Categories
প্রবন্ধ

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অতুল কৃষ্ণ ঘোষের অবিস্মরণীয় অবদান।।।

অতুল কৃষ্ণ ঘোষ ছিলেন ভারতীয় বিপ্লবী আন্দোলনের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, যার জীবন এবং অবদান ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ১৮৯০ সালে কুষ্টিয়ার ইতমামপুর-যাদুবয়রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অংশ, ঘোষ প্রভা সমিতির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং যুগান্তর পার্টির নেতা ছিলেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হিন্দু জার্মান আর্মামেন্টস ষড়যন্ত্রে তার অংশগ্রহণ তাকে ভারতে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী শক্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছিল।
ছোটবেলা থেকেই ঘোষ স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯০৬ সালে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের অনুসারী হয়েছিলেন, সশস্ত্র যুদ্ধ এবং আত্মরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা শিখেছিলেন, যা পরে তার বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সহায়ক হয়ে ওঠে। এই উদ্দেশ্যে ঘোষের প্রতিশ্রুতি তাকে মুখোপাধ্যায়ের সাথে পাথুরিয়াঘাটা ভৈয়াম সমিতি গঠন করতে পরিচালিত করে, এটিকে ভারতে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের একটি কেন্দ্রীয় কেন্দ্রে পরিণত করে।
ঘোষের উল্লেখযোগ্য কর্মগুলির মধ্যে একটি হল ১৯১০ সালে ডেপুটি কমিশনার শামসুল আলমের উপর হত্যা প্রচেষ্টার সাথে জড়িত ছিল, এটি একটি পদক্ষেপ যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের প্রতি তার উত্সর্গ প্রদর্শন করে। রাসবিহারী বসুর মতো বিশিষ্ট বিপ্লবী নেতাদের সাথে তার সহযোগিতা দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্রোহের প্রজ্বলনের জন্য তার প্রচেষ্টাকে আরও প্রসারিত করে।
ঘোষের বিপ্লবী পথটি ১৯১৪ সালের কোমাগাটা মারুর ঘটনার সাথেও ছেদ করেছিল, যেখানে তিনি পাঞ্জাবি যাত্রীদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ডাকাতি এবং ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার সুরেশ মুখার্জির হত্যা সহ উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনে তার জড়িত থাকার কারণে তার অটল প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
ব্রিটিশ সরকারের তীব্র দমন-পীড়ন সত্ত্বেও, ঘোষ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত তার কার্যক্রম চালিয়ে যান। যাইহোক, তার পরামর্শদাতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে, যার ফলে তিনি শেষ পর্যন্ত সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসেন। ১৯২৬ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, ঘোষ তার ব্যবসা এবং আধ্যাত্মিক সাধনার দিকে মনোযোগ দিয়ে বিপ্লবী আন্দোলন থেকে সরে যেতে বেছে নেন।
তার পরবর্তী বছরগুলিতে, ঘোষ মুখোপাধ্যায়ের প্রভাবের প্রতিফলন ঘটান, স্বাধীনতা সংগ্রামে তার নিজস্ব শক্তি এবং উত্সর্গকে তার পরামর্শদাতার অনুপ্রেরণাদায়ী নেতৃত্ব এবং দেশপ্রেমের জন্য দায়ী করেন। ঔপনিবেশিক নিপীড়নের মুখে স্থিতিস্থাপকতা এবং সংকল্পের উত্তরাধিকার রেখে অতুল কৃষ্ণ ঘোষ ১৯৬৬ সালের ৪ মে মারা যান। তাঁর জীবনের কাজ ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা ব্যক্তিদের সাহস এবং চেতনার প্রমাণ হিসাবে রয়ে গেছে।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *