Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় (১২ নভেম্বর ১৯২৭) একজন ভারতীয় সুরকার এবং গায়ক ছিলেন যার সঙ্গীতজীবন ছয় দশক ধরে বিস্তৃত।  তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত, বাংলা মৌলিক গান, বাংলা এবং হিন্দি ছবির গানের একজন পারফর্মার ছিলেন।  তিনি ১৫০০ টিরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন, যার মধ্যে প্রায় ৮০০টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান।  এছাড়াও তিনি বাংলা ফিচার ফিল্মে সঙ্গীত পরিচালনা করেন এবং জনপ্রিয় বাংলা মৌলিক গানের জন্য সঙ্গীত রচনা করেন।

 

তিনি অন্যদের মধ্যে, মার্শাল জোসিপ ব্রজ টিটো (যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রপতি), সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ (ভারতের রাষ্ট্রপতি), পণ্ডিত জওহরলাল নেহ্‌রু (ভারতের প্রধানমন্ত্রী), ইন্দিরা গান্ধী (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সামনে গান গেয়েছিলেন। ‘ভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি’র সদস্য হিসাবে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পূর্ব ইউরোপীয় দেশসমূহ যেমন পোল্যান্ড, রোমানিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া, এবং যুগোস্লাভিয়া সফর করেছিলেন।

 

১৯৪৪ সালে মুখোপাধ্যায় একজন পেশাদার গায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।  ১৯৪৫ সালে তিনি মেগাফোন রেকর্ড কোম্পানি থেকে মৌলিক বাংলা গানের প্রথম রেকর্ডিং করেন।  ১৯৪৬ সালে তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিও (এআইআর) এর একজন শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং এইচএমভি-কলোম্বিয়া রেকর্ডিং কোম্পানির সাথে রেকর্ডিংও শুরু করেন।  ১৯৫৬ সালে তিনি লাদাখে তাঁর গান দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সৈন্যদের বিনোদন দিয়েছিলেন।
মুখোপাধ্যায় শ্রী সুশান্ত লাহিড়ী, পঙ্কজ মল্লিক, শান্তিদেব ঘোষ, সন্তোষ সেনগুপ্ত, অনাদি ঘোষ দস্তিদার এবং নীহারবিন্দু সেন সহ বাংলার গায়কদের কাছ থেকে সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

 

তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের অন্যতম প্রধান গায়ক ছিলেন।  তিনি বিশ্বস্তভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান অনুবাদ করেছেন, তাঁর গান শুনে রবীন্দ্রসঙ্গীতের শ্রোতা হয়ে উঠেছেন বাংলার মানুষ।  তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ (১৯৬০) সহ বিখ্যাত বাংলা চলচ্চিত্রে রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়েছিলেন।  তিনি ‘সন্ধ্যা রাগ’ (১৯৭৭) ছবির জন্যও গান গেয়েছিলেন।  দুটি ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন যথাক্রমে প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ওস্তাদ আলী আকবর খান এবং পন্ডিত রবিশঙ্কর।
মুখোপাধ্যায় বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্র সঙ্গীতের সাথে পরিচিত হন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র-সংগীতকার সলিল চৌধুরী।  দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় এবং সলিল চৌধুরীর বন্ধুত্ব শুরু হয়েছিল চল্লিশের দশকের শেষদিকে, আইপিটিএ-তে তাদের সফরের মাধ্যমে।  এই জুটি বাঙালি শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন ‘শ্যামল বারাণী ওগো কন্যা’, ‘তিথির নাম গো’, ‘একদন ফিরে যাও চলে’, ‘পল্লবীনী গো সঞ্চারিণী’সহ আরও অনেক গান।  তারা মাইকেল মধুসূদন দত্ত (“রেখো মা দাসের মানে”, “আসার চলে বুলি”) এর দুটি কবিতায় কাজ করেছেন এবং বিরল এবং সুন্দর সুর বাজিয়েছেন।  দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় পরে সলিল চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতে মুম্বাই যান।  সেখানে তিনি ‘হানিমুন’ (১৯৬০), ‘মায়া’ (১৯৬১), ‘সপন সুহানে’ (১৯৬১) এবং ‘মধুমতি’-এর জন্য একক ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের মতো হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য লতা মঙ্গেশকরের সাথে দ্বৈত গান গেয়েছিলেন।

 

তিনি পদ্মভূষণ,  ২০১০ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র সংগীতের জন্য ভারত সরকারের সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন, বঙ্গবিভূষণ (২০১১) সম্মানে সম্মানিত হন। তিনি অনেক বাংলা চলচ্চিত্রতে সংগীত পরিচালনা করেছিলেন এবং জনপ্রিয় বাংলা মৌলিক গানে সুর সংযোজন করেছিলেন। ২০১৮ সালের ২৪শে ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

Share This
Categories
রিভিউ

আজ জাতীয় উপভোক্তা অধিকার দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় ও গুরুত্ব।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩ : ভোক্তা হিসেবে অধিকারগুলি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যদিও বাজার কিছু নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের উপর চালানো উচিত, কখনও কখনও লোকেরা আমাদের শোষণ করতে পারে যদি আমরা আমাদের অধিকারগুলি যথেষ্ট ভালভাবে না জানি।  অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা আমাদের গ্রাহক হিসাবে আমাদের সুবিধাগুলি সর্বাধিক করতে এবং বাজারে পণ্য ও পরিষেবাগুলির একটি নৈতিক প্রবাহ সক্ষম করতে সহায়তা করে।  সরকার ভোক্তা অধিকার এবং সেই অধিকারগুলির সুরক্ষার উপর জোর দেয় এবং নাগরিকদের সম্পৃক্ত করার এবং তাদের সচেতন করার চেষ্টা করে।  ভোক্তাদের জন্য এই অধিকারগুলি সম্পর্কে শিক্ষিত হওয়া এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনে সেগুলি অনুশীলন করা গুরুত্বপূর্ণ৷

 

প্রতি বছর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবস ২৪ ডিসেম্বর পালিত হয়। এই বছর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবস একটি রবিবার পড়ে।

 

ইতিহাস—

 

১৯৮৬ সালে, ভোক্তা সুরক্ষা আইন পাশ হয় এবং ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রাপ্ত হয়। সেই থেকে, এই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবস পালিত হয়।  ভোক্তা সুরক্ষা আইন ভোক্তাদের ত্রুটিপূর্ণ পণ্য, অবহেলামূলক পরিষেবা এবং অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে।  ভোক্তা সুরক্ষা আইনের ছয়টি মৌলিক অধিকার হল নিরাপত্তার অধিকার, বেছে নেওয়ার অধিকার, জানানোর অধিকার, শোনার অধিকার, প্রতিকার চাওয়ার অধিকার এবং ভোক্তা শিক্ষার অধিকার।

 

তাৎপর্য—

 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবস প্রায়শই বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসের সাথে বিভ্রান্ত হয় যা প্রতি বছর ১৫ মার্চ উদযাপিত হয়। যদিও লক্ষ্য একই থাকে, জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবস জাতীয় পর্যায়ে পালিত হয় এবং বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস বিশ্বব্যাপী পালিত হয়।  .  জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবসের লক্ষ্য হল ভোক্তাদের তাদের অধিকার সম্পর্কে শিক্ষিত করা এবং তাদের সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে সাহায্য করা, যাতে তারা শোষিত না হয় তা নিশ্চিত করা।  এটি তাদের অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও শিক্ষিত করে।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
উপন্যাস গল্প

দামাল মেয়ে কুহেলি (ধারাবাহিক উপন্যাস, অষ্টাদশ পর্ব) : দিলীপ রায় (৯৪৩৩৪৬২৮৫৪)।

সেই আলাপ ঘনীভূত হলো । সম্পর্কের স্থায়ীকরণে বাদ সাধলো প্রদীপ্তের পরিবার । প্রদীপ্তের বাবার একটাই কথা, “তিনি কোনো অ-ব্রাহ্মণ মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দেবেন না ।“ পুবালী পড়ে গেলো মহা ফাঁপড়ে । বিয়ের ব্যাপারে প্রদীপ্তের বাড়ির গড়িমসি অবলোকন করে, পুবালীর বাবা তাকে অন্যত্র বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লাগলেন । পুবালীও নাছোড়বান্দা, “নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসবে না ।“ মন ভেঙ্গে গেলো পুবালীর । কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের ন্যায় দিশাহারা । পুবালী বাড়িতে অথচ সব সময় দুশ্চিন্তায় মনমরা । পুবালীর দিনগুলি খুব হতাশায় কাটছিল । পারিবারিক মতবিরোধের কারণে তাদের পবিত্র দুটি জীবন ছন্নছাড়া ! দুজন একে অপরের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলো ।
অন্যদিকে প্রদীপ্তের মানসিক স্থিতি তথৈবচ ! পুবালীকে কাছে না পাওয়ার যন্ত্রণায় পুবালীর মতো সেও দিশেহারা । অমানসিক বিড়ম্বনায় মুষড়ে পড়লো প্রদীপ্ত । পুলিশের চাকরির আবেদন করলো না । বাড়িতে থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের কথা বেমালিম ভুলে গেলো । বাবার পরিষ্কার নির্দেশ, “পুবালীকে বিয়ে করলে বাড়ির মায়া তাকে ত্যাগ করতে হবে ।“ কয়েকদিন ভাত জল খাওয়া বন্ধ । মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়লো । বেশ কিছুদিন পর ফন্দি আঁটতে লাগল, “অতঃপর কী করা যায় ?” তারপর গোপন সূত্রে খবর পায়, কোচবিহারের এই আশ্রমে সব সময়ের জন্য শিক্ষিত লোক দরকার । খবর পেয়ে মনে মনে প্রদীপ্ত সিদ্ধান্ত নিলো, বাকী জীবন সে আশ্রমেই কাটিয়ে দেবে । আর তা ছাড়া তাকে বিরক্ত করতে কেউ খুঁজে পাবে না । খবরটি জানার পর কাউকে খবরটি শেয়ার করেনি । এমনকি পুবালীকেও জানায়নি । প্রদীপ্তের ধারণা, খবরটি পাঁচ-কান হলে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বানচাল হয়ে যেতে পারে ! তাই ইচ্ছাকৃত কাউকে জানায়নি ।
একদিন খুব ভোরে সকলের অগোচরে প্রদীপ্ত বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা কোচবিহার ।
************************************************
তারপর কোচবিহারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত এই আশ্রমের মহারাজ । আশ্রমের নিয়ম অনুযায়ী, প্রদীপ্ত জীবনে কোনোদিন স্থায়ীভাবে জীবন সঙ্গিনী নিয়ে ঘর সংসার বাঁধতে পারবে না বা আশ্রমে জীবন সঙ্গিনী নিয়ে বাকী জীবন কাটাতে পারবে না । তাঁকে ঘর সংসারের চৌকাঠ মাড়ানো যাবে না । সাংসারিক জীবনের চৌহদ্দির অনেক দূরে থাকতে হবে । আশ্রমে এই রকম একটি ধরাবাঁধা জীবনের মধ্যে দিব্যি ছিল প্রদীপ্ত ! দিনগুলি ভালই কাটছিল । কিন্তু হঠাৎ পুবালীকে দেখে প্রদীপ্ত রীতিমতো অবাক ! অবাক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ পুবালীর দিকে তাকিয়ে রইলো । মুখের ভাষা বন্ধ । কী বলবে বুঝে উঠতে পারছে না ! মনের ভিতর তোলপাড় ! পুবালীকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন প্রদীপ্তের মনে আবার চাগাড় দিলো । এখন কী করবে ? পুবালীকে নিয়ে ঘরবাঁধার স্বপ্ন মন থেকে একেবারেই উড়িয়ে দিতে পারছে না । অথচ পুবালীকে আপন মানুষের মতো কাছে টেনে নিতেও দ্বিধা-দ্বন্দ ! খুব অসহায়ের মধ্যে প্রদীপ্তের মানসিক অবস্থা !
কুহেলি কিছুটা আন্দাজ করতে পেরে দুজনের মাঝখানে ঢুকে পুবালীর দিকে তাকিয়ে বলল, “তাড়াতাড়ি টিফিন খেয়ে নে । আবার বেরোতে হবে ।“
“এবার কোথায় যেতে হবে ?” জিজ্ঞাসা করে জানতে চাইলো পুবালী ।
“দেখা যাক । তুই তাড়াতাড়ি টিফিন খেয়ে বাইরে বেরিয়ে আয় ।“ পুবালীকে কথাটা বলে কুহেলি বাইরে বেরিয়ে যাবে এমন সময় প্রদীপ্ত বলল, “আজ আপনাদের অন্য কোথাও না গেলে বরং ভাল হয় ।“
কেন ? আশ্রমে আমাদের কোনো কাজ আছে কী ? কাজ থাকলে জানাবেন । সেই ক্ষেত্রে আমরা আর বাইরে বের হবো না ।
দরকার নেই । তবে অনেকদিন পর পুবালীর সঙ্গে দেখা হলো, তাই তার সাথে দুদণ্ড বসে কথা বলতে চাই ।
বেশ তো ! সেক্ষেত্রে পুবালী আশ্রমে থাক । আমরা বরং অন্য কাজ সেরে আসি । এখন বের না হলে খাওয়ার আগে ফিরতে পারব না ।
এই কথা শুনে পুবালী একবার প্রদীপ্তের দিকে আর একবার কুহেলির দিকে তাকিয়ে বলল, “না, তা হয় না । আমিও তোমাদের সাথে যাবো ।“
পুবালীর কথা না শোনার ভান করে কুহেলি ঘর থেকে বের হয়ে সোজা রাস্তায় । তারপর ভাবছে অতঃপর তার কী করণীয় ! ভেবেছিল বাজারের দিকে গিয়ে এলাকা সম্বন্ধে খোঁজ খবর নেবে । কুহেলির পক্ষে একা একা সেটা আর হবে না । তাই নিছক পায়ে হেঁটে আশেপাশের মানুষজনের খোঁজ খবর নিতে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করলো । কিছুটা হাঁটার পর কুহেলির চোখে পড়লো রাস্তার পাশে একটা প্রকাণ্ড বট গাছ ! তার মনে হচ্ছে গাছটির বয়স দুই শতাধিক হবে ! বট গাছের ডাল থেকে শিকড় মাটিতে ঝুলে পড়েছে । গ্রামের বাচ্চা ছেলেমেয়েরা সেই শিকড় ধরে ঝুলছে । বট গাছটার নীচে অনেক ছেলেমেয়ের আনাগোনা । বট গাছটার গোড়ায় বাঁশ দিয়ে বসার জায়গা । সেখানে গ্রামের কয়েকজন বয়স্ক মানুষ বসে রয়েছেন । তাঁরা একে অপরের সাথে আলাপচারিতায় ব্যস্ত । জায়গাটার পরিবেশ দেখে কুহেলির খুব ভাল লাগলো । বট গাছ ঘিরে গ্রামের মানুষের অবসর বিনোদনের সুন্দর একটি পরিবেশ । দূরে বিশাল জলাশয় । আশপাশে চাষের জমি । বটগাছের উল্টোদিকে একটা টিউবওয়েল । সেখানে জল নিতে গ্রামের বধূদের ভিড় । কল পাড়ে দাঁড়িয়ে তাঁদের নিজেদের মধ্যে গোপন কথার আদান প্রদান । সংসারের কিছু কথা ব্যক্ত করার জন্য বধূরা মুখিয়ে রয়েছেন । কতক্ষণে তাঁদের কথা ব্যক্ত করবেন, তার একটা টানাপোড়েন নিজেদের মধ্যে চলে । কাখের কলসীতে জল ভড়ে গেলে নিজ নিজ গন্তব্যে তাঁরা আবার ফিরে যাচ্ছেন । দৃশ্য দেখে কুহেলির খুব ভাল লাগল । মনটায় একটা অভূতপূর্ব আনন্দ !
হঠাৎ ! হঠাৎ পেছন থেকে উস্কোখুস্কো চুল ও নোংরা ড্রেসের বয়স্ক একজন মানুষ এসে কুহেলিকে বললেন, “আপনি কী এখানে নতুন ?”
ঐরকম অদ্ভূত ধরনের মানুষ দেখে কুহেলি প্রথমে ভয় পেয়ে গেলো । তাই কালবিলম্ব না করে হনহন করে হেঁটে সোজা আশ্রমের দিকে । দ্রুত পায়ে হাঁটার সময় বারংবার পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখছে, পাগল মানুষটা তাকে অনুসরণ করছে কিনা ? একরকম হাঁপাতে হাঁপাতে গেট দিয়ে আশ্রমে প্রবেশ করলো ।
কুহেলিকে হাঁপাতে দেখে মাসি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলো, “তুমি এ্যাতো হাঁপাচ্ছো কেন বাছা ?”
“গাঁয়ে হাঁটতে বের হয়েছিলাম । বটগাছ তলা যেতেই একটি পাগল মানুষ আমার দিকে বিশ্রিভাবে তাকাচ্ছিল । পাগল মানুষটাকে দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে আমি সোজা আশ্রমে ফেরার রাস্তায় এসে উঠলাম । তারপর একরকম ছুটতে ছুটতে আশ্রমে ফিরে এলাম ।“ কথাগুলি বলে কুহেলি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো ।
মাসি কুহেলিকে ঘরে নিয়ে বসালো । চা বানিয়ে কুহেলির দিকে ধরে বললেন, “চা খেয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করো । আমি পাগল সম্বন্ধে তোমাকে সব জানাচ্ছি । পাগলের জীবনের মর্মান্তিক কথাগুলি শুনলে তাঁর উপর তোমার হৃদয়ের মমতা জাগ্রত হতে বাধ্য ।“
চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে নড়েচড়ে বসলো কুহেলি ।
মাসি জানালেন, “পাগল মানুষটি আসলে পাগল নয় । দীর্ঘদিন নাওয়া-খাওয়া না হওয়ার দরুন চেহারায় তার প্রভাব পড়েছে । কিন্তু তিনি একজন সজ্জন মানুষ । শোনা যায়, বাড়িতে নিজের স্ত্রী তাঁকে ঠকিয়ে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে লোক দিয়ে তাড়িয়ে দেয় । এই মহিলার প্রেমে পাগল হয়ে নাকি ভদ্রলোক আগের স্ত্রী-সন্তানদের ত্যাগ করে কোচবিহারে পালিয়ে আসেন এবং এই মহিলার সাথে ঘর বাঁধেন । এই স্ত্রীর বোন কোচবিহার
এলাকার ডানপিটে মহিলা । তার প্ররোচনায় ভদ্রলোকের বর্তমান বৌ দিনরাত তাঁকে জ্বালাতন করতো । মানসিক যন্ত্রণা দিতো । বৌয়ের অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে একসঙ্গে বাঁচার আশা নিরাশায় পরিণত হয় । তাই লজ্জায় বাড়ি ফিরে না গিয়ে, এই গাঁয়ের বটগাছ তলায় আশ্রয় নেয় । গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে কাজকর্ম করে । খড়ের ঘরের ছাউনী বাঁধে । কারও জমিতে কাজ করে । তবে তাঁর সততা দেখে গ্রামের মানুষেরা ভদ্রলোককে গ্রামের শেষ মাথায় এক ফালি বসত বাড়ির জমি ঠিক করে দিয়েছে । ঘর বানিয়ে তিনি এই গ্রামে পাকাপাকিভাবে বাস করতে চান । যতদিন ঘর বানানো সম্ভব হচ্ছে, ততদিন এই বটগাছ তলায় কাটিয়ে দিতে চান ।
ভদ্রলোকের বর্তমান স্থিতির কথা শুনে কুহেলির চোখে জল । ঠিক সেই মুহূর্তে পুবালী এসে বলল, “তুমি কোথায় বের হবে, বলছিলে ?”
এইমাত্র গ্রাম থেকে ঘুরে এলাম । একটু পরে আবার বের হওয়া যাবে । আশ্রমের আশেপাশের লোকজনদের দেখা এবং এলাকা সম্বন্ধে অবগত হওয়া !
ঠিক আছে । তবে পরেই বের হওয়া যাবে ।
তারপর দুপুরের খাওয়া সেরে কুহেলি ভাবলো, পাগল লোকটাকে একবার দেখে আসা যাক । যেই ভাবনা, সেই আশ্রম থেকে বের হয়ে সোজা রাস্তায় । আশ্রমের মহারাজ কুহেলিকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে তার কাছে এলো এবং বলল, “এভাবে যখন খুশি আশ্রম থেকে বেরিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না । আপনাদের পেছনে কিন্তু অজানা আগন্তুকেরা ঘোরাফেরা করতে পারে । সেক্ষেত্রে বিপদের আশঙ্কা ! সুতরাং যখন কোথাও বের হবেন, একা একা যাবেন না প্লিজ । সঙ্গে কাউকে নিয়ে যাবেন । কাউকে না পেলে, আপনার বান্ধবীকে অন্তত সঙ্গে রাখবেন । তাহলেও অনেকটা নিরাপদ অনুভব করতে পারবেন ।“ বলেই মহারাজ আশ্রমে ঢুকে গেলেন ।
তবুও পাগল মানুষটাকে নিয়ে কুহেলির অহেতুক কৌতুহল থামছে না । অথচ মহারাজের কথাটা ভাববার বিষয় !
( ক্রমশ )

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৪ ডিসেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৪ ডিসেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) জাতীয় উপভোক্তা অধিকার দিবস (ভারত)।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮২২ – ইংরেজ কবি ও সমালোচক ম্যাথু আর্নল্ড।

 

১৮৮১ – নোবেলজয়ী স্প্যানিশ কবি হুয়ান রামন হিমানাস।

 

১৮৮২ – বিজ্ঞানী আর্থার স্ট্যানলি এডিংটন।

 

১৮৮৬ – মাইকেল কার্টিজ, একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী হাঙ্গেরীয়-মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক।

 

১৮৯০ – ডা. রফিউদ্দিন আহমেদ, ভারতে প্রথম ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা।

 

১৮৯১ – প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ,ভারতীয় রাজনীতিবিদ,স্বাধীনতা সংগ্রাম,পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী।

১৯০১ – বিখ্যাত সোভিয়েত লেখক আলেকজান্ডার ফাদেয়েভ।

 

১৯২৪ – মোহাম্মদ রফি, ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী।

 

১৯২৬ – মোহাম্মদ সুলতান, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ।

১৯৩১ – কাজী অনিরুদ্ধ, খ্যাতনামা বাঙালি গিটারবাদক।

১৯৩২ – কলিন কাউড্রে, ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ ক্রিকেট খেলোয়াড় ও অধিনায়ক।

১৯৫২ – আলাউদ্দিন আলী, আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশি গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক।

 

১৯৫৬ – ভারতীয় অভিনেতা ও প্রযোজক অনিল কাপুর।

 

১৯৭১ – রিকি মার্টিন, পুয়ের্তো রিকান গায়ক।

১৯৯৯ – ইমরুল হোসেন আফনান

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯০০ – লেনিনের ‘ইসক্রা’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়।

১৯৫০ – লিবিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৫১ – ইতালির কাছ থেকে লিবিয়া স্বাধীনতা লাভ করে। ইদ্রিস লিবিয়ার বাদশাহ ঘোষিত হন।

১৯৫৩ – দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম প্রকাশ।

১৯৭৩ – রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর পদত্যাগ।

১৯৭৯ – প্রথম ইউরোপীয় রকেট ‘আরিয়ান’ উৎক্ষেপণ।

১৯৮৬ – সিলেটের হরিপুরে তেলক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

১৮০১ – ব্রিটেনে স্বয়ংচালিত যানে প্রথম পরীক্ষামূলক মহড়া হয়।

১৮১৪ – ব্রিটেন ও আমেরিকার মধ্যে বিরাজমান যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।

১৮৯৪ – কলকাতায় প্রথম মেডিক্যাল সম্মেলন হয়।

১২৫৮ – হালাকু খান কর্তৃক আব্বাসীয় খলিফা মোস্তালিমকে হত্যা,আব্বাসীয় রাজত্বের অবসান।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০১৮ – রবীন্দ্র সংগীতে অকাদেমি পুরস্কার বিজয়ী (২০১০) দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পী।

 

১৯৪৩ – অজয় ভট্টাচার্য একজন বিখ্যাত বাঙালি গীতিকার।

 

১৯৭৩ – পেরিয়র ই. ভি. রামস্বামী, ভারতের তামিলনাড়ুর প্রখ্যাত সমাজকর্মী ও রাজনীতিবিদ।

 

১৯৮৫ – ফেরহাত আব্বাস, আলজেরীয় রাজনৈতিক নেতা এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি।

 

১৯৯৯ – হুয়াঁউ বাতিস্তা দি ওলিভেইরা ফিগেইরেদু ব্রাজিলের একজন চার-তারকাবিশিষ্ট সামরিক জেনারেল ও সাবেক রাষ্ট্রপতি।

 

১৮৬৫ – ব্রিটিশ লেখক ও চিত্রশিল্পী চার্লস লক।

 

১৫২৪ – পর্তুগীজ নাবিক ও পর্যটক ভাস্কো-দা-গামা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

জাতীয় কিষাণ দিবস এবং তার গুরুত্ব।

কৃষকদের সম্মান জানাতে এবং তাঁদের কাজ সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য মূলত আজকের এই দিনটি পালন করা হয়। আজ দেশের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিং এর জন্মদিন। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশের কৃষকদের জন্য একাধিক কাজ করেছেন।

 

চৌধুরী চরণ সিংহের মতে কৃষিকাজ চিরস্থায়ী করতে হলে কৃষিজমির মালিকানা কৃষকদের হওয়া প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্যে তিনি এমন একটি স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরী করতে চেয়েছিলেন যেখানে কৃষিজমির মালিকানা কৃষকদেরই থাকে। স্বাধীনতার পরেই অধিকাংশ ভারতীয় নাগরিকের জীবিকা ছিল কৃষিকাজ কেন্দ্রিক।  কৃষক সুবিধার জন্য একাধিক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর আমলে কৃষকদের দিকটাও একই ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। কৃষকদের জন্য বানিয়েছিলেন একাধিক প্রকল্প। তার আগে ১৯৫২ সালে কৃষি মন্ত্রী থাকাকালীন তিনি কৃষিক্ষেত্রে জমিদারি প্রথা বিলোপ করেন। সেই সময় ১৯৫২ সালে ‘জমিদারি প্রথার বিলুপ্তীকরণ বিল’ (Abolition of Zamindari Bill 1952) প্রণয়নে তাঁর কঠোর পরিশ্রমের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। ১৯৫৩ সালে এই সংক্রান্ত একটি আইনও পাশ হয়। এরফলে কৃষক দিবস হিসেবে তাৎপর্য আরও বেড়ে যায়। তাঁর আমলেই ন্যাশানাল ব্যাঙ্ক অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট (National Bank of Agriculture and Rural Development– NABARD) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভারতের নানা সামাজিক সমস্যা বিষয়ক বই লিখেছিলেন চৌধুরী চরণ সিংহ। কৃষিজমি, জমিদারি প্রথা, দারিদ্র্য, কৃষিজমির স্বত্বাধিকার প্রভৃতি বিষয়গুলি বারবার তাঁর লেখায় উঠে এসেছে।

 

 

২০০১ সাল থেকে আজকের দিনটিকে অর্থাৎ চৌধুরি চরণ সিংয়ের জন্মদিনটিকে কৃষক দিবস বা কিষাণ দিবস হিসেবে পালনের কথা ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী সময় থেকে আজকের দিনটিকে কৃষক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে দেশে। প্রত্যেকটা দিনই কৃষকরা কাজ করেন। মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার তাগিদে দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করে থাকেন কৃষকরা। রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান। এক্ষেত্রে সবজি বা ফসল তাঁদের কাছে নিজের সন্তানের মতো। এবিষয়ে আরও বলা হয়েছে,ইন্ডিয়ান ডিশ থেকে ওয়েস্টার্ন বা কনটিনেন্টাল, আমরা যা-ই খেয়ে থাকি না কেন, তার মূল ভিত হল আমাদের কৃষকরা। এ জন্যই আমরা ভালো–মন্দ খেতে পারি।

 

 

আমাদের অন্নের জোগাড় করার লক্ষ্যেই অনেক সময় তাঁদের দু’‌মুঠো ভাতও খাওয়া হয় না। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটে কারো কারো। তবুও তাঁরা নিরন্তর পরিশ্রম করেন। সামান্য অর্থের বিনিময়ে যাঁরা আমাদের এত বড়, সব চেয়ে মূল্যবান পরিষেবা দিয়ে থাকেন, তাঁদের অনেক সময়েই অবহেলায় থাকতে হয়। কৃষক বা চাষির ঘরের ছেলে-মেয়েরা আর পাঁচটা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল পরিবারের মতো বড় হয় না। কোনো রকমে দিন গুজরান করে চলে যায়। কিন্তু তাদের জন্যই আমর পেট ভোরে খেতে পাই। আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্তি হয়।

 

 

কৃষকরা দেশের মেরুদণ্ড,একথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তাঁরা না ফসল ফলালে দেশ এই পর্যায়ে এসে পৌঁছাতো না। স্বল্প অর্থের বিনিময়ে তাঁরা পরিষেবা দিয়ে থাকেন। অনেক সময়েই তাঁদের অবহেলার মধ্যে থাকতে হয়।কৃষিকে ভারতের প্রাথমিক পেশা, আমাদের দেশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। তবে এখনও এটি সবচেয়ে অবমূল্যায়ন পেশা হিসাবে বিবেচিত হয়। যে কোনও দেশের জন্য, কৃষি কেবলমাত্র বাক্যে নয়, বাস্তবেও তার মেরুদণ্ড।যে কৃষকরা আমাদের মুখে অন্ন তুলে দিয়ে জীবনধারণে সহায়তা করে থাকেন, এই দিনটিতে সমগ্র জাতি তাদের প্রতি প্রাণ দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।  সেই কৃষকদের আজ ধন্যবাদজ্ঞাপন করার দিন। এইধরনের অনুষ্ঠানগুলি আয়োজনের মাধ্যমে সময় ও বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে কৃষিজমি ও কৃষিজাত পণ্যের গুণগত মান ও উৎপাদন বৃদ্ধির নানা উপায়গুলি কৃষকদের জানানো হয়। পাশাপাশি তাঁদের প্রাপ্য অধিকার ও সুবিধাগুলি সম্পর্কে তাঁদের সচেতন করে তোলার প্রয়াস করা হয়। অপরদিকে কৃষকদের অবদান এবং অবস্থান বিষয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলা এই অনুষ্ঠানগুলি উদযাপনের অন্যতম লক্ষ্য। ভবিষ্যতে সমগ্র দেশের কৃষকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেই এই দিনটি উদযাপন সার্থক হয়ে উঠতে পারে।  এই কারণেই প্রতিবছর ২৩ শে ডিসেম্বর সারাদেশে কৃষক দিবস অত্যন্ত উদ্দীপনার সাথে পালন করা হয়।  দিনটি গোটা দেশে পালিত হয়ে থাকে জাতীয় কৃষক দিবস হিসাবে।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৩ ডিসেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২৩ ডিসেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) জাতীয় কিষাণ দিবস (ভারত)

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৭ – রুন রুন শাও, চীনা বংশোদ্ভূত হংকং ব্যবসায়ী, মানবপ্রেমিক ও শাও ব্রাদার্স স্টুডিও এর প্রতিষ্ঠিাতা।

১৯১২ – অ্যালান টুরিং, ইংরেজ গণিতবিদ, যুক্তিবিদ ও ক্রিপ্টোবিশেষজ্ঞ।

১৯১৬ – লেন হাটন, ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৯২০ – সাহেবজাদা ইয়াকুব খান, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর।

১৯২২ – ম্যানুয়েল ফ্রাগা ইরিবারনে, স্প্যানিশ রাজনীতিবিদ।

 

১৯২৫ – সাবেক প্রধানন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান।

১৯২৫ – পিয়ের‌ বেরেগোভোয়া, ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী।

১৯৩০ – আলতাফ মাহমুদ, বাংলাদেশী সুরকার, সাংস্কৃতিক কর্মী ও স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৩৩ – সম্রাট আকিহিতো, জাপানের সম্রাট।

১৯৩৫ – ভ্লাদিস্লাভ ভোল্কভ, রাশিয়ান প্রকৌশলী ও মহাকাশচারী।

১৯৩৭ – মারটি্ আহটিসারি, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফিনিশ রাজনীতিবিদ ও ফিনল্যান্ড এর ১০তম প্রেসিডেন্ট।

১৯৪০ – মাইক শ্রিম্পটন, নিউজিল্যান্ডীয় সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ।

১৯৪১ – ফ্রাঙ্কো নিরো, ইতালিয়ান অভিনেতা ও প্রযোজক।

 

১৯৪৩ – এলিজাবেথ হার্টম্যান, মার্কিন মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

১৯৫২ – মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশী লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ।

১৯৫৫ – লুডোভিকো ইনাউডি, ইতালিয়ান পিয়ানোবাদক ও সুরকার।

১৯৫৭ – ডেভিড লড হটন, জিম্বাবুয়ে সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ।

১৯৬৪ – জস্ ওহেডন, আমেরিকান পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৬৬ – ভিনসেন্ট ক্যাসেল, ফরাসি অভিনেতা ও প্রযোজক।

 

১৯৭৬ – প্যাট্রিক ভিয়েরা, ফরাসি ফুটবলার ও ম্যানেজার।

১৯৮০ – ফ্রান্সেসকা সচিয়ানোনে, ইতালীয় টেনিস খেলোয়াড়।

১৯৮০ – জেসিকা টেলর, ইংরেজ মডেল ও গায়িকা।

১৯৮৪ – ডুফি, তিনি ওয়েলশ গায়িকা, গীতিকার ও অভিনেত্রী।

১৯৯১ – আহমেদ শেহজাদ, পাকিস্তানি ক্রিকেটার।

১৮০৪ – ফ্রাংক্লিন পিয়ের্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্দশ রাষ্ট্রপতি।

১৮২৪ – কার্ল রেইনেকে, জার্মান পিয়ানোবাদক ও সুরকার।

১৮৩৭ – ইয়োহানেস ডিডেরিক ফান ডার ভাল্স, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ডাচ পদার্থবিদ ও তাপগতিবিদ্যা বিশারদ।

 

১৮৪৫ – ভারতীয় রাজনীতিবিদ,আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং লোকহিতৈষী রাসবিহারী ঘোষ।

 

১৮৬০ – ইয়ালমার ব্রান্তিং, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইডিশ সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও ১৬ তম প্রধানমন্ত্রী।

১৮৮৯ – আনা আখমাতোভা, ইউক্রেনীয় রাশিয়ান কবি ও লেখক।

 

১৮৯৪ – অষ্টম এডওয়ার্ড, যুক্তরাজ্য রাজা।

১৭৬০ – ফ্রাঞ্চইস-নয়েল বাবেউফ, ফরাসি সাংবাদিক ও সমাজ কর্মী।

 

১৭৬৩ – জোসেফিন, ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপোর্টের স্ত্রী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯১৪ – যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী মেক্সিকো থেকে সরে আসে।

১৯১৬ – প্রথম কার্ল অস্ট্রিয়ার সিংহাসন আরোহণ করেন।

১৯১৮ – বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৯১৯ – দিল্লীতে প্রথম নিখিল ভারত খিলাফত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

১৯২১ – বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ( আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন) স্থাপিত হয়।

১৯২২ – রাজদ্রোহের অভিযোগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম গ্রেফতার হন এবং সরকার কর্তৃক তার বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

১৯২৬ – নাট্যকার শিশিরকুমার ভাদুড়ী নাট্যমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৩৪ – সাত সপ্তাহ সীমান্ত যুদ্ধের পর সৌদি আরব ও পরাজিত ইয়েমেনের মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৩৬ – লাইফ ম্যাগাজিনের প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়।

১৯৩৯ – ফ্রান্স, সিরিয়ার ইসকেনদেরুন বন্দরকে তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দেওয়া হয়।

১৯৪১ – সোভিয়েত লাল ফৌজ জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে।

১৯৪৯ – হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল থেকে ১২ নারী গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেন।

১৯৪৯ – মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৫০ – সুইস পার্লামেন্ট নারীর ভোটাধিকার প্রয়োগের বিরুদ্ধে ভোট দেয়।

১৯৬৪ – ব্রিটেনে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিক বেতার কেন্দ্র চালু হয়।

১৯৭৮ – অতীশ দীপঙ্করের দেহভস্ম চীন থেকে ঢাকায় আনা হয়।

১৯৮৫ – টরেন্টো থেকে বোম্বে যাবার পথে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৪৭ আটলান্টিক সাগরে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় ৩২৯ যাত্রীর সবাই নিহত হয়।

১৯৮৯ – ১৪ বছর গৃহযুদ্ধের পর আঙ্গোলায় যুদ্ধ বিরতি হয়।

১৯৯৪ – ২০ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা পুনরায় জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।

১৯৯৫ – বসনিয়া শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৯৬ – শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে।

১৯৯৮ – পৃথিবীর ১১তম ও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সেতু উদ্বোধন করা হয়।

১৮৬০ – উমেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘মনোহর’ প্রকাশিত হয়।

১৮৭৩ – ফরাসী সেনারা ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় দখল করে নেয়।

১৮৯০ – নেদারল্যান্ড থেকে লুক্সেমবার্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

১৭২৪ – রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১৭৪৪ – ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কার্টারেট পদত্যাগ করেন।

১৭৮৩ – অ্যানাপোলিস মেরিল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী হয়।

১৫৩৬ – জেনেভায় ফ্রান্সের প্রোটেস্টেন্ট ধর্মতত্ত্ব বিশারদ জন কেলভিন সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন।

০৯৩০ – পৃথিবীর প্রাচীনতম সংসদ আইনল্যান্ড সংসদ যাত্রা শুরু করে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০৪ – পি ভি নরসিমা রাও, ভারতের নবম প্রধানমন্ত্রী।

২০০৬ – ফিলিপ নইরেট, ফরাসি অভিনেতা।

২০১০ – ইংরিড পিট, পোলিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ অভিনেত্রী ও লেখক।

২০১১ – আব্দুর রাজ্জাক (রাজনীতিবিদ), বাংলাদেশের প্রখ্যাত ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী।

২০১৩ – একে-৪৭-এর উদ্ভাবক মিখাইল কালাশনিকভ।

২০১৩ – রিচার্ড মাথেসন, আমেরিকান লেখক ও চিত্রনাট্যকার।

 

২০১৪ – ডরোথি চেনি, আমেরিকান টেনিস খেলোয়াড়।

১৯৫৯ – বরিস ভিয়ান, ফরাসি লেখক, কবি ও নাট্যকার।

১৯৭০ – তুন ইউসুফ বিন ইসহাক, সিঙ্গাপুরের সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও ১ম রাষ্ট্রপতি।

 

১৯৭৬ – ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখক আন্দ্রে মালরো।

১৯৯০ – রুয়াল দাল, ওয়েল্সীয় সাহিত্যিক।

১৯৯৫ – লুই মালে, ফরাসি বংশোদ্ভূত আমেরিকান পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৯৬ – আন্দ্রিয়াস পাপান্ডরেওউ, গ্রিক অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ ও ১৭৪ তম প্রধানমন্ত্রী।

১৯৯৬ – রেমন্ড রাসেল লিন্ডওয়াল, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ও রাগবি খেলোয়াড়।

১৮০৬ – মাথুরিন জ্যাকে জাকুইয়েস বরিসন, ফরাসি প্রাণিবিজ্ঞানী ও দার্শনিক।

 

১৮৩৪ – টমাস ম্যালথাস, ইংরেজ অর্থনীতিবিদ ও জনমিতিবিদ।

১৮৩৬ – জেমস মিল, স্কটিশ ইতিহাসবেত্তা, অর্থনীতিবিদ, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক ও দার্শনিক।

 

১৮৯১ – উইলহেম এডুয়ার্ড ওয়েবার, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ।

১৬৮২ – ক্লাউডে লরাইন, ফরাসি বংশোদ্ভূত ইতালীয় চিত্রশিল্পী ও খোদকার।

 

১৫১১ – মাহমুদ শাহ্, গুজরাটের শাসক ৫২ বছর শাসনের পর

১৫৭২ – ব্রনযিনো, ইতালীয় চিত্রশিল্পী ও কবি।

১৪৫৭ – লাডিস্লাউস পুস্থুমউস, হাঙ্গেরিয়ান রাজা

১৩১৮ – ইয়োরিইয়ুকি, জাপানের গণিতবিদ

০০৭৯ – ভেস্পাসিয়ান, রোমান সম্রাট

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে ভারতীয় রাজনীতিবিদ,আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং লোকহিতৈষী রাসবিহারী ঘোষ।

স্যার রাসবিহারী ঘোষ ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সমাজকর্মী এবং সমাজসেবী।  স্যার রাসবিহারী ঘোষ খন্ডঘোষ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  পরে তোরকোনা গ্রামে মামার বাড়িতে প্রাথমিক জীবন শুরু করেন।

 

রাসবিহারী ঘোষ ১৮৪৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলার প্রেসিডেন্সির পূর্ব বর্ধমান জেলার খন্ডঘোষ এলাকার তোরকোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি ১৮৬০ সালে বাঁকুড়া হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন, তারপর ১৮৬৫ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন।  ১৮৬৬ সালে তিনি এমএ পরীক্ষায় ইংরেজিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।  ১৮৬৭ সালে তিনি স্বর্ণপদক পেয়ে আইন পাস করেন এবং বহরমপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন।  তিনি ১৮৭১ সালে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৮৮৪ সালে আইনের ডক্টর ডিগ্রি লাভ করেন।

 

রাসবিহারী ঘোষ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হন।  তিনি প্রগতিতে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন কিন্তু যে কোনো ধরনের প্রগতিবাদের বিরোধিতাও করতেন।  তিনি ১৯০৭ সালে সুরাটে এবং ১৯০৮ সালে মাদ্রাজে দুইবার অনুষ্ঠিত কংগ্রেস অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
তিনি তার ওকালতি কর্মজীবনে দেশ ও সমাজের জন্য উদারভাবে দান করেছেন।  তিনি ১৮৯৪ সালে তোরকোনা জগবন্ধু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৩ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য দশ লক্ষ টাকা দান করেন।  তিনি যাদবপুরে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন (NCE) প্রতিষ্ঠার জন্য ১৩ লক্ষ টাকা দান করেছিলেন।  পরে এটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।  রাসবিহারী ঘোষ (NCE)র ছিলেন প্রথম সভাপতি।

 

২০১০ সালে, খন্ডঘোষ যৌথ উন্নয়ন ব্লকের উখরিদ গ্রামে স্যার রাসবিহারী ঘোষ মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  তিনি তার গ্রামে স্কুল ও হাসপাতালও প্রতিষ্ঠা করেন।
ভারতে রাসবিহারী ঘোষের অবদানের কথা বিবেচনা করে, তাঁর সম্মানে কলকাতার একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল।  তার নামানুসারে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, যা কালীঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে শুরু হয়ে বালিগঞ্জ এবং গড়িয়াহাট পর্যন্ত পূর্ব দিকে চলে।

 

২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ সালে তিনি প্রয়াত হন।

 

।।তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ঘুরে আসুন জম্মু ও কাশ্মীরের এক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান সোনমার্গ।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।। তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে  রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়।  আসুন ঘুরে আসি ভারতের ই জম্মু ও কাশ্মীরের এক গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান সোনমার্গ  ।

 

সোনমার্গ বা সোনামার্গ যার জন্য দাঁড়ায় সোনার তৃণভূমি জম্মু ও কাশ্মীরের গান্দেরবাল জেলায় অবস্থিত একটি হিল স্টেশন। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিস্ময়কর। এখানে, আপনি প্রকৃতির বিস্ময় অন্বেষণ করতে পাবেন। চমত্কার কনিফার গাছগুলি পুরো পর্বতকে উজ্জ্বল করে তোলে। তুষার যা পাহাড়ের সুন্দর বাদামী রঙকে ঢেকে দেয় তা আশ্চর্যজনকভাবে অন্বেষণ, লালন এবং অভিজ্ঞতার জন্য মনোরম দৃশ্য তৈরি করে।

 

শ্রীনগর থেকে ৮২ কিমি উত্তর-পূর্বে অবস্থিত কাশ্মীর এর আর এক স্বর্গ সোনমার্গ। এপ্রিল মে মাসে সোনমার্গ তার রূপের ডালি উজাড় করে দেয় পর্যটকদের কাছে। শ্রীনগর থেকে সোনমার্গ যেতে পথে পড়বে গান্দেরবল, কঙ্গন, গুন্দ প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাহাড়ি জনপদ। আর পুরো পথটাই সাথে থাকবে দামাল সিন্ধুনদ। পাইন, ফার, বার্চ আর দূর দুরান্তের পাহাড়শ্রেণীর শোভা দেখতে দেখতে আপনি মোহিত হয়ে পড়বেন। চারপাশে পাহাড় আর সোনালি ঘাসে ঢাকা সোনমার্গ নিয়ে জনশ্রুতি রয়েছে যে এই উপত্যকার কোথাও এক কুপ আছে জার জলে সোনালি রঙ ধরে উপত্যকায়। এই জন্য নাম সোনমার্গ অর্থাত্‍ সোনালী উপত্যকা। সোনমার্গ থেকে পায়ে পায়ে বা ঘোড়ায় চেপে পৌঁছে যাওয়া যায় খাজিয়ার হিমবাহের কোলে। শীতের সময় এখানে বরফ নিয়ে মেতে ওঠে সবাই।

 

সোনমার্গ এর দর্শনীয় স্থানসমূহ–

 

সোনমার্গ অন্যতম কাশ্মীরে দেখার জন্য সেরা জায়গা. সোনমার্গের কাছে আপনি যে পর্যটন স্থানগুলি ঘুরে দেখতে পারেন তার তালিকা এখানে রয়েছে।

১. থাজিওয়াস হিমবাহ

সোনমার্গ যার অর্থ ‘সোনার তৃণভূমি’ অনায়াসে তার আকর্ষণ বহন করে। তুষারে পূর্ণ হওয়ায়, এই হিমবাহটি ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি জম্মু ও কাশ্মীর. শহর থেকে 3 কিমি দূরে অবস্থিত এবং আনুমানিক 9,186 ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, এই স্থানটি তার মনোরম কাশ্মীর উপত্যকা সহ তুষার এর কবজ দেখার জন্য বেশ মনোরম।

২. জোজি-লা-পাস

এই সুন্দর পাসটিই কাশ্মীর উপত্যকাকে একত্রিত করে লাদাখ. জোজি-লা পাস সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 3,528 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এই জায়গাটি অভিজ্ঞতার জন্য অবিশ্বাস্য এবং আপনার প্রিয়জনদের সাথে লালন-পালন করে।

৩. বিষনসার লেক

সোনমার্গের একটু বাইরে অবস্থিত, এই হ্রদের ফিরোজা নীল জল রূপালী পাহাড়ের সাথে একটি সবুজ তৃণভূমি দ্বারা বেষ্টিত। এই পর্বতগুলি একটি উত্তেজনাপূর্ণ দূরত্বে অবস্থিত। আপনার প্রিয়জনের সাথে কিছু আশ্চর্যজনক স্মৃতি উপভোগ করার ক্ষেত্রে এটি বেশ দুর্দান্ত জায়গা।

৪. হোয়াইট রিভার রাফটিং

এটা কোনো অ্যাডভেঞ্চার রাইডের চেয়ে কম নয়। এই রাইডটি আপনাকে একটি অ্যাড্রেনালিন রাশ দিতে যথেষ্ট চিত্তাকর্ষক। এবং এই কার্যকলাপ সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ কি পছন্দ করে. আপনি একটি দীর্ঘ র‌্যাফটিং অভিযানে যাওয়ার কথাও বিবেচনা করতে পারেন যা শুরু হয় বালতাল এবং সোনমার্গে অবস্থিত শুটকারি ব্রিজে শেষ হয়।

৫. নীলাগ্রাদ নদী

এটি তার নিরাময় ক্ষমতার জন্য পরিচিত এবং এই কারণেই এটি অত্যন্ত সম্মানিত। প্রতি রবিবার প্রচুর স্থানীয় মানুষ এখানে আসেন শুধু এর পবিত্র জলে স্নান করতে।

৬. কৃষ্ণসার লেক

কৃষ্ণসার হ্রদটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 3,801 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এখানকার মনোরম দৃশ্য মুগ্ধ করে। ঘন আলপাইন দ্বারা বেষ্টিত, এই জায়গাটি একটি খুব শীতল এবং মনোরম পরিবেশ রয়েছে। লোকেরা মাছ ধরার জন্য এবং দুঃসাহসিক জলের ক্রিয়াকলাপ উপভোগ করার জন্য প্রায়শই এই জায়গায় আসে।

 

ভ্রমণের উপযুক্ত সময়—

সোনমার্গ ভ্রমনের উপযুক্ত সময় মার্চ – নভেম্বর। এটি সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় রূপ নেয় এপ্রিল-মে মাসে। তবে যারা স্নোফল দেখতে কাশ্মীর যেতে চান তাদের জন্যে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি উত্তম। কারন এ সময়টায় কাশ্মীরে সব থেকে বেশী স্নোফল পাবার সম্ভাবনা থাকে। এই সময়ে, সার্বিক তাপমাত্রা দর্শনীয় কার্যকলাপের জন্য বেশ মনোরম।

 

সোনমার্গ কিভাবে যাবেন—-

যদি অফবীট জায়গা গুলো আপনার ভ্রমণ লিস্টে না থাকে তাহলে শ্রীনগর থেকে দিনে দিনে সেরে নিতে পারেন সোনমার্গ ভ্রমণ। তবে পথের শোভা উপভোগ করতে হলে এ পথে নিজস্ব গাড়ি ভাড়া করে আসাই ভালো। মারুতি ওমনি ভাড়া পাওয়া যায়। টাটা সুমোও রয়েছ কারগিলগামী শেয়ার সুমোও যাচ্ছে এ পথে।

 

কোথায় থাকবেন—

সোনমার্গে থাকবার সেরা জায়গা জম্মু কাশ্মীর পর্যটনের ট্যুরিস্ট হাটে, এছাড়া হোটেল রয়্যাল, হোটেল স্নো ল্যান্ড, হোটেল পিকস, রয়েছে।

 

সোনমার্গের ইতিহাস—-

 

ঐতিহাসিক লেন্স থেকে দেখলে, আমরা জানতে পারি যে প্রাচীন কাল থেকেই সোনামার্গ ভারতীয় ইতিহাসের বর্ণনায় একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছে, কারণ এটি সিল্ক রোডের প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত ছিল যা কাশ্মীর ভূমিকে সংযুক্ত করেছিল। গিলগিট হয়ে চীন ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশ।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার সাথে সাথে সোনমার্গ, যা তখন কাশ্মীরের একটি স্থানীয় শহর ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। আজ, এই জায়গাটি অমরনাথ মন্দির এবং লাদাখ অঞ্চলের মতো কাছাকাছি অবস্থিত পর্যটন এলাকার জন্য বেস ক্যাম্প হিসাবে পরিচিত।

 

 

 

।।তথ্য: সংগৃহীত ইন্টারনেট ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

 

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২২ ডিসেম্বর, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ২২ ডিসেম্বর। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক)  সশস্র বাহিনী দিবস ভিয়েতনাম

(খ) মা দিবস ইন্দোনেশিয়া

(গ) জাতীয় গণিত দিবস, ভারত

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯৪৮ – মেরি আর্চার, ব্রিটিশ বিজ্ঞানী।

 

১৯৮৩ – জেনিফার হকিংস, মিস ইউনিভার্স ২০০৪।

 

১৮৫৩ – সারদা দেবী, ঊনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু ধর্মগুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসের পত্নী ও সাধনসঙ্গিনী এবং রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সংঘজননী।

 

১৮৫৭ – বাঙালি চিকিৎসক, স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং লেখক সুন্দরীমোহন দাস।

 

১৮৮৭ – শ্রীনিবাস রামানুজন, প্রতিভাবান ভারতীয় গণিতবিদ।

 

১১৭৮ – জাপানের সম্রাট আনটুকু।

 

১৮০৪ – বেঞ্জামিন ডিজরেলি।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯৩৭ – চালু হয় লিংকন টানেল।

১৯৩৯ – জার্মানিতে ট্রেন দুর্ঘটনায় ১২৫ জনের মৃত্যু হয়।

১৯৪২ – কলকাতায় জার্মানিদের বিমান আক্রমণ।

১৯৪৪ – ভিয়েতনাম পিপলস পার্টি প্রতিষ্ঠিত।

১৯৫৬ – ফ্রান্স এবং বৃটেন, মিশরের পোর্ট সাঈদ বন্দর থেকে তাদের ৫০ দিনের দখলদারিত্বের পরিসমাপ্তি ঘটায় এবং তাদের সেনাদেরকে মিশর থেকে সরিয়ে নেয়।

১৯৫৮ – দ্য গোল্লে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

১৯৬৫ – বেলজিয়াম সরকার ছয়টি কয়লাখনি বন্ধ করে দেয়।

১৯৭১ – কুর্ট ওয়াল্ডহেইম জাতিসংঘের মহাসচিব নির্বাচিত।

১৯৭১ – বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৭১ – বাংলাদেশের মন্ত্রী পরিষদ মুজিবনগর থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত। প্রধানমন্ত্রী হন তাজউদ্দিন আহমদ।

১৯৭২ – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।

১৯৮৬ – সিলেটের হরিপুরে তেল খনি আবিষ্কার।

১৯৮৮ – স্কটল্যান্ডের লকারবিতে প্যান আমেরিকান জাম্বো জেট বিমান বিধ্বস্ত। ২৫৯ জন নিহত।

১৯৮৯ – রুমানিয়ার রাষ্ট্রপতি চসেস্কু ক্ষমতাচ্যুত হন।

১৯৯৩ – দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণ বৈষম্য বিলোপ করে নতুন সংবিধান অনুমোদন।

১৯৯৫ – ইসরাইলি বাহিনীর বেথলেহেম ত্যাগ। প্যালেস্টাইনি শাসন কায়েম।

১৮১০ – ইংলিশ ফ্রিগেড মিনোটর ডুবে যায়।

১৮৫১ – ভারতে প্রথম মালবাহী ট্রেন চালু হয়।

১৮৬৯ – মহারানী ভিক্টোরিয়ার দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স আলফ্রেডের কলকাতায় আগমন।

১৭১৬ – ইংল্যান্ডে প্রথম মুকাভিনয় অনুষ্ঠিত।

১৬৯৩ – ইতালির দক্ষিণে অবস্থিত সিসিলা দ্বীপে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৫৮ – তারকনাথ দাস, বাঙালি, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুদ্ধিজীবী।

 

১৯৬৫ – পল্লীগীতি ও নজরুলগীতির খ্যাতিমান গায়ক গিরীন চক্রবর্তী।

 

১৯৮৬ – কথাশিল্পী সরদার জয়েন উদ্দীন।

 

১৯৮৭ – চীনের দাবা মাস্টার সিয়ে সিয়াসুয়েন।

 

১৯৮৯ – নোবেলজয়ী [১৯৬৯] আইরিশ সাহিত্যিক স্যামুয়েল বেকিট।

 

১৯৯১ – মির্জা নূরুল হুদা, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর।

 

১৯৯২ – চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের ফিল্ড মার্শাল গণেশ ঘোষ।

 

১৯৯৫ – কমিউনিস্ট নেতা আবদুল হক।

১৮৮০ – ইংরেজ ঔপন্যাসিক,সাংবাদিক, অনুবাদক জর্জ ইলিয়ট।

 

১৭৯৭ – রাজা নবকৃষ্ণ দেব,কলকাতার শোভাবাজার রাজ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা ও কলকাতায় প্রথম দুর্গাপূজার সূচনাকারী।

১৬৬৬ – ইতালিয় চিত্রশিল্পী গুয়েরচিনো।

 

১৬৬৮ – ইংরেজ চিত্রকর স্টিফেন।

১৫৭২ – ফরাসি চিত্রশিল্পী ফ্রাঁসোয়া কো।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

জন্মদিবসে স্মরণে, বাঙালি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুদ্ধিজীবী তারকনাথ দাস।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল বহু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। হিন্দু মুসলিম সকল শ্রেণীর মানুষ এই মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন। আর তাঁদের সেই বলিদনের ইতিহাসে অনেকের কথাই অজানা। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে  তারকনাথ দাস প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। তারকনাথ দাস ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। তারকনাথ দাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম বিপ্লবী নেতা এবং একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুদ্ধিজীবী। তারকনাথ দাসের প্রধান অবদান প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্রের প্রস্থাপনা।

 

তারাকানাথ দাস ১৮৮৪ সালের ১৫ জুন চব্বিশ পরগনার মাঝিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতার নাম কালীমোহন দাস।  স্কুল ছাত্র থাকাকালীনই তিনি রাজনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন।  ১৯০১ সালে, কলকাতার আর্য মিশন ইনস্টিটিউশন থেকে প্রবেশিকা পাশ করার পর, তিনি কিছুকাল কলেজে অধ্যয়ন করেন।  ছাত্র অবস্থায় উত্তর ভারতে বিপ্লবী রাজনীতির প্রচার করতে গিয়ে পুলিশের নজরে আসেন তিনি।

 

গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি ১৯০৫ সালে জাপান এবং পরের বছর আমেরিকা চলে যান।  আমেরিকার ফ্রি হিন্দুস্তান পত্রিকার মাধ্যমে প্রবাসী ভারতীয় বিপ্লবী ও গদর পার্টির কর্মীরা যোগাযোগের চেষ্টা করেন।  ১৯১১ সালে তিনি ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন এবং কাজে যোগ দেন এবং ১৯১৬ সালে তিনি বার্লিন কমিটির প্রতিনিধি হিসেবে চীন ভ্রমণ করেন।  আমেরিকায় ভারতীয় বিপ্লবী কার্যকলাপের জন্য তিনি ২২ মাস কারাবরণ করেন।  বিপ্লবী কাজের পাশাপাশি পড়াশোনা করেছেন।  ১৯২৪ সালে, তিনি তার পিএইচ.ডি.  জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক আইন’ বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন।

 

তারকানাথ দাস পিএইচডি করার পর নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন১৯২৪ সালে। বিবাহ করেন আমেরিকান মহিলা মেরি কিটিং মোর্স কে।  যাইহোক, ১৯২৫-৩৪ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপে থাকার সময়, তিনি ভারতীয় ছাত্রদের বিজ্ঞানে উচ্চ শিক্ষার সুবিধা দেওয়ার জন্য নিজের প্রচেষ্টায় ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট তৈরি করেছিলেন।  আর এই উদ্দেশ্যেই তারাকানাথ দাস ফাউন্ডেশনের অস্তিত্ব।  ফাউন্ডেশনটি ১৯৩৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত হয়েছিল। ১৯৫০ সালে, কলকাতায় একটি শাখা রেজিস্ট্রিও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

 

রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের মডার্ন রিভিউতে প্রবন্ধ লিখতেন।  ১৯৩৫ সালে ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটিতে দেওয়া ‘ফরেন পলিসি ইন ফার ইস্ট’ বিষয়ক একটি বক্তৃতা একটি সাড়া জাগিয়েছিল, যা পরে একটি বইতে প্রকাশিত হয়েছিল।  তার কাজের মধ্যে রয়েছে——

 

তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে——

ইন্ডিয়া ইন ওয়ার্ল্ড পলিটিকস ও বাংলায়

বিশ্ব রাজনীতির কথা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

১৯৫৮ সালে ২২ ডিসেম্বর তিনি নিউইয়র্কে মারা যান।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This