

বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা উচ্ছলজলধিতরঙ্গ

তব শুভ নামে জাগে, তব শুভ আশিষ মাগে,

গাহে তব জয়গাথা।

জনগণমঙ্গলদায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!

জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে।।

ভারতে স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস:-

ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয়েছিল ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে ব্রিটিশের জয়লাভের মধ্য দিয়ে, এরপর থেকে ভারতে শুরু হয় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধিপত্য। ভারতে কোম্পানি বিরোধী বিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন সরাসরি ব্রিটিশ শাসন দ্বারা পরিবর্তিত হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় দীর্ঘ ১০০ বছর ধরে বিরাজমান ছিল।

এরপর থেকেই ভারতে শুরু হয়ে যায় সরাসরি ব্রিটিশ শাসন, ইংরেজদের অত্যাচার, শোষণ নিপীড়ন। এসবের বিরুদ্ধে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী জি-র নেতৃত্বে ভারতের জাতীয়তাবাদী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী আন্দোলনের সূচনা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমকালীন সময়ে। যিনি ভারতীয়দের শান্তিপূর্ণ ও অহিংস নীতিতে আন্দোলনের পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।

১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় বণিকরা ভারতীয় উপমহাদেশে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করতে শুরু করে। ১৮শ শতাব্দীতে অপ্রতিরোধ্য সামরিক শক্তির বলে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থানীয় রাজ্যগুলিকে পরাজিত করে ভারতে নিজেদের শাসন কায়েম করে। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের পর ভারত শাসন আইন (১৮৫৮) পাস হয় এবং ব্রিটিশ রাজশক্তি ভারতের প্রত্যক্ষ শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেয়। পরবর্তী কয়েক দশকে ধীরে ধীরে ভারতে সুশীল সমাজ গড়ে ওঠে। এই গড়ে ওঠার পিছনে অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি ছিল ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকার মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার প্রভৃতি শাসনতান্ত্রিক সংস্কারে উদ্যোগী হয়। সেই সঙ্গে দমনমূলক রাওলাট আইনও পাস হয়। এর ফলে ভারতীয় আন্দোলনকারীরা স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি জানাতে থাকেন। এই সময় ভারতীয় জনসাধারণের অসন্তোষ সারা দেশব্যাপী অহিংস অসহযোগ ও আইন অমান্য আন্দোলনের জন্ম দেয়। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মোহনদাস করমচন্দ গান্ধী (মহাত্মা গান্ধী)।
১৯৩০-এর দশকে ব্রিটিশ সরকার ভারতে আংশিক স্বায়ত্তশাসন মঞ্জুর করার পর আইনসভা গঠিত হয়। এরপর নির্বাচনে কংগ্রেস জয়লাভ করে। পরবর্তী দশকটি ভারতের ইতিহাসে একটি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার দশক। এই দশকেই ভারত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়, কংগ্রেস সর্বশেষ বারের জন্য অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে এবং অল-ইন্ডিয়া মুসলিম লিগের ইসলামি জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। এই রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটে ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে। তবে স্বাধীনতা লাভের আগে ভারতীয় উপমহাদেশ ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রে বিভাজিত হয়।

স্বাধীনতার আগে স্বাধীনতা দিবস

১৯২৯ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে ‘পূর্ণ স্বরাজ’ ঘোষণাপত্র গৃহীত হয় এবং ২৬ জানুয়ারি তারিখটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কংগ্রেস জনসাধারণের কাছে আবেদন জানায়, যতক্ষণ না ভারত পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করছে ততক্ষণ তারা যেন আইন অমান্য কর্মসূচি পালন করেন এবং “বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেস কর্তৃক প্রচারিত নির্দেশাবলি অনুসরণ করেন”। এই ধরনের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ধারণার প্রসার এবং ভারতের স্বাধীনতা অনুমোদনের জন্য ব্রিটিশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা।
১৯৩০ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস ২৬ জানুয়ারি তারিখটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে এসেছে। সেই সময় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জনসভার আয়োজন করা হত। সেই জনসভায় অংশগ্রহণকারীরা “স্বাধীনতার শপথ” গ্রহণ করতেন।  জওহরলাল নেহেরু তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, এই জনসভাগুলি ছিল শান্তিপূর্ণ ও ভাবগম্ভীর এবং “এই সব সভায় কোনও প্রকার ভাষণ দেওয়া হত না বা কোনও সনির্বন্ধ মিনতি জ্ঞাপন করাও হত না।” গান্ধী ভেবেছিলেন যে এই সব জনসভার সঙ্গে সঙ্গে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে “…কিছু সৃজনশীল কাজও করা যায়। যেমন, চরকা কাটা, সামাজিকভাবে অস্পৃশ্যদের সেবা করা, হিন্দু-মুসলমান সমন্বয়, সরকারিভাবে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ অথবা এই সব কটি কাজই।” ১৯৪৭ সালে ভারত প্রকৃত অর্থে স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের সংবিধান কার্যকর হয় ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি তারিখে। সেই থেকে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

ভারতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন:-

প্রতিবছর সারা ভারতবর্ষ জুড়ে ১৫ই আগস্ট দিনটি স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালিত ও উদযাপিত হয় নানান কর্মকান্ড ও অনুষ্ঠানের সমারোহে। ১৫ আগস্ট দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। অনুষ্ঠানটি জাতীয় চ্যানেল দূরদর্শনের সাহায্যে সারা দেশে সম্প্রচারিত হয়। রাজ্য রাজধানীগুলিতেও পতাকা উত্তোলন সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অন্যান্য শহরে রাজনৈতিক নেতৃবর্গ নিজ নিজ কেন্দ্রে পতাকা উত্তোলন করেন। নানা বেসরকারি সংস্থাও পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্কুল-কলেজেও পতাকা উত্তোলন ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা এই উপলক্ষে বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাজপোষাক পরে শোভাযাত্রা করে।

 

সোর্স – Wikipedia ও ইন্টারনেট

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৫ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ১৫ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

 

(ক)  ভারতের স্বাধীনতা দিবস (১৯৪৭)।

(খ) বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০০ – সন্তোষ কুমার মিত্র, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী শহীদ।

১৯১২ – (ক) আমির খাঁ, ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী।

(খ) ওয়েন্ডি হিলার, ইংরেজ অভিনেত্রী, ডেম উপাধি প্রাপ্ত ও অস্কার বিজয়ী।

১৯১৫ – সত্যেন্দ্রনাথ মৈত্র সারা ভারতে আধুনিক রীতিতে সাক্ষরতা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।

১৯১৭ – খোদেজা খাতুন, বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, লেখক ও সমাজ কর্মী।

১৯২২ – সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, একজন বাঙালি কথাশিল্পী।

১৯২৬ – (ক) সুকান্ত ভট্টাচার্য, বাংলা সাহিত্যের প্রগতিশীল চেতনার কিশোর কবি।

(খ) পণ্ডিত প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রখ্যাত বাঙালি উচ্চাঙ্গ কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী।

১৯৩১ – ভারতীয় বাঙালি কবি শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়।

১৯৩৭ – নয়ীম গহর, বাংলাদেশী গীতিকার।

১৯৪৫ – আল্যাঁ জুপে, ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

১৯৪৫ – খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

১৯৪৭ – রাখী গুলজার, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

১৯৫১ – লায়লা আরজুমান বানু, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।

১৯৬৮ – আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।

১৯৭৩ – মারজুক রাসেল, বাংলাদেশী কবি, গীতিকার, মডেল এবং অভিনেতা।

১৯৮৯ – ঈশ্বর পাণ্ডে, ভারতীয় ক্রিকেটার।

১৮৭২ – অরবিন্দ ঘোষ, বাঙালি রাজনৈতিক নেতা, আধ্যাত্মিক সাধক এবং দার্শনিক।

১৮৭৩ – রমাপ্রসাদ চন্দ ,ভারতীয় বাঙালি ইতিহাসবিদ এবং পুরাতত্ত্ববিদ।

১৮৭৯ – ইথেল ব্যারিমোর, মার্কিন অভিনেত্রী, অস্কার বিজয়ী।

১৮৯২ – লুই দ্য ব্রোয়ি, ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।

১৭৭১ – ওয়াল্টার স্কট, স্কটল্যান্ডীয় ঐতিহাসিক উপন্যাস রচয়িতা এবং কবি।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৫ – ইহুদীবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনীদের প্রতিরোধের মুখে গাজা উপত্যকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়৷

২০০৬ – বাংলাদেশের কাছে পরপর দুইবার হোয়াইট ওয়াশ হয় কেনিয়া।

২০০৮ – ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে মহিলাদের ১০০০০ মিটার দৌড়ের ফাইনালে তিরুনেশ দিবাবা ২৯:৫৪.৬৬ সময়ে নতুন অলিম্পিক রেকর্ড স্থাপন করেন। একই দিনে মহিলাদের ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতা শেষ হবার সাথে সাথে মহিলাদের ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

২০২১ – তালেবান কর্তৃক কাবুল দখলকৃত হয়।

১৯৪১ – পানামা খালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।

১৯৪৭ – (২৯ শ্রাবণ, ১৩৫৪ বঙ্গাব্দ,শুক্রবার) ব্রিটিশ শাসন হতে মুক্তি পেয়ে ভারত স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে জন্ম নেয়।

১৯৪৭ – পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ গভর্নর জেনারেল হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন।

১৯৪৮ – কোরীয় উপদ্বীপ বিভক্ত হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া স্বাধীন দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।

১৯৬০ – আফ্রিকার দেশ কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ফরাসী উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে৷

১৯৬৫ – ভারতে প্রথম দূরদর্শন প্রদর্শিত হয়।

১৯৭১ – অপারেশন জ্যাকপট সংগঠিত হয়।

১৯৭৫ – বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সামরিক অভ্যুত্থানে তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন।

১৯৭৫ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সৌদি আরব।

১৯৮২ – ভারতে প্রথম রঙিন টেলিভিশনে দূরদর্শনের সম্প্রচার শুরু হয়।

১৮৫৪ – বাংলায় প্রথম রেলপথ স্থাপন।

১৮৭২ – ইংল্যান্ডে প্রথম গোপন ব্যালটে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৮৭৫ – ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন ইন্ডিয়ান লীগের জন্ম।

১৮৮৯ – মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব কলকাতার প্রসিদ্ধ ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়।

১২৮১ – জাপান আক্রমণ করতে গিয়ে কুবলাই খানের নৌবহর ঝড়ে পতিত হয়ে ধ্বংস হয়। ইতিহাসে এ ঘটনা ডিভাইন উইন্ড বা দৈব বাতাস বলে পরিচিত।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০২০ – প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর।

১৯১০ – গিরিশ চন্দ্র সেন, ইসলামবিষয়ক পণ্ডিত ও ব্রাহ্মধর্ম-প্রচারক।

১৯৪২ – মহাত্মা গান্ধীর ব্যক্তিগত সচিব মহাদেব দেসাই।

১৯৬০ – এরল হোমস, ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৯৬৯ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়নের ছাত্র আব্দুল মালেক শহিদ হন।

১৯৭৫ (ক) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও প্রথম রাষ্ট্রপতি।

(খ)বেগম ফজিলাতুন্নেসা, বাংলাদেশের প্রথম ফার্স্ট লেডি এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী।

১৯৭৮ – বাণীকুমার নামে সুপরিচিত বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য, ভারতীয় বাঙালি বেতার সম্প্রচারক, গীতিকার, প্রযোজক ও নাট্য পরিচালক।

১৯৯৪ – কবি ও সাহিত্য সমালোচক হরপ্রসাদ মিত্র।

১৮৩৬ – ইতালীয় নোবেল বিজয়ী লেখক গারসিয়া ডেলেডা।

৭৬৭ – আবু হানিফা, ফিকহশাস্ত্রের একজন প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ এবং হিজরী প্রথম শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী ব্যক্তিত্ব।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This