Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৭ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৭ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–
(ক) জাতীয় শিশু দিবস (বাংলাদেশ)।
আজ যাদের জন্মদিন—-

১০৭৮ – আব্দুল কাদের জিলানী, ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ত্ব ও ধর্মপ্রচারক।

১৪৭৩ – চতুর্থ জেমস, তিনি ছিলেন স্কটল্যান্ডের রাজা।
১৮৩৪ – গোটলিব ডেইমলার, জার্মান মোটর গাড়ির পুরোধা।
১৮৫৬ – মিখাইল ভ্রুবেল, রাশিয়ান চিত্রশিল্পী।
১৮৭৩ – মার্গারেট বন্ডফিল্ড, ইংল্যান্ডের প্রথম মহিলা কেবিনেট মন্ত্রী।
১৮৮১ – ওয়াল্টার রুডলফ হেস, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সুইস শারীরবিজ্ঞানী।
১৯১২ – মনোহর আইচ, ভারতীয় বাঙালি বডি বিল্ডার।
১৯২০ – শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও প্রথম রাষ্ট্রপতি।
১৯৩৮ – রুডলফ নুরেয়েভ, তিনি রাশিয়ান বংশোদ্ভূত ফরাসি নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার।
১৯৪২ – সঙ্গীতশিল্পী পূরবী দত্ত,ভারতীয় বাঙালি নজরুলগীতি বিশেষজ্ঞা।
১৯৪৫ – এলিস রেজিনা, তিনি ব্রাজিলিয়ান গায়িকা।
১৯৫৫ – গ্যারি অ্যালান সিনিস, তিনি আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক ও খাদ প্লেয়ার।
১৯৬২ – কল্পনা চাওলা, তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান প্রকৌশলী ও মহাকাশচারী।
১৯৭৫ – পুনীত রাজকুমার, ভারতীয় অভিনেতা, গায়ক ও প্রযোজক
১৯৭৬ – আলভারো রেকোবা, তিনি সাবেক উরুগুয়ের ফুটবল।
১৯৮২ – স্টিভেন পিএনার, তিনি দক্ষিণ আফ্রিকান ফুটবলার।
১৯৮৩ – রাউল মেইরেলেস, তিনি পর্তুগিজ ফুটবলার।
১৯৮৬ – এডিন জেকো, তিনি বসনীয় ফুটবলার।
১৯৮৯ – শিনজি কাগওয়া, তিনি জাপানি ফুটবলার।
১৯৯০ – সাইনা নেহওয়াল, ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১০৯৭ – খৃষ্টানরা বায়তুল মোকাদ্দাস দখলের জন্য ক্রুসেডের যুদ্ধ শুরু করে।
১৭৬৯ – বাংলার তাঁত ও মসলিন শিল্প ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ রাজের নির্দেশে বাংলার তাঁতিদের হাতের বুড়ো আঙ্গুল কাটা শুরু হয় ।
১৯৪৪ – মার্কিন বিমান বাহিনী ভিয়েনায় বোমাবর্ষণ করে।
১৯৪৮ – বৃটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গের প্রতিনিধিরা বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রুাসেলসে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করে।
১৯৫৫ – ভারতে ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ইন্সটিটিউশন আইএসআই(ISI)মার্ক চালু করে।
১১৯০ – ইংল্যান্ডের ইয়র্কে ৫ শতাধিক ইহুদীকে গণহত্যা করা হয়।
১৯৯২ – দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ অবসানের জন্য শ্বেতাঙ্গ ভোটাররা সংস্কারের পক্ষে গণভোট দেয়।
১৯৯৪ – এল সালভাদরে গৃহযুদ্ধের খবর সংগ্রহ কালে ৪ জন ডাচ সংবাদিক নিহত হয়।
১৯৯৪ – মিশরে ৯ জন ইসলমাপন্থীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
১৯৯৬ – পাকিস্তানের লাহোরে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ফাইনালে শ্রীলঙ্কা অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে।
২০০০ – উগান্ডায় গীর্জায় অগ্নিকান্ডে ৫৩০ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হয় এবং পরবতীতে আরো ৩৯৪টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
২০০১ – চীনে বোমা বিস্ফোরণে ৪টি হোটেল বিধ্বস্ত হয়; এতে ১০৮ জন নিহত হয়।
২০০৪ – কসোভোতে সার্ব ও আলবেনীয়দের জাতীগত দাঙ্গায় ২২ জন নিহত এবং ৫০০ জন আহত হয়।
২০০৭ – ত্রিনিদাদ এবং টোবাগোর কুইন্স পার্ক ওভালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের গ্রুপ পর্বের খেলায় বাংলাদেশ ভারতকে পরাজিত করে।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১০৪০ – হ্যারল্ড হারেফোট, তিনি ছিলেন ইংরেজি রাজা।
১৭৮২ – দানিয়েল বার্নুয়ি, তিনি ছিলেন ডাচ সুইস গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী।
১৮৪৬ – ফ্রিডরিশ ভিলহেল্ম বেসেল, জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ।

১৯৩৭ – অস্টিন চেম্বারলেইন, তিনি ছিলেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজ রাজনীতিবিদ।
১৯৫৬ – আইরিন জোলিও-কুরি, তিনি ছিলেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিদ।
১৯৫৭ – রামোন ম্যাগসেসে, তিনি ছিলেন ফিলিপিনো জেনারেল, রাজনীতিবিদ ও ৭ম প্রেসিডেন্ট।
১৯৮৩ – হ্যাল্ডান কেফার হার্টলাইন, তিনি ছিলেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান শারীরবিজ্ঞানী।
১৯৯৩ – হেলেন হায়েজ, তিনি ছিলেন আমেরিকান অভিনেত্রী।

১৯৯৬ – (ক)  অনিল চট্টোপাধ্যায়,প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা।

(খ)রেনে ক্লিমেন্ট , তিনি ছিলেন ফরাসি পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার।

২০০৭ – জন বাকাস, তিনি ছিলেন মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন সর্বপ্রথম উচ্চ-পর্যায় প্রোগ্রামিং ভাষা ফোরট্রান, বাকাস-নর আকার ও ফাংশান-পর্যায় প্রোগ্রামিং ধারণা উদ্ভাবণ করবার জন্য।

২০১৫ – বব এপলইয়ার্ড, ইংরেজ ক্রিকেটার।

২০১৯ – কৌতুক চলচ্চিত্র অভিনেতা চিন্ময় রায়।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

কল্পনা চাওলা : ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম নারী মহাকাশচারী।।।

সূচনা- ২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ফেরার পথে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল পর্যন্ত পৌঁছেও গেছিল তাঁদের মহাকাশযান। আর কয়েক মিনিটেই হয়তো ছুঁয়ে ফেলতেন পৃথিবীর মাটি। তখনই টেক্সাসের উপরে টুকরো টুকরো হয়ে যায় গোটা মহাকাশযান। কলম্বিয়া নভোযান বিপর্যয়ে যে সাতজন মহাকাশচারী এবং ক্রু মৃত্যুবরণ করেন তাদের মধ্যে তিনি একজন।

পৃথিবীতে অবতরণ করতে গিয়ে বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে এই নভোখেয়াযানটি বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল।
প্রাথমিক জীবন-
কল্পনা চাওলা ১৪৬৮খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের কারনালে বসবাসকারী এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কল্পনা তার মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপন করেন ঠাকুর বালনিকেতন সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল, কারনাল থেকে। এর পরে ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চণ্ডীগড়ের পাঞ্জাব প্রকৌশল কলেজ থেকে মহাকাশ প্রকৌশলের ওপর স্নাতকের পাঠ সম্পন্ন করেন। উচ্চশিক্ষার জন্যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং সেখানে ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে একই মহাকাশ প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষা সমাপ্ত করেন ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে। পরবর্তীতে কল্পনা ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো অ্যাট বউল্ডের থেকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রাপ্ত হন।
আরও চার বছর পরে, ১৯৮৮ সালে নাসায় যোগ দেন।কয়েক বছরেই স্বীকৃত পাইলট হয়ে ওঠেন কল্পনা। পরে নাসা রিসার্চ সেন্টারে ওভারসেট মেথডসের ভাইস প্রেসিডেন্টও হন। বাণিজ্যিক উড়ান চালানোর অনুমোদন ছিল তাঁর। সামুদ্রিক বিমান এবং মাল্টি-ইঞ্জিনের প্লেন চালানোরও লাইসেন্স ছিল তাঁর। পরে ফ্লাইট ইনস্ট্রাকটরও হয়েছিলেন তিনি।
এর মধ্যেই বিয়ে করেন মার্কিন লেখক জাঁ-পিয়ের হ্যারিসনকে। সে সুবাধে ১৯৯১ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব পেলে নাসার অ্যাস্ট্রোনট কোরের সদস্য স্বীকৃতি পান কল্পনা।
কর্ম জীবন-
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে কল্পনা নাসাতে তার কর্মজীবন শুরুর পর
১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ নভেম্বর পাড়ি দেন প্রথম মহাকাশ অভিযানে। মহাকাশযান কলম্বিয়া এসটিএস ৮৭-তে মিশন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ৩৭২ ঘণ্টা মহাকাশে কাটান তিনি। পৃথিবীর কক্ষপথে ২৫২ বার পরিক্রমা করেন। ১০০ লক্ষ মাইলেরও বেশি ভ্রমণ করেন মহাকাশে। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন।
২০০০ সালে কলম্বিয়া এসটিএস ১০৭-এর মহাকাশ অভিযানে ফের মহাকাশে যাওয়ার সুযোগ পান কল্পনা। নানা কারণে পিছিয়ে যাওয়ায় শেষমেশ ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মহাকাশযাত্রা করেন কল্পনারা। তিনি ছাড়াও আরও ছয় মহাকাশচারী ছিলেন ওই অভিযানে।
মৃত্যু–
পৃথিবীর মাটি ছুঁতে বাকি ছিল মাত্র কয়েক মিনিট। তখনই মুহূর্তের বিস্ফোরণে ছাই হয়ে যায় মহাকাশযান। আর তার ভিতরেই অনন্ত সম্ভাবনা নিয়ে শেষ হয়ে যান ভারতের প্রথম মহিলা মহাকাশচারী কল্পনা চাওলা। সারা পৃথিবী তাঁকে এই নামে চিনলেও, তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের আদরের মন্টো। মাত্র ৪২ বছরে শেষ হয়ে যায় তাঁর জীবন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি মহাকাশ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় কলম্বিয়া স্পেস সাটলটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় এক দুর্ঘটনার ফলে সাত জন ক্রুসহ বিধ্বস্ত হয় এবং কল্পনা সহ সকলে মারা যান।
শেষ ইচ্ছে-
ইন্দো-মার্কিন এই সাহসিনীর শেষ ইচ্ছে ছিল, মৃত্যুর পর তাঁর দেহভস্ম যেন হিমালয়ের বুকে বা জিওন ন্যাশনাল পার্কে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মেয়ের ইচ্ছে পূর্ণ করেছিলেন বাবা।কল্পনা চাওলার দেহাবশেষ তাঁর ইচ্ছানুসারে উটাহের জাতীয় উদ্যানে দাহ করা হয়েছিল ও অস্থিভষ্ম ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সম্মাননা–
তাঁর সম্মানে, ২০০২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতে প্রবর্তিত মেট-স্যাট সিরিজের প্রথম উপগ্রহ মেটস্যাট -১ নামকরণ করা হয়েছিল কল্পনা -১।
তাঁর সম্মানে ভারত ও আমেরিকার বেশ কয়েকটি বৃত্তি, রাস্তা, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান নামকরণ করা হয়েছে।
উপসংহার-
সৌরজগতের নাগরিক হিসেবে নিজের পরিচয় দেওয়া কল্পনার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল ভারত জুড়ে। আজও ভারতের মহাকাশ চর্চায় তাঁর অবদান ভোলেননি কেউ।
সংক্ষেপে জেনে নিন কল্পনা চাওলা সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য।
১) কল্পনার জন্ম হয় ১৯৬২ সালের ১৭ মার্চ হরিয়ানার কার্নালে।
২) কল্পনা চাওলা বি টেক পাশ করেন পাঞ্জাব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে। কোনওদিন তিনি ক্লাশে সর্বোচ্চ নম্বর পাননি। কিন্তু বরাবর থাকতেন প্রথম পাঁচে।
৩) ১৯৮২ তে তিনি চলে যান আমেরিকায়। টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন।
৪) কল্পনার বাবা-মা তাঁর নাম দিয়েছিলেন মন্টো। কিন্তু তিনি মন্টো নামটা নিজের ডাক নামই বানিয়ে ফেলেন।
৫) ১৯৮৩ সালে বিয়ে করেন কল্পনা। তাঁর বরের নাম জিন পিয়েরে হ্যারিসন।
৬) কল্পনা চাওলা পছন্দ করতেন, কবিতা, নাচ, এবং সাইকেল চালাতে।
৭) তাঁর স্বপ্নই ছিল মহাকাশে যাওয়ার। সেই অনুযায়ী তিনি ধাপে ধাপে পড়াশোনা করতে থাকেন।
৮) নাসা রিসার্চ সেন্টারে তিনি ওভারেস্ট মেথডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
৯) কল্পনা চাওলার কমার্শিয়াল ফ্লাইট চালানোর লাইসেন্সও ছিল।
১০) ১৯৯১ সালে কল্পনা চাওলা আমেরিকার নাগরিকত্ব পান।
১১) নাসা স্পেস ফ্লাইট মেডেল পান তিনি।
১২) ২০০৩ সালের আজকের দিনেই তিনি কলম্বিয়া স্পেস শাটল ধ্বংসের সময় মারা যান।
১৩) কল্পনা বিশ্বাস করতেন না তিনি কোনও দেশের নাগরিক। তিনি বিশ্বাস করতেন তিনি সৌরজগতের নাগরিক।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ঘুরে আসুন মন্দিরের শহর বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর।।।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।।
তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়। কেউ চায় বিদেশে ভ্রমণে, আবার কেউ চায় দেশের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণে।

এমনি এক ভ্রমণ এর জায়গা হলো  পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর।
কলকাতার আশেপাশে দেখার মতো অনেক জায়গা আছে যার মধ্যে একটি হল বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর।  ঐতিহ্যবাহী পোড়ামাটির মন্দিরের জন্য বিষ্ণুপুরকে বাঁকুড়া জেলার মন্দির শহরও বলা হয়।
সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে মল্ল রাজারা এখানে তাদের রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বাংলায় পাথরের স্বল্প সরবরাহের কারণে, পোড়া মাটির ইট বিকল্প হিসাবে এসেছিল এবং বাঙালি স্থপতিরা ‘পোড়ামাটি’ নামে পরিচিত একটি সুন্দর কারুকাজ তৈরি করার একটি নতুন উপায় খুঁজে পান, রাজা জগৎ মল্ল।  এবং তার বংশধরেরা পোড়ামাটির এবং পাথর শিল্পের পথপ্রদর্শক।  গড়েছেন অসংখ্য মন্দির।
অবিশ্বাস্য কারুকার্য দ্বারা নির্মিত এই সমস্ত প্রাচীন মন্দিরগুলি হিন্দু সংস্কৃতির বিভিন্ন ইতিহাস দেখায়, এছাড়াও এই বিষ্ণুপুর এখন বিশ্বমানের পোড়ামাটির শিল্পের জন্য পরিচিত, পোড়ামাটির তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্র (পোড়া মাটি), গয়না, বিভিন্ন মূর্তি এখানে পাওয়া যায়।  বালুচরী শাড়ি।
কলকাতা থেকে এই বিষ্ণুপুরের দূরত্ব প্রায় 140 কিলোমিটার, তাই এখানে আসা এবং বিষ্ণুপুরের প্রাচীন পোড়ামাটির মন্দিরের ভাস্কর্য এবং বিভিন্ন পোড়ামাটির কারুশিল্প উপভোগ করতে এখানে সপ্তাহান্তে কাটানো খুব সহজ।
এই জায়গাটি তাদের জন্যও উপযুক্ত যাদের সময় কম এবং যারা একদিনে কলকাতার আশেপাশে ঘুরতে চান (কলকাতার কাছে ডে ট্রিপ)।
কী কী দেখবেন ….
মৃন্ময়ী মন্দির : রাজা জগৎ মল্ল এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, দেবী দুর্গা এখানে মা মৃন্ময়ী রূপে পূজিত হন । “মহাষ্টমী-সন্ধিপূজা” পবিত্র মুহূর্তে, এখানে একটি কামান দাগানো হয় এবং তারপরে শাকসবজি বলি দেওয়া হয়।
জোড়বাংলা : মন্দিরটি পশ্চিমবঙ্গের পোড়ামাটির শিল্পের একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ এবং একটি অনন্য স্থাপত্য কাঠামোর মালিক। বিশেষ ‘দো চালা’ আকৃতির কারণে মন্দিরটির নামকরণ করা হয়েছে ‘জোড়বাংলা । পোড়ামাটির কাহিনী দিয়ে সজ্জিত প্যানেলগুলি ‘ভীষ্মের সরসজ্জা’, ‘রাম-সীতার বিবাহ’, ‘দুই পুত্রের সাথে মা পার্বতী’, ‘বালগোপালের ক্রিয়াকলাপ’, ‘লক্ষ্মণ ও শূর্পনখার গল্প’ এবং আরও অনেক কিছুর মতো মহাকাব্যিক দৃশ্যগুলি সুন্দরভাবে চিত্রিত করে ।
রসমঞ্চা :  ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা হাম্বির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত, ল্যাটেরাইট বেদিতে নির্মিত মন্দিরটি মিশরের পিরামিডের মতো আকৃতির।  এই মন্দিরটি পোড়া মাটির খিলান দিয়ে নির্মিত অনেকগুলো কক্ষ দিয়ে নির্মিত।
মদনমোহন মন্দির: মল্ল রাজা দুর্জন ​​সিংহ দেব ১৬৯৪ সালে ভগবান মদনমোহনের নামে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটি এখনও পর্যন্ত একটি সক্রিয় মন্দির।
গড় দরজা: বিষ্ণুপুর দুর্গের দুটি গর্বিত প্রবেশদ্বার রয়েছে।  স্থানীয় লোকজন তাদের ‘গড় দরজা’ বলে ডাকে।  ‘মুর্চা পাহাড়’ এর পাশে পাথরের তৈরি একটি ছোট ঢিবি দেখা যায়।  ছোট গেট পেরিয়ে একটি বিশাল ফটক এসেছে যা ছিল বিষ্ণুপুর রাজ্যের প্রবেশদ্বার।
লালবন্ধ- জলের ইতিহাস: হ্রদটি পানীয় জলের জন্য এবং শহরকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নির্মিত হয়েছিল।  মল্ল রাজ রঘুনাথ সিং লালবাই নামে একজন পারস্য নৃত্যশিল্পীর প্রতি মোহগ্রস্ত ছিলেন বলে জানা যায়।  তিনি তাকে তার সুরক্ষায় নিয়ে যান এবং পরে লালবাঁধ নামে এই বড় পুকুরটি খনন করেন।
আপনি এখানে এই সমস্ত জায়গায় যেতে পারেন, আপনি এখন পোড়া মাটির বাজার থেকে বিভিন্ন পোড়ামাটির জিনিসপত্র, বাঁকুড়ার বিখ্যাত গামছা, বালুচরী শাড়ি কিনতে পারেন।  এই সব জায়গা দেখার পর আপনি চাইলে বিকেলের ট্রেনে কলকাতায় ফিরে যেতে পারেন বা যেতে পারেন।
শ্যাম রায় : পাঁচটি চূড়া রয়েছে বলে এটি ‘পাঁচ চূড়া’ মন্দির নামে পরিচিত।  অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয় প্যানেলে শ্বাসরুদ্ধকর পোড়ামাটির শিল্পের কারণে এটি বিষ্ণুপুরের তারকা আকর্ষণগুলির মধ্যে একটি।  এই মন্দিরের আরেকটি আকর্ষণ হল একটি বিশাল রাসচক্র যা ‘গোপিনীদের মধ্যে রাধা-কৃষ্ণ লীলা’র বিভিন্ন রূপ চিত্রিত করে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৬ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৬ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

 

১৮৩৯ – সুলি প্রুদোম, ফরাসি সাহিত্যিক।

১৮৮০ – রাজশেখর বসু, বাঙালি সাহিত্যিক, অনুবাদক, রসায়নবিদ ও অভিধান প্রণেতা।

১৮৯২ – সেসার ভাইয়েহো, পেরুর কবি, লেখক, নাট্যকার এবং সাংবাদিক।

১৯৪০ – বেরনার্দো বেরতোলুচ্চি, ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা।

১৯৫০ – কবীর সুমন, বাঙালি গায়ক।

১৯৫৩ – রিচার্ড স্টলম্যান, মার্কিন প্রোগ্রামার,মুক্ত সোর্সের প্রবক্তা ও গ্নু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৫৩ – ইজাবেল উপের, ফরাসি অভিনেত্রী।

১৯৫৮ – ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত।

১৯৭৪ – হিথ স্ট্রিক, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৭ – ব্যাবিলনিয়ানরা জেরুসালেম লুণ্ঠন করে এবং রাজা হিসাবে জ্যাকোনায়া কে বাদ দিয়ে জ্যাডেকিয়া কে সিংহাসন দেয়া হয়।
১১৯০ – ইয়র্ক এর ক্লিফোর্ডস টাওয়ারে ইহুদীদের
১৯৩৫ – বেলুড় মঠে রামকৃষ্ণ মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়।
১৯৮৯ – মিশরের গিজার মহা পিরামিড এর পাশে ৪,৪০০ বছর পুরানো একটি মমি পাওয়া যায়।
২০০৫ – ইসরাইল আনুষ্ঠানিকভাবে জেরিকো নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের উপর ছেড়ে দেয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৩৭ – রেভারেণ্ড বিমলানন্দ নাগ ,প্রখ্যাত বাগ্মী, দেশসেবক।

১৯৭১ – অমলকৃষ্ণ সোম, বাঙালি মঞ্চাভিনেতা।

২০০৭ – মানজারুল ইসলাম রানা, বাংলাদেশী ক্রিকেটার।
২০১১ – খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।

২০১৩ – জামাল নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ।

২০২১ – মওদুদ আহমেদ, বাংলাদেশের সাবেক উপরাষ্ট্রপতি, অষ্টম প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

কলকাতা শহরের ৩ টি জনপ্রিয় পার্ক।।।।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।।
তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়। কেউ চায় বিদেশে ভ্রমণে, আবার কেউ চায় দেশের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণে।

এমনি এক ভ্রমণ এর জায়গা হলো  পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা।
মনোরম স্পট, গঙ্গার তীরের দৃশ্য, শপিং মল ছাড়াও, কলকাতায় বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি পার্ক রয়েছে যা বন্ধু এবং পরিবারের সাথে একটি মজার এবং উত্তেজনাপূর্ণ দিন কাটানোর জন্য আদর্শ।  কলকাতার এই পার্কগুলির মধ্যে কিছু মজার ক্রিয়াকলাপ যেমন বোটিং, রাইড, দোলনা, বিস্তৃত সবুজ এলাকা সব বয়সের মানুষের জন্য উপযুক্ত।

এলিয়ট পার্ক——-
এলিয়ট পার্ক টাটা স্টিল অফিসের বিপরীতে চৌরঙ্গীর পার্ক স্ট্রিট ক্রসিংয়ের কাছে অবস্থিত।  পার্কটিতে দুটি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে এবং পুরো পার্কটি বিশালাকার গাছ, বাঁশঝাড়ের সারি এবং বসার জায়গা দিয়ে ঘেরা।  পুকুরে মাছও দেখতে পাবেন।  পার্কের মাঠের মধ্যে সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ এবং সু-রক্ষণাবেক্ষণ করা বাগান ছাড়াও বাগানের মধ্যে একটি ছোট প্যাগোডা রয়েছে।  বাইরের খাবারের অনুমতি নেই, আকানে খাবার বিক্রেতারা অতিথিদের জন্য স্ন্যাকস এবং রিফ্রেশমেন্ট প্রস্তুত করেছে। পার্কের পরিবেশ খুবই শান্তিপূর্ণ এবং যে কেউ এখানে নির্জনে কিছু সময় কাটাতে পারে।

মিলেনিয়াম পার্ক—–
মিলেনিয়াম পার্ক হল একটি মনোরম পার্ক যা হুগলি নদীর তীরে বিবিডি বাগের স্ট্র্যান্ড রোডে অবস্থিত।  পার্কটি 2.5 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এটি কলকাতার অন্যতম দর্শনীয় স্থান।  পার্কটিকে মিলেনিয়াম পার্ক বলা হয় কারণ এটি কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি একটি সহস্রাব্দ উদযাপনের জন্য কলকাতার মানুষকে দিয়েছিল।
পার্কটি বিভিন্ন ধরণের সু-রক্ষণাবেক্ষণ করা গাছ, বেঞ্চ, বাগান এবং মনোরম নিয়ন আলো দিয়ে সজ্জিত।
মিলেনিয়াম পার্কের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল হুগলি রিভারফ্রন্ট এবং হাওড়া ব্রিজের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য, বিশেষ করে সন্ধ্যায়।  পার্কে কিডস জোন এবং বোটিং সুবিধা রয়েছে।

ইকো পার্ক—
নিউ টাউনের ইকো-পার্ক শহরের সবচেয়ে বড় খোলা জায়গাগুলির মধ্যে একটি।  বিশাল পার্কটি 42-হেক্টর জলাধার সহ 194 হেক্টর জুড়ে রয়েছে।  একটি স্বাস্থ্যকর ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার করতে ইকো-পার্ক তৈরি করা হয়েছিল।  পার্কটি সবুজ লন, বন্যপ্রাণী, সপ্তম আশ্চর্যের প্রতিরূপ, থিমযুক্ত আকর্ষণ, বিনোদনমূলক এলাকা এবং সুন্দর হ্রদ দ্বারা বেষ্টিত।  আপনি খেলনা ট্রেন, সান্তা মনিকা রাইড, সাইক্লিং, হাই স্পিড বোটিং, ওয়াটার জার্বিং, রাইফেল শ্যুটিং এবং অন্যান্য অনেক বহিরঙ্গন কার্যকলাপ উপভোগ করতে পারেন।  রবি অরণ্য, ট্রপিক্যাল ট্রি গার্ডেন, হরিণালয়, জাপানিজ গার্ডেন এবং বেঙ্গল ভিলেজ দেখতে আপনি পার্ক বরাবর হেঁটে যেতে পারেন।  সব বয়সের মানুষ এখানে ভালো সময় কাটাতে পারে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে, জেনারেল বিপিন রাওয়াত : যিনি ভারতের প্রথম সিডিএস হয়েছিলেন।।।

জেনারেল রাওয়াতের চার দশকেরও বেশি সময়ের কেরিয়ার। যা তাঁকে প্রতিরক্ষায় তিন ধরনের পরিষেবায় প্রথম জয়েন্ট চিফ নিযুক্ত হতে সাহায্য করেছে। সিডিএস এক অর্থে সরকারের সামরিক-সম্পর্কিত উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনাকে একছত্রে নিয়ে আসা যার প্রধান লক্ষ্য। জেনারেল বিপিন রাওয়াত, পিভিএভিএসএম, ইউওয়াইএসএম, এভিএসএম, ওয়াইএসএম, এসএম, ভিএসএম ভারতীয় সামরিক বাহিনীর প্রথম প্রতিরক্ষা প্রধান ও ভারতীয় সেনার সেনাপ্রধান ছিলেন।

২৬তম সেনাপ্রধান হিসেবে তিনি ২০১৬ এর ৩১ ডিসেম্বর জেনারেল দলবীর সিং সোহাগের কাছ থেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণে তাঁর স্থলে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন। তিনি সেনাপ্রধান হওয়ার পূর্বে ভারতীয় সেনার সেনা উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভারতীয় সেনার পূর্ব কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ এর দায়িত্ব পালন করেছেন।
জীবন এবং শিক্ষা-
বিপিন রাওয়াত ১৬ মার্চ ১৯৫৮ সালে উত্তরাখণ্ডের পাউরিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা লক্ষ্মণ সিং লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। তিনি মিরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিলিটারি-মিডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে পিএইচডিও করেছেন। জেনারেল বিপিন রাওয়াত ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি, ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ এবং হাইকমান্ড ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি ফোর্ট লিভেনওয়ার্থ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কমান্ড এবং জেনারেল স্টাফ অধ্যয়ন করেন।
রাওয়াত লেখাপড়া করেন ক্যামব্রিয়ান হল (দেহরাদুন), সিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুল এবং অবশেষে ‘ভারতীয় সামরিক একাডেমী’তে, যেখান থেকে ভালো ফলাফল করে ‘সম্মানের তরবারী’ লাভ করেছিলেন। তিনি তামিলনাড়ুর ‘প্রতিরক্ষা সেবা স্টাফ কলেজ’ থেকে স্টাফ কোর্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ট লেভেনওয়ার্থ থেকে ‘উচ্চতর আদেশ প্রশিক্ষণ’ লাভ করেন। এছাড়া তিনি তামিলনাড়ুর মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিরক্ষাবিদ্যায় এমফিল করেন।
ব্যক্তিগত জীবন-
১৯৮৫ সালে, রাওয়াত মধুলিকা রাওয়াতকে (née রাজে সিং) বিয়ে করেন। একটি পূর্ববর্তী রাজকীয় পরিবারের বংশধর, তিনি ছিলেন কুনওয়ার মৃগেন্দ্র সিং-এর কন্যা, কোন এক সময় শাহদোল জেলার সোহাগপুর রিয়াসাতের পরগনার রিয়াসতদার এবং ১৯৬৭ এবং ১৯৭২ সালে কানাডায় জেলা থেকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন। গোয়ালিয়র এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক। এই দম্পতির কৃত্তিকা ও তারিণী নামে দুই কন্যা ছিল।
মধুলিকা রাওয়াত সেনাপ্রধান হিসেবে বিপিন রাওয়াতের মেয়াদকালে আর্মি ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (AWWA) এর সভাপতি ছিলেন। তিনি ডিফেন্স ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (ডিডব্লিউএ) এর সভাপতি হয়েছিলেন, পদটি তৈরি করার পরে এবং জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে প্রথম সিডিএস হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি প্রতিরক্ষা কর্মীদের স্ত্রীদের আর্থিকভাবে স্বাধীন করার জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি এনজিও এবং কল্যাণ সমিতির সাথেও জড়িত ছিলেন যেমন বীর নারিস যা সামরিক কর্মীদের বিধবা, ভিন্নভাবে প্রতিবন্ধী শিশু এবং ক্যান্সার রোগীদের সহায়তা করে।
সেনাজীবন-
বিপিন কমিশন পান ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে, তার পিতার ইউনিট ৫/১১ গোর্খা রাইফেলসে। তার সব ধরনের যুদ্ধ পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিলো এবং তিনি ১০ বছর জঙ্গীবিরোধী অভিযানে নিয়োজিত থেকেছিলেন। তিনি জম্মু-কাশ্মীর-এর উরিতে একটি কম্পানির অধিনায়কত্ব, পূর্বাঞ্চলীয় সেক্টরের একটি পদাতিক ব্যাটেলিয়ন অধিনায়ক, রাষ্ট্রীয় রাইফেলসে (আধা-সামরিক বাহিনী) একজন ব্রিগেড অধিনায়ক, ১৯তম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি (সাউদার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চীফ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনী প্রধান হওয়ার পূর্বে তিনি ‘ভাইস চীফ অব আর্মি স্টাফ’ (উপসেনাবাহিনীপ্রধান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন যে পদে তিনি ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ছিলেন। সেনাপ্রধান হওয়ার ক্ষেত্রে তার নাম আসে তার চেয়ে দুজন ঊর্ধ্বতন জেনারেলকে টপকিয়ে, তারা হলেন প্রবীণ বকশী এবং পি এম হারিয।
প্রতিরক্ষা প্রধান-
বিপিন রাওয়াতকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারীতে। এই পদে তিনি নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানরা তাঁকে কাজের ব্যাপারে রিপোর্ট করে থাকেন। তিনি সিডিএস হওয়ার আগ পর্যন্ত চিফ অফ স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান পদেও কাজ করেছেন।
ডোকলামে চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ
২০১৭ সালে, ডোকলামে ভুটান, চীন এবং ভারতের মধ্যে একটি ত্রিসংযোগ সীমান্ত এলাকার কাছে ডোকলামে একটি রাস্তা চীনা নির্মাণকে কেন্দ্র করে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির মধ্যে একটি ৭৩-দিনের সামরিক সীমান্ত স্থবিরতা ঘটে। অচলাবস্থা শেষ হওয়ার পরে রাওয়াত বলেছিলেন যে চীন ‘তার পেশীগুলিকে নমনীয় করা’ শুরু করেছে এবং প্রান্তিকতার সীমা পরীক্ষা করার জন্য ধীরে ধীরে ভারতের দখলকৃত অঞ্চলকে ‘নিবল করার’ চেষ্টা করছে। তিনি বলেছিলেন, ভারতকে “চীন” সম্পর্কে “সতর্ক” থাকতে হবে এবং সংঘাতে পরিণত হতে পারে এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে-
রাওয়াত বলেছিলেন যে ভারত “পাকিস্তানের সাথে সমঝোতার কোনও সুযোগ দেখেনি কারণ তার সামরিক, রাজনীতি এবং জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ভারত তাদের দেশকে টুকরো টুকরো করতে চায়”। রাওয়াত সন্দেহ করেছিলেন যে পাকিস্তান “চীনের সাথে ভারতের ব্যস্ততার সুযোগ নিতে পদক্ষেপ নিতে পারে”। রাওয়াত এইভাবে কোনো সমাধান বা প্রতিকার না দিয়েই দুই ফ্রন্টের যুদ্ধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
দুই সম্মুখ যুদ্ধ-
২০১৯ সাল পর্যন্ত, রাওয়াত বিবৃতি দিয়েছিলেন যে ভারতকে চীন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি ফ্রন্টে একযোগে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করে দিয়েছিল। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে, দিল্লিতে একটি সেমিনার চলাকালীন, রাওয়াত বলেছিলেন যে তিনটি দেশেরই পারমাণবিক অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও চীন এবং পাকিস্তানের সাথে ভারত সীমান্তে “যুদ্ধ বাস্তবতার রাজ্যের মধ্যে রয়েছে”। সমালোচকদের মতে, রাওয়াত এই ধরনের ফলাফলের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বা এটিকে ব্যর্থ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
সেনাবাহিনীর আধিপত্য নিয়ে মন্তব্য-
রাওয়াত যুদ্ধে যুদ্ধে বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর উপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘আধিপত্য এবং প্রাধান্য’-এর উপর জোর দেন। রাওয়াত বলেছিলেন, “যুদ্ধগুলি স্থলভাগে লড়াই করা হবে, এবং তাই বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীর উপর সেনাবাহিনীর প্রাধান্য বজায় রাখতে হবে। বিবৃতিটি বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীকে বিরোধিতা করেছিল।
২০২১ সালের গোড়ার দিকে, রাওয়াত ভারতীয় বিমান বাহিনীকে ভারতের প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক এবং অবকাঠামোর একটি “সমর্থক হাত” বলে অভিহিত করেছিলেন। এয়ার চিফ মার্শাল আর কে এস ভাদৌরিয়া প্রতিক্রিয়ায় একটি জনসাধারণের বিবৃতি দিয়েছেন যে আইএএফ একটি সহায়ক সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে।
সম্মাননা-
প্রায় ৪৩ বছরের কর্মজীবনে, তিনি বীরত্ব এবং বিশিষ্ট সেবার জন্য বহুবার ভূষিত হন। তিনি ২০০১ সালে বিশেষ সেবা পদক, ২০০৫ সালে সেনা পদক, ২০০৯ সালে যুধ সেবা পদক, ২০১৩ সালে অতি বিশেষ সেবা পদক, ২০১৬ সালে উত্তম যুধ সেবা পদক এবং ২০১০ সালে তিনি ৯টি বিশেষ দলে ভূষিত হন। দুইবার সিওএএস কম্যান্ডেশন এবং আর্মি কমান্ডারের প্রশংসায় ভূষিত। জাতিসংঘে দায়িত্ব পালনকালে তিনি দুইবার ফোর্স কমান্ডারের প্রশংসায় ভূষিত হন। ২০২২ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের সম্মাননা তালিকায় তাকে মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল।
মৃত্যু–
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুর কুন্নুরে বিপিন রাওয়াতসহ ১৪ জনকে নিয়ে উড়েছিল হেলিকপ্টার। ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বিধ্বস্ত হয় বান্দিশোলায়। এর পর তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী এবং তার স্টাফরা এই হেলিকপ্টারে ছিলেন। এ দূর্ঘটনায় চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন। এর সাথে সাথে পরিসমাপ্তি ঘটে এক দুর্ধর্ষ কেরিয়ারের।

।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে, কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি ব্যঙ্গচিত্রী ও লেখক – চণ্ডী লাহিড়ী।।।।

একজন ভারতীয় বাঙালি ব্যঙ্গচিত্রী ও লেখক ছিলেন চণ্ডী লাহিড়ী। তিনি বৃটিশ ভারতের নদীয়ার নবদ্বীপের বুড়ো শিবতলায় তাঁর মামার বাড়িতে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহিনীমোহন লাহিড়ী ছিলেন বর্ধমান জেলার চণ্ডীপুরের বাসিন্দা। প্রথমে নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলে তাঁর পড়াশোনা শুরু হয়। নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে স্নাতক হন। পরে চলে আসেন কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ.করেন।

ব্যঙ্গচিত্র জীবন———
১৯৫২ সালে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় দৈনিক লোকসেবক পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজে। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে বাংলা কার্টুনচর্চার সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। ব্যঙ্গচিত্রী হিসেবে ডেভিড লোয়ির অনুরাগী ভক্ত ছিলেন তিনি।

তাঁর সমকালীন শিল্পী হিসেবে বিখ্যাত সাহিত্যিক আর. কে. নারায়ণের ভাই ব্যঙ্গচিত্রী রাসীপুরম কৃষ্ণস্বামী লক্ষ্মণ, মারিও মিরান্দা, কুট্টি প্রমুখের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। চণ্ডী লাহিড়ীর সৃষ্ট পকেট কার্টুন ‘তির্যক’ ও ছোটোদের জন্য সৃষ্ট কমিকস জনপ্রিয় হয়।
সর্বভারতীয় নানা পত্রিকায় কার্টুন এঁকেছেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক দুই ধরনের কার্টুন আঁকতেন চণ্ডী লাহিড়ী। তাঁর অসংখ্য ব্যঙ্গচিত্র ভারতের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের জন্য কার্টুন এঁকেছেন তিনি।১৯৬১ সালে ব্যঙ্গচিত্রী হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় কার্টুনচর্চা শুরু করেন। আনন্দবাজার পত্রিকায় ১৯৬২ সালে যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি কার্টুন নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন —- কার্টুনের ইতিবৃত্ত, বাঙালির রঙ্গব্যঙ্গচর্চা, গগনেন্দ্রনাথ: কার্টুন ও স্কেচ। তাঁর কার্টুন সংগ্রহের নাম চণ্ডী লুকস অ্যারাউন্ড এবং ভিজিট ইন্ডিয়া উইথ চণ্ডী।

অ্যানিমেশন——-

কেবল ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন নয়, নিজের দক্ষতায় অনেকগুলি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছেন তিনি, যার মধ্যে ‘হংসরাজ’, ‘ধন্যিমেয়ে’, ‘মৌচাক’, ‘চারমূর্তি’ প্রভৃতি খুবই বিখ্যাত।

সম্মাননা—

চণ্ডী লাহিড়ী তাঁর মেয়ে তৃণার সঙ্গে যৌথভাবে ‘মানুষ কি করে মানুষ হল’ নামে তাঁর একটি নৃবিজ্ঞান বিষয়ক কাজের জন্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নরসিংহ দাস পুরস্কারে সম্মানিত হন ।

মৃত্যু——

২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি চণ্ডী লাহিড়ীর মৃত্যু হয়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৩ মার্চ, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৩ মার্চ । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭৩৩ – যোশেফ প্রিস্টলি, ইংরেজ রসায়নবিদ।

১৮৪৪ – মনমোহন ঘোষ,কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম বাঙালি ব্যরিস্টার।

১৮৬১ – জলধর সেন, সাহিত্যিক ও সম্পাদক।

১৮৯২ – গোবর গোহ (যতীন্দ্রচরণ গুহ), ভারতীয় কুস্তিগীর ও পালোয়ান।
১৯০০ – গেওর্গে সেফেরিস, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী গ্রিক কবি।

১৯১৪ – বাঙালি কবি, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ সরোজ দত্ত।

১৯১৫ – ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার ও প্রাবন্ধিক প্রতিভা বসু।
১৯১৬ – প্রবাসজীবন চৌধুরী, ভারতীয় সৌন্দর্যতত্ত্ব বিশারদ।
১৯৩০ –  বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিনের জন্ম।

১৯৩১ – চণ্ডী লাহিড়ী, ভারতীয় বাঙালি ব্যঙ্গচিত্রী ও লেখক।
১৯৩৬ – আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, কবি ও লেখক।

১৯৬৬ – ইসরাফিল আলম, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

৪৫ – এই দিন থেকে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সূচনা।
৬২৪- বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৭৫৮ – হেলির ধূমকেতু গ্রহকক্ষস্থ সূর্যের নিকটতম বিন্দুতে অবস্থান নেয়।
১৭৮১ – স্যার উইলিয়াম হার্শেল ইউরেনাস গ্রহ অবিষ্কার করেন।
১৭৯৯ – মেদিনীপুরে চুয়াড় বিদ্রোহ শুরু গোবর্ধন দিকপতির নেতৃত্বে।
১৮৭৮ – বিভিন্ন ভাষার সংবাদপত্রের জন্য ব্রিটিশ রাজ কর্তৃক সংবাদপত্র আইন প্রণীত হয়।
১৮৮১ – রাশিয়ার জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার আততায়ীর হাতে নিহত হন।
১৮৯৬ – নেদারল্যান্ডসে প্রথম চলচ্চিত প্রদর্শিত হয়।
১৯০৬ – মার্কিন নারী ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম পুরোধা নেত্রী সুসান ব্রাউলেন অ্যান্টনির মৃত্যু।
১৯২২ – কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৯৩০ – সৌরমন্ডলের নবম গ্রহ প্লুটো আবিষ্কৃত হয়।
১৯৫৪ – ইন্দোচীনে দিয়েন বিয়েন ফু’র যুদ্ধ শুরু হয়।
১৯৭১ – শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের নেতৃত্বে স্বাধীনতা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজের প্রথম মিছিল।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সুইজারল্যান্ড।
১৯৮৭ – ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠা।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭৩৯ – সুবাদার সুজাউদ্দিন খান।
১৭৪৮ – সুইজারল্যান্ডের খ্যাতনামা গণিতবিদ ইয়োহান বার্নুয়ি।

১৮৮১ – রাশিয়ার জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার।
১৮৯৪ – জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী হার্টজ।
১৯০১ – বেঞ্জামিন হ্যারিসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৩তম রাষ্ট্রপতি।
১৯০৬ – মার্কিন নারী ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম পুরোধা নেত্রী সুসান ব্রাউলেন অ্যান্টনি।

১৯৩৬ – স্যার কেদারনাথ দাস কলকাতার খ্যাতনামা স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসাশাস্ত্রের শিক্ষক ।
১৯৬৭ – ফ্রাঙ্ক ওরেল, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার ও জামাইকান সিনেটর।
১৯৬৮ – ইবরাহিম ইসমাইল চুন্দ্রিগড়, পাকিস্তানের ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।

১৯৭৬ – জসীম উদ্‌দীন,  একজন বাঙালি কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক।

১৯৮৫ – বাঙালি কবি দীনেশ দাশ।
১৯৯৬ – ক্রিস্তফ কিয়েশ্‌লফ্‌স্কি, পোল্যান্ডের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা।

২০০৪ – বিলায়েত খাঁ ভারতের বিখ্যাত বাঙালি সেতার বাদক।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভ্রমণ শব্দটির উৎস ও ইতিহাস – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

ভ্রমণ শব্দটির উৎস ইতিহাসের কালে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে । ভ্রমণ বা ট্রাভেল শব্দটার উৎপত্তি হয়েছে আদি ফরাসি শব্দ travail থেকে । ফরাসি শব্দ travail  অর্থ শ্রম, পরিশ্রম, (labor, toil, ) ইত্যাদি । আবার travailler অর্থ হচ্ছে কাজ, পরিশ্রম, শ্রম, যন্ত্রণা, কষ্ট,  (Work, labor, toil, suffering from painful efforts, troubles, ) ইত্যাদি । অনেকের মতে প্রাচীনকালে ভ্রমণ ছিল ভীষণ কষ্টকর । তাই travailler  শব্দটা কষ্টকর জ্ঞাতার্থে ব্যবহৃত হতে পারে ।  তবে বর্তমান ডিজিটাল যুগের কষ্টকর  ভ্রমণ নির্ভর করছে  গন্তব্যস্থলের উপর । যেমন মাউন্ট এভারেস্টে ভ্রমণ ঝুঁকির ও কষ্টের ।
এবার আসছি, ভ্রমণ বলতে আমরা কী বুঝি ?

ভ্রমণের ব্যবহারিক অর্থ নানানরকম । যেমন প্রাতকালীন ভ্রমণ, বৈকালিন ভ্রমণ, নদীর পারে ভ্রমণ, জ্যেৎস্নার আলোয় ভ্রমণ, ট্রেনে-বাসে-উড়োজাহাজে-জলযানে ভ্রমণ, ইত্যাদি । যদি ভ্রমণের মাধ্যম ধরি তাহলে ভ্রমণ হতে পারে হাঁটা, কিংবা সাইক্লিং’এর মাধ্যমে  অথবা গাড়িতে যেমন পাবলিক পরিবহন, প্রাইভেট গাড়ি, রেল এবং বিমান ।   আক্ষরিক অর্থে আমরা যেটা বুঝি ভ্রমণ অর্থ বেড়ানো, ঘোরাঘুরি, এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাওয়া, অর্থাৎ পর্যটন করা । অন্য অর্থে দেশ ভ্রমণ । এছাড়া ভ্রমণ অর্থ যেটা বুঝি, সেটা হচ্ছে চিত্তবিনোদন, পর্যটন ও অবকাশ যাপন ।  ভ্রমণ মানুষের জীবনে আনে বৃহত্তের আহ্বান । আনে অজানা সৌন্দর্যের সংবাদ । অচেনার সান্নিধ্য মানুষ পায় বিষ্ময়ের শিহরণ । তাই ভ্রমণ শুধুমাত্র দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বিদেশ ভ্রমণও সমানভাবে উল্লেখযোগ্য । তবে এটাও ঘটনা, মানুষের মধ্যে ভ্রমণের আবশ্যিক দিক নিজের দেশকে জানবার, বোঝবার, দেখার । কিছু মানুষ তথ্য জোগাড়ের জন্য গবেষণা ভ্রমণও করেন । নিজের জন্মস্থানের গাঁ-গঞ্জ-শহর-নগর থেকে বেরিয়ে দেশের ও বিদেশের দ্রষ্টব্য স্থানের ভৌগলিক অবস্থান, তার ইতিহাস, রাজনীতি বা তার নৃতত্ত্ব  জানাটা ভ্রমণের মুখ্য উদ্দেশ্য ।  তা ছাড়া দিনের পর দিন একই পরিবেশের জীবন যাপন থেকে ক্ষণিকের মুক্তি । একটু বৈচিত্র্যের আস্বাদনের উপলব্ধি, যে বৈচিত্র্য আমাদের দেয় অপরিসীম আনন্দ ।
যদি নিজের দেশ ভারতবর্ষকেই ধরা যায় তাহলে দেখা যাবে, একই দেশে বাস করা সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রদেশের মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারভেদ । নানান ধর্ম, নানান জাতির মানুষের বসবাস । বিভিন্ন ভাষার বিভিন্ন বর্ণের মানুষ । প্রত্যেকের জাতিসত্বা, ভাষার প্রয়োগ, ধর্মের আচরণ, এমনকি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা আলাদা । যার জন্য ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের ভ্রমণের মাধ্যমে দেশকে চেনার, দেশের মানুষদের জানবার আকাঙ্খা প্রবল । দেশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে নানাবিধ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় ও নতুন-নতুন জ্ঞান আহরণ সম্ভব । বিচিত্র আমাদের দেশ এবং বিচিত্র তার অধিবাসী । আরও বিচিত্র তাদের সাংস্কৃতিক জীবন যাপন এবং সামাজিক রীতিনীতি । আমদের দেশে কতো অরণ্য, সমুদ্র, পাহাড়, পর্বত । নিসর্গ প্রকৃতির কতো অফুরান বৈভব, কতো  পশু-পাখী, জীবজন্তু । ভ্রমণের মাধ্যমে সেগুলির পূর্ণভাবে উপলব্ধি ঘটে । এখানে বলা যেতে পারে, ভ্রমণ অন্য কথায় শিক্ষার একটি অঙ্গ ।
ভ্রমণের পরিধি নির্ধারণে অবশ্যই আর্থিক সঙ্গতির প্রসঙ্গ উল্লেখযোগ্য । ভারতবর্ষ আমাদের উন্নয়নশীল দেশ । এখানে মাথাপিছু আয় প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম । ফলে মানুষের যতোটুকু আয় প্রায় ততোটুকুই সংসার নির্বাহের জন্য নিঃশেষিত হয়ে যায় । যার জন্য সংসার বাঁচিয়ে উদবৃত্তের পরিমাণ ভীষণ স্বল্প । তবুও ভ্রমণ পিপাসু মানুষ সংসারের  খরচা বাঁচিয়ে  ঐ নগণ্য আয় থেকে ভ্রমণের জন্য জমিয়ে রাখে । অভিজ্ঞতার নিরিখে এটা পরিস্কার, চাকুরিজীবিদের মধ্যে ভ্রমণের নেশা তুলনামূলকভাবে বেশী । ভ্রমণের প্রতি তাঁরা বেশী সংবেদনশীল । দেখা গেছে চাকুরিজীবি মানুষ একনাগাড়ে ছয় মাস অফিস করলে হাঁফিয়ে ওঠেন । তখন তাঁদের শরীর-মন ক্ষণিকের জন্য একঘেয়েমি জীবনের অবসান ঘটানোর নিরিখে কোনো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে  ভরা স্থানে নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চান । সামর্থ অনুযায়ী তখন ব্যস্ততম কর্মজীবন থেকে ক্ষণিকের জন্য নিবৃত্তি । মুক্তির আস্বাদনের তাগিদে তাঁদের ভ্রমণ ।
ভ্রমণের  ক্ষেত্রে শারীরিক সুস্থতা ভীষণ জরুরি । আবার অনেকে ডাক্তারী পরামর্শ মতো হাওয়া বদলের জন্য ছোটেন । খুব স্বল্প সংখ্যক মানুষ বিশ্রাম নিতে বেড়ানোর দ্রষ্টব্যস্থানে বেড়াতে যান ।  কিছু ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ধারণা, ভ্রমণের মাধ্যমে তাঁদের শরীরে তাজা অক্সিজেন ঢোকে । এইজন্য ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, রাজনীতিবিদ, বরিষ্ঠ নাগরিক, ইত্যাদি পেশার মানুষ সাময়িক বিশ্রামের তাগিদে বিভিন্ন দ্রষ্টব্যস্থানে ভ্রমণ করেন । সুতরাং ভ্রমণের প্রেক্ষাপট চিন্তা করলে দেখা যায়, ভ্রমণ শুধুমাত্র চিত্ত বিনোদনের জন্য নয় । ভ্রমণ মানুষের মধ্যে সংঘটিত হয় বিভিন্ন প্রয়োজনে । এছাড়াও শিক্ষামূলক ভ্রমণ, ব্যবসা-বাণিজ্যিক ভ্রমণ, রোগ চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ, ধর্মীয়-ভ্রমণ,  সর্বজনবিদিত ।
ভ্রমণের স্থান, কাল, ইত্যাদির ব্যাপারে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের নিজস্ব চিন্তাভাবনাটা অগ্রগণ্য । কিছু মানুষের হিল  স্টেশনে ভ্রমণের প্রতি দুর্বলতা । তাই তাঁরা বিভিন্ন হিল এলাকা ভ্রমণের জন্য বেছে নেন । যেমন দার্জিলিং, সিমলা, উটি, কাশ্মীরের পহেল গাঁও-সোনমার্গ-গুলমার্গ, লে-লাদাখ,  মাউন্ট আবু,  কোহিমা, ইত্যাদি । শোনা যায়, হিল স্টেশনে বেড়ানোর আর একটা মজা সেটা হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । সমতলভূমি থেকে পাহাড়ে উঠবার সময় রাস্তার দুধারে প্রকৃতির অকৃত্রিম সবুজের ভাণ্ডার । বিভিন্ন ধরনের গাছ গাছালির অফুরন্ত সমারোহ । যা দেখলে চোখ সরানো দায় ! তার উপর এক পশলা বৃষ্টি হলে রাস্তার দুইধারে বৃষ্টি স্নাত গাছ-গাছালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মনোমুগ্ধকর । পাহাড়ী এলাকাতে প্রাকৃতিক সমারোহের প্রাচুর্য এত থাকলে কী হবে, সেখানকার মানুষের দৈণ্যদশা প্রকট । তাঁদের  অর্থনৈতিক অবস্থা তথৈ-ব-চ । শোচনীয় তাঁদের দৈনন্দিন জীবন যাপন । ক্ষেতি জমিতে ফসল উৎপাদনের হালহকিকৎ দুঃখজনক । যার জন্য তাঁরা পর্যটকের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল । প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ পর্যটন ব্যবসার উপর নির্ভরশীল । কিছু কিছু পাহাড়ী এলাকায় পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম ।   উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ী এলাকা যেমন কোহিমা, ইম্ফল, আইজল, ইত্যাদি । অথচ এইসব হিল স্টেশনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কোনো অংশে কম নয় । ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সংখ্যা ঐ সমস্ত এলাকায় বেশী মাত্রায় ভিড় করলে এলাকার জনগণের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য বাড়তো । সুতরাং ভ্রমণের  ক্ষেত্রে দ্রষ্টব্যস্থান বাছাটাও  গুরুত্বপূর্ণ ।
সমুদ্র তীরবর্তী শহরে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের চেয়ে বাঙালীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো । অনেক বাঙালী সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল হিসাবে প্রথমেই পুরী’কে  বাছেন । পুরীর সমুদ্রের উদ্দেশে ভ্রমণের আরও একটি কারণ পুরীর জগন্নাথ মন্দির দর্শন । আবার পুরীতে রয়েছে ঐতিহাসিক কোনারক যেখানে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন । ইদানীংকালে দীঘার  সমুদ্র সৈকতে মানুষের ভিড়  নজরকাড়া । কেননা দীঘার সমুদ্রের পার আধুনিক সজ্জায় সুসজ্জিত । সরকারি দৃষ্টির সৌজন্যে  দীঘার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ এখন ভীষণ জনপ্রিয় । ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হচ্ছে  সমুদ্রের বীচ । সমুদ্রের বীচের বালিতে পর্যটকদের হেঁটে অফুরন্ত  আনন্দ  । যার জন্য চেন্নাইয়ে ম্যারিনা বীচ, গোয়ার ক্যারাঙ্ঘুটে বীচ, মুম্বাইয়ের জুহু বীচ, কন্যাকুমারীর তিনটি সমুদ্রের সঙ্গমস্থলের বীচ, ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে আজও আকর্ষণীয় । তা ছাড়া সমুদ্রের সন্নিহিত অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের বাড়-বাড়ন্ত চোখে পড়ার মতো ।
মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, দর্শন ভ্রমণের অন্যতম উদ্দেশ্য । অনেক ভ্রমণার্থী  মন্দির দর্শনের পাশাপাশি মন্দিরের দেবতার পুজো দিতে উৎসাহী । ধর্মের প্রতি অনুরাগ মানুষের মধ্যে কমবেশী বিরাজিত  । সেই আকাঙ্খা থেকেই ধর্মীয় স্থানে ভ্রমণের ঈপ্সা । তা ছাড়া জানারও আকাঙ্খা প্রবল । যেমন দক্ষিণ ভারতে তিরুমালায়  মন্দির (বেঙ্কটেশ্বর), অসমে কাম্রুপ কামাক্ষার মন্দির, আজমীরে মসজিদ, কোহিমায় ক্যাথিড্রাল চার্চ, পুরীতে জগন্নাথ মন্দির, মুম্বাইতে মাতা লক্ষ্মী মন্দির, জম্মুতে কাটরায় বৈষ্ণদেবী মন্দির, ইত্যাদিতে ভ্রমণের আকাঙ্ক্ষা প্রবল ।
ভ্যালী এলাকায় ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ছুটছেন । শিমলা থেকে কিন্নর ভ্যালী, লাদাখে নুব্রা ভ্যালী,  মানুষের কাছে আজও আকর্ষণীয় । বড় দ্বীপ বলতে মাজুলি দ্বীপ । শোনা যায় মাজলি দ্বীপ এশিয়ায় বিখ্যাত । অসমের যোরহাট থেকে মাজুলি যাওয়া সহজ । বিশাল ব্রহ্মপুত্র নদের (ব্রহ্মপুত্র হচ্ছে পুরুষ নদী) মধ্যেখানে মাজুলি দ্বীপ । অনেকেই ছুটছেন মাজুলি দ্বীপ ভ্রমণে । এছাড়া আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অনেকগুলি দেখার মতো দ্বীপ রয়েছে । হ্যাভলক দ্বীপ তার মধ্যে অন্যতম ।  উত্তর-পূর্ব রাজ্যে চা-বাগান উল্লেখযোগ্য । যেমন ডিব্রুগড়  জেলা  জুড়ে চা-বাগান । তা ছাড়া দার্জিলিঙের চা-বাগান বিশ্বখ্যাত । এইসব চা বাগানে মনে হয় প্রকৃতি সবুজ গালিচা পেতে রেখেছে । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে জঙ্গলের সমারোহ ।  পশ্চিম বঙ্গের জলদাপাড়ার জঙ্গল, অসমের কাজিরাঙ্গার জঙ্গল উল্লেখযোগ্য ।  কাজিরাঙ্গার জঙ্গলের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে । পশু, পাখী, জীব-জন্তুতে ভরা । কাজিরাঙ্গা জঙ্গলে গন্ডারের বিচরণ অন্যতম ।
জানার ও দেখার স্পৃহার শেষ নেই । সেটা রাঁচীর পাগলা গারদ হোক বা কারগিলের যুদ্ধস্থান হোক বা অমৃতস্বরের স্বর্ণমন্দির হোক । ভ্রমণ পিপাসু মানুষ সতত ছুটছেন তাঁদের একটানা দম-বদ্ধ জীবন থেকে সাময়িক মুক্তির খোঁজে ।
মানুষের মধ্যে ভ্রমণের সময় নির্ধারণ করা বড্ড কঠিন । পরীক্ষা বা পড়াশুনার ব্যস্ত সময়ে ভ্রমণের ইচ্ছা প্রসমিত থাকে  । তেমনি চাষীদের চাষের মরশুম, ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ধামাকার সময় যেমন দুর্গা  পুজা, ইত্যাদির সময়, চাকুরিজীবিদের চাকরিস্থলে ছুটি গ্রান্ট না হলে, ভ্রমণের ইচ্ছা নৈব-নৈব-চ । এত কিছুর মধ্যও ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ভ্রমণের তাগিদে দেশ বিদেশ ছুটছেন । কেননা ভ্রমণ মানুষকে সতেজ  ও  প্রফুল্ল রাখে  ।

।।কলমে : দিলীপ রয়।।
(তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত)

Share This
Categories
রিভিউ

জীবন বদলে দেওয়া বাস্তবতা নিয়ে কিছু বিখ্যাত উক্তি।।।

০১। বাস্তবতা নিছক একটি মায়া, যদিও এটি খুব স্থায়ী ।

-আলবার্ট আইনস্টাইন।
০২। এক জনের কাছে পাগলামি আর অন্য জনের কাছে বাস্তবতা।
-টিম বার্টন।
০৩। পৃথিবীতে কঠিন বাস্তবের মধ্যে একটি বাস্তব হলো- মানুষ যখন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছায় আর তখনই তার প্রিয় মানুষটি হারিয়ে যায়।
-রেদোয়ান মাসুদ
০৪। মনের অনেক দরজা আছে, সেখান দিয়ে অসংখ্যজন প্রবেশ করে এবং বের হয়ে যায় তাই সবাইকে মনে রাখা সম্ভব হয় না।
-টমাস কেস্পিস।
০৫। পৃথিবীতে কেউ কারো নয়, শুধু সুখে থাকার আশায় কাছে টানার ব্যর্থ প্রত্যয় আর দূরে চলে যাওয়ার এক বাস্তব অভিনয়।
-রেদোয়ান মাসুদ
০৬। জীবনকে যেমন মৃত্যুকেও তেমনি স্বাভবিক বলে মেনে নিতে হবে
-শহীদুল্লাহ্ কায়সার।
০৭। বেঁচে থাকি আশা করি কষ্ট পাই কাঁদি, লড়ি আর সবশেষে ভুলে যাওয়া.. যেন কোনদিন ছিলামই না
-মেরি বাশকিরভ সেভ।
০৮। বাস্তবতা কল্পনার অনেক কিছুই ফেলে দেয়।
-জন লেনন।
০৯।  বাস্তবতা এতই কঠিন যে কখনও কখনও বুকের মধ্যে গড়ে ওঠা পয়েন্ট টু-পয়েন্ট ভালোবাসাও অসহায় হয়ে যায়।
-হুমায়ূন আহমেদ।
১০। তোমাকে ছাড়া থাকার কোনো সাধ্য আমার নেই, কারণ তোমাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তোমাকে ধরে রাখার কোনো উপায় আমার কাছে জানা নেই, কারণ বাস্তবতার কাছে আমি বড় অসহায়।
-রেদোয়ান মাসুদ।
১১। যারা বলে অসম্ভব, অসম্ভব তাদের দুয়ারেই বেশি হানা দেয়।
-জন সার্কল।
১২। মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলোই ধরণীর আসল রূপ দেখতে পায়
-হুমায়ূন আহমেদ।
১৩। সুন্দরী মেয়েরা পারিবারিক জীবনে সবচেয়ে বেশি অসুখী হয়, কারণ তাদের ওপর বহু পুরুষের অভিশাপ লেগে থাকে।
– রেদোয়ান মাসুদ
১৪। কিছু লোক আছে যারা স্বপ্নের জগতে বাস করে, কিছু লোক আছে যারা বাস্তবতার মুখোমুখি হয়; তারপরে এমন ব্যক্তিরা আছেন যাঁরা একটিকে অপরটিতে পরিণত করে।
-ডগলাস এভারেট।
১৫। মানুষকে ঠকাতে যাদের বুক কাঁপে, বিবেকে বাঁধে তাদের জীবনে কখনো সুখ হয় না, দুঃখই সারা জীবন তাদের আড়াল করে রাখে।
-রেদোয়ান মাসুদ।
১৬। যেহেতু আমরা বাস্তবতা পরিবর্তন করতে পারি না, আসুন আমরা চোখ পরিবর্তন করি যা বাস্তবতা দেখায়।
-নিকোস কাজান্টজাকিস।
১৭। আমাদের উদ্দেশ্য আমাদের বাস্তবতা তৈরি করে।
-ওয়েইন ডায়ার।
১৮। অনেক কিছু ফিরে আসে, ফিরিয়ে আনা যায়, কিন্তু সময়কে ফিরিয়ে আনা যায় না
-আবুল ফজল।
১৯। বাস্তবতা এমন লোকদের জন্য যারা ড্রাগের মুখামুখি হতে পারে না।
-লরেন্স জে পিটার।
২০। বাস্তবতা অনেক কল্পনা ছুঁড়ে দেয়।
– জন লেনন।
২১। বাস্তবতা হ’ল আমরা সবাই যে কল্পনার সাথে একমত হই।
-অজানা।
২২। জীবন যতক্ষণ আছে বিপদ ততক্ষণ থাকবেই
-ইমারসন।
২৩। সুখে থাকতে সবাই চায় কিন্তু কিছু মানুষের জীবনে সুখে থাকতে চাওয়াটাই দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
-রেদোয়ান মাসুদ
২৪। জীবন তৃপ্তি দেয় যতটুকু, অতৃপ্তি দেয় তার চেয়ে বেশি
-ক্রিস্টিনা রসের্ট।
২৫। মৃত্যুর চেয়ে কঠিন হচ্ছে জীবন। কেননা দুঃখ-কষ্ট বিপদ আপদ কেবল জীবনেই ভোগ করতে হয় মৃত্যু তা থেকে মুক্তি দেয়।
-সক্রেটিস।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This