রামনারায়ণ তর্করত্ন ছিলেন একজন বাঙালি নাট্যকার।তিনি ১৮২২ সালের ২৬শে ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ৪র্থ পরগনা জেলার হরিণাভি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম মৌলিক নাট্যকার ও হরিনাভি বঙ্গনাট্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গ্রামে শৈশবের শিক্ষা শেষ করার পর কলকাতার সংস্কৃত কলেজে দশ বছর ব্যাকরণ, কবিতা, স্মৃতি এবং আইনশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে, তিনি হিন্দু মেট্রোপলিটন কলেজে দুই বছর অধ্যক্ষ পণ্ডিত হিসাবে কাজ করার পর প্রায় ২৭ বছর ধরে সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৮৮২ সালে এই কলেজ থেকে অবসর গ্রহণ করে, তিনি নিজগ্রাম হরিণাভীতে একটি চতুষ্পাঠী খোলেন এবং বাকি জীবন শিক্ষকতায় কাটিয়ে দেন। রামনারায়ণের পিতা রামধন শিরোমণি ছিলেন সেই সময়ের একজন বিখ্যাত পণ্ডিত। তাঁর পিতামহ প্রাণকৃষ্ণ বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।
বাংলা মৌলিক নাটক রচয়িতা হিসেবেই রামনারায়ণের মুখ্য পরিচয়। বাংলা ভাষায় প্রথম বিধিবদ্ধ নাটক রচনার জন্য তিনি ‘নাটুকে রামনারায়ণ’ নামে পরিচিত ছিলেন। কুলীনকুলসবর্বস্ব (১৮৫৪) তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ঠ নাটক। এতে হিন্দুসমাজে বহুবিবাহ প্রথার কুফল সম্পর্কে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়। তাঁর অধিকাংশ নাটক ও প্রহসন বেলগাছিয়া রঙ্গমঞ্চ, কলকাতার অভিজাত ধনিকশ্রেণীর নিজস্ব মঞ্চ এবং জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি নাট্যশালায় বহুবার অভিনীত হয়। ‘দি বেঙ্গল ফিলহার্মোনিক আকাদেমি’ থেকে তিনি ‘কাব্যোপাধ্যায়’ উপাধি লাভ করেন।
তাঁর রচিত নাটক সমূহ—
অভিজ্ঞান শকুন্তল (১৮৬০), সম্বন্ধ সমাধি (১৮৬৭), কুলীন-কুল-সর্বস্ব (১৮৫৪), যেমন কর্ম তেমন ফল (১৮৭২), নব নাটক (১৮৬৬), চক্ষুদান (১৮৬৯), উভয়সঙ্কট (১৮৬৯), বেণী সংহার’ (১৮৫৬), কংসবধ (১৮৭৫), পতিব্রতোপাখ্যান (১৮৫৩), রত্নাবলী (১৮৫৮), রুক্মিণী হরণ (১৮৭১), মালতী মাধব(১৮৬৭), স্বপ্নধন (১৮৩৩), ধর্মবিজয়(১৮৭৫)।
১৮৮৬ সালের ১৯ জানুয়ারি স্বগ্রামে তাঁর মৃত্যু হয়।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।