ভারতীয় বাঙালি লেখক এবং বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ এর জন্ম ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯০৯ বিহারের হাজারীবাগে। আদি নিবাস বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের বহর গ্রামে। তিনি হাজারীবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজের ছাত্র ছিলেন। প্রখ্যাত দার্শনিক ও গবেষক মহেশ ঘোষের গ্রন্থাগারে অধ্যয়ন করতেন। প্রত্নতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব এমনকি সামরিক বিদ্যায় তার যথেষ্ট দক্ষতা ছিল।
তিনি বিহারের আদিবাসী এলাকায় বাস কন্ডাক্টর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি তার জীবনের বেশিরভাগ সময় সার্কাস ক্লাউন, বোম্বে পৌরসভায় চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি, চা ব্যবসা, বেকারি ব্যবসা, মালগুদামে স্টোর কিপার ইত্যাদিতে কাটিয়েছেন। তিরিশের দশকের শেষের দিকে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার সাপ্তাহিক বিভাগে সহকারী হন। সংবাদপত্র 16 আগস্ট, 1946 সালে, তিনি গান্ধীজির সাথে উত্তর দাঙ্গা-বিধ্বস্ত নোয়াখালীতে যান এবং দাঙ্গা এবং দাঙ্গা-পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করেন। অনামি সংঘ (বা চক্র) নামক তরুণ লেখকদের একটি সভায় বন্ধুদের অনুরোধে সুবোধ ঘোষ পরপর দুটি গল্প লিখেছিলেন, অযান্ত্রিক এবং ফসিল, যা বাংলা সাহিত্যে এক অসাধারণ আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল।
তার লেখালেখির কালপর্ব ১৯৪০ থেকে ১৯৮০। বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে একটু বেশি বয়সে যোগদান করেও নিজস্ব মেধা মনন চিন্তা চেতনা আর লব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে সুবোধ ঘোষ তার অসাধারণ রচনা সম্ভাবের মাধ্যমে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হন। বিশেষ করে তার ‘অযান্ত্রিক’ এবং ‘ফসিল’-এর মত বাংলা সাহিত্যের যুগান্তকারী গল্প।
সাহিত্য কর্ম——
প্রথম গল্প ‘অযান্ত্রিক’, এরপর ‘ফসিল’। তার আর একটি বিখ্যাত গল্প ‘থির বিজুরি’। এছাড়াও, জতুগৃহ, ভারত প্রেমকথা (মহাভারতের গল্প অবলম্বনে রচিত),। সুবোধ ঘোষের প্রথম উপন্যাস হল তিলাঞ্জলি। গঙ্গোত্রী, ত্রিযামা, ভালোবাসার গল্প, শতকিয়া প্রমূখ।
চলচ্চিত্রায়ণ——–
অযান্ত্রিক (ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত, ১৯৫৮) জতুগৃহ (১৯৬৪)।
সম্মাননা—–
আনন্দ পুরস্কার , শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে সুজাতা চলচ্চিত্রের জন্য – ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (১৯৫৯), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক।
১০ মার্চ ১৯৮০ সালে তিনি প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।