তারাপদ চক্রবর্তী ছিলেন একজন কণ্ঠশিল্পী ও সুরকার। তিনি কোটালি ঘরানার পথপ্রদর্শক ছিলেন যা একটি রাগ পরিবেশনের সময় আলাপের ধীর পরিবেশনের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
জন্ম—
সঙ্গীতশিল্পী তারাপদ চক্রবর্তী ১৩ এপ্রিল, ১৯০৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের ফরিদপুর জেলার কোটালীপাড়ায়, বর্তমান বাংলাদেশের একটি সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ পন্ডিত কুলচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মাতা দুর্গারাণী দেবী। তার বাবা, দাদা এবং প্রপিতামহ সবাই সঙ্গীতে পারদর্শী ছিলেন। পরিবার থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তিনি।
সঙ্গীতচর্চা–
তিনি কলকাতা বেতারে তবলা বাদকের চাকরি নেন। ধীরে ধীরে তিনি উচ্চাঙ্গের শিল্পী শিল্পী হিসেবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তিনি বাংলা খেয়াল ও বাংলা ঠুমরি গানের প্রবর্তক। বিভিন্ন সময়ে তারাপদ ওস্তাদ এনায়েত খান, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান, ওস্তাদ হাফিজ আলী খান এবং অন্যান্য সঙ্গীত সম্রাটের সাথে তবলা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সুরকার তারাপদ চক্রবর্তী কিছু নতুন রাগ তৈরি করেছেন। তার মধ্যে ‘ছায়াহিন্দোল’ অন্যতম। তাঁর সুরতীর্থ নামে একটি গ্রন্থ আছে।
উপাধি—
তিনি বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত হন। ভাটপাড়া পণ্ডিতসমাজ কতৃর্ক সঙ্গীতাচার্য, বিদ্বৎ সম্মিলনী থেকে সঙ্গীতরত্নাকর ও কুমিল্লা সংগীত পরিষদ থেকে ”সংগীতার্ণব” উপাধি লাভ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সংগীত-নাটক অ্যাকাডেমির সদস্য নির্বাচিত হন এবং রাজ্য সরকারের আকাদেমি পুরস্কার পান। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে জীবনসায়াহ্নেপদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করলে তিনি ওই উপাধি গ্রহণে অসম্মতি জানান। তিনি বিশ্বভারতীর নির্বাচন-বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
তারাপদ চক্রবর্তীর ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ সালে কলকাতায় মৃত্যু একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু তার সঙ্গীতের উত্তরাধিকার প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট