Categories
প্রবন্ধ

রাজা সুবোধচন্দ্র বসু মল্লিক, দেশের জন্য তাঁর দহনদান ব্যর্থ হয়নি।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সুবোধ চন্দ্র বসু মল্লিক একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। সুবোধ চন্দ্র বসু মল্লিক  ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

 

সুবোধ চন্দ্র বসু মল্লিক বা রাজা সুবোধ মল্লিক  কলকাতার পটলডাঙ্গার একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন।  তিনি বাংলার গুপ্ত বিপ্লবী দলের স্থানীয় নেতা ছিলেন। ৯ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৯ সালে তাঁর জন্ম।  তাঁর পিতার নাম প্রবোধচন্দ্র বসু মল্লিক।  মায়ের নাম কুমুদিনী বসু মল্লিক।
তিনি কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেন এবং প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন।  ১৯০০ সালে এফএ ডিগ্রি অর্জনের পর, তিনি ইংল্যান্ডে আইন অধ্যয়নের জন্য ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন।  এক বছরের মধ্যে তিনি পারিবারিক কারণে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দেন।  কলকাতার ওয়েলিংটন স্কোয়ারে তাদের বাড়ি থেকে স্বদেশী আন্দোলনের কার্যক্রম চলতে থাকে।  ১৯০৬ সালে, তিনি একটি জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ১ লক্ষ টাকা দান করেছিলেন।  দেশবাসী উত্তেজিত হয়ে তাঁকে ‘রাজা’ উপাধি দেয়।  সুরাট কংগ্রেসের বাঙালি প্রতিনিধিদের খরচও তিনি বহন করেন।  এ বছর তিনি বরিশাল সম্মেলনে যোগ দেন এবং সমগ্র পূর্ববঙ্গ সফর করেন।  শ্রী অরবিন্দকে তাঁর বাড়িতে অনেকদিন রাখা হয়েছিল।  বসত বাড়িটি ‘বন্দেমাতরম’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠার জন্য দান করেন।  ১৯০৮ – ১০ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে বিনা বিচারে আটক করা হয়।  ১৯০৬ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ট্রাস্টি ছিলেন।  তিনি কলকাতায় লাইফ অফ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

 

আলিপুর বোমা ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষিতে ১৯০৮ সালে তাঁকে নির্বাসিত করা হয় । মল্লিকের জাতীয়তাবাদী কাজ এবং আন্দোলনের উদার সমর্থন তাকে তাঁর কৃতজ্ঞ দেশবাসীর কাছ থেকে রাজা উপাধি লাভ করে। স্বাধীন ভারতে, ওয়েলিংটন স্কোয়ার, তাঁর প্রাসাদিক বাসস্থানের স্থানটির নামকরণ করা হয় রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, যখন বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ থেকে উদ্ভূত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাটিকে এখন রাজা সুবোধ চন্দ্র মল্লিক রোড বলা হয় ।দেশের জন্য রাজা সুবোধচন্দ্রের লড়াই ব্যর্থ হয়নি। ১৪ নভেম্বর ১৯২০ সালে তিনি প্রয়াত হন।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

 

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *