সুন্দরবন, এশিয়ার সবথেকে বড় নিরবিচ্ছিন্ন বাঘ-বন, আর পৃথিবীর একমাত্র বাদাবন যেখানে দেখা মেলে বাঘের।এখানে বাঘ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে সবথেকে বেশি প্রাণ হারায় মানুষ- এই জোয়ার ভাটার জঙ্গলে।
খাবারের অভাব হলে বনের পার্শ্ববর্তী মানুষের বসতিতে এসে আক্রমণ করে। সাধারণত এরা মানুষের চোখে পড়তে চায় না- তবে কিছু বাঘ আছে মানুষখেকো।
সুন্দরবন অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যে নদী গুলো বয়ে গেছে সেই নদী হলো বিদ্যাধরী,মাতলা,
মাথাভাঙা প্রভৃতি।
সুন্দরবনের ঐতিহ্য হলো বাঘ ও গাছগাছালি নৈসর্গিক দৃশ্যাবলি সুন্দরী, খলসি, গেওয়া, কেওড়া,গরান, হোগলা,
গোলপাতা প্রভৃতি।
মধু সংগ্রহ করতে ও মাছ ধরতে গিয়ে মানুষের প্রাণ হারাতে হয়।
বাঘের স্মৃতিশক্তি অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে তুলনামূলক বেশি। দেহজুড়ে রঙের বাহারি নকশাখচিত ডোরাকাটা পেটের দিকে হালকা হলুদ পায়ের ভেতরের দিকে সাদা গায়ে কমলা রঙের লম্বালম্বি কালো ধূসর বা বাদামি ডোরাকাটা।
দুটো বাঘের ডোরাকাটা দাগ এক নয়। যাইহোক বাঘের বিবরণ যতটা পেরেছি লিখলাম।
একটি ঘটনা লিখলাম,
সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিল বাবা ছেলে ও কাকা তিনজন নৌকা নিয়ে সামনেই বাঘ ছিলো গাছের আড়ালে লুকিয়ে তারা কেউই দেখতে পায়নি পেছন থেকে আক্রমণ করলো বাবাকে। কাকা দেখতে পেয়ে ভয়ে দিশাহারা, কোথায় পালাবে ঠিক করতে পারছে না। অবশেষে এক জায়গাতে কোনক্রমে আশ্রয় নিলো ছেলের বয়স কম তাই ভয়কে সাথে নিয়েই চললো লড়াই। প্রথম বাপের ঘারে কামর দিয়ে কিছুক্ষণ বসে রইল আস্তে আস্তে মাথাটি মুখে পুরে দিলো। ছেলেটি দেখছে ভয়ে ভয়ে ভাবছে কিভাবে বাঘের হাত থেকে বাবাকে রক্ষা করা যায়।
বাঘটি এমন ভাবে বসে ছিলো ছেলেটি কিছুই করতে পারছিলো না পাশে নদী ও গাছগাছালি অবশেষে বৈঠা দিয়ে জলে বারি দিতে থাকে বাঘ একটু ভয় পেয়ে বাপকে মুখে করে জলে নেমে পরে জলের নিচে দিয়ে চলছে ওপারে যাবে ছেলের বৈঠাটি ভেঙে গেলো ভাবছে বাবা তো মারা গেছে বাঘের মুখেই বাবার দেহটি রক্ষা করতে হবে খেতে দেওয়া যাবেনা ছেলেটির যত শক্তি ছিলো সব শক্তি দিয়ে চিৎকার করলো বাঘের মত করে, বাঘ ভয়ে আবার পাড়ের দিকে উঠে এলো দেহটি কোনক্রমে মুখ থেকে ফেলে পাশে বসে আছে। এমন ভাবে বসেছে কিছুই করতে পারছে না ছেলে, বাঘ ভীষণ চালাক।
ভাঙা বৈঠা দিয়ে জলে বারি দিতে থাকে বাঘ ধীরে ধীরে একটু দূরে গাছের আড়ালে বসে আছে। বিশাল আকারের বাঘটি ছেলেটি কোনক্রমে বাপের দুহাত ধরে টানতে টানতে নৌকায় তুললো এবার কাকা কাকা বলে ডাক দিলো। কাকা ভয়ে জড়সড় হয়ে বলছে এখানে আমি ছেলে নৌকায় বাবার দেহটি ভয়ে ভয়ে রেখে কাকাকে নৌকায় তুলে তাড়াতাড়ি রওনা দিলো বাড়ির দিকে ভয় তো সাথেই আছে সবসময়ের জন্য। আবার যদি আসে হাত পা কাঁপছে, যেকোরেই হোক বাবার দেহটি বাড়ি নিয়ে যেতেই হবে। বাঘ কিন্তু ওদের পিছু ছাড়ছে না, এপাশ ওপাশ করতে থাকে মানুষটিকে পাবার জন্য,ওর মুখের আহারটি তো ওরা নিয়ে নিলো।
অবশেষে কোনক্রমে নৌকা মাঝ নদীতে নিয়ে একটু স্বস্তি পেলো, তারপর কষ্টকে সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো বাবার মৃতদেহটি নিয়ে।