Categories
অনুগল্প

ভালবাসার অন্বেষণ।

সেই রাতে তারা প্রথমবারের মতো দেখা করে। তাদের চোখে চোখে পড়ে। সেই মুহূর্তে তারা জানে তারা একে অপরের জন্যই।

কিন্তু তাদের প্রেমের পথ কোনো সহজ নয়। তাদের দুজনের মধ্যে অনেক দূরত্ব। কিন্তু তারা হার মানে না। তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে টেলিফোন, ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে।

ধীরে ধীরে তাদের প্রেম গভীর হয়। তারা একে অপরের সাথে সময় কাটানোর স্বপ্ন দেখে।

অবশেষে সেই দিন আসে। তারা একে অপরের সাথে দেখা করে। তাদের প্রেম সফল হয়। তারা সুখের সাথে বসবাস করে।

Share This
Categories
অনুগল্প গল্প

দ্য মেলোডি অফ এভার।

আভা, একজন লাজুক সঙ্গীত শিক্ষক, পৃথিবীতে তার স্থান খুঁজে পেতে সংগ্রাম করেছেন। গানের প্রতি তার আবেগ মঞ্চের ভীতি দ্বারা ছাপিয়ে গিয়েছিল।

ইথান, একজন প্রাক্তন রকস্টার, স্পটলাইট এড়াতে ছোট-শহর উইলো ক্রিকে পিছু হটে।

এক দুর্ভাগ্যজনক সন্ধ্যায়, ইথানের গানের দোকানের বাইরে আভার গাড়ি ভেঙে পড়ে।

যেহেতু ইথান আভাকে তার গাড়ি মেরামত করতে সাহায্য করেছিল, তাদের মিউজিকের প্রতি ভাগ করা ভালবাসা একটি সংযোগের জন্ম দেয়।

ইথান, আভার প্রতিভা এবং দয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে, তাকে তার মঞ্চের ভীতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার প্রস্তাব দেয়।

একসাথে, তারা নিখুঁত সিঙ্কে সুরেলা করেছে, তাদের কণ্ঠ একটি জাদুকরী সুর বুনছে।

ইথানের নির্দেশনায় আভা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।

তাদের বন্ধন গভীর হওয়ার সাথে সাথে ইথান তার অতীতের দানবদের মুখোমুখি হয়েছিল।

আভার ভালবাসা এবং সমর্থন ইথানকে মুক্তি পেতে সাহায্য করেছিল।

তাদের প্রেমের গল্প দ্বিতীয় সুযোগের সিম্ফনি হয়ে ওঠে।

_ উপসংহার_

বহু বছর পরে, আভা এবং ইথানের সঙ্গীত বিদ্যালয়ের উন্নতি ঘটে। হাতে হাত মিলিয়ে তারা স্থানীয় অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে।

যুগে যুগে তাদের প্রেমের গান প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

Share This
Categories
অনুগল্প গল্প

একটি নির্বিঘ্ন এনকাউন্টার।

সামান্থা, একজন মুক্ত-প্রাণ শিল্পী, অনুপ্রেরণার জন্য প্যারিসে ভ্রমণ করেছিলেন। মন্টমার্টারের মনোমুগ্ধকর রাস্তাগুলি অন্বেষণ করে, তিনি একটি অদ্ভুত বইয়ের দোকানে হোঁচট খেয়েছিলেন।

ভিতরে, একই বইয়ের জন্য পৌঁছানোর সময় তিনি একজন সুদর্শন অপরিচিত আলেকজান্ডারের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

ক্ষমাপ্রার্থী, তারা একটি কথোপকথন শুরু করে, শিল্প, সাহিত্য এবং জীবনের জন্য ভাগ করা আবেগ আবিষ্কার করে।

যখন তারা একসাথে প্যারিসের মধ্য দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, সামান্থা নিজেকে আলেকজান্ডারের উদারতা এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ প্রকৃতির দ্বারা মুগ্ধ করেছিল।

আলেকজান্দ্রে, একজন লেখক, সামান্থার সৃজনশীলতা এবং জীবনের জন্য উদ্দীপনা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।

সিটি অফ লাইট এর জাদুকরী পটভূমিতে তাদের ঘূর্ণিঝড় রোম্যান্স প্রকাশ পেয়েছে।

সামান্থার প্রস্থান হওয়ার সাথে সাথে আলেকজান্ডার তার ভালবাসার কথা স্বীকার করেন।

সামান্থা বুঝতে পেরেছিল যে সে তার আত্মাকে খুঁজে পেয়েছে।

একসাথে, তারা আটলান্টিকের সেতুবন্ধন করেছে, শিল্প, প্রেম এবং নির্মলতায় ভরা একটি জীবন তৈরি করেছে।

_ উপসংহার_

বহু বছর পরে, আলেকজান্ডার সামান্থাকে একই বইয়ের দোকানে নিয়ে আসেন, এক হাঁটুতে নেমে পড়েন এবং তার স্বীকারোক্তির পুনরাবৃত্তি করেন।

সামান্থা হাসল, তাদের প্রেমের গল্প মাত্র শুরু।

Share This
Categories
অনুগল্প গল্প

অসম্ভাব্য পুনর্মিলন।

এমিলি, নিউ ইয়র্ক সিটির একজন সফল ইভেন্ট পরিকল্পনাকারী, প্রেম ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার কর্মজীবনে ফোকাস তার জীবনকে গ্রাস করেছিল যতক্ষণ না সে তার নিজের শহরে তার হাই স্কুল পুনর্মিলনের আমন্ত্রণ পায়।

পুনর্মিলনীতে পৌঁছে, এমিলি তার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিয়তমা জ্যাককে দেখে অবাক হয়েছিল। স্নাতক শেষ করার পর তারা আলাদা হয়ে গিয়েছিল, প্রত্যেকে আলাদা আলাদা পথ অনুসরণ করেছিল।

তাদের অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎ পুরানো অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। তারা তাদের অতীতের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে এমিলি বুঝতে পেরেছিল যে জ্যাকের সাথে তার সংযোগ দৃঢ় রয়েছে।

জ্যাক, এখন একক পিতা, বিবাহবিচ্ছেদের পর তাদের নিজ শহরে ফিরে এসেছিলেন। তার মেয়ে লিলি ছিল তার জীবনের আলো।

এমিলি জ্যাক এবং লিলির সাথে সপ্তাহান্তে কাটিয়েছে, তাদের সাথে তার বন্ধনকে আবার জাগিয়েছে। তিনি বাবা হিসাবে জ্যাকের দয়া, মমতা এবং ভক্তি আবিষ্কার করেছিলেন।

পুনর্মিলন শেষ হওয়ার সাথে সাথে, এমিলি একটি পছন্দের মুখোমুখি হয়েছিল: NYC-তে তার ব্যস্ত জীবনে ফিরে যান বা জ্যাকের সাথে আবার প্রেমের সুযোগ নিন।

এমিলি প্রেম বেছে নিলেন।

একসাথে, তারা তাদের জীবনকে মিশ্রিত করার চ্যালেঞ্জগুলি নেভিগেট করেছে। এমিলি লিলির কাছে একজন প্রেমময় অংশীদার এবং মা হয়ে ওঠেন।

তাদের প্রেমের গল্প উন্মোচিত হয়েছে, হাসি, দুঃসাহসিকতা এবং গভীর সংযোগে ভরা।

*এপিলগ*

কয়েক বছর পরে, এমিলি এবং জ্যাক তাদের বারান্দায় বসেছিল, হাত ধরে। লিলি, এখন বড়, তাদের দিকে কৃতজ্ঞতার সাথে হাসল।

এমিলি বুঝতে পেরেছিল যে জ্যাকের সাথে পুনরায় মিলিত হওয়া প্রেমের দ্বিতীয় সুযোগের চেয়ে বেশি – এটি তার নিয়তি।

Share This
Categories
অনুগল্প গল্প নারী কথা

সন্তানস্নেহে : প্রবীর কুমার চৌধুরী ।

আর মাত্র ৫টি  মাস বাকি চাকুরী থেকে অবসর নিতে। কতদিন,কত মাস, বছর দেখতে, দেখতে কেটে গেল চাকুরী জীবনের । আজও মনে হয়  যেন এইতো সেদিন আসলো কর্মক্ষেত্রে। পরীক্ষা, ইন্টারভিউ, তারপর প্রশিক্ষণের চিঠি হাতে পাওয়া।
প্রথম,প্রথম তো প্রশিক্ষিণ সময়ে এতো কাজের চাপ ছিল খাওয়া, নাওয়ার সময় পেতোনা বিপাশা। ক্লাসের সঙ্গে, আবার ওয়ার্ডও ডিউটি করতে হত। সাথে নাইট।
মাঝে, মাঝে তো বিশেষ, বিশেষ অনুষ্ঠানে বাইরের ক্যাম্পগুলোতেও যেতে হতো।অবশ্য সেগুলো বছরে দুয়েকবার। খুব আনন্দ হত সে ক্যাম্পে। ভীষণ ক্লান্ত লাগতো,এতো পরিশ্রম হতো  যে ভাবতো  প্রশিক্ষণ ছেড়ে বাড়ি চলে যাবে।

এই করতে,করতে একদিন বিপাশা তিনবছরের নার্সিং প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রথম পোস্টিং পেল বর্ধমান মেডিকেল কলেজে। তারপর  হেলথ উনিভারসিটি থেকে বিএসসি,  এমএসসি  পাশ করলো। ধাপে, ধাপে প্রমোশন পেতে, পেতে আজ সে  একটা ইনস্টিটিউশননের অধ্যাক্ষা।
আজকাল বিপাশা তার চেম্বারে বসে প্রায়ই এসব কথা ভাবে। একটার পর একটা স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে চলে বিদায় বেলায়।
আজ একটু আগেই বিপাশা সব ক্লাস ভিজিট করে এসেছে। এখন  কিছু বিল যা  গতকাল  অব্জেকশন হয়ে ফিরে এসেছে সেগুলোর রিপ্লাই লিখছিলো। বিলক্লার্ক মনোতোষ দুবার তাগাদা দিয়েছে”  ম্যাডাম দুটোর পর কিন্তু আর অব্জেকশন বিল জমা নেবে না” ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই অব্জেকশনের মিটিয়ে দিয়ে  বিপাশা বেল দিতেই অর্ডালি বিকাশ ঘরে ঘুকতেই বলল ” বিকাশ যাওতো কম্পিউটার অপরেটর সত্যবাবুকে জিজ্ঞাসা কর এলোটমেন্টের যে চিঠিটা করতে দিয়েছি হয়েছে কিনা? হলে সাথে করে নিয়ে আসবে “।
বিপাশা এখানে ডি, ডি, ও হলে কি হবে রোজ একটা, দুটো  ক্লাসও  নেয় অন্যান্য কাজের মধ্যেই । এটা তার মনের খোরাক, শান্তি পায় ছোট, ছোট মেয়েদের সংস্পর্শে। মনে পড়ে ফেলে আসা দিনের কথা। মনে পড়ে ক্লাসমেট দের কথা। অবশ্য কয়েক জনের সাথে এখনও যোগাযোগ আছে। বিনতা, শেফালী, তনুশ্রী, আশালতা, ভারতী বিভিন্ন হাসপাতালে পোস্টিং হলেও প্রায় রাত্রে কথা হয়। ওদের মধ্যে শেফালী সিস্টার ইনচার্জ হয়ে গেছে। তনুশ্রীও মেট্রোন হয়েছে। কিন্তু বিপাশার অমায়িক ব্যবহারে আজও যে সব বান্ধবীরা ওর নিচে আছে কেউই বিপাশাকে এড়িয়ে যেতে পারেনি।এখনও তারাও যোগাযোগ রাখে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়।
বিকাশ বেরিয়ে যেতেই সিস্টার টিউটর মজুলা এসে বলল – ” শুনেছেন ম্যাডাম। ফার্স্ট ইয়ারের মানসী মণ্ডল আজ কদিন ছাতু মুড়ি খাচ্ছে। হোস্টেল থেকে মিল নিচ্ছে না। বললে মুখে কোন কথা নেই। একেবারে চুপচাপ। ওর বন্ধুরাও কারণ জানতে পারেনি “।
বিপাশা অবাক  হয়ে যায় শুনে। ভাবে মানসী মণ্ডল খুব ভালো মেয়ে। অমায়িক ব্যবহার। দেখতেই শুধু সুন্দরীই নয়, লেখাপড়ায় উন্নত,। বারোক্লাসের রেজাল্ট তো  বেশ উপরের দিকে আছে । শতকৱা আশির উপরে নং । স্বভাব খুব নম্র ও ভদ্র, কথাবার্তাও খুব মার্জিত । লেখাপড়া ছাড়াও ভালো নাচ জানে। সুন্দর কবিতা আবৃতি করে। কোন একটা নাটকের গ্রুপে নাকি অভিনয় করতো ট্রেনিং এ আসতে সে গ্রুপ ছেড়ে দিয়েছে।
এবার লাইমলাইট অনুষ্ঠানে তো ওর নাচ দেখে সবাই মোহিত হয়ে গেছে। এমন মেয়েকে স্নেহ না করে কেউ থাকতে পারে?  বিপাশাতো ভীষন পছন্দ করে মেয়েটিকে।
বিপাশা শুনে বলল না ” এটা তো ভালো ব্যাপার নয়। ওকে ডেকে পাঠাও তো ক্লাস থেকে” ।
বিকাশ গিয়ে ডেকে আনলো মানসীকে। ধীর, স্থির পায়ে ঢুকলো সে। বিপাশা
স্নেহভরে জিজ্ঞাসা করলো ” কী ব্যাপার মানসী, তুমি শুনলাম কদিন হোস্টেলের মিল নিচ্ছো না। ছাতুমুড়ি খেয়ে থাকছো। কেন গো শরীর খারাপ। নাকি হোস্টেলের রান্না তোমার ভালো লাগছে না?
মানসী নিরুত্তর,চুপ। বিপাশা আবার জিজ্ঞেসা করলো ” বলো, মিল খাচ্ছো না কেন? কি অসুবিধা তোমার? ”
এবারেও মানসী কোন  উত্তর না দিয়ে চুপ করে মাথা নিচু করে  মার্বেলের মেঝের উপর পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুকি কাটতে লাগলো।
মঞ্জুলা মানসীর এই ঔদ্ধত্ব দেখে অবাক। ম্যাডাম জিজ্ঞাসা করছেন এতবার আর ও  কিনা জবাব দেওয়া প্রয়োজন মনে করছে না। ধমকে ওঠে মঞ্জুলা  বলল ” একি ম্যাডাম তোমায় এতবার জিজ্ঞাসা করছেন তুমি ওনার কথায় কোন উত্তর দিচ্ছো না। তোমার গার্জেন কল করবো ” ?
মানসীর বাড়ি হোস্টলের খুব কাছে তাই মঞ্জুলা একথা বলে মানসিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করলো ।
বিপাশা কাছে ডেকে সস্নেহে আবার জিজ্ঞাসা করলো ‘ আমায় বলো। কোন ভয় নেই। আমি অসুবিধা হলে ব্যবস্থা নেবো “।
ম্যাডামের স্নেহের স্পর্শে এবার মানসী হার মানলো। খুব পরিষ্কার উচ্চারণে আস্তে আস্তে বলল –  ‘ ম্যাডাম গত রবিবারে মা, বাবা এসেছিলেন। সঙ্গে এনেছিলেন পাঁঠার মাংস। বাড়ির কথা, দিদির বিয়ের কথা আলোচনা হচ্ছিলো। আমার খাওয়া হলে  ভুলে করে এটো থালার সাথে পরিষ্কার করা থালাগুলো  ব্যাগে ভরে নিয়ে মা চলে যান। আমিও কথা বলতে, বলতে নিতে ভুলে যাই।  তাই থালার অভাবে আমি ভাত খেতে  পারছিনা  বলেই  ছাতুমুড়ি খাচ্ছি ম্যাডাম “।

মানসীর কথায় মঞ্জুলার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। ব্যাপারটা তার  কিছুই বোধগম্য হলো না। মানসী কি বলছে!
বিপাশা  বিস্ময়ে বলল ” মানে তোমার বাড়ির লোকেরা প্রতি সপ্তাহে এসে তোমার এটো থালা বাড়ি নিয়ে যান? আর সপ্তাহের পরিষ্কার থালা দিয়ে যান?”
মানসী অপরাধীর মতো মুখ করে বলল
”  হ্যাঁ ম্যাডাম। এটো থালা নিয়ে যান আর পরিষ্কার থালা দিয়ে যান। কিন্তু এবার নানাবিষয়ে কথা বলতে বলতে ভুল হয়ে গেছে।

বিপাশা হোহো করে হেসে ওঠে এতক্ষনে। মঞ্জুলাও এতক্ষনে ব্যাপারটা বুঝে সেও  হেসে ওঠে।
ম্যাডামের চেম্বারে সমবেত হাসির আওয়াজে কৌতূহলী হয়ে অন্যান্য সিস্টার টিউটররাও বিপাশার চেম্বারে এসে জড়ো হয়। তারপর সব শুনে  তাঁরাও হাসিতে দেন। সে যেন এক নির্মল হাসির মেলা।
হাসি থামলে বিপাশা স্টোরকিপার  শোভনবাবুকে  ডেকে স্টোর থেকে ফার্স্ট ইয়ারের মানসী মন্ডলের নামে একটা থালা, একটি গ্লাস ও বাটি  ইস্যু করতে বলে। আর  মানসীকে বলে ” শোভনবাবুর থেকে ওগুলো নিয়ে হোস্টেলের মিল খেয়ে ক্লাসে যাও।
প্রায় চারটে নাগাদ বিপাশা তখন শেষ বেলার ডাক দেখছিলো। হোস্টেলের রাঁধুনিদের একজন   মিনতি দাস দরজা ঠেলে মুখ বাড়িয়ে বলল – “একটু আসবো ম্যাডাম? বিপাশা একমনে একটা আর্জেন্ট চিঠি দেখছিল  একটু বিরক্ত হয়ে বলল
” তোমার আবার কী সমস্যা হলো মিনতি” ? ”
মিনতি বলল ” ম্যাডাম মানসী মণ্ডল তো খেয়ে দেয়ে এটো বাসন পরিষ্কার না করে কিচেনে রেখে ক্লাসে চলে গেছে। এখন কে পরিষ্কার করবে”?
বিপাশা কলম থামিয়ে বলল ‘ ওকে ডেকে পরিষ্কার করে রাখতে বলো।  যাও ”
কি মনে হতে বিপাশা নিজেই  কিচেনের দিকে এগিয়ে গেল। দেখে মানসীর বাসন মাজছে আর কাঁদছে।
বিপাশা অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে  মানসী বলল – ” ম্যাডাম বাসন মাজার সাবানের খাড়ে আমার হাতময় এলার্জি বেরোয় লাল ডুমু, ডুমু। তাই আমায় মা বাবা বাসন মাজতে দেননা আর সেই কারণেই মা থালা, বাটি, গেলাস  মেজে আনেন ও পুরানোটা নিয়ে যান পরিষ্কার করে আনার জন্যে “।
বিপাশা স্নেহের ছাত্রীটিকে  মাথায় হাত বুলিয়ে সস্নেহে বললেন – ” কাল দ্বিতীয় পিরিয়ডে তুমি অবশ্যই স্কিন ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ডক্টর ব্যানার্জীকে দেখাবে।আমি বলে রাখবো। তুমি ট্রিটমেন্ট করোনি বোধহয় তাই কষ্ট পাচ্ছ। ভয় নেই একেবারেই সেরে যাবে “।
মানসীর চোখের জল তখনও শুকাইনি। তার কথা শুনে সামনে দাঁড়িয়ে মজা দেখতে আসা কারুর  মুখে এখন একটুও হাসি ফুটলো না।

এখন মানসী তৃতীতবর্ষের ছাত্রী। বিপাশা ম্যাডাম অবসর নিয়েছেন অনেকদিন। তাঁর স্নেহের কথা ভুলতে পারে না  মানসী। এখনও ম্যাডামের সাথে ফোনে যোগাযোগ রেখেছে। হাতের এলার্জি কবেই সেরে গেছে। কোন সমস্যা হলেই ফোনে জিজ্ঞাসা করে। ম্যাডামও আপন সন্তানের মতো সবকিছু সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেন। মানসী বিপাশা ম্যাডামের কথায় তার নিজের মায়ের ছোঁয়া পায়।

শুধু মাঝে, মাঝে, মজা করে ম্যাডাম  জিজ্ঞাসা করেন ” এই মেয়ে নিজের এটো
থালা,বাটি, গ্লাস এখন নিজেই মাজো  তো, নাকি মাকে দিয়ে মাজাও …”?

সমাপ্ত
দূরভাষ -৮৭৭৭৭৪১৩০১

Share This
Categories
অনুগল্প

বেঁচে থাকার অক্সিজেন :: লাজু চৌধুরী।।

দক্ষিণার বারান্দায় মধ্য রাতে দাঁড়িয়ে দেখি শুনসান বিরাজ করছে আমার শহর আমার এলাকায়।
টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে।
জীবনের জড়িয়ে থাকার কিছু অংশ বিশেষ স্মৃতি কখনও কখনও সামনে এসে দাঁড়ায়।
ঠিক মনে হয় একটা মোলাট বাঁধা একটি পুড়ো পান্ডুলিপি হতে পারে এখানে জীবন জুড়ে থাকা অসংখ্য স্মৃতি বহন করছে।
পরিবর্তন অনুভব করছে বয়স বেড়েছে, বয়স নয় অভিঞ্জতা বেড়েছে অভিঞ্জতা মানুষকে বড়ো করে তোলে।
জীবনের কিছু কিছু স্মৃতি ওঠে আসে উপন্যাসের পাতায় যা বহন করে জীবনের অনেকটা অংশ।
তাই বেলা শেষে মনে হয় Need if necessary এটা ভুল বরন যে তোমার শুন্যতায় আছে তাকে ভালোবাসো । মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রিয়োজনদের কাছে থাকা এটা বেঁচে থাকার অক্সিজেন। পাহাড় ও বৃদ্ধ হয় সময় ও পাশ কেটে যায়।
প্রতিদিন বেঁচে থাকার আয়োজনে কিছু প্রিয়ো মানুষ গুলো পাশে থাকার দরকার কারন প্রিয়ো মুখ গুলো বেঁচে থাকার অক্সিজেন । সময় জীবনের সাথে প্রিয়ো মুখগুলো প্রয়োজন আছে ভালো থাকার প্রয়োজনে

মাঝে মাঝে অসময়ে স্মৃতি গুলো গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস হয়।
কারন এটাও বেঁচে থাকার অক্সিজেন।

Share This
Categories
অনুগল্প

মূল্যবান মনুষ্য জীবন তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি : স্বামী আত্মভোলানন্দ (পরিব্রাজক)।

*আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী সংসাররূপ অরণ্য, ভাই সিংহের মত হও, সিংহাসন নিয়ে চিন্তা করো না, যেখানে বসবে সেটাই সিংহাসন হয়ে যাবে ! ত্যাগ বিনা কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়। শ্বাস নেওয়ার সময়ও আগে একটা শ্বাস ছাড়তে হয়। যে পাওয়ার সঙ্গে না পাওয়া জড়িত হয়ে আছে! সেই পাওয়াতেই মানুষের মন বেশি আনন্দিত হয়। যেমন, চিনি এবং লবণ উভয়ই একই রঙের, তবে স্বাদ আলাদা, তেমনি, আমাদের সমাজে, একজন ব্যক্তিকে, তার আচরণকে চেনেন, অন্য, ব্যক্তির সাথে তুলনা করবেন না। ঈশ্বর প্রতিটি ব্যক্তিকে, তার আচার আচরণকে পৃথক পৃথকভাবে তৈয়ারি করেছেন। মানুষ ঈশ্বরের এক অনন্য সৃষ্টি, অপূর্ব সৃষ্টি। তাঁর এই সৃষ্টির আনন্দে তিনি বিভোর হয়ে আছেন, তাঁর সৃজনশীলতার মাঝখানে, সৃষ্টির মাঝখানে, খুব আনন্দের সাথে। তাই তো কবি বলেছেন:- “খেলিছ, এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে”।***
সকলের জন্য শুভ ও মঙ্গলময় আশির্বাদ প্রার্থনা করি।
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ….!

Share This
Categories
অনুগল্প

বহুকাল পর : লাজু চৌধুরী।

বহু কাল পর দরজায় হঠাৎ কড়া নাড়লো —–
দরজা খুলে দেখি ঠিকানা দাড়িয়ে আছে যাকে আমি বহু কাল আগে ফেলে এসেছি।

ভাবছি কি বলবো ভীশন ভাবনায় পড়ে গেলাম।

The past is very mysterious…যাকে আমি অনেক আগেই ভুলতে বসেছি। কারন সেখানে আমার বাবা মা ছোট বোন। আমার অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভালোবাসার মুখ আমার খালা খালু, আমার ভাই বোন চাচা চাচি আরো অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুখ Those in contact I had oxygen to like ….কিন্ত অতীত আজ ঠিকানার হাত ধরে আমার দরজায় কেনো।
আমি প্রশ্ন করলাম কি চাই তোমাদের কাছে আমি সব কিছু ছেড়ে দিয়ে এসেছি ঠিক তা নয় তোমার সব নিয়োতির দোহাই দিয়ে সব কিছু কেড়ে নিয়েছ। মাঝে মাঝে আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় । আমি ভীষন একা আমার ভাবনা গুলো আমার গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাধারা আমার মনের ভিতরে একটা আমার আমি আছে যাকে নিয়ে আমি ডুবে আছি ভালো লাগা মন্দ লাগা সব কিছু কে আগলে রেখে যাবতীয় সব ঠিকানা ভুলে গেছি।
আরো ভীষণ অবাক হচ্ছি ঠিকানার পাশে অতীত । অতীতের হাত ধরে জীবন দাঁড়িয়ে আছে।I wanted a lot from life —-স্বার্থপর আমাকে কিছু দেয়নি অপেক্ষার দরজায় এখন পযর্ন্ত দাঁড়িয়ে আছি। প্রশ্ন রাখলাম জীবনের কাছে?
আরো বেশি রহস্যময় হয়ে উঠছি আমি নিজেই । এই তিন ব্যাক্তি কেউ আমার কথা রাখেনি কেউ আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।
অবশেষে আমার দরজায় রেখে গেলো অবহেলা আর হতাশা । আমি চিৎকার করে বললাম আমাকে শেষ করতে পারবেনা। তোমাদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আমার বিশ্বাস।
আমি পলাতক ছায়া নই। অবশেষে সম্পর্ক পাশে এসে দাড়ালো।

Share This
Categories
অনুগল্প কবিতা

অকবি : রাণু সরকার।

আমি কবি নই,
বুঝিনা কিছুই,
আমার মনের ভাবনাকে ধরে রাখার চেষ্টা করি মাত্র-
সেটা কবিতা হয় কিনা তাই নিয়ে মাথার ঘাম ঝরাই না।
কিছু ভাবনাকে রূপ, রস দিয়ে সাজাই বটে আরকি,
একরকম নেশা বলতে পারি বা ভাবনাবিলাস!
টুকরো টুকরো ভাবনারা উড়ে বেড়ায় মনের মণিকোঠায় ছবির মতো,
কখনও তারা নৃত্যও করে আবার চপল কিশোর কিশোরীর মত ভ্রু কুঁচকে হাতপা নেড়ে মনকে দেয় নাড়িয়ে তখন চুপ থাকতে পারিনা।
আমি চুপ থাকার চেষ্টা করি বটে- কিন্তু সে দেয় না চুপ থাকতে, নিজেই বসে পড়ে মহানন্দে ডায়েরির পাতায়। তখন হৃদয় আমার তোলপাড় করে ঝড় তোলে,বাধ্য হয়ে তাকে নিয়ে বসি নানারূপে চিত্রিত করি ভাষা দিয়ে,সে তখন ভীষণ খুশি,হবেই বা না কেন-সেতো সাজতেই বেশি ভালোবাসে।

Share This
Categories
অনুগল্প প্রবন্ধ

আদি শঙ্করাচার্য সম্পর্কে কিছু কথা : রাণু সরকার।

যেকোনো ভ্রান্ত মতবাদকে তথা দোষযুক্ত মতবাদকে খণ্ডন করতে অদ্বৈতবাদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আদি শঙ্করাচার্য হলেন সেই অদ্বৈতবাদের প্রতিষ্ঠাতা, কিন্তু তিনি যে শুধুমাত্র অদ্বৈতবাদী তেমনটাও না, বরং তিনি অদ্বৈতবাদ, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ এবং দ্বৈতবাদের মিলন। ভারতে বৌদ্ধদর্শনের শূন্যবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় সনাতন সংস্কৃতি যখন লোপ পেতে থাকল, তখন তাঁর আবির্ভাবে এবং তাঁর কঠোর পরিশ্রমে পুনরায় দৃঢ়মূলে সনাতন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেল। ভারতীয় দর্শন শাস্ত্রের বেদান্তের সর্বোচ্চ তত্ত্ব অদ্বৈতবাদ প্রচারের জন্য তিনি ভারতের সমস্ত সনাতনী সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে দশনামধারী দশটি সন্ন্যাসী সম্প্রদায়কে যথা : তীর্থ, আশ্রম, বন, অরণ্য, গিরি, পর্বত, সাগর, সরস্বতী, ভারতী এবং পুরীকে বাছাই করে তারপর ভারতের চারপ্রান্তে চারটি মঠ যথা : পূর্বে ওড়িশার পুরীতে গোবর্ধনমঠ, পশ্চিমে গুজরাটের দ্বারকায় সারদামঠ, উত্তরে উত্তরখন্ডের বদ্রিকাশ্রমে জ্যোতির্মঠ এবং দক্ষিণে কর্ণাটকের শৃঙ্গেরীতে শৃঙ্গেরীমঠ স্থাপন করে উক্ত দশনামধারী সম্প্রদায়কে একত্রিত করে কার্যভার প্রদান করেন এবং উক্ত মঠে মহন্তরূপে চারজন শঙ্করাচার্যের পরম্পরা শুরু করেন। ভারতের ৪২ সাধকদের মধ্যে অন্যতম হলেন আদি শঙ্করাচার্য, তিনি জাগ্রত চৈতন্য। হিন্দু সম্প্রদায় এবং সনাতন ধর্ম অর্থাৎ আত্মধর্ম অর্থাৎ স্বধর্ম এখনও পর্যন্ত ভারতে বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকার নেপথ্যে আদি শঙ্করাচার্যের যে বহু অবদান আছে তা অনস্বীকার্য। অদ্বৈত উপলব্ধি সাধনার সর্বোচ্চ উপলব্ধি, কিন্তু তা উপলব্ধি করতে বহু প্রক্রিয়া অতিক্রম করতে হয়, আদি শঙ্করাচার্যও তা অতিক্রম করেন। তাঁর শুদ্ধ ভক্তি ও সাধনা সমস্ত সনাতনীদের জন্য প্রবল উৎসাহ বহন করে। আদি শঙ্করাচার্য হলেন ব্রহ্মবিদ্বরিষ্ঠ, তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী ব্রহ্ম সত্য, জগত মিথ্যা (ভ্রম), জগত-ব্রহ্ম এক। তাঁর মতবাদ গুরুসহায়ে শুদ্ধচিত্তে মনন করলে ব্রহ্ম উপলব্ধির পথ অর্থাৎ পরম সত্য উপলব্ধির পথ অর্থাৎ জীবদ্দশায় জীবন্মুক্তির পথ সরল হয়।

Share This