প্রফুল্ল কুমার সরকার বাংলার একজন বিখ্যাত সাংবাদিক ছিলেন। তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪১ সাল থেকে তিনি আজন্ম পত্রিকার সম্পাদক হন।
প্রফুল্ল কুমার সরকার ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে অবিভক্ত বাংলার কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীতে জন্মগ্রহণ করেন, বর্তমান বাংলাদেশের। বাবা প্রসন্নকুমার সরকার।
পাবনা জেলা স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। তারপর কলকাতার জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন এবং বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজে। এই কলেজ থেকে ১৯০৫ সালে বাংলায় প্রথম স্থান অধিকার করে বিএ পাস করে বঙ্কিম পদক লাভ করেন। ১৯০৮ সালে বি.এল.।
আইন পাশ করার পর, তিনি কিছু দিন ওকালতি করেন ফরিদপুর, এখন বাংলাদেশের এবং ডাল্টনগঞ্জ, এখন ঝাড়খণ্ড, বিহারের, এখন মেদিনীনগরে। পরে তিনি ওড়িশার ঢেঙ্কানল রাজপরিবারের একজন শিক্ষক হন এবং ধীরে ধীরে দেওয়ানের পদে উন্নীত হন। এরপর বন্ধু সুরেশ চন্দ্র মজুমদারের আহ্বান ও সহযোগিতায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয়তাবাদী পত্রিকা আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৯২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বাঘা যতীনের জীবনী এবং তার ওপর সম্পাদকীয় মন্তব্য প্রকাশের জন্য তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। ১৯৪১ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি নিয়মিত সাহিত্য অধ্যয়ন করতেন। বক্তৃতা ও প্রবন্ধ সাহিত্যে তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য।
রচিত গ্রন্থগুলি হল – ভ্রষ্টলগ্ন, অনাগত, বালির বাঁধ, ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু, জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ, শ্রীগৌরাঙ্গ প্রভৃতি।
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তার স্ত্রী নির্ঝরিণী দেবী (১৮৯৪ – ১৯৬৩) ছিলেন একজন লেখিকা ও কংগ্রেসকর্মী। তিনিও স্বদেশী আন্দোলনে অংশ নিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৯৩০ এবং ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে। এদের সুযোগ্য পুত্র অশোক কুমার সরকার (১৯১২ – ১৯৮৩) ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর প্রধান হন।
প্রখ্যাত বাঙালি সাংবাদিক-সম্পাদক প্রফুল্ল কুমার সরকার ১৯৪৪ সালের ১৩ এপ্রিল কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর কলকাতা শহরের আনন্দবাজার পত্রিকার অফিস সংলগ্ন রাস্তাটির নামকরণ করা হয় প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।