মন্দিরের পুরোহিতের কাছে কুহেলি সব খুলে বলায় শর্তসাপেক্ষে মন্দিরে থাকার অনুমতি । সকালে ঘুম থেকে উঠে মন্দিরে কিছু কাজকর্ম থাকে । কুহেলি বাগান ঘুরে ঘুরে পুজোর ফুল সংগ্রহ করে । সেই ফুলে সকালে ঠাকুর পুজা । কুহেলি বাগানের সমস্ত ধরনের ফুল সংগ্রহ করে পুরোহিত ঠাকুরকে পৌঁছে দেয় । পুরোহিত ঠাকুর ঠিক সকাল সাতটা পনের মিনিটে পুজোয় বসেন । তিনি খুব নিষ্ঠাবান পুরোহিত ঠাকুর । তাই তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো সারেন । পুজোয় বসলে তিনি শুধুমাত্র ঠাকুরের প্রতি ধ্যান দেন । অন্যদিকের আনুসঙ্গিক কাজকর্ম বা ভাবনা-চিন্তা তার মাথা থেকে বেরিয়ে যায় । প্রতিদিন সকালে পুজোর সময় অনেকেই মন্দির চত্বরে ভিড় করেন । পুজো শেষে প্রসাদ বিতরণ ।
পুজোর পর মন্দিরে পোষা হাঁসগুলি দেখার দায়িত্ব কুহেলির । কুহেলি হাঁসগুলি নিয়ে মন্দিরের পুকুরে ছেড়ে দিয়ে আসে । গোটা বাইশটি হাঁসের মধ্যে পাঁচটি রাজহাঁস । খাঁচা থেকে হাঁসগুলি বের করলে কুহেলির বেশ লাগে । একটা অদ্ভূত সুন্দর আওয়াজ করতে করতে দল বেঁধে তারা পুকুরে নামে । পুকুরের জল পরষ্কার পরিচ্ছন্ন । পুকুরের পার পরিপাটিভাবে সাজানো । পারে অনেক ধরনের গাছ-গাছালি । পুকুরটি নিয়ে অনেক ইতিহাস । এখনও পুকুরের জলে ভক্তরা স্নান সারেন । পুকুরটিতে হাঁস ছেড়ে দিয়ে কুহেলির সকালের ব্রেকফার্স্ট । সকালের জলখাবারে বেশীর ভাগ দিন দুটো রুটি ও সবজির তরকারি । তারপর নিজের কিছু কাজ সেরে রান্নাঘরে ঢুকতে হয় । রান্নার টুকিটাকি কিছু জিনিস কিনতে হলে কুহেলি সেগুলি আনতে ছুটতে হয় । তারপর স্নান সেরে দুপুরের খাবার । বিকেলে কাজ নেই বললেই চলে । শুধুমাত্র সন্ধার আগে হাঁসগুলি পুকুর থেকে এনে খাঁচায় বন্দি করে তবেই মুক্তি ! এই অবসর সময়ে কুহেলি আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখে । কোচবিহার শহরটার আনাচে-কানাচে ঘোরাঘুরি করে । অনেক সময় একাই ঘোরে । তবে মাঝে মাঝে পুবালী সঙ্গী হয় । তবে বাইরে বের হলে মুসলিম নারীদের মতো বোরখার ন্যায় মুখ ঢেকে বের হয় । নতুবা দুর্বৃত্তদের চোখে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে । কোনো কারণে তাদের চোখে পড়লে আর রক্ষে নেই । পুবালীর পরামর্শমতো কুহেলি কিছুতেই পুলিশকে তাদের ঘটনাটা জানায়নি । পাছে অহেতুক টানাপোড়েনের ভয়ে । এমনকি কুহেলি ইচ্ছা করে জগন্নাথের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে না । ফোনের টাউয়ার ধরে পুলিশ অনায়াসে কুহেলিদের ধরে ফেলবে । তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা । তাই আপাতত পুলিশের টানাপোড়েন থেকে দূরে থাকতে চায় ।
কুহেলি সন্ধ্যাবেলায় মন্দিরে থাকবেই । সন্ধ্যাবেলার আরতি দেখতে কুহেলির মন টানে । যেখানেই থাকুক না কেন, সে সন্ধ্যার সময় মদন মোহন মন্দিরে এসে সন্ধ্যারতি দেখবেই । সেই সময় স্থানীয় অনেক মানুষ মন্দিরের সামনে ভিড় করেন । স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, মদন মোহন জাগ্রত ঠাকুর । এখানে মানত করলে তাঁদের মনোবাঞ্ঝা পূরণ হবেই । একদিন সন্ধ্যারতির সময় কুহেলি ভাবলো, তাকে মদন মোহন মন্দিরের ইতিহাস জানতে হবে । তাই গবেষণার মতো মদন মোহন মন্দির সম্বন্ধে জানতে শুরু করলোঃ-
উত্তরবঙ্গের একটা ছোট্ট জেলা হল কোচবিহার, আর এই জেলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মদনমোহন মন্দির। এমনিতেই ‘বারো মাসে তেরো পার্বন’ উদযাপন করার বদনাম বাঙালিদের চিরকালের সঙ্গী । তার উপর যদি আনুসঙ্গিক মেলা বা আনন্দোৎসব হয়, তাহলে তো কথাই নেই । স্থান-কাল-পাত্র ভেদে বাঙালির উৎসবেরও রকমফের আছে ! তেমনই এক বহু চর্চিত উৎসব হল কোচবিহারের মদনমোহন বাড়ির রাস উৎসব । এই রাস উৎসব কেবলমাত্র উত্তরবঙ্গেই নয়, বরং সমগ্র দেশে এবং দেশের বাইরেও পরিচিত । রাস উপলক্ষ্যে সমগ্র কোচবিহারবাসী যেমন উৎসবে মেতে উঠেন, তেমনি কোচবিহারের বাইরের মানুষও ছুটে আসেন ।
এই রাস উৎসব সম্পর্কে যেটুকু জানা যায়, কোচবিহারের দ্বিতীয় মহারাজা বিক্রমাদিত্য নর নারায়ণ অসমের বৈষ্ণব ধর্মগুরু শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের নির্দেশানুসারে বংশীধারীর অষ্টধাতুর বিগ্রহ তৈরী করিয়েছিলেন । এরপর পণ্ডিত অনন্ত কন্দলির সহায়তায় মাঘ মাসের উত্তরায়ণ সংক্রান্তির পূর্ণিমা তিথিতে মহারাজা সেই বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন করেন । পরবর্তীকালে অবশ্য সেই বিগ্রহটি চুরি হয়ে যায় এবং নতুন করে একটি অষ্টধাতুর বিগ্রহ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয় । প্রাথমিক ভাবে এই বিগ্রহের বেশ কিছু নাম ছিল, যেমন ‘বংশীধারী’ বা ‘লক্ষ্মীনারায়ণ’ বা ‘শ্রী শ্রী মদনমোহন’। কিন্তু এই নাম নিয়েও তৎকালীন ভক্তমহলে দ্বিমত ছিল । শঙ্করদেবের মতাদর্শ অনুসরণকারী বৈষ্ণবদের মতে “শ্রীকৃষ্ণের সাথে রাধা রাণী পুজিতা হন না”, তাই একক ত্রিভঙ্গমুরারী রূপে পুজো করা শুরু হয়েছিল শ্রীকৃষ্ণের । কিন্তু কোচবিহারের সমস্ত মানুষ শ্রী শ্রী মদনমোহন দেব নামেই পুজো করতে শুরু করেন “বংশীধারী”কে । জানা যায়, পরবর্তীতে মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণ ভূপের আমলে, রাজধানী কোচবিহারে বিভিন্ন ভৌতিক ঘটনা ঘটতে শুরু করে । এই সমস্ত ঘটনার জন্য মহারাজা নিজের রাজধানী স্থানান্তরিত করেন ভেটাগুড়িতে । সম্ভবত ১৮১২ খ্রিস্টাব্দের অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মানসাই নদী পেরিয়ে নিজের নতুন রাজধানীতে গৃহপ্রবেশ করেন মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণ এবং সেদিনই সেখানে গৃহদেবতা শ্রী শ্রী মদনমোহনের রাসমেলার সূচনা করেন । সম্ভবত তখন থেকেই এই স্থানান্তরের প্রথা শুরু হয়েছিল । এরপর থেকে যখনই কোচ-রাজারা নিজেদের রাজধানী স্থানান্তরিত করতেন, তখনই তাদের গৃহদেবতা শ্রী শ্রী মদনমোহন ঠাকুরেরও স্থান পরিবর্তন হত ।
যতোদূর জানা যায় যে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে হরেন্দ্রনারায়ণের প্রপৌত্র মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের রাজত্বকালে, কোচবিহারের বৈরাগী দীঘির পারে বর্তমান চারচালা আকৃতির মদনমোহন মন্দিরটি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয় । ওই বছরের একুশে মার্চ নবনির্মিত মন্দিরে রাজপরিবারের কূলদেবতার বিগ্রহ সহ অন্যান্য দেবদেবীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । মন্দিরের মোট পাঁচটি কক্ষ রয়েছে । একেক কক্ষে একেক দেবীর বিগ্রহ । পূর্ব প্রান্তে জয়তারা । পশ্চিম প্রান্তে কালী বিগ্রহ । আরেক পাশে ভবানী বিগ্রহ । অন্য দিকে নাটমন্দির । নাটমন্দিরে দুর্গাপুজো হয় । মন্দির স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় রাস পূর্ণিমার দিন থেকে মেলার প্রচলন হয় যা কিনা আজ পর্যন্ত চলে আসছে । তবে মাঝের এই দীর্ঘ সময়ে এই মেলা সম্পর্কিত নানান রকম ঘটনার সাক্ষ্য বহন করতে হয়েছে কোচবিহার শহরকে । সময়টা ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ, কোচবিহারে সেসময় কলেরা রীতিমত মহামারী আকার ধারণ করে। তখন বৈরাগী দীঘির জলকে দূষণ মুক্ত রাখার জন্য রাজ আদেশে মেলাকে প্যারেড গ্রাউন্ডে সরিয়ে নেওয়া হয় । এছাড়াও একটা সময় ছিল যখন এই রাস মেলাতে এসে জুয়ার নেশায় পড়ে আশেপাশের গ্রামের মানুষগুলোকে রীতিমত সর্বশান্ত হয়ে ফিরতে হত । সম্ভবত ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুরের নির্দেশে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে এই সমস্ত জুয়ার আড্ডা বন্ধ করে দেওয়া হয় ।
এরপর ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক আলোর প্রচলন হয় এবং মেলার জৌলুসও বাড়তে শুরু করে । রাজ পরিবারের শাসনকালে সাধারণত রাজারাই নিয়ম করে রাসচক্র ঘুরিয়ে, মদনমোহন ঠাকুর সহ সমস্ত বিগ্রহকে প্রণাম করে মেলার উদ্বোধন করতেন । প্রণামি দিতেন চোদ্দ টাকা । ১৯৬৯ সাল অর্থাৎ শেষ স্বাধীন মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের সময় পর্যন্ত এই নিয়মেই চলছিল রাসমেলার উদ্বোধন । তবে পরবর্তী সময় কালের নিয়মে সমস্তটাই বদলে যায় । বর্তমানে রাসমেলা উদ্বোধনের দায়িত্ব গিয়ে পড়ে কোচবিহারের জেলাশাসকের ওপর । রাজ আমলে রাজারা যজ্ঞে বসতেন কিনা জানা যায়নি । কিন্তু পরবর্তী সময় থেকে দেবোত্তর ট্রাস্টের সভাপতি হওয়ার সূত্রে কোচবিহারের জেলাশাসকেরাই প্রতি বছর পুজো, যজ্ঞ ও উদ্বোধন করে আসছেন । রাসমেলা এখন শ্রী শ্রী মদনমোহন বাড়ি থেকে শুরু করে, জেনকিন্স স্কুল সংলগ্ন রাস্তা ও সামনের রাসমেলার মাঠ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা জুড়ে । এই মেলার বিবরণ দেওয়ার আগে রাস উৎসব সম্পর্কে কিছু কথা জানিয়ে রাখা জরুরি। মদনমোহন ঠাকুর ছাড়াও কোচবিহারের এই রাস উৎসবের মূল আকর্ষণ হল রাসচক্র । বৌদ্ধ ধর্মচক্রের আদলে বাঁশের তৈরি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট উঁচু এবং ৮-১০ ফুট ব্যাস বিশিষ্ট চোঙাকৃতি কাঠামোর ওপর কাগজের সূক্ষ্ণ কারুকাজ করে এই রাসচক্র তৈরি করা হয় । এর বিশেষত্ব হল প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজোর দিন থেকে নিয়ম করে, একমাস নিরামিষ খেয়ে কোচবিহারের বাসিন্দা আলতাফ মিঞা ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা বংশপরম্পরায় এই রাসচক্র তৈরি করে আসছেন । এই রাসচক্রে দক্ষ হাতের নানারকম নকশার সাথে সাথে বিভিন্ন দেবদেবীর রঙিন ছবিও থাকে । কোচবিহারের মানুষের আবেগের সাথে জড়িয়ে থাকা এই রাসচক্র একই সাথে হিন্দু, মুসলিম ও বৌদ্ধ ধর্মের সমন্বয়ের প্রতীক হিসেবে ঐতিহ্য বহন করে আজও আসছে ।
মদন মোহন মন্দিরের ঘটনাবলী জেনে কুহেলি আনন্দে আহ্লাদিত ।
মন্দির প্রাঙ্গনে বেশ কিছুদিন কেটে যাওয়ার পর কুহেলি ভাবছে, তাদের এবার বাড়ি ফেরার পালা । কুহেলি ভেবেছিল, নারী পাচার চক্রের দল সত্বর ধরা পড়বে । চক্রটা ধরা পড়লে তাদের বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধার সম্মুক্ষীণ হতে হতো না । কিন্তু পাচারকারী চক্রের ধরা পড়ার কোনো খবর নেই । খবর নেওয়ার জন্য প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়ে । প্রথম থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত চোখ বোলানো কুহেলির অভ্যাস । অথচ তাদের মধ্যে বাড়ি ফিরে যাওয়ার একটা তাগাদা অনুভব হচ্ছে । কাঞ্চন নগরের মোড়ে কুহেলির দোকান এখন বন্ধ । দোকানের কী পরিস্থিতি তার কোনো খবর নেই । জগন্নাথের সাথে যোগাযোগ রাখছে না, পাছে পুলিশে তাদের ধরে । এই মুহূর্তে পুলিশে ধরলে কুহেলির অনুমান, তাদেরকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হবে । কেননা পুলিশ চাইবে কুহেলিদের কাছ থেকে পাচার চক্রের কোনো হদিস পাওয়া যায় কিনা ? সেই ক্ষেত্রে আরও বিড়ম্বনা ! কেননা তাদের পুলিশ হেফাজতে থেকে পুলিশদের সহযোগিতা করতে হবে ।
তখন মন্দিরে সন্ধ্যাবেলার সন্ধ্যারতি চলছে । হঠাৎ মন্দিরের একজন কর্মকর্তা, সুরেশবাবু মন্দির প্রাঙ্গনে হাজির । তাঁর সাথে কুহেলির কয়েকবার দেখা হয়েছে । কারণ মন্দিরের টাকা পয়সার হিসাব তাঁর কাছে থাকে । বাজারের খরচা বাবদ সুরেশবাবুর কাছ থেকে টাকা নিতে গিয়ে এবং খরচার হিসাব দিতে গিয়ে সুরেশবাবুর সাথে কয়েকবার কথা হয়েছে । সুরেশবাবু কুহেলির খুব কাছে এলেন । সেই সময় কুহেলি হাত জোড় করে ঠাকুরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় মগ্ন ।
কুহেলির কানের কাছে গিয়ে বললেন, “তুমি একটু বাইরে এসো । তোমার সাথে আমার জরুরি কথা আছে !”
কুহেলি ঘাবড়ে গেলো । সুরেশবাবু হঠাৎ কী কথা বলবেন । এযাবৎ যতো টাকা নিয়েছিল সব টাকার হিসাব কুহেলি সুরেশবাবুকে দিয়ে দিয়েছে । তবে কেন তিনি ডাকছেন ? গভীর চিন্তায় পড়ে গেলো কুহেলি । তবুও সুরেশবাবু ডাকছেন, সুতরাং তাকে সুরেশবাবুর কথা শুনতেই হবে । কারণ তারা এই মন্দিরে আশ্রিতা । বাইরে বেরিয়ে এলো কুহেলি ।
এবার সুরেশবাবুর দিকে তাকিয়ে কুহেলি বললো, “স্যার, বলুন কী বলবেন ?”
সুরেশবাবু তখন কুহেলিকে বলতে শুরু করলেন, “থানা থেকে পুলিশ আধিকারিকেরা এসেছিলেন । তাঁরা বললেন, “নারী পাচার চক্রের দলের মানুষ যেভাবে হোক জানতে পেরেছে, তোমরা মন্দিরে প্রাঙ্গনে আশ্রয় নিয়েছো ।“ …………
( চলবে )
Categories