Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

জ্যোতিষ বিরোধী দিবস: কুসংস্কারের সাগরে যুক্তির আলোকবর্তিকা

 

জ্যোতিষশাস্ত্র, মহাকাশীয় বস্তুর অবস্থানের মাধ্যমে মানব বিষয়াবলী এবং প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির ভবিষ্যদ্বাণী করার প্রাচীন অনুশীলন, বহু শতাব্দী ধরে কুসংস্কারের মূল ভিত্তি। এর দাবির সমর্থনে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব সত্ত্বেও, জ্যোতিষশাস্ত্র ব্যাপকভাবে চর্চা এবং বিশ্বাস করা অব্যাহত রয়েছে, প্রায়ই ক্ষতিকারক পরিণতি সহ। এই ব্যাপক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, ইন্ডিয়ান সায়েন্স অ্যান্ড রিজনিং সোসাইটি (ISRS) জ্যোতিষ বিরোধী দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

জ্যোতিষ বিরোধী দিবসের ইতিহাস

জ্যোতিষ বিরোধী দিবসের শিকড় রয়েছে ভারতে যুক্তিবাদী আন্দোলনে, যেটি 19 শতক থেকে সক্রিয়ভাবে বিজ্ঞান, যুক্তি এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনাকে প্রচার করছে। ISRS, এই আন্দোলনের একটি বিশিষ্ট সংগঠন, জ্যোতিষশাস্ত্র সহ কুসংস্কার এবং ছদ্মবিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য সামনের সারিতে রয়েছে৷ দিনটি 20শে আগস্ট পালন করা হয়, যা একজন বিখ্যাত ভারতীয় যুক্তিবাদী এবং কুসংস্কার বিরোধী কর্মী নরেন্দ্র দাভোলকরের মৃত্যুবার্ষিকীকে চিহ্নিত করে।

জ্যোতিষ বিরোধী দিবসের উদ্দেশ্য

জ্যোতিষশাস্ত্র বিরোধী দিবসের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল জ্যোতিষশাস্ত্রের বৈজ্ঞানিক ভিত্তির অভাব এবং এর ক্ষতিকর পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। দিবসটির উদ্দেশ্য হল:

1. জ্যোতিষশাস্ত্রের বিশ্বাস এবং অনুশীলনগুলি নিয়ে প্রশ্ন করতে লোকেদের উত্সাহিত করুন৷
2. বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতা এবং সমালোচনামূলক চিন্তার প্রচার করুন।
3. জ্যোতিষ সংক্রান্ত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করুন যা বৈষম্য, সহিংসতা এবং ব্যক্তি ও সমাজের ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে।
4. যুক্তি এবং প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সংস্কৃতি গড়ে তুলুন।

জ্যোতিষ বিরোধী দিবসের গুরুত্ব

জ্যোতিষ বিরোধী দিবস আজকের সমাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে জ্যোতিষশাস্ত্র ব্যাপকভাবে চর্চা ও বিশ্বাস করা হচ্ছে। দিনটি একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে যে:

1. জ্যোতিষশাস্ত্রের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই এবং এটি পরীক্ষামূলক প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত নয়।
2. জ্যোতিষশাস্ত্রীয় বিশ্বাস ক্ষতিকারক অনুশীলনের দিকে পরিচালিত করতে পারে, যেমন তাদের জন্মের চিহ্ন বা গ্রহের অবস্থানের ভিত্তিতে ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্য।
3. জ্যোতিষশাস্ত্র সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানকে নিরুৎসাহিত করে অগ্রগতি এবং বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

জ্যোতিষ বিরোধী দিবস উদযাপন

জ্যোতিষ বিরোধী দিবস বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে পালিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:

1. জ্যোতিষশাস্ত্রের বৈজ্ঞানিক ত্রুটিগুলির উপর পাবলিক বক্তৃতা এবং আলোচনা।
2. বৈজ্ঞানিক বিষয়ের উপর বিতর্ক এবং কুইজ।
3. জ্যোতিষ সংক্রান্ত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও সমাবেশ।
4. সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং বৈজ্ঞানিক সাক্ষরতার প্রচারকারী সাহিত্য এবং উপকরণ বিতরণ।

উপসংহার

জ্যোতিষ বিরোধী দিবস হল একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ যার লক্ষ্য হল গভীরভাবে কুসংস্কারে নিমগ্ন সমাজে যুক্তি, বিজ্ঞান এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনাকে উন্নীত করা। এই দিনটি পালন করে, আমরা এমন একটি সমাজ তৈরি করতে পারি যা প্রমাণ-ভিত্তিক বিশ্বাস এবং অনুশীলনকে মূল্য দেয় এবং ক্ষতিকারক জ্যোতিষশাস্ত্রীয় কুসংস্কার প্রত্যাখ্যান করে। আসুন আমরা আরও যুক্তিবাদী এবং প্রগতিশীল বিশ্ব তৈরিতে হাত মেলাই।

জ্যোতিষ বিরোধী দিবস উদযাপনের মাধ্যমে, ISRS এবং সমমনা সংগঠনগুলির লক্ষ্য কুসংস্কারের সাগরে যুক্তির আলোকবর্তিকা তৈরি করা, ব্যক্তিদের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা করতে এবং প্রমাণ ও বিজ্ঞানের ভিত্তিতে জ্ঞাত সিদ্ধান্ত নিতে অনুপ্রাণিত করা। একসাথে কাজ করে, আমরা নিজেদের এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত তৈরি করতে পারি।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বিংশ শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য বাঙালি কবি ও গদ্যকার সুভাষ মুখোপাধ্যায় – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯১৯ অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে মামাবাড়িতে। তার পিতার নাম ক্ষিতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, মা যামিনী দেবী। পিতা ছিলেন সরকারি আবগারি বিভাগের কর্মচারী; তার বদলির চাকরির সুবাদে কবির ছেলেবেলা কেটেছিল পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে। তার ছেলেবেলার প্রথম দিকটা, যখন তার বয়স তিন-চার, সে সময়টা কেটেছে কলকাতায়, ৫০ নম্বর নেবুতলা লেনে।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় ছিলেন বিংশ শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য বাঙালি কবি ও গদ্যকার। কবিতা তার প্রধান সাহিত্যক্ষেত্র হলেও ছড়া, রিপোর্টাজ, ভ্রমণসাহিত্য, অর্থনীতিমূলক রচনা, বিদেশি গ্রন্থের অনুবাদ, কবিতা সম্পর্কিত আলোচনা, উপন্যাস, জীবনী, শিশু ও কিশোর সাহিত্য সকল প্রকার রচনাতেই তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত।

তিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি কবি। আধুনিক বাংলা কাব্যজগতে চল্লিশের দশকের অন্যতম কবি হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৪০-এ প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পদাতিক’ প্রকাশের মধ্য তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জগতে নতুন সুর নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। শ্রেণিবিভক্ত সমাজে মানুষের বৈষম্যলাঞ্চিত দুর্দশার বিরূদ্ধে দ্রোহ তাঁর কবিতার মূল সুর। ‘পদাতিক’ প্রারম্ভে ছিল ‘প্রিয় ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা চোখে আর স্বপ্নের নেই নীল মদ্য কাঠফাঁটা রোদে সেঁকে চামড়া’। কথ্যরীতিতে রচিত তার কবিতা সহজবোধ্যতার কারণে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর আনুকূল্য লাভ করে। মানবিক বোধ ও রাজনৈতিক বাণী তার কবিতার অন্যতম প্রধান অভিমুখ।
কাব্যগ্রন্থ—–
পদাতিক (১৯৪০), অগ্নিকোণ (১৯৪৮), চিরকুট (১৯৫০), ফুল ফুটুক (১৯৫৭), যত দূরেই যাই (১৯৬২), কাল মধুমাস (১৯৬৬), এই ভাই (১৯৭১), ছেলে গেছে বনে (১৯৭২), একটু পা চালিয়ে ভাই (১৯৭৯), জল সইতে (১৯৮১), চইচই চইচই (১৯৮৩), বাঘ ডেকেছিল (১৯৮৫), যা রে কাগজের নৌকা (১৯৮৯), ধর্মের কল (১৯৯১)।
কবিতা সংকলন—–
সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা (১৩৬৪ বঙ্গাব্দ), সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৭০), সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাব্যসংগ্রহ, প্রথম খণ্ড (১৩৭৯ বঙ্গাব্দ), সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কাব্যসংগ্রহ, দ্বিতীয় খণ্ড (১৩৮১ বঙ্গাব্দ), কবিতাসংগ্রহ ১ম খণ্ড (১৯৯২), কবিতাসংগ্রহ ২য় খণ্ড (১৯৯৩), কবিতাসংগ্রহ ৩য় খণ্ড (১৯৯৪), কবিতাসংগ্রহ ৪র্থ খণ্ড (১৯৯৪)।
অনুবাদ কবিতা—–
নাজিম হিকমতের কবিতা (১৯৫২), দিন আসবে (১৩৭৬ বঙ্গাব্দ, নিকোলো ভাপৎসারভের কবিতা), পাবলো নেরুদার কবিতাগুচ্ছ (১৩৮০ বঙ্গাব্দ), ওলঝাস সুলেমেনভ-এর রোগা ঈগল (১৯৮১ বঙ্গাব্দ), নাজিম হিকমতের আরো কবিতা (১৩৮৬ বঙ্গাব্দ), পাবলো নেরুদার আরো কবিতা (১৩৮৭ বঙ্গাব্দ), হাফিজের কবিতা (১৯৮৬), চর্যাপদ (১৯৮৬), অমরুশতক (১৯৮৮)।
ছড়া—–
মিউ-এর জন্য ছড়ানো ছিটানো (১৯৮০)।
কবিতা সম্পর্কিত গদ্যরচনাসম্পাদনা
কবিতার বোঝাপড়া, টানাপোড়েনের মাঝখানে।
রিপোর্টাজ ও ভ্রমণসাহিত্য—-
আমার বাংলা (১৯৫১), যেখানে যখন (১৩৬৭ বঙ্গাব্দ), ডাকবাংলার ডায়েরী (১৯৬৫), নারদের ডায়েরী (১৩৭৬ বঙ্গাব্দ), যেতে যেতে দেখা (১৩৭৬ বঙ্গাব্দ), ক্ষমা নেই (১৩৭৮ বঙ্গাব্দ), ভিয়েতনামে কিছুদিন (১৯৭৪), আবার ডাকবাংলার ডাকে (১৯৮৪), টো টো কোম্পানী (১৯৮৪), এখন এখানে (১৯৮৬), খোলা হাতে খোলা মনে (১৯৮৭)।
অর্থনৈতিক রচনা—-
ভূতের বেগার (১৯৫৪, কার্ল মার্ক্স রচিত ওয়েজ লেবার অ্যান্ড ক্যাপিটাল অবলম্বনের)।
অনুবাদ রচনা—-
মত ক্ষুধা (১৯৫৩, ভবানী ভট্টাচার্যের সো মেনি হাঙ্গার্স উপন্যাসের অনুবাদ), রোজেনবার্গ পত্রগুচ্ছ (১৯৫৪), ব্যাঘ্রকেতন (নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন ও কর্মভিত্তিক একটি অনুবাদ), রুশ গল্প সঞ্চয়ন (১৯৬৮), ইভান দেনিসোভিচের জীবনের একদিন (১৯৬৮), চে গেভারার ডায়েরী (১৯৭৭), ডোরাকাটার অভিসারে (১৯৬৯, শের জঙ্গের ট্রায়াস্ট উইথ টাইগার্স অবলম্বনে), আনাফ্রাঙ্কের ডায়েরী (১৯৮২), তমস (১৩৯৫ বঙ্গাব্দ, ভীষ্ম সাহানীর উপন্যাসের অনুবাদ)।
উপন্যাস—-
হাংরাস (১৯৭৩), কে কোথায় যায় (১৯৭৬)। ‘কমরেড কথা কও'(১৯৯০)।
জীবনী—–
জগদীশচন্দ্র (১৯৭৮), আমাদের সবার আপন ঢোলগোবিন্দের আত্মদর্শন (১৯৮৭), ঢোলগোবিন্দের এই ছিল মনে।
শিশু ও কিশোর সাহিত্য—
নীহাররঞ্জন রায় রচিত বাঙ্গালীর ইতিহাস গ্রন্থের কিশোর সংস্করণ (১৯৫২), অক্ষরে অক্ষরে আদি পর্ব (১৯৫৪), কথার কথা (১৯৫৫), দেশবিদেশের রূপকথা (১৯৫৫), বাংলা সাহিত্যের সেকাল ও একাল (১৯৬৭), ইয়াসিনের কলকাতা (১৯৭৮)।
সম্পাদিত গ্রন্থ—
কেন লিখি (১৯৪৫, বিশিষ্ট বাঙালি সাহিত্যিকদের জবানবন্দী, হিরণকুমার সান্যালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রচিত), একসূত্র (১৯৫৫, ফ্যাসিবিরোধী কবিতা সংকলন, গোলাম কুদ্দুসের সঙ্গে যৌথ সম্পাদনা), ছোটদের পুজো সংকলন – পাতাবাহার, বার্ষিক আগামী ইত্যাদি।
সংকলন—–
গদ্যসংগ্রহ (১৯৯৪) by Rupam Ghosh

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঞ্চনা ও অসম্মান অনেক জুটলেও সাহিত্যের অঙ্গনে সম্মানিতই হয়েছিলেন কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার পান ১৯৬৪ সালে; ১৯৭৭ সালে অ্যাফ্রো-এশিয়ান লোটাস প্রাইজ; ১৯৮২ সালে কুমারন আসান পুরস্কার; ১৯৮২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রদত্ত মির্জো টারসান জেড পুরস্কার; ১৯৮৪ সালে আনন্দ পুরস্কার এবং ওই বছরেই পান সোভিয়েত ল্যান্ড নেহরু পুরস্কার ও ১৯৯২ সালে ভারতীয় জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। ১৯৯৬ সালে ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মাননা সাহিত্য অকাদেমী ফেলোশিপ পান সুভাষ মুখোপাধ্যায়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানিত করেছিল তাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম দ্বারা।
৮ জুলাই ২০০৩ সালে তিনি প্রয়াত হন।।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

সৌরভ গাঙ্গুলী : যিনি ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন।

সৌরভ গাঙ্গুলি, স্নেহের সাথে দাদা নামে পরিচিত, ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম আইকনিক ব্যক্তিত্ব। একজন প্রতিভাবান বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান, একজন দক্ষ অধিনায়ক এবং একজন দূরদর্শী নেতা, গাঙ্গুলী খেলায় একটি অদম্য চিহ্ন রেখে গেছেন। মাঠে এবং বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই তার অপ্রচলিত শৈলী তাকে ভক্তদের কাছে একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং তার প্রতিপক্ষের জন্য সম্মানিত প্রতিপক্ষে পরিণত করেছিল।

প্রারম্ভিক জীবন এবং কর্মজীবন

8 জুলাই, 1972 সালে কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন, গাঙ্গুলি মহত্ত্বের নিয়তি ছিল। তার পিতা চন্ডীদাস গাঙ্গুলী ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী এবং একজন প্রখর ক্রিকেটপ্রেমী যিনি তার ছেলের খেলার প্রতি অনুরাগকে উৎসাহিত করেছিলেন। সৌরভের প্রথম জীবন ট্র্যাজেডির দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল যখন তার ছোট ভাই, স্নেহাশিশ একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। এই ঘটনাটি গাঙ্গুলির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল, জীবন ও ক্রিকেটের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি গঠন করেছিল।

গাঙ্গুলির ক্রিকেট যাত্রা শুরু হয়েছিল 15 বছর বয়সে, যখন তিনি বেঙ্গল ক্রিকেট দলে যোগ দেন। ঘরোয়া পর্যায়ে তার চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্স তাকে 1992 সালে ভারতীয় জাতীয় দলে স্থান দেয়। তবে, 1996 সাল পর্যন্ত তিনি লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরির মাধ্যমে দলে তার জায়গা নিশ্চিত করেননি।

অধিনায়কত্ব এবং নেতৃত্ব

গাঙ্গুলির নেতৃত্বের দক্ষতা তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিন থেকেই স্পষ্ট ছিল। তিনি 2000 সালে ভারতীয় দলের অধিনায়ক নিযুক্ত হন, একটি পদক্ষেপ যা সমালোচকদের মধ্যে ভ্রু তুলেছিল। যাইহোক, গাঙ্গুলীর দূরদৃষ্টি, কৌশলী বুদ্ধি এবং তার সতীর্থদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা তাকে একজন ব্যতিক্রমী নেতা করে তুলেছিল।

তার অধিনায়কত্বে, ভারত 2004 সালে পাকিস্তানে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় সহ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে। গাঙ্গুলির নেতৃত্ব তার সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, উদ্ভাবনী কৌশল এবং তার খেলোয়াড়দের প্রতি অটুট বিশ্বাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল।

বিতর্ক এবং সমালোচনা

গাঙ্গুলীর ক্যারিয়ার বিতর্কমুক্ত ছিল না। তিনি সতীর্থ, প্রতিপক্ষ এবং এমনকি ক্রিকেট প্রতিষ্ঠানের সাথে বেশ কয়েকটি হাই-প্রোফাইল দ্বন্দ্বে জড়িত ছিলেন। 2005 সালে কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের সাথে তার মতানৈক্য জনসমক্ষে বিবাদের জন্ম দেয়, যার ফলে গাঙ্গুলিকে অধিনায়কের পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

এই বিপত্তি সত্ত্বেও, গাঙ্গুলি ক্রিকেট বিশ্বে একটি সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে রয়ে গেছে। খেলার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি, ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি তার আবেগ, এবং তার সতীর্থদের প্রতি তার অটল উত্সর্গ তাকে ভক্তদের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করেছে।

উত্তরাধিকার এবং প্রভাব

ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রভাব অপরিসীম। তিনি ভারতের খেলার পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন, একটি আক্রমণাত্মক, নির্ভীক পদ্ধতির প্রবর্তন করেছেন যা ক্রিকেটারদের একটি প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। তার নেতৃত্ব এবং দৃষ্টিভঙ্গি বীরেন্দ্র শেবাগ, হরভজন সিং এবং যুবরাজ সিংয়ের মতো খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করেছিল।

গাঙ্গুলির প্রভাব ক্রিকেট মাঠের বাইরেও বিস্তৃত। তিনি ভারতীয় ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী উন্নীত করার পথপ্রদর্শক ছিলেন, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) এর পথ প্রশস্ত করেছিলেন এবং একটি বৈশ্বিক পাওয়ার হাউস হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেটের উত্থান ঘটেছিল।

উপসংহার

সৌরভ গাঙ্গুলীর গল্প সাহস, স্থিতিস্থাপকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির একটি। ভারতীয় ক্রিকেটের একজন সত্যিকারের কিংবদন্তি, তিনি খেলায় একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছেন। তার নেতৃত্ব, তার আবেগ, এবং ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি তার অটল প্রতিশ্রুতি ক্রিকেটার এবং ভক্তদের একইভাবে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। একজন ক্রিকেটার, একজন অধিনায়ক এবং একজন নেতা হিসেবে, সৌরভ গাঙ্গুলী চিরকালের জন্য সর্বকালের সেরা খেলা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

পরিবেশ বন্ধু কিঙ্করী দেবী : সৌরভকুমার ভূঞ্যা।

পেশায় তিনি ছিলেন ঝাড়ুদার। জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে জঞ্জাল সাফ করে। শিক্ষার আলোক-বঞ্চিত নিরক্ষর এই গ্রাম্য মহিলা তার সীমাবদ্ধতার গণ্ডী ছাড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এক অসম লড়াইয়ে যাতে করে সমাজ থেকে অপরাধ নামক জঞ্জাল কিছুটা অত্যন্ত দূর করা যায়। পদে পদে বাধা এসেছে। প্রাণ সংশয় হয়েছে। হার মানেননি তিনি, পালিয়ে আসেনি যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে। অবশেষে সাফল্যের জয়মাল্য গলায় পরে প্রমাণ করে দিয়েছেন লক্ষ্য যদি মহৎ হয় আর সঙ্গে যদি থাকে জেদ, হার-না-মানা মানসিকতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা তাহলে সাফল্য একদিন না একদিন ধরা দিতে বাধ্য। এই দুঃসাহসিক প্রয়াস তাঁকে ইতিহাসে সম্মানের স্থান দিয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনায় হয়তো সেভাবে উঠে আসে না তাঁর নাম, তাই বলে তাঁর কৃতিত্বকে কোনোভাবেই খাটো করা যায় না। পরিবেশ বন্ধু এই মহৎ-প্রাণা মহিলা হলেন কিঙ্করী দেবী।
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে হিমাচল প্রদেশের ঘাতোন গ্রামে এক গরিব দলিত পরিবারে তার জন্ম। তাঁর বাবা কালিয়া রাম ছিলেন সামান্য কৃষক। আর্থিক অনটন ও এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবের কারণে কিঙ্করী দেবী পড়াশোনা করার সুযোগ পাননি। জীবনের প্রায় শেষদিকে এসে তিনি কেবল নিজের নামটুকু সই করতে শিখেছিলেন। অভাবে কারণে শৈশবে তিনি অপরের বাড়িতে কাজ করতেন। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে তার বিয়ে হয় শানু রামের সঙ্গে। শানু পেশায় ছিল শ্রমিক। কিঙ্করী দেবীর বয়স যখন বাইশ বছর তখন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে শানু রাম মারা যায়। শুরু হয় কিঙ্করীর জীবন যুদ্ধের আর এক নতুন অধ্যায়। স্বামীহারা, অসহায় বিধবা সংসার প্রতিপালনের জন্য ঝাড়ুদারের কাজ করতে শুরু করেন। এক্ষেত্রে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই হতে পারত তাঁর জীবন। কিন্তু তা হয়নি, কেননা তাঁর ভাবনা ছিল সাধারণের থেকে একটু আলাদা।
কিঙ্করী দেখেন খনি মালিকদের অনিয়ন্ত্রিত খনন ও মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি এলাকা তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জল সরবরাহ ব্যবস্থা, ধ্বংস হচ্ছে চাষযোগ্য জমি। এসব দেখে তিনি স্থির থাকতে পারেন না। শপথ নেন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার। প্রথমে তিনি স্থানীয়ভাবে প্রতিবাদ শুরু করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না। তখন তিনি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। People’s Action for People in Need নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায়। সিমলা হাইকোর্টে তিনি ৪৮ জন খনি শ্রমিকের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সময় এগোতে থাকে কিন্তু মামলার কোনো অগ্রগতি হয় না। এর প্রতিবাদে হাইকোর্টের সামনে ১৯ দিন অনশনে বসেন তিনি। ব্যাপারটা রাজ্য ছাড়িয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে সাড়া ফেলে দেয়। ফলস্বরূপ তাঁর দায়ের করা মামলার বিচার শুরু হয়। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে সিমলা হাইকোর্ট রাজ্যে খনন কার্যের ওপর স্থিতাবস্থা (Stay Order) জারি করেন এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় বিস্ফোরণের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞাজারি করেন। খনি মালিকরা এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে যান। এই সময় কিঙ্করী দেবীকে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে সময় কাটাতে হয়েছে। অবশেষে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে সুপ্রিমকোর্ট তার পক্ষে রায় দেন।
এক অতি সাধারণ, তথাকথিত অশিক্ষিত মহিলার এই লড়াই মুগ্ধ করেছিল আমেরিকার তৎকালীন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনকে। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে বেজিং-এ বসেছিল আন্তর্জাতিক মহিলা সম্মেলন (International Women Conference)। হিলারি ক্লিনটনের উদ্যোগে কিঙ্করী দেবী শুধু এখানে আমন্ত্রিতই হননি, প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ওই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদবোধন করার গৌরব লাভ করেন। বন ও পরিবেশ রক্ষায় তার বিশেষ অবদানের জন্য ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাকে ঝাঁসি রানি ন্যাশন্যাল সম্মানে সম্মানিত করেন।
পরিবেশের লড়াইয়ের পাশাপাশি নিজের জেলায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি লড়াই করেছিলেন। আসলে তিনি চাননি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে অন্যান্যদের অবস্থা তার মতো হোক। তার নিজের কথায়, “পড়াশোনা করার সৌভাগ্য আমার হয়নি, কিন্তু আমি চাইনি পড়াশোনার অভাবে আমাকে যে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে তা অন্যদেরকে ভোগ করতে হোক।” দীর্ঘ তিন বছর তিনি লড়াই চালিয়ে যান। অবশেষে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য সরকার তাঁর এলাকায় একটি ডিগ্রি কলেজ স্থাপন করেন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর দীর্ঘ্য রোগভোগের পর তিনি মারা যান।
মানুষ যতই বিজ্ঞানকে করায়ত্ব করুক না কেন, একথা বাস্তব পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হলে অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হবে। যা বর্তমানে এক ভয়ংকর বার্তা নিয়ে হাজির। তাই শুধু সরাকরি নয়, সচেতনতা দরকার সাধারণ মানুষের মধ্যেও, যেমনটা আমরা দেখতে পাই কিঙ্করী দেবীর মধ্যে। নিরক্ষর, অল্প বয়সে বিধবা, অত্যন্ত গরিব একজন মহিলা সমস্ত রকম প্রতিবন্ধকতা সঙ্গে নিয়ে পরিবেশ রক্ষায় একপ্রকার নিজের জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তার জন্য কোনো প্রশংসাই যথেষ্ঠ নয়। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন একেবারে সাধারণ সমাজের চোখে তথাকথিত অস্পৃশ্য মহিলারাও অনেক বৃহৎ কাজ করতে পারেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে পরিবেশ বন্ধু হিসাবে অন্যান্যদের নাম যতটা শোনা যায় সেভাবে শোনা যায় না কিঙ্করী দেবীর নাম। অনেকে তো তাঁর নামটাই জানেন না। এটা আমাদের লজ্জা। আজকের সময়ে এইরকম মহৎ-প্রাণা মানুষদের শ্রদ্ধায় স্মরণ করার দরকার আছে।
তথ্যসূত্র – উইকিপিডিয়া

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস: প্লাস্টিক ব্যাগ ছাড়া বিশ্বকে উৎসাহিত করা।

৩রা জুলাই আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস পালন করে, একক-ব্যবহারের প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করার লক্ষ্যে একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ। 2008 সালে শুরু হওয়া আন্দোলনটি পরিবেশ, বন্যপ্রাণী এবং মানব স্বাস্থ্যের উপর প্লাস্টিকের ব্যাগের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চায়।

প্লাস্টিকের ব্যাগের ইতিহাস—-

প্লাস্টিকের ব্যাগের উদ্ভাবন 1933 সালের দিকে যখন পলিথিন, প্লাস্টিকের ব্যাগে ব্যবহৃত প্রাথমিক উপাদান, ইংল্যান্ডের নর্থউইচে প্রথম সংশ্লেষিত হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী প্রাথমিকভাবে ব্যবহার করেছিল, প্লাস্টিক ব্যাগগুলি 1960-এর দশকে পণ্য বহনের সুবিধাজনক এবং স্বাস্থ্যকর উপায় হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যাইহোক, তাদের জনপ্রিয়তা একটি উল্লেখযোগ্য পরিবেশগত খরচে এসেছে।

পরিবেশগত প্রভাব——

প্লাস্টিক ব্যাগগুলি দূষণের একটি উল্লেখযোগ্য অবদানকারী, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক 5 ট্রিলিয়ন ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। তারা পচন প্রক্রিয়ার সময় মাটি এবং জল সিস্টেমে ক্ষতিকারক বিষাক্ত পদার্থ পচতে এবং ছেড়ে দিতে শত শত বছর সময় নেয়। অধিকন্তু, প্লাস্টিক ব্যাগ বন্যপ্রাণীর ক্ষতি করে, অ-নবায়নযোগ্য সম্পদের অবক্ষয় করে এবং ক্যান্সার, জন্মগত ত্রুটি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমন করতে পারে এমন রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে মানব স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে।

আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস উদযাপন——

বিভিন্ন কার্যক্রম ও উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী এই দিবসটি পালিত হয়। প্রতিষ্ঠান, পরিবেশগত গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিরা প্লাস্টিকের ব্যাগের প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করতে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ব্যাগের মতো বিকল্পগুলিকে প্রচার করতে ইভেন্ট, কর্মশালা এবং সচেতনতা প্রচারের আয়োজন করে। সম্প্রদায়, শহর এবং দেশগুলিও এই দিনে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ বা প্রবিধানে অংশ নিতে পারে, একক-ব্যবহারের প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার নীতিগুলি বাস্তবায়ন করে৷

উদযাপনের উপায়——

– প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করুন এবং পরিবর্তে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ব্যাগ বেছে নিন।
– প্লাস্টিক আইটেম হ্রাস, পুনঃব্যবহার এবং পুনর্ব্যবহার করুন।
– আশেপাশের পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে অংশগ্রহণ করুন।
– পরিবেশ বান্ধব উপকরণ ব্যবহার করে আপনার নিজস্ব পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ তৈরি করুন।
– তাদের পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ নিয়ে আসা গ্রাহকদের জন্য ডিসকাউন্ট অফার করে এমন ব্যবসাগুলিকে সমর্থন করুন৷

প্লাস্টিকের ব্যাগের বিকল্প—–

– উদ্ভিদ-ভিত্তিক উপকরণ থেকে তৈরি বায়োপ্লাস্টিক ব্যাগ
– মাইসেলিয়াম থেকে তৈরি মাশরুম-ভিত্তিক ব্যাগ
– কাগজের ব্যাগ
– তুলো বা কৃত্রিম উপকরণ থেকে তৈরি ক্যানভাস ব্যাগ

উপসংহার—-

আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস হল প্লাস্টিকের ব্যাগের উপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে এবং টেকসই বিকল্পগুলি গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক। একসাথে কাজ করার মাধ্যমে, আমরা প্লাস্টিকের ব্যাগ ছাড়াই একটি বিশ্ব তৈরি করতে পারি, আমাদের পরিবেশ রক্ষা করতে পারি, সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর গ্রহ নিশ্চিত করতে পারি। সুতরাং, আসুন আমরা এই দিবসটি উদযাপনের জন্য বাহিনীতে যোগদান করি এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করার সচেতন প্রচেষ্টা করি।

Share This