Categories
রিভিউ

আজ ২৪ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

 

আজ ২৪ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ

গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–

(ক) বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—- .
১৮৪১ – নবাব ওয়াকার-উল-মুলক মৌলভী, নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।

১৮৬৩ – খ্যাতনামা আইনবিদ, রাজনীতিবিদ লর্ড সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ ।
১৮৭৪ – বিশ্বের অন্যতম সেরা জাদুকর হ্যারি হুডিনি।
১৮৮৪ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ডাচ বংশোদ্ভূত আমেরিকান পদার্থবিদ ও রসায়নবিদ পিটার জোসেফ উইলিয়াম ডিবাই।
১৯০৩ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান রসায়নবিদ আডল্ফ ফ্রিড্রিশ ইয়োহান বুটেনান্ডট।

১৯০৯ – বাঙালি কবি নিশিকান্ত রায় চৌধুরী।
১৯১৭ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ প্রাণরসায়নী জন কেন্ড্রেও।

১৯২৫ – কাজী নূরুজ্জামান, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা, সেক্টর কমান্ডার।
১৯২৬ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইতালিয়ান অভিনেতা, পরিচালক, সুরকার ও নাট্যকার ডারিও ফো।

১৯৩০ – আমেরিকান অভিনেতা স্টিভ ম্যাকুইন।
১৯৩৩ – অরুণকুমার বসু, রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও কালজয়ী বাংলা গানের স্রষ্টা।
১৯৪৪ – সার্বীয় শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও ৪র্থ প্রধানমন্ত্রী ভজিস্লাভ কস্টুনিকা।
১৯৪৯ – শ্রীলংকান আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও ১৩ তম প্রধানমন্ত্রী রনীল শ্রীয়ান বিক্রমাসিংহে।

১৯৬০ – জার্মান গায়ক, গীতিকার এবং অভিনেত্রী নেনা।
১৯৬১ – ডিন জোন্স, সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৬৫ – দ্য আন্ডারটেকার, মার্কিন পেশাদার কুস্তীগির।
১৯৭৩ – আমেরিকান অভিনেতা ও গায়ক জিম পারসন্স।
১৯৭৭ – জেসিকা চ্যাস্টেইন, মার্কিন অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক।

১৯৭৯ – গ্রেম সোয়ান, ইংরেজ সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৮৭ – সাকিব আল-হাসান, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অল-রাউন্ডার।

১৯৮৭ – ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার রামিরেস।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৩০৭ – আলাউদ্দিন খিলজির সেনাপতি মালিক কাফুর দেবগিরি দুর্গ দখল করেন।
১৩৫১: ফিরোজ শাহ তুঘলক দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন।
১৭৯৩: চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা ঘোষিত হয়।
১৮৬১: লন্ডনে প্রথম ট্রাম চলাচল শুরু হয়।
১৯০২ – বাংলায় অনুশীলন সমিতি গঠিত হয়।
১৯১৮ – জার্মান বাহিনী সোমে নদী অতিক্রম করে।
১৯৩৩ – এড্লফ হিটলার জার্মানির একনায়ক হন।
১৯৪০ – শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক উত্থাপিত লাহোর প্রস্তাব মুসলিম লীগের সভায় গৃহীত হয়।
১৯৪৬ – লর্ড লরেঞ্জের নেতৃত্বে ব্রিটিশ কেবিনেট মিশন ভারতে আসে।
১৯৪৮ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ রাষ্ট্রভাষা উর্দুর পক্ষে ভাষণ দিয়ে ছাত্রদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হন।
১৯৫৬ – পাকিস্তানকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।
১৯৭৭ – যুক্তরাষ্ট্র এবং কিউবা সরাসরি আলোচনা শুরু করে।
১৯৮২ – বাংলাদেশে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একটি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন।
১৯৯৯ – ন্যাটো যুগোশ্লাভিয়ার সার্বিয় সেনা অবস্থানের উপর বোমা বর্ষণ শুরু করে।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৬০৩ – প্রথম এলিজাবেথ, ইংল্যান্ডের রানী।
১৭৭০ – আশরাফ আলি খান (নবাব)

১৭৭৬ – ইংরেজ সূত্রধর ও ঘড়ি-নির্মাতা জন হ্যারিসন।
১৮৮২ – একজন মার্কিন হেনরি ওয়েডসওরর্থ লংফেলো।

১৮৯৯ – বিলি বার্নস, পেশাদার ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯০৪ – একজন ইংরেজ কবি এডউইন আর্নল্ড।

১৯০৫ – জুল ভার্ন, ফরাসি লেখক।
১৯৪৬ – রাশিয়ান দাবাড়ু আলেকসান্দর আলেখিন।
১৯৫০ – ব্রিটিশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যারল্ড ল্যাস্কির।
১৯৭১ – রেডিসন ব্লু রয়েল হোটেল ও আর্ফস সিটি হলের পরিকল্পক আর্নি জাকবসেন।
২০০২ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আর্জেন্টিনার প্রাণরসায়নী সিজার মিলস্টেইন।

২০০৫ – ভি বালসারা ভারতীয় সঙ্গীতপরিচালক,আবহসঙ্গীতপরিচালক ও যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পী।
২০১০ – রন হামেন্স, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।

২০১৩ – নিউজিল্যান্ড লেখক বারবারা অ্যান্ডারসন।
২০২০ – বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যবসা সফল ছবি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র অন্যতম প্রযোজক, প্রখ্যাত নির্মাতা মতিউর রহমান পানু।

২০২২ – বাঙালি অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস : জানুন এই রোগের কারণ, লক্ষণ ও দিনটি পালনের গুরুত্ব।।।

প্রাতি বছর ২৪ মার্চ যক্ষ্মা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৮৮২ সালের ২৪ মার্চ ডা. রবার্ট কক, যক্ষ্মা রোগের জীবাণু মাইক্রোব্যাটেরিয়াম টিউবারকিউলসিস আবিষ্কার করেন। যক্ষ্মা রোগের জীবাণু আবিষ্কারের ১০০ বছর পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ, জীবাণু আবিষ্কারের দিনটিকে স্মরণীয় করা ও যক্ষ্মা রোগের চিকিত্‍সা সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হচ্ছে।

যক্ষ্মা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির জন্য একটি দিন উত্‍সর্গ করা গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এটি একটি পুরানো রোগ বলে মনে হলেও, বিশ্বের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ এখনও এটিতে ভুগছে।
২০১৬ সালে, প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ টিবিতে সংক্রমিত হয়েছিল, সারা বিশ্বে ২ বিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল এবং ১.৭ মিলিয়নের টিবি-জনিত রোগে মৃত্যু হয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বের যক্ষ্মা সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য পেয়েছে ভারত।বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মার প্রকোপ দূর করতে যক্ষ্মা দিবস সচেতনতা সৃষ্টির সুযোগ আনে। এ দিবস যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিশ্রুতিকে আরও দৃঢ় করে। সাম্প্রতিক সময়ে যক্ষ্মার সংক্রমণ ও যক্ষ্মারোগে মৃত্যুর ঘটনা প্রশংসনীয় হারে কমে এসেছে। ১৯৯০ সালের পর যক্ষ্মা রোগে নিহতের সংখ্যা ৪০ ভাগ কমে এসেছে। এখনও কমছে। দ্রুত যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিত্‍সার কারণে যক্ষ্মার প্রকোপ কমে আসছে। তবে এখনও যক্ষ্মা সারা বিশ্বের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
যক্ষ্মা বা যক্ষা (টিউবার্‌কিউলোসিস্‌ বা টিবি) একটি সংক্রামক রোগ যার কারণ মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামের জীবাণু। “যক্ষ্মা” শব্দটা এসেছে “রাজক্ষয়” থেকে। ক্ষয় বলার কারণ এতে রোগীরা খুব শীর্ণ (রোগা) হয়ে পড়েন । যক্ষ্মা প্রায় যেকোনও অঙ্গে হতে পারে (ব্যতিক্রম কেবল হৃত্‍পিণ্ড, অগ্ন্যাশয়, ঐচ্ছিক পেশী ও থাইরয়েড গ্রন্থি)। যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশী দেখা যায় ফুসফুসে। গরুর দুধ পাস্তুরায়ণ প্রচলনের আগে অন্ত্রেও অনেক বেশি হত।
একটি আশঙ্কাজনক তথ্য হচ্ছে, বিশ্বের ৪ ভাগের ১ ভাগ মানুষের শরীরে যক্ষ্মা রোগের জীবানু সুপ্ত থাকে। তার মানে হল ওই মানুষগুলো জীবানুতে আক্রান্ত। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা অসুস্থ হননি। এই আক্রান্তদের ৫-১৫ % শতাংশ সারা জীবন ধরেই রোগের শিকার হবার আশঙ্কা থেকে যায়।
কারণ—
ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে যক্ষ্মা হওয়ার আশঙ্কা থাকে; ক্যান্সারও যক্ষ্মার অন্যতম কারণ; শরীরের কোনও অংশ ট্রান্সপ্লান্টের পর যে সমস্ত ওষুধ খাওয়া হয়, তার কারণেও যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়; পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এই রোগের অন্যতম কারণ; যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এই রোগ হতে পারে; অধিক ধূমপান ও মাদকাসক্তিও যক্ষ্মার আর একটি কারণ।
লক্ষণ—
ফুসফুসে যক্ষ্মা হলে হাল্কা জ্বর ও কাশি হতে পারে। কাশির সঙ্গে গলার ভিতর থেকে থুতুতে রক্তও বেরোতে পারে। মুখ না ঢেকে কাশলে যক্ষ্মা সংক্রমণিত থুতুর ফোঁটা বাতাসে ছড়ায়। আলো-বাতাসহীন অস্বাস্থ্যকর বদ্ধ পরিবেশে মাইকোব্যাক্টেরিয়াম অনেকক্ষণ বেঁচে থাকে।
সাধারনত তিন সপ্তাহের বেশি কাশি, জ্বর, কাশির সাথে কফ এবং মাঝে মাঝে রক্ত বের হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা ও ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি ফুসফুসের যক্ষার প্রধান উপসর্গ। যারা এইচ আইভি আক্রান্ত, অপুষ্টিতে ভোগে, ডায়বেটিস রয়েছে, অথবা যক্ষ্মা রোগীর সংস্পর্শে আসলে,তাদের অসুস্থ হবার সম্ভাবনা রয়েছে বেশি। থুতু নমুনা অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা যক্ষ্মার জীবানু রয়েছে কিনা, পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া এক্সরে দ্বারা, জিন এক্সপার্ট মেশিন দিয়েও পরীক্ষা করা হয়।
নিরাময়ের কিছু ঘরোয়া উপচার—
কয়েকটি বিষয়ের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখলে এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তার জন্য প্রয়োজন সঠিক সময় সঠিক পদক্ষেপ করা। চিকিত্‍সা না-করিয়ে ফেলে রাখলে এই রোগ উত্তোরত্তোর বৃদ্ধি পায়। সে ক্ষেত্রে কিছু ঘরোয়া উপায় আছে, যা যক্ষ্মা ধরা পড়ার প্রথম দিকে মেনে চললে, লাভ পাওয়া যেতে পারে।
রোজ সকালে দু-তিন কোয়া রসুন চিবিয়ে খান। এমন করলে যক্ষ্মার লক্ষণ কমে, মধু ও মাখন শরীরের ক্ষয় আটকায়; ১০০ গ্রাম মাখনে ২৫ গ্রাম মধু মিশিয়ে রোজ খান; খাবার খাওয়ার পর লবঙ্গের গুড়োয় মধু মিশিয়ে খেলে সুফল পেতে পারেন; ২৫০ গ্রাম দুধে অশ্বত্থ পাতা দিয়ে ফোটান; সকাল-সন্ধে সেই দুধ পান করুন;কলা যক্ষ্মা রোগীদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে; রসুনের রসের সঙ্গে আধ চামচ মধু মিশিয়ে খান, রসুনের রস ফুসফুসকে মজবুত করে; যক্ষ্মা রুগীরা প্রতিদিন ১০০ বা ২০০ গ্রাম আঙুর খান।
যক্ষ্মা সম্পর্কে কিছু তথ্য—
অনেকেই জানেন না যে, যক্ষ্মা একটি নিরাময়যোগ্য রোগ। যা বছরের পর বছর ধরে সনাক্ত করা যায় না অনেক সময়। যা রোগীর জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ২০১১ সালে সারা পৃথিবীতে প্রায় ৮৭ লাখ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছে ১৪ লাখ। ৯৫ ভাগ মৃত্যু ঘটেছে গরিব ‍ও মধ্যআয়ের দেশসমূহে। গরিব শ্রেণির লোকেরা যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়েছে। তবে বায়ুবাহিত এ রোগ সব শ্রেণির মানুষের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।
১৫-৪৪ বছর বয়সি নারীদের মৃত্যুর প্রধান তিনটি কারণের একটি যক্ষ্মা। ২০১১ সালে প্রায় পাঁচ লাখ শিশু যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছে ৬৪ হাজার।
চাই যক্ষ্মামুক্ত জীবন ২০১২-১৩ সাল ছিল যক্ষ্মাবিরোধী দ্বিবার্ষিক ক্যাম্পেন চালানো হয়েছিল গোটা পৃথিবীতে। ওই দু’ বছর দিবসটি পালনের জন্য ‘যক্ষ্মা মুক্ত জীবন চাই’কে স্লোগান হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
তাই প্রতি বছর যক্ষ্মা রোগের ক্ষতিকর দিক বিশেষ করে স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই রোগটি নির্মূলে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ঘুরে আসুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তর সিকিমের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি অদ্ভুত গ্রাম – লাচুং।।।।

লাচুং, ভারতের উত্তর সিকিমের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি অদ্ভুত গ্রাম, ৯৬০০ ফুট উচ্চতায় গর্বিতভাবে দাঁড়িয়ে আছে, যা পর্যটকদের প্রকৃতির কোলে নির্মল পালানোর প্রস্তাব দেয়। শ্বাসরুদ্ধকর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বৈশিষ্ট্যযুক্ত এই গ্রামটি সিকিমের রুক্ষ ভূখণ্ডের মধ্যে একটি বিস্ময়। গ্যাংটক থেকে লাচুং পর্যন্ত যাত্রাটি নিজেই একটি দুঃসাহসিক কাজ, যেখানে প্রতিটি মোড়ে প্রকৃতির মহিমা ফুটে ওঠে, যা এর দর্শকদের কাছে একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দেয়।

একটি দর্শনীয় যাত্রা শুরু—
লাচুং যাওয়ার রাস্তাটি প্রকৃতির প্রাণবন্ত রঙে আঁকা একটি ক্যানভাস। ভ্রমণকারীরা যখন ঘূর্ণায়মান পথ দিয়ে হেঁটে বেড়ায়, তারা আকাশে চুম্বন করার জন্য ছুঁয়ে আসা সুউচ্চ পাইন, ফার এবং বিভিন্ন ধরণের রডোডেনড্রনের বিস্ময়কর দৃশ্য দ্বারা স্বাগত জানায়। তিস্তা নদী, তার উপনদী লাচুং এবং লাচেন সহ, যাত্রায় একটি সুরেলা ছন্দ যোগ করে, এই পাহাড়ি গ্রামের শান্ত পরিবেশকে বাড়িয়ে তোলে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আচ্ছন্ন একটি গ্রাম—

লাচুং, এর কম জনসংখ্যা এবং ঘন বন, প্রকৃতির গ্যালারিতে একটি মাস্টারপিস সেট বলে মনে হয়। এই মনোরম গ্রামটি কেবল শান্তির সন্ধানকারীদের জন্য নয় বরং এর লুকানো ধন অন্বেষণ করতে আগ্রহী অভিযাত্রীদের জন্যও একটি আশ্রয়স্থল। স্থানীয় গালিচা বুনন কেন্দ্র এবং রহস্যময় গুহাগুলি আবিষ্কৃত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা সাংস্কৃতিক রত্নগুলির মধ্যে মাত্র কয়েকটি, যা গ্রামের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের আভাস দেয়।

ইউমথাং উপত্যকার প্রবেশদ্বার—

লাচুং-এ একটি বিশ্রামের রাতের পর, যাত্রা শুধুমাত্র ২৩ কিমি দূরে মনোমুগ্ধকর ইয়ুমথাং উপত্যকার দিকে চলতে থাকে। ১১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত, ইয়ুমথাং উপত্যকা ঋতুর সাথে রূপান্তরিত হয়, শীতকালে একটি মুগ্ধকারী সাদা তুষারস্কেপ থেকে উষ্ণ মাসগুলিতে প্রবাহিত নীল নদীর দ্বারা বিছিয়ে সবুজের একটি সবুজ কার্পেটে। উপত্যকার প্রবেশদ্বারে একটি উষ্ণ প্রস্রবণের উপস্থিতি দর্শনার্থীদের জন্য একটি প্রাকৃতিক ট্রিট।

ইয়ুমথাং এর বাইরে অন্বেষণ—-

দু: সাহসিক কাজ Yumthang উপত্যকায় শেষ হয় না; ভ্রমণকারীরা ইউমেসামডং বা জিরো পয়েন্টে যেতে পারেন, ২৩ কিমি দূরে একটি শ্বাসরুদ্ধকর লোকেল। চীনা সীমান্তের নিকটবর্তীতা প্রবেশাধিকারকে সীমিত করে, তবে এই ১৫০০০ ফুট উচ্চতায় ভ্রমণটি অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পুরস্কৃত হয়। লাচুং থেকে আরেকটি পথ ২৪ কিমি দূরে একটি বরফের রাজ্য কাতাওতে নিয়ে যায়, স্থানীয় ড্রাইভার এবং ট্যুর এজেন্টদের দ্বারা সাজানো বিশেষ পারমিটের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য।

মৌসুমি জাঁকজমক এবং অ্যাক্সেসযোগ্যতা—-

ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লাচুং এর তুষারময় ল্যান্ডস্কেপ এবং আবার এপ্রিল-মে মাসে যখন ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারস’ ইয়ুমথাং উপত্যকায় রডোডেনড্রন, প্রাইমুলা এবং অন্যান্য ফুলে ফুল ফোটে। সবুজ উপত্যকা এবং নীল নদী, তুষার-ঢাকা পাহাড়ের বিপরীতে স্থাপন করা, সারা বছর দর্শকদের কাছে টানতে থাকে। গ্যাংটক থেকে লাচুং পর্যন্ত ভ্রমণ বিভিন্ন প্যাকেজ ট্যুরের মাধ্যমে উপভোগ করা যেতে পারে, যা একটি নির্বিঘ্ন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

গ্যাংটক থেকে যাত্রা—

ভ্রমণকারীরা ২ রাত এবং ৩ দিন বা ৩ রাত এবং ৪ দিন স্থায়ী প্যাকেজ ট্যুরের মাধ্যমে গ্যাংটক থেকে লাচুং তাদের যাত্রা শুরু করতে পারে। এই প্যাকেজগুলি, ইউমথাং উপত্যকায় পরিদর্শনকে সামঞ্জস্যপূর্ণ, একটি সর্ব-সমেত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে, মূল্য যথেষ্ট। যাত্রাটি সাধারণত লাচুং জিপ স্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়, এমজি মার্গ থেকে নামমাত্র ভাড়া দিয়ে, সমস্ত অভিযাত্রীদের জন্য অ্যাক্সেসযোগ্যতা নিশ্চিত করে।

লাচুং-এ থাকার ব্যবস্থা—-

লাচুং-এ থাকার ব্যবস্থা ট্যুর প্যাকেজের মধ্যেই দেওয়া হয়, আরামদায়ক থাকার জন্য হোটেলের বিকল্পগুলির একটি পরিসর দেওয়া হয়। লাচুং-এর নির্মল রাত শুধুমাত্র বিশ্রামেরই প্রতিশ্রুতি দেয় না বরং তারার আলোর নিচে গ্রামের শান্ত পরিবেশে এক নিমগ্ন অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দেয়।

উত্তর সিকিম অভিযাত্রীদের জন্য ভ্রমণ টিপস—-

লাচুং সহ উত্তর সিকিমে ভ্রমণকারী যাত্রীদের গ্যাংটক থেকে পারমিট সুরক্ষিত করতে হবে, যা যথাযথ ডকুমেন্টেশন সহ সহজেই পাওয়া যেতে পারে। উপযুক্ত ওষুধ দিয়ে উচ্চতার জন্য প্রস্তুত হওয়া এবং ঝামেলা-মুক্ত পারমিট প্রক্রিয়ার জন্য স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টদের সাথে জড়িত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই সতর্কতা সিকিমের উত্তরের ভান্ডারের একটি মসৃণ এবং উপভোগ্য অন্বেষণ নিশ্চিত করে।
উপসংহারে, লাচুং এর প্রাকৃতিক দৃশ্য, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং ইয়ুমথাং উপত্যকা এবং তার বাইরের দুঃসাহসিক পথ সহ প্রকৃতির আলিঙ্গনে একটি পালানোর প্রস্তাব দেয়। এই গ্রামটি, তার আশেপাশের বিস্ময় সহ, সিকিমের রুক্ষ ভূখণ্ডে লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্যের প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে, যা বিশ্বজুড়ে ভ্রমণকারীদের ইঙ্গিত করে। প্রশান্তি বা দুঃসাহসিকতার সন্ধান করা হোক না কেন, লাচুং এবং এর পরিবেশগুলি এমন অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দেয় যা শ্বাসরুদ্ধকর হিসাবে স্মরণীয়।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

প্রেম এবং স্থাপত্যের মহিমার সূক্ষ্মতার প্রতীক তাজমহল – অজও পৃথিবীর মানুষের কাছে বিস্ময়কর !!!

তাজমহল, আগ্রায় অবস্থিত, ১৭ শতকের স্মারক প্রেম এবং স্থাপত্যের মহিমার সূক্ষ্মতার প্রতীক। মুঘল সার্বভৌমত্বের যুগে কল্পনা করা এই প্রতীকী কাঠামোটি মুঘল স্থাপত্যের ঐশ্বর্য এবং নান্দনিক আবেদনের একটি প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে। শাহজাহানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত, স্মৃতিস্তম্ভটি তার লালিত সহধর্মিণী মমতাজ মহলের জন্য একটি সমাধি হিসেবে কাজ করে, যা তার স্থাপত্য অনুগ্রহের মাধ্যমে তার সৌন্দর্য এবং শাহজাহানের স্নেহের গভীরতাকে মূর্ত করে।

বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একটি হিসাবে স্বীকৃত, তাজমহল তার সাদা মার্বেল নির্মাণ, চারপাশের সবুজ পরিবেশ এবং ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে এর মর্যাদার জন্য পালিত হয়।
ভালোবাসার জন্য একটি স্থাপত্য-
তাজমহল নামটি, ফার্সি থেকে উদ্ভূত, “প্রাসাদের মুকুট”-এ অনুবাদ করা হয়েছে, যা এই স্থাপত্য বিস্ময়ের জন্য উপযুক্ত উপাখ্যান। আনুমানিক ২২০০০ কারিগরদের দ্বারা নির্মিত, সমাধিটি পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণে তিনটি মহিমান্বিত দরজা দিয়ে প্রবেশযোগ্য। বিল্ডিং প্রক্রিয়াটি প্রায় ১৭ বছর ধরে বিস্তৃত ছিল, বার্ষিক প্রচুর দর্শকদের আমন্ত্রণ জানায়। ফেব্রুয়ারি মাসটি তাজ মহোৎসবের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, একটি শিল্প ও সংস্কৃতি উৎসব, যা 18 থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত ভারতীয় ঐতিহ্যের উদযাপনের সাথে স্মৃতিস্তম্ভের আবেদনকে বাড়িয়ে তোলে। যমুনা নদীর ধারে অবস্থিত, স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থানটি এর নির্মলতা এবং লোভকে আরও প্রশস্ত করে, এটি যেকোন ব্যক্তির জন্য অবশ্যই একটি দর্শনীয় গন্তব্য করে তোলে।
মিশ্রন স্থাপত্য ঐতিহ্য–
তাজমহলের নকশাটি পারস্য, ইসলামিক এবং ভারতীয় স্থাপত্য উপাদানগুলির একটি সুরেলা সংমিশ্রণ, যার চারপাশে তিন দিকে সুরক্ষিত প্রাচীর রয়েছে এবং চতুর্থ দিকে যমুনা নদী রয়েছে। রাজস্থান থেকে প্রাপ্ত সেরা সাদা মার্বেল থেকে তৈরি, কাঠামোটি এক হাজারেরও বেশি রত্নপাথর দিয়ে জটিলভাবে সজ্জিত। এর বর্গাকার আকৃতির উঁচু প্লিন্থ, স্বতন্ত্র মিনার, খিলানযুক্ত প্রবেশপথ এবং বিশাল গম্বুজ স্থাপত্যের দক্ষতা এবং নান্দনিক সূক্ষ্মতার মিশ্রণকে প্রতিফলিত করে। মমতাজ মহল এবং শাহজাহানের সমাধিগুলি প্রাথমিক সমাধির নীচে একটি নির্জন কক্ষে বিশ্রাম করে, যা স্মৃতিস্তম্ভে অন্তরঙ্গ গাম্ভীর্যের একটি স্তর যুক্ত করে।
আইকনিক মনুমেন্ট পরিদর্শন–
তাজমহল পরিদর্শনের জন্য সর্বোত্তম সময়কাল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত, যা আশেপাশের সবুজ বাগানগুলি অন্বেষণ করার জন্য অনুকূল আবহাওয়া সরবরাহ করে। এই মাসগুলির বাইরে পরিদর্শন তাপ এবং আর্দ্রতার কারণে চ্যালেঞ্জগুলি উপস্থাপন করতে পারে। নয়া দিল্লি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, স্মৃতিস্তম্ভটি যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে এবং রেলপথে আগ্রা রেলওয়ে স্টেশনের নিকটতম স্টপ হিসাবে কাজ করে সহজেই পৌঁছানো যায়। সেখান থেকে, ক্যাব এবং ট্যাক্সিগুলি তাজমহলে সুবিধাজনক স্থানান্তর অফার করে, এটিকে সকলের জন্য একটি অ্যাক্সেসযোগ্য যাত্রা করে তোলে।
আপনার পরিদর্শন সর্বাধিক করা-
তাজমহলে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াতে, নিম্নলিখিত টিপসগুলি বিবেচনা করুন: ছোট সারিগুলির জন্য পূর্ব গেট দিয়ে প্রবেশ করুন, সেরা জলবায়ুর জন্য নভেম্বর এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যে যান এবং আপনার টিকিটে অন্তর্ভুক্ত বিনামূল্যের জলের বোতল এবং জুতার কভারগুলি ব্যবহার করুন। উপরন্তু, ৩০ মিনিটের বিনামূল্যের ওয়াই-ফাই ব্যবহার করুন, সহজে নেভিগেশনের জন্য গল্ফ কার্ট এবং ব্যাটারি বাস, চার্জ ছাড়াই লাগেজ রাখার জন্য ক্লোকরুম এবং নামমাত্র ফি দিয়ে একটি অডিও গাইডবুক কেনার বিকল্প। এই সুযোগ-সুবিধাগুলি বিশ্বের সবচেয়ে প্রশংসিত স্মৃতিস্তম্ভগুলির একটিতে আরামদায়ক এবং সমৃদ্ধ দর্শন নিশ্চিত করে।
সান্নিধ্য আবিষ্কার–
যদিও তাজমহল নিজেই বিশাল ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের একটি স্থান, আশেপাশে অন্বেষণ করার মতো আরও কয়েকটি আকর্ষণ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আগ্রা দুর্গ, জামা মসজিদ, জাহাঙ্গীরের প্রাসাদ, মানকামেশ্বর মন্দির, চিনি-কা-রৌজা, ইতমাদ-উদ-দৌলার সমাধি এবং মেহতাব বাগ। এই সাইটগুলির প্রত্যেকটিই আগ্রার ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ ট্যাপেস্ট্রিতে অবদান রাখে, যা এই শহরটিকে ইতিহাস উত্সাহীদের এবং সংস্কৃতি সন্ধানকারীদের জন্য একইভাবে একটি ভান্ডার করে তোলে।
উপসংহারে, তাজমহল শুধুমাত্র ভালবাসা এবং ক্ষতির একটি স্মৃতিস্তম্ভ হিসাবে নয় বরং স্থাপত্যের উজ্জ্বলতা এবং ঐতিহাসিক গভীরতার আলোকবর্তিকা হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। এর লোভনীয়তা সারা বিশ্ব থেকে দর্শকদের আকর্ষণ করে, এটিকে ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি প্রধান প্রতীক করে তোলে। এটি স্থাপত্যের সূক্ষ্মতা, ঐতিহাসিক তাত্পর্য, বা স্মৃতিস্তম্ভ এবং এর আশেপাশের নিছক সৌন্দর্যই হোক না কেন, তাজমহল অনুপ্রেরণা এবং শ্রদ্ধার উত্স হয়ে চলেছে। আগ্রার অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থানগুলির অন্বেষণের সাথে মিলিত এই মহিমান্বিত সমাধির একটি পরিদর্শন, ভারতের বহুতল অতীতের হৃদয়ে একটি অবিস্মরণীয় যাত্রার প্রতিশ্রুতি দেয়।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

বাসন্তী দেবী : ব্রিটিশ কারাগারে কারারুদ্ধ প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী নারী।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য নাম বাসন্তী দেবী। বাসন্তী দেবী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ কারাগারে কারারুদ্ধ প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী নারী। বাসন্তী দেবী মন ও মানসিকতায় পৌরাণিক সতীনারীদের চারিত্রিক মহত্বটি যেমন অনুকরণীয় মনে করতেন; তেমনি গার্গী, মৈত্রেয়ীদের মতো চারিত্রিক দৃঢ়তায় বুদ্ধি দিয়ে আপন যুক্তি তুলে ধরার ক্ষমতাও রাখতেন।

এ-দুইয়ের মেলবন্ধনে তিনি অনন্যা।তিনি একাধারে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের পত্নী ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সক্রিয় সংগ্রামী। সংগ্রামের জন্য কারাবরণ করেছেন। অন্দর ছেড়ে অবগুন্ঠণ ছেড়ে উপনিষদের বিদুষীদের মতো পুরুষের সমকক্ষ হয়ে সহকর্মী হয়ে দেশমুক্তির সাধনা করে গেছেন।
বাসন্তী দেবী ২৩ মার্চ ১৮৮০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বরদানাথ হালদার ও মাতার নাম হরিসুন্দরী দেবী। তার পিতা ছিলেন আসামের বিজনি ও অভয়াপুরী এস্টেটের দেওয়ান। দশ বছর বয়েসে তিনি দার্জিলিংয়ের লরেটে কনভেন্টে শিক্ষার জন্যে ভর্তি হন। ১৮৯৬ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সাথে বিবাহ হয়।
১৮৯৪ থেকে ১৯০১ সালের মধ্যে দুজনের তিনটি সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিল। দেশবন্ধু ও তার তিন সন্তান- দুই কন্যা, অপর্ণা ও কল্যাণী ও একপুত্র চিররঞ্জন।
তার স্বামীর অনুসরণে, বাসন্তী দেবী আইন অমান্য আন্দোলন এবং খিলাফত আন্দোলনের মতো বিভিন্ন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন এবং ১৯২০ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নাগপুর অধিবেশনেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরের বছর, তিনি দাসের বোন ঊর্মিলা দেবী এবং সুনিতা দেবীর সাথে যোগ দেন। নারী কর্মীদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র “নারী কর্ম মন্দির” প্রতিষ্ঠা করুন। ১৯২০-২১ সালে, তিনি জলপাইগুড়ি থেকে তিলক স্বরাজ ফান্ডের জন্য স্বর্ণের অলঙ্কার এবং ২০০০ টি স্বর্ণমুদ্রা সংগ্রহে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন।
১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময়, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ধর্মঘট এবং বিদেশী পণ্য নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানায়। কলকাতায়, পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবকের ছোট দলকে কলকাতার রাস্তায় খাদি, হাতে কাটা কাপড় বিক্রি করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল। দাস, যিনি স্থানীয় আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন তার স্ত্রী বাসন্তী দেবীকে এমন একটি দলের নেতৃত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সুভাষ চন্দ্র বসুর সতর্কতা সত্ত্বেও দেবী রাস্তায় নেমেছিলেন যে এটি তাকে গ্রেফতার করতে ব্রিটিশদের উস্কে দেবে। যদিও তাকে মধ্যরাতে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তার গ্রেপ্তার ব্যাপক আন্দোলনের প্রেরণা জুগিয়েছিল। কলকাতার দুটি কারাগার বিপ্লবী স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পূর্ণ ছিল এবং আরও সন্দেহভাজনদের আটক করার জন্য দ্রুত আটক শিবির তৈরি করা হয়েছিল। ১৯২১ সালের ১০ ডিসেম্বর পুলিশ দাস ও বসুকে গ্রেপ্তার করে।
দাসের গ্রেপ্তারের পর, বাসন্তী দেবী তার সাপ্তাহিক প্রকাশনা বাঙ্গালার কথা (বাংলার গল্প) এর দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯২১-২২ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ১৯২২ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রাম সম্মেলনে তার বক্তৃতার মাধ্যমে, তিনি তৃণমূল আন্দোলনকে উত্‍সাহিত করেছিলেন। ভারতের চারপাশে ভ্রমণ, তিনি ঔপনিবেশিকতার বিরোধিতা করার জন্য শিল্পের সাংস্কৃতিক বিকাশকে সমর্থন করেছিলেন।
দাস যেহেতু সুভাষ চন্দ্র বসুর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ছিলেন, বসন্তী দেবীর প্রতি বসন্তের খুব শ্রদ্ধা ছিল। ১৯২৫ সালে দাসের মৃত্যুর পর, বসু দেবীর সাথে তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সন্দেহ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন বলে জানা যায়। সুভাষ চন্দ্র বসুর ভ্রাতৃপ্রতিম ভাতিজি কৃষ্ণ বোস বাসন্তী দেবীকে তাঁর “দত্তক মা” এবং তাঁর জীবনের চারটি গুরুত্বপূর্ণ মহিলার একজন হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন, বাকি তিনজন হলেন তাঁর মা প্রভাবতী, তাঁর ভগ্নিপতি বিভাবতী (শেরতের স্ত্রী) চন্দ্র বসু) এবং তার স্ত্রী এমিলি শেঙ্কল।
তার স্বামীর মতো, বাসন্তী দেবীও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী কর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। ১৯২৮ সালে, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপত রায় তার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলের বিরুদ্ধে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হওয়ার কয়েকদিন পর মারা যান। এর পর বাসন্তী দেবী লাজপত রায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় যুবকদের উদ্বুদ্ধ করেন।
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর, বাসন্তী দেবী সামাজিক কাজ চালিয়ে যান। বাসন্তী দেবী কলেজ, কলকাতার প্রথম মহিলা কলেজ যা সরকারের অর্থায়নে ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং তার নামে নামকরণ করা হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে, তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণে সম্মানিত হন।
বাসন্তী দেবী ৭ মে ১৯৭৪ মৃত্যুবরণ করেন।

।।তথ্য ঋণ : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৩ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ২৩ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–
(ক) বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ৷

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮৮০ – বাসন্তী দেবী বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের এক ব্যক্তিত্ব দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সহধর্মিণী।

১৮৮১ – হাকিম হাবিবুর রহমান, ব্রিটিশ বাংলার বিশিষ্ট চিকিৎসক, লেখক, রাজনীতিবিদ।
১৯০০ – জার্মান মনোবিজ্ঞানী এরিখ ফ্রোমের।

১৯০২ – চারুচন্দ্র চক্রবর্তী জরাসন্ধ ছদ্মনামে খ্যাতনামা বাঙালি সাহিত্যিক ।
১৯০৪ – জোন ক্রফোর্ড, মার্কিন অভিনেত্রী।
১৯০৬ – মরিস অলম, বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯০৭ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইস বংশোদ্ভূত ইতালীয় ফার্মাকোলজিস্ট ড্যানিয়েল বভেট।
১৯১০ – আকিরা কুরোসাওয়া, জাপানী চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯১৬ – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বাঙালি সাহিত্যিক।
১৯২২ – ইতালিয়ান অভিনেতা, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার উগো টোগনাযি।
১৯৩১ – রাশিয়ান দাবাড়ু ও লেখক ভিক্টর কোরচনোই।
১৯৪২ – অস্ট্রিয়ান পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার মাইকেল হানেকে।
১৯৪৭ – ওয়াসিম, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা।
১৯৫২ – রেক্স টিলারসন, মার্কিন ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী ও কূটনীতিক।
১৯৫৬ – পর্তুগিজ শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও ১১৫ তম প্রধানমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল বারোসো।
১৯৬৮ – ইংরেজ সাবেক ক্রিকেটার ও সাংবাদিক ফার্নান্দো রুইজ হিয়েরো।
১৯৭৩ – পোলিশ ফুটবলার জেরযয় ডুডেক।

১৯৭৬ – ভারতীয় অভিনেত্রী, প্রযোজক, রাজনীতিবিদ ও মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।
১৯৭৮ – আর্জেন্টিনার ফুটবল ওয়াল্টার স্যামুয়েল।
১৯৮৫ – আশেক ইলাহী চৌধুরী আইমন (আর্টিস) বাংলাদেশী আর্ট শিল্পী

১৯৮৬ – কঙ্গনা রানাওয়াত, ভারতীয় অভিনেত্রী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৩৫১ – ফিরোজ শাহ তুঘলকের দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ।
১৬৫২ – হল্যান্ডের নৌ বাহিনীর উপর প্রচন্ড হামলা শুরু করে।
১৭৫৭ – রবার্ট ক্লাইভের চন্দননগর দখল।
১৭৯৩ – চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা ঘোষিত হয়।
১৮০১ – রাশিয়ার জার প্রথম পল নিহত।
১৯১৭ – ভাইসরয় লর্ড চেমস ফোর্ড কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা।
১৯১৮ – জামার্ন বাহিনী তাদের নব নির্মিত কামানের সাহায্যে প্যারিসের উপর গোলাবর্ষণ করে।
১৯১৮ – লিথুনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
১৯২০ – গভর্নর জেনারেল কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুমোদন।
১৯৩৩ – এ্যাডলফ হিটলার জার্মানীর একনায়ক হন।
১৯৪০ – আবুল কাশেম ফজলুল হক নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১৯৫৬ – পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান গ্রহণ করা হয়।
১৯৬৬ – শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে ছয় দফা প্রস্তাব আনুষ্ঠানিক ভাবে উত্থাপন করেন।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় বতসোয়ানা।
১৯৭৬ – নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত (মানবাধিকার) আন্তর্জাতিক চুক্তি কার্যকর।
১৯৯৮ – রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন কর্তৃক আকস্মিকভাবে তার মন্ত্রিসভা বরখাস্ত।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
১৮৮৭ – অ্যাংলো-আইরিশ মিশনারি সোসাইটির ধর্মযাজকেরা এবং নীল দর্পণ নাটকের ইংরাজী অনুবাদক জেমস লঙ।
১৯১০ – নাডার, ফরাসি ফটোগ্রাফার, সাংবাদিক ও লেখক।

১৯১১- ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি কবি ও সাহিত্যিক।

১৯৩১ – (ক)  ভগৎ সিং, প্রসিদ্ধ বিপ্লবী শহীদ।

(খ ) সুখদেব থাপর, স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবী শহীদ।

(গ) শিবরাম রাজগুরু,ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী শহীদ।
১৯৩৫ – ফ্লোরেন্স মুর, আমেরিকান অভিনেত্রী।

১৯৪৮ – বৌদ্ধধর্ম ও দর্শন শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ বেনী মাধক বড়ুয়া।
১৯৫৩ – ফরাসি চিত্রশিল্পী ও অঙ্কনশিল্পী রাউল ডুফয়।

১৯৬৫ – ভারতীয় মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী সুহাসিনী গঙ্গোপাধ্যায়।
১৯৯২ – ফ্রিড্‌রিখ হায়েক, অস্ট্রীয় অর্থনীতিবিদ।

১৯৯৫ – শক্তি চট্টোপাধ্যায়, বাঙালি কবি ও লেখক।

২০০১ – প্রখ্যাত বাঙালি কবি, অনুবাদক ও ঔপন্যাসিক লোকনাথ ভট্টাচার্য।
২০০৭ – আমেরিকান গণিতবিদ ও তাত্ত্বিক পল জোসেফ কোহেন ।

২০০৭ – সূর্যেন্দুবিকাশ করমহাপাত্র, বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী।
২০০৮ – শহীদুল জহির, বাংলাদেশি গল্পকার ও ঔপন্যাসিক।

২০১১ – এলিজাবেথ টেলর, ব্রিটিশ-মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।
২০১২ – সোমালিয়ার রাজনীতিবিদ ও প্রেসিডেন্ট আব্দুলাহি ইউসুফ আহমেদ।
২০১৪ – স্প্যানিশ আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও ১ম প্রধানমন্ত্রী অ্যাডলফ সুয়ারেজ।
২০১৫ – লি কুয়ান ইউ, আধুনিক সিঙ্গাপুরের জনক৷

২০১৯ – শাহনাজ রহমতুল্লাহ, বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় ও পালনের গুরুত্ব।।।।

প্রতিবছর ২৩ মার্চ সারা পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় বিশ্ব আবহাওয়া দিবস।

জলবায়ু পরিবর্তন এবং চরম আবহাওয়া—-

Intergovernmental Panel on Climate Change (IPCC) এর ষষ্ট মুল্যায়ন প্রতিবেদন অনুসারে, ক্রমবর্ধমান বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে চরম প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়তে থাকবে।

সামান্য উষ্ণতা বৃদ্ধিও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের দ্বারা সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন ইতিমধ্যেই বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে অনেক আবহাওয়া এবং জলবায়ুকে প্রভাবিত করেছে। ২০১৪ সালে পঞ্চম মুল্যায়ন প্রতিবেদনের পর থেকে চরম মাত্রায় তাপ প্রবাহ, ভারী বৃষ্টিপাত, খরা এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে।
আইপিসিসি অনুসারে ১৯৫০ সালের সময় থেকে বেশীরভাগ ভুমি অঞ্চলের তাপমাত্রা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। চল্লিশ ডিগ্রী সেলসিয়াস এমনকি পঞ্চাশ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা বিশ্বের অনেক অংশে অনেক বেশী নিয়মিত হয়ে উঠেছে, যা পৃথিবীর মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্যে যথেষ্ট ক্ষতিকারক। জলবায়ু পরিবর্তন জলচক্রের মাধ্যমেও ঘটে- একটি উষ্ণ বায়ুমণ্ডল বেশী মাত্রায় আর্দ্রতা ধরে রাখে। যেমন ১৯৫০ এর দশক থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই অবস্থা অব্যাহত থাকবে বলেই ধারনা। আইপিসিসি বলেছে, প্রতি এক ডিগ্রী সেলসিয়াস গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্যে চরম বৃষ্টিপাতের ঘটনা গুলি প্রায় সাত শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
পূর্ব সতর্কতা জীবন ও জীবিকা রক্ষা
ভয়াবহ সতর্কতার পেছনেও রয়েছে আশার বার্তা। বর্তমানে উন্নত বহু বিপত্তি প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যাবস্থা মৃত্যুহারকে উল্লেখযোগ্য হ্রাসের দিকে পরিচালিত করেছে।
খুব সহজভাবে জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক সফল। সুপার কম্পিউটার এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তি আমাদের আবহাওয়া সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আগাম পূর্বাভাস দিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েক দশক ধরেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা। ১৯৭০ সালে গড়ে বছরে ৫০০০০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতো আবহাওয়ার বিপর্যয়ের কারনে, কিন্তু ২০১০ সালে সেই মৃত্যুহার কমিয়ে ২০০০০-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির কারনে। ১৯৭০-১৯৮০ সালে প্রতিদিন গড়ে ১৭০ জন মানুষের মৃত্যু হতো। সেই সংখ্যা কমিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে ২০২০ সালে প্রতিদিন ৪০ জনে। আবহাওয়ার আগাম পূর্বাভাস জানতে নিরলস কাজ করে চলেছে আবহাওয়াবিদরা। বিজ্ঞানীদের আশা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এই বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও অনেক বেশী স্থিতিশিল হবে বলেই আশা ডব্লিও এম ও’র। তবে মানুষের সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণ করাটা আজকের দিনে সবচেয়ে জরুরী। কারণ পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভগত্‍ সিংহ, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে ভগত্‍ সিংহ প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।

ভগত্‍ সিংহ ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
ভগত্‍ সিংহ ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ছিলেন অন্যতম প্রভাবশালী বিপ্লবী। তিনি ছিলেন এক জাতীয়তাবাদী। ভারতের জাতীয়তাবাদীরা তাকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে শ্রদ্ধা করে।
ভগত্‍ সিংহের জন্ম২৮ সেপ্টেম্বর ১৯০৭ সালে পাঞ্জাবের লায়ালপুর জেলার বাঙ্গার নিকটস্থ খাতকর কালান গ্রামের এক সান্ধু জাট পরিবারে। তার পিতার নাম সর্দার কিসান সিংহ সান্ধু ও মায়ের নাম বিদ্যাবতী। ভগতের নামের অর্থ “ভক্ত”। তিনি যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সেটি ছিল এক দেশপ্রেমিক শিখ পরিবার। এই পরিবারের কোনো কোনো সদস্য ভারতের বিভিন্ন স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।ভগত্‍ সিং-এর বাবা এবং তার চাচা অজিত সিং প্রগতিশীল রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন, ১৯০৭ সালে খাল উপনিবেশকরণ বিল এবং পরবর্তীতে ১৯১৪-১৯১৫ সালের গদর আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। অতীতে এই পরিবারের কোনো কোনো সদস্য আবার মহারাজা রঞ্জিত সিংহের সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন।
কৈশোরেই ভগত্‍ ইউরোপীয় বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশোনা করেন এবং নৈরাজ্যবাদ ও কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হন। এরপর তিনি একাধিক বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের (এইচআরএ) সঙ্গে যুক্ত হয়ে মেধা, জ্ঞান ও নেতৃত্বদানের ক্ষমতায় তিনি অচিরেই এই সংগঠনে নেতায় পরিণত হন এবং সংগঠনটিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে এটিকে হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে (এইচএসআরএ) রূপান্তরিত করেন। তাকে এবং তার সংগঠনকে নৈরাজ্যবাদী আখ্যা দেওয়া হলে তিনি ক্ষুরধার যুক্তিতে তা খন্ডন করেন। জেলে ভারতীয় ও ব্রিটিশ বন্দীদের সমানাধিকারের দাবিতে ৬৪ দিন টানা অনশন চালিয়ে তিনি সমর্থন আদায় করেন। প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপত রায়ের হত্যার প্রতিশোধে এক ব্রিটিশ পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মিস্টার স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন ভগত্‍। বিচারে তার ফাঁসি (২৩ মার্চ ১৯৩১) হয়। তার দৃষ্টান্ত শুধুমাত্র ভারতীয় যুবসমাজকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধই করেনি, ভারতে সমাজতন্ত্রের উত্থানেও প্রভূত সহায়তা করেছিল।
২৩ মার্চের সকাল আজও মনে করিয়ে দেয় ভগত্‍ সিংয়ের আত্মবলিদানের কথা। কয়েক দশক পেরিয়ে আজও একই রকম প্রাসঙ্গিক তাঁর দেশপ্রেম।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব জল দিবস, জানুন দিনটি পালনের সংরক্ষণের গুরুত্ব ও তাত্‍পর্য।।।

‘জলের অপর নাম জীবন’ অথবা ‘No Water, No Life’ ছোট থেকে সব পাঠ্য বইয়ে উল্লেখ পেয়েছি এমন কথার। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বুঝেছে আমাদের জীবনে জলের গুরুত্ব কতখানি। পরিশুদ্ধ জল ছাড়া যে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব নয়, তা সকলেই জানেন। সে কারণে, জল অপচয় বন্ধ করতে নিত্যদিন নানা রকম ক্যাম্পেনিং দেখা যায় কোথাও না কোথাও।

আজ আরও একবার জলের গুরুত্ব বোঝানোর পালা। কারণ আজ বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব জল দিবস (World Water Day)।
পানীয় জলের গুরুত্ব তুলে ধরতে প্রতি বছর 22 মার্চ বিশ্ব জল দিবস পালন করা হয়। জল আমাদের জীবনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি সেচ, রান্না, ধোয়া, পান করা ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। জল ভাল স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য কারণ এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, স্বাভাবিক কার্যকারিতা পরিচালনা করে, হজমে সহায়তা করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলিকে বাইরে বের করে দিতে সহায়তা করে।
আমাদের অবশ্যই আমাদের এই জলসম্পদকে রক্ষা করতে হবে এবং সেগুলি কার্যকরভাবে এবং যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে।
বিশ্ব জল দিবস জলের গুরুত্বকে তুলে ধরার জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক বার্ষিকভাবে উদযাপিত একটি দিন (সর্বদা ২২ মার্চ)। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ সভা ২২ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব জল দিবস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) এজেন্ডা ২১-এ প্রথম বিশ্ব জল দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব জল দিবস পালিত হয় এবং তার পর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি এই দিনটিকে নিজ নিজ রাষ্ট্রসীমার মধ্যে জাতিসংঘের জলসম্পদ সংক্রান্ত সুপারিশ ও উন্নয়ন প্রস্তাবগুলির প্রতি মনোনিবেশের দিন হিসেবে উত্‍সর্গ করেন। প্রতি বছর বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার যে কোনো একটি বিশেষ কর্মসূচি পালন করে থাকে। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতিসংঘ-জল বিশ্ব জল দিবসের থিম, বার্তা ও প্রধান সংস্থা নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছে। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও পরিচ্ছন্ন জল ও জলসম্পদ রক্ষা সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এই দিন বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করেন। ২০০৩, ২০০৬ ও ২০০৯ সালে জাতিসংঘ বিশ্ব জল উন্নয়ন প্রতিবেদন বিশ্ব জল দিবসেই প্রকাশ করা হয়েছে। ২০১৫ সালের বিশ্ব জল দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল- পানির সহজ প্রাপ্তি, টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি। ১৯৯৩ সালে থেকে প্রতি বছর ২২ মার্চ জল নিয়ে গণসচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ শুরু হয়েছে দেশ বিদেশে। শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেই ভূগর্ভস্থ জলস্তর নামছে তো নামছেই। সারা পৃথিবীর প্রায় ২৫ শতাংশ ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করে ভারত। ভারত আর কিছুতে না হোক, এই ক্ষেত্রে আমেরিকা ও চিনের থেকে এগিয়ে রয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রে ২০০২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের উচ্চতা কমেছে ভয়াবহ ভাবে, প্রতি বছরে ১০-২৫ মিমি। গড়ে ভারতের ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমেছে ৫৪ শতাংশ। চিন্তার বিষয় হল, চাষ আবাদের ক্ষেত্রে ভারতে যে জল ব্যবহৃত হয়, তার ৭০ শতাংশের এর উত্‍স হল ভূগর্ভস্থ জল। তথ্য অনুসারে, যদি এই ভাবে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের উচ্চতা কমতে থাকে, তাহলে ভারতের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি মানুষের জন্য পানীয় জলের গুরুতর সমস্যা হবে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি মোটেই আশাপ্রদ নয়। ইতিমধ্যেই প্রচুর মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক জায়গায়, যার মধ্যে কলকাতাও রয়েছে, যেখানে টিউবওয়েলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলের উত্তোলন এক প্রকার নিষিদ্ধ।
ভূগর্ভস্থ জলসীমা কমে যাওয়ার ফলাফল
ভূগর্ভস্থ জল কমে যাওয়ার পেছনে অনেকগুলি কারণ দায়ী এই পরিস্থিতির জন্য। যার মধ্যে অন্যতম হল মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল উত্তোলন করা। এর ফলে কুয়ো, পাতকুয়ো শুকিয়ে যাচ্ছে খুব দ্রুত। পুকুর, খাল বিল, নদীর অবস্থাও খারাপ। গুণগত মানের দিক থেকেও দেখা গিয়েছে, ভূগর্ভস্থ জলের অবস্থা ভালো নয়। পানীয় জলের সংকট ইতিমধ্যেই গ্রীষ্মের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এখনই সচেতন হতে হবে সকলকে।
কী করতে হবে সামনের দিনের জন্য-
এই সমস্যা এক সময় ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পরে যদি এমন চলতে থাকে। তাই ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে আমাদের এখন থেকেই সচেতন হতে হবে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে। এর সত্যি কোনও বিকল্প নেই। তবে এই ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। ইউক্যালিপটাসের মতো গাছ, যেগুলি ভীষণ পরিমাণে ভূগর্ভস্থ জল শুষে নেয়, এরকম গাছ এড়িয়ে যাওয়া উচিত, জমিতে ক্যামিক্যাল ব্যবহার করা চলবে না। কাপড় কাচা বা ধোয়ার ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে। কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করে তোলা চলবে না। জলের অপব্যবহার করা যাবে না। অনেকে রাস্তা ঘটে পানীয় জলের ট্যাপ খুলে রেখে চলে যায়। সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এতে দেশের ক্ষতি, আমাদের ক্ষতি সেটা বুঝতে হবে সকলকে। সর্বপরি সঠিক প্রচার ও জল নিয়ে অনেক অনেক সচেতনতা মূলক পোগ্রাম করতে হবে নিয়ম করে। বোঝাতে হবে আগামী দিনে জল এক ভঙ্কর সঙ্কট হিসেবে দেখা দিতে পারে আমরা সকলে যদি সচেতন না হই।
অনেকেই ভাবতে পারেন যে পৃথিবীর প্রায় ৭১ শতংশ তো জল দিয়ে তৈরি, তাহলে জল নিয়ে চিন্তার কী আছে? বাস্তব হল, এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য জলের শতাংশের হিসেব বেশ কম। তার পাশাপাশি পানীয় জলের পরিমাণ আরোও কম। ইতিমধ্যেই প্রথম বিশ্বের অনেক দেশেই দেখা গিয়েছে, সাধারণ মানুষকে জল কিনতে হচ্ছে প্যাকেটে। ভারতের মতো দেশে মাথা পিছু জল ব্যবহার নিয়ে কোনও ধারণা নেই। কিন্তু শেষের সেদিন কিন্তু বেশ ভয়ঙ্কর হতে পারে। তাই আর গাফিলতি বা পিছিয়ে থাকা নয়, জল নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এগোতে হবে সবাইকে।
সর্বপরি, দিনটি পরিশুদ্ধ জল রক্ষার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির একটি বিশেষ দিন হিসেবে স্থির করা হয়েছে। বিশ্ব জল দিবসে (World Water Day), বিশ্বব্যাপী লোকেরা পরিষ্কার জলের গুরুত্ব এবং জলকে অত্যাবশ্যক সম্পদ হিসেবে রক্ষা করার জন্য জনসচেতনা বৃদ্ধির দিন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
তাই এই সমস্যা এক সময় ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পরে যদি এমন চলতে থাকে। তাই ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে আমাদের এখন থেকেই সচেতন হতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের পথ খুজে বের করে নির্দিষ্ট লক্ষ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাস্টারদা সূর্য সেন।।।

সূচনা- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সূর্য সেন ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী।

মাস্টারদা সূর্য সেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

জন্ম ও শৈশব–

সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় বৈদ্যব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম রাজমণি সেন এবং মায়ের নাম শশী বালা সেন। রাজমণি সেনের দুই ছেলে আর চার মেয়ে। সূর্য সেন তাদের পরিবারের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলের নাম সূর্য ও কমল। চার মেয়ের নাম বরদাসুন্দরী, সাবিত্রী, ভানুমতী এবং প্রমিলা। শৈশবে পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন কাকা গৌরমণি সেনের কাছে মানুষ হয়েছেন। সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই খুব মনোযোগী ও ভাল ছাত্র ছিলেন এবং ধর্মভাবাপন্ন গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেন ছোটো বয়স থেকেই।

শিক্ষা জীবন–

তার প্রথম স্কুল ছিল দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে তিনি নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি ন্যাশনাল হাই স্কুলে ভর্তি হন। সূর্য সেন ১৯১২ সালে চট্টগ্রামের নন্দনকাননে অবস্থিত হরিশদত্তের ন্যাশনাল স্কুল থেকে প্রবেশিকা (এন্ট্রান্স) পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে এফ. এ.-তে ভর্তি হন। সে সময় আই.এ বা বর্তমানের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার পরিবর্তে ফার্স্ট আর্টস বা এফ. এ. পরীক্ষার নিয়ম ছিল। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এফ. এ. পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে পাশ করে তিনি একই কলেজে বি.এ-তে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের কোন এক সাময়িক পরীক্ষায় ভুলক্রমে টেবিলে পাঠ্যবই রাখার কারণে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিতাড়িত হন। ফলে, তাকে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে বি.এ পড়তে যেতে হয়। ১৯১৮ সালে (ঐতিহাসিক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে ১৯১৭ সালে) তিনি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন এবং চট্টগ্রামে ফিরে এসে ব্রাহ্ম সমাজের প্রধান আচার্য্য হরিশ দত্তের জাতীয় স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।স্বামী বিবেকানন্দ তাঁকে বিদগ্ধ মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করেন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে তিনি দেওয়ানবাজারে বিশিষ্ট উকিল অন্নদা চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত অধুনালুপ্ত ‘উমাতারা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে’ অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এসময় বিপ্লবী দলের সাথে তার সম্পর্ক গভীরতর হয়ে ওঠে এবং শিক্ষকতা করার কারণে তিনি ‘মাস্টারদা’ হিসেবে পরিচিত হন।

কর্ম জীবন–

সূর্য সেন বা সূর্য কুমার সেন যিনি মাস্টারদা নামে সমধিক পরিচিত, তার ডাকনাম ছিল কালু, কারণ তিনি প্রচন্ড কালো ছিলেন। পরজের মতে। ভারতবর্ষের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। পূর্ববঙ্গে জন্ম নেওয়া এই বাঙালি বিপ্লবী তত্‍কালীন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং নিজ জীবন বলিদান করেন। সূর্যসেনের বাহিনী কয়েকদিনের জন্যে ব্রিটিশ শাসনকে চট্টগ্রাম এলাকা থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। সূর্য সেনের অন্যতম সাথী বিপ্লবী অনন্ত সিংহের ভাষায় “কে জানতো যে আত্মজিজ্ঞাসায় মগ্ন সেই নিরীহ শিক্ষকের স্থির প্রশান্ত চোখ দুটি একদিন জ্বলে উঠে মাতৃভূমির দ্বিশতাব্দীব্যাপি অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে উদ্যত হবে? ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ দমনের জন্য বর্বর অমানুষিক অত্যাচারের প্রতিশোধ, জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ! কে জানতো সেই শীর্ন বাহু ও ততোধিক শীর্ন পদযুগলের অধিকারী একদিন সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ রাজশক্তির বৃহত্তম আয়োজনকে ব্যর্থ করে – তার সমস্ত ক্ষমতাকে উপহাস করে বত্‍সরের পর বত্‍সর চট্টগ্রামের গ্রামে গ্রামে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে তুলবে? তার সম্মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়। এছাড়া কলকাতা মেট্রো, সূর্য সেনের স্মরণে বাঁশদ্রোণী মেট্রো স্টেশনটির নামকরণ করেছে মাস্টারদা সূর্য সেন মেট্রো স্টেশন।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This