নিশিকান্ত রায়চৌধুরী ছিলেন একজন বাঙালি কবি। কবি ১৯০৯ সালের ২৪ মার্চ বর্তমান বাংলাদেশের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বরিশাল জেলার উজিরপুর গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা বিজয়শঙ্কর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন আইনজীবী এবং মা সৌদামিনী দেবী। তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার শিবটি গ্রামে।
নিশিকান্তের জীবনের প্রথম পর্ব কেটেছে শান্তিনিকেতনে, দ্বিতীয় পর্যায় পন্ডিচেরিতে শ্রী অরবিন্দের আশ্রমে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সান্নিধ্যে সিউড়ির বেণীমাধব ইনস্টিটিউশন এবং শান্তিনিকেতনের কলাভবনে কবি প্রথম শিক্ষা লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ‘চাঁদকবি’ বলে ডাকেন। তাঁর পিতামহ কবি সুধাকান্ত রায় চৌধুরী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সচিব। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নন্দলাল বসুর কাছ থেকে শিল্প শিক্ষা লাভ করেন। অবনীন্দ্রনাথ তাঁকে ডাকতেন ‘ মাই আর্টিস্ট’। অকৃতদার নিশিকান্ত ১৯৩৪ সালে পন্ডিচেরির শ্রী অরবিন্দ আশ্রমে চলে আসেন এবং সেখানে বসবাস করতেন।
তিনি শ্রী অরবিন্দের আশ্রমে আধ্যাত্মিক সাধনার পাশাপাশি কাব্যচর্চা করতেন। ঋষি অরবিন্দ নিশিকান্ত ও তাঁর কবিতার প্রতি খুব পছন্দ করতেন। অরবিন্দের দৃষ্টিতে, নিশিকান্ত ছিলেন তাঁর “প্রেরণার ব্রাহ্মণ পুত্র”। ১৯৩৯ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলকানন্দা’ প্রকাশিত হয়। সংস্কৃত শব্দের ব্যবহার, বর্ণাঢ্যতা ও চিত্রকল্প তাঁর কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল –
ভোরের পাখি, দিনের সূর্য, বৈজয়ন্তী, বন্দে মাতরম, নবদীপন, দিগন্ত, পঁচিশ প্রদীপ। তার কবিতা ইংরাজীতে অনূদিত হয়ে “ড্রিম ক্যাডেন্স” নামে প্রকাশিত হয়। তাঁর কয়েকটি কবিতা ইংরাজীতে অনুবাদ করেন শ্রীঅরবিন্দ নিজেও।
কবি ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২০ শে মে মৃত্যুবরণ করেন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।