Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।।

উন্নয়ন এবং শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস ২০২৫—

উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক খেলাধুলার দিনটি ৬ই এপ্রিল, ২০২৫-এ আসছে। এই দিনটি বিশ্বজুড়ে শান্তি, উন্নয়ন এবং মঙ্গল প্রচারে খেলাধুলার একীভূতকরণ এবং রূপান্তরকারী শক্তির একটি শক্তিশালী অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে।

উন্নয়ন এবং শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস ২০২৫ থিম- –

উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবসের ২০২৫ সালের থিম হল, “খেলার ক্ষেত্র সমতলকরণ: সামাজিক অন্তর্ভুক্তির জন্য খেলাধুলা”।

উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস উদযাপনের জন্য, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন কার্যক্রম এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে স্পোর্টস টুর্নামেন্ট, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, প্রদর্শনী এবং কমিউনিটি আউটরিচ প্রোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সরকার, বেসরকারী সংস্থা, ক্রীড়া ফেডারেশন, স্কুল এবং সম্প্রদায় সকলেই খেলাধুলার শক্তি উদযাপন করতে এবং সমাজে এর ইতিবাচক প্রভাব প্রচার করতে একত্রিত হয়।

ইতিহাস ও তাৎপর্য–

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০১৩ সালে ৬ই এপ্রিলকে উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্ত সামাজিক অগ্রগতি, মানবাধিকার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে খেলাধুলার ক্রমবর্ধমান অবদানকে স্বীকৃতি দেয়। খেলাধুলার অনন্য ক্ষমতা রয়েছে সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং সামাজিক বাধা অতিক্রম করার, মানুষকে একত্রিত করা এবং সংহতি প্রচার করার।
আইডিএসডিপি এই বিশ্বাসের একটি প্রমাণ যে খেলাধুলা শান্তি ও উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং যুব ক্ষমতায়নের প্রচারে খেলাধুলার ভূমিকা তুলে ধরে। খেলাধুলার শক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে, সম্প্রদায়গুলি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে এবং আরও শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ে তুলতে পারে।

অর্জন এবং প্রভাব–

বছরের পর বছর ধরে, উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস সামাজিক পরিবর্তনের জন্য খেলাধুলার শক্তিকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যে অসংখ্য উদ্যোগ এবং অংশীদারিত্বকে অনুপ্রাণিত করেছে। এই উদ্যোগগুলি বিশ্বজুড়ে সম্প্রদায়ের উপর একটি বাস্তব প্রভাব ফেলেছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তির প্রচার এবং প্রান্তিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও যুবকদের ক্ষমতায়ন করেছে।
খেলাধুলার প্রোগ্রামগুলি দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রচার, বিভক্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ এবং সহনশীলতা এবং বোঝাপড়ার প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সংঘাত-আক্রান্ত অঞ্চলে, খেলাধুলা শান্তি বিনির্মাণ এবং পুনর্মিলনের একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যুদ্ধের ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে এবং সংলাপ ও সহযোগিতার প্রচার করে।
তদুপরি, খেলাধুলা স্বাস্থ্য ও মঙ্গল প্রচারে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়গুলিতে। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং বিনোদনের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে, খেলাধুলা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে অবদান রাখে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং ফিটনেসকে উন্নীত করে।

সামনে দেখ—

যেহেতু বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য এবং সংঘাতের মতো জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে চলেছে, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য খেলাধুলার ভূমিকা কখনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। উন্নয়ন এবং শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের জন্য খেলাধুলার শক্তিকে কাজে লাগাতে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করার একটি সুযোগ প্রদান করে।
আমরা ৬ এপ্রিল আইডিএসডিপি পালন করার সময়, আসুন আমরা খেলাধুলার রূপান্তরমূলক সম্ভাবনার প্রতিফলন করি এবং সকলের জন্য আরও শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য এই শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্য নিজেদেরকে পুনরায় উৎসর্গ করি।
উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস হল বিশ্বজনীন মূল্যবোধের একটি অনুস্মারক যা খেলাগুলিকে মূর্ত করে – দলগত কাজ, সম্মান এবং সংহতি। এই মূল্যবোধগুলিকে প্রচার করার মাধ্যমে, আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত বিশ্ব তৈরি করতে পারি, যেখানে খেলাধুলার চেতনা ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য একটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ জাতীয় সামুদ্রিক দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় ও গুরুত্ব।।।

জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫: জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ সারা ভারত জুড়ে ৫ এপ্রিল পালিত হয়। প্রতি বছর, ভারতে জাতীয় সমুদ্র দিবস ৫ এপ্রিল পালিত হয়। এটি সেইসব মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য পালিত হয় যারা সমুদ্রে বহু মাস ব্যয় করে, বিশ্বব্যাপী ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগ পরিচালনা করে। ১৯৬৪ সাল থেকে, ভারতে ৫ এপ্রিল জাতীয় সমুদ্র দিবস পালিত হয়ে আসছে। এটি ভারতে জাতীয় সমুদ্র দিবস উদযাপনের ৬১ তম বছর। ভারতীয় জাতীয় সমুদ্র দিবস ৫ এপ্রিল পালিত হয় কারণ, ১৯১৯ সালে এই তারিখে, প্রথম ভারতীয় পতাকাবাহী বণিক জাহাজ এসএস লয়্যালটি মুম্বাই থেকে লন্ডনে যাত্রা করেছিল। সিন্ধিয়া স্টিম নেভিগেশন কোম্পানি লিমিটেড ছিল এসএস লয়্যালের মালিক।
জাতীয় সমুদ্র দিবস হল দেশের নৌবাহিনীর সদস্যদের “ধন্যবাদ” জানানোর একটি সুযোগ যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নির্বিঘ্ন পরিবহন নিশ্চিত করার জন্য দিনরাত কাজ করে। একটি শিপিং লাইন বা শিপিং কোম্পানি হল এমন একটি কোম্পানি যার ব্যবসার ক্ষেত্র হল জাহাজের মালিকানা এবং পরিচালনা। জাহাজ কোম্পানিগুলি বিভিন্ন ধরণের পণ্যসম্ভার দ্বারা জাহাজগুলিকে আলাদা করার একটি পদ্ধতি প্রদান করে: বাল্ক কার্গো হল এক ধরণের বিশেষ পণ্যসম্ভার যা প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ এবং পরিচালনা করা হয়। জাহাজে মাসের পর মাস কাটানো নাবিকদের ছাড়া আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ত। ১৯৬৪ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ এপ্রিল জাতীয় সমুদ্র দিবস পালিত হয়ে আসছে। এই নিবন্ধটি আপনাকে জাতীয় সমুদ্র দিবসের ইতিহাস, জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ থিম, জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ এর তাৎপর্য, জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ এর উদ্ধৃতি এবং জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে সাহায্য করবে।

জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ এর ইতিহাস—–

ভারতীয় জাহাজ চলাচলের উত্তরাধিকার প্রথম শুরু হয় ৫ এপ্রিল , ১৯১৯ সালে, যখন সিন্ডিয়া স্টিম নেভিগেশন কোম্পানি লিমিটেড দ্বারা নির্মিত প্রথম জাহাজ “দ্য এসএস লয়্যালটি” মুম্বাই থেকে যুক্তরাজ্যে যাত্রা করে।

ভারত ১৯৫৯ সালে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থার (আইএমও) সদস্যও হয়। আইএমও সমুদ্র সুরক্ষা এবং জাহাজ থেকে দূষণ রোধের জন্য দায়ী।

জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ এর থিম——

২০২৫ সালের জন্য বিশ্ব সমুদ্রসীমার প্রতিপাদ্য এখনও ঘোষণা করা হয়নি, যা সামুদ্রিক খাতের একটি টেকসই ভবিষ্যতের সবুজ রূপান্তরকে সমর্থন করার প্রয়োজনীয়তা প্রতিফলিত করে, যেখানে কাউকে পিছনে ফেলে রাখা হবে না। এই প্রতিপাদ্যটি একটি টেকসই সামুদ্রিক খাতের গুরুত্ব এবং মহামারী-পরবর্তী বিশ্বে আরও ভাল এবং সবুজ করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপর মনোনিবেশ করার সুযোগ প্রদান করে। IMO সক্রিয়ভাবে জাহাজ খাতের একটি টেকসই ভবিষ্যতের সবুজ রূপান্তরকে সমর্থন করে এবং সামুদ্রিক উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং নতুন প্রযুক্তির প্রদর্শন এবং স্থাপনা প্রদর্শন করে।
জাতীয় সমুদ্র দিবস ২০২৫ এর তাৎপর্য——

সামুদ্রিক জাহাজ চলাচল বিশ্ব বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র এবং বিশ্বায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজ, সবাই বিশ্বজুড়ে আমদানি করা সমাপ্ত পণ্য ব্যবহার করে, যা জীবনকে সহজ করে তোলে এবং মান বজায় রাখে কারণ সামুদ্রিক পরিবহন, যা তার বিশাল ক্ষমতার কারণে পণ্য পরিবহনের একটি কার্যকর উপায় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, একসাথে প্রচুর পরিমাণে উপাদান পরিবহনের সুযোগ দেয়, যার ফলে অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় দ্রুত এবং সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা তৈরি হয়, যা এটিকে পরিবহনের ক্ষেত্রে এক নম্বরে পরিণত করে। এই দিনটি সমস্ত নাবিক এবং সামুদ্রিক শিল্পে কাজ করে এমন সকলকে সম্মান জানায়, কারণ তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছাড়া কেবল ভারতই নয়, যেকোনো দেশ সামুদ্রিক বাণিজ্য খাত পরিচালনা করতে অক্ষম হত।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য সম্পর্কে কিছু কথা।।।।

লভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ঘাট্লে দেখা যাবে বহু মানুষ প্রাণ দিয়েছেন আমাদের দেশমাতৃকাকে শৃঙ্খল মুক্ত করার জন্য। কিন্তু এখনো অনেকেই জানে না অনেকের নাম। কত শহীদ এর আত্মত্যাগের ঘটনা রয়ে গেছে অন্তরালে। এখন আমরা জানব ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য সম্পর্কে কিছু কথা।

বিপ্লবী জীবন–

এবার আমরা জানব অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য’র বিপ্লব জীবনের কর্মকান্ড নিয়ে কিথা। আমরা সকলেই জানি আলিপুর বোমা মামলার সেই ঐতিহাসিক ঘটনার কথা।
কলকাতার ৩২ নং মুরারিপুকুরের বাগানবাড়িতে একটি বোমা তৈরির স্থান ছিলো। সেই মুরারিপুকুরের ঘটনায় আলিপুর বোমা মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করে ১৯০৯ সনের মে মাসে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পরে দণ্ডাদেশ হ্রাস পাওয়ায় ১৯১৫ সনের মে মাসে মুক্তি পান। ১৯২০ সনে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টিতে যোগ দেন ও নারায়ণ পত্রিকা পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন। এছাড়াও বিজলী, আত্মশক্তি ও ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যাল গেজেট প্রভৃতি পত্রিকার সংগেও যুক্ত ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ হচ্ছে রণসজ্জায় জার্মানি, স্বরাজসাধনা, মুক্তিসাধনা, জার্মানি প্রবাসীপত্র, ইউরোপে ভারতীয় বিপ্লবের সাধনা প্রভৃতি।

আলিপুর বোমা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিগণ-

৩০ এপ্রিল ১৯০৮-এ মুজাফফরপুর, বিহারে রাত সাড়ে আটটায় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যা করেন ক্ষুদিরাম বসু। সেই ঘটনার পর আলিপুর বোমা মামলা শুরু হয়। ১৯০৯ সালের ৬ মে আলিপুর বোমা মামলার রায় দেয়া হয়। রায়ে বিচারক বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন। উপেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র কানুনগো, বিভূতিভূষণ সরকার, বীরেন্দ্র সেন, সুধীর ঘোষ, ইন্দ্রনাথ নন্দী, অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য, শৈলেন্দ্রনাথ বসু, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, ইন্দুভূষণ রায়ের, দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। পরেশ মৌলিক, শিশির ঘোষ, নিরাপদ রায় ১০ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড, অশোক নন্দী, বালকৃষ্ণ হরিকোণে, শিশির কুমার সেন ৭ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড এবংকৃষ্ণ জীবন সান্যাল ১ বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন। আপিলে বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তের মৃত্যুদণ্ড রহিত হয় এবং তার বদলে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। অরবিন্দ ঘোষ মুক্তি পান এবং অনেকের সাজা হ্রাস করা হয়।

স্বরাজ্য পার্টিতে যোগ–

কলকাতার ৩২ নং মুরারিপুকুরের বাগানবাড়িতে একটি বোমা তৈরির স্থান ছিলো। সেই মুরারিপুকুরের ঘটনায় আলিপুর বোমা মামলার আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করে ১৯০৯ সনের মে মাসে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পরে দণ্ডাদেশ হ্রাস পাওয়ায় ১৯১৫ সনের মে মাসে মুক্তি পান। ১৯২০ সনে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টিতে যোগ দেন ও নারায়ণ পত্রিকা পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন।

রচিত গ্রন্থ–

এছাড়াও বিজলী, আত্মশক্তি ও ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যাল গেজেট প্রভৃতি পত্রিকার সংগেও যুক্ত ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ হচ্ছে রণসজ্জায় জার্মানি, স্বরাজসাধনা, মুক্তিসাধনা, জার্মানি প্রবাসীপত্র, ইউরোপে ভারতীয় বিপ্লবের সাধনা প্রভৃতি।

মৃত্যু–

১০ মে, ১৯৬২ সালে মহান এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রয়াণ ঘটে।

।।তথ্য ঋণ: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ০৫ এপ্রিল, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ০৫ এপ্রিল। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–

(ক)  জাতীয় সামুদ্রিক দিবস, ভারত।
(খ) জাতীয় অটিজম দিবস, বাংলাদেশ।

আজ যাদের জন্মদিন—- .

১৫৮৮ – টমাস হব্‌স, ইংরেজ দার্শনিক।

১৮২৭ – জোসেফ লিস্টার, ব্রিটিশ শল্যচিকিৎসক এবং আধুনিক শল্যচিকিৎসার জনক।
১৮৮২ – অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী।
১৮৯৫ – চার্লি হ্যালোস, ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান।
১৯০০ – স্পেন্সার ট্রেসি, মার্কিন অভিনেতা।
১৯০১ – মেলভিন ডগলাস, মার্কিন অভিনেতা।
১৯০৫ – শিল্পপতি একে খান।
১৯০৮ – বেটি ডেভিস, মার্কিন অভিনেত্রী।
১৯১৬ – গ্রেগরি পেক, মার্কিন অভিনেতা।
১৯২৯ – গোলাম সামদানী কোরায়শী, বাংলাদেশের বিশিষ্ট সহিত্যিক, গবেষক ও অনুবাদক।
১৯৩৮ – কলিন ব্ল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার।
১৯৪৭ – গ্লোরিয়া মাকাপাগাল আরোইয়ো, ফিলিপাইনের ১৪তম রাষ্ট্রপতি।
১৯৫৫ – আকিরা তোরিয়ামা, জাপানি মাঙ্গা চিত্রশিল্পী ও ভিডিও গেম শিল্পী।
১৯৬৮ – মহান মহারাজ নামে পরিচিত স্বামী বিদ্যানাথানন্দ, ভারতীয় গণিতবিদ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৫৩ – বৃটিশ যাদুঘরের প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৭৯৪ – ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম নায়ক হিসেবে পরিচিত জর্জ ডাটনকে গিলোটিনের মাধ্যমে প্রাণদন্ড কার্যকর করা হয়।
১৮৮০ – শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৯৯ – দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৫ রানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অল আউট হয়।
১৯১৮ – জার্মান বাহিনী তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশন মাইকেলের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
১৯৩১ – ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল ও মহাত্মা গান্ধীর মধ্যে চুক্তি সই হয়েছিল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও গরিবের জন্য লবণের অধিকার সংরক্ষণের।
১৯৪৪ – সুভাষচন্দ্র বসু রেঙ্গুনে আজাদ হিন্দ ব্যাঙ্ক স্থাপন করেন।
১৯৪৫ – যুগোশ্লাভিয়ায় সোভিয়েত সৈন্যদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দেশটির নেতা টিটো ক্রেমলিনের সাথে একটি চু্‌ক্তি স্বাক্ষর করেন।
১৯৪৭ – গ্লোরিয়া মাকাপাগাল আরোইয়ো ফিলিপাইনের ১৪তম রাষ্ট্রপতি হন।
১৯৫১ – তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে পরমাণু বিষয়ক গোপন তথ্য পাচারের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী দম্পতি জুলিয়াস এবং ইথেল রোজেনবার্গকে প্রাণদন্ড প্রদান করা হয়।
১৯৬০ – কিউবান ফটোগ্রাফার আলবার্তো কোবা মার্কসিস্ট বিপ্লবী চে গুয়েভারার বিখ্যাত ছবিটি তুলেছিলেন।
১৯৬৪ – লন্ডনে প্রথম চালকবিহীন স্বয়ংক্রিয় পাতালরেল চালু হয়।
১৯৭১ – সিসিলিতে এটসা আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাতে প্রচুর লাভা উদগিরণ হয়।
১৯৯৫ – বার্লিনে জলবায়ু সংক্রান্ত জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৩২ – প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, বাঙালী সাহিত্যিক।
১৯৩৮ – ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটকিপার কিরিল ক্রিশ্চিয়ানি।
১৯৩৯ – উইলিয়াম কুপার, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।
১৯৪০ – দীনবন্ধু চার্লস ফ্রিয়ার এন্ড্রুজ, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একনিষ্ঠ সেবক।
১৯৭৫ – চীনা রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা চিয়াং কাই শেক।
১৯৮০ – প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি সাঁতারু প্রফুল্ল ঘোষ।
২০০০ – (ক)  কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী।
(খ) অমর গঙ্গোপাধ্যায়, বাংলা রঙ্গমঞ্চের বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব।
২০০৭ – লীলা মজুমদার, ভারতীয় বাঙালি লেখিকা।
২০০৮ – চার্লটন হেস্টন, মার্কিন অভিনেতা ও রাজনৈতিক কর্মী।
২০০৯ – জর্জ ট্রাইব, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

দীনবন্ধু চার্লস ফ্রিয়ার এন্ড্রুজ, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একনিষ্ঠ সেবক – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুস, যিনি স্নেহপূর্ণভাবে দীনবন্ধু নামে পরিচিত, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ১৮৭১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী, ইংল্যান্ডের নিউক্যাসল আপন টাইনে জন্মগ্রহণকারী অ্যান্ড্রুজের জীবন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয় যখন তিনি ২০ মার্চ, ১৯০৪ সালে ভারতে আসেন।

দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজে দর্শনের শিক্ষক হিসাবে তাঁর প্রাথমিক ভূমিকা ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়। ব্রিটিশ শাসনের অনাচারে গভীরভাবে বিরক্ত হয়ে ভারতের সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামোতে গভীরভাবে জড়িত হয়ে পড়েন।
অ্যান্ড্রুজের গভীর বিশ্বাস এবং তার পিতার ধর্মীয় প্রভাব তার নৈতিক কম্পাসকে আকার দিয়েছে। তার বাবা ছিলেন বার্মিংহামের ক্যাথলিক অ্যাপোস্টলিক চার্চে একজন ‘এঞ্জেল’ (বিশপ)। বার্মিংহামের কিংস এডওয়ার্ড স্কুলে অ্যান্ড্রুজের শিক্ষা এবং পরে কেমব্রিজের পেমব্রোক কলেজে, যেখানে তিনি একটি প্রবন্ধের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ‘বুনিয়ান’ পুরস্কার জিতেছিলেন, সমাজ সংস্কারের জন্য তার আজীবন প্রতিশ্রুতির ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
১৯১২ সালে ইংল্যান্ডে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে তার সাক্ষাত একটি টার্নিং পয়েন্ট ছিল। এই বৈঠকের সময়ই অ্যান্ড্রুস ভারতের সেবায় তার জীবন উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাথে তার সম্পৃক্ততা এবং ১৯১৩ সালের মাদ্রাজ (বর্তমানে চেন্নাই) মিল শ্রমিকদের ধর্মঘট সমাধানে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।
১৯১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, অ্যান্ড্রুস প্রথম শান্তিনিকেতনে যান, যা পরে তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে ওঠে। এখানে, তিনি ঠাকুরের বড় ভাই দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন, ১৯২১ সালে প্রথম উপাচার্য হন।
ভারতীয় অধিকারের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রামেও অ্যান্ড্রুস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। গোপাল কৃষ্ণ গোখলের অনুরোধে, তিনি ১৯১৪ সালে গান্ধীকে সহায়তা করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা যান, জেনারেল জান ক্রিশ্চিয়ান স্মাটসের সাথে সফল আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
সারা জীবন, অ্যান্ড্রুজ জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং ভারতে হোক বা বিদেশে, নির্যাতিতদের উন্নতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ফিজিতে ভারতীয় শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির জন্য তার প্রচেষ্টা ১৯১৭ সালে তাকে “দরিদ্রের বন্ধু” বা “দ্বীনবন্ধু” উপাধিতে ভূষিত করে।
১৯১৯ সালে মর্মান্তিক জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর, অ্যান্ড্রুজ ক্ষতিগ্রস্তদের সেবা করার চেষ্টা করেছিলেন এবং ব্রিটিশদের দ্বারা সংঘটিত নৃশংসতার জন্য প্রকাশ্যে সমস্ত ভারতীয়দের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনের প্রতি তাঁর ভালবাসা এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তাঁর উৎসর্গ ছিল গভীর।
রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল-
মহাত্মা গান্ধীজ আইডিয়াজ, মহাত্মা গান্ধী অ্যাট ওয়ার্ক, হোয়াই আই ও (owe) টু ক্রাইস্ট, ইন্ডিয়া অ্যান্ড ব্রিটেন, ইন্ডিয়া অ্যান্ড দি প্যাসিফিক, ‘ট্রু ইন্ডিয়া।
চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজ ১৯৪০ সালের ৫ এপ্রিল কলকাতায় তৎকালীন প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতালে (বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতাল) মারা যান। তাঁর জীবন নিঃস্বার্থ সেবা এবং সমতা ও ন্যায়ের নীতির প্রতি উৎসর্গের আলোকবর্তিকা, ভারতের ইতিহাসে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে বাঙালি চিকিত্‍সক, স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং লেখক সুন্দরীমোহন দাস।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল বহু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। হিন্দু মুসলিম সকল শ্রেণীর মানুষ এই মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন। আর তাঁদের সেই বলিদনের ইতিহাসে অনেকের কথাই অজানা। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়।

এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সুন্দরী মোহন দাস প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। সুন্দরী মোহন দাস ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
সুন্দরী মোহন দাস (১৭ ডিসেম্বর ১৮৫৭ – ৪ এপ্রিল ১৯৫০) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন কর্মী, একজন প্রখ্যাত চিকিত্‍সক এবং সমাজকর্মী। তিনি জাত-পাত বিরোধী, অস্পৃশ্যতা বিরোধী, নারীমুক্তি এবং বিধবা বিবাহের ব্যাপারে উত্‍সাহী ছিলেন। নিজে সাহিত্যচর্চা করতেন এবং অন্যকে উত্‍সাহিত করতেন। তিনি কলকাতার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট, চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল, কলকাতা, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের বেঙ্গল শাখা, কলকাতা কর্পোরেশন ইত্যাদির সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৫ জানুয়ারী, ১৯৫৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়। কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে সুন্দরী মোহন দাসের একটি মার্বেল মূর্তি উন্মোচন করা হয়েছে।
সুন্দরী মোহন দাস ১৮৫৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর শ্রীহট্টের সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার দিঘলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্রিটিশ ভারতে। সে সময় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ- সিপাহী বিদ্রোহ শুরু হয়, তারপর সিলেট জেলার পূর্ব সীমান্তের লাটু নামক গ্রামে বিদ্রোহ শুরু হওয়ার পরদিনই জন্ম হয় সুন্দরী মোহনের।
লাটুতে শুরু হওয়া বিদ্রোহের খবর শুনে অনেক পরিবার নৌকায় করে সিলেট শহর ছেড়ে চলে যায়। তার মা গর্ভাবস্থায় অন্যদের সাথে নৌকায় ছিলেন এবং তিনি নৌকায় অকাল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অত্যন্ত দুর্বল নবজাতকটিকে গুরুতর অবস্থায় একটি তুলোর মধ্যে রাখা হয়েছিল।
তার পিতা স্বরূপ চন্দ্র দাস (দেওয়ান স্বরূপ চাঁদ নামেও পরিচিত) ঢাকা কমিশনারেটের অধীনে তত্‍কালীন শ্রীহট্ট কালেক্টরেটের দেওয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে পদোন্নতির পর স্বরূপচন্দ্রকে কালীঘাটের প্রধান দেওয়ান হিসেবে কলকাতায় বদলি করা হয়। গোবিন্দপুর ও সুতানুটি তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে ছিল।
সুন্দরী মোহনের স্কুলে পড়াশোনা শুরু হয় শ্রীহট্ট সরকারি স্কুলে, বর্তমানে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এবং এখান থেকে ১৮৭৩ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফ.এ. স্নাতক শেষ করার পর, তিনি ১৮৮২ সালে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবি পাস করেন। তিনি তার শিক্ষাজীবন জুড়ে একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন, স্কুল জীবন থেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সকল স্তরে বৃত্তি পেয়েছিলেন।
মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় তিনি হিন্দু মেলার সদস্য হন। লাঠি খেলা, কুস্তি ইত্যাদি প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি দক্ষ হয়ে ওঠেন।
সুন্দরী মোহন স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম মহান নেতা ছিলেন। তার সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়ি ছিল বিপ্লবীদের আশ্রয়স্থল। এখানে তারা বোমা তৈরি করত। তিনি ব্রিটিশ পণ্য এবং ব্রিটিশ শিক্ষা বর্জন করার জন্য অনুপ্রেরণামূলক গান লিখেছেন। এই কারণে তিনি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও চিকিত্‍সায় “জাতীয় শিক্ষা” প্রবর্তনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি এই জাতীয় ইস্যুতে মিছিলের নেতৃত্ব দেন এবং “জাতীয় শিক্ষা” প্রবর্তনে সক্রিয় ভূমিকা নেন, বিশেষত কারিগরি ও চিকিত্‍সা বিষয়ে। তিনি জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রধান সংগঠক এবং বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের (বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন ছিলেন।
তার যে কোনো কর্মকাণ্ড ও আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে। তিনি স্বদেশী ও বাংলা বিচ্ছিন্নতা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর কলকাতার বাড়ি ছিল বিপ্লবীদের বোমা তৈরির কেন্দ্র। মহান বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত সুন্দরীমোহনের বাড়িতে দীর্ঘকাল আশ্রয় নেন। বোমা তৈরিতে দক্ষ সিলেটের আরেক ছেলে রাধাকিশোর শর্মাও সুন্দরীমোহনের বাড়িতে দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। বৃন্দাবনের বৈষ্ণব বাবাজী তাকে কারাগার থেকে রক্ষা করেছিলেন। সুন্দরী মোহন স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক বিপ্লবীর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং তাদের আন্দোলনে আর্থিকভাবেও সাহায্য করেছিলেন।
অরবিন্দ ঘোষ, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, লিয়াকত হোসেন প্রমুখ কলকাতায় তাঁর ৭৩ নম্বর সুকিয়া স্ট্রিটে স্বরাজ অর্জনের পদ্ধতি অবলম্বনে নিয়মিত আলোচনা করেন। এই বাড়িতেই দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ পার্টির পূর্বসূরি স্বরাজ সমিতি গঠিত হয়। অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি মহাত্মা গান্ধীর সমর্থন, বিশেষ করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ধর্মঘটের সাফল্য, তাঁর সক্রিয়তার কারণে।
সুন্দরীমোহন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ১৯২৪ সালে, যখন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস নবগঠিত কলকাতা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন, সুন্দরী মোহন পৌরসভার জনস্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি হন এবং তিনি যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন তার মধ্যে ছিল-
ক) বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে যে সমস্ত আর্থিক ও চিকিত্‍সা সুবিধা রয়েছে তা বেসরকারি চিকিত্‍সা সংস্থা এবং হাসপাতালের মাধ্যমেও প্রদান করা হয়।
খ) পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিক প্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রথম জনস্বাস্থ্য সংস্থা তৈরি করা হয়।
গ) শহরের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
ঘ) জুনিয়র নার্সিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সমাজের দরিদ্রদেরও নার্সিং প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ঙ) শহরের বিভিন্ন স্থানে মাতৃত্ব কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রসূতি মায়েদের সেবা প্রদানের জন্য প্রশিক্ষিত “ধাই” মায়েদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চ) সমবায় ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রথম শিশু ও হাসপাতালের রোগীদের কম খরচে প্রকৃত দুধ সরবরাহ করা।
ব্যক্তিগত জীবন-
সুন্দরীমোহন তার প্রথম জীবনে ব্রাহ্মণ্যবাদে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন কিন্তু পরবর্তী জীবনে তিনি বৈষ্ণবধর্মে বিশ্বাসী হয়েছিলেন। তিনি জাতপাত ও অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে ছিলেন, নারীমুক্তি ও বিধবা বিবাহের ব্যাপারে ছিলেন উত্‍সাহী। তিনি জয়পুরের মন্ত্রী সংসারচন্দ্র সেনের বিধবা হেমাঙ্গিনী দেবীকে বিয়ে করেন।
সুন্দরী মোহন তার প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটে ১৯৫০ সালের ৪ এপ্রিল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার শেষ ইচ্ছায় তিনি তার শরীরকে ওষুধে ব্যবহারের জন্য বলেছিলেন, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় তা রক্ষা করতে পারেনি।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ রিভিউ

জানুন ৪০০ বছরের প্রাচীন শীতলা মায়ের পুজোর ইতিহাস ও সংস্কৃতি।।।

রানাঘাট হবিবপুর পুরাতন বাজারের প্রাচীন ও ঐতিহ্য জাগ্রত শীতলা মায়ের পুজো আনুমানিক ৪০০ বছরের প্রাচীন তাকে ঘিরে চলে ১০ দিন উত্‍সব ও মেলা। এখানকার শীতলা মা শুধুমাত্র একটা বট বৃক্ষে পূজিত হয়ে আসছে বিগত ৪০০ বছর ধরে। কথায় আছে বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর হয়তো এই মায়ের কাছে না আসলে অনেকে বিশ্বাস করতে পারবে না এমনটাই জানাচ্ছেন পুজো উদ্যোগতারা ।

এখানে কোনো মূর্তি হিসেবে পূজিত হয়না শুধুমাত্র বট গাছটি শীতলা দেবী হিসেবে পূজিত হয়ে আসছে ৪০০ বছর ধরে।
কথিত আছে গঙ্গা নদী প্রবাহিত ছিল এই বট বৃক্ষে পাশ দিয়ে কোনো এক সময় চাঁদ সদাগর বাণিজ্য করতে গিয়ে এই স্থানে বটো বৃক্ষ নিজে পূজা দিয়েছিলেন।
প্রথমে এক অবাঙালি ব্রাহ্মণ পুজো করলেও বর্তমানে হবিবপুরের ভট্টাচার্য বাড়ির পুরুষেরা বংশানুক্রমিক এই পূজার দায় ভার পায়।
কথিত আছে মায়ের স্বপ্ন আদেশ”হয় ভট্টাচার্য পরিবার কে পুজো করবার তারপরথেকেই তারা পুজো করে আসছেন । চৈত্র মাসের শীতলা অষ্টমী তিথিতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষের সমাগম হয় এই পুজোতে । তারপর ব্রাহ্ম মুহূর্ত সময়কালে ভট্টাচার্জি বাড়ির বর্তমান পুরোহিত গদাই ভট্টাচার্য চন্ডী পাঠ দাঁড়া দেবী শক্তির গুনোগান করেন।
লোকমূখে শোনা যায় এক সময় বট বৃক্ষের সামনে দিয়ে ভাগীরথী গঙ্গা নদী প্রবাহিত ছিল। এখন গঙ্গা ৭ কিলোমিটার দূরে তারাপুরে অবস্থান করছে।
মা শীতলা দেবী এতই জাগ্রত যারা মায়ের কাছে আসেন বা পূজা দেন তারা উপলব্ধি করতে পারেন এই দেবী কে ভক্তিভরে ডাকলে মা ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূরন করেন এবং অনেকের মনোবাঞ্ছা পূরন হলে তাদের ওজনে বাতাসা ছিটান ভক্তরা। ৬ দিনের হরিনাম সংকীর্তনে ৩ টনের অধিক পরিমাণে বাতাসা ছিটানো হয় ভক্তদের মাঝে।
শুধু হবিবপুর গ্রামের মানুষ এই পূজা সামিল হোন না রাজ্য বিভিন্ন প্রান্তের ভক্তদের পাশাপাশি দেশ বিদেশের ভক্তদের ঢল নামে এই পূজাতো এবছর ১০ হাজারের অধিক ভক্তদের সমাগম ঘটবে অনুমান করা হচ্ছে পূজা দিতে সকাল থেকে বিরাট লম্বা লাইন পড়ে ভক্তরা ডালা সাজিয়ে অনেন ডাবের জল, গঙ্গার জল, দুধ ,আলতা, সিঁদুর ফল, ফুল নিয়ে এসে মায়ের কাছে ভক্তি ভরে পূজা দেন মহা সমারোহে পুজো হয়, অঞ্জলী পরে ও বিশেষ হোমজঙ্গ হয় এবং এখনও পর্যন্ত এই দশদিনের উত্‍সবে অধিকাংশ বাড়িতে নিরামিষ আহার করে থাকেন তাদের বাড়িতে কোনো আমিষ খান না । এই শীতলা মায়ের বিভিন্ন মতবাদ আছে এখানে আগে একজন অবাঙালি সাধুঁ থাকত তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিল মায়েরা ৭ বোন মায়েরা এই বট বৃক্ষে অবস্থান করে আছেন আজও সাধারণ মানুষের ধারণা বিশ্বাস, এই বট গাছে অবস্থান করে আছেন লোক মূখে শোনা যায় অনেক ভক্তকে মা দেখা দিয়েছেন।পুজোর আগেরদিন অধিবাস পুজোর দিন নিয়ম অনুযায়ী পুজোর দিন ভোরবেলা মাকে ১০৮ কলশি গঙ্গার জল দিয়ে মাকে স্নান করাতে হবে তাই প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্তদের দেখা যায় ১৪ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে আসা যাওয়া করে শান্তিপুর থানার অন্তর্গত কুমলে গঙ্গার থেকে জল নিয়ে এসে মাকে স্নান করানো হয়।যদিও পুজো ঘিরে চলে ১০দিনের কীর্তন ও অনুষ্ঠান। এদিন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে ভোট প্রচার শুরু করেন। অপরদিকে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী বর্ণালীদের আয়ো মাতৃ মন্দিরে গিয়ে পূজা অর্চনা করেন।

।। নদীয়া, রানাঘাট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ০৪ এপ্রিল, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ০৪ এপ্রিল। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–
(ক) শিশু দিবস (হংকং, তাইওয়ান)।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮৮৯ – মাখনলাল চতুর্বেদী, ভারতীয় কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার এবং সাংবাদিক।
১৯২৯ – আবুল খায়ের, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেতা।
১৯৩২ – অ্যান্থনি পারকিন্স, মার্কিন অভিনেতা।
১৯৩৩ – সনজীদা খাতুন, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সঙ্গীতজ্ঞ এবং শিক্ষক।
১৯৪১ – জিয়া উদ্দিন, দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তালীম বাংলাদেশের সভাপতি, জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুরের মহাপরিচালক।
১৯৪২ – চিত্রশিল্পী কালাম মাহমুদ।
১৯৬০ – হুগো ওয়েভিং, নাইজেরীয়-অস্ট্রেলীয় অভিনেতা।
১৯৬৫ – রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, মার্কিন অভিনেতা।
১৯৭৯ – হিথ লেজার, অস্ট্রেলীয় অভিনেতা।
১৯৮৭ – সামি খেদিরা, জার্মান ফুটবলার।
১৯৮৯ – স্টিভেন ফিন, ইংরেজ ক্রিকেটার।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৮৯৮ – বাংলা চলচ্চিত্রের জনক হীরালাল সেন কর্তৃক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী : স্থান ক্লাশিক থিয়েটার, কলকাতা।
১৯৪৯ – ন্যাটো প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৬০ – ইতিহাসের এই দিনে সেনেগাল স্বাধীনতা লাভ করে। সেনেগাল পশ্চিম আফ্রিকার একটি দেশ। এর রাজধানীর নাম ডাকার। সেনেগাল নদী থেকে দেশটির নামকরণ করা হয়।
১৯৬৮ – মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং আততায়ীর হাতে নিহত হন।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৭৫ – মার্কিন তথ্য প্রযুক্তি উদ্যোক্তা বিল গেটস ও পল অ্যালেন মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭৯ – পাকিস্তানি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো এর ফাঁসি। তিনি পাকিস্তান পিপলস্‌ পার্টির প্রধান ছিলেন। হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৭৯ সালে সামরিক আদালত তাকে মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করে।
১৯৮৪ – ভারতীয় নভোচারী রাকেশ শর্মা সোভিয়েত সহযোগিতায় মহাকাশ অভিযান করে। তিনি ভারতীয় প্রথম নভোচারী। রাকেশ ছিলেন ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের পাইলট। তিনি সারা বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯২৮ – অনুরূপচন্দ্র সেন, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী।

১৯৩২ – উইলহেম অসওয়াল্ড, নোবেল বিজয়ী (১৯০৯) জার্মান রসায়নবিদ।
১৯৩৯ – গাজি বিন ফয়সাল, ইরাকের দ্বিতীয় বাদশাহ।

১৯৫০ – (ক)  সুন্দরীমোহন দাস, বাঙালি চিকিৎসক, স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং লেখক।
(খ) উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী ও সাংবাদিক।
১৯৭১ – যোগেশচন্দ্র ঘোষ, প্রখ্যাত আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বিশারদ এবং শিক্ষাবিদ। তিনি সাধনা ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৭৯ – জুলফিকার আলী ভুট্টো, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
১৯৮৩ – গ্লোরিয়া সোয়ানসন, মার্কিন চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী ও প্রযোজক।
১৯৯০ – মোহাম্মদ জাকারিয়া, বাঙালি অভিনেতা ও টেলিভিশন প্রযোজক।
২০০৪ – সুখেন দাস, বাংলার প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পরিচালক।
২০১৩ – রজার ইবার্ট, মার্কিন চলচ্চিত্র সমালোচক ও চিত্রনাট্যকার।
২০২১ – দীপা চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী ।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

অনুরূপচন্দ্র সেন : অন্তরালে থেকে যাওয়া ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।।

ভূমিকা:- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল বহু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। হিন্দু মুসলিম সকল শ্রেণীর মানুষ এই মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিলেন। আর তাঁদের সেই বলিদনের ইতিহাসে অনেকের কথাই অজানা। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়।

এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে অনুরূপচন্দ্র সেন প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। অনুরূপচন্দ্র সেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
ভারতের স্বাধীনতা অন্দলনের অন্যতম বিপ্লবী বীর ছিলেন অনুরূপচন্দ্র সেন। অনুরূপচন্দ্র সেন (১৮৯৮ – ৪ এপ্রিল ১৯২৮) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী । যুগান্তর দলের অন্যতম নেতা অনুরূপচন্দ্র সেন। আজ আমরা ক’জন মনে রেখেছি অনুরূপ সেনকে? স্মৃতির অন্তরালে থেকে গিয়েছেন তিনি। অনুরূপচন্দ্র সেন এম.এ. ক্লাসের ছাত্র থাকাকালে বিপ্লবী দলের সভ্য হন।
জন্ম ও শিক্ষা– অনুরূপচন্দ্র সেনের জন্ম অবিভক্ত বাংলার (বর্তমানে বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের নোয়াপাড়ার এক দরিদ্র পরিবারে। পিতার নাম কমলকুমার সেন। চট্টগ্রাম মাদ্রাসা থেকে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে আই.এ এবং ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পাশ করেন ।
মাস্টারদা সূর্য সেন এর সঙ্গে সম্পর্ক– মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী মাস্টারদা সূর্য সেন ও তিনি দুজনেই চট্টগামের নোয়াপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। একসঙ্গে তাঁরা দেশ মায়ের সেবায় ব্রতী হয়েছেন। তারা ছিলেন পরস্পরের সমবয়েসী বন্ধু। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বুড়ুল হাইস্কুলে শিক্ষকতাকালীন নানা সামাজিক কাজে নিজেকে ও ছাত্রদের জড়িয়ে রাখতেন। ছাত্র ছাত্রীরা তার উৎসাহে হাতে লেখা জাতীয়তাবাদী ‘সাধনা’ পত্রিকা বের করে। অস্ত্র প্রশিক্ষন, লাঠি খেলা, দেহচর্চা ইত্যাদির গোপন আখড়া গড়ে তুলে স্থানীয় ছাত্র-যুবদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড- যে পাঁচজনকে নিয়ে১৯১৮ সনে চট্টগ্রাম বিপ্লবী দলের কেন্দ্র গঠিত হয় তিনি তার অন্যতম ছিলেন। যদিও তিনি অন্তরালেই থেকে গেছেন ভারতের বৈপ্লবিক আন্দোলনের ইতিহাসে। অপর চারজন হচ্ছেন সূর্য সেন, নগেন সেন (জুলু), অম্বিকা চক্রবর্তী ও চারু বিকাশ দত্ত। চট্টগ্রাম বিপ্লবীদের গোপন সংবিধান তারই রচিত।
গুপ্ত সমিতি বা পল্লি হিতৈষণী সমিতি গঠন-বুড়ুল হাইস্কুলে গণিতের শিক্ষক হিসাবে চাকরি করতে এসে স্থানীয় যুবকদের সশস্ত্র আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন চট্টগ্রাম বিপ্লবী দলের নায়ক মাস্টারদা সূর্য সেনের প্রধান সহকারী অনুরূপচন্দ্র। যদিও ১৯০৫ সাল থেকেই বুড়ুল-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়ে গিয়েছে। তবে মাস্টারদার নির্দেশেই ১৯২২ সালে স্টিমারে করে নলদাঁড়ি ঘাটে প্রথম পা রাখেন যুগান্তর দলের অন্যতম নেতা অনুরূপচন্দ্র। শিক্ষকতার পাশাপাশি এলাকার সংস্কৃতিচর্চাতেও ভূমিকা ছিল অনুরূপচন্দ্রের। এলাকার যুবকদের সশস্ত্র বিপ্লবে উদ্বুদ্ধ করতে গড়েছিলেন ‘গুপ্ত সমিতি’ বা ‘পল্লি হিতৈষণী সমিতি’-র মতো সংগঠন।
অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কারাবরণ- অনুরূপচন্দ্র সেন ১৯২২ সালে দলের নির্দেশে সেখানে সমাজসংস্কারমূলক কাজের সঙ্গে সঙ্গে বিপ্লবীদের এক ঘাঁটি তৈরি করেন। মজুত করে রাখা হতো আগ্নেয়াস্ত্র এবং নিষিদ্ধ বই ও পত্রপত্রিকা। অনুরূপবাবুর হাত ধরে সশস্ত্র বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিলেন স্থানীয় যুবকরা। সঙ্গে পান প্রিয় ছাত্র প্রভাস রায়, মুরারীশরণ চক্রবর্তী প্রমুখকে। সন্ধ্যা হলে হুগলি নদীর পাড় লাগোয়া বাতিঘরের মাঠে তাঁদেরকে নিয়ে চলত অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ। চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অনেক আগেই স্থানীয় বিড়লাপুর-মায়াপুরে অস্ত্রভাণ্ডার লুন্ঠনের পরিকল্পনা করেছিলেন অনুরূপচন্দ্র। কিন্তু এলাকার জমিদার ও ব্রিটিশ পুলিশের কড়া নজরদারিতে তা ভেস্তে যায়। কিন্তু এর মাঝে দক্ষিণেশ্বর বোমার মামলায় তাঁর নাম জড়ায়। দক্ষিণেশ্বর বোমা মামলায় ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৬ তারিখে গ্রেপ্তার হন বুড়ুল থেকেই।
গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অরন্ধন – ১৯২৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর বুড়ুল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ব্রিটিশ পুলিস। এরপর তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় নলদাঁড়ি ঘাটে। সেখান থেকে কলকাতায়। সেদিন ব্রিটিশ পুলিসের বিরুদ্ধে জড় হয়ে আওয়াজ তুলেছিলেন এলাকার মানুষ। শিক্ষক অনুরূপচন্দ্রকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে একদিন গোটা এলাকায় হয় অরন্ধন। বিচারে অনুরূপচন্দ্রের সাজা হয়। তাঁকে আলিপুর মেট্রোপলিটন জেলে রাখার এক মাস পর জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে প্রবল অত্যাচার ও চরম অব্যবস্থায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন তিনি।
আসুস্থতা ও বেনারস যাত্রা — দিন কে দিন বেড়েই চলেছিল তাঁর অসুস্থতা। ক্রমেই যেন বিছানা থেকে উঠে বসারই ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছিলেন। স্বাস্থ্য ভেঙে পড়লে তার প্রভাব মনের ওপর পড়তে বাধ্য। সেই ছাত্রাবস্থাতেই মনে আধ্যাত্মিকভাব জাগ্রত হয়েছিল। বিবাগী হয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন হিমালয়ে। তবে বিপ্লবীদলে যোগ দেওয়ার পর বেশ কয়েক বছর বৈরাগ্যভাব স্তিমিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯২৫-এর পর থেকে মনের মধ্যে শ্রীঅরবিন্দের প্রভাব ব্যাপকভাবে কাজ করেছে। তারপর দীর্ঘদিন রোগে ভুগে জীর্ণ হয়ে অনুরূপের বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাও যেন নষ্ট হয়ে গেছে। মন মনে চেয়েছিলেন ভগবানের শরণ নিতে। এমন সময় এলো ওপরমহল থেকে অর্ডার। বাংলায় আর থাকতে পারবেন না। আপনাকে এক্সটার্নমেন্টে যেতে হবে। কোথায় যেতে চান আপনি?” প্রশ্নটা শুনে হেসে ফেললেন অনুরূপ। প্রহসন আর কাকে বলে! আবার একই প্রশ্ন, “আপনি কোথায় যেতে চান বলুন?” “বেনারস।” অনুরূপের মুখ দিয়ে যেন আপনা আপনি বেরিয়ে এসেছিলো শব্দটা। তাই কথাটা বলে হেসে ফেললেন উনি, সে হাসি তাচ্ছিল্যের! অবাক কাণ্ড! অনুরূপের আবেদন সরকার মেনে নিল। তাই কদিন বাদেই পোঁটলা-পুঁটলি নিয়ে ভগ্ন-শরীরে কোনোমতে উনি পৌঁছলেন কাশীধামে। উঠলেন ‘পার্বতী আশ্রম’ নামের একটা হোটেলে।
মৃত্যু– আসুস্থ অনুরূপচন্দ্রকে পরে কাশীতে পাঠানো হয়। সেখানে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় শ্রীরামকৃষ্ণ অনাথ আশ্রমে মারা যান (৪ এপ্রিল ১৯২৮ ) মহান এই স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর।

।।তথ্যঋণ- সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় : ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সমাজ সংস্কারক।।।

ভূমিকা :- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু শহীদ ভগত্‍ সিং-এর মতই নয় বরং শক্তিশালী নারীদের দ্বারা প্রশস্ত হয়েছিল যারা তাদের মাটিতে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেছিল।

কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা ছিলেন কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় ।বকমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন বিশিষ্ট নেত্রী । স্বাধীনতার পর ভারতীয় হস্তশিল্প, থিয়েটারকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টা অবিস্মরণীয়।

শৈশব-

কমলাদেবী ৩ এপ্রিল ১৯০৩ সালে ম্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পিতামাতার চতুর্থ এবং কনিষ্ঠ কন্যা সন্তান। তার বাবার নাম আন্নানথায়া ধারেশ্বর ও মায়ের নাম গিরিজাবা। কামালদেবী একজন ব্যতিক্রমী ছাত্রী ছিলেন এবং অল্প বয়স হতে তিনি দৃঢ়চেতা এবং সাহসী ছিলেন। তার বাবা-মা’র মহাদেব গোবিন্দ রানাডে, গোপাল কৃষ্ণ গোখলে এবং রামাবাই রানাডে এবং অ্যানি বেসন্তের মতো মহিলা নেতাসহ অনেক বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের সাথে বন্ধুত্ব ছিল। যা তরুণ কমলাদেবীকে স্বদেশী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের জন্য উত্‍সাহী করে তুলেছিল।

বৈবাহিক জীবন–

কমলাদেবী ১৯০৩ সালের ৩ এপ্রিল ম্যাঙ্গালোরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার পিতামাতার চতুর্থ এবং কনিষ্ঠ কন্যা। তাঁর পিতার নাম অন্নথায় ধরেশ্বর এবং মাতার নাম গিরিজাবা। কমলদেবী একজন ব্যতিক্রমী ছাত্রী ছিলেন এবং ছোটবেলা থেকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও সাহসী ছিলেন। তার বাবা-মা মহাদেব গোবিন্দ রানাডে, গোপাল কৃষ্ণ গোখলে এবং রমাবাই রানাডে এবং অ্যানি বেসান্তের মতো মহিলা নেত্রী সহ অনেক বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং বুদ্ধিজীবীদের বন্ধু ছিলেন। যা তরুণ কমলাদেবীকে স্বদেশী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে উত্‍সাহী করে তুলেছিল।

লন্ডন গমন-

বিয়ের কিছুদিন পর, হরিন্দ্রনাথ লন্ডন ভ্রমণে চলে যান এবং কয়েক মাস পরে কমলদেবী তার সাথে যোগ দেন। সেখানে, তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেডফোর্ড কলেজে ভর্তি হন এবং পরে সমাজবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা অর্জন করেন।
স্বাধীনতা আন্দোলনের আহ্বান–
লন্ডনে থাকাকালীন, কমলাদেবী ১৯২৩ সালে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারেন এবং অবিলম্বে গান্ধীর সংগঠন সেবাদল, দেশের সেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠনে যোগ দিতে ভারতে ফিরে আসেন।
১৯২৬ সালে তিনি অল ইন্ডিয়া উইমেনস কনফারেন্স (AIWC) এর প্রতিষ্ঠাতা মার্গারেট ই ক্যাসিনের সাথে দেখা করেন, মাদ্রাজ প্রাদেশিক পরিষদে যোগদানের জন্য অনুপ্রাণিত হন। এইভাবে তিনি ভারতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রথম মহিলা নেতা হয়েছিলেন। কয়েকদিন প্রচারণা চালাতে পারলেও ৫৫ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিনি। পরের বছর তিনি অল ইন্ডিয়া উইমেনস কনফারেন্স (AIWC) প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক হন। পরের কয়েক বছরে, এআইডব্লিউসি একটি সম্মানিত জাতীয় সংস্থায় পরিণত হয়, যার শাখা এবং স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচি ছিল এবং এর মাধ্যমে আইনি সংস্কারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে।
ভারত সরকার ১৯৫৫ সালে পদ্মভূষণ এবং ১৯৮৭ সালে পদ্মভুবন প্রদান করে, যা ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ বেসামরিক পুরস্কার। তিনি ১৯৬৬ সালে কমিউনিটি লিডারশিপের জন্য র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে, তাঁর জীবনের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ, তিনি সঙ্গীত নাটক একাডেমি ফেলোশিপ রত্ন সাদাস্যে ভূষিত হন।

তাঁর লেখা বইসমুহ–

ভারতীয় নারীর সচেতনতা (The Awakening of Indian women)
জাপান-এর দুর্বলতা ও শক্তি (Japan-its weakness and strength)
স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় নারী যুদ্ধ (Indian Women’s Battle for Freedom)
ভারতীয় কার্পেট এবং মেঝে কভার (Indian Carpets and Floor Coverings)
ভারতীয় সূচিকর্ম (Indian embroidery)
ভারতীয় লোক নৃত্যের ঐতিহ্য (Traditions of Indian Folk Dance)
এছারাও আরও অনেক বই তিনি লিখেছেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This