Categories
কবিতা

পারঘাটা ::: রাণু সরকার।।।

খেলতে যাবি? চলে আয়-
মাটিতে ছক কেটে চাড়া ভাঙা খোলার
কুটরো ফেলে এক পায়ে ভর দিয়ে খেলবো,
আয় না-চলে আয়–
কেউ বকবেনা তোকে।

তুই কে? মনে পড়ছে না তো-
ভুলে গেছি সব, দৃষ্টি ক্ষীণ শ্রবণশক্তিহীন,
ক্ষণের জন্য পড়ে মনে।
ভুলে যাবো এখন না এলে-

পাকা কেশ পড়েছে ঝরে দৃষ্টিও ক্ষীণ,
হাতে লাঠি ভালো করে ধরে হাঁটতে পারিস না,
পেটে ক্ষিদে থাকে সবসময়-
আধপেটা খেতে দেয় সেও ভাঙা থালায়।

ঘুমোবার জায়গাতে ইঁদুর খেলে লুকোচুরি
ঘুম ভেঙে যায় তাই না বল?
ভোরে চা খেতে ভালোবাসতি সেটাও এখন জোটে না-
সেই তো চলে এলো প্রথম বেলা সুরু,
শাসন আর শাসন এটা করো না ওটা করো না
এ– বাবা এটা ভেঙে ফেললে বলছি না সাবধানে চলবে-

আমার সাথে আয় শান্তি পাবি-

ওই যে– নদী, দেখেছিস না তো-
আমার হাত ধর-
ওপাড়ে যাবো নৌকো করে
তোর আমার মতো কত– সাথি,
খেলবো আয়-
কারোর গলগ্রহ হতে হবে না, কেউ বোকবেনা পড়তে বসা নেই, দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার নেই মানা-
ভয় পাচ্ছিস?
এখন না আসলে পরে পারবি তো এই মঞ্চে
অভিনয় করতে?
বড্ড কঠিন কিন্তু- ভেবে দেখ-

লাঠি নিয়েই দাঁড়াতে পারিস না কী করে অভিনয় করবি?
আয়- খেলবো চাড়া ভাঙা খোলার কুটরো দিয়ে আয় না চলে- বলছি তো কেউ বোকবেনা কেউ||

Share This
Categories
কবিতা

বাদলের প্রত্যাশা ::: রাণু সরকার।।।

আমার হৃদয়ে ফাগুনের বসন্ত জাগে না-
কেনো বলতো? আমি যে ক্ষুধাতুরা সবসময়
থাকি কাতর।
তোমার জাগতে পারে, অট্টালিকায় কর বাস
আহারের জন্য করতে হয় না দুশ্চিন্তা।

আমি আহারের সন্ধানে চলি কষ্টের তাপ
অঙ্গে লেপন করে।
প্রখর রোদের তাপে থাকি তৃষ্ণার্ত।

তখন কোথায় আমার বসন্তের কৃষ্ণচূড়া,
আম্র মুকুলের গন্ধ!
আমি দেখি না তাদের,আমার কাছেই থাকে
দেখার ফুরসত কোথায়,
আমায় দেখে কৃষ্ণচূড়া,পাশ দিয়ে চলে যায় গন্ধ ছড়িয়ে আম্র মুকুল-
আমার গায়ে ঘামের গন্ধ পায় তখন পাসকাটিয়ে
চলে যায় আমের মুকুল।

রোদের প্রখর তাপে
চাষের জমির বুক বিদারণ করে-
করছে আর্তনাদ-
সেও আমার মতো তৃষ্ণার্ত,
কবে যে আসবে মেঘের ভেলায় চেপে বাদল!

গাছেরা স্বপ্ন দেখায় মগ্ন, কত বাসনা তাদের-
প্রতিটি শাখায় আত্মগোপন করে আছে
অর্ধবিকশিত ফুল।

রাতে চলে বাতাসের সাথে কথোপকথন,
নবযৌবনা কচি পাতারা বিহ্বল বাদলের প্রত্যাশায়।
আমার বসন্ত ক্ষুধাতুর, মৌনতা অবলম্বন করেছে,
তোমার বসন্ত থাক প্রেম-প্রীতি নিয়ে!

Share This
Categories
কবিতা

বাক্যালাপ ::: রাণু সরকার।।।

মৃৎশিল্পী মাটি প্রমথিত কোরে
নানা রকমের পুতুল দেবদেবীর মূর্তি
আরো কত কী তৈরি করে।

একদিন মাটি সহ্যশক্তি হারিয়ে ফেলে,
তীক্ষ্ণ আর্তনাদ করে বলছে-
তুমি আমাকে প্রমথিত করছো শিল্পী-
তোমার কী একটুও কষ্ট হয় না হৃদয়ে?
মনেই করতে পারো না আমারও ব্যথা আছে-
নীরবে কষ্ট সহ্য করি কোন আওয়াজ করিনা।
তোমাকে যদি এভাবে কেউ প্রমথিত করে
তোমার কেমন লাগবে?

আমারও দিন আসবে গো শিল্পী সেই দিনটির অপেক্ষায় তাই নির্বাক থাকি।
তখন আমি থাকবো ওপরে তুমি থাকবে নিচে।

গভীর রাতে বাক্যালাপ মাটি ও মৃৎশিল্পীর
দুশ্চিন্তায় নিশ্চল থাকতে পারছে না শিল্পী,
এই কথা শুনে আহার নিদ্রা বন্ধ, আতঙ্কে
বিজড়িত,
কাজে বসে না তার মন।

ঠিকই বলেছে মাটি,
কী করে মাটি নরম করে মূর্তি গড়বো?
তাহলে কী আর কোনদিন মূর্তি গড়া হবে না-
কিন্তু এটাই যে আমার জীবনধারণের একমাত্র পেশা।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

জমজমাট জামাই ষষ্ঠী ::: রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।।।

আজ জামাই ষষ্ঠী। জামাই ষষ্ঠী কিন্তু বাঙালিদের কাছে বেশ মিষ্টি মধুর একটি পার্বণ। তাই না ? বিশেষতঃ জামাই আর শাশুড়িদের কাছে এটি যেন সারা বছর ধরে এক অপেক্ষার উৎসব—একথা কিন্তু স্বীকার করতেই হবে জামাই আর শাশুড়ি উভয়কেই। এই তিথিতেই শ্বশুড় বাড়িতে জামাই আদর পাওয়া বিষয়টি পুরুষদের কাছে বাস্তবায়িত হয় ভীষণভাবে। আবার বিপরীতে জামাইরা তাঁদের দ্বিতীয় মা , অর্থাৎ শাশুড়ি মার হাতে তুলে দেন আপন আপন সামর্থ্য অনুযায়ী শ্রদ্ধার্ঘ্য। অতএব, উভয় দিক থেকেই বেশ একটা ‘দিবে আর নিবে,মিলাবে মিলিবে,যাবে না ফিরে’ ব্যাপার ঘটে। ফলস্বরূপ, আদরের জামাইয়ের সাথে শ্বশুর বাড়ির সম্পর্ক আরও মাখো মাখো হয়ে মালপোয়া-মিষ্টিদইয়ের মাত্রা পায়।
কিন্তু , শুধুই কী দেওয়া-নেওয়া , তার বেশি কিছু নয় ? না,না,তা কেন। এদিন যে নিজের জামাইয়ের দীর্ঘায়ু আর মঙ্গল কামনায় বাঙালি মায়েরা পালন করেন নানান আচার । বটপাতা,দূর্বা আর আম নতুন হাতপাখার ওপর রেখে, সেই পাখা আড়াআড়ি ভাবে ধরে জামাইকে বাতাস করেন শাশুড়ি। সেই সঙ্গে মুখে বলতে থাকেন ”ষাট,ষাট,ষাট” । অর্থাৎ,ভালো হোক ,ভালো হোক জামাইবাবার ।এই স্নিগ্ধ,শীতল হাওয়া জামাইকে রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে এই বিশ্বাস ।এ প্রথা তাঁর যাবতীয় অমঙ্গল বিনাশকারী মনে করা হয়। জামাইয়ের মাথায় আশীর্বাদ দেন ধান-দূর্বা দিয়ে। ধান হল সম্পদের বা সমৃদ্ধির প্রতীক । আর ,দূর্বার গুণ হল তা সহজে মরে না। পায়ে মারিয়ে চলে গেলেও বেঁচে ওঠে। অতএব, দীর্ঘায়ুর দ্যোতক দূর্বাঘাস।
পাঁচ রকম ফল,মিষ্টি,দই ,দুধ,চিড়ে এসব থালায় সাজিয়ে জামাইয়ের সামনে ধরে দেন শাশুড়িরা। জামাই ফলাহার করবে তাই এসবের আয়োজন। আবার জৈষ্ঠ্য মাস তো আম, জাম,কাঁঠাল,লিচু,তালশাসের মাস । তাই এই গ্রীষ্মকালীন ফলের স্বাদ জামাইকে পাওয়াতেই বুঝিবা , এমন একটি মধুর পার্বণের সূচনা হয়েছিল।বাংলাদেশের অনেক জায়গায় এও প্রথা আছে বিয়ের কথা পাকা হয়ে গেলে পাত্র ও কন্যাপক্ষের পরিবার একে অপরকে আম-দুধ ভেট দেয় এসময়।
এবার আসি ষষ্টী পূজা সম্পর্কে।সন্তানের মঙ্গল করেন মা ষষ্টী । বাঙালিদের প্রতি ঘরে ঘরে নবজাত শিশুর জন্য ষষ্টী পূজো করা হয় অবধারিত ভাবে। তারপরই কিন্তু আঁতুর ওঠে মা ও শিশুর। জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠী তিথি বা জামাইষষ্ঠী এদেশী বা ঘটী রমণীদের কাছে অরণ্য ষষ্ঠী বা স্কন্দ ষষ্ঠীর ব্রত হিসেবে পালিত হয়।
এদিন সকালে স্থানীয় বট গাছের তলায় এসে পূজারী ব্রাক্ষ্মণের দ্বারা মা ষষ্টীর পূজা সারেন তাঁরা। খেজুরের ছড়া,ডোয়ো ফল,জাম ,বটপাতা ইত্যাদি একসাথে করে ‘ভাগা’ অর্পণ করেন । গুটিছোপায় (মাটির দোয়াতের মত দেখতে) দই দেন ,আর নানারকম ফল নিবেদন করেন দেবীর উদ্দেশ্যে। যেসব রমণীর সন্তান হয় না , তাঁরা এখানে এসে এদিন আঁচল পেতে ব্রাহ্মণের থেকে গ্রহণ করেন মা ষষ্টীর প্রসাদী গোটা ফল। বিশ্বাস সে ফল খেলে অচীরেই সন্তানসম্ভবা হবেন । এদেশী মায়েরা সন্তানের মঙ্গল কামনায় উপবাস করে থাকেন। রাতে ফলাহার সারেন চিড়ে ,মুড়ি দিয়ে। যা কিছু চর্ব্য-চোষ্য সব রেঁধে দেন জামাই ও পরিবারের অন্য সকলের জন্য । তবে বাঙালদের মধ্যে আবার এসব উপবাস টুপবাসের ব্যাপার নেই। মহানন্দে জামাইকে ব্যাপক ভাবে খাওয়া দাওয়া করিয়ে নিজেও শাশুড়ি ভরপেটে থাকেন। তাবলে জামাই ষষ্ঠীর আচার পালনে কোন ত্রুটি বা খামতি থাকে না । নিষ্ঠাসহ জামাইয়ের প্রতি কর্তব্য সারেন তাঁরা।
আবার কোন কোন পরিবারে শ্যালিকাদের জন্যও একটি অদ্ভুত নিয়ম থাকে তাঁদের ভগ্নিপতিদের প্রতি। এদিন বাঁশের কঞ্চি বেঁকিয়ে লাভ সাইন বা হার্ট শেপের করে তাতে লাল সুতোয় ধান বেঁধে উপহার হিসেবে তুলে দেন তাঁরা ভগ্নিপতির হাতে।
মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত দোগাছি গ্রামে এইদিনে গ্রামের এয়োস্ত্রীগণ সাড়ম্বরে গ্রাম্যদেবতার পূজা করেন এবং ডোমকল থানার অন্তর্গত ভগীরথপুর গ্রামের স্ত্রীলোকগণ দইমেলা উৎসব পালন করেন।
এবার একটি প্রশ্ন কিন্তু প্রায় সকলের মনেই একটু উঁকি দিচ্ছে জানি।তা হল
‘যম-জামাই-ভাগ্না/তিন হয়না আপনা ‘ কথায় আছে যখন ,তবে ঘটা করে জামাই ষষ্ঠী কেন করা ! কন্যা ষষ্ঠীও তো হতে পারতো! আসলে জামাইবাবাজীবনকে তুষ্ট রাখার এ এক পন্থা বলা যায়। নিজের মেয়েটির সংসার বন্ধন যাতে অটুট থাকে , জামাইয়ের আদরে ,ভালোবাসায় মেয়ে যাতে রসেবশে, সুখে-শান্তিতে ঘর করে , সধবা থাকে চিরটাকাল সেই আশাতেই এত সব পরিপাটী প্রচেষ্টা ।

অতএব,সব মিলিয়ে জামাই ষষ্ঠীর পার্বণ জমে ক্ষীর হয়ে যায় আনন্দে,আবেগে আর জামাইয়ের প্রতি নির্ভেজাল ভালোবাসায়।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

গুপি গাইনের চরিত্রের মধ্যে অমর হয়ে রবেন তপেন চ্যাটার্জী।

ভূমিকা—

তপেন চ্যাটার্জী ছিলেন ভারতের একজন বাঙালি কিংবদন্তি অভিনেতা যিনি সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে বেশ কয়েকটি ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, বিশেষ করে গুপি গাইনে বাঘা বাইন (১৯৬৮) এবং এর সিক্যুয়েল ১৯৬৮-এ গুপি গাইনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।  বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম সফল ছবি সত্যজিৎ রায়ের ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’। ১৯৬৯-এ মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তপেন চট্টোপাধ্যায় ও রবি ঘোষ। অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন সন্তোষ দত্ত, জহর রায় ও হরীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। সেই সময় বাংলায় সবথেকে ব্যয়বহুল ছবি ছিল ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’।

 

জন্ম ও পরিবার—

 

তপেন চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, কালীঘাটের মাইশোর রোডের বাড়িতে। নলিনীরঞ্জন ও শোভনাদেবীর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তপেন ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁরা তিন ভাই ও দুই বোন। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক তপেন চট্টোপাধ্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা রাজেন্দ্র বিদ্যাভবনে।

 

 

অভিনয়ের দিকে ঝোঁক—

ছোট থেকেই অভিনয়ের দিকে ঝোঁক ছিল। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তপেন প্রথম মঞ্চে পা দিলেন, নাটকের নাম ‘অচলায়তন’। ছোট্ট চরিত্র হলেও দর্শকের মনে দাগ কেটে গিয়েছিল তাঁর অভিনয়। শীতকালে বা পুজোর সময় সেই নাটকের জন্যই ডাক পড়ত তপেনের। পরে শেখর চট্টোপাধ্যায়ের গ্রুপ থিয়েটারে যোগ দিয়েছিলেন।

 

কর্ম জীবন—-

অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার তপেন চট্টোপাধ্যায় খুব কম বয়সে এক সময়ে রাজস্থানের বিকানেরে চাকরি করতেন। সেখানকার জিপসাম মাইনস-এ রোজ দু’ টাকা দু’ আনা পারিশ্রমিক মিলত। বছর দুই চাকরি করার পর অতঃপর কলকাতায় ফিরলেন তিনি। তখনও কি জানতেন, এই রাজস্থানে এসেই তিনি জীবনের শ্রেষ্ঠ চরিত্রের জন্য শুটিং করবেন, তা-ও সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায়! কলকাতায় ফিরে এসে যোগ দিলেন কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটকের দলে।

 

 

অভিনয় জীবন—-

 

তবে প্রথমে তিনি একজন যোগ্য প্রকৌশলী হিসেবে, চ্যাটার্জির রাজস্থানে চাকরি ছিল, এরপর তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন এবং সত্যজিৎ রায়ের পুনরুজ্জীবিত বাংলা পত্রিকা সন্দেশে যোগ দেন।  ছোটদের পত্রিকা সন্দেশের বিজ্ঞাপন বিভাগে কর্মজীবন শুরু করেন।  সত্যজিৎ তাকে মহানগরে একটি ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করেন এবং তারপরে গুপি গাইন বাঘা বাইন-এ গায়ক গুপি গাইন হিসেবে বিখ্যাত হন।  আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাশে গানটি তার উপর গুপি এবং রবি ঘোষের বাঘা বাইন চরিত্রে নির্মিত গানটি এখনও বাঙালি চলচ্চিত্রপ্রেমীদের স্মৃতিতে নাড়া দেয়।

 

জানা যায় গুপীর চরিত্রে তপেন’ই পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন না। ষাটের দশকের শুরুতে, সত্যজিৎ যখন এই ছবি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন, তখন বহুরূপী নাট্যগোষ্ঠীর অভিনেতা অরুণ মুখোপাধ্যায়কে গুপীর চরিত্রের জন্য ভেবেছিলেন। শুন্ডি ও হাল্লা রাজার চরিত্রে ছবি বিশ্বাস, এবং মন্ত্রীর ভূমিকায় তুলসী চক্রবর্তীর কথা ভেবেছিলেন। এরপর একমসয় গুপীর চরিত্রে গায়ক-অভিনেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের নামও শোনা যায়।ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় যে বাঘার চরিত্রে অভিনয় করবেন রবি ও গুপীর ভূমিকায় দেখা যাবে নবাগত জীবনলাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে যিনি সত্যযুগ পত্রিকার সহসম্পাদক ছিলেন।

শেষমেশ তিন-তিনবার অভিনেতা পাল্টে গুপীর জন্য তপেনকে নির্বাচিত করেন সত্যজিৎ। এর আগে তপেন সত্যজিতের ‘মহানগর’-এ একটি ছোট চরিত্রে কাজ করেছিলেন। ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হীরক রাজার দেশে ছবিতেও গুপী ও বাঘার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তপেন ও রবি।

 

 

চলচ্চিত্র সমূহ—

 

১৯৬৩-মহানগর, ১৯৬৯-গুপী গাইন বাঘা বাইন, ১৯৭০- রূপসী, ১৯৭১-ধন্যি মেয়ে, ১৯৭৩- শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, ১৯৭৩- ননিগোপালের বিয়ে, ১৯৭৪- সঙ্গিনী, ১৯৭৪- বিকালে ভোরের ফুল, ১৯৭৪- ঠগিনী, ১৯৭৭-ভোলা ময়রা, ১৯৭৭- হাতে রইল তিন, ১৯৭৯গণদেবতা (তারা নাপিত) , ১৯৮০আঁচল (প্রযোজনা), ১৯৮০-হীরক রাজার দেশে(গুপী গাইন), ১৯৯১-গুপী বাঘা ফিরে এলো(গুপী), ১৯৯৬-রবিবার, ১৯৯৭- শ্রীমান ভূতনাথ, ২০০৮- নরক গুলজার(সর্বশেষ চলচ্চিত্র)

 

প্রয়াণ—-

তপেন চ্যাটার্জি ২৪ মে ২০১০ তারিখে  ৭২ বছর বয়সে মারা যান। তিনি ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন।

 

।।তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ ।।

 

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব কচ্ছপ দিবস, কেন পালিত হয় জানুন।

বিশ্ব কচ্ছপ দিবস প্রতি বছর ২৩ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় কচ্ছপদের বেঁচে থাকতে এবং তাদের প্রাকৃতিক বাসস্থানে উন্নতি করতে সহায়তা করার বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে। এই বিশেষ দিনটি আমেরিকান কচ্ছপ রেসকিউ (ATR), একটি অলাভজনক সংস্থা দ্বারা ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ATR একটি স্বামী এবং স্ত্রী জুটি, সুসান টেলেম এবং মার্শাল থম্পসন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
এই সংস্থায়, তারা কচ্ছপ এবং কচ্ছপের সমস্ত প্রজাতিকে উদ্ধার ও পুনর্বাসন করে, যারা ঝুঁকিপূর্ণ, বিপন্ন বা সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে, ATR কেয়ার হোমে প্রায় ৪০০০ কাছিম এবং কচ্ছপের যত্ন নিয়েছে। তারা অসুস্থ, অবহেলিত বা পরিত্যক্ত কচ্ছপদের তথ্য সরবরাহ করতে সহায়তা করে।

 

বিশ্ব কচ্ছপ দিবস হল একটি বার্ষিক ইভেন্ট যা ২০০০ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এটি আমেরিকান কচ্ছপ রেসকিউ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
বিশ্ব কচ্ছপ দিবসের উদ্দেশ্য হল কচ্ছপ এবং কাছিমের আবাসস্থল রক্ষা করতে তারা কী করতে পারে সে সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করা।  এই সরীসৃপগুলি দৈনিক ভিত্তিতে এত লোকের জন্য যে আনন্দ নিয়ে আসে তারও এটি একটি উদযাপন।
সারা বিশ্বে দিনটি নানাভাবে পালিত হয়।  অনেক লোক আছে যারা কচ্ছপের মতো পোশাক পরে আবার অন্যরা কেবল সবুজ কিছু পরার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।  লোকেরা এমন প্রকল্পগুলিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকে যা তাদের স্থানীয় এলাকায় বসবাসকারী কচ্ছপদের উদ্ধার করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও এমন অনেক সংস্থান রয়েছে যা স্কুলগুলিতে উপলব্ধ করা হয়েছে যা শিক্ষকরা বিশ্ব কচ্ছপ দিবসকে ঘিরে পাঠ তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারেন।  কচ্ছপ এবং কাছিম যে হুমকির সম্মুখীন হয় সে সম্পর্কে ভবিষ্যত প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।  এটি এমন কিছু যা শিশুরা এতে জড়িত হওয়া উপভোগ করে।
আমেরিকান টর্টোইস রেসকিউ (এটিআর) ১৯৯০ সালে স্বামী এবং স্ত্রীর দল সুসান টেলেম এবং মার্শাল থম্পসন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  এটি একটি অলাভজনক সংস্থা যা সমস্ত প্রজাতির কাছিম এবং কচ্ছপকে উদ্ধার করে এবং পুনর্বাসন করে।  এই প্রাণীগুলি যে পরিবেশে বাস করে সেগুলিকে রক্ষা করার জন্য এটি অনেক কাজ করে।  তারা সর্বদা প্রাণীদের জন্য নতুন বাড়ি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে কিন্তু যদি এটি সম্ভব না হয় তবে তারা এটিআর-এর যত্নে থাকবে।

5টি বিপন্ন কচ্ছপ প্রজাতি—

 

১। বিকিরিত কচ্ছপ- দক্ষিণ মাদাগাস্কারের স্থানীয় বিকিরিত কাছিম। একসময় সমগ্র দ্বীপ জুড়ে প্রচুর পরিমাণে, প্রজাতিটি এখন আইইউসিএন দ্বারা গুরুতরভাবে বিপন্ন। আগামী ৫০ বছরের মধ্যে প্রজাতিটি সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হতে পারে।
২। অ্যাঙ্গোনোকা কচ্ছপ- অ্যাঙ্গোনোকা কাছিম শুধুমাত্র উত্তর-পশ্চিম মাদাগাস্কারের উপসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন হিসাবে তালিকাভুক্ত, অ্যাঙ্গোনোকা কচ্ছপের বর্তমান বন্য জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ২০০ প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছে বলে অনুমান করা হয়।

৩। ফিলিপাইন ফরেস্ট টার্টল- এই প্রজাতিটি শুধুমাত্র ফিলিপিনো দ্বীপ পালাওয়ানে পাওয়া যায়। সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন হিসাবে তালিকাভুক্ত, ফিলিপাইন ফরেস্ট কচ্ছপ বহিরাগত প্রাণী সংগ্রাহকদের দ্বারা অত্যন্ত মূল্যবান।
৪। পেইন্টেড টেরাপিন- এগুলি ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় পাওয়া যায়। পেইন্টেড টেরাপিন শুধুমাত্র সমালোচনামূলকভাবে বিপন্ন নয় বরং পৃথিবীর সবচেয়ে বিপন্ন ২৫ টি স্বাদু পানির কচ্ছপের মধ্যে একটি হিসেবেও তালিকাভুক্ত।
৬। হলুদ মাথার বাক্স কচ্ছপ- এরা মধ্য চীনের আনহুই প্রদেশের অধিবাসী। আইইউসিএন দ্বারা সমালোচিতভাবে বিপন্ন হিসাবে তালিকাভুক্ত, হলুদ মাথার বক্স কচ্ছপকে বিশ্বের ২৫টি সবচেয়ে বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপের মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

 

জাতীয় কাছিম দিবস/ কচ্ছপ দিবস সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—-

 

জাতীয় কাছিম দিবস/ কচ্ছপ দিবস কি?

 

জাতীয় বিশ্ব কচ্ছপ দিবস, কখনও কখনও বিশ্ব কাছিম দিবস বা জাতীয় কাছিম দিবসও বলা হয়, এমন একটি দিন যা কচ্ছপ এবং কাছিম উদযাপনের জন্য তৈরি করা হয়।  এটি প্রতি বছর ২৩শে মে সারা বিশ্বের দেশে পালিত হয়।  এর মূল উদ্দেশ্য হল এই সুন্দর প্রাণীদের মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলি সম্পর্কে আরও বেশি লোককে সচেতন করা, কচ্ছপ এবং কচ্ছপদের রক্ষা করতে এবং বন্যের মধ্যে তাদের বেঁচে থাকার হার বাড়ানোর জন্য আরও মানবিক পদক্ষেপকে অনুপ্রাণিত করা।  এটি একটি অলাভজনক সংস্থা যা সমস্ত প্রজাতির কাছিম এবং কচ্ছপকে উদ্ধার ও পুনর্বাসন করে।  বিশ্বজুড়ে মানুষ বিভিন্ন উপায়ে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস উদযাপন করে।

 

 বিশ্ব কচ্ছপ দিবস প্রথম কবে পালিত হয়?

 

বিশ্ব কচ্ছপ দিবস ১৯৯০ সালে আমেরিকান কচ্ছপ উদ্ধার (ATR) দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর দল সুসান টেলেম এবং মার্শাল থম্পসন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত একটি প্রাণী উদ্ধার সংস্থা যারা কচ্ছপ এবং কাছিম সংরক্ষণে নিবেদিত।
ATR প্রতি বছর ২৩শে মে বিশ্ব কচ্ছপ দিবসকে স্পনসর করেছে এবং এটি এখন সারা বিশ্বের কচ্ছপদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রজাতি সচেতনতা দিবসগুলির মধ্যে একটি।

 

 প্রথম জাতীয় কাছিম/কচ্ছপ দিবস কবে?

 

২০০২ সালে এটিআর (আমেরিকান কচ্ছপ উদ্ধার) দ্বারা প্রথম বিশ্ব কচ্ছপ দিবস পালিত হয়।

 

 কেন আমরা বিশ্ব কচ্ছপ দিবস উদযাপন করি?

 

আমরা কচ্ছপ এবং কাছিম সম্পর্কে আরও মনোযোগ আকর্ষণ এবং জ্ঞান বাড়াতে জাতীয় কাছিম দিবস উদযাপন করি।  কচ্ছপগুলি উজ্জ্বল প্রাণী যা বেশিরভাগই বসে থাকা মনে হতে পারে তবে খুব আকর্ষণীয়।  তারা বিশ্বের প্রাচীনতম সরীসৃপ গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটির অন্তর্গত – যা তাদের সাপ, কুমির এবং কুমিরের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বয়স্ক করে তোলে।  এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা কচ্ছপ এবং কচ্ছপের জনসংখ্যার গবেষণা ও সুরক্ষা করি, কারণ তারা আমাদের সমুদ্র সৈকতকে পরিষ্কার রাখে মৃত মাছগুলিকে খাওয়ানোর মাধ্যমে যা উপকূলে ধুয়ে যায় এবং আমাদের মহাসাগরে পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখে।
এই প্রাণীগুলি ২০০ মিলিয়ন বছর আগে ডাইনোসরের সময়কালের।  সমগ্র বিশ্বে মোট ৩০০ প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে, যার মধ্যে ১২৯ প্রজাতিই বিপন্ন।  তাই, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কচ্ছপদের তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থলে বেঁচে থাকতে এবং উন্নতি করতে সাহায্য করার জন্য, প্রতি বছর বিশ্ব কচ্ছপ দিবস পালিত হয়।

 

 আমি কিভাবে শিশুদের সাথে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস উদযাপন করতে পারি?

 

বিশ্বজুড়ে মানুষ বিভিন্ন উপায়ে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস উদযাপন করে।  মানুষ কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং কার্যক্রমের আয়োজন করে।  কিছু মানুষ এই দিনে রাস্তা-মহাসড়ক থেকে কচ্ছপদের উদ্ধার করে তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থলে ফিরিয়ে দেয়।  আপনি শিশুদের সাথে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস বা জাতীয় কাছিম দিবস পালন করতে পারেন এমন অনেক মজার এবং সহজ উপায় রয়েছে!
কচ্ছপের মতো সাজানো বা গ্রীষ্মের সবুজ পোশাক পরা থেকে শুরু করে, মহাসড়কে ধরা কচ্ছপগুলিকে বাঁচানো, গবেষণা কার্যক্রম পর্যন্ত, উদযাপন করার অনেক উপায় রয়েছে।
দিনটি উদযাপনের একটি মজার উপায় হল কচ্ছপ বা কাছিমের মতো সাজানো।  অথবা, একটি সহজ ড্রেস-আপ বিকল্পের জন্য, আপনি দিনটি স্মরণ করতে এবং সচেতনতা বাড়াতে আপনার ক্লাস বা স্কুলের বাচ্চাদের সবুজ কিছু পরতে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।
বিশ্ব কচ্ছপ দিবসে আরেকটি দুর্দান্ত জিনিস হল এমন একটি দাতব্য সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করা যা একটি বেক সেল নিক্ষেপ করে বা স্পনসরড হাঁটার মাধ্যমে কচ্ছপদের সাহায্য করে, উদাহরণস্বরূপ।
বিশ্ব কচ্ছপ দিবসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হল কচ্ছপ সম্পর্কে আরও তথ্য জানা এবং প্রজাতি সম্পর্কে মানুষের সম্মান এবং জ্ঞান বাড়াতে অন্যদের সাথে তথ্য ভাগ করা।  এটি করার জন্য, কেন আমাদের একটি দুর্দান্ত বিশ্ব কচ্ছপ দিবসের শিক্ষার সংস্থান ব্যবহার করবেন না, শিশুদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত?

কচ্ছপ এবং কচ্ছপের কার্যকলাপ প্যাক – বড় বাচ্চাদের সাথে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস উদযাপন করতে এই আকর্ষক কার্যকলাপ প্যাকটি ব্যবহার করুন।  এটি কারুশিল্প, রঙিন শীট এবং ওয়ার্কশীটগুলিতে পূর্ণ যাতে বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখা যায় যখন তারা মহিমান্বিত প্রাণীগুলি সম্পর্কে শেখে।

ওয়ার্ল্ড টার্টল ডে ফ্যাক্ট শীট – এই ফ্যাক্ট শীটটি প্রিন্ট করার জন্য প্রস্তুত এবং বয়স্ক বাচ্চাদের সাথে কচ্ছপ সংরক্ষণের জ্ঞান সম্প্রসারিত করার জন্য এবং তাদের সুরক্ষার জন্য আমরা কী করতে পারি তা জানাতে।

মহাসাগরের দূষণ: একক ব্যবহার প্লাস্টিক পাওয়ারপয়েন্ট – এই পাওয়ারপয়েন্টটি শিশুদের (৭ থেকে ১১ বছর বয়সী) সাথে শেয়ার করার জন্য আদর্শ যা তাদের সারা বিশ্বে প্লাস্টিক দূষণের কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলি বুঝতে সাহায্য করে এবং এটি কীভাবে কচ্ছপকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে৷  আপনার স্থানীয় এলাকায় প্রকৃত পরিবর্তনকে অনুপ্রাণিত করার জন্য, আপনি এমনকি শিশুদের তাদের স্থানীয় এমপিকে লিখতে উত্সাহিত করতে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে এই চিঠির টেমপ্লেটটি ব্যবহার করতে পারেন।

আমাদের সমস্ত টুইঙ্কল সংস্থানগুলি আমাদের ডিজাইনারদের বিশেষজ্ঞ দল দ্বারা তৈরি করা হয়েছে এবং শিক্ষকদের দ্বারা পরীক্ষা করা হয়েছে৷  এর মানে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে তারা শ্রেণীকক্ষে জড়িত এবং পাঠ্যক্রম অনুসরণ করছে।

কচ্ছপের চেয়ে মানবতার প্রিয় প্রাণী খুব কমই আছে।  এই খোলসযুক্ত প্রাণীগুলি বিশ্বের কার্যত সমস্ত কোণে পাওয়া যেতে পারে এবং উপমা, পৌরাণিক কাহিনী এবং সমস্ত ধরণের জনপ্রিয় মিডিয়াতে তাদের পথ খুঁজে পেয়েছে।
বিশ্ব কচ্ছপ দিবস শুধুমাত্র কচ্ছপদের প্রতি ভালবাসা এবং ভক্তি দেখানোর জন্য নয় বরং আমরা তাদের পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন আবাসস্থল রক্ষা করতে পারি তাও নিশ্চিত করা।

কচ্ছপ এবং কাছিম এর মধ্যে পার্থক্য কী তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।  যদিও তারা উভয়ই একই পরিবারের অন্তর্গত, কচ্ছপরা তাদের সময় জলের কাছাকাছি বা জলে কাটায় যখন কচ্ছপ প্রাথমিকভাবে স্থল প্রাণী।
কচ্ছপ এবং কাছিম উভয়ই এমন প্রাণী যারা তাদের নিজ নিজ বাস্তুতন্ত্রে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে।  অন্যান্য প্রাণীর বাসযোগ্য গর্ত খনন করা হোক বা সৈকত থেকে মৃত মাছ পরিষ্কার করা হোক না কেন, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস কেন পালিত হয় এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন।

জৈবিক বৈচিত্র্যের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস প্রতি বছর 22শে মে পালিত হয়। আজ (সোমবার) আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস। প্রকৃতিতে, পাখি ও জন্তু থেকে শুরু করে ফুল, পাখি, মাছ ও কীটপতঙ্গ, রঙিন গাছপালা থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র জীবাণু পর্যন্ত সবকিছু নিয়েই আমাদের এই রঙিন এবং সুন্দর পৃথিবী। জীববৈচিত্র্য বিষয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য এটি পালন করা হয়। এই তারিখটি ২২শে মে ১৯৯২ সালে নাইরোবিতে জৈবিক বৈচিত্র্য সংক্রান্ত সম্মেলনের সম্মত পাঠ গ্রহণের তারিখকে স্মরণ করে।

 

বন্যপ্রাণীর পরিবেশে দারুন প্রভাব রয়েছে। বাস্তুতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এদেরকে বাদ দিয়ে জীবণ সম্পূর্ন্য হয় না। আমরা সকলেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে একে অপরের ওপরে নির্ভরশীল। এদের ছাড়া জীবন বৃত্ত যে অসম্পূরান তা আজ আমরা ওনেকটাই উপলব্ধি করতে পারছি। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে কোটি কোটি মানুষ খাদ্য, শক্তি, উপকরণ, ওষুধ, চিত্তবিনোদন, অনুপ্রেরণা এবং মানুষের কল্যাণে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বন্য প্রজাতির ব্যবহার থেকে প্রতিদিন উপকৃত হয়। ত্বরান্বিত বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য সংকট, এক মিলিয়ন প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণী বিলুপ্তির মুখোমুখি। এর ফলে প্রকৃতি তার বৈষম্য হারিয়ে ফেলছে।

 

ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ডে (ডব্লিউডব্লিউডি) হল অনেক সুন্দর এবং বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ উদযাপনের একটি সুযোগ এবং তাদের সংরক্ষণ মানুষের জন্য যে উপকারিতা প্রদান করে সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে।  একই সময়ে, দিবসটি আমাদেরকে বন্যপ্রাণী অপরাধ এবং মানব-প্ররোচিত প্রজাতির হ্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে জোরদার করার জরুরি প্রয়োজনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যার ব্যাপক অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং সামাজিক প্রভাব রয়েছে। মানুষের জন্য অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও সেবার উৎস হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন জীবের জীন, প্রজাতি ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা তথা ইকোসিস্টেম সমূহের প্রকারভেদ। পৃথিবীর জৈব-বৈচিত্র্য জেনেটিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, শিক্ষাগত, সাংস্কৃতিক, বিনোদনগত ও সৌন্দৰ্য্যগত বিভিন্ন দিক থেকে অতি মূল্যবান। প্রাণের ক্রম বিবর্তন এবং পৃথিবীতে জীবের বিকাশ লাভের ক্ষেত্রে জৈব-বৈচিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর খাদ্য, ঔষধ ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার অতি গুরুত্বপূর্ণ অথচ জীববৈচিত্রের প্রতি মানুষেরই বিরূপ কর্মকাণ্ড যেভাবে অবাধে চলছে তাতে আশংকা হচ্ছে যে, ২০২৫ সালের মধ্যে ২০-২৫% প্রাণী ও উদ্ভিদ পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। তাই জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণে ও যথার্থ ব্যবহারে তৎপর হওয়ার আহবানেই হচ্ছে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস পালন। বিশ শতকের ৭০-এর দশক থেকে খাদ্য-বস্ত্রসহ মানুষের নানান ধারার চাহিদার পরিসর বিস্তৃত হওয়ার কারণে লাখ লাখ প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ১৫ হাজার তথ্য সূত্র নিয়ে ৩ বছরের গবেষণা শেষে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ‘সামারি ফর দ্য পলিসিমেকার’ শিরোনামে প্রকাশিত হয় জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনের সারমর্ম। ৪০ পৃষ্ঠার সেই সংক্ষেপ হাজির করতে গিয়ে বলা হয়েছে, মানবজাতি কীভাবে নিজেদের ‘একমাত্র বাড়ি’-কে ধ্বংস করছে; এটাই তার সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, স্থল, জল কিংবা আকাশ; সবখানেই মানুষের কারণে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে বিভিন্ন প্রজাতি। জাতিসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্টাল সায়েন্স পলিসি প্ল্যাটফর্ম অন বায়োডাইভারসিটি অ্যান্ড ইকোসিস্টেম সার্ভিসের ১৮০০ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে বিশ্বের ১০ লাখ প্রাণী বিলুপ্তির হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে। সেখানে বলা হয়, প্রাণী জগতের ২৫ ভাগ প্রজাতিই মানুষের কারণে বিপন্নতার মধ্যে রয়েছে।

 

তাই জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে  ১৯৯৩ সালের শেষদিকে দিবসটি পালনের জন্য ২৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশ এ দিবস পালন বন্ধ করে দিলে ২০০২ সালের ২২ মে দিবসটি পুনর্নির্ধারণ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। তখন থেকে প্রতিবছর ২২ শে মে এ দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে।

মূলত ১৯৯২ সালের ২২ মে কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কনভেনশনে দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

মানুষের অপরিণামদশী কর্মকাণ্ডের ফলে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্য হারে অবাধে সংকুচিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাসীর উদ্বেগের প্রেক্ষিতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং তার টেকসই ও সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির উদ্যোগে ১৯৯২ সালে জীববৈচিত্র্য কনভেনশন নামে একটি আন্তর্জাতিক দলিল চূড়ান্ত করা হয়। বর্তমানে এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশের সংখ্যা ১৯৫ টি।

 

দিন দিন রুক্ষ হচ্ছে প্রকৃতি। সময় ও সময়ের গতি ক্রমশ ভিন্ন খাতে বহিছে। আগের সেই প্রকৃতির ধারা সম ভাবে প্রবাহমান নয়। চারদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, নদীভাঙন, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, বহু বন্য প্রাণীর সংকটাপন্ন অবস্থায় চলে যাওয়া—সব মিলিয়ে এবার দিবসটি বাড়তি গুরুত্ব বহন করছে। সেই শূন্যতা যাতে ভবিষ্যতে আর বৃদ্ধি না ঘটিয়ে বিপর্যয় না ডেকে আনে তার গুরুত্ব তুলে ধরতে দিনটি পালিত হচ্ছে এই লক্ষে।জীব বৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতেই জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ২২ মে দিনটি বিশ্ব জীব বৈচিত্র্য দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে।

।।তাত্থ্য ও ছবি : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

মহাপ্রভুর বিশ্বরূপ দর্শন দান : রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।

সর্বাবতারী নদিয়াবিহারী শ্রীশ্রীগৌরহরি নদীয়ার নবদ্বীপে সর্বদা কীর্তনবিলাস করে চলেছেন । নগরে, চত্বরে, জলে, বনে—-যেখানেই তিনি কৃষ্ণনাম শ্রবণ করেন অমনি নিরবধি তাঁর শ্রীনয়ন দিয়ে অশ্রুধারা বয়ে যায় । নবদ্বীপের ভক্তসমাজ তাঁর দশা দেখে বলেন, বিশ্বম্ভর রায় যে ভক্তিরসময় হয়ে গেছেন ! নিমাই পণ্ডিত কারোর মুখে ‘হরি’ শব্দ শ্রবণ করলেই নিজেকে স্থির রাখতে পারেন না আর । অশ্রু-কম্প-পুলক-বৈবর্ণ‍্য আদি অষ্ট সাত্ত্বিক ভাবের প্রকাশ হয় সর্বাঙ্গে তাঁর । ধূলায় বিলুন্ঠিত হন, গড়াগড়ি যান । যে আবেশ দর্শন করলে ব্রহ্মাদি দেবতারা পর্যন্ত ধন্য হন —-সেই দেবদুর্লভ দর্শন সৌভাগ্যবান নদীয়াবাসী লাভ করেন ।
একদিন কীর্তনবিলাসী গৌরের ভাবেতে মূর্ছাগ্রস্ত অবস্থা এমন । পার্ষদরা তাঁকে নিয়ে চলে এলেন তাই গৃহে । দ্বার দিয়ে শুরু করলেন কীর্তন । অনন্ত ভাব প্রকট তখন তাঁর অন্তরে । নির্দিষ্ট কোন রসে, কোন ভাবে তিনি যে বিহ্বল হয়ে আছেন —-তা কেউ অনুধাবন করতে পারেন না । কখনও তিনি বলছেন —-“আমিই তো মদনগোপাল,” কখনও বলছেন—- “আমি সর্বকালের কৃষ্ণদাস,” আবার কখনও “গোপী !গোপী !গোপী!” বলে জপ করেন । কখনও কৃষ্ণের নাম শ্রবণ করে কেঁপে ওঠেন তেজে ; বলতে থাকেন—- “কোথাকার কৃষ্ণ তোর ! সে তো মহাদস্যু ! শঠ, ধৃষ্ট কৈতব একজন ! কে তাকে ভজনা করবে শুনি ! নারী মন জয় করে নারীদেরই নাক কান কেটে দেয় ! লোভীর মতো বালির প্রাণ কেড়ে নিল ! আমার কোন দরকার নেই চোরের কথায় !” এরপর যদি কারোর মুখে পুনরায় কৃষ্ণ শব্দ শোনেন তো ক্রোধে তাঁকে তিরস্কার করতে থাকেন । আবার “গোকুল গোকুল” বলতে থাকেন ক্ষণে ক্ষণে । কোনদিন বলেন “বৃন্দাবন, বৃন্দাবন” । কখনও বা আনন্দকন্ঠে “মথুরা মথুরা” বলেন । আবার মৃত্তিকায় শ্রীকৃষ্ণের ত্রিভঙ্গ আকৃতি এঁকে, সেদিকে চেয়ে রোদন করতে থাকেন । কখনো বলেন, “এ কী চারিদিকে যে অরণ্য ! এই দেখো অরণ্যে সিংহ, ব্যাঘ্র, ভাল্লুকের গণ সব ।” দিনের বেলাকে রাত্রি বলেন, আবার রাত্রিবেলাকে দিন । —-এমন আবেশ সর্বক্ষণ তাঁর শরীরে ; ভক্তিবশ হয়েছেন বিদ্যাহঙ্কারী নিমাই পণ্ডিত এখন । ভক্তরা তাঁর কৃষ্ণপ্রেমাবেশের এমন দশা দেখে ক্রন্দন করতে থাকেন গলা জড়াজড়ি করে । যে আবেশ দর্শন করা ব্রহ্মাদিদেবের অভিলাষ —-সে আবেশ দর্শন করেন নবদ্বীপের বৈষ্ণবের দাসেরা ।
গৌরহরি নিজগৃহে আর কতক্ষণই বা থাকেন ! তিনি দিনের বেশীরভাগ সময়ে ভক্তদের গৃহেই পড়ে থাকেন । গৃহে যেটুকু সময় ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন —-তা কেবল তাঁর জননীকে প্রবোধ দিতে চেয়ে, মাতৃসুখ প্রদানের কারণে । ওদিকে তাঁকে নিয়ে বৈষ্ণবদের আনন্দ আর ধরে না । এ কী অপরূপ কৃষ্ণপ্রেম ! অনির্বচনীয় ! অদ্বিতীয় ! অভাবনীয় ! এমন ভগবদ্ প্রেম কোন মানুষের মধ্যে হতে পারে তা জানা ছিল না কারোর । ঈশ্বরাংশ না হলে শরীরে এমন প্রেম প্রকট হওয়া তো অসম্ভব !
গৌরহরির অভিন্ন প্রাণ নিত‍্যানন্দ তো মত্ত সিংহ এক ! তিনি সর্বদা ছায়ার মত গৌরাঙ্গের পাশে থাকেন । তাঁকে নিয়ে গোরা রায় অনন্ত লীলায় ঘরে ঘরে মেতে থাকেন । আর থাকেন গদাধর পণ্ডিত, আচার্য অদ্বৈত ও অন‍্যান‍্য ভক্ত মহাজনেরাও ।
একদিনের ঘটনা । গোপীভাব নিয়ে অদ্বৈত নৃত‍্য করছেন শ্রীবাস প্রাঙ্গণে। আর, সকলে মহা অনুরাগের সঙ্গে কীর্তন করছেন । আহা ! অদ্বৈতের নৃত‍্যে সে কী ভাব ! কী আর্তি ! তিনি বারংবার দন্তে তৃণ ধরে দৈন্য করতে করতে বিবশ হয়ে পড়ে যাচ্ছেন । আর তাঁর দশা দেখে ভক্তরা আরও আবেগসহ গীত গাইছেন । দুই প্রহরেও নৃত‍্যের বিরাম হচ্ছে না । অবশেষে ভক্তরা শ্রান্ত হলেন । সকলে মিলে আচার্যকে স্থির করলেন । নৃত্যের বিশ্রাম হল । অদ্বৈতের চারপাশে ভক্তগণ ঘিরে বসলেন । ধীরে ধীরে অদ্বৈত শান্ত হলেন । সবকিছু স্বাভাবিক হলে শ্রীবাস, রামাই আর সকলে গেলেন গঙ্গাস্নান করতে । একলা অদ্বৈত বসে রইলেন শ্রীবাস গৃহেই । কিন্তু, বাইরে তাঁকে স্থির মনে হলেও ভিতরে-ভিতরে, অন্তরে-অন্তরে তাঁর আর্তির এতটুকুও কম হয় নি, বরং বেড়ে চলেছে তা। সে সময় শ্রীগৌরহরি সেখানে ছিলেন না । তিনি ছিলেন নিজের গৃহে অথচ অন্তর্য‍ামী গৌরহরি অন্তরে অনুভব করলেন অদ্বৈতের আর্তি । ভক্ত-আর্তি পূর্ণকারী সদানন্দ রায় চলে এলেন শ্রীবাস গৃহে যেখানে অদ্বৈত এতক্ষণ ধরে গড়াগড়ি দিয়ে এখন বসে আছেন খানিক শান্ত-ভাব দেখিয়ে । প্রাণনাথকে, ইপ্সিত ধনকে নয়ন সম্মুখে পেয়ে আনন্দ আর ধরে না আচার্য‍ের যেন । হৃদয়ের ভাবতরঙ্গ উথলে উঠলো । নয়ন আবেগে অশ্রুপূর্ণ হল । মহাপ্রভু অদ্বৈতের মন বুঝে তাঁকে নিয়ে এলেন শ্রীবাসের বিষ্ণুমন্দিরে । দ্বার ভেজিয়ে দিলেন । তারপর নিজপ্রিয় ভক্তের উদ্দেশ্যে হেসে বললেন—- ”বলো গো আচার্য‍ ঠাকুর ! কি তোমার ইচ্ছা ? কি তুমি চাইছো বলো তো ? আমার থেকে তোমার কি প্রত্যাশা ?”
অদ্বৈত বললেন, “আমি আর কী চাইবো প্রভু ! আমার সবই তো তুমি ! আমি শুধু তোমাকেই চাই । তুমিই তো সর্ব দেব-সার, সর্ব বেদ-সার ।”
মহাপ্রভু—- “আমি তো তোমার সম্মুখে সাক্ষাৎ আছি, এই দেখো । আর কি চাও, সত্য করে বলো তো !”
অদ্বৈত—- “হ্যাঁ, প্রভু ! তুমি ঠিকই ধরেছো ! আমার আরও কিছু অভিলাষ আছে । সুসত‍্য বচন তোমায় বলছি এবার শোনো । আমি জানি এ তত্ত্ব যে তুমিই সর্ব বেদ-বেদান্তের সার । তবু আমি তোমার কিছু বৈভব দর্শন করতে চাই ।”
মহাপ্রভু—- “কী চাইছো এবার খুলে বলো ।”
অদ্বৈত—- “প্রভু, তুমি অর্জুনকে পূর্বে যা দেখিয়েছিলে, আমি তা দেখতে চাই । তুমি নিশ্চয়ই এবার বুঝে গেছ আমার হৃদয়ের অভীপ্সা ! আমি তোমার বিশ্বরূপ দর্শন করতে চাই । তুমি কী আমার এই বাসনা পূরণ করবে না প্রভু !”
অদ্বৈতের কথা শেষ হতে না হতে তিনি দেখলেন তাঁর সম্মুখে বিশাল এক রথ । চতুর্দিকে সৈন্যদল মহাযুদ্ধে রত হয়ে আছে — সমরক্ষেত্র। আর রথের উপর গৌরাঙ্গ র‍য়েছেন শ্যামল সুন্দররূপে । তাঁর চতুর্ভুজ । শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্ম ধারণ করে আছেন চার ভুজে । মহাপ্রভুর অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড রূপ দেখতে পেলেন অদ্বৈত। চন্দ্র, সূর্য, সিন্ধু, গিরি, নদী, বন-উপবন দেখতে পেলেন তাঁর শরীরে । কোটি কোটি চক্ষু , বহু-বহু মুখ পুনরায় পুনরায় দেখছেন । দেখলেন শ্যামল সুন্দরের চরণের কাছে বসে তাঁকে দর্শন করছেন বিস্মিত নয়নে অর্জুন ও স্তুতি করছেন । প্রভুর মুখে মহা অগ্নি প্রজ্বলিত হয়ে রয়েছে । সেই অগ্নির তেজে সকল পাষণ্ড, দুষ্টগণ পতঙ্গের ন্যায় জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে । যে পাপীষ্ঠ অপরকে নিন্দা করে, অপরের প্রতি দ্রোহ আচরণ করে—-শ্যামল সুন্দর শ্রীচৈতন্যের মুখাগ্নিতে পুড়ে মরছে তারা সকলে ।
“বলিতে অদ্বৈত মাত্র দেখে এক রথ।
চতুর্দিকে সৈন্য দল মহাযুদ্ধ পথ।।
রথের উপরে দেখে শ্যামল সুন্দর।
চতুর্ভুজ শঙ্খ চক্র গদা পদ্মধর।।
অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড রূপ দেখে সেই ক্ষণে।
চন্দ্র সূর্য সিন্ধু গিরি নদী উপবনে ।।
কোটি চক্ষু বহুমুখ দেখে পুনঃ পুনঃ ।
সম্মুখে দেখেন স্তুতি করয়ে অর্জুন।।
মহা অগ্নি যেন জ্বলে সকল বদন।
পোড়য় পাষণ্ড পতঙ্গ দুষ্টগণ।।
যে পাপিষ্ঠ পর নিন্দে পর দ্রোহ করে।
চৈতন্যের মুখাগ্নিতে সেই পুরি মরে।।
এই রূপ দেখিতে অন্যের শক্তি নাই ।
প্রভুর কৃপাতে দেখে আচার্য গোঁসাই।।”
(চৈতন্য ভাগবত , মধ্য, ২৪)
এমন দর্শন করার শক্তি কার আছে ! একমাত্র মহাপ্রভুর কৃপা শক্তিতেই আচার্য গোসাঞি দেখতে সমর্থ‍্য হয়েছিলেন । প্রেমসুখে, অচিন্ত‍্যনীয় দৃশ্য দর্শন করে অদ্বৈত তখন ক্রন্দন করছেন । তিনি দন্তে তৃণ ধারণ করে পুনরায় পুনরায় মহাপ্রভুর প্রতি দাস‍্য ভক্তি প্রার্থনা করতে থাকলেন ।
ওদিকে শ্রীনিত্যানন্দ সেসময় পর্য‍্যটন সুখে নদীয়ায় ভ্রমণ করে বেড়াচ্ছেন । মহাপ্রভুর প্রকাশ তাঁর তো অজানা নয় । তিনি অনুভব করে ফেলেছেন যে, প্রাণগৌর তাঁর, বিশ্বরূপ ধারণ করেছেন । তিনি বিলম্ব না করে তৎক্ষণাৎ হাজির হলেন শ্রীবাস গৃহের বিষ্ণুমন্দিরে । এসেই মত্ত হস্তীর ন্যায় দ্বারে দাঁড়িয়ে গর্জন করতে থাকলেন । ভিতরে মহাপ্রভু অনুধাবন করে ফেললেন তাঁর অভিন্ন স্বরূপ, প্রাণের দোসর নিত‍্যানন্দ এসে দাঁড়িয়েছেন । তিনি সত্ত্বর দ্বার উন্মুক্ত করলেন । নিত‍্যানন্দ গৌরাঙ্গের অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড রূপ দর্শন করেই দণ্ডবৎ হয়ে পড়ে গেলেন । আবেশে, আনন্দে তাঁর আঁখি বুজে গেছে । কম্পিত কলেবর । পুলকিত প্রাণ ।
মহাপ্রভু—- “ওঠ নিত‍্যানন্দ ! ওঠো ! আমার সকল আখ্যান তোমার তো অজানা নয় কিছুই । তুমি তো সবই জানো ! তবে কেন এমন দৈন্য করছো ! তুমি তো আমার প্রাণ ! যে ব‍্যক্তির তোমাতে প্রীতি—- সে আমায় পায় । তোমার থেকে প্রিয়তম আমার যে আর কিছুই নেই । যে তোমাতে আর অদ্বৈতে ভেদ বুদ্ধি করে —-তার অবতারবাদ সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান নেই । সে মূর্খ ।”
নিত‍্যানন্দ ও অদ্বৈতকে একসাথে পেয়ে বিশ্বম্ভর বিষ্ণু গৃহের অভ‍্যন্তরে আনন্দে নৃত‍্য করতে থাকলেন । হুঙ্কার গর্জন করছেন আর বলছেন—- “দেখ ! দেখ !” আর অদ্বৈত ও নিত‍্যানন্দও প্রভুর বিশ্বরূপ দর্শন করে বিহ্বল বদনে বলছেন, “প্রভু ! প্রভু গো !” এমন বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে গেল শ্রীবাস ভবনে অথচ শ্রীনিত‍্যানন্দ ও শ্রীঅদ্বৈত ভিন্ন কেউ টেরও পেলেন না । কারণ, সে কৃপাশক্তি মহাপ্রভু কাউকে দেননি । ওঁনাদের দু’জনকেই শক্তি সঞ্চার করেছিলেন দর্শন করার ।
পরবর্তীতে এসব কথা আচার্য‍ অদ্বৈত সকলকে জানিয়েছিলেন । মনে রাখতে হবে, যার এতে অবিশ্বাস আছে—- সে নিশ্চয়ই দুষ্কৃতি, অভক্ত । যে গৌরচন্দ্রকে সর্বমহেশ্বর রূপে না মানে —-সে সর্বকালের পাপী । বৈষ্ণবের অদৃশ‍্য সে ।
এরপর মহাপ্রভু নিজের বিশ্বরূপ সম্বরণ করে নিলেন । ততক্ষণে স্নান সেরে সকল ভক্তরা অঙ্গনে এসে হাজির । গৌরাঙ্গ তাঁদের নিয়ে নিজ বাসায় গেলেন । আর এদিকে বিশ্বরূপ দর্শনের আবেশ অদ্বৈত ও নিত্যানন্দকে তখনও মত্ত করে রেখেছে । বৈভব দর্শন সুখে দু’জনাই গরগর তনু তখনও । ধূলায় গড়াগড়ি যাচ্ছেন, কখনও করতালি দিয়ে হাসছেন, কখনও বা নাচছেন, গান করছেন । দুই মহাবলী মহাজন ঢুলে ঢুলে পড়ছেন একে অপরের শ্রীঅঙ্গে । তারপর শেষে একসময় দু’জন গালি দিয়ে কলহ শুরু করলেন । অদ্বৈত বললেন—- “এই অবধূত মাতালিয়া কোথাকার ! এখানে কে তোকে ডেকে এনেছে যে তুই এলি ! দুয়ার ভাঙ্গার অবস্থা করে ডাকাডাকি হাঁকাহাঁকি করলি কেন, শুনি ? কে তোকে বলে রে সন্ন্যাসী ! তুই কোথাকার সন্ন্যাসী ! এমন কোন জাতি আছে, যার ঘরে তুই আহার করিস নি ! তাহলে তুই কি করে সন্ন্যাসী হলি রে ! মাতোয়াল এক চলে এসেছে বৈষ্ণব সভায় ! চলে যা, বলে দিচ্ছে এখুনি । পালা এখান থেকে ।”
অদ্বৈতের গালমন্দ দেওয়া শেষ হলে এবার নিত্যানন্দ বলা শুরু করলেন । এতক্ষণ তিনি সব শুনছিলেন বড় বড় চোখ করে । এবার বললেন, “আরে নাড়া ! বসে থাকো চুপ করে । পড়ে কিলাবে । আগে তোমায় আমার প্রতাপ দেখাই ! বুড়ো বামনা ! ভয় করে না, না তোমার ! জানো ,আমি কে ? আমি ঠাকুরের ভাই, মত্ত অবধূত । আর তুমি হলে গিয়ে স্ত্রী-পুত্র সমেত সংসারী মানুষ । জানো, আমি পরমহংসের পথের অধিকারী জন । আমি তোমায় যদি মারিও তাও তোমার অধিকার নেই কিছু বলার । কেন অকারণে আমার সঙ্গে পাল্লা দিতে এসেছো ? বৃথা গর্ব দেখাচ্ছো ! আস্ফালন করছো ! কী ক্ষমতা তোমার !”
নিত্যানন্দের কথা শুনেই অদ্বৈত যেন ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন । বললেন, “দিগম্বর হয়ে থাকো ! মৎস খাও, মাংস খাও—- কোথাকার সন্ন্যাসী এমন করে শুনি ! কোথায় তোমার পিতা, কোথায় মাতা, কোন দেশেই বা তোমার বসতি ? কেউ কী জানে তোমার ব্যাপারে কিছু, কেউ জানে না ! কোথা থেকে এক চোর এসেছে ! —-সর্বক্ষণ খাব, গিলবো, সংহার করবো এসব বলে চলেছে ! আরে সন্ন্যাসী তো তাকে বলা হয় যে কিছু চায় না । আর তুমি তো এমন যে একবেলায় তিন-তিনবার খাও। শ্রীবাস পন্ডিতের জাতি-জ্ঞান সব গেছে, কোথাকার এক অবধূতকে ঠাঁই দিয়েছে নিজের গৃহে ! এই অবধূতই সকল জাতি নাশ করলো ওর । কোথা থেকে মদ‍্যপ এসে বসে পড়েছে !” —-এভাবে কৃষ্ণপ্রেম সুধারসে কলহমত্ত হলেন দু’জন ।
কলহ করেন সর্বক্ষণ দু’জন–নিত্যানন্দ ও অদ্বৈত । অথচ এঁনাদের একজনের পক্ষ হয়ে কিছু বললে, অন্য জনের নিন্দা করলে তার ভক্তি ক্ষয় হয়—- পতন হয় তার । নিত্যানন্দ-অদ্বৈতের কলহ হচ্ছে প্রেমকলহ । এই প্রেমকলহের মর্ম না জেনে একজনের প্রশংসা, অপরজনের বন্দনা করলে—- সে পুড়ে মরে নরকে । আবার শুধু তাই নয়, যদি এমনও হয় যে, অদ্বৈতের পক্ষ হয়ে বললো আর গদাধরের নিন্দা করলো —-সেক্ষেত্রেও একই ব‍্যাপার ঘটে । সে কখনও অদ্বৈত-কিঙ্কর হতে পারে না । ঈশ্বর ঈশ্বরেরই কলহের পাত্র —-এখানে । এসবই তো বিষ্ণু-বৈষ্ণবের বৈভবের লীলা । বিষ্ণু ও বৈষ্ণব সমান দুই । অথচ পাষণ্ডী নিন্দুক যারা, তারা এই বৈভবকে বিপর্য‍য় ভাবে । যাঁরা সকল বৈষ্ণবের প্রতি অভেদ দৃষ্টি দিয়ে শ্রদ্ধা করে তারাই তো ভবতরণী তরতে পারে ।
শ্রীমন্ মহাপ্রভুর এই বিশ্বরূপ দর্শন দান লীলা যাঁরা শোনেন, পাঠ করেন, বিশ্বাস করেন—- তাঁরা কৃষ্ণধন প্রাপ্ত হন ।
(সংকলিত)
গ্রন্থ – মহাপ্রভুর মধুময় কথা
প্রকাশক – তথাগত
প্রাপ্তি–8100673093 তে হোয়াটসঅ্যাপ

Share This
Categories
কবিতা

দুর্যোগের রাত (2) : রাণু সরকার।

এক বর্ষার বিকেলে হঠাৎ প্রচন্ড ঝড় উঠলো,ধুলো উড়ছে, লোকজন ছুটছে, কালপুরষ ও ছুটতে ছুটতে এসে আশ্রয় নিলো এক বাড়ির বারান্দায়।

নির্জন এই গলির আসপাশ সব বাড়ির জানলা দরজা বন্ধ। ঘন ঘন মেঘ ডাকছে, বজ্রপাত হচ্ছে,
জ্বলসে উঠছে আলো, আকাশে আঁকাবাঁকা বিদ্যুতের নীল রেখা টানছে মশালের মতো।

মূলধারায় বৃষ্টি নামলো,বৃষ্টির ঝাপটায় কালপুরষ ভিজে যাচ্ছে,বৃষ্টির জলে একেবারে নেয়ে ঠান্ডায় থর থর করে কাঁপছে।
ভীষণ অসহায় সে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,বৃষ্টিতে কোথাও যেতে পারছে না,কালপুরুষ ডাক দিলো শুনছেন- অনেক বার ডাকার পর নারীর সুমিষ্ট কন্ঠ ভেসে এলো কানে।
ডাক শুনে খোলা জানালার দিকে তাকালো কালপুরুষ
এক সুন্দর অপরূপ নারী চোখে পড়ল তার।

প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল, ভাবল, এই আমি
কাকে দেখছি এ তো অরুন্ধতী, এটা তোমার বাড়ি?
হ্যাঁ আমার বাড়ি,
ভাবতেই পারছি না তোমার সাথে দেখা হবে,কেমন দেখো আকস্মিক ভাবে সব ঘটে গেলো।
অরুন্ধতী’ তোমার চোখ রহস্যময় একটুও বদলাওনি তুমি আগের মতই দেখছি তোমার চোখ বিদ্যুত হানে মৃদু হেসে অরুন্ধতী বললো তুমি তো বৃদ্ধ হয়েগিছো সেও মৃদু হেসে বললো বয়স বাড়াছে বৃদ্ধ তো হবই।

তুমি ছাড়া আর এখানে কে আছে?
কোন উত্তর দিলো না অরুন্ধতী মাথা নিচু করে আছে
দু’চোখ বেয়ে জল গড়াচ্ছে।
অনেকক্ষণ বাদে উত্তর দিলো সেই কলেজ লাইফের কথা তোমার মনে আছে? মনে নেই আবার খুব আছে।
তুমি মেরুদণ্ডহীন পুরুষ তা না হলে সেই রাতে তোমার বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলো তোমার মা,কিছু বলতে ও করতে পারলে না।

ভাইয়েরা সব আলাদা হলো, আমার এই অবস্থা মা সহ্য করতে পারেনি স্টোকে আগে মা মারা গেলো বাবা নয় মাস পর সহ্য করতে পারেননি মায়ের মৃত্যু
কিছু টাকা আর এই বাড়িটা রেখে গেছেন ভারা আছে নিচের ঘর গুলো চলছে একা মানুষ আর কি।
দরজা খুলে দিলো বললো ভেতরে এসো-
ফ্রেশ হও খাওয়াদাওয়া করে যাবে,তুমি তাড়িয়ে দিয়েছো বলে তো আমি তা করতে পারি না।
এভাবে বলছো?হ্যাঁ বলছি আজ তোমার জন্য আমার সব হারিগেছে। আচ্ছা বলতো তুমি বিয়ে করছো?
না গো করিনি,কেনো?কি করে করবো তোমাকে ভুলতে পারিনি।এখন কি এক হতে পারি আমরা?
তা আর সম্ভব না নতুন করে যন্ত্রণার জন্ম দিতে চাই না
আমি বেশ আছি। তুমি আর এসো না,
তাহলে যে যন্ত্রণার উপদ্রব আরো বাড়বে।
ভীষণ কষ্ট করে যন্ত্রণা সেলাই করেছি ফোঁড় গুলো খুলে যাবে,এই বয়সে সুচের ফোঁড় সহ্য করতে পারবো না।

Share This
Categories
কবিতা

কেউ আসে না ::: রাণু সরকার।।।

আজকাল তেমন একটা কেউ আসে না,
আসলে তাদের আসার অপেক্ষাতে তো আজ আর নেই,
কী আর থাকবো- ঝুড়িঝুড়ি প্রশ্ন নিয়ে আসে আমার কাছে।

আসলে এতো প্রশ্নের উত্তর রাখার মতো টুকরি নেই আমার-
আমি আবার এতো ভার বহন করতে পারিনা, কষ্ট হয় ভীষণ।

প্রাপ্তবয়স্ক হলে কি হবে- বহন করার ক্ষমতা আছে বেশ,এতোটুকুও ক্লান্তি নেই ওদের-
সেবার এসে অনেক প্রশ্ন রেখে গেলো, ভালোবেসে না রাগ করে জানিনা বাপু।

আলগোছে রেখেছি তুলে নাড়াচাড়া দেইনি-
আমি একটু আটপৌরে জীবন যাপন করে থাকি, জগৎ সম্পর্কে তেমন কোন কৌতুহল দেখাই না- যখন যা হবার হবে।
জীবন কী বুঝতে ঋতু লাগেনা।

Share This