Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় ও গুরুত্ব।।।।

আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসটি নৃত্যের শিল্পের প্রতি একটি বিশ্বব্যাপী শ্রদ্ধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যা পারফর্মিং আর্টের ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর অপরিহার্য অংশীদার ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) নৃত্য কমিটি দ্বারা ধারণা করা হয়েছে। এই বার্ষিক উৎসব জিন-জর্জেস নভের (১৭২৭-১৮১০) এর জন্মকে স্মরণ করে, যাকে আধুনিক ব্যালে-এর পূর্বপুরুষ হিসেবে সম্মান করা হয়।

এটি শাস্ত্রীয় বা রোমান্টিক ব্যালেকে আলাদা করে, তার সমসাময়িক রূপকে আকৃতি দেয়। দিবসটির সারমর্ম হল এই তাৎপর্যপূর্ণ তারিখে বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত অসংখ্য অনুষ্ঠান ও উৎসবের মাধ্যমে নৃত্যে অংশগ্রহণ ও জ্ঞানার্জনকে উৎসাহিত করা। UNESCO আধিকারিকভাবে ITI-কে এই সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধকরণ উদযাপনের স্থপতি এবং সমন্বয়কারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস ২০২৫ তারিখ এবং ইতিহাস–

প্রতি বছর ২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালিত হয়। এ বছর তা সোমবার পালিত হবে। প্রতি বছর ২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) নৃত্য কমিটি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা পারফর্মিং আর্টসের জন্য ইউনেস্কোর প্রধান অংশীদার। আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসটি নৃত্যকে একটি শিল্পরূপ হিসাবে উদযাপন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী এর গুরুত্ব প্রচার করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ফরাসি নৃত্যশিল্পী এবং ব্যালে মাস্টার যাকে আধুনিক ব্যালে-এর স্রষ্টা হিসেবে কৃতিত্ব দেওয়া হয়, জঁ-জর্জেস নভেরের জন্মদিনের স্মরণে তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছিল।
১৯৮২ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালিত হয়। তখন থেকে, এটি বিশ্বব্যাপী নৃত্য সম্প্রদায়, স্কুল, কোম্পানি এবং সংস্থাগুলির দ্বারা সংগঠিত ইভেন্টগুলির সাথে একটি বিশ্বব্যাপী উদযাপনে পরিণত হয়েছে। এই ইভেন্টগুলিতে প্রায়শই নৃত্যের শিল্প এবং এর সাংস্কৃতিক তাত্পর্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নৃত্যকলা, কর্মশালা, নৃত্য উত্সব, বক্তৃতা এবং অন্যান্য ক্রিয়াকলাপ অন্তর্ভুক্ত থাকে। প্রতি বছর, আইটিআই আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসের জন্য একটি বার্তা লেখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে একজন বিশিষ্ট নৃত্য ব্যক্তিত্ব নির্বাচন করে, যা বিশ্বব্যাপী বিতরণ করা হয়। এই বার্তাটি সাধারণত সমাজে নৃত্যের গুরুত্ব, সাংস্কৃতিক বিনিময়ে এর ভূমিকা এবং আন্দোলনের মাধ্যমে শৈল্পিক প্রকাশের মূল্য প্রতিফলিত করে।

আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস ২০২৫ তারিখ–

এই বছর, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫-এ আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস পালিত হবে।

আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস ২০২৫ থিম–

আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস ২০২৫-এর থিম এখনও জানা যায়নি।

আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসের
তাৎপর্য–

বিশ্ব নৃত্য দিবস একটি উল্লেখযোগ্য দিন যা নৃত্যের শিল্পের প্রতি নিবেদিত। এটি আমাদের জীবনে নাচের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এর অ্যাক্সেসযোগ্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি প্রচার করার সময়। বিশ্ব নৃত্য দিবসটি সারা বিশ্ব জুড়ে মানুষের দ্বারা পালিত হয়, এবং এটি নৃত্যের বৈচিত্র্য প্রদর্শন এবং এর অন্তর্ভুক্তি এবং অ্যাক্সেসযোগ্যতা প্রচার করার একটি সুযোগ। আমাদের জীবনে নাচের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর এবং এর যে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকতে পারে তা তুলে ধরারও সময়। বিশ্ব নৃত্য দিবস উদযাপনের অন্যতম প্রধান উপায় হল নৃত্য-সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণ করা, তা পারফর্মার বা শ্রোতা সদস্য হিসাবে। এটি শিল্প ফর্মের প্রতি নিজের ভালবাসা প্রকাশ করার এবং সারা বিশ্বের অন্যদের সাথে সংযোগ করার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে যারা নাচের প্রতি আবেগ ভাগ করে নেয়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে, বাঙালি লেখিকা ও ঔপন্যাসিক শান্তা দেবী (নাগ)।।।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন—

শান্তা দেবীর জন্ম ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে এপ্রিল বৃটিশ ভারতের কলকাতায়। পিতা প্রখ্যাত সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদ রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা মনোরমা দেবী। এঁদের আদি নিবাস ছিল বাঁকুড়ার পাঠকপাড়ায়। শান্তার প্রথম পনেরো বৎসর কাটে এলাহাবাদে। সেসময় সেখানে মেয়েদের ভালো স্কুল না থাকায় তার ও তার কনিষ্ঠা ভগিনীর লেখাপড়া শুরু হয় গৃহশিক্ষক পিতৃবন্ধু নেপালচন্দ্র ও ইন্দুভূষণ রায়ের কাছে।

ব্রাহ্মসমাজ-নেতা পিতার গৃহে উদার স্বাধীনতা এবং ‘প্রবাসী’ ও ‘মডার্ন রিভিউ’ পত্রিকার সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক পরিবেশের মধ্যে বড়ো হয়ে ওঠেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে পিতা কলকাতায় ফিরলে তিনি কলকাতার বেথুন স্কুলে ভর্তি হন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়ে বি.এ পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ্মাবতী স্বর্ণপদক লাভ করেন। বাংলা, ইংরাজী, হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষায় এবং অর্থনীতি ও গণিতে বিশেষ পারদর্শিনী ছিলেন।

সাহিত্যকর্ম—

কলেজে পড়ার সময় ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে দুই বোন মিলে শ্রীশচন্দ্র বসুর Folk Tales of Hindustan গ্রন্থটি “হিন্দুস্থানী উপকথা” নামে অনুবাদ করে খ্যাতি অর্জন করেন। বইটির চিত্তাকর্ষক ছবিগুলি উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর আঁকা। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রায় দুই বছর পিতার সঙ্গে শান্তিনিকেতনে থাকার সময় তিনি নন্দলাল বসুর কাছে অঙ্কন শিক্ষা করেছেন। দেশে বিদেশে তার আঁকা ছবির প্রদর্শনী হয়েছে। দুই বোন মিলে সংযুক্তা দেবী নামে প্রথম উপন্যাস “উদ্যানলতা” রচনা করেন ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে। উপন্যাসটিতে কলকাতায় নারীজাগরণের প্রথম উন্মেষের ছবি পরিস্ফুট হয়েছে। এটি পরে The Garden Creeper নামে অনূদিতও হয়েছে। বিবাহের পর স্বামীর সঙ্গে বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতার বিষয় ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় লিখেছেন। যেমন ‘মহেঞ্জাদড়োর কথা’, জাপানের ডায়েরি’ প্রভৃতি। আমেরিকা প্রবাসে তিনি মিনেসোটার ম্যাকালেস্টর কলেজে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে বক্তৃতা দেন। তিনি “প্রবাসী” র সম্পাদকীয় বিভাগে নানা দায়িত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। “ভারত-মুক্তিসাধক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় ও অর্ধ শতাব্দীর বাংলা” গ্রন্থটির জন্য তিনি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুবনমোহিনী দাসী স্বর্ণপদক লাভ করেন। তার গল্প উপন্যাসে বাঙালি মধ্যবিত্ত জীবনের , বিশেষকরে নারীজীবনের অন্তরঙ্গ অভিজ্ঞতা ও আধুনিক চিন্তার ইতিহাসের উন্মেষ পর্বের নানা চিহ্ন দেখা যায়। তার রচিত উল্লেখযোগ্য

গ্রন্থগুলি হল –

শিশুপাঠ্য –

সাত রাজার ধন (সীতা দেবীর সাথে), হুক্কা হুয়া (১৯২০), কেমন জব্দ।

উপন্যাস —

স্মৃতির সৌরভ (১৯১৮), জীবনদোলা (১৯৩০), অলখ ঝোরা (১৯৩৪), দুহিতা (১৯৩৪), চিরন্তনী।

গল্প ও অন্যান্য রচনা–

ঊষসী (১৯১৮), সিঁথির সিঁদুর (১৯১৯), বধূবরণ (১৯৩১), দেওয়ালের আড়াল, পঞ্চদর্শী
ভ্রাতার মৃত্যুর পরে তার লেখা “শোক ও সান্ত্বনা” বইটি মৃত্যুচিন্তার এক অসাধারণ দলিল। “পূর্বস্মৃতি” নামে এক স্মৃতিমূলক রচনা করেছেন। তার ও সীতা দেবীর অনেক গল্প ইংরাজীতে সীতা দেবী অনুবাদ করেছেন। সেই গল্পগুলি টেলস অব বেঙ্গল নামে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

পারিবারিক জীবন–

১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক কালিদাস নাগের সঙ্গে তার বিবাহ হয়।
জীবনাবসান—
সুলেখিকা শান্তা দেবী ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে মে পরলোক গমন করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবী ।বিমল দাশগুপ্ত।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে বিমল দাশগুপ্ত ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী।

বিমল দাশগুপ্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। বিমল দাশগুপ্ত একজন ভারতীয় সশস্ত্র বিপ্লববাদী।

প্রারম্ভিক জীবন—

তিনি বাংলাদেশের বরিশাল জেলার ঝালকাঠিতে ১৯১০ সালের ২৯ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। বাবা কবিরাজ অক্ষয় কুমার দাশগুপ্ত। তাঁর বাবা মেদিনীপুরে এসে কবিরাজীর চিকিৎসার ভিত্তিতে জীবনযাপন শুরু করেন। বিমল দাশগুপ্ত ১২/১৩ বছর বয়স থেকে বিপ্লবী আন্দোলনের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণের আগে ১৯২০ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি মেদিনীপুর হিন্দু স্কুলের ছাত্র ছিলেন।

পেডি ও ভিলিয়ার্স হত্যা—

১৯২৮ সালে, সুভাষ চন্দ্র বসু বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তকে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের মেদিনীপুর শাখার দায়িত্ব দেন। দীনেশ গুপ্তের অক্লান্ত পরিশ্রমে মেদিনীপুর জেলার বিপ্লবী আন্দোলন অন্য মাত্রা পেল। দীনেশ গুপ্তের মন্ত্র শিষ্য হয়ে ওঠেন বিমল দাশগুপ্ত। লবণ আইনের অমান্য করার সময়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেমস পেডি, দিঘা সৈকতে সত্যাগ্রহীদের উপর নির্মমভাবে নির্যাতন করেছিলেন। প্রতিশোধ নিতে বিপ্লবীরা পেডিকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। জ্যোতিজীবন ঘোষের সঙ্গে এই দায়িত্ব পান বিমল দাশগুপ্ত। 1931 সালের 7 এপ্রিল, পেডি সাহেব মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে প্রদর্শনী দেখতে এসে পেডি সাহেব এই দুই বিপ্লবীর গুলিতে নিহত হয়।। দুজনেই পালাতে সক্ষম হয়। বিমল দাশগুপ্ত আত্মগোপনে যান এবং ঝরিয়া এলাকায় একটি কয়লা খনিতে চাকরি পান এবং পরে কলকাতার মেটিয়াবুরোজে থাকতেন, পুলিশ তার সন্ধান করতে পারেনি।
আবার বিমল দাশগুপ্তকে ক্লাইভ স্ট্রীটে ভিলিয়ার্স সাহেবের হত্যার ভার দেওয়া হয়। ২৯ জুলাই, ১৯৩১ সালে তিনি ভিলিয়ার্সকে গুলি করেন তার অফিসে ঢুকে। কিন্তু ধরা পড়ে যান পকেট থেকে সায়ানাইড বের করার আগেই।
পুলিশ অবশেষে তাকে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে ট্র্যাক করে। কারণ বিপ্লবী কানাইলাল ভট্টাচার্য গার্লিককে হত্যা করেন এবং বিমল দাশগুপ্ত (বা বিমল গুপ্ত) নামে শহীদ হন যাতে পুলিশ আসল বিমল দাশগুপ্তের সন্ধান ছেড়ে দেয়। শহীদ কানাইলাল ভট্টাচার্যের আত্মত্যাগ এবং পুলিশের হাত থেকে আরেক বিপ্লবীকে বাঁচাতে নাম-পরিচয় হীন আত্মত্যাগ ইতিহাসে বিরল।। সুভাষ চন্দ্রের উদ্যোগে তিনজন ব্যারিস্টার বিপ্লবীদের পক্ষে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। জ্যোতিজীবন ঘোষকে খালাস দেওয়া হয় এবং জেরা করার সময় প্রধান সাক্ষী সুশীল দাস বলেন, ‘পেডি খুনি বিমল দাশগুপ্ত নন’। বিমল দাশগুপ্তকে বাঁচাতে মেদিনীপুরের রাজা নরেন্দ্রলাল খান সুশীল দাসকে এই কথা বলার নির্দেশ দেন। তিনি পেডি হত্যা মামলা থেকে খালাস পেলেও ভিলিয়ার্স হত্যা মামলায় দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন।
১৯৩২ সালের মাঝামাঝি তাকে আন্দামান সেলুলার জেলে পাঠানো হয়। ১৯৩৬ সালে, তিনি রাজনৈতিক বন্দীর মর্যাদা দাবিতে অনশন করেন। সুভাষ চন্দ্র ও মুজাফফর আহমদের মধ্যস্থতায় অনশন প্রত্যাহার করা হয়। ১৯৩৮ সালে তাকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছিল কিন্তু মুক্তি দেওয়া হয়নি। বিমল দাশগুপ্ত বাংলার বিভিন্ন কারাগারে চার বছর কারাভোগ করেন।
শেষ জীবনে তিনি ১৯৪২ সালে মুক্তিলাভ নিজ বাড়ি মেদিনীপুরেই জমিজমা দেখাশোনা করতেন। স্বাধীনতার পরে আনন্দবাজার পত্রিকার সেলস ইনস্পেকটর হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছেন।

মৃত্যু–

অগ্নিযুগের এই বিপ্লবী ৩ মার্চ ২০০০ সালে মারা যান ।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৯ এপ্রিল, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ২৯ এপ্রিল। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮৩৭ – জর্জ এর্নেস্ত বুলঁজে, ফরাসি জেনারেল ও রাজনীতিবিদ।  .
১৮৪৪ – সমাজসেবী ও দানশীল ব্যক্তিত্ব যদুলাল মল্লিক।  .
১৮৪৮ – রাজা রবি বর্মা, বিখ্যাত ভারতীয় চিত্রশিল্পী।
১৮৫৪ – অঁরি পোয়াঁকারে, ফরাসি গণিতবিদ, তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ও দার্শনিক।
১৮৬৫ – বিশ্বজনীন ত্রিভাষিক ইতালিয়ান-স্লোভেনিয়ান স্থপতি ম্যাক্স ফেভিয়ানি।

১৮৯৩ – (ক) বাঙালি লেখিকা ও ঔপন্যাসিক শান্তা দেবী (নাগ)।
(খ) হ্যারল্ড ক্লেটন ইউরি, নোবেল বিজয়ী মার্কিন ভৌত রসায়নবিদ।
১৯০১ – হিরোহিতো, জাপানী সম্রাট।
১৯০৭ – ফ্রেড জিনেমান, অস্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহণকারী মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।

১৯০৯ – বিপ্লবী রবি নিয়োগী।

১৯১০ – ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বিপ্লবী বিমল দাশগুপ্ত।
১৯১৭ – (ক)  দিলীপকুমার রায়, ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতবিশারদ।

(খ) মায়া ডেরেন, ইউক্রেনিয়-বংশদ্ভুত মার্কিন পরিচালক, কবি এবং ফটোগ্রাফার।

১৯১৯ – (ক) ওস্তাদ আল্লারাখা, বিখ্যাত ভারতীয় তবলা বাদক।
(খ)আতাউর রহমান,ছাত্র সংগঠনের সূচনাকারী, সাহিত্যিক ও সম্পাদক।
১৯৩৩ – উইলি নেলসন, আমেরিকান গায়ক, গীতিকার, গিটারিস্ট, প্রযোজক এবং অভিনেতা।
১৯৩৬ – আলেহানদ্রা পিসারনিক, আর্জেন্টিনার কবি।
১৯৩৬ – জুবিন মেহতা, প্রা্চ্য ও প্রাশ্চাত্যের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভারতীয় পরিচালক।
১৯৪০ – ব্রায়ান টাবের, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৪৮ – আইনুন নিশাত, বাংলাদেশী ইমেরিটাস অধ্যাপক, এবং পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ।
১৯৪৯ – প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী উৎপলেন্দু চৌধুরী।
১৯৫৪ – জেরি সাইনফেল্ড, মার্কিন মঞ্চ-কৌতুকশিল্পী, অভিনেতা, লেখক, প্রযোজক এবং পরিচালক।
১৯৫৭ – ড্যানিয়েল ডে-লুইস, ব্রিটিশ-আইরিশ অভিনেতা।
১৯৬৬ – ফিল টাফনেল, সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার।
১৯৭০ – আন্দ্রে আগাসি, আমেরিকান টেনিস খেলোয়াড়।
১৯৭৭ – টাইটাস ও’নিল, মার্কিন পেশাদার কুস্তিগির এবং অবসরপ্রাপ্ত আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড়।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৬৩৯ – দিল্লির লালকেল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়।
১৬৮২ – পিটার দ্য গ্রেইট মাত্র দশ বছর বয়সে রাশিয়ার সম্রাট পদে অধিষ্ঠিত হন।
১৮২৭ – ফরাসি সম্রাট একাদশ চার্লস ফরাসি জাতীয় রক্ষীবাহিনীর বিলুপ্তি ঘোষণা করেন।
১৯১৯ – জালিওয়ান ওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ প্রদত্ত নাইট উপাধি ত্যাগ করেন।
১৯৩৯ – দিল্লির লাল কেল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়।
১৯৪৫ – ইতালিতে জার্মান বাহিনী মিত্রশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে।
১৯৫৪ – তিব্বত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে পঞ্চশীল চুক্তি সম্পাদিত হয়।
১৯৯১ – ঘূর্ণিঝড় BOB 01 বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বে চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিমি/ঘণ্টা বেগে আঘাত করে।
১৯৯৭ – বৃটেন চীনের কাছে হংকংকে ফিরিয়ে দেয়।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯২১ – আর্থার মোল্ড, ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯৪৫ – মুসোলিনী।
১৯৫১ – লুডভিগ ভিটগেনস্টাইন, অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত ইংরেজি দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ।
১৯৯২ – গোলাম ফারুক খান, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর।
১৯৯৬ – আবেদ হোসেন খান, একজন বাংলাদেশী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার বাদক ও সুরকার।
২০০৫ – লিওনিদ খাচিয়ান, আর্মেনীয়-বংশোদ্ভুত রুশ গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
২০০৬ – জন কেনেথ গলব্রেইথ, মার্কিন অর্থনীতিবিদ।
২০০৭ – ডিক মোৎজ, ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।
২০১৪ – বব হস্কিন্স, ইংরেজ অভিনেতা।
২০২০ – ইরফান খান, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

সাহিত্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষুদিরাম দাসের অমর অবদান ও প্রভাব।।।

ক্ষুদিরাম দাস ভারতের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি একজন পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, সমালোচক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ও একজন ভাষাতত্ত্ববিদ ছিলেন। ৯ অক্টোবর ১৯১৬ সালে ক্ষুদিরাম দাস জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত বেলিয়াতোড়ে গ্রামে।

এই গ্রামেই জন্মেছেন বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্‌বল্লভ, শিল্পী যামিনী রায়। তার শৈশব বাল্যের দিনগুলি মূলত মধ্যযুগের ঐতিহ্যে লালিত। যাত্রা, কীর্তন, রামায়ণ গান, কথকতা এসবের প্রভাব তার অন্তরে স্থায়ীভাবে পড়েছিল। উত্তরকালে মধ্যযুগ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা আর লেখায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

গ্রন্থাবলী—

রবীন্দ্র প্রতিভার পরিচয় (১৯৫৩), বাংলা কাব্যের রূপ ও রীতি (১৯৫৮), চিত্র গীতময়ী রবীন্দ্র বাণী (১৯৬৬), বৈষ্ণব রস প্রকাশ (১৯৭২), সমাজ প্রগতি রবীন্দ্রনাথ (১৯৭৩), রবীন্দ্র কল্পনায় বিজ্ঞানের অধিকার (১৯৮৪), বাংলা সাহিত্যের আদ্য মধ্য (১৯৮৫), ব্যাকরণ (৩ খণ্ড), বানান বানানোর বন্দরে (১৯৯৩), চোদ্দশ সাল ও চলমান রবি (১৯৯৩), দেশ কাল সাহিত্য (১৯৯৫), সাঁওতালি বাংলা সমশব্দ অভিধান (১৯৯৮), বাছাই প্রবন্ধ (১৪ টি রচনার সংকলন, মানস মজুমদার দ্বারা সম্পাদিত) (২০০০), পথের ছায়াছবিতে অধ্যাপক ক্ষুদিরাম দাস (মানস মজুমদার দ্বারা সম্পাদিত) (১৯৯৬)।

তিনি অনেক সম্মানে ভূষিত হন যাদের মধ্যে মুখ্য হল –

প্রাণতোষ ঘটক স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৩), বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) (১৯৮৪), সরোজিনী বসু স্বর্ণ পদক (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) (১৯৮৭), সাহিত্য রত্ন উপাধিতে ভূষিত (হাওড়া পণ্ডিত সমাজ) (১৯৮৭), রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য উপাধি লাভ (টেগর রিসার্চ ইন্সিটিউট) (১৯৯২), রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) (১৯৯৪), নারায়ণ গাঙ্গুলী স্মারক পুরস্কার (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) (১৯৯৫), রবিতীর্থঙ্কর উপাধি প্রাপ্তি (সংস্কৃত কলেজ) (১৯৯৮)।

স্মারক পুরস্কার—

স্নাতক স্তরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে উচ্চতম দক্ষতার জন্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেথুন কলেজে ক্ষুদিরাম দাস স্মারক পুরস্কার দেওয়া হয়।
দাস ২৮ এপ্রিল, ২০০২ -এ ৮৫ বছর বয়সে কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে মারা যান, একটি সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার রেখে যান যা সাহিত্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেককে প্রভাবিত এবং অনুপ্রাণিত করে। তাঁর জীবন এবং কাজ ভারতের সাংস্কৃতিক এবং একাডেমিক ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসাবে রয়ে গেছে, যা বাংলা সাহিত্যের মধ্যে এবং তার বাইরের ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবনের সাথে তার গভীর সম্পৃক্ততাকে প্রতিফলিত করে।
পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোট গ্রাম থেকে ভারতের একাডেমিক এবং সাংস্কৃতিক চেনাশোনাতে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠার জন্য তাঁর অসাধারণ যাত্রা বাংলা ভাষা এবং এর সাহিত্যের প্রতি তাঁর উত্সর্গ এবং আবেগের প্রমাণ। ক্ষুদিরাম দাসের অবদান প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পণ্ডিত, ছাত্র এবং সাহিত্য প্রেমীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে চলেছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

নীলিমা সেন, রবীন্দ্রসংগীতের অমর প্রতিভার যাত্রা।।।।

নীলিমা সেন, একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতে একটি অমোঘ ছাপ রেখে গেছেন। নীলিমা গুপ্তা হিসাবে ২৮ এপ্রিল, ১৯২৮ সালে, ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন, সেনের সঙ্গীত যাত্রা শান্তিনিকেতনে ছয় বছর বয়সে শুরু হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে গভীরভাবে জড়িত এই স্থানটি সঙ্গীতে তার ভবিষ্যতকে রূপ দিয়েছে।

সেনের প্রতিভা তাঁর সঙ্গীত শিক্ষক শৈলজারঞ্জন মজুমদারের নির্দেশনায় প্রশংসিত হয়েছিল এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতে ডিপ্লোমা দিয়ে তাঁর শিক্ষা আরও দৃঢ় হয়।
সেনের সঙ্গীতজীবন একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করে যখন, ১৬ বছর বয়সে, তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিওতে পারফর্ম করার পর তার প্রথম রেকর্ড প্রকাশ করেন। রেকর্ডের সাফল্য সেনের জন্য নিছক একটি সূচনা বিন্দু ছিল, যিনি ১৯৫০ সালে ডাঃ অমিয়কুমার সেনকে বিয়ে করার পর শান্তিনিকেতনের একজন অধ্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। এই দম্পতির মেয়ে, নীলাঞ্জনা, তার বাবার সঙ্গীতের পদাঙ্ক অনুসরণ করে, পরিবারের শৈল্পিক উত্তরাধিকার যোগ করে।
তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবন জুড়ে, সেন শুধু বিশ্বজুড়েই নয়- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মিয়ানমার এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত- কিন্তু শিক্ষা জগতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবন এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন, অবশেষে সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষ হন। সেনের প্রভাব শ্রেণীকক্ষের বাইরেও বিস্তৃত ছিল; তিনি হি তাসের দেশ এবং মায়ার খেলার মতো নৃত্যনাট্যের সাথে জড়িত ছিলেন এবং একজন শিল্পী হিসেবে তার বহুমুখী প্রতিভা প্রদর্শন করেছিলেন।
সেনের কণ্ঠ “ও চাঁদ, একসে অঞ্জলা লালগা জোয়ার” এবং “আহা, তোমার সাত প্রাণ খেলা” এর মতো গানগুলিকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল যা সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে রয়ে গেছে। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এবং রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার মতো উল্লেখযোগ্য নাম সহ তাঁর ছাত্ররা রবীন্দ্রসংগীতের জগতে তাঁর স্থায়ী উত্তরাধিকারের প্রমাণ।
অসুস্থতার সাথে দীর্ঘ যুদ্ধের পর, নীলিমা সেন ২৮ শে জুন, ১৯৯৬-এ মারা যান। তবে তার উত্তরাধিকার ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিশ্বকে অনুপ্রাণিত ও প্রভাবিত করে চলেছে, নিশ্চিত করে যে তার অবদান আগামী প্রজন্মের জন্য লালন করা হবে।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৮ এপ্রিল, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ২৮ এপ্রিল। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক)  জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস (বাংলাদেশ)
(খ) জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস (বাংলাদেশ)

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮৪৮ – উৎকল-গৌরব মধুসূদন দাস ওড়িশার প্রথম স্নাতক ও আইনজীবী।
১৮৬৯ – দিনে ফ্রান্সিস মেরি হককিন, নিউজিল্যান্ডের চিত্রশিল্পী।
১৮৭৮ – লিওনেল ব্যারিমোর, আমেরিকান অভিনেতা এবং পরিচালক।
১৮৮৯ – অ্যান্টনিও ডি অলিভিয়ার সালাজার, পর্তুগাল অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ এবং পর্তুগালের ১০০তম প্রধানমন্ত্রী।
১৯০০ – হেনরিক মুলার, ভাইমার প্রজাতন্ত্র ও নাৎসি জার্মানি উভয় দেশের অধীন জার্মান পুলিশ কর্মকর্তা।
১৯০৬ – কুর্ট গ্যডল, মার্কিন যুক্তিবিদ, গণিতবিদ।
১৯০৮ – জ্যাক ফিঙ্গলটন, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার, সাংবাদিক এবং স্পোর্টসকাস্টার।
১৯২৪ – কেনেথ কাউন্ডা, জাম্বিয়ার শিক্ষাব্রতী ও রাজনীতিবিদ ও ১ম রাষ্ট্রপতি।
১৯২৮ – বিশিষ্ট বাঙালি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী নীলিমা সেন।
১৯৩০ – ক্যারোলিন জোন্স, আমেরিকান অভিনেত্রী।
১৯৩০ – আল্ফ ভ্যালেন্টাইন, বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৩৬ – তারেক আজিজ, ইরাকের রাজনীতিবিদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী (১৯৮৩-১৯৯১), উপ-প্রধানমন্ত্রী (১৯৭৯-২০০৩) এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেনের ঘনিষ্ট সহযোগী ও পরামর্শদাতা।
১৯৩৭ – সাদ্দাম হুসাইন, ইরাকের সাবেক রাষ্ট্রপতি।
১৯৪১ – কার্ল ব্যারি শার্পলেস, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান রসায়নবিদ।
১৯৪৬ – উজ্জ্বল, বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা।
১৯৪৭ – হুমায়ুন আজাদ, বাংলাদেশী লেখক।
১৯৫৩ – রবার্ত অবলানো, চিলির লেখক ও কবি।
১৯৫৪ – শহীদ শেখ জামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র।
১৯৬০ – ওয়াল্টার যেঙ্গা, সাবেক ইতালিয়ান ফুটবলার ও ম্যানেজার।
১৯৬৮ – অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে জন্মগ্রহণকারী জিম্বাবুয়ে দলের সাবেক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৭৪ – পেনেলোপে ক্রুজ সানচেজ, স্প্যানিশ অভিনেত্রী ও প্রযোজক।
১৯৭৬ – শেন জার্গেনসেন, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৮২ – কোয়েল মল্লিক, ভারতীয় বাংলার বিখ্যাত অভিনেত্রী।
১৯৮৭ – সামান্থা আক্কিনেনি, ভারতীয় অভিনেত্রী এবং মডেল।
১৯৮৮ – হুয়ান ম্যানুয়েল মাতা গার্সিয়া, স্প্যানিশ ফুটবলার।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৫২৬ – মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহির উদ্দীন মোহাম্মাদ বাবর সিংহাসনে আরোহণ করেন।
১৫৫৫ – জার্মানীর অগসবার্গ শহরের নামে সেখানে কংগ্রেস গঠিত হয়।
১৭০১ – ব্রিটেনের জন মরিস মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
১৭৭০ – ক্যাপটেন কুক নিউ সাউথ ওয়েলসে পদার্পণ করেন।
১৭৮৯ – ফ্লেচার ক্রিশ্চিয়ানের নেতৃত্বে ব্রিটিশ জাহাজ বাউন্টিতে নাবিক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
১৯১৯ – লীগ অব নেশনস প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯২০ – আজারবাইজানকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যুক্ত করা হয়।
১৯২০ – পোল্যান্ড ও রাশিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯২০- আজারবাইজান কে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যুক্ত করা হয়।
১৯৫২ – জাপান সার্বভৌমত্ব ফিরে পায় এবং গণতান্ত্রিক জাপান প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৬৫ – মার্কিন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বার্থ রক্ষার অজুহাত দেখিয়ে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের উপর সামরিক হামলা চালায়।
১৯৬৯ – ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এর পদ থেকে দ্যগল ফ্যান্সের পদত্যাগ।
১৯৯২ – রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৯২ – সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোকে নিয়ে নতুন যুগোস্লাভিয়া ঘোষণা।
১৯৯২ – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আফগান মুজাহিদদের ১৩ বছরের যুদ্ধের পর তারা বিজয় লাভ করে ।
১৯৯৫ – বাংলাদেশ সরকার হুমায়ুন আজাদের নারী বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
২০০১- ডেনিশ টিটো পৃথিবীর সর্বপ্রথম মহাকাশ পর্যটকের মর্যাদা লাভ করেন।
২০০৪ – মার্কিন একটি গবেষণা সংস্থা সার্স ভাইরাসের ঔষধ আবিষ্কার করেন ।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭৪০ – প্রথম বাজিরাও, ভারতীয় সেনাপতি।
১৮১৩ – মিখাইল কুটুযোভ, রাশিয়ান ফিল্ড মার্শাল।
১৮৪৩ – নোয়া ওয়েবস্টার, মার্কিন অভিধান লেখক, পাঠ্যপুস্তক লেখক ও বানান সংস্কারক।
১৮৫৩ – লুডভিগ টিয়েক, জার্মান লেখক ও কবি।
১৯০৩ – জোসিয়াহ উইলার্ড গিবস, আমেরিকান বিজ্ঞানী।
১৯৩৬ – প্রথম ফুয়াদ, মিশর ও সুদানের সুলতান ও পরবর্তীকালে বাদশাহ।
১৯৪৫ – বেনিতো মুসোলিনি, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ কালে ইতালির সর্বাধিনায়ক।
১৯৫৪ – লিওন জউহাউক্স, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি ইউনিয়ন নেতা।
১৯৭০ – (ক)  ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের এক নারী বিপ্লবী দুকড়িবালা দেবী।
(খ) এড বেগ্লেয়, মার্কিন অভিনেতা।
১৯৭৮ – মোহাম্মদ দাউদ খান, আফগান সেনাপতি এবং রাজনীতিবিদ, আফগানিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি।
১৯৯৯ -(ক)  রলফ উইলিয়াম ল্যান্ডাওয়ার, জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী।
(খ) আলফ রামসে, ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড় ও ম্যানেজার।
আর্থার লিওনার্ড শলো, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান পদার্থবিদ।

২০০২ – ক্ষুদিরাম দাস, বিশিষ্ট রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ।

২০০৭ – কার্ল ফ্রিডরিখ ফন ভাইৎস্যেকার, জার্মান পদার্থবিদ এবং দার্শনিক।
২০১২ – মাটিল্ডে কামুস, তিনি ছিলেন স্প্যানিশ কবি।
২০২০ – জামিলুর রেজা চৌধুরী, বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও জাতীয় অধ্যাপক।
২০২১ -(ক) বাঙালি পদার্থবিদ, বাংলা সাহিত্যের রহস্য রোমাঞ্চ ও কল্পবিজ্ঞানের জনপ্রিয় লেখক অনীশ দেব।
(খ) যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অ্যাপোলো-১১’র চন্দ্রজয়ের অভিযানের অন্যতম সদস্য মাইকেল কলিন্স।
২০২৩ – রণজিত গুহ, খ্যাতনামা ভারতীয় বাঙালি ইতিহাসবিদ।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

দুকড়িবালা দেবী : ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এক অদম্য মহিলা যোদ্ধার গল্প।।।

বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে ভারতের স্বাধীনতার যুদ্ধটি ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে বীরত্বের সাথে লড়াই করা শক্তিশালী মহিলা সহ অনেকের সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগ দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল। এই মহিলাদের মধ্যে, দুকড়িবালা দেবী ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব হিসাবে দাঁড়িয়ে আছেন।

কারণের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি গভীর ছিল, উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল যা ভারতের চূড়ান্ত স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করতে সাহায্য করেছিল।
দুকড়িবালা দেবীর জীবন ছিল নিষ্ঠা ও সাহসের। ১৮৮৭ সালের ২১শে জুলাই, বীরভূম জেলার নলহাটির ঝাউপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ছিলেন নীলমণি চট্টোপাধ্যায় এবং কমলকামিনী দেবীর কন্যা। তার স্বামী ফণিভূষণ চক্রবর্তী এবং জামাতা নিবারণ ঘটক, একজন প্রখ্যাত সশস্ত্র বিপ্লবী সহ তার পরিবার স্বাধীনতা সংগ্রামে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন। এই পরিবেশ দুকড়িবালাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল, তাকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রধান ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছিল।
তার বিপ্লবী কর্মকাণ্ড ছিল সাহসী ও প্রভাবশালী। দুকড়িবালা বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধে তার ভূমিকার জন্য বিখ্যাত ছিলেন, একটি প্রচেষ্টা যা তাকে এই অঞ্চলের প্রথম দিকের মহিলা বিপ্লবীদের একজন হিসাবে তুলে ধরে। উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯১৪ সালে, বিপিন বিহারী গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, একটি উল্লেখযোগ্য অপারেশনের ফলে কলকাতার রোদা কোম্পানি থেকে মাউসার পিস্তল এবং গোলাবারুদ লুট করা হয়। দুকরিবালা, অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে, এই অস্ত্রগুলির কিছু নিজের হেফাজতে নিয়েছিল, সেগুলি তার বাসভবনে সংরক্ষণ করেছিল।
যাইহোক, অবশেষে ৮ জানুয়ারী, ১৯১৭ তারিখে পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালানোর পর তাকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনাটি ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হিসাবে চিহ্নিত, কারণ দুক্রিবালা দেবী ভারতের প্রথম মহিলা যিনি অস্ত্র আইনের অধীনে বন্দী হয়েছিলেন। তার সন্তানের কাছ থেকে বিচ্ছেদ সহ বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে ১৯১৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি মুক্তি পান।
দুকড়িবালা দেবীর উত্তরাধিকার ভারতের স্বাধীনতার লড়াইয়ে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার একটি প্রমাণ। তিনি ২৮ এপ্রিল, ১৯৭০ এ মারা যান, কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করার জন্য তার অবদান অবিস্মরণীয় রয়ে গেছে। সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য সশ্রম কারাদণ্ডের মুখোমুখি হওয়া প্রথম মহিলা হিসাবে, তার গল্পটি ভবিষ্যত প্রজন্মকে জাতির স্বাধীনতার জন্য করা আত্মত্যাগ সম্পর্কে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
তার কর্মের মাধ্যমে, দুকড়িবালা দেবী স্থিতিস্থাপকতা এবং দেশপ্রেমের চেতনার উদাহরণ দিয়েছিলেন, স্বাধীনতার কারণের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছিলেন। তার জীবন এবং আত্মত্যাগ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নারীদের উল্লেখযোগ্য অথচ প্রায়ই উপেক্ষিত অবদানকে তুলে ধরে।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

জোহরা সেহগাল : ভারতীয় বিনোদন জগতে এক অমর প্রতিভার গল্প।।।

জোহরা সেহগাল, ভারতীয় বিনোদনের একজন আইকনিক ব্যক্তিত্ব, একজন অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী এবং কোরিওগ্রাফার হিসাবে একটি অদম্য চিহ্ন রেখে গেছেন। ২৭ শে এপ্রিল ১৯১২-এ জন্মগ্রহণকারী, সেহগালের শিল্পকলায় যাত্রা শুরু হয়েছিল উদয় শঙ্করের দলে নৃত্যশিল্পী হিসাবে কাজ করার মাধ্যমে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মতো দেশগুলিতে আন্তর্জাতিকভাবে ভ্রমণ করে।

অভিনয়ে তার স্থানান্তর বলিউডে ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি কর্মজীবনের দিকে পরিচালিত করে, যেখানে তিনি চরিত্র অভিনেত্রী হিসাবে তার ভূমিকার জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন।
সেহগালের ফিল্মোগ্রাফির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে যেমন “নীচা নগর,” “আফসার” (১৯৪৬), “ভাজি অন দ্য বিচ” (১৯৯১), “দ্য মিস্টিক ম্যাসিউর” (২০০১), “বেন্ড ইট লাইক বেকহাম” (২০০২), “দিল” সে..” (১৯৯৮), “সায়া” (২০০৩), “সাওয়ারিয়া,” এবং “চিনি কম” (২০০৭)। “দ্য জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন” (১৯৮৪), “তান্দুরি নাইটস” (১৯৮৫-৮৭), এবং “আম্মা ও পরিবার” (১৯৯৬) এ অভিনয়ের মাধ্যমে টেলিভিশনেও তার বহুমুখী প্রতিভা ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৯০ বছর বয়সে, তিনি ২০০২ সালে “চলো ইশক লাদায়ে” চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
পৃথ্বীরাজ কাপুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় কানাট্য সংঘ (আইপিটিএ) এবং পৃথ্বী থিয়েটারে ১৪ বছরের মেয়াদ সহ ভারতীয় মঞ্চ নাটকে সেহগালের অবদান সমানভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল। তার অভিনয় দক্ষতা তাকে ১৯৯৮ সালে পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে কালিদাস সম্মান এবং ২০০৪ সালে সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার সহ বেশ কিছু প্রশংসা অর্জন করে। সঙ্গীত, নৃত্য ও নাটক জাতীয় একাডেমি তাকে আজীবন কৃতিত্বের জন্য সঙ্গীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ দিয়ে সম্মানিত করে। , ২০১০ সালে, তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মবিভূষণে ভূষিত হন।
একটি ব্যক্তিগত নোটে, সেহগালের জীবন তার ক্যারিয়ারের মতোই ঘটনাবহুল ছিল। প্রাথমিক পারিবারিক বিরোধিতা কাটিয়ে ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট তিনি কামেশ্বর সেহগাল নামে একজন হিন্দু ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। তাদের বিবাহ জওহরলাল নেহরু দ্বারা অনুগ্রহপূর্বক হওয়ার কথা ছিল, যাকে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে ভূমিকার জন্য ইভেন্টের কয়েকদিন আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই দম্পতির দুটি সন্তান ছিল, কিরণ সেহগাল, একজন বিখ্যাত ওড়িশি নৃত্যশিল্পী এবং পবন সেহগাল, যিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য কাজ করেন। ২০১২ সালে, কিরণ তার মায়ের একটি জীবনী লেখেন, যার শিরোনাম ছিল “জোহরা সেহগাল: ফ্যাটি।”
জোহরা সেহগালের ১০ ই জুলাই ২০১৪ তারিখে নতুন দিল্লির একটি হাসপাতালে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে মৃত্যু একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছিল। তার উত্তরাধিকার, যাইহোক, প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে, শৈল্পিক শ্রেষ্ঠত্বের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রেখে গেছে যা নৃত্য এবং সিনেমার সীমানা অতিক্রম করে। শিল্পকলায় তার অবিরাম অবদানের মাধ্যমে, জোহরা সেহগাল ভারতের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে একজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব হয়ে আছেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রাচীন বাঙালি সংস্কৃতির প্রহরী – প্রবোধচন্দ্র সেনের অমর অবদান।।।

প্রবোধচন্দ্র সেন, একজন প্রখ্যাত বাঙালি ইতিহাসবিদ, ভাষাবিদ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনার বিশেষজ্ঞ, তাঁর ব্যাপক অবদানের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাসে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর সাংস্কৃতিক প্রাণবন্ততায় জন্মগ্রহণকারী সেনের জীবনযাত্রা তার জন্মস্থান চুন্টা গ্রামে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, একজন সম্মানিত শিক্ষাবিদ এবং লেখক হিসাবে তার ভূমিকা, যুক্তিবাদ, মানবতাবাদ এবং সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতি তার উত্সর্গকে প্রতিফলিত করে।

১৮৯৭ সালের ২৭শে এপ্রিল, প্রবোধ চন্দ্র সেন হরদাস সেন এবং স্বর্ণময়ী সেনের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের পদশালায় তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা তাঁর বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনের ভিত্তি তৈরি করে। সেনের একাডেমিক যাত্রা তাকে স্কুল এবং কলেজের জন্য কুমিল্লা শহরে চলে যেতে দেখে, ১৯২৪ সালে সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স সহ বিএ পাস করেন। তার ব্যতিক্রমী শিক্ষাগত সাফল্যগুলি ১৯২৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে এমএ করার সাথে অব্যাহত থাকে, যেখানে তিনি প্রথম শ্রেণীর অবস্থান এবং একটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন।
ইতিহাসের প্রতি সেনের আবেগ দেশপ্রেম দ্বারা চালিত হয়েছিল, এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা তাকে সামাজিক অনুশীলনে নিয়োজিত হতে দেখেছিল যা অবশেষে ১৯১৬ সালে ব্রিটিশ সরকার দ্বারা তাকে গ্রেপ্তারের দিকে পরিচালিত করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পরে, ১৯১৮ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তবুও তার অভিজ্ঞতাগুলিকে আরও উস্কে দেয়। তার মাতৃভূমির সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সংরক্ষণের প্রতি তার উৎসর্গ।
প্রবোধ চন্দ্র সেনের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৩২ সালে খুলনা হিন্দু একাডেমিতে, যেখানে তিনি ইতিহাস ও বাংলা সাহিত্য পড়াতেন। ১৯৪২ সালে তিনি বিশ্বভারতী বিদ্যাভবনে রবীন্দ্র-অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের সময় শিক্ষায় তাঁর অবদান একটি উল্লেখযোগ্য মোড় নেয় এবং পরবর্তীতে ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হলে বঙ্গীয় বিভাগের প্রধান হন।
তাঁর শাসনামলে, তিনি ১৯৬২ সালে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং ১৯৬৫ সালে অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত তিনি বাংলা সাহিত্য ও শিক্ষাকে প্রভাবিত করতে থাকেন। অবসর গ্রহণের পর, তিনি বিশ্বভারতীর অনারারি ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে সম্মানিত হন, এটি একটি প্রমাণ। মাঠে তার দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার।
সেনের সাহিত্য যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২২ সালে “বাংলা চাঁদ” প্রকাশের মাধ্যমে, একটি প্রবন্ধ যা সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এবং কাজী নজরুল ইসলামের মতো সমসাময়িকদের কাছ থেকে শুধু প্রশংসাই অর্জন করেনি বরং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছিল। বাংলা ছন্দে সেনের অন্তর্দৃষ্টির জন্য ঠাকুরের প্রশংসা তাকে “চন্ডসিক” উপাধিতে ভূষিত করেছিল। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে, তিনি বাংলা ছন্দ সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক আলোচনা এবং পরিভাষাগুলির উপর তাঁর লেখার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন, যা বাংলা সাহিত্যের একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
তার বাংলা ছন্দ সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল –
ছন্দোগুরু রবীন্দ্রনাথ, ছন্দপরিক্রমা, ছন্দজিজ্ঞাসা, বাংলাছন্দ চিন্তার ক্রমবিকাশ, ছন্দ সোপান, বাংলা ছন্দে রূপকার রবীন্দ্রনাথ, নতুন ছন্দ পরিক্রমা প্রভৃতি।
সম্মাননা—
বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রবোধচন্দ্র সেন বিভিন্ন সময়ে অনেক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে আছে
প্রফুল্ল-স্মৃতি পুরস্কার (১৯৬৯), পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘বঙ্কিম পুরস্কার’ (১৯৭৫) ‘ভারতাত্মা কবি কালিদাস’ গ্রন্থের জন্য, কেশবচন্দ্র গুপ্ত স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৮), বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দেশিকোত্তম উপাধি (১৯৮০), কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডিলিট (১৯৮৩), উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডিলিট (১৯৮৩)। এশিয়াটিক সোসাইটি ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে মরণোত্তর “রবীন্দ্রশতবার্ষিকী স্মারক পদক প্রদান করে।
প্রবোধ চন্দ্র সেনের যাত্রা ২০শে সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ সালে শান্তিনিকেতনে শেষ হয়েছিল, কিন্তু তার কাজ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। তাঁর জীবন, একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব, সাহিত্যিক অবদান এবং তাঁর সংস্কৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসার দ্বারা চিহ্নিত, বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাসের পণ্ডিত এবং উত্সাহীদের জন্য একটি পথনির্দেশক আলো হয়ে আছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This