বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার এবং কবি। তিনি বনফুল ছদ্মনামেই বেশি পরিচিত। তিনি ১৯ জুলাই ১৮৯৯ সালে অবিভক্ত ভারতের বিহার রাজ্যের মনিহারিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদি নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শিয়াখালা গ্রাম। তাদের পরিবার “কাঁটাবুনে মুখুজ্জী” নামে পরিচিত ছিল। তিনি মূলত পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের পিতার নাম সত্যচরণ মুখোপাধ্যায় এবং মাতার নাম মৃণালিনী দেবী। তার বাবা একজন ডাক্তার এবং মা ছিলেন একজন গৃহিণী। তাদের আদি নিবাস শিয়াখালা হলেও বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বর্তমান বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মনিহারি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় ছোট থেকেই লেখালেখি শুরু করেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে নিজের নাম আড়াল করতে তিনি ‘বনফুল’ ছদ্মনাম অবলম্বন করেন। ১৯১৫ সালে সাহেবগঞ্জ স্কুলে অধ্যয়নকালে মালঞ্চ পত্রিকায় একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তাঁর সাহিত্যজীবন শুরু হয়। লেখক হিসেবে কবি বনফুল এক হাজারেরও বেশি কবিতা, ৫৮৬ টি ছোটগল্প, ৬০ টি উপন্যাস, ৫ টি নাটক, জীবনী এবং অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর রচনাবলীসমগ্র ২২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।
কাব্যগ্রন্থ———
বনফুলের কবিতা, ব্যঙ্গ কবিতা, অঙ্গারপণী, চতুর্দশী, করকমলেষু।
উপন্যাস——–
ভুবন সোম-১৯৫৭, মহারাণী-১৯৫৮, অগ্নীশ্বর-১৯৫৯, মানসপুর-১৯৬৬, এরাও আছে-১৯৭২, তৃণখণ্ড- ১৯৩৫, বৈতরণীর তীরে-১৯৩৬, নিরঞ্জনা-১৯৫৫, নবীন দত্ত-১৯৭৪, হরিশ্চন্দ্র-১৯৭৯, কিছুক্ষণ-১৯৩৭, সে ও আমি-১৯৪২, সপ্তর্ষি-১৯৪৫, উদয় অস্ত-১৯৭৪, গন্ধরাজ, পীতাম্বরের পুনর্জন্ম-১৯৬৩, নঞ তৎপুরুষ, কৃষ্ণপক্ষ, সন্ধিপূজা, হাটেবাজারে, কন্যাসু, অধিকলাল, গোপালদেবের স্বপ্ন, স্বপ্নসম্ভব, কষ্টিপাথর, প্রচ্ছন্ন মহিমা, দুই পথিক, রাত্রি, পিতামহ, পক্ষীমিথুন, তীর্থের কাক, রৌরব, জলতরঙ্গ, রূপকথা এবং তারপর, প্রথম গরল, রঙ্গতুরঙ্গ, আশাবারি, ঌ, সাত সমুদ্র তেরো নদী, আকাশবাসী, তুমি, অসংলগ্ন, সীমারেখা, ত্রিবর্ণ, অলংকারপুরী, জঙ্গম, অগ্নি, দ্বৈরথ, মৃগয়া, নির্মোক, ভীমপলশ্রী, পঞ্চপর্ব, লক্ষ্মীর আগমন, ডানা, হাটে বাজারে, মানদন্ড, নবদিগন্ত, কষ্টিপাথর, স্থাবর।
ছোট গল্প সঙ্কলন——-
বনফুলের গল্প, বনফুলের আরো গল্প, বাহুল্য, বিন্দু বিসর্গ, অনুগামিনী, বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্প, মানুষের মন, বনফুলের গল্প সংগ্রহ – ১, বনফুলের গল্প সংগ্রহ – ২।
নাটক——–
বনফুল ছিলেন জীবনী-নাটকের পথিকৃৎ।
শ্রীমধুসূদন, বিদ্যাসাগর।
সম্মাননা——
তার সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি পদ্মভূষণ (১৯৭৫) উপাধি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি শরৎস্মৃতি পুরস্কার (১৯৫১), রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৬২), বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯৬৭)পান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিলিট উপাধি প্রদান করে ১৯৭৩ সালে।
মৃত্যু—–
কলকাতায়, ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ তিনি প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।