Categories
প্রবন্ধ

শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশিষ্ট বাঙালি কবি এবং কালজয়ী গীতিকার – জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি কবি এবং কালজয়ী গীতিকার।  বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে অসাধারণ গানের কথা সাজিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র ও আধুনিক সঙ্গীত জগতে যাঁরা উপহার দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৩২ সালে খুলনা, ব্রিটিশ ভারতের, বর্তমানে বাংলাদেশ জন্মগ্রহণ করেন।  বাবা শচীগোপাল ব্যানার্জি ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার এবং মা রাধারানী দেবী ছিলেন স্বদেশী আন্দোলনের যোদ্ধা।  তিনি স্থানীয় একটি স্কুলে তাঁর পড়াশোনা করেছেন।  দেশভাগের দাঙ্গার সময় তিনি বাড়ি ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে কলকাতায় আসেন  দিদি শিবানী চ্যাটার্জির বাড়িতে, যিনি দক্ষিণ কলকাতার একজন প্রতিষ্ঠিত প্রাবন্ধিক এবং চিত্রশিল্পী।  আশুতোষ কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন এবং স্নাতক হন।  কিছুদিনের মধ্যেই স্থানীয় খানপুর স্কুলে মাইনর মাইনেতে টিচারের চাকরি পান।  কিন্তু দিদি শিবানী চট্টোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয়, দেশ, বসুমতীসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন।  কেউ কেউ চল্লিশ ও ষাটের দশকের বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।

 

প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত শিল্পী অপরেশ লাহিড়ীর প্রেরণায় “ক্রান্তি শিল্পী সংঘ” এর জন্য গান লিখে খ্যাতি লাভ করেন। তার কবিতা তথা গানে সাধারণ মানুষের সমস্যা উঠে এসেছে। অপরেশ লাহিড়ী, ভূপেন হাজারিকা,ভি.বালসারা,ইলা বসু মান্না দে’র সঙ্গে তার কাজ প্রশংসনীয়। চলচ্চিত্রের জন্য গান ও আধুনিক বাংলা গান ছাড়াও চিত্রনাট্য ও নাটক রচনা করেছেন তিনি। ইলা বসু, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, রুণা লায়লা, রুমা গুহঠাকুরতা, কিশোরকুমার, অংশুমান রায়, মান্না দে,ভূপেন হাজারিকা লতা মঙ্গেশকর সহ বহুস্বনামধন্য শিল্পীদের সুললিত কণ্ঠ-মাধুর্যে কালজয়ী হয়েছে তার রচিত গানগুলি।

তাঁর রচিত কয়েকটি কালজয়ী গান—

 

সবার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ চেতনাতে নজরুল, বিস্তীর্ণ দুপারে, আমি এক যাযাবর, ভালো করে তুমি চেয়ে দেখো, ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম'(ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়ার), তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা, এই তো বেশ আছি একেলা, আমার কবিতা ছবি আঁকে সঞ্চিত ব্যথা, বাজে না জীবনের এই বীণা, আমার ব্যাটার বিয়া দিব সময় হয়েছে, ময়লা কাগজ কুড়ানো ছেলে, এই কি পৃথিবী সেই, একখানা মেঘ ভেসে এলো আকাশে, সরস্বতী বিদ্যেবতী তোমায় দিলাম খোলা চিঠি,সেই রাতে রাত ছিল পূর্ণিমা, হাওয়া মেঘ সরায়ে ফুল ঝরায়ে, গঙ্গা আমার মা, পদ্মা আমার মা, কত রাজপথ জনপথ ঘুরেছি, আকাশের সিঁড়ি বেয়ে, ভারত আমার ভারতবর্ষ,স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো, ওরে আমার ভালবাসার ইছামতী রে, মায়াবতী মেঘে এলো তন্দ্রা প্রভৃতি।

 

সম্মাননা—-

 

কালজয়ী গানের এই গীতিকারের সম্মানে কলকাতা পুরসভার সৌজন্যে ১১২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি আবক্ষ তাম্রমৃর্তি স্থাপন করা হয়।

 

জীবনাবসান—

 

শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ই আগস্ট কলকাতায় প্রয়াত হন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৭ ডিসেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৭ ডিসেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৫৭১ – ইয়োহানেস কেপলার, জার্মান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

১৭১৭ – ষষ্ঠ পায়াস, রোমান ক্যাথলিক পোপ।

১৭৯৭ – মির্জা আসাদুল্লাহ খাঁ গালিব,উর্দু ও ফার্সি ভাষার কবি।

 

১৮২২ – লুই পাস্তুর, জীবাণুতত্ত্ববিদ।

১৯২৬ – জেব-উন-নেসা জামাল, গীতিকার।

 

১৯২৭ – সুবল দাস, বাংলাদেশি সুরকার।

১৯৩১ – বদরুদ্দীন উমর, প্রাবন্ধিক।

 

১৯৩২ – শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি গীতিকার।

 

১৯৩৫ – (ক) সৈয়দ শামসুল হক, বাংলাদেশী কবি ও সাহিত্যিক।

 

(খ) রাবেয়া খাতুন, একুশে পদক বিজয়ী বাংলাদেশী লেখিকা।

 

১৯৪১- ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৪২ – আন্তোনিও থিসনেরস, পেরুভীয় কবি।

 

১৯৬৫ – সালমান খান, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা।

১৯৯৫ – জুনায়েদ আহমদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশ।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৪৩৭ – দ্বিতীয় অ্যালবার্ট বোহেমিয়ার রাজা হন।

১৭০৩ – ইংল্যান্ড ও পর্তুগাল বাণিজ্য চুক্তি করে।

১৮২৫ – ইংল্যান্ডে তৈরি বাষ্পীয় ইঞ্জিন রেলপথে চলাচল শুরু করে।

১৮৩১ – চার্লস ডারউইন বিশ্ব পরিভ্রমণের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রা করেন।

১৮৭১ – প্রথম বিড়াল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

১৯০৬ – লন্ডনের বিখ্যাত গ্লোব থিয়েটার প্রথম উদ্বোধন হয় হিকস থিয়েটার নামে।

১৯১১ – জন গণ মন, ভারতের জাতীয় সংগীত, প্রথম ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা সেশন মধ্যে গাওয়া হয়।

১৯২৮ – মুজফফর আহমদের উদ্যোগে ‘শ্রমিক কৃষক দল’-এর তিন দিনব্যাপী প্রথম সর্বভারতীয় সম্মেলন কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৩৯ – তুরস্কের আনাতোলিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

১৯৪১ – জাপান কলকাতা ও ম্যানিলায় বোমাবর্ষণ করে।

১৯৪৫ – (ক) বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।

(খ) ঐতিহাসিক মস্কো চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির ভিত্তিতে কোরিয়াকে দুই অংশে বিভক্ত করা হয়।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা ‘আইএমএফ’-এর কার্যক্রম শুরু হয়৷

১৯৪৯ – ইন্দোনেশিয়া গঠিত হয়।

১৯৫৫ – পেইচিং গুয়েন্ঠিন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ১৯৫৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

১৯৬০ – জাপানের মন্ত্রীসভায় জিডিপির আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়।

১৯৭১ – মৌলভীবাজারের একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিস্ফোরণে[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

১৯৭৪ – বাংলাদেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়।

১৯৭৮ – ৪০ বছর স্বৈরশাসনের পর স্পেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়।

১৯৭৮ – চীন থেকে প্রথম দফায় ৫০জন পণ্ডিত ওয়াশিংটনে পৌঁছেন।

১৯৭৯ – (ক) ঢাকার কুর্মিটোলায় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (বর্তমানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) উদ্বোধন করা হয়।

(খ) সোভিয়েত বাহিনীর আফগানিস্তানে প্রবেশ।

১৯৮৫ – (ক) ফিলিস্তিনের সন্ত্রাসবাদীরা রোম আর জেনিভায় বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড চালায়। এই হত্যাকাণ্ডে ১৪ জন নিহত আর ১১০ জন আহত হয়।

(খ) বিশ্বের ৯৫টি দেশ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে ফ্রান্সের পরীক্ষামূলক পারমাণবিক বিস্ফোরণের প্রতিবাদ জানায় এবং এ প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানায়।

২০০২ – বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণকারী চীনের দক্ষিণাঞ্চলের পানি উত্তরাঞ্চলে পাঠানো প্রকল্প উদ্বোধনের অনুষ্ঠান পেইচিং মহা গণ ভবনে এবং চিয়াংসু আর শানতোং প্রদেশে অনুষ্ঠিত হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৫৮৫ – পিয়ের দ্য রঁসা, ফরাসি কবি।

 

১৯৭৯ – মণীশ ঘটক, বাঙালি গল্পকার, কবি এবং ঔপন্যাসিক।

 

১৯৮৮ – স্বামী গম্ভীরানন্দ, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের একাদশ অধ্যক্ষ।

 

১৯৯২ – প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী,সুরকার ও সঙ্গীত নির্দেশক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য।

১৯৯৬ – বি এম আব্বাস, পানিবিশেষজ্ঞ।

 

২০০২ – প্রতিমা বড়ুয়া পাণ্ডে, ভারতীয় লোকসঙ্গীত শিল্পী।

 

২০০৭ – বেনজীর ভুট্টো, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

 

২০১০ – রমাপ্রসাদ বণিক, ভারতীয় বাঙালি থিয়েটার অভিনেতা, পরিচালক ও নাট্যকার।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

হরিনাভি বঙ্গনাট্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা, রামনারায়ণ তর্করত্ন – জন্মদিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

রামনারায়ণ তর্করত্ন ছিলেন একজন বাঙালি নাট্যকার।তিনি ১৮২২ সালের ২৬শে ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ৪র্থ পরগনা জেলার হরিণাভি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম মৌলিক নাট্যকার ও হরিনাভি বঙ্গনাট্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গ্রামে শৈশবের শিক্ষা শেষ করার পর কলকাতার সংস্কৃত কলেজে দশ বছর ব্যাকরণ, কবিতা, স্মৃতি এবং আইনশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।  পরবর্তীতে, তিনি হিন্দু মেট্রোপলিটন কলেজে দুই বছর অধ্যক্ষ পণ্ডিত হিসাবে কাজ করার পর প্রায় ২৭ বছর ধরে সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৮৮২ সালে এই কলেজ থেকে অবসর গ্রহণ করে, তিনি নিজগ্রাম হরিণাভীতে একটি চতুষ্পাঠী খোলেন এবং বাকি জীবন শিক্ষকতায় কাটিয়ে দেন।  রামনারায়ণের পিতা রামধন শিরোমণি ছিলেন সেই সময়ের একজন বিখ্যাত পণ্ডিত।  তাঁর পিতামহ প্রাণকৃষ্ণ বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

 

বাংলা মৌলিক নাটক রচয়িতা হিসেবেই রামনারায়ণের মুখ্য পরিচয়। বাংলা ভাষায় প্রথম বিধিবদ্ধ নাটক রচনার জন্য তিনি ‘নাটুকে রামনারায়ণ’ নামে পরিচিত ছিলেন। কুলীনকুলসবর্বস্ব (১৮৫৪) তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ঠ নাটক। এতে হিন্দুসমাজে বহুবিবাহ প্রথার কুফল সম্পর্কে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়।  তাঁর অধিকাংশ নাটক ও প্রহসন বেলগাছিয়া রঙ্গমঞ্চ, কলকাতার অভিজাত ধনিকশ্রেণীর নিজস্ব মঞ্চ এবং জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি নাট্যশালায় বহুবার অভিনীত হয়। ‘দি বেঙ্গল ফিলহার্মোনিক আকাদেমি’ থেকে তিনি ‘কাব্যোপাধ্যায়’ উপাধি লাভ করেন।

 

তাঁর রচিত নাটক সমূহ—

অভিজ্ঞান শকুন্তল (১৮৬০), সম্বন্ধ সমাধি (১৮৬৭), কুলীন-কুল-সর্বস্ব (১৮৫৪), যেমন কর্ম তেমন ফল (১৮৭২), নব নাটক (১৮৬৬), চক্ষুদান (১৮৬৯), উভয়সঙ্কট (১৮৬৯), বেণী সংহার’ (১৮৫৬), কংসবধ (১৮৭৫), পতিব্রতোপাখ্যান (১৮৫৩), রত্নাবলী (১৮৫৮), রুক্মিণী হরণ (১৮৭১), মালতী মাধব(১৮৬৭), স্বপ্নধন (১৮৩৩), ধর্মবিজয়(১৮৭৫)।

 

১৮৮৬ সালের ১৯ জানুয়ারি স্বগ্রামে তাঁর মৃত্যু হয়।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

 

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্যার কৈলাসচন্দ্র বসু,ভারতের চিকিৎসাশাস্ত্রে সবচেয়ে সম্মানিত ও প্রথম স্যার উপাধিপ্রাপ্ত চিকিৎসক

স্যার কৈলাসচন্দ্র বসু,ভারতের চিকিৎসাশাস্ত্রে সবচেয়ে সম্মানিত ও প্রথম স্যার উপাধিপ্রাপ্ত চিকিৎসক । স্যার কৈলাসচন্দ্র বসু  ভারতের চিকিৎসাশাস্ত্রে পরম হিতকারী খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। কৈলাশচন্দ্র ১৮৫০ সালের ২৬ ডিসেম্বর কলকাতার সিমলায় এক ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি ছিলেন বাবু মধুসূদন বসুর দ্বিতীয় সন্তান।  ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে পড়াশোনা শেষ করার পর, ১৮৭৪ সালে, তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে মেডিসিন পাস করেন এবং ক্যাম্পবেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হন।

 

কিন্তু তাঁর ভাইয়ের পরামর্শে তিনি সরকারী চাকুরী ছেড়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু করেন এবং এমন সুনাম অর্জন করেন যে তিনি দ্রুত বাংলায় বিশেষ করে সচ্ছল মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রধান চিকিৎসক হিসেবে স্থান করে নেন।  চিকিৎসা ক্ষেত্রেও তিনি নিজের প্রচেষ্টায় ব্যাপক উন্নতি করেছেন।  তিনি তার উপার্জিত অর্থ বহু জনহিতকর কাজে ব্যয় করেছেন।  মূলত তাঁর প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বাংলায় ভেটেরিনারি কলেজ ও হাসপাতাল এবং স্কুল অফ গ্রীষ্মমন্ডলীয় ওষুধের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছিল।  এছাড়াও, তিনি কলকাতা মেডিকেল স্কুল, সোদপুর, পিঞ্জরাপোল, কুস্থনিবাস ইত্যাদির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। কলকাতা মেডিকেল সোসাইটির সহ-সভাপতি, ইন্ডিয়ান মেডিকেল কংগ্রেস, কলকাতা পৌরসভার কমিশনার এবং অবৈতনিক প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।

 

অবিভক্ত বাংলায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসামান্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কৈলাস চন্দ্র বসু বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন – রায়বাহাদুর খেতাব (১৮৯৫), সি.আই.ই সম্মান (১৯০০), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো (১৯০৪),  ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ স্বর্ণপদক লাভ (১৯১০) ‘স্যার’ উপাধি (১৯১৬) দ্বারা সম্মানিত হন।

 

কৈলাশ চন্দ্র বসু ১৯ জানুয়ারী, ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে প্রয়াত হন ।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

 

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ইংরেজ গণিতবিদ এবং কম্পিউটারের জনক চার্লস ব্যাবেজ – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

চার্লস ব্যাবেজ ছিলেন একজন ইংরেজ যান্ত্রিক প্রকৌশলী, গণিতবিদ, উদ্ভাবক এবং দার্শনিক।  তাঁকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়।  তিনি ডিফারেন্স ইঞ্জিন এবং অ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন নামে দুটি যান্ত্রিক কম্পিউটার তৈরি করেন।  তিনি যে বিশ্লেষণাত্মক ইঞ্জিন তৈরি করেছিলেন তা যান্ত্রিকভাবে গাণিতিক কাজ সম্পাদন করতে পারে এবং এই ইঞ্জিনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আজও কম্পিউটার ডিজাইনে গুরুত্বপূর্ণ।  অর্থের অভাবে ব্যাবেজ তার প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে পারেনি।

 

১৮১২ সালে ব্যাবেজ অ্যানালিটিকাল সোসাইটি খুঁজে পেতে সাহায্য করেছিলেন, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপীয় মহাদেশ থেকে ইংরেজি গণিতের বিকাশের সাথে পরিচিত করা।  ১৮১৬ সালে তিনি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির একজন ফেলো নির্বাচিত হন।  তিনি রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল (১৮২০) এবং পরিসংখ্যান (১৮৩৪) সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

 

১৮১২ বা ১৮১৩ সালে যান্ত্রিকভাবে গাণিতিক সারণী গণনা করার ধারণা ব্যাবেজের কাছে প্রথম আসে। পরে তিনি একটি ছোট ক্যালকুলেটর তৈরি করেন যা আট দশমিকের নির্দিষ্ট গাণিতিক গণনা করতে পারে।  তারপর ১৮২৩ সালে তিনি ২০-ডেসিমেল ক্ষমতা সহ একটি প্রজেক্টেড মেশিন, ডিফারেন্স ইঞ্জিনের ডিজাইনের জন্য সরকারী সহায়তা পান।  ডিফারেন্স ইঞ্জিন ছিল একটি ডিজিটাল ডিভাইস: এটি মসৃণ পরিমাণের পরিবর্তে বিচ্ছিন্ন ডিজিটে কাজ করত এবং সংখ্যাগুলি ছিল দশমিক (০-৯), বাইনারি সংখ্যার (“বিট”) পরিবর্তে দাঁতযুক্ত চাকার অবস্থান দ্বারা উপস্থাপিত।  যখন একটি দাঁতযুক্ত চাকা নয়টি থেকে শূন্যে পরিণত হয়, তখন এটি পরবর্তী চাকাটিকে একটি অবস্থানে অগ্রসর করে, অঙ্কটি বহন করে।  আধুনিক কম্পিউটারের মতো, ডিফারেন্স ইঞ্জিনের স্টোরেজ ছিল—অর্থাৎ, এমন একটি জায়গা যেখানে ডেটা অস্থায়ীভাবে পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণের জন্য রাখা যেতে পারে।  এর নির্মাণের জন্য যান্ত্রিক প্রকৌশল প্রযুক্তির বিকাশের প্রয়োজন ছিল, যার জন্য ব্যাবেজ অব নেসেসিটি নিজেকে নিবেদিত করেছিল।  এর মধ্যে (১৮২৮-৩৯), তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের লুকাসিয়ান অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  যাইহোক, সম্পূর্ণ ইঞ্জিন, রুম-আকারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, অন্তত ব্যাবেজ দ্বারা নির্মিত হয়নি।  ১৮৩৩ সালে সমস্ত নকশা এবং নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়, যখন যন্ত্রটি তৈরির জন্য দায়ী জোসেফ ক্লিমেন্ট প্রিপেইড না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যেতে অস্বীকার করেছিলেন।

 

১৮৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ব্যাবেজ বিশ্লেষণাত্মক ইঞ্জিনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন, যা আধুনিক ডিজিটাল কম্পিউটারের অগ্রদূত।  সেই ডিভাইসে তিনি পাঞ্চড কার্ডের নির্দেশাবলীর ভিত্তিতে যেকোন গাণিতিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করার ক্ষমতা কল্পনা করেছিলেন, একটি মেমরি ইউনিট যেখানে সংখ্যা সংরক্ষণ করা হয়, অনুক্রমিক নিয়ন্ত্রণ এবং বর্তমান সময়ের কম্পিউটারের বেশিরভাগ অন্যান্য মৌলিক উপাদান।  ডিফারেন্স ইঞ্জিনের মতো, প্রকল্পটি এর আগে নির্মিত যেকোনো কিছুর চেয়ে অনেক বেশি জটিল ছিল।  মেমরি ইউনিট ১০০০ ৫০-সংখ্যার সংখ্যা ধারণ করার জন্য যথেষ্ট বড় ছিল;  এটি ১৯৬০ সালের আগে নির্মিত যেকোন কম্পিউটারের স্টোরেজ ক্ষমতার চেয়ে বড় ছিল। মেশিনটি বাষ্প চালিত এবং একজন পরিচারক দ্বারা চালিত হবে।
১৮৪৩ সালে ব্যাবেজের বন্ধু গণিতবিদ অ্যাডা লাভলেস অ্যানালিটিকাল ইঞ্জিন সম্পর্কে একটি ফরাসি কাগজ অনুবাদ করেছিলেন এবং তার নিজের টীকাতে প্রকাশ করেছিলেন যে এটি কীভাবে গণনার একটি ক্রম সম্পাদন করতে পারে, প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রাম।  বিশ্লেষণাত্মক ইঞ্জিন, যদিও, সম্পূর্ণ হয়নি.  ১৯৩৭ সালে তার অপ্রকাশিত নোটবুকগুলি আবিষ্কৃত না হওয়া পর্যন্ত ব্যাবেজের নকশাটি ভুলে গিয়েছিল। ১৯৯১ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা ব্যাবেজের স্পেসিফিকেশনের জন্য ডিফারেন্স ইঞ্জিন নং ২—৩১ ডিজিটের নির্ভুল — তৈরি করেছিলেন এবং ২০০০ সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিনের জন্য প্রিন্টারও তৈরি করেছিলেন।

 

ব্যাবেজ অন্যান্য ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।  তিনি ইংল্যান্ডে আধুনিক ডাক ব্যবস্থা স্থাপনে সহায়তা করেছিলেন এবং প্রথম নির্ভরযোগ্য অ্যাকচুয়ারিয়াল টেবিল সংকলন করেছিলেন।  তিনি এক ধরণের স্পিডোমিটার এবং লোকোমোটিভ কাউক্যাচারও আবিষ্কার করেছিলেন।

 

১৮ অক্টোবর ১৮৭১ সালে,৭৯ বছর বয়সে চার্লস মারা যান।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৬ ডিসেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৬ ডিসেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯৩৮ – আলমগীর কবির, বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা।

 

১৯৯২ – মিনার রহমান, বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী।

 

১৮২২ – রামনারায়ণ তর্করত্ন, বাংলার প্রথম মৌলিক নাট্যকার ও হরিনাভি বঙ্গনাট্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা।

 

১৮৫০ -স্যার কৈলাসচন্দ্র বসু,ভারতের চিকিৎসাশাস্ত্রে সবচেয়ে সম্মানিত ও প্রথম স্যার উপাধিপ্রাপ্ত চিকিৎসক।

 

১৮৬১ – সাহিত্যিক মুন্সী মেহের্বলৱাহর।

 

১৮৬২ – ওকাকুরা কাকুজো, জাপানের প্রখ্যাত শিল্পী ও বাংলায় বিংশ শতকের গোড়ার দিকে নব উন্মেষের সূচনাকারী।

 

১৮৮৭ – সমাজতাত্ত্বিক বিনয় কুমার সরকার।

 

১৮৯৩ – মাও সে তুং, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা।

 

১৭৯১ – চার্লস ব্যাবেজ, ইংরেজ গণিতবিদ। তাকে কম্পিউটারের জনক হিসাবে অভিহিত করা হয়।

 

১১৯৪ – জার্মানির সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রেডরিক।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০১ – ডেনিশ টিটো পৃথিবীর সর্বপ্রথম মহাকাশ পর্যটকের মর্যাদা লাভ করেন।

২০০৪ – ভারত মহাসাগরের পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ ভয়াবহ সুনামির সাক্ষী থাকল।

১৯০৬ – অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বিশ্বের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি দি স্টোরি অব দ্য কেলি গ্যাং প্রথম প্রদর্শিত হয়।

১৯১৩ – কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ডি লিট উপাধি দেয়।

১৯১৬ – জোসেফ জোফ্রে ফ্রান্সের প্রথম মার্শাল হন।

১৯১৬ – ছে ইউয়েন পেই পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নিবার্চিত হন।

১৯১৯ – লীগ অব নেশনস প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯২০ – আজারবাইজানকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যুক্ত করা হয়।

১৯২০ – পোল্যান্ড ও রাশিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯২০ – আজারবাইজান কে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যুক্ত করা হয়।

১৯৩২ – চীনের গানসুতে ভূমিকম্পে ৭০ হাজার লোক মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৩৯ – তুরস্কে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়।

১৯৪৯ – বিজ্ঞানী আলবার্ট আইস্টাইন মধ্যাকর্ষণের নতুন সাধারণকৃত তত্ত্ব উদ্ভাবন করে।

১৯৫২ – জাপান সার্বভৌমত্ব ফিরে পায় এবং গণতান্ত্রিক জাপান প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৬২ – চীন-মংগোলিয়া সিমান্ত চুক্তি পেইচিং এ স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৬২ – বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামায আদায়ের মাধ্যমে প্রথম নামাজ পড়া শুরু হয়।

১৯৬৯ – ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এর পদ থেকে দ্যগল ফ্যান্সের পদত্যাগ।

১৯৭৮ – চীনের দক্ষিণাংশের বড় রেলপথ জিলিও রেলপথ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়।

১৯৭৯ – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের রেড আর্মি আফগানিস্তান দখল করে একটি স্বাধীন দেশের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী সামরিক অভিযান শুরু করে।

১৯৮৩ – ফ্রান্সের ডুবরী সাগরের ৪৫০০ মিটার নিচে অবগাহন করে নতুন বিশ্বের রেকর্ড সৃষ্টি করেন।

১৯৮৪ – চীনের প্রথম দক্ষিণ মেরু পরিদর্শন দল দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছে।

১৯৯২ – রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৯২ – সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোকে নিয়ে নতুন যুগোস্লাভিয়া ঘোষণা।

১৯৯২ – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে আফগান যোদ্ধাদের ১৩ বছরের যুদ্ধের পর তারা বিজয় লাভ করে ।

১৯৯৫ – বাংলাদেশ সরকার হুমায়ুন আজাদের নারী বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৯৯ – চীনের পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুত কেন্দ্র এটেন জলবিদ্যুত কেন্দ্রের নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়।

১৮০১ – বাংলা ও মাদ্রাজের জন্য ব্রিটিশদের প্রথম সুপ্রিম কোর্ট গঠন।

১৮০৫ – ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়া শান্তিচুক্তি করে।

১৮৯৮ – পিয়ের ও মারি কুরি রেডিয়াম আবিষ্কার করেন।

১৭৪৮ – দক্ষিণ নেদারল্যান্ডসের ব্যাপারে চুক্তি করে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়া।

১৭৮৯ – ফ্লেচার ক্রিশ্চিয়ানের নেতৃত্বে ব্রিটিশ জাহাজ বাউন্টিতে নাবিক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।

১৭৯২ – রাজদ্রোহ ও বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে ফ্রান্সের শেষ রাজা ষোড়শ লুইয়ের বিচার নিয়ে নির্বাচন শুরু হয়।

১৭৯৩ – গেইসবার্গের যুদ্ধে ফ্রান্সের কাছে অস্ট্রিয়ার পরাজয়।

১১৩৫ – রাজা স্টিফেনের ইংল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০০ – জেসন রবার্ডস, মার্কিন মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা।

২০১৯ – সু লিয়ন, মার্কিন অভিনেত্রী।

 

২০২০ – আব্দুল কাদের, বাংলাদেশী অভিনেতা।

২০২১ – নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু।

১৯৪৩ – মানকুমারী বসু, বাঙালি কবি।

১৯৫০ – জেমস স্টিফেনসন, আইরিশ কবি ও ঔপন্যাসিক।

 

১৯৬১ – অনাথনাথ বসু,বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ।

১৯৭২ – হ্যারি এস. ট্রুম্যান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩তম রাষ্ট্রপতি।

১৯৮৬ – এলসা ল্যানচেস্টার, ইংরেজ অভিনেত্রী।

 

১৯৮৭ – মনোজ বসু, কথাসাহিত্যিক।

১৯৯২ – ডন কেমেনি, মার্কিন কম্পিউটার পুরোধা।

 

১৮৩১ – হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও, ইউরেশীয় কবি, যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ ও শিক্ষক।

১৬২৪ – সাইমন মারিয়াস, জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

 

১৫৩০ – জহির উদ্দিন মোঃ বাবর, ভারত উপ-মহাদেশে মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।

৯০১ – জাবির ইবনে ফুরবা, বিখ্যাত গণিতশাস্ত্রবিদ।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৫ ডিসেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৫ ডিসেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক)  খ্রিস্টান ভোজন দিবস:

আনাস্তাসিয়া অব সারমিয়াম (ক্যাথলিক গির্জা)

২৫শে ডিসেম্বর (প্রাচ্য অর্থোডক্স ধর্মীয় উদ্‌যাপন)

(খ) বড়দিন, যিশুর জন্মদিবসের স্মরণে উদযাপিত  খ্রিস্টানদের ছুটির দিন। (আন্তর্জাতিক)

(গ) গুড গভরন্যান্স দিবস (ভারত)

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৬৪২ – ইংরেজ পদার্থবিদ ও গণিতজ্ঞ স্যার আইজ্যাক নিউটন।

১৭২১ – ইংরেজ কবি উইলিয়াম কলিন্সের।

১৮৬১ – পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য, ভারতীয় শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ,স্বাধীনতা আন্দোলনের এক বিশিষ্ট নেতা ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের চার বারের সভাপতি।

 

১৮৭৬ – মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান মুসলিম নেতা।

১৮৮৯ – চৌধুরী খালিকুজ্জামান, পূর্ব বাংলার গভর্নর।

১৮৯১ – ক্ল্যারি গ্রিমেট, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।

 

১৯১১ – ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়,প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও কলকাতার পাভলভ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা।

 

১৯১৮ – মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত।

১৯১৯ – (ক)  বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত লেখক এবং বিখ্যাত ঔপন্যাসিক আবু রুশদ।

(খ) ভারতের সংগীত পরিচালক নওশাদ আলী।

 

(গ) করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালীতে “সর্বজয়া” ভূমিকায় অবতীর্ণ প্রখ্যাত বাঙালি অভিনেত্রী।

১৯২৩ – মাজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথিতযশা স্থপতি।

 

১৯২৪ – অটল বিহারী বাজপেয়ী ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।

 

১৯২৭ – রাম নারায়ণ, ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ।

 

১৯৩৪ – সত্য সাহা, বাংলাদেশী সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক।

 

১৯৪৮ – হুমায়ুন কবির, বিশ শতকের বাংলা ভাষার কবি।

১৯৬৮ – সঞ্জীব চৌধুরী, বাংলাদেশী সংগীতশিল্পী ও সাংবাদিক।

 

১৯৮০ – আনিফ রুবেদ, বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১০০০ – ইস্তফান হাঙ্গেরির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।

১০৬৬ – উইলিয়াম ইংল্যান্ডের রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।

১৬৯১ – রাঁচির জগন্নাথ মন্দির নির্মিত হয়।

১৭৫৮ – হ্যালির ধূমকেতু প্রথম দেখা যায়।

১৭৭১ – দ্বিতীয় শাহ আলম মোগল সম্রাট হিসেবে দিল্লির সিংহাসনে বসেন।

১৮৪৮ – নিউ হ্যাভেন রেলপথ চালু হয়।

১৯২৫ – কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় লাঙল পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।

১৯২৬ – সম্রাট হিরোহিতো জাপানের সিংহাসনে আরোহণ করেন।

১৯২৭ – ভিয়েতনাম ন্যাশনালিস্ট পার্টি গঠিত হয়।

১৯৪৫ – ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র দৈনিক ‘স্বাধীনতা’ প্রথম প্রকাশিত হয়।

১৯৬৪ – ঢাকা থেকে প্রথম টেলিভিশন অনুষ্ঠান সম্প্রচার।

১৯৬৮ – ভারতের তামিলনাড়ুর বেনমনি গ্রামে ৪৪ জন ক্ষেতমজুরকে পুড়িয়ে মারা হয়।

১৯৭৪ – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দান করেন ।

১৯৮৯ – রোমানিয়ার ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি নিকোলাই চসেস্কু সস্ত্রীক নিহত হন।

১৯৯১ – মিখাইল গর্বাচেভ সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

১৯৯১ – মস্কোর ক্রেমলিন শীর্ষে ৭৪ বছর ধরে উড্ডীয়মান কাস্তে-হাতুড়ি চিহ্নিত লাল পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়। তার স’লাভিষিক্ত হয় তিন রঙা রুশ পতাকা।

১৯৯৮ – রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বোরিস ইয়েলটসিন বিয়েলো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট লুকাশেনকোর সঙ্গে দুপক্ষের ইউনিয়নভুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা স্বাক্ষর করেন।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৪৮ – কুসুমকুমারী দাশ, খ্যাতনামা বাঙালি মহিলা কবি।

 

১৯৬১ – ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজতান্ত্রিক এবং গবেষক।

 

১৯৭৭ – চার্লি চ্যাপলিন, ইংরেজ চলচ্চিত্র অভিনেতা।

১৯৮০ – চীনের বিখ্যাত ঐতিহাসিক কু চিয়েকাং পেইচিংয।

 

১৯৮৮ – চিত্রশিল্পী কাজী হাসান হাবিবের মৃত্যুবার্ষিকী

 

২০১৪ – জিওফ পুলার, ইংরেজ ক্রিকেটার।

 

২০১৬ – জর্জ মাইকেল, ব্রিটিশ গায়ক।

 

২০১৮ – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, ভারতীয় বাঙালি কবি।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজতান্ত্রিক এবং গবেষক ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল বহু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। হিন্দু মুসলিম সকল শ্রেণীর মানুষ এই মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন। আর তাঁদের সেই বলিদনের ইতিহাসে অনেকের কথাই অজানা। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে  ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত (জন্ম: ৪ সেপ্টেম্বর ১৮৮০) একজন ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজতান্ত্রিক এবং গবেষক।

 

প্রথম জীবন ও পরিবার—

ভূপেন্দ্রনাথ কলকাতার বাসিন্দা ছিলেন। তার পিতা ছিলেন অ্যাটর্নী বিশ্বনাথ দত্ত এবং মা ছিলেন ভুবনেশ্বরী দেবী। তার দুই দাদা ছিলেন নরেন্দ্রনাথ বা স্বামী বিবেকানন্দ এবং সাধক মহেন্দ্র। তার দুই ভ্রাতা এবং মাতা ভুবনেশ্বরী তাকে শিক্ষাক্ষেত্রে সহায়তা করেন। ভূপেন্দ্রনাথ কলকাতা মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউট থেকে এন্ট্রান্স পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাবার আগে তিনি ব্রাহ্মধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং শিবনাথ শাস্ত্রীর সাথে পরিচিত হয়ে হিন্দুসমাজের ভেদবুদ্ধির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন।

 

বৈপ্লবিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড—

বৈপ্লবিক ধারায় ইংরেজকে ভারত থেকে তাড়ানোর জন্য তিনি ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে ব্যারিস্টার পি মিত্রের নিখিল বঙ্গ বৈপ্লবিক সমিতিতে যোগ দেন। এখানে তিনি যতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, ভগিনী নিবেদিতা, অরবিন্দ ঘোষ প্রমুখের সাহচর্য পান। মাৎসিনী এবং গ্যারিবল্ডির আদর্শ তার প্রাথমিক বৈপ্লবিক জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তার দাদা বিবেকানন্দের রচনাও তাকে প্রভাবিত করেছিল।

অরবিন্দ ঘোষের সহায়তায় ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বিপ্লবীদের পত্রিকা সাপ্তাহিক যুগান্তরের সম্পাদক হন। দেশের বৈপ্লবিক চেতনা বাড়ানোর জন্য এই পত্রিকাটি ছাড়াও সোনার বাঙলা নামে একটি বেআইনি ইস্তাহার প্রকাশের জন্য ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে তার এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। মুক্তির পর তিনি সহকর্মীদের পরামর্শে ছদ্মবেশে আমেরিকা যাত্রা করেন। সেখানে তিনি ইন্ডিয়া হাউসে আশ্রয় পান। এরপর তিনি ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন এবং দুই বছর পর ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গদর পার্টি এবং সোশ্যালিস্ট ক্লাবের সংস্পর্শে এসে সমাজতন্ত্রবাদে বিশেষ জ্ঞানলাভ করেন। আমেরিকায় থাকাকলে শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে তাকে অর্থকষ্টে দিন কাটাতে হয়েছিল।
১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পর বিপ্লবী আন্দোলনকে জোরদার করতে তিনিও অন্যান্য ভারতীয় বিপ্লবীদের মত বার্লিনে আসেন।
১৯১৬ থেকে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ঐতিহাসিক বার্লিন কমিটির সম্পাদক ছিলেন।
১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ছদ্মবেশে দক্ষিণ ইউরোপ পৌছান। বার্লিন কমিটির অনুরোধে জার্মান সরকার তাকে গ্রিস থেকে বার্লিনে আনেন। তার নেতৃত্বে বার্লিন কমিটি তাদের কর্মক্ষেত্র পশ্চিম এশিয়ায় বিস্তৃত করে। এই সমস্ত অঞ্চলে অত্যন্ত বিপদসঙ্কুল কাজে যেসব বীর ভারতবাসী প্রাণ দিয়েছেন বা লিপ্ত ছিলেন তাদের তথ্যাদির প্রামানিক চিত্র তিনি তার বইতে বর্ণনা করেছেন।

বৈপ্লবিক আন্দোলনের সাথে সাথে তিনি সমাজতত্ত্ব এবং নৃতত্বের গবেষণা চালিয়ে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট উপাধি পান।
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান অ্যানথ্রোপলজিক্যাল সোসাইটি এবং ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য ছিলেন।
১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের আহ্বানে বীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তিনি মস্কোতে আসেন। এই অধিবেশনে মানবেন্দ্রনাথ রায় এবং বীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত উপস্থিত ছিলেন।
তিনি সোভিয়েট নেতা লেনিনের কাছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রদান করেন।

১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে ভারতের শ্রমিক কৃষক আন্দোলনের একটি কর্মসূচী পাঠান। ১৯২৭-২৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিটির এবং ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সদস্য হন। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেসর করাচী অধিবেশনে শ্রমিক এবং কৃষকদের মৌলিক অধিকার নিয়ে একটি প্রস্তাব নেহেরুকে দিয়ে গ্রহণ করান। এছাড়াও তিনি বহু শ্রমিক এবং কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ভারতের কৃষক আন্দোলনে যুক্ত থেকে বঙ্গীয় কৃষক সভার অন্যতম সভাপতি এবং দুবার অখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের অধিবেশনে সভাপতি হন। আইন অমান্য আন্দোলনে কারাবরণ করেন।

সাহিত্য প্রতিভা—-

বৈষ্ণবশাস্ত্র, হিন্দু আর্যশাস্ত্র,  সমাজবিজ্ঞান, নৃতত্ব, ইতিহাস, সাহিত্য, মার্কসীয় দর্শন প্রভৃতি বিষয়ে তার পাণ্ডিত্য ছিল। বাংলা, ইংরেজি, জার্মান, হিন্দি, ইরানী প্রভৃতি ভাষায় তার অনেক রচনা প্রকাশিত হয়েছে।

 

তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ—

 

যৌবনের সাধনা, সাহিত্যে প্রগতি, অপ্রকাশিত রাজনীতিক ইতিহাস, যুগসমস্যা, তরুণের অভিযান, জাতিসংগঠন, বৈষ্ণব সাহিত্যে সমাজতন্ত্র, বাংলার ইতিহাস, ডায়ালেক্টস অফ হিন্দু রিচুয়ালিজম, ডায়ালেক্টস অফ ল্যান্ড ইকোনমিকস অফ ইন্ডিয়া? বিবেকানন্দ দ্য সোসালিস্ট, ভারতীয় সমাজপদ্ধতি (৩ খণ্ড), আমার আমেরিকার অভিজ্ঞতা (৩ খণ্ড)।

 

২৫ ডিসেম্বর ১৯৬১ সালে তিনি প্রয়াত হন।

– সংগৃহীত তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

সন্ন্যাসী সেইন্ট নিকোলাসের বড়দিনের সান্টা হয়ে ওঠার গল্প : সৌগত রাণা কবিয়াল।।।

চোখের সামনে একটি রক্তাক্ত ক্রুশবিদ্ধ মানুষের নিথর শরীর এড়িয়ে এক পবিত্রময় আলোর প্রশান্তি, সেই দুঃখী মানুষটির মুখ জুড়ে! শান্ত স্থীর মোমবাতির আলোয় সমস্বরে প্রার্থনা সুর, অদ্ভুত এক মায়াজালের মতো সুখ ছড়াতো মনে!
চারিদিকে ঝকঝকে ব্যস্ত পথ- পথের মানুষ.. সব ঠেলেঠুলে পাড়ার স্কুল গীর্জায় চুপচাপ ঢুকে যেতাম প্রার্থনা গৃহে!
পুরোনো শহরের ৪৭ নম্বর বাড়িটিতে যখন আমার ছেলেবেলা, বলতে গেলে ষোলআনা বাঙালি পরিবারে বেড়ে  আমার উৎসুক শিশু চোখে তখন ‘বড়দিন’ মানে একটি বিশাল প্রশ্ন চিহ্ন! আমাদের পাশাপাশি কিছু খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী পরিবারের উৎসব উৎযাপনটা তখন আমার শিশুমনে বেশ আকর্ষণীয় ও লোভনীয় মনে হতো!  সারাবছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম, সকাল হলেই স্কুল ছুটির দিনে মজার মজার বাহারী কেক-মিষ্টি-চকলেট-কমলা লেবুর জন্য। মা বলতেন, “আজ থেকে বছরে দিন বড় আর রাত ছোট হতে শুরু হলো, বুঝলি”।
দিনের এই ছোট বড় হওয়া নিয়ে তখন আমার তেমন কোন মাথা ব্যথা ছিলো না, যতোটা ছিলো সন্ধ্যে হলে এক ঝাঁক তরুণ-তরুণীর সমস্বরে প্রার্থনা গান নিয়ে। বিশাল বাড়িটাতে আমরা সব শিশুরা মিলে বারান্দার গ্রিল ধরে ভিড় করে নিচের পাকা দূয়ারে মুগ্ধ হয়ে গান শুনতাম। সব মিলিয়ে “বড়দিন” ব্যাপারটাই ছিলো অসাধারণ এক আনন্দের। আমার কাছে কোথায় যেন “বড়দিন” কে মনে হতো পৃথিবীর সব মানুষের মন ভালোর দিন।

প্রায় দুহাজার বছর আগে রোমীয় সম্রাটের আদেশে নাসরত শহর থেকে পরিপূর্ণ বেথলেহেম শহরে গিয়ে আশ্রয়হীন হলেন এক দম্পতি, কাঠুরে যোসেফ আর তার স্ত্রী মেরি । যাত্রার মাঝপথেই এক গোয়ালঘরে মাতা মেরীর প্রথম সন্তান হিসেবে জন্ম নিলেন বিশ্বে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে
খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক, ইতিহাসে ‘ঈশ্বরের পুত্র’ নামে খ্যাত ভগবান ‘যিশু খ্রিষ্ট’!
যাকে জন্মক্ষণে পান্থশালায় স্থান না পেয়ে যাবপাত্রে শুইয়ে রেখেছিলেন তার মাতা মেরি! ভগবান যিশুর জন্ম-সংক্রান্ত প্রথম দিকের চিত্রগুলিতে গবাদি পশু ও যাবপাত্র পরিবৃত একটি গুহায় যিশুর জন্মদৃশ্য বহুল প্রচলিত।
ধারণা অনুযায়ী, এটি বেথলেহেমের চার্চ অফ দ্য নেটিভিটির অভ্যন্তরে। কথিত যে এক স্বর্গদূত বেথলেহেমের চারিপার্শ্বস্থ মাঠের মেষপালকদের যিশুর জন্ম সম্বন্ধে অবহিত করেন, এই কারণে তাঁরাই সেই দিব্য শিশুকে প্রথম দর্শন করার সৌভাগ্য অর্জন করেন!
মথিলিখিত সুসমাচার অনুসারে,
‘বেথলেহেমের তারা’ নামে পরিচিত একটি রহস্যময় তারা কয়েকজন ম্যাজাইকে (জ্যোতিষী) পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেন শিশু যিশুর কাছে, যারা স্বর্ণ, গন্ধতৈল ও ধূপ নিয়ে ঈশ্বরের পুত্রকে দর্শন করতে যান।

ক্রিসমাস অলঙ্কারে ক্রিসমাস ট্রি (পাইন গাছ) বড়দিনের ঘর সাজানো বড়দিনের উৎসবকে পূর্ণতাএনে দেয়। পাশাপাশি
আলোর মোমবাতি যা কিনা মানুষের কাছে প্রেম, প্রার্থনা, আবেগের প্রতীক! বড়দিনের দিন খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছে মোমবাতি  ‘খ্রীষ্টের আলো’ হিসাবে পবিত্র । আগের রাতে নানান রংচঙয়ে ছোট ছড়া বাতি দিয়ে সাজানো ক্রিস্টমাস ট্রি, ছোট ছোট ক্রিসমাস বেল দিয়ে সাজানো হয়,  এই ঘণ্টাটি আভাস দেয় “বড়দিন” এসে গেছে।
বড়দিনে সান্টার লাল টুপি আজকের শিশুদের খুব মন-প্রিয়।
আজকের আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বেও ‘বড়দিন’ প্রকৃতিগতভাবে একটি খ্রিষ্টীয় ধর্মানুষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও, একাধিক অ-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও মহাসমারোহে উৎসবটি পালন করে থাকে! উপহার প্রদান, সংগীত, বড়দিনের কার্ড বিনিময়, গির্জায় ধর্মোপাসনা, ভোজ, এবং বড়দিনের বৃক্ষ, আলোকসজ্জা, মালা, মিসলটো, যিশুর জন্মদৃশ্য, এবং হলি সমন্বিত এক বিশেষ ধরনের সাজসজ্জার প্রদর্শনী আধুনিককালে আমাদের শহরে বড়দিন উৎসব উৎযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ যা কিনা বিগত কয়েকটি শতাব্দীতে বিশ্বে বিভিন্ন অঞ্চলে বড়দিনের অর্থনৈতিক প্রভাবটিকে ধীরে ধীরে প্রসারিত করেছে ।

ইতিহাস বিখ্যাত চিত্রশিল্পে যিশুর জন্মদৃশ্যটিতে মেরি, জোসেফ, শিশু যিশু, স্বর্গদূত, মেষপালক এবং যিশুর জন্মের পর বেথলেহেমের তারার সাহায্যে পথ চিনে তাঁকে দর্শন করতে আসা বালথাজার, মেলকোয়ার ও ক্যাসপার নামক তিন জ্ঞানী ব্যক্তির চরিত্র দেখা যায়।

পৃথিবীতে এসে মানুষের প্রতি এক অদ্ভুত ভালোবাসার দ্যুতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই ভগবান যিশুর আগমন হয়েছিল !

আর বড়দিন বলতে ঈশ্বরের পুত্র ভগবান যিশুর পাশাপাশি আজকের পৃথিবীতে আরেকটি বহুল জনপ্রিয়  চরিত্র “সান্টা দাদু”!

ছোটোদের বড়দিন মানেই  সান্টাক্লজ(সান্টা দাদু), যার কাঁধে থাকে ঝোলা ভর্তি ব্যাগ, পরনে লাল রঙের পোশাকের পাশাপাশি মাথায় লাল টুপি, চোখে চশমা ও এক গাল সাদা দাঁড়ি । যিনি ছিলেন  তুরস্কের পাতারা নামক অঞ্চলে জন্ম নেয়া সেইন্ট নিকোলাস নামের একজন সন্ন্যাসী, শিশুদের প্রতি পবিত্রতা ও উদারতার জন্য তিনি খুবই জনপ্রিয় ছিলেন ।
২৪ শে ডিসেম্বর গভীর রাতে থলে ভর্তি করে উপহার নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সান্টার দাদুর কাছ থেকে চকলেট ও উপহার যেন বাচ্চাদের জন্য দারুণ আনন্দের দিন…! আগের দিন রাতে বিছানায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে দাদু সান্টার কাছে কি কি চাইবার চেয়ে টুপ করে ঘুমিয়ে পরে সকালে সেই গিফটের জন্য অপেক্ষা করা!
খ্রিষ্টীয় ধর্মের অন্তর্গত না হলেও সান্টা নামটি খুব গুরুত্বপূর্ণ “বড়দিন” এর উৎসবের সাথে!
২৪ শে ডিসেম্বর গভীর রাতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাড়ি ঘুরে ঘুরে নানা ধরনের উপহার দেওয়ার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন ।
সান্টাকে নিয়ে বাচ্চাদের মনে মাতামাতির শেষ নেই । সান্টার বসবাস বরফে ঢাকা উত্তর মেরুতে!
১৮৮১ সালে থামস নামে একজন আমেরিকান কার্টুনিস্টের আঁকা ছবিতে ক্রিসমাসের সন্ধ্যাবেলায় নর্থ পোল থেকে আটটি বলগা  হরিণ টানা স্লেজ গাড়িতে আকাশে চড়ে বাচ্চাদের বাড়ির চিমনি দিয়ে ঢুকে উপহার রেখে যেতেন সান্টা দাদু..!

পৃথিবীতে ভালোবাসার কথা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ইতিহাসের পাতায় কোন চরিত্রে সংখ্যার সীমাবদ্ধতা নেই।
একজন যীশু, যিনি তার যন্ত্রণাময় মৃত্যুতেও তার হত্যাকারীদের মানবিক ভালোবাসার কথা অকপটে বলে গেছেন রক্তাক্ত আহত ঠোঁটে…!
আরেকজন সাধারণ মানুষ সন্ন্যাসী
সেইন্ট নিকোলাস (সান্টা দাদু), মানুষের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসা ও শিশুদের পবিত্রতায় মানুষকে ভেদাভেদহীন ভালোবাসার বাঁধনের কথা রেখে গেছেন ইতিহাসের পাতায়।

আসলে সেইন্ট নিকোলাস (সান্টা দাদু) – কিংবা ঈশ্বর পুত্র যিশু…..

সব মিলিয়ে “বড়দিন” শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বীর উৎসব নয়, এটি একটি ভালোবাসার দিনের গল্প..একটি সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখার গল্প।

সবাইকে বড়দিনে শুভেচ্ছা। ভালোবাসাই হোক পৃথিবীর একমাত্র অনুশাসন।

সৌগত রাণা কবিয়াল
(কবি সাহিত্যিক ও কলামিস্ট)

Share This
Categories
প্রবন্ধ

মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান মুসলিম নেতা – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ একজন ব্যারিস্টার, রাজনীতিবিদ এবং পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, তিনি ১৯৪৭ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত দেশের প্রথম গভর্নর-জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৭৬ সালে করাচিতে একটি ধনী বণিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, জিন্নাহ লন্ডনের লিঙ্কনস ইনে আইন অধ্যয়ন করেন।

মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ছিলেন একজন গুজরাটি বংশদ্ভুত আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯১৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা পর্যন্ত জিন্নাহ নিখিল ভারত মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হন এবং আমৃত্যু এই পদে বহাল থাকেন। পাকিস্তানে তাঁকে কায়েদে আজম (মহান নেতা) ও বাবায়ে কওম (জাতির পিতা) হিসেবে সম্মান করা হয়।
জিন্নাহ করাচিতে জন্মগ্রহণ করেন। লন্ডনের লিঙ্কনস ইন থেকে তিনি ব্যরিস্টার হন। বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেন। এসময় তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ১৯১৬ সালে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে লখনৌ চুক্তির সময় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এসময় জিন্নাহ মুসলিম লীগেরও সদস্য ছিলেন। হোম রুল আন্দোলন সংগঠনে জিন্নাহ অন্যতম প্রধান নেতা হয়ে উঠেন। মুসলিমদের রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য তিনি চৌদ্দ দফা সাংবিধানিক সংস্কার পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। কংগ্রেস মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহে অংশ নিলে ১৯২০ সালে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেন। রাজনৈতিক দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পক্ষে ছিলেন।

১৯৪০ সালের মধ্যে, জিন্নাহ বিশ্বাস করেছিলেন যে উপমহাদেশের মুসলমানদের একটি স্বাধীন হিন্দু-মুসলিম রাষ্ট্রে সম্ভাব্য প্রান্তিক অবস্থা এড়াতে তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র থাকা উচিত। জিন্নাহর নেতৃত্বে মুসলিম লীগ ভারতীয় মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক জাতির দাবিতে লাহোর প্রস্তাব পাস করে।

একই বছরে লাহোর প্রস্তাব পাশ হয়। এতে আলাদা রাষ্ট্রের দাবি তোলা হয়।
জিন্নাহ মূলত পাকিস্তানের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহজনক ছিলেন, এমন একটি ধারণা যা কবি ও দার্শনিক স্যার মুহম্মদ ইকবাল ১৯৩০ সালের মুসলিম লীগের সম্মেলনে উত্থাপন করেছিলেন, কিন্তু অনেক আগেই তিনি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে ভারতীয় উপমহাদেশে একটি মুসলিম স্বদেশই একমাত্র পথ। মুসলিম স্বার্থ এবং মুসলিম জীবনধারা রক্ষা করা। এটা ধর্মীয় নিপীড়ন ছিল না যে তিনি হিন্দু সামাজিক সংগঠনের ঘনিষ্ঠ কাঠামোর মধ্যে ক্ষমতা অর্পিত হওয়ার সাথে সাথে ভারতের অভ্যন্তরে অগ্রগতির সমস্ত সম্ভাবনা থেকে মুসলমানদের ভবিষ্যত বাদ দেওয়ার মতো ভয় পেয়েছিলেন। সেই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, তিনি তাঁর সহধর্মবাদীদের তাদের অবস্থানের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য দেশব্যাপী প্রচার চালান এবং তিনি মুসলিম লীগকে মুসলিমদের একটি জাতিতে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ারে রূপান্তরিত করেন।

সেই সময়ে, জিন্নাহ একটি পুনর্জাগরিত মুসলিম জাতির নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন। ঘটনা দ্রুত এগোতে থাকে। ২২-২৩ মার্চ, ১৯৪০ সালে, লাহোরে, লীগ একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র, পাকিস্তান গঠনের জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। পাকিস্তান ধারণাটি প্রথমে উপহাস করেছিল এবং তারপর কংগ্রেস পার্টি কঠোরভাবে বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু এটি মুসলমানদের কল্পনাকে ধারণ করে। গান্ধী এবং জওহরলাল নেহেরু সহ অনেক প্রভাবশালী হিন্দু জিন্নাহর বিরুদ্ধে ছিলেন। এবং ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রাখার জন্য অভিপ্রেত বলে মনে হয়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, কংগ্রেসের নেতাদের বন্দী করার সময় লীগ শক্তি অর্জন করে এবং যুদ্ধের কিছু পরেই অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে, এটি মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত বেশিরভাগ আসন জিতেছিল। শেষ পর্যন্ত, কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ এমন একটি ক্ষমতা ভাগাভাগি সূত্রে পৌঁছাতে পারেনি যা স্বাধীনতার পর সমগ্র ব্রিটিশ ভারতকে একক রাষ্ট্র হিসেবে একত্রিত করার অনুমতি দেবে, যা প্রধানত হিন্দু ভারতের স্বাধীনতার পরিবর্তে সমস্ত দলকে একমত হতে পরিচালিত করবে, এবং পাকিস্তানের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের জন্য। শেষপর্যন্ত কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ ঐক্যবদ্ধ ভারতের ক্ষমতার ভাগাভাগির জন্য একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে পৌছতে ব্যর্থ হলে দেশ বিভাগের সিদ্ধান্ত হয়।কিন্তু জিন্নাহ তার আন্দোলনকে এমন দক্ষতা ও দৃঢ়তার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস পার্টি এবং ব্রিটিশ সরকার উভয়ের কাছেই ভারত বিভাজনে সম্মত হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এভাবে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান একটি স্বাধীন দেশ হয়ে ওঠে যেখানে ভারত একদিন পরে স্বাধীনতা লাভ করে। উপমহাদেশের মুসলমানদের একটি পৃথক জাতি প্রয়োজন কারণ হিন্দু-অধ্যুষিত ভারতে তাদের আকাঙ্ক্ষা চুরমার হয়ে যাবে এই ধারণাটি প্রথম দ্বি-জাতি তত্ত্বে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল।

জিন্নাহ নতুন রাষ্ট্রের প্রথম প্রধান হন। পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল হিসেবে জিন্নাহ নতুন রাষ্ট্রের সরকার ও নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করেন। এছাড়া ভারত থেকে আসা লক্ষাধিক অভিবাসীর পুনর্বাসনের জন্যও তাকে কাজ করতে হয়। উদ্বাস্তু শিবির স্থাপনের কাজ তিনি ব্যক্তিগতভাবে তদারক করেন। একটি তরুণ দেশের গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি হয়ে, তিনি কর্তৃত্বের সাথে পাকিস্তানের সমস্যাগুলি মোকাবেলা করেছিলেন। তাকে নিছক গভর্নর-জেনারেল হিসেবে গণ্য করা হতো না। তিনি জাতির পিতা হিসেবে সম্মানিত ছিলেন। বয়স এবং রোগের দ্বারা কাবু না হওয়া পর্যন্ত তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। স্বাধীনতার এক বছর পর ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বরে জিন্নাহ জন্মস্থান করাচিতে মৃত্যুবরণ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This