Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত ‘কল্লোল’ পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী সম্পাদক গোকুলচন্দ্র নাগ – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।

জন্ম ——–
গোকুলচন্দ্র নাগ একজন চিত্রশিল্পী, প্রখ্যাত ‘কল্লোল’ পত্রিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সহকারী সম্পাদক। গোকুলচন্দ্র নাগের জন্ম বৃটিশ ভারতের কলকাতায় ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে জুন।
প্রারম্ভিক জীবন——–
গোকুলচন্দ্র নাগ এর পিতা মতিলাল নাগ মাতা কমলা দেবী। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে ছিল  আদি পৈত্রিক নিবাস। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ড. কালিদাস নাগ তার অগ্রজ। শৈশবেই মাতৃপিতৃহীন হন। তাই তিনি মানুষ হন মাতুলালয়ে গোঁড়া ব্রাহ্ম পরিবারের আবহাওয়ায়। কৃতি ফটোগ্রাফার ছিলেন তিনি।অতি অল্প বয়সে চিত্রাঙ্কন ও সাহিত্য চর্চা শুরু করেন।
কর্মজীবন———
আর্ট স্কুল থেকে পাস করার পর, গোকুলচন্দ্র প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে যোগ দিতে পুনে চলে আসেন।   কিন্তু কয়েক বছর পর সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন।   বোম্বেতে একজন সলিসিটর দম্পতির তত্ত্বাবধানে সুস্থ হয়ে ওঠেন কিন্তু কাজ করতে পারেননি।   তাই কলকাতায় ফিরে এলেন বিধবা দিদির কাছে ।   তিনি একজন অকৃত্রিম বন্ধু পেয়েছিলেন, দিনেশরঞ্জন দাশ।   তারা দুজনেই নতুন লেখকদের নিয়ে ১৩৩০ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখে ‘কল্লোল’ মাসিক সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করেন।   সম্পাদক দীনেশরঞ্জন দাস পত্রিকায় নতুন ধারার প্রবর্তন করেন।   একদল নবীনদের লেখায় সমৃদ্ধ, বাংলা সাহিত্যের যে সময়টি লেখক-পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তাকে ‘কল্লোল যুগ’ বলে চিহ্নিত করা হয়।   গোকুলচন্দ্র সহ-সম্পাদক হলেও প্রকৃত নেতা ছিলেন তিনি।   গোকুলচন্দ্র অর্থক্লিষ্ট পত্রিকা সংরক্ষণের জন্য বিজ্ঞাপন সংগ্রহ, গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রণের কাজ তদারকি করতেন।   তার বন্ধু দীনেশরঞ্জন দাসের সাথে, তিনি ‘সোল অফ আ স্লেভ’ চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও অভিনয়ে সহায়তা করেছিলেন।   এসবের পাশাপাশি তিনি তার সাহিত্যচর্চাও বজায় রেখেছেন।
তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –
রূপরেখা (কথিকা সংকলন), রাজকন্যা ও পরীস্থান’ (অনুবাদ রচনা) – ১৯২৪, মায়ামুকুল (ছোটগল্প সংকলন), পথিক (উপন্যাস), ঝড়ের দোলা।
হাওড়ার শিবপুরের বাড়িতে চলে যাওয়ার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু অসুস্থ অবস্থাতেই চলে তার সাহিত্য রচনা। শেষে যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে পড়লেন গোকুলচন্দ্র। ‘কল্লোল’-এর বন্ধুরা প্রায়ই আসতেন শিবপুরের বাড়ীতে। গভীর সহমর্মিতায় আপ্লুত সাহিত্যিক পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় রোজ আসতেন তার কাছে। ডাক্তারের পরামর্শে গোকুলকে শেষে দার্জিলিঙে নিয়ে যাওয়া হল।
মৃত্যু———-
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং অবশেষে ২৪ শে সেপ্টেম্বর তিনি দার্জিলিংঙে মাত্র ৩১ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *