Categories
প্রবন্ধ

হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতের শিল্পী জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ (৮ মে ১৯০৯ – ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭; যিনি ‘গুরু’ নামে পরিচিত) হলেন একজন হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতের (ফারুকাবাদ ঘরানার) বাদ্যযন্ত্র শিল্পী। তিনি হারমোনিয়াম এবং তবলা বাদক ছাড়াও একজন সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন—–

 

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, কলকাতার এক সংগীত প্রিয় হিন্দু পরিবারে জন্ম। তিনি দ্বারকানাথ ঘোষের (১৮৪৭–-১৯২৮) নাতি, যিনি ১৮৭৫ সালে দ্বারকিন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ভারতের তথা পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় “দ্বারকিন হারমোনিয়াম” আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক করেন।  তার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ছিল (তিনি ফুটবল, হকি, পোলো এবং বিলিয়ার্ড খেলতেন)। তিনি ছবি আঁকার অনুশীলনও করেছিলেন, তবে একবার এক ফুটবলের ম্যাচে, তার চোখে আঘাত লাগে এবং জখমের কারণে তাঁকে সব কিছু বন্ধ করতে হয়েছিল।
ফলে পরবর্তীকালে, তিনি সংগীতের দিকে ঝুঁকলেন। তিনি গিরিজা শঙ্কর, মোহাম্মদ সাগির খান এবং মোহাম্মদ দবির খানের কাছে প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন। তিনি ফারুকাবাদ ঘরানার ওস্তাদ মাসিত খানের কাছ থেকে তবলার পাঠ গ্রহণ করেন এবং তার প্রবীণ শিষ্য হন এবং পরে পাঞ্জাব ঘরানার ওস্তাদ ফিরোজ খান থেকে তালিম নেন।

 

সঙ্গীত জীবন—–

 

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ সংগীত প্রযোজক হিসাবে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ১৫ বছর ধরে কাজ করেছিলেন। তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত, আধুনিক, অর্কেস্ট্রাল, করাল এবং পার্কাসন নানা বিষয়ের শৈলীর ওপর লিখেছিলেন।
তিনি সৌরভ একাডেমি অফ মিউযিক এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘সংগীত গবেষণা একাডেমি’র সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি অনেক বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য সংগীত করেছেন, যেমন যদুভট্ট, অন্ধের আলো এবং রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত (১৯৫৮) উল্লেখযোগ্য তার কিছু সৃষ্টি। তিনি বিভিন্ন শিল্পীর দ্বারা গাওয়া বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গ্রামোফোন রেকর্ডে সংগীত রচনা ও পরিচালনা করেছেন। দ্য ড্রামস অফ ইন্ডিয়া এবং হারমোনিয়াম এবং বেহালা দিয়ে পণ্ডিত ভি.জি. যোগের সাথে একটি যুগলবন্দি তাকে খুব জনপ্রিয়তা দিয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তার একটি রচনা ‘চতুরং’ নামে পরিচিত – তাতে তবলা, পাখোয়াজ, কাঠক এবং তারানা ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি শিষ্যদের তিনি অনেক রাত অবধি অনুশীলন করবার জন্য তার সাথে থাকার নির্দেশ দিতেন এবং বলা হত যে তিনি যদি কোন ত্রুটি শুনতে পেতেন তা তিনি তখনই সংশোধন করে দিতেন।
তিনি কানাডার জাতীয় চলচ্চিত্র বোর্ডের জন্য ইশু প্যাটেল পরিচালিত একাডেমি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত অ্যানিমেটেড সংক্ষিপ্ত বিড গেমের জন্য সংগীত পরিচালনা করেছিলেন। তিনি কলকাতার বউবাজারের ২৫ নম্বর ডিক্সন লেনে তাঁর বাসা ছিল এবং সেখানে সংগীতজ্ঞরা সে স্থানীয় বা কলকাতা শহরের যারা আসতেন সবার অবাধ যাতায়াত ছিল। তাঁর বাসস্থান এক প্রকার সংগীত এবং আবৃত্তির চর্চার স্থান ছিল, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১৯৪৪ সালে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খানের দ্বারা পরিবেশিত রাগ “ছায়ানট”।

 

১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে তিনি প্রয়াত হন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *