Categories
প্রবন্ধ

শচীন রমেশ তেন্ডুলকার, এক জীবন্ত কিংবদন্তি, ক্রিকেটের ভগবান – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

শচীন তেন্ডুলকর, এমন একটি নাম যাকে চেনননা ভূভারতে এমন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন। কারন শচীন তেন্ডুলকর এমন একটি আবেগের নাম, যিনি গোটা ভারতবাসীর রক্তে, হৃদয়ে মিশে আছেন। শুধু আমাদের দেশ কেন বোলি, গোটা বিশ্বে তিনি এক পরিচিত নাম। লক্ষ লক্ষ ভক্ত ছড়িয়ে রয়েছে বিদেশেও। একজন ক্রিকেটার হিসেবে তিনি গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের নাম রোশন করেছেন।

যারা ক্রিকেট পাগল, যারা ক্রিকেট দেখেন ভালোবাসেন, আবার যারা দেখেননা, সকলেই একডাকে চেনেন তাকে। তিনি শুধু একজন ক্রিকেটার নন একজন সত্যিকারের মানুষ, তিনি আমাদের গর্ব, তিনি আমাদের ভারত রত্ন। আজ তার জন্মদিন।
শচীন রমেশ তেন্ডুলকর একজন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার।১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে এপ্রিল নির্মল নার্সিং হোমে শচীন তেন্ডুলকর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রমেশ তেন্ডুলকর একজন মারাঠি ঔপন্যাসিক ছিলেন। তার মাতা রজনী তেন্ডুলকর বীমা কোম্পানিতে কাজ করতেন। রমেশ বিখ্যাত ভারতীয় সুরকার শচীন দেববর্মণের নামানুসারে তার নাম শচীন রাখেন। শচীনের দুই দাদা নিতিন ও অজিত এবং দিদি সবিতা রমেশের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সন্তান। প্রথম জীবনে শচীন বান্দ্রা (পূর্ব) অঞ্চলের সাহিত্য সহবাস কো-ওপারেটিভ হাউসিং সোসাইটিতে বসবাস করতেন।
তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চমানের ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। শচীনের মাত্র ষোলো বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় এবং এরপর থেকে প্রায় চব্বিশ বছর তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেন। তিনি টেস্ট ক্রিকেট ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় সর্বোচ্চসংখ্যক শতকের অধিকারীসহ বেশ কিছু বিশ্বরেকর্ড ধারণ করে আছেন। তিনি প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ও টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ মিলিয়ে শততম শতক করেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১২ সালের এশিয়া কাপ চারদেশীয় ক্রিকেট ম্যাচে তিনি এই রেকর্ড করেন। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ইতিহাসে প্রথম দ্বি-শতরানের মালিক তিনি। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই অক্টোবর, তিনি সমস্ত ধরনের স্বীকৃত ক্রিকেট খেলায় প্রথম ভারতীয় হিসেবে মোট ৫০,০০০ রানের মালিক হন।
শচীন ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে ডিসেম্বর একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেন।২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই অক্টোবর তেন্ডুলকর ঘোষণা করেন যে, তিনি তার জীবনের ২০০তম টেস্ট খেলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন।ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সেই অনুযায়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঐ বছর নভেম্বর মাসে কলকাতা ও মুম্বই শহরে দুইটি টেস্ট ম্যাচের আয়োজন করেন। মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত তার ২০০তম টেস্ট ম্যাচে তিনি ৭৪ রান করেন, ফলে টেস্ট ক্রিকেটে তার ১৬,০০০ থেকে মাত্র ৭৯ রান দূরে তিনি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করেন।
তেন্ডুলকর বিভিন্নভাবে দলীয়, ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। উল্লেখযোগ্য সম্মাননা ও পুরস্কারগুলো হলো:
(১)আইসিসি পুরস্কার – স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি, ২০১০-এর সেরা ক্রিকেটার
(২)পদ্মবিভূষণ, ভারতের ২য় সর্বোচ্চ পুরস্কার, ২০০৮
(৩)আইসিসি বিশ্ব একদিনের আন্তর্জাতিক একাদশে খেলোয়াড় হিসেবে অন্তর্ভুক্তি: ২০০৪ ও ২০০৭
(৪)রাজীব গান্ধী পুরস্কার (খেলা): ২০০৫
(৫)ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ২০০৩-এ টুর্ণামেন্টের সেরা খেলোয়াড়
(৬)মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক সর্বোচ্চ নাগরিকের পুরস্কার লাভ: ২০০১
(৭)পদ্মশ্রী, ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিকের পুরস্কার, ১৯৯৯
(৮)খেলাধূলায় ভারতে সর্বোচ্চ সম্মাননা হিসেবে রাজীব গান্ধী খেলরত্ন লাভ: ১৯৯৭-৯৮
(৯)উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার: ১৯৯৭
(১০)ক্রিকেটে অভূতপূর্ব ফলাফল করায় ভারত সরকার কর্তৃক অর্জুন পুরস্কার লাভ।
(১১)অক্টোবর, ২০১০-এ লন্ডন স্পোর্ট এন্ড দ্য পিপল্‌স চয়েজ এওয়ার্ড হিসেবে দি এশিয়ান এওয়ার্ড লাভ।
(১২)জুলাই ২০১৯-এ আইসিসির হল অব ফেমে শচীনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। ষষ্ঠ ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এ বিরল সম্মাননায় তাকে ভূষিত করা হয়
(১৩)ইন্ডিয়ান আইকন শচীন টেন্ডুলকার লরিয়াস ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডস ২০২০ জিতেছেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *