ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।
ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। তিনি ফরোয়ার্ড ব্লকপন্থী রাজনৈতিক নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভার সদস্য ছিলেন।
জীবনী-
তিনি ময়মনসিংহ শহরে ১৯ মার্চ,১৯০২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল যোগেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায়। ঢাকায় হেমচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে বিপ্লবী জীবন শুরু করেন। তিনি অল্প বয়সেই বিপ্লবী ‘বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স’ দলের সভ্য হন এবং সেই দলের বিশিষ্ট ব্যক্তি হয়ে উঠেন। ১৯৩০ সনের গ্রীষ্মকালে বিপ্লবী বিনয়কৃষ্ণ বসু তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তিনি বিনয় বসুকে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র রাজনীতিতে দীক্ষা দেন।১৯৩০ -৩৮ খ্রিস্টাব্দে স্টেট প্রিজনাররূপে বিভিন্ন জেলে বন্দিজীবন কাটান। গান্ধীজির সঙ্গে কথা বলার জন্য ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে কলকাতা প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয়। তার কিছুকাল পর তিনি মুক্তি পান। তিনি দণ্ডকারণ্যে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনে সহযোগিতা করেন। কলকাতার মহাজাতি সদনের ট্রাস্টি ও বিপ্লবী নিকেতনের সহসভাপতি ছিলেন। উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সপ্তগ্রাম সর্বেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় ও বাদু পল্লী নিকেতন সংস্থার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
রচনাবলী-
১৯২৮-৩২ খ্রিস্টাব্দে তার পরিচালিত “বেণু” পত্রিকা যুবমহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। তিনি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবী উজ্জ্বলা মজুমদারকে বিবাহ করেন। তিনি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনৈতিক ধারার বিবর্তনের উপর কতিপয় মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেন। তার রচিত ভারতের সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত
গ্রন্থ-
যে পতাকা মাটিতে নামেনি, ভারতীয় রাজনীতির রূপরেখা, চলার পথে, নারী, সবার অলক্ষ্যে(২ খণ্ড), ভারতের সশস্ত্র বিপ্লব।
২৪ এপ্রিল,১৯৭২ সালে তিনি প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।