Categories
প্রবন্ধ

বিপ্লবী সত্যেন্দ্রনাথ বসু : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক বিপ্লবী-শহীদ, প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সত্যেন্দ্রনাথ বসু একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথ বসু ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

 

সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। আলিপুর বোমা মামলার রাজসাক্ষী নরেন গোঁসাইকে গুলি করে হত্যা করার জন্য ২২ নভেম্বর, ১৯০৮ সনে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর প্রেসিডেন্সি জেলে ফাঁসি হয়।

জন্ম—

সত্যেন্দ্রনাথ ১৮৮২ সালের ৩০ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় (বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুর ) জন্মগ্রহণ করেন ।  তার পিতা অভয়াচরণ বসু ছিলেন মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক। ১৮৫০ সালের দিকে, তিনি মেদিনীপুরে বসতি স্থাপন করেন, যা সত্যেন্দ্রনাথের পরিবারের আবাসস্থল হয়ে ওঠে। অভয়া চরণের পাঁচ ছেলে (জ্ঞানেন্দ্র নাথ, সত্যেন্দ্র নাথ, ভূপেন্দ্র নাথ, সুবোধ কুমার এবং আরেকটি ছেলে) এবং তিন মেয়ে ছিল।  সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন শ্রী অরবিন্দের মামা , যদিও তিনি প্রায় দশ বছরের ছোট ছিলেন। বসু পরিবার মূলত বোড়াল গ্রামের বাসিন্দাজেলা ২৪ পরগনা, এবং বিখ্যাত বাবু রাজ নারায়ণ বসুর বংশধর । বাবু রাজ নারায়ণ বসুর পিতা বাবু নন্দ কিশোর বসু ছিলেন রাজা রাম মোহন রায়ের অনুসারী এবং তাঁর পরিবারের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন।

 

 

শিক্ষা–

 

 

প্রবেশিকা এবং এফএ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর, সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ স্ট্যান্ডার্ড পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন কিন্তু বিএ পরীক্ষায় অংশ নেননি। তিনি কলেজ ছেড়ে মেদিনীপুর কালেক্টরেটের প্রায় এক বছর চাকরি করেন।

বিপ্লবী কর্মকাণ্ড–

তার অগ্রজ জ্ঞানেন্দ্রনাথ এবং রাজনারায়ণ বসুর প্রভাবে মেদিনীপুরে ১৯০২ সালে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন গড়ে উঠেছিলো। সেই সংগঠনের নেতা ছিলেন হেমচন্দ্র দাস কানুনগো এবং সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন তার সহকারী। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তিনি “ছাত্রভাণ্ডার” গড়ে তোলেন। এখানে তাঁত, ব্যায়ামচর্চা ইত্যাদির আড়ালে বিপ্লবীদের ঘাঁটি তৈরি হয়। বীর ক্ষুদিরাম বসু তার সাহায্যে বিপ্লবী দলভুক্ত হয়ে এখানে আশ্রয় পান। ক্ষুদিরাম তারই নির্দেশে “সোনার বাংলা” শীর্ষক বিপ্লবাত্মক ইশতেহার বিলি করে গ্রেপ্তার হন।

 

 

পুলিশ ২ মে ১৯০৮ সালে কলকাতার ৩২ মুরারি পুকুর রোড চত্বরে অভিযান চালায় এবং একটি বোমা-কারখানার সন্ধান পান , পুলিশ হানা দিয়ে সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র সহ গোলাবারুদ, বোমা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে । পুলিশ বিপ্লবীদের গ্রেপ্তার করে সাথে সাথে সমস্ত কিছু বাজেয়াপ্ত করে । সমগ্র বাংলা এবং বিহারের বিভিন্ন যায়গায় পুলিশি অভিযান শুরু হয় । খানা তালাসি চালানো শুরু করে এবং বিপ্লবীদের টার্গেট করা থেকে শুরুকরে তাঁদের সমস্ত কিছু বাজেয়াপ্ত করা শুরু করা হয়েছিলো । অরবিন্দ ঘোষ, বরেন্দ্র কুমার ঘোষ, উল্লাসকার দত্ত, ইন্দু ভূষণ রায় সহ আরও অনেককে এই সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । এই সময়ের মধ্যে একজন আটক বন্দী নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী বা নরেন্দ্র নাথ গোঁসাই ব্রিটিশদের অনুগত হয়ে ইংরেজদের সাহায্য করতে শুরু করেন সাথে সাথে নরেন পুলিশকে অনেক ব্যক্তির নাম জানাতে শুরু করেন , যার ফলে আরও অনেক গ্রেফতার হয়।

 

 

কিছুদিন পরে আলিপুর বোমা মামলার রাজসাক্ষী নরেন গোঁসাইকে গুলি করে হত্যার জন্য কানাইলাল দত্ত ও সত্যেন্দ্রনাথ বোসের বিচার হয়। বিচারে তাদের দুজনের ফাঁসির হুকুম হয়। এই বিচারে কানাইলাল কোনোরকম আপত্তি করেননি। কাজেই বিচারের সাতদিন পর আলিপুর জেলে তার ফাঁসির দিন ধার্য হয়।
সত্যেন্দ্রনাথের মা ও ভাইয়ের অনুরোধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়। কিন্তু হাইকোর্ট তার আগের আদেশ বহাল রাখে। বিচার চলাকালে আদালতে সত্যেন্দ্রনাথ বলেন, “আমার কিছু বলবার নেই। আমি ইংরাজের আদালতে কোনো বিচারের প্রত্যাশা করি না। নরেন গোঁসাইকে আমিই গুলি করে হত্যা করেছি, আমার কবে ফাঁসি হবে- তাই জানতে চাই।”

 

 

নরেন্দ্রনাথ গোস্বামীর হত্যা একটি সাহসী কাজ ছিল যা আগে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদের ইতিহাসে অতুলনীয় ছিল।১৯০৮ সালের ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট উভয় আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। কানাইলাল এ ধরনের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে রাজি হননি। ১৯০৮ সালের ১০ নভেম্বর সাজা কার্যকর করা হয় এবং কানাইলালকে আলিপুর জেলে সকাল সাতটার দিকে ফাঁসি দেওয়া হয়। সত্যেন্দ্রনাথের বিচারে, দায়রা জজ, জুরির সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের সাথে একমত না হয়ে মামলাটি হাইকোর্টে পাঠান এবং সেখানে সত্যেন্দ্রনাথকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯০৮ সালের ২২ নভেম্বর তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে – নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর প্রিয় শিক্ষক, প্রাজ্ঞ বাঙালি পণ্ডিত, শিক্ষক ও দেশপ্রেমিক বেণী মাধব দাস।

সূচনা—-

 

বেণী মাধব দাস ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি পণ্ডিত, শিক্ষক এবং দেশপ্রেমিক।  তিনি শরৎচন্দ্র বসু, সুভাষচন্দ্র এবং আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির শিক্ষক ছিলেন।

 

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন—-

 

বেণী মাধব দাস ১৮৮৬ সালের ২২শে নভেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার শেওড়াতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  তার পিতার নাম কৃষ্ণ চন্দ্র দাস।  দর্শনশাস্ত্রে উচ্চ শিক্ষা লাভের পর তিনি চট্টগ্রাম কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।  তার হাতে এটি একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।  চট্টগ্রামের পর তিনি ঢাকা, কটক রেভেনশ স্কুল, কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল এবং কলকাতার স্কুল ও কলেজে শিক্ষকতা করেন।

 

 

 

ব্রাহ্ম সমাজে যোগ—

 

ব্রাহ্ম নেতা মনীষী কেশবচন্দ্র সেনের প্রভাবে তিনি ব্রাহ্ম সমাজে যোগ দেন, এবং ব্রাহ্ম সমাজের প্রকাশনা ইন্ডিয়ান মেসেঞ্জার ও নববিধান-এর সাথে যুক্ত ছিলেন।

 

আদর্শ শিক্ষক—-

 

বেণী মাধব ছিলেন দেশপ্রেম ও শিক্ষাদানে নিবেদিত একজন আদর্শ শিক্ষক।  দর্শন ছাড়াও তিনি অর্থনীতি ও ইতিহাসের পণ্ডিত ছিলেন।  তিনি 1923 খ্রিস্টাব্দে কাকিনাডায় অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় আস্তিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।  রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার ভাষণ পরবর্তীতে ভারতের আধুনিক আস্তিক আন্দোলনের পুস্তিকাতে প্রকাশিত হয়।  তাঁর প্রবন্ধের সংগ্রহ Pilgrimage Through Prayers সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল।  সুভাষ চন্দ্র তাঁর ভারত পথিকায় তাঁর উল্লেখ করেছেন।

 

পণ্ডিত নিরঞ্জন নিয়োগী’র উক্তি তাঁর সম্পর্কে—

 

কটক ও কৃষ্ণনগরে বেণীমাধবের সংস্পর্শে আসা আরেকজন পণ্ডিত, নিরঞ্জন নিয়োগী লিখেছেন – এখানে তার প্রশাসনে কোন কঠোরতা ছিল না, এর চারপাশে কোনও আড়ম্বরপূর্ণ প্রদর্শন ছিল না – তার কোমল ও মনোমুগ্ধকর আচরণ তার শিক্ষার্থীদের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলত। এমনকি যারা অস্থির ছিল তারা শান্ত, তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় এবং তার স্নেহের পাত্রে পরিণত হয়।”।

 

পারিবারিক জীবন—-

 

বেণী মাধব দাসের পরিবার ছিলো রাজনৈতিক পরিবার।  তার ছেলে অসহযোগিতা এবং জাতীয় আন্দোলনে যোগদানের জন্য কারাবরণ করেন।  স্ত্রী সারদা সমাজসেবায় সক্রিয় ছিলেন।  তাদের দুই মেয়ে কল্যাণী দাস (ভট্টাচার্য) এবং বীণা দাস (ভৌমিক)।  কল্যাণী দাস সমাজসেবা ও বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।  বীণা দাস ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবে সক্রিয় ছিলেন এবং ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে পিস্তল দিয়ে বাংলার ব্রিটিশ গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যার চেষ্টা করার জন্য ৯ বছর কারাগারে ছিলেন।   মেয়ের বিপ্লবী কার্যকলাপে বাধাদান তো দূরস্থান বরঞ্চ তাদের কর্মকাণ্ডে দেশপ্রেমিক বেণীমাধব  উৎসাহিত করেন।

 

মৃত্যু—-

 

বেণী মাধব দাস ১৯৫২ সালের ২রা সেপ্টেম্বর কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২১ নভেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২১ নভেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) ববিশ্ব টেলিভিশন দিবস

(খ) সশস্ত্র বাহিনী দিবস (বাংলাদেশ)

 

(গ) COPD (Chronic Obstructive Pulmonary Diseases) দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৪ – বাঙালি শিশু সাহিত্যিক ও ছড়াকার হরেন ঘটক।

 

১৯২১ – (ক) প্রণোদিত প্রজননের জনক ড.হীরালাল চৌধুরী,প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি মৎসবিজ্ঞানী।

 

(খ) – বেটি উইলসন, অস্ট্রেলীয় মহিলা ক্রিকেটার।

 

১৯৬৬ – কবির বকুল, বাংলাদেশের গীতিকার।

 

১৯৯১ – আলমাজ আয়ানা, ইথিওপীয় প্রমিলা দূরপাল্লার দৌড়বিদ।

 

১৮১৮ – মার্কিন নৃবিজ্ঞানী লুইস হেনরি মর্গান।

 


১৬৯৪ – ভলতেয়ার, ফরাসি লেখক ও দার্শনিক।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০২ – ন্যাটো সদস্য হওয়ার জন্য বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া ও স্লোভেনিয়াকে আমন্ত্রণ জানায়।

১৯১৮ – জার্মান সামরিক নৌবহর মিত্রশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে।

 

১৯৪৫ – ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের বন্দিদের মুক্তির দাবিতে কলকাতায় ছাত্র-শোভাযাত্রায় যোগ দিয়ে পুলিশের গুলিতে ছাত্রকর্মী রামেশ্বর ও আবদুল সালাম নিহত হন।

১৯৪৭ – স্বাধীন ভারতে আজকের দিনে জাতীয় পতাকা সংবলিত ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়।

১৯৭১ – বাংলাদেশ-ভারত মিত্র বাহিনী গঠিত হয়।

১৯৭৯ – উগ্রপন্থীরা মক্কার কাবা মসজিদ দখল করে নেয়।

 

১৯৯৪ – নোবেলজয়ী সাহিত্যিক ওলে সোয়েঙ্কা নাইজেরিয়া ত্যাগ করেন।

১৮০৬ – ঐতিহাসিক বার্লিন আদেশ জারি করা হয়।

 

১৮৭৭ – টমাস আলভা এডিসন ফোনোগ্রাফ আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন।

১৭৮৩ – মন্টগোলফার ভ্রাতৃদ্বয় প্রথম বেলুনে করে আকাশে উড্ডয়ন করে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৯৫ – সবিতাব্রত দত্ত, নবনাট্য যুগের বিশিষ্ট অভিনেতা ও গায়ক।

 

১৯৯৬ – আবদুস সালাম (পদার্থবিজ্ঞানী), নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পাকিস্তানি তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী।

 

১৯৭০ – নোবেলজয়ী ভারতীয় পদার্থবিদ চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন।

১৯৭৪ – পুণ্যলতা চক্রবর্তী, শিশু সাহিত্যিক।

 

১৯৮৬ – সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তী, ভারতীয় বাঙালি সংগীতজ্ঞ ও গায়ক।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

জানুন, বাঘের সেবা কেমন করে করলেন কৃষ্ণদাস ! : রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।

বৃন্দাবনের গোবর্দ্ধনে বাস করতেন শ্রীকৃষ্ণদাস নামক এক সাধু ।  তিনি গোফার মধ্যে ভজন করতেন । দিবানিশি কৃষ্ণ নাম অতি উচ্চঃস্বরে করতেন। নাম নিতে নিতে এমন হতো যে ক্ষুধা-তৃষ্ণা,  আহার-বিহার সব ভুলে যেতেন । নামানন্দে বিভোর হয়ে থাকতেন সর্বদা । কৃষ্ণ কৃষ্ণ বলে এমন করে করুণ সুরে ডাকতেন যে,  শুনলে প্রাণ কেমন করে উঠতো ।  কৃষ্ণপ্রেমে উন্মত্ত সাধু কৃষ্ণদাস প্রেমানন্দে মজে থাকতেন সদা সর্বদা।

একদিন কৃষ্ণ দাসের গোফার দ্বারে বিশাল আকারের এক বাঘ এসে দাঁড়ালো। ভয়ংকর উগ্র মূর্তি সেই বাঘের। দেখলেই ভয় লাগবে এমন। তবে কৃষ্ণদাস কিন্তু একটুও ভীত হলেন না। মনে মনে বাঘটিকে অতিথি ভাবলেন তিনি । বহু সম্মান দেখিয়ে একটি আসন গোফার দ্বারে পেতে বাঘটিকে আদরের সুরে বসতে বললেন ‌ । আর , বাঘটিও সুরসুর করে আসনের ওপর হাত-পা ছড়িয়ে বিশ্রাম নিতে বসে পড়লো যেন।

যত্ন করতে হবে বাঘটিকে । কৃষ্ণদাস ভাবতে থাকলেন অতিথি এসেছে, কেমন করে আতিথেয়তা করি ? কী খেতে দেই তাকে ? ঘরে তো  কিছুই তেমন  নেই !

কৃষ্ণদাস নিজেই মাধুকরী করে এনে প্রসাদ পান। ঘরে সঞ্চয় বলতে কিছুই থাকে না !  তার ওপর বাঘ আবার মাংসাশী প্রাণী। মাংস এখন কোথায় পাই ? অতিথিকে তুষ্ট করার কথা ভাগবতেও আছে। বলা হয়েছে , ক্ষমতা না থাকলে নিদেনপক্ষে বসার আসন আর পান করার জলটুকু দিয়েও অতিথি সৎকার করা উচিৎ। কিন্তু, মাংস ভিন্ন অপর কিছু দিয়ে তো আর বাঘ-অতিথিকে খুশী করা যাবে না ! —–এইসব নানান ভাবনার উদয় হল কৃষ্ণদাসের  মনে। পরক্ষণেই কৃষ্ণদাস ভাবলেন , আমার নিজের অঙ্গের মাংসতেই যদি বাঘকে সম্মান জানাই,  তবে কেমন হয় ?  সেটাই বরং ভালো হবে।  আর তাই কৃষ্ণদাস নিজের অঙ্গের নানান জায়গায় ছুরি চালিয়ে টুকরো টুকরো মাংস কেটে বের করে আনলেন। কষ্ট , যন্ত্রণা কী হচ্ছিল না তাঁর ? হচ্ছিল , অবশ্যই হচ্ছিল । কিন্তু, নিজের মনকে তিনি শ্রীমন্ মহাপ্রভুর মুখবাক্যের কথা ভেবেই বোঝাচ্ছিলেন যে , “সর্বজীবে দিবে সম্মান । জানি কৃষ্ণ অধিষ্ঠান।।” অর্থাৎ, প্রতিটি জীবের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণ অবস্থান করেন । তাই প্রতিটি জীবকে সম্মান দিতে হয় । জীবসেবার চেষ্টা করতে হয়।

বাঘের সম্মুখে পাতায় করে কৃষ্ণদাস রেখেদিলেন নিজের শরীরের কয়েকটি ছোট মাংসখণ্ড । বাঘ  তৃপ্তি ভরে খেল। আর তারপর চুপচাপ চলে গেল। কৃষ্ণদাস তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করতে করতে মনে মনে তৃপ্তি পেলেন এই ভেবে যে , যাক অতিথি আপ্যায়নটুকু তো কোনমতে হল !

কৃষ্ণ ভক্তের স্বভাব যে এমনই হয়।  নিজের দুঃখ বা লাভালাভে কোন আকর্ষণ থাকে না তাঁদের । অপরকে সুখী করেই তাঁরা আনন্দ পান।

—- ভক্তকৃপা ভিখারিণী
রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আজ বিশ্ব টেলিভিশন দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং গুরুত্ব।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা সহকারে পালন করা হয়ে থাকে। সাংবাদিক, লেখক, ব্লগাররা টেলিভিশন সম্পর্কে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে কিমবা প্রিন্ট মিডিয়ায় টেলিভিশনের ভূমিকা ও  গুরুত্ব সম্পর্কিত নানা লেখালেখি, মতামত ছড়িয়ে দেওয়া হয়। স্কুল-কলেজে, কখনও বা পাবলিক সেমিনারের আয়োজন করে বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ করে আনা হয় টেলিভিশনের নানা দিক নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনার জন্য। এছাড়াও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থানে সম্মেলন এবং বক্তৃতার আয়োজনও করা হয় এই বিশেষ দিনটি উদযাপনের উদ্দেশ্যে।

টেলিভিশন শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক ও লাতিন শব্দের সম্মিলনে। গ্রিক শব্দ ‘টেলি’ অর্থ দূরত্ব আর লাতিন শব্দ ‘ভিশন’ অর্থ দেখা। টেলিভিশনে একই সঙ্গে ছবি দেখা ও শব্দ শোনা যায়। বিশ্ব টেলিভিশন দিবস আজ।
বলা যায়, টেলিভিশনই প্রথম বিশ্বটাকে মানুষের ঘরের মধ্যে এনেছিল। যার মাধ্যমেই হয় তথ্য ও বিনোদনের এক বিস্ময়জাগানিয়া অগ্রগতি। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে টেলিভিশন প্রযুক্তিও।

ব্রিটিশবিজ্ঞানী জন লগি বেয়ার্ড ১৯২৬ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। এর পর রুশ বংশোদ্ভুত প্রকৌশলী আইজাক শোয়েনবারগের কৃতিত্বে ১৯৩৬ সালে প্রথম টিভি সম্প্রচার শুরু করে বিবিসি। টেলিভিশন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালু হয় ১৯৪০ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশনের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সূচিত হয়। গত শতাব্দীর ৫০ এর দশকে টেলিভিশন গণমাধ্যমের ভূমিকায় উঠে আসে।
বিজ্ঞানী জন লোগি বেয়ার্ড-এর টেলিভিশন আবিষ্কারের দিনটি ছিলো ২১ নভেম্বর। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ আয়োজিত এক ফোরামে ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ব টেলিভিশন দিবস ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসাবে ঘোষণা করে, যে তারিখে ১৯৯৬ সালে বিশ্ব টেলিভিশন ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

যোগাযোগ স্থাপনে, বিচিত্র সংস্কৃতির প্রচারে এবং সর্বোপরি বিশ্বায়নে টেলিভিশনের ভূমিকা কত গুরুত্বপূর্ণ সেটি মানুষের সামনে তুলে ধরতেই এবং সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতেই এই বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উদযাপন করা হয় বিশ্বজুড়ে। মানবসভ্যতার এক চমক লাগানো আবিষ্কার হল এই টেলিভিশন। সারা বিশ্বকে নিজের ঘরের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে এক লহমায়, মানুষ হয়তো একসময় স্বপ্নেও তা ভাবেনি। ১৯২৬ সালে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন স্কটিশ বৈজ্ঞানিক জন লগি বেয়ার্ড(John Logie Baird)।  কিন্তু মানুষ আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হয়েছে, ইন্টারনেটের যুগে এসে তাই ক্রমে টেলিভিশনের মায়া খানিক ফিকে হয়ে গেছে। কিন্তু এ কথা এখনও ভীষণ সত্যি যে টেলিভিশনের মতো এত শক্তিশালী প্রচার মাধ্যম খুব কমই আছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২০১৭ সালে টিভি পরিবারের সংখ্যা ছিল ১.৬৩ মিলিয়ন। ২০২৩ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ১.৭৪ মিলিয়ন। তথ্য-বিনোদনের এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম তো বটেই, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে গণতন্ত্রের বিকাশসাধনের জন্য টেলিভিশনের স্বাধীনতা খুবই প্রয়োজনীয়। সংবাদমাধ্যমের ক্ষমতা তো এখন সর্বজনবিদিত। সুতরাং টেলিভিশন যে আজও একটি প্রভাবশালী মাধ্যম সেবিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। দেশের রাজনৈতিক এমনকি অর্থনৈতিক পটপরিবর্তনেও টেলিভিশনের ভূমিকা কম নয়। জনমত গঠনের কাজেও টেলিভিশনের অবদান অনস্বীকার্য।

উল্লেখ্য ১৯৯৬ সালের ২১ নভেম্বর জাতিসংঘের প্রথম বিশ্ব টেলিভিশন ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই দিনটির স্মরণেই সেই বছরই ১৭ই ডিসেম্বর তারিখে জাতিসংঘ ২১শে নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্বশান্তি ও সুরক্ষা বজায় রাখার ক্ষেত্রে, মানুষকে প্রভাবিত করতে, এমনকি সামাজিক বা অর্থনৈতিক নানা বিষয়ের খবরাখবর তুলে ধরতে টেলিভিশন যে অভূতপূর্ব অবদান তা অনুধাবন করেই, টেলিভিশনের প্রয়োজনীয়তা এবং  উপকারিতা সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশি সচেতন করে তোলবার জন্যই এমন একটি দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল জাতিসংঘ।

।।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা রিভিউ

প্রায় শতাধিক বছর ধরে চলে আসছে কুলাডাবর গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজো ।

হেমন্তের শুক্লপক্ষ নবমী তিথিতে শ্রী শ্রী জগদ্ধাত্রী মাতার পুজো হয়। করিন্দাসুর কে বধ করার জন্য মা দূর্গা জগদ্ধাত্রী রূপ ধারণ করেছিলেন ।নবমী তিথিতে তান্ত্রিক মতে ত্রিসন্ধ্যা পুজো হয় । সকালে সপ্তমী বিহিত পুজো, দুপুরে অষ্টমী এবং রাত্রে নবমী বিহিত পুজো হয় ।

পুজোয় কুস্মান্ড, ইক্ষুদণ্ড ইত্যাদি বলি দেওয়া হয় । মা জগদ্ধাত্রীর দুই পাশে নারদ ও  মার্কন্ডেয় ঋষি   এবং জয়া ও বিজয়া । মা সিংহের উপর উপবেশন করে করিন্দাসুর কে বধে উদ্দত । মায়ের গায়ের রং সকল বেলার সূর্যের রং এর মতো । মায়ের ধ্যানের মন্ত্রের মধ্যেও তা আছে -” বালার্ক সাদৃশ্যাংতনু “। মা “রক্ত বস্ত্র পরিধানাং “।

 

 

বঙ্গদেশে নাদিয়ার কৃষ্ণচন্দ্র মহারাজ জগদ্ধাত্রী পুজো প্রচলন করেছিলেন বলে জানা যায় । শ্রীরামকৃষ্ণর সহধর্মিনী মা সারদামনি
জইরামবাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজো করেছিলেন ।

ছোটনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত বাঁকুড়া জেলার অধীন জিড়রা গ্রামপঞ্চায়তের কুলাডাবর গ্রামে জগদ্ধাত্রী পুজো প্রায় শতাধিক বছর ধরে চলে আসছে ।

তার আগে এই পুজো এই গ্রাম থেকে পশ্চিমে 5-6 মাইল দূরে বিগত বিহার রাজ্যের মানভূম জেলার বারমাগুড়া অথবা শিয়ালডাঙ্গা গ্রামে হতো । বর্তমানে গ্রামটি পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া গ্রামের অন্তর্গত । এই পুজো স্রাবর্ন গোত্রীয় ব্রাহ্মণ গঙ্গোপাধ্যায় উপাধীধারী “আচার্য রাজউপাধি ধারী ” দের পুজো । গঙ্গোপাধ্যায় উপাধি ধারী ব্রাহ্মণ দের ভূতপূর্ব বসবাস ছিলো হুগলি জেলার  আমাটা গ্রামে ।

 

 

পঞ্চকোটাধীপতি কাশিপুর মহারাজ গঙ্গোপাধ্যায় ব্রাহ্মণ দের জমিদারি দান করে বসবাসের ব্যাবস্থা করেন এই এলাকায়। এই মহারাজের দেওয়া উপাধি “আচার্য্য”। এই কুলাডাবর গ্রামে গদাধর আচার্য্য ও তার পুত্র কাশীনাথ আচার্য্য বসবাস করার জন্য মনস্থির করেন । কাশীনাথ আচার্যের 7জন ছেলে – ভৈরব, গোপাল, বামাপদ, শ্যাম, নন্দ, অনন্ত, রক্ষাকর । কুলাডাবর গ্রামে তৃতীয় সন্তান বামাপদ আচার্য্য কে জমিদারি দেখা শুনার জন্য  প্রেরণ করেন । পরে অনন্যা ছয় ভাই কুলাডাবর এসে বসবাস করতে থাকেন ।

বামাপদ মারা যাওয়ার পর তাহার দুই পুত্র রাবিলোচন ও জয়রাম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন | রাবিলোচন এর কোনো পুত্র, কন্যা না থাকায় তিনি মায়ের পুজোর খরচ নিমিত্ত ছয় বিঘা কৃষি যোগ্য জমির ব্যাবস্থা করেন ||

উক্ত জমির ও জয়রাম আচার্য্য এর পৌত্র ও প্রো পৌত্র গন নিজেরাই অর্থ দিয়ে পুজোর কার্য ও অথিতি অভ্যাগতদের ভোজনের ব্যাবস্থা করে এসেছেন।

 

 

বহূ মানুষ পাশাপাশি গ্রাম থেকে পুজো উপলক্ষেই এই গ্রামে অথিতি হিসেবে আসেন। এই পুজোয় মায়ের প্রতিমা মৃন্ময়মূর্তি, একচালা ডাকে সজ্জিত ।

শিয়ালডাঙ্গা গ্রাম থেকে মাটি এনে মায়ের মূর্তি গড়ে তোলা হয় । পূর্বে কর্মকার পরিবারের শিল্পীরা এবং বর্তমানে পালপারিবারে শিল্পী “নিমাই পাল ” মায়ের মূর্তি গড়েন। এই পুজোয় মনিহারা গ্রামের চক্রবর্তী পরিবার বংশ পরম্পরায় এই পুজোর সাথে যুক্ত পুরোহিত হিসাবে । বর্তমানে সন্তোষ চক্রবর্তী (ভট্টাচার্য )মহাশয় পুরোহিত কার্যে নিযুক্ত থাকেন।

নবমীর সকাল বেলায় পুরোহিত মহাশয় “কাশির বাঁধ ” হইতে বারী আনেন। এই সময় বহূ ভক্ত স্নান করে মা এর মন্দির পর্যন্ত ডন্ডি  দিয়ে আসেন।

 

 

বর্তমানে এই ডন্ডির রাস্তা টি সুন্দর ভাবে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই গ্রামে জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে মেলাও বসে। সমস্ত গ্রাম আলোকসজ্জায় সজ্জিত থাকে । কলকাতার সুবিখ্যাত যাত্রাপার্টির যাত্রানুষ্টান ও সংস্কৃতিক অনুষ্টান অনুষ্টিত হয়। পুজো উপলক্ষে বহূ আত্মীয় ও যারা বাইরে থাকেন তারা সবাই পুজোর সময় সমবেত হন। পুজোর সময় কয়েক দিন গ্রাম টা যেন জাকজমকপূর্ণ ও আনন্দ মুখরিত থাকে । এরপর অবশেষে ক্লান্ত মনে, অশ্রু নেত্রে গ্রামের কাশীরবাঁধে মাকে নিমজ্জিত করা হয়।

 

।। কলমে : আবদুল হাই,বাঁকুড়া।।

 

 

Share This
Categories
রিভিউ

আজ বিশ্ব শিশু দিবস, জানুন দিনটি কেন পালন করা হয় এবং দিনটির ইতিহাস।

বিশ্ব শিশু দিবস  ২০ নভেম্বর ২০২৩—-

 

শিশু দিবস একটি আন্তর্জাতিক পালিত দিন এবং কোনো সরকারি ছুটির দিন নয়।  জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশ তাদের নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী শিশু দিবস পালন করে।
শিশু দিবস একটি গুরুতর বার্তা সহ একটি মজার দিন।  আন্তর্জাতিক শিশু দিবস আমাদের শিশুদের অধিকারের প্রচার ও উদযাপন করার সুযোগ দেয় যা তাদের জন্য একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তুলবে।

 

বিশ্ব শিশু দিবস ২০২৩ এর থিম—-

 

আন্তর্জাতিক শিশু দিবসের থিম হল, “অন্তর্ভুক্তি, প্রত্যেক শিশুর জন্য”, “Inclusion, for every child”।  এই থিমের অর্থ হল যে কোন সমাজ, সম্প্রদায় বা জাতীয়তার প্রতিটি শিশু সমান অধিকারের অধিকারী।  এটি বিভিন্ন সভ্যতার শিশুদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার উপরও জোর দেয়।  শুধু সাধারণ অধিকারই নয়, একটি বৈশ্বিক সমাজ সব ধরনের ত্বকের রঙের শিশুদেরকে স্বাগত জানায় এবং স্থান দেয়।
থিমের আরেকটি অত্যাবশ্যক দৃষ্টিভঙ্গি হল একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে একটি ধাপ এগিয়ে নেওয়া যা আমাদের শিশুদের জন্য আরও অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত এবং এটি প্রতিটি কুসংস্কার দূর করবে।  যে কোন পক্ষপাতিত্ব সমাজের সম্প্রীতির জন্য ক্ষতিকর, এটি একটি শিশুর মনস্তত্ত্বের জন্যও দুর্বল প্রভাব ফেলতে পারে যাকে একটি সম্প্রদায় অগ্রহণযোগ্য বা অযোগ্য বলে মনে করে।  তাই, যুদ্ধ বা মহামারীর মতো যেকোনো মানবিক বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাধ্যাকর্ষণ আমাদের শিশুদের কষ্ট না দেয় এবং আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের সহায়তা বা উদ্ধার মিশনে সমস্ত অঞ্চলের শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করব।
সমাজ এবং শিশু উভয়ই একসাথে বেড়ে ওঠে এবং একটি সমৃদ্ধ সমাজ তার বাসিন্দা শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের উপর নির্ভর করে।  অন্তর্ভুক্তির ধারণার সাথে, আমাদের বাচ্চাদের কল্যাণে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করার আরও সুযোগ রয়েছে।  এমন অনেক সমাজ আছে যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক শিশু এবং যুবকরা কিশোর-কিশোরীদের সমান অধিকার এবং ন্যায়সঙ্গততার সাথে লড়াই করছে।  তাই আমাদের একীকরণের উদ্দেশ্য হল তাদের বর্ণনাকে উত্সাহিত করা এবং আমাদের সমস্ত বাচ্চাদের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্বের এক পতাকার নীচে নিয়ে আসা।
এই থিমটি একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য প্রতিটি শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করে শিশুদের অধিকারের সমর্থন, উদযাপন এবং প্রচার করার জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানায়।

জাতিসংঘ (UN) প্রতি বছর বিশ্ব শিশু দিবসের জন্য শিশুদের মধ্যে সচেতনতা, একতাবদ্ধতা এবং শিশুদের কল্যাণের উন্নতির জন্য একটি নির্দিষ্ট থিম প্রদান করে।

 

শিশু দিবসের রঙ—-

 

শিশু দিবসে নীল রং শিশুদের অধিকারের প্রতীক।  আপনি ২০ শে নভেম্বর নীল হয়ে আপনার সমর্থন দেখাতে পারেন।

 

বিশ্ব শিশু দিবসের ইতিহাস—-

 

১৮৫৭ সালে, ডাঃ চার্লস লিওনার্ড এই দিনটিকে যুক্তরাজ্যে রোজ ডে নাম দিয়ে শুরু করেছিলেন।
১৯২০ সালে, তুরস্ক প্রজাতন্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে শিশু দিবসকে একটি জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৫০ সালে, অনেক দেশ ১ জুন, “শিশু সুরক্ষা দিবস” হিসাবে উদযাপন শুরু করে।
১৯৫৪ সালে জাতিসংঘ প্রতি বছর ২০ নভেম্বর তারিখের সাথে “সর্বজনীন শিশু দিবস” প্রতিষ্ঠা করে।  জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সমস্ত দেশকে শিশুদের অধিকার, একতাবদ্ধতা এবং শিশুদের কল্যাণের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তাদের পছন্দের একটি উপযুক্ত তারিখে শিশুদের জন্য একটি দিবস উদযাপন করার নির্দেশ দিয়েছে।
২০ নভেম্বর, ১৯৫৯-এ, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ শিশু অধিকারের ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে এবং ২০ নভেম্বর, ১৯৮৯-এ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ শিশু অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন গ্রহণ করে।
১৯৯০ সাল থেকে প্রতি ২০শে নভেম্বর এই ঘোষণা এবং কনভেনশনের বার্ষিকীও জাতিসংঘ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

 

শিশু দিবসের ঘটনা—-

 

শিশু দিবস সুরক্ষা এবং শিশুদের অধিকারের কল্যাণের একটি গুরুতর বার্তা সহ একটি মজার দিন।

১৮৫৭ সালে ইউনাইটেড কিংডমে ডঃ চার্লস লিওনার্ড “রোজ ডে” নামে শিশু দিবস প্রথম শুরু করেছিলেন।

জাতিসংঘ ১৯৫৪ সালে শিশু দিবস প্রতিষ্ঠা করে।

জাতিসংঘ শিশু দিবসে প্রতি বছর একটি থিম প্রদান করে।

প্রতিটি দেশ শিশু দিবসের জন্য তাদের নিজস্ব পছন্দের তারিখ নির্ধারণ করেছে।

 

স্কুলে বিশ্ব শিশু দিবসের কার্যক্রম—-

 

স্কুল সমাবেশে বিশ্ব শিশু দিবসের গুরুত্ব ও ইতিহাস সম্পর্কে শিশুদের সচেতন করা।

নীল রঙে স্কুল এবং ল্যান্ডমার্ক বিল্ডিংগুলি আলোকিত করুন।

২০শে নভেম্বরের এই বিশেষ দিনে একটি নীল পোশাক পরুন।

আপনার কব্জির চারপাশে একটি নীল ফিতা পরুন।

এই দিনে নীল রঙের টুপি পরুন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে আপনার প্রোফাইল ছবি নীল রঙে পরিবর্তন করুন।

উপস্থিত শিশুদের মূকনাটক শো।

শিশুদের তাদের অধিকার সম্পর্কে শিক্ষা দিন।

শিশুদের জন্য জাতিসংঘের বিভাগ ইউনিসেফ শিশুদের কল্যাণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সেমিনার এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ রিভিউ

জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট।

জগদ্ধাত্রী বা জগদ্ধাত্রী দুর্গা হিন্দু শক্তি দেবী। ইনি দেবী দুর্গার (পার্বতী) অপর রূপ। উপনিষদে তার নাম উমা হৈমবতী। বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরাণ গ্রন্থেও তার উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিও জগদ্ধাত্রী আরাধনা বিশেষত বঙ্গদেশেই প্রচলিত। আবার পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর ও হুগলি জেলার চন্দননগর, গুপ্তিপাড়া জগদ্ধাত্রী উৎসব জগদ্বিখ্যাত। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা (পার্বতী) ও তামসিক কালীর পরেই স্থান সত্ত্বগুণের দেবী জগদ্ধাত্রীর।

জগদ্ধাত্রী কৃষ্ণনগর ও চন্দননগরের প্রাণাত্মিকা। কিন্তু এই জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট কি তা নিয়ে রয়েছে বহু মতান্তর। ইদানীং কালে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি তথা নদীয়ার ব্রাহ্মশাসন গ্রামের জগদ্ধাত্রীপূজার কিছু কাহিনী পাঠক মহলে খুবই জনপ্রির হয়ে উঠেছে। উইকিপিডিয়াতেও লেখা আছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জগদ্ধাত্রী পূজা সূচনার কথা। মজার কথা হল এই পূজা আদৌ কবে ও কোথায় শুরু হয়েছিল তার ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ কি? কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মতে এই পূজা মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় (১৭১০ খৃষ্টাব্দ) দ্বারা শুরু হয়েছে। তিনি নাকি তৎকালীন নবাবের কাছে কোন এক কারণে দুর্গা পূজার সময়ে বন্দি হন এবং পরে দুর্গা পূজার পর ছাড়া পেলে স্বপ্নাদেশে পরের মাসের অর্থাৎ কার্তিক শুক্লা নবমীতে এই পূজার প্রচলন করেন। সময়কাল নিয়ে মতভেদ থাকলেও অনুমানিক সূচনাকাল সর্বপ্রথম কৃষ্ণনগর। এর পর চন্দননগর বা অন্যান্য স্থানে জগদ্ধাত্রীপূজার সূচনা হয়।
এই কৃষ্ণচন্দ্রের পৌত্র ছিলেন গিরীশচন্দ্র রায়। তিনি নদীয়ার শান্তিপুরের কাছে ১০৮ঘর ব্রাহ্ম পরিবারকে থাকতে দিয়ে একটি গ্রামপত্তন করেন যার নাম “ব্রাহ্মশাসন”। তার পর থেকে শুরু হয় শান্তিপুরে জগদ্ধাত্রী পুরো প্রচলন।
জগদ্ধাত্রী সম্পূর্ণ তান্ত্রিক দেবী। বঙ্গ তান্ত্রিক সিদ্ধপুরুষ কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশবংশীয় মহাপন্ডিত তন্ত্রজ্ঞ সিদ্ধসাধক কৌলাবধূতাচার্য্য রঘুনাথ তর্কবাগীশ মহাশয় (কাল গ্রহ বিষৎ ষট্ চন্দ্র শাকে) অর্থাৎ ১৬১০ শতাব্দে বা ১৬৮১খৃষ্টাব্দে প্রায় ১৬০ টি তন্ত্র ও প্রায় শতাধীক বেদ বেদান্ত পুরাণাদি গ্রন্থ মন্থন করে রচনা করেন “আগমতত্ব বিলাস” নামক এক অনর্ঘ্য মহাপুস্তক। সেই পুস্তকে স্পষ্টতই জগদ্ধাত্রী দেবীর সম্পূর্ণ মূর্তিবিবরণ, পূজাকাল, পূজা পদ্ধতি, পূজার বীজ মন্ত্র,দীক্ষাবিধি সব সুনিপুণ ভাবে বিস্তৃত উল্লেখ করেছেন রঘুনাথ জি।
ইন্দ্রনারায়ণের দেহরক্ষার ৬-৭ বছর বহু আগে থেকে কৃষ্ণনগরে পূজার সূচনা হয়। চন্দননগরে আদি মা তথা আরো কিছু বারোয়ারী পূজা সহ আদি হালদার পাড়ার বারোয়ারীর পূজার সচিত্র তথ্য প্রকাশিত হয়। ১৯৬১সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় স্পষ্টতই উল্লেখ আছে যে সেই পূজা প্রায় ৪০০বছরে প্রাচীন। সেই হিসাবে বর্তমান কাল ধরে সেই পূজা ৪৬০বছরে প্রাচীন।  তাহলে প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয় আদি হালদার পাড়ার পূজাটিও পূর্বে কোন এক সাধক পরিবারের পূজা ছিল। তারাও মানে যে আদিমা তাদের থেকেও প্রাচীন।অর্থাৎ আদিমায়ের প্রাচীনত্ব স্বীকৃত। ১৮২০সালে Friends of India নামক পত্রিকায় চন্দননগরে  জগদ্ধাত্রী পূজার উল্লেখ আছে। সেই স্থানে আছে রবার্টক্লাইভ চন্দননগরের চাউলপট্টিকে Granary of bengal বলে উল্লেখ করেছিলেন। এবং সেই সময় আদিমায়ের পূজার কথাও ছিল। ক্লাইভের ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দে চন্দননগর অভিযানের কথা সকলেই জানেন। এতদ্দ্বারা প্রমাণ হয় যে কৃষ্ণচন্দ্রের বহুপরে আদিমায়ের পূজা প্রচলিত ছিল। নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকাল থেকেই বঙ্গদেশে জগদ্ধাত্রী পূজার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
জগদ্ধাত্রী পূজার নিয়মটি একটু স্বতন্ত্র। দুটি প্রথায় এই পূজা হয়ে থাকে। কেউ কেউ সপ্তমী থেকে নবমী অবধি দুর্গাপূজার ধাঁচে জগদ্ধাত্রী পূজা করে থাকেন। আবার কেউ কেউ নবমীর দিনই তিন বার পূজার আয়োজন করে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজা সম্পন্ন করেন। এই পূজার অনেক প্রথাই দুর্গাপূজার অনুরূপ।
জগদ্ধাত্রী পূজা বাঙালি হিন্দু সমাজের একটি বিশিষ্ট উৎসব হলেও, দুর্গা বা কালীপূজার তুলনায় এই পূজার প্রচলন অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে ঘটে। অষ্টাদশ শতকে নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় তার রাজধানী কৃষ্ণনগরে এই পূজার প্রচলন করার পর এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। যদিও দেবী জগদ্ধাত্রী যে বাঙালি সমাজে একান্ত অপরিচিত ছিলেন না, তার প্রমাণও পাওয়া যায়। শূলপাণি খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে কালবিবেক গ্রন্থে কার্তিক মাসে জগদ্ধাত্রী পূজার উল্লেখ করেন। পূর্ববঙ্গের বরিশালে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে নির্মিত জগদ্ধাত্রীর একটি প্রস্তরমূর্তি পাওয়া যায়। বর্তমানে এই মূর্তিটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ সংগ্রহশালার প্রত্নবিভাগে রক্ষিত। কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বকালের আগে নির্মিত নদিয়ার শান্তিপুরের জলেশ্বর শিবমন্দির ও কোতোয়ালি থানার রাঘবেশ্বর শিবমন্দিরের ভাস্কর্যে জগদ্ধাত্রীর মূর্তি লক্ষিত হয়। তবে বাংলার জনসমাজে কৃষ্ণচন্দ্রে পূর্বে জগদ্ধাত্রী পূজা বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি। কেবল কিছু ব্রাহ্মণগৃহে দুর্গাপূজার পাশাপাশি জগদ্ধাত্রী পূজা অনুষ্ঠিত হত।

 

 

।।সংগৃহীত : উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২০ নভেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২০ নভেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) বিশ্ব শিশু দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০১ – প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের যোগসাধক, দার্শনিক ও ধর্মগুরু ধনঞ্জয়দাস কাঠিয়াবাবা।

 

১৭৫০ – টিপু সুলতান, ভারতীয় স্বাধীনতাকামী বীরপুত্র ।

১৮৩৭ – লিউনি ওয়াটার ম্যান, ফাউন্টেন পেন বা ঝরনা কলমের আবিষ্কর্তা মার্কিন বিজ্ঞানী।

 

১৮৫৮ – সেলমা লাগেরল্যোফ, নোবেলজয়ী সুইডিশ লেখিকা।

১৮৭৩ – উইলিয়াম কোবলেন্টজ, আমেরিকান পদার্থবিদ।

 

১৮৮৯ – এডউইন হাবল, মার্কিন জ্যোতির্বিদ।

১৯১৫ – হু ইয়াওবাং, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব।

 

১৯২০ – বাংলা চলচ্চিত্র ও নাট্যজগতের খ্যাতিমান অভিনেতা কালী বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

১৯২৩ – নাদিন গার্ডিমার, দক্ষিণ আফ্রিকার নোবেলজয়ী সাহিত্যিক।

 

১৯৩২ – সুফিয়া আহমেদ, বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ ও ভাষাসৈনিক।

 

১৯৬৩ – টিমোথি গাওয়ারস, ফীল্ডস মেডাল বিজয়ী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৮১৫ – ফ্রান্স, ব্রিটেন, অস্ট্রিয়া, প্রুশিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষর।

১৮১৮ – ভেনেজুয়েলা স্পেনের শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।

১৯১৭ – ইউক্রেনকে প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

১৯৪০ – হাঙ্গেরি ত্রিদলীয় চুক্তি স্বাক্ষরকারী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অক্ষশক্তির অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৯৪৫ – ন্যুরেমবার্গ আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু।

১৯৬২ – সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবা থেকে ইলুশিন বোমারু প্রত্যাহার করতে সম্মত হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবরোধ তুলে নেয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯১০ – লিও তলস্তয়, খ্যাতিমান রুশ লেখক।

 

১৯৩৯ – দীনেশচন্দ্র সেন, লোকসাহিত্য বিশারদ ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকার।

 

১৯৮৪ – কবি ফয়েজ আহমদ।

 

১৯৯৯ – আমিন্‌তোরে ফান্‌ফানি, ইতালীয় রাজনীতিবিদ ও প্রধানমন্ত্রী।

 

১৯৯৯ – সুফিয়া কামাল, বাংলাদেশের প্রথিতযশা কবি, লেখক ও নারীবাদী।

 

২০১০ – মীর শওকত আলী, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার।

 

২০২২ – কলকাতার সিরিয়ালে বেশ পরিচিত মুখ ঐন্দ্রিলা শর্মা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব শৌচালয় দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং পালনের গুরুত্ব।

 

আজ ‘বিশ্ব টয়লেট দিবস’। প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর তারিখটি বিশ্ব টয়লেট দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শতভাগ টয়লেট সুবিধা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করে থাকে।উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিশ্বে টয়লেট ব্যবহার ও স্যানিটাইজেশন সম্পর্কে ক্যাম্পেইন শুরু করে ওয়ার্ল্ড টয়লেট অর্গানাইজেশন।

 

বিশ্ব শৌচাগার দিবস বা বিশ্ব টয়লেট দিবস হল প্রতিবছর ১৯ নভেম্বরে পালিত জাতিসংঘের একটি আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক দিবস, যা বিশ্বব্যাপী পয়ঃনিষ্কাশন সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুপ্রেরণা যোগায়। সারা বিশ্বে ৪.২ বিলিয়ন মানুষ “নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন” ছাড়াই বাস করে এবং প্রায় ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ এর অন্যতম লক্ষ্য “সবার জন্য জল ও পয়ঃনিষ্কাশনের উপলব্ধতা এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা”।বিশেষ করে, লক্ষ্য ৬.২ “খোলা জায়গায় শৌচকর্ম বিলোপ করা ও পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধি রপ্ত করা”। যখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য প্রতিবেদন ২০২০ প্রকাশিত হয়, তখন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “আজ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ অত্যন্ত শোচনীয়” এবং এটি “২০৩০ সালের এজেন্ডা, মানবাধিকার উপলব্ধি এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে”।
বিশ্ব শৌচালয় দিবস মানুষকে এই লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্য পদক্ষেপ নিতে অবহিত, জড়িত এবং অনুপ্রাণিত করার জন্য কাজ করে। সিঙ্গাপুর প্রস্তাবটি উপস্থাপন করার পর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১৩ সালে বিশ্ব শৌচালয় দিবসকে জাতিসংঘের একটি দাপ্রিক দিন হিসেবে ঘোষণা করে (১৯৩ টি সদস্য রাষ্ট্রের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সামনে এর প্রথম প্রস্তাব)। এর আগে, ২০০১ সালে বিশ্ব শৌচালয় সংস্থা (সিঙ্গাপুর ভিত্তিক একটি বেসরকারি সংস্থা) অনানুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব শৌচালয় দিবস প্রতিষ্ঠা করেছিল।

সারা বিশ্বে ৪.২ বিলিয়ন মানুষ “নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন” ছাড়াই বাস করে এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করে। খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করা বিশেষভাবে নারী এবং মেয়েদের পক্ষে কঠিন। নারীরা অধিক গোপনীয়তার জন্য অন্ধকারকে বেছে নেয়, কিন্তু তারপরেও রাতে একা থাকলে আক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়।
এটা অনুমান করা হয় যে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী ডায়রিয়া সংক্রমণের মোট ঘটনার ৫৮% অনিরাপদ পানি, দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন এবং দুর্বল স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের (যেমন অপর্যাপ্ত হাত ধোয়া) কারণে হয়েছিল। এর ফলে পাঁচ বছরের কম বয়সী অর্ধ মিলিয়ন শিশু প্রতি বছর ডায়রিয়াতে মারা যায়। পয়ঃনিষ্কাশন প্রদানের ফলে ডায়রিয়াতে আক্রান্ত শিশুদের সম্ভাবনা ৭-১৭% এবং পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুর হার ৫-২০% হ্রাস পেয়েছে বলে অনুমান করা হয়।
২৮ জুলাই ২০১০ তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পয়ঃনিষ্কাশন (শৌচালয়) সুবিধার অভাব জনস্বাস্থ্য, সম্ভ্রম এবং সুরক্ষার উপর প্রভাব ফেলে। মাটিবাহিত হেলমিনথিয়াসিস, ডায়রিয়া, শিস্টোসোমিয়াসিস এবং শিশুদের অস্বাভাবিক স্বল্পবৃদ্ধিসহ বহুবিধ রোগের কারণ ও বিস্তারের সঙ্গে শৌচালয়ের অভাব অনেকাংশে সম্পর্কিত।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৬ এর লক্ষ্য হল সকলের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন বা স্যানিটেশন সরবরাহ করা।

 

।।সংগৃহীত: উইকিপিডিয়া।।

Share This