Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আজ বিশ্ব টেলিভিশন দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং গুরুত্ব।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা সহকারে পালন করা হয়ে থাকে। সাংবাদিক, লেখক, ব্লগাররা টেলিভিশন সম্পর্কে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে কিমবা প্রিন্ট মিডিয়ায় টেলিভিশনের ভূমিকা ও  গুরুত্ব সম্পর্কিত নানা লেখালেখি, মতামত ছড়িয়ে দেওয়া হয়। স্কুল-কলেজে, কখনও বা পাবলিক সেমিনারের আয়োজন করে বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ করে আনা হয় টেলিভিশনের নানা দিক নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনার জন্য। এছাড়াও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্থানে সম্মেলন এবং বক্তৃতার আয়োজনও করা হয় এই বিশেষ দিনটি উদযাপনের উদ্দেশ্যে।

টেলিভিশন শব্দটির উৎপত্তি গ্রিক ও লাতিন শব্দের সম্মিলনে। গ্রিক শব্দ ‘টেলি’ অর্থ দূরত্ব আর লাতিন শব্দ ‘ভিশন’ অর্থ দেখা। টেলিভিশনে একই সঙ্গে ছবি দেখা ও শব্দ শোনা যায়। বিশ্ব টেলিভিশন দিবস আজ।
বলা যায়, টেলিভিশনই প্রথম বিশ্বটাকে মানুষের ঘরের মধ্যে এনেছিল। যার মাধ্যমেই হয় তথ্য ও বিনোদনের এক বিস্ময়জাগানিয়া অগ্রগতি। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে টেলিভিশন প্রযুক্তিও।

ব্রিটিশবিজ্ঞানী জন লগি বেয়ার্ড ১৯২৬ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। এর পর রুশ বংশোদ্ভুত প্রকৌশলী আইজাক শোয়েনবারগের কৃতিত্বে ১৯৩৬ সালে প্রথম টিভি সম্প্রচার শুরু করে বিবিসি। টেলিভিশন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালু হয় ১৯৪০ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশনের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সূচিত হয়। গত শতাব্দীর ৫০ এর দশকে টেলিভিশন গণমাধ্যমের ভূমিকায় উঠে আসে।
বিজ্ঞানী জন লোগি বেয়ার্ড-এর টেলিভিশন আবিষ্কারের দিনটি ছিলো ২১ নভেম্বর। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ আয়োজিত এক ফোরামে ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ব টেলিভিশন দিবস ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসাবে ঘোষণা করে, যে তারিখে ১৯৯৬ সালে বিশ্ব টেলিভিশন ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

যোগাযোগ স্থাপনে, বিচিত্র সংস্কৃতির প্রচারে এবং সর্বোপরি বিশ্বায়নে টেলিভিশনের ভূমিকা কত গুরুত্বপূর্ণ সেটি মানুষের সামনে তুলে ধরতেই এবং সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতেই এই বিশ্ব টেলিভিশন দিবস উদযাপন করা হয় বিশ্বজুড়ে। মানবসভ্যতার এক চমক লাগানো আবিষ্কার হল এই টেলিভিশন। সারা বিশ্বকে নিজের ঘরের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে এক লহমায়, মানুষ হয়তো একসময় স্বপ্নেও তা ভাবেনি। ১৯২৬ সালে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন স্কটিশ বৈজ্ঞানিক জন লগি বেয়ার্ড(John Logie Baird)।  কিন্তু মানুষ আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক হয়েছে, ইন্টারনেটের যুগে এসে তাই ক্রমে টেলিভিশনের মায়া খানিক ফিকে হয়ে গেছে। কিন্তু এ কথা এখনও ভীষণ সত্যি যে টেলিভিশনের মতো এত শক্তিশালী প্রচার মাধ্যম খুব কমই আছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২০১৭ সালে টিভি পরিবারের সংখ্যা ছিল ১.৬৩ মিলিয়ন। ২০২৩ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ১.৭৪ মিলিয়ন। তথ্য-বিনোদনের এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম তো বটেই, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে গণতন্ত্রের বিকাশসাধনের জন্য টেলিভিশনের স্বাধীনতা খুবই প্রয়োজনীয়। সংবাদমাধ্যমের ক্ষমতা তো এখন সর্বজনবিদিত। সুতরাং টেলিভিশন যে আজও একটি প্রভাবশালী মাধ্যম সেবিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। দেশের রাজনৈতিক এমনকি অর্থনৈতিক পটপরিবর্তনেও টেলিভিশনের ভূমিকা কম নয়। জনমত গঠনের কাজেও টেলিভিশনের অবদান অনস্বীকার্য।

উল্লেখ্য ১৯৯৬ সালের ২১ নভেম্বর জাতিসংঘের প্রথম বিশ্ব টেলিভিশন ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই দিনটির স্মরণেই সেই বছরই ১৭ই ডিসেম্বর তারিখে জাতিসংঘ ২১শে নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্বশান্তি ও সুরক্ষা বজায় রাখার ক্ষেত্রে, মানুষকে প্রভাবিত করতে, এমনকি সামাজিক বা অর্থনৈতিক নানা বিষয়ের খবরাখবর তুলে ধরতে টেলিভিশন যে অভূতপূর্ব অবদান তা অনুধাবন করেই, টেলিভিশনের প্রয়োজনীয়তা এবং  উপকারিতা সম্পর্কে মানুষকে আরও বেশি সচেতন করে তোলবার জন্যই এমন একটি দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল জাতিসংঘ।

।।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *