Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

লাবণ্যপ্রভা দত্ত : ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অন্যতম ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা।

সূচনা—

ভারতের স্বাধীনতা অন্দোলনে কত বীর সন্তান যে শহীদ হয়েছেন তার হিসেব মেলা ভার। স্বাধীনতার ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে বহু নারী এই সংগ্রামে সমান ভাবে আহুতি দিয়েছিলেন নিজেদের। ভলোকরে  ইতিহাস ফিরে দেখলে তার খোঁজ পাওয়া যাবে। চিরস্মরণীয় মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের তালিকায় রয়েছেন মাতঙ্গিনী হাজরা, বীণা দাস, কল্পনা দত্ত, প্রীতিলতা ওয়দ্দেদার, শন্তি ঘোষ, কমলা দেবী আরো কতো নাম। অনেকের নাম আবার অনেকেই জানেনা। তেমনি এক নমস্য বিপ্লবী বীরাঙ্গনা নারী ছিলেন
লাবণ্যপ্রভা দত্ত (১৮৮৮ ― ৬ জুন, ১৯৭১)। যিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। তাঁর সেই বিরত্বের কাহিনী আজও স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে ইতিহাসের পাতায়।

জন্ম ও পরিবার—-

লাবণ্যপ্রভা দত্ত ১৮৮৮ সালে বহরমপুরে পিতার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু পিতৃভূমি ছিল মুর্শিদাবাদ এর বহরমপুরে। তার পিতার নাম হেমচন্দ্র রায় ও মাতার নাম কুসুমকুমারী দেবী। স্বামীর নাম ছিল যতীন্দ্রনাথ দত্ত। ৯ বছর বয়সে খুলনার যতীন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে বিবাহ হয়। অগ্ৰজ সুরেন্দ্রনাথ রায়ের কাছে রাজনৈতিক কর্মে অনুপ্রেরণা পান। ১৯০৬ খ্ৰী. স্বদেশী যুগে তিনি স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহার করতেন এবং স্বদেশী ছেলেদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করতেন। ২৩ বছর বয়সে বিধবা হয়ে বহুদিন পুরী ও নবদ্বীপে কাটান। ১৯২৯ খ্রী. লাহোর জেলে যতীন দাসের মৃত্যুর ঘটনায় আবার তিনি দেশসেবার কাজে এগিয়ে আসেন।

সংগ্রামী জীবন—-

জমিদার বাড়ির মেয়ে ছিলেন তিনি, বিভিন্ন অন্যায় দেখে ছোট থেকে প্রতিবাদী হয়েছেন। তার বড় ভাই সুরেন্দ্রনাথ রায়ের দ্বারা তিনি প্রভাবিত হয়েছেন। ১৯০৬ সালে স্বদেশী আন্দোলনে যুক্ত হন। স্বদেশী কাজে যুক্ত ছেলেদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করতেন। তিনি নিজের স্বামীকে প্রভাবিত করেছিলেন স্বদেশীভাবাপন্ন করতে। ১৯৩০ খ্রী. তিনি ও তাঁর কন্যা শোভারানী দেশসেবা ও জনসেবার আদর্শ নিয়ে ‘আনন্দমঠ’ নামে এক সংস্থা প্ৰতিষ্ঠা করেন এবং দেশসেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। ১৯৩৩ সালে ‘নারী সত্যাগ্রহ সমিতি’ গঠন করেন। তিনি দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের সেক্রেটারি ও চব্বিশ-পরগনার কংগ্রেসের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আইন অমান্য আন্দোলন এর কাজ করার সময় তিনি গ্রেপ্তার হন ও তিনমাস জেল খাটেন।

১৪ দিন অনশন —-

১৯৩২ খ্রী. আইন অমান্য আন্দোলনে তাঁর ১৮ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। প্রেসিডেন্সী জেলের ভিতর ফিমেল ওয়ার্ডে বিধবাদের নিজেদের রান্না করে খাবার অধিকার পাবার জন্য ঐ জেলে ১৪ দিন অনশন করে সফল হন। দক্ষিণ কলিকাতা কংগ্রেসের সেক্রেটারী, চব্বিশ পরগনা কংগ্রেস কমিটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট, বিপিসিসি-র মহিলা সাব-কমিটির সেক্রেটারী (১৯৩৯), বিপিসিসি’র সভানেত্রী (১৯৪০ – ১৯৪৫) ছিলেন।

মৃত্যু—

মহান এই স্বাধীনতা সংগ্রামী ১৯৭১ সালে ৬ জুন প্রয়াত হন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *