Categories
গল্প প্রবন্ধ

মূল্যবান মনুষ্য জীবন ও গণেশ পূজা : স্বামী আত্মভোলানন্দ (পরিব্রাজক)।

ওঁ নমঃ শ্রী ভগবতে প্রণবায়….!
ওঁ গণ গণপতয়ে নমঃ,…

আমাদের সুন্দর মূল্যবান মনুষ্য জীবনে উৎসবমুখর ভারতবর্ষে পূণ্যভূমি পবিত্রভূমি এই তপভূমিতে জগৎ জননী মায়ের আসার আগেই শ্রী গণপতি বাপ্পা আসেন। সত্য সনাতন ধর্মে যে কোনো শুভকাজের শুরুতে তিনি পূজিত হন এবং সফলতার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হন। গণেশ বা গজানন হলেন শিব ও পার্বতীর পুত্র। আগামী শুক্লাচতুর্থী বা গণেশচতুর্থী তিথিতে গণপতি বাপ্পার আগমন ঘটবে সেই *গণেশ পূজা* চলবে দশদিন অনন্ত চতুর্দশী পর্যন্ত। গণেশ বিঘ্ননাশকারী, বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা, শিল্প ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক, এবং সৃষ্টি ও সৌভাগ্যের প্রতীক। সত্য সনাতন ধর্মে যে কোনো শুভকাজের শুরুতে তিনি পূজিত হন এবং সফলতার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হন।

“গণেশ” নামটি গণ ও ঈশ শব্দ দুটির সমষ্টি। গণ শব্দের অর্থ গোষ্ঠী বা সমষ্টি এবং ঈশ শব্দের অর্থ ঈশ্বর বা প্রভু। ভগবান গণেশ এই মহাবিশ্বে শৃঙ্খলা আনেন এবং কোনও নতুন প্রচেষ্টা, বৌদ্ধিক যাত্রা বা ব্যবসায়িক উদ্যোগ শুরু করার আগে সকলেই তাঁর উপাসনা করেন। তিনি সমস্ত বাধা বিঘ্ন দূরকারী ভগবান হিসাবে পরিচিত। গণেশ উৎসব বা গণেশ চতুর্থী ভগবান গণেশের জন্মোৎসব। তিনি বিঘ্ননাশক, জ্ঞান ও সমৃদ্ধির দেবতা, তিনি মর্ত্যে অবতীর্ণ করে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। তিনি গণপতি, বিঘ্নেশ্বর, বিনায়ক, গজপতি, একদন্ত ইত্যাদি নামেও পরিচিত। এই উৎসবের মাধ্যমে গণেশের জন্মকে স্মরণ করা হয়। এটি একটি আনন্দময় ও পারিবারিক সামাজিক, সার্বজনীন সামাজিক অনুষ্ঠান। মন্ডপে গণেশের মূর্তি স্থাপন করে পূজা করা হয় এবং বিভিন্ন ধরনের মোদক ও মিষ্টি নিবেদন করা হয়।

পৌরাণিক তথ্য অনুযায়ী দেবী পার্বতী যখন স্নান করতে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি নিজের শরীর থেকে ঘর্ষণের মাধ্যমে মাটি ও আবর্জনার মিশ্রণ থেকে গণেশকে সৃষ্টি করেন এবং তাকে নিজের বাড়ির পাহারাদার হিসেবে নিযুক্ত করেন। গণেশ বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিলেন, যখন তার পিতা শিব ঘরে ফিরতে চাইলেন গণেশ তাকে বাধা দেন। ফলে তাদের মধ্যে যুদ্ধ হয় এবং শিব গণেশকে এমনভাবে আঘাত করেন যে তার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ঘটনার পর দেবী পার্বতী অত্যন্ত ব্যথিত হয়ে পড়েন এবং শিবকে গণেশকে পুনরুজ্জীবিত করতে বলেন। তখন শিব তার প্রথম যে প্রাণীটিকে দেখতে পান, তার মাথা কেটে গণেশের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন। আর সেই প্রাণীটি ছিল একটি হাতি। তাই তিনি গজানন।

ভারতবর্ষে ১৮৯৩ সালে ব্যাপকভাবে গণেশ উৎসব বা গণপতি উৎসবের প্রচলন করেন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী লোকমান্য তিলক বা বাল গঙ্গাধর তিলক। তিনি এই উৎসবকে জনগণের মধ্যে ঐক্যের প্রচার এবং জাতীয়তাবাদের ধারণা কে উজ্জীবিত করার জন্য শুভারম্ভ করেন। যা পরবর্তীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া (জাভা এবং বালি), সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, বাংলাদেশ, ফিজি, গায়ানা, মরিশাস এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগো সহ বৃহৎ জাতিগত ভারতীয় জনসংখ্যার দেশগুলিতে গণেশ পূজার প্রথা বিস্তার লাভ করেছে।

ভাদ্র মাসের শুক্ল চতুর্থীতে শুরু হয় এবং উৎসবের সময়কালে গণেশের মূর্তি স্থাপন, পূজা ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে আনন্দ ও ভক্তির প্রকাশ ঘটে। উৎসবের মূল অনুষ্ঠানগুলো মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের মতো রাজ্যগুলিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হয়, যেখানে এই উৎসবকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়। এটি শুধু একটি ধর্মীয় উৎসবই নয়, এটি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, জাতীয় ঐক্য এবং ভক্তির একটি জীবন্ত উদাহরণও বটে। গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও এই উৎসব অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হয়। এই বৎসর ২৭শে আগস্ট বুধবার গণেশচতুর্থীর দিন উৎসব শুরু হবে। এবং ৬ ই সেপ্টেম্বর শনিবার অনন্ত চতুর্দশীর দিন উৎসবের সমাপ্তি হবে। গণপতি বাপ্পা সকল বাধা বিঘ্ন নাশ করে সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করুন। সুখ সমৃদ্ধি সৌভাগ্য বৃদ্ধি করুন এই প্রার্থনা করি। জগৎগুরু ভগবান স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের শুভ ও মঙ্গলময় আশীর্বাদ সকলের শ্রী বর্ষিত হোক।
*গণপতির প্রতিষ্ঠা মুহুর্ত:-*
২৭শে আগস্ট, ২০২৫, বুধবার গণেশ চতুর্থীর শুভ মুহূর্ত হলো সকাল ১১:০৬ থেকে দুপুর ১:৪০ পর্যন্ত, যা গণপতিকে বাড়িতে আনার এবং স্থাপনার জন্য সবচেয়ে শুভ সময় হিসাবে বিবেচিত হয়। এই সময়ে, বিশেষত দুপুরবেলা, সিদ্ধিদাতা গণেশের জন্ম হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়, তাই এই সময়টি ‘মধ্যাহ্ন গণেশ পূজা’র জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসলে, বুধবার সকালে সূর্যোদয় থেকে পুরো দিনটি শুভ। সুবিধামতো গণপতির প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। সর্বাধিক শুভ মুহুর্ত- অভিজিৎ মুহুর্ত ২৭শে আগস্ট ১১.৪৫ থেকে ১২.৫৫ পর্যন্ত হবে। এই মুহুর্তে গণপতি মূর্তি স্থাপন সবচেয়ে শুভ হবে। এর পাশাপাশি, ২৭শে আগস্ট দুপুর ১.৩৯ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬.০৫ মিনিট পর্যন্ত মুহুর্তটিও শুভ।
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ।
স্বামী আত্মভোলানন্দ *পরিব্রাজক*

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় এক কিংবদন্তি অভিনেতা, যতদিন বাংলা সিনেমা থাকবে ততদিন তিনি বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।।।।।

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ভানু ব্যানার্জী নামেও পরিচিত (জন্ম হিসেবে সম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়; ২৬ আগস্ট ১৯২০ – ৪ মার্চ ১৯৮৩), ছিলেন একজন ভারতীয় অভিনেতা, যিনি বাংলা সিনেমায় তাঁর কাজের জন্য পরিচিত।  তিনি ৩০০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন এবং প্রায়শই রেডিওতে অভিনয় করেছেন।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯২০ সালে ২৬ শে আগস্ট মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তাঁর পিতার নাম জিতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতা সুনীতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলার ঢাকা শহরে একটি কুলীন ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  তার পৈতৃক নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের বিক্রমপুরের পাঁচগাঁও নামক একটি গ্রামে।
ভানু ব্যানার্জী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের সাথে তার মাতৃত্বের মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন।  অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর নানার মামাতো ভাই।  তিনি কাজী পাগলা এ.টি. ইনস্টিটিউট, লৌহজং, পোগোজ স্কুল এবং ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয় এ এবং তার বিএ-এর জন্য জগন্নাথ কলেজে অধ্যয়ন করেন।  এরপর ১৯৫০-এর দশকে তিনি কলকাতায় চলে আসেন।  বন্দ্যোপাধ্যায় তার প্রাথমিক বছরগুলিতে লৌহ ও ইস্পাত নিয়ন্ত্রণ বোর্ডে কাজ করেছিলেন।
বন্দ্যোপাধ্যায় নীলিমা মুখোপাধ্যায় নামে একজন প্লেব্যাক গায়িকাকে বিয়ে করেছিলেন।  তাদের তিনটি সন্তান ছিল – বাসবী ঘটক (নি বন্দ্যোপাধ্যায়), গৌতম এবং পিনাকী।  এর আগে পরিবার জুবিলি পার্ক, টালিগঞ্জে থাকতেন।  পরে ১৯৬০ সালে 42A, চারু এভিনিউ, রবীন্দ্র সরোবরে স্থানান্তরিত হয়।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকায় একজন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হিসেবে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন।  তিনি অফিস পার্টিতে পারফর্ম করেন এবং তারপরে বড় জায়গায় চলে যান।  ১৯৪৩ সালে, তিনি তার প্রথম বড় কমিক গ্রামোফোন রেকর্ড ধাকার গাদোয়ানে প্রকাশ করেন।  এর সাফল্য তাকে প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় একটি নতুন রেকর্ড প্রকাশ করতে প্ররোচিত করে।  তিনি দেবী মুখার্জি এবং সুমিত্রা দেবী অভিনীত বাংলা ছবি অভিজোগ (১৯৪৭) দিয়ে তার বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন।  বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুগান্তকারী চলচ্চিত্রের ভূমিকা ছিল নির্মল দে-এর বসু পরিবার (১৯৫২) যেখানে তিনি একজন বাঙালি ব্যবসায়ীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।  পরের বছর শেরে চুয়াত্তর-এ কেদার চরিত্রে অভিনয় তাকে খ্যাতি অর্জন করে।  ছবিতে তার উদ্ধৃতি মাশিমা, মালপোয়া খামু।  (আন্টি, আমি মালপোয়া খেতে চাই) একটি জনপ্রিয় ক্যাচফ্রেজ হয়ে উঠেছে।  তিনি ৩০০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন যেমন ভরান্টিবিলাশ এবং পাশের বাড়ি।  তার বেশিরভাগ চলচ্চিত্রে তিনি হাস্যরসাত্মক চরিত্রে অভিনয় করেছেন যেখানে তিনি কমিক প্রভাবের জন্য বাংলা উচ্চারণ এবং রীতিনীতিকে অতিরঞ্জিত করেছেন।  ভানু পেলো লটারি এবং হাস্যকর গোয়েন্দা গল্প ভানু গোয়েন্দা জোহর অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো অনেক চলচ্চিত্রের জন্য তিনি তার সেরা বন্ধু কমেডিয়ান জহর রায়ের সাথে জুটি বেঁধেছিলেন।  সাধারণত, এই জুটির ছবিতে বন্দ্যোপাধ্যায় বাঙ্গাল চরিত্রে অভিনয় করতেন এবং রয় হাস্যকর ঘোটি চরিত্রে অভিনয় করতেন (যদিও বাস্তব জীবনে দুজনেই ছিলেন বাঙালি)।  যদিও প্রধানত একজন কৌতুক অভিনেতা হিসাবে পরিচিত, বন্দ্যোপাধ্যায় গল্প হোলিও সত্তি , আলোর পিপাসা , অমৃতা কুম্ভের সন্ধ্যানে ছবিতে গুরুতর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন;  নির্ধারতো শিল্পীর অনূপস্থিতিতে, এমনকি বাঘিনী (১৯৬৮ ফিল্ম) এবং বিজয়ী সিনেমাতেও নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছেন।  তিনি জামালয়ে জীবনতা মানুষ, মৃতের মর্তে আগোমন, স্বর্গো মর্ত্যো, ব্যক্তিগত সহকারী, মিস প্রিয়ম্বদা এবং আশিতে আশিওনা-এ প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।  পরে তার কর্মজীবনে বন্দ্যোপাধ্যায় মুক্তমঞ্চ নামে তার নিজস্ব যাত্রা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন।  তিনি তার নিজস্ব প্রযোজনায় প্রযোজনা, পরিচালনা এবং অভিনয় করেছেন, দলটির সাথে দেশজুড়ে ভ্রমণ করেছেন।
চলচ্চিত্রের তালিকা—
অভয়া ও শ্রীকান্ত, আলোর পিপাসা, এতটুকু বাসা, গুলমোহর, তাপসী, দেবতার দ্বীপ, দোলনা, মহালংগ, পতি সংশোধিনি স্বামীত্ব, মুখুজ্যে পরিবার, রাজকন্যা, কাল তুমি আলেয়া, গল্প হলেও সত্যি, জোরাদিঘির চৌধুরী পরিবার, মায়াবিনী লেন, শেষ তিন দিন, আশিতে আসিও না, অন্ঠনি ফিরিঙ্গি, খেয়া, নায়িকা সংবাদ, প্রস্থের সাক্ষর, মিস প্রিয়াংবাদ, হঠাৎ দেখা, হাটে বাজারে, আপনজন, গড় নাসিমপুর, চৌরাঞ্জ, পথে দেখা হলো, বাঘিনী, দাদু, মা ও মেয়ে, সুখসারি, শাবারমাটি, আলেয়ার আলো, প্রথম কদম ফুল, জাগরণ, অভিযোগ, সর্বহারা, মন্ত্রমুগ্ধ, যা হয় না, ১৯৫০-কৃষাণ, তথাপি, দিগভ্রান্ত, দ্বয়রাথ, মানদণ্ড,  বরযাত্রী, পলাতক, রূপান্তর, সেতু, আলাদিন ও আশ্চর্য প্রদীপ, কাপালকুন্ডলা, জবানবন্দি, বসু পরিবার, দারপাচুর্না, পাত্রী চাই, পাশের বাড়ি, প্রার্থনা, বিন্দুর ছেলে, মহিষাসুর বধ, রাত্রির তপস্যা১৯৫৩সাড়ে চুয়াত্তার, আদর্শ মানুষ, কাজরি, কেরানির জীবন, নতুন ইহুদি, পথনির্দেশ, বন হংসী, বাস্তব, বৌঠাকুরানীর হাট, বৌদির বোন, মহারাজা নন্দকুমার, রাখি, রামি চণ্ডীদাস, লাখ টাকা, শ্বশুরবাড়ি, হরিলক্ষী, এটম বোম্ব, ওরা থাকে অধারে, কল্যাণী, গৃহপ্রবেশ, ছেলে কার, জয়দেব, জাগৃহি, দুখীর ঈমান, নীল শাড়ি, বলয়গ্রাস, বারবেলা, বিক্রম উর্বশী, ভঙ্গাগাড়া, মানি আর মানিক, মানের ময়ূর, মরণের পরে, লেডিস সিট, সতীর দেহত্যাগ, সদানান্দের মেলা, অর্ধাঙ্গিনী, বন্দিশ (হিন্দি), এক গাঁও কি কাহানি (হিন্দি), অপরাধী, আত্মদর্শন, চাটুজ্যে বারুজ্য, ছোট্ট বউ, জয় মা কালি বোর্ডিং, জ্যোতিষী, দস্যূ মোহন, দূর্লভ জনম, দেবী মালিনী, বির হামবির, ব্রতচারিনী, ভালোবাসা, রানী রাসমণি, সাজঘর, সাঁঝের প্রদীপ, অসমাপ্তি, আমার বউ, একটি রাত, গোবিন্দ দাস, টনসিল, টাকা আনা পাই, দানের মর্যাদা, মহানিশা, বাহাদুর মশাই, মামলার ফল, লক্ষহীরা, শুভরাত্রি, সাবধান, সাহেব বিবি গোলাম, সূর্যমুখী, আঁধারে আলো, একতারা, ওগো শুনছো, কাঁচামিঠা, খেলা ভাঙার খেলা, ঘুম, জীবন তৃষ্ণা, নতুন প্রভাত, নীলাচলে মহাপ্রভু, বাসন্তবাহার, বড়মা, মাধুমালতি, শেষে পরিচয়, শ্রীমতির সংসার, কলামাটি, জোনাকির আলো, ডাক্তারবাবু, নুপুর, ভানু পেলো লটারি, মন্ময়ী গার্লস স্কুল, জমালয়ে জীবন্ত মানুষ, লোহা কপাট, সূর্যতারণ, স্বর্গ মর্ত, নির্দ্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতি, পার্সোনাল এসিস্টেন্ট, পুস্পধনু, মৃতের মরতে আগমন, শোনার হরিণ, শহরের ইতিকথা, শেষে পর্যন্ত, শখের চোর, সুরের পিয়াসী, হসপিটাল, সংসার সীমান্তে, স্বয়ংসিদ্ধ, নন্দিতা, স্বীকারোক্তি, হারমোনিয়াম, অসাধারণ, এক যে ছিল দেশ, ছোট্ট নায়ক, রামের সুমতি, বন্দি, দেবদাস, দর্পচুর্না, প্রিয়তমা, ভাগ্যচক্র, মাতৃভক্ত রামপ্রসাদ, সন্ধি, কোপালকুন্ডলা, সুবর্ণলতা, প্রতিশোধ, প্রেয়সী, বিজয়িনী, শহর থেকে দূরে, সারগাঁদাপি গাড়িয়াশী, শোরগোল,কাঞ্চনমূল্য, কঠিন মায়া, কানামাছি, বিষকন্যা, রায়বাহাদুর, মিঃ এন্ড মিসেস চৌধুরী, শায়ম্বর, অগ্নিশিখা, অটল জলের আহবান, অভিসারিক, দাদাঠাকুর, বধূ, মায়ার সংসার, আকাশ প্রদীপ, ছায়াসুর্য, দুই নারী, দুই বাড়ি, বর্ণচোরা, ভ্রান্তিবিলাশ, প্রেয়সী, সাতভাই, হাই হিল, হাসি শুধু হাসি নয়, জীবন কাহিনী, ডিপ নেভে নাই, বিংশতি জনাই, রাজকুমারী, সাগিনা মহাত, এখানে পিঞ্জর, প্রথম বসন্ত, ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট, মাল্যদান, স্ত্রী, নকল সোনা, নিশিকন্য, বিন্দুর ছেলে, রোদ্দুর ছায়া, সাগিনা, প্রান্তরেখা, সঙ্গিনী, কবি, নিশি মৃগায়, প্রিয় বান্ধবী।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৮৩ সালের ৪ঠা মার্চ পরলোকগমন করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

আজ নারী সমতা দিবস, জানুন তার ইতিহাস এবং কেন পালিত হয়ে আসছে এই দিনটি।।।।।।

 

আজকের যুগে নারীরা অনেক এগিয়ে। সমগ্র বিশ্ব দেখেছে নারীরা সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম। কোনও কাজেই আজ নারীরা পুরুষদের থেকে পিছিয়ে নেই। এখন বিশ্বব্যাপী এখন অনেক সংস্থা গড়ে উঠেছে, যারা নারীদের প্রতি নিপীড়ন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে, সমাজে বিদ্যমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নারীদের সমান সুযোগ প্রদান করে চলেছে। পুরুষের সঙ্গে সমান তালে পা মিলিয়ে এগিয়ে ছলছে নারীরা। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের অগ্রগতি অনস্বীকার্য। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা তাদের যোগ্যতার ছাপ ফেলে যাচ্ছে। খেলা ধুলা, শিক্ষা দীক্ষা থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা সর্বক্ষেত্রে তারা নিজেদের যোগ্যতার সাক্ষর রেখে যাচ্ছে। পুরুষের থেকে তারাও যে কোনো অংশে কম নয় তা বুঝিয়ে দিচ্ছে তাদের সাফল্য দিয়ে। ফলস্ববরূপ তাদের এই জয়। সেদিনের আধিকার লড়াই এর সাফল্য।
আমেরিকান কংগ্রেস এবং আমেরিকার ৩৭তম রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৩ সালের  ২৬ অগস্ট দিনটিকে ‘নারী সমতা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আমেরিকায় এই দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নারী সমতা দিবস পালিত হয়ে আসছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ১৯২০ সালের ঊনবিংশ সংশোধনী (সংশোধন XIX) গৃহীত হওয়ার স্মরণে ২৬শে আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীর সমতা দিবস উদযাপন করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং ফেডারেল সরকারকে নাগরিকদের ভোটের অধিকার অস্বীকার করা থেকে নিষিদ্ধ করে।  লিঙ্গ ভিত্তিতে রাষ্ট্র.  এটি প্রথম ১৯৭১ সালে পালিত হয়েছিল, ১৯৭৩ সালে কংগ্রেস দ্বারা মনোনীত হয়েছিল, এবং প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি দ্বারা ঘোষণা করা হয়।মহিলাদের অধিকার নিয়ে ৭২ বছরের কঠোর পরিশ্রম ও প্রচারের পর ১৯২০ সালে সফলতা পায় মহিলারা ৷
ইতিহাস—

যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের আগেই শুরু হয়েছিল নারীদের ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ রাজ্যে কেবল ধনী শ্বেতাঙ্গ পুরুষদেরই ভোটের অধিকার ছিল ১৮৩০-এর দশকের দিকে । প্রথমবার নারী সমতা বা নারী সমানাধিকার নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছিল ১৮৪৮ সালে নিউইয়র্কে Women’s Rights Convention-এ ।  পরবর্তী সময়ে এলিজাবেথ ক্যাডি স্ট্যানটন এর নেতৃত্বে ১৮৯০-এর দশকে, ন্যাশনাল আমেরিকান ওমেন স্যাফারেজ অ্যাসোসিয়েশন শুরু হয়। এই দশক শেষ হওয়ার আগে, আইডাহো এবং ইউটা মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার মিলেছিল। ১৯১০ সালে অন্যান্য পশ্চিমী রাজ্যগুলি মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার দিতে শুরু করে। তবে তখনো বেশ কয়েকটি পূর্ব এবং দক্ষিণী রাজ্যে মহিলাদের ভোটারাধিকারে স্বীকৃতি মেলেনি। এর পর, ১৯২০ সালের ২৬ অগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ১৯তম সংশোধনী গৃহীত হয়, যেখানে মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার পান।
তারিখটি ১৯২০ সালে সেই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল যখন সেক্রেটারি অফ স্টেট বেইনব্রিজ কোলবি আমেরিকান মহিলাদের ভোট দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার দেওয়ার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন।  ১৯৭১ সালে, ১৯৭০ সালের দেশব্যাপী নারীদের সমতার জন্য ধর্মঘট এবং আবার ১৯৭৩ সালে, সমান অধিকার সংশোধনী নিয়ে লড়াই চলতে থাকলে, নিউইয়র্কের কংগ্রেসওম্যান বেলা আবজুগ ২৬শে আগস্টকে নারীর সমতা দিবস হিসেবে মনোনীত করার জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১৯৭২ সালে, রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন ২৬ আগস্ট, ১৯৭২কে “নারী অধিকার দিবস” হিসাবে মনোনীত করেছিল এবং এটি ছিল নারীর সমতা দিবসের প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।  ১৯৭৩ সালে আমেরিকান কংগ্রেস এবং আমেরিকার ৩৭তম রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে ২৬ অগস্ট দিনটিকে ‘নারী সমতা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।  আমেরিকার মহিলাদের প্রথম ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল।  একই দিনে, রাষ্ট্রপতি নিক্সন নারী সমতা দিবসের জন্য ঘোষণা ৪২৩৬ জারি করেছিলেন, যা শুরু হয়েছিল, অংশে: “মহিলাদের ভোটাধিকারের সংগ্রাম, যাইহোক, আমাদের জাতির জীবনে মহিলাদের পূর্ণ এবং সমান অংশগ্রহণের দিকে প্রথম পদক্ষেপ মাত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে,  আমরা আমাদের আইনের মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্যকে আক্রমণ করে এবং মহিলাদের জন্য সমান অর্থনৈতিক সুযোগের জন্য নতুন পথ প্রশস্ত করার মাধ্যমে অন্যান্য বিশাল অগ্রগতি করেছি৷ আজ, আমাদের সমাজের কার্যত প্রতিটি ক্ষেত্রে, মহিলারা আমেরিকান জীবনের গুণমানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে৷ এবং এখনও,  এখনও অনেক কিছু করা বাকি আছে।”
২০২১ সাল পর্যন্ত, রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে প্রতিটি রাষ্ট্রপতি প্রতি বছর ২৬ আগস্টকে নারী সমতা দিবস হিসাবে মনোনীত করে একটি ঘোষণা জারি করেছেন। তাই এই দিনটি মহিলাদের সমান অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়।আমেরিকায় এই দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নারী সমতা দিবস পালিত হয়ে আসছে।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আজ ২৭ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।।।

আজ ২৭ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক)  রাযী দিবস (ইরান)
(খ) স্বাধীনতা দিবস (মলদোভা)।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০৮ – (ক) স্যার ডোনাল্ড জর্জ ব্র্যাডম্যান ,ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট তারকা ।
(খ) লিন্ডন বি.
জনসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬তম রাষ্ট্রপতি।
১৯২৬ – ক্রিস্টেন নিগার্ড, নরওয়েজীয় গণিতবিদ, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা মুঘল ও রাজনীতিবিদ।
১৯৩১ – শ্রী চিন্ময়, বাঙালি মহাত্মা ও হিন্দুধর্মের সংস্কারক, লেখক, শিল্পী, কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ।
১৯৭৪ – মোহাম্মদ ইউসুফ, পাকিস্তানের ক্রিকেটার।
১৮৪৭ – নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী, ভারতে ফুটবল খেলার জনক।
১৭৭০ – গেয়র্গ ভিলহেল্ম হেগল, জার্মান দার্শনিক।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯১৬ – অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রোমানিয়া।
১৯২৮ – প্যারিসে ১৭টি দেশের যুদ্ধ পরিত্যাগ করার ঘোষণা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
১৯৩২ – আমস্টারডামে যুদ্ধবিরোধী শান্তি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৪২ – ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় কংগ্রেসের গোপন বেতার কেন্দ্র কংগ্রেস রেডিও প্রচার শুরু করে।
১৯৫৮ – সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি কুকুরসমেত স্পুটনিক-৩ উৎক্ষেপণ করে।
১৯৬৯ – ইসরায়েলের কমান্ডোরা মিসরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নীল উপত্যকায় মিসরীয় সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে মর্টার হামলা চালায়।
১৯৭১ – লন্ডনে বাংলাদেশ মিশন উদ্বোধন।
১৯৭৫ – বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ওমান।
১৯৮৮ – প্রবল বন্যায় বাংলাদেশে শতাধিক প্রাণহানি ঘটে।
১৯৯১ – (ক)  সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মোলদাভিয়া পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
(খ) – ইউরোপিয়ান কমিউনিটি এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৮১৩ – ড্রেসডেনের যুদ্ধে নেপোলিয়ন অস্ট্রীয়দের পরাজিত করেন।
১৮৭০ – শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম শ্রমজীবী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৮৩ – ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা/জলোচ্ছ্বাসে ৩৬ হাজার প্রাণহানি ঘটে।
১৮৮৯ – প্রথম বারের মত সেলুলয়েড রোল ফিল্ম প্রস্তুত করা হয়।
১৭৮১ – পাল্লিলোরে হায়দার আলী ব্রিটিশ সৈন্যদের সঙ্গে যুুদ্ধে লিপ্ত হন।
১৭৮৯ – ফরাসী জাতীয় পরিষদে বিশ্বখ্যাত মানবাধিকার ঘোষণা।
১২২৭ – মুসলমানদের প্রথম নৌ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৬ – হৃষিকেশ মুখার্জী  হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি পরিচালক।
১৯৬৫ – সুইস স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ লে করবুসিয়ের।
১৯৭৬ – মুকেশ চন্দ মাথুর ,ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত শিল্পী।
১৯৮২ – শ্রী আনন্দময়ী মা ,ভারতের বাঙালি হিন্দু আধ্যাত্মিক সাধিকা ।
১৯৯০ – তপোবিজয় ঘোষ, বিশিষ্ট বাঙালি সাহিত্যিক।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ২৬ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।

আজ ২৬ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) ফুলবাড়ী দিবস।
(খ) নারী সমতা দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯১০ – মাদার তেরেসা, (শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী ও ধর্মপ্রচারক দা মিশনারিজ অব চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাত্রী।)।
১৯২০- ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় (পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা)।
১৯৫১ – এডওয়ার্ড উইটেন, (ফিল্ড্‌স পদক বিজয়ী মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী)।
১৯৮৮ – লার্স স্টিন্ডল, (জার্মান ফুটবল খেলোয়াড়)।
১৯৯০ – মাতেও মুসাচিও, আর্জেন্টিনার ফুটবলার।
১৯৯১ -(ক) ডিলান ও’ব্রায়েন, (আমেরিকান অভিনেতা)।
(খ) – আহমেদ দীপ্ত- সাংবাদিক, (লেখক)।
১৮৬৯ – দীনেন্দ্রকুমার রায়, (রহস্য কাহিনীকার ও সম্পাদক)।
১৮৭৩ – (মার্কিন বেতার ও টিভি উদ্ভাবক) ডি ফরেস্ট।
১৮৮০ – (ফরাসি কবি) গিইয়াম আপোলিন্যায়ার।
১৮৮৫ – (বিখ্যাত ফরাসী লেখক) জুলিয়াস রোমেইন্স।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
২০০৫ – বুরুন্ডির এনকুরুন জিজার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন।
২০০৬ – দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জি নামের একটি কোম্পানির কয়লা প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষের বিশাল সমাবেশে সেই সময়ের বিডিআর গুলি চালালে তিনজন নিহত হন। আহত হন দুই শতাধিক আন্দোলনকারী।
১৯১৪ – জার্মান উপনিবেশ টোগোল্যান্ড দখল করে ফ্রান্স ও ব্রিটেন।
১৯২০ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়।
১৯২৭ – ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কোম্পানি কলকাতায় প্রথম বেতার সম্প্রচার শুরু করে।
১৯৪৩ – আজাদ হিন্দ ফৌজ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়।
১৯৫৫ – সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র ‘ পথের পাঁচালীর’ মুক্তি লাভ করে।
১৯৭০ – সুদান সরকার সংবাদ পত্র শিল্পকে জাতীয়করণ করে।
১৮৮৩ – ইন্দোনেশিয়ায় ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতে ৩৬ হাজার লোকের মৃত্যু হয়।
১৭৬৮ – ক্যাপ্টেন জেমস কুক জাহাজ এইচএমএস এনডিভার নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে যাত্রা শুরু করেন।
১৭৮৯ – ফরাসি বিপ্লব বিজয়ের পর দেশটির সংসদ মানবাধিকারের ঘোষণাকে অনুমোদন করে।
১৩০৩ – আলাউদ্দিন খিলজি রাজস্থানের চিতোরগড় দখলে নেন।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৩ – বিমল কর,(ভারতীয় বাঙালি লেখক ও ঔপন্যাসিক)।
২০০৬ – সুবোধ রায় (স্বাধীনতা সংগ্রামী, কমিউনিস্ট নেতা ও কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিশিষ্ট গবেষক)।
২০২১ – গৌরী ঘোষ, (প্রখ্যাত বাঙালি বাচিক শিল্পী)।
১৯১০ – উইলিয়াম জেম্‌স, (মার্কিন অগ্রজ মনোবিজ্ঞানী ও দার্শনিক)।
১৯৩৪ – অতুলপ্রসাদ সেন, (বাঙালি কবি, গীতিকার এবং গায়ক) ।
১৯৬১ – চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য, (প্রখ্যাত অধ্যাপক ও লেখক )।
১৯৮২ – সুশোভন সরকার (প্রখ্যাত বাঙালি ঐতিহাসিক )।
১৯৮৮ – (প্রগতিবাদী নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব) মন্মথ রায়।
১৭২৩ – (অণুবীক্ষণ যন্ত্রের উদ্ভাবক ওলন্দাজ বিজ্ঞানী) আন্তেনি ভান লিউভেনহুক।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২৪ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।

আজ ২৪ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০৮ – শিবরাম রাজগুরু, (ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী)।
১৯১১ – বীণা দাস (ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী ও অগ্নিকন্যা)।
১৯২৮ – টমি ডোচার্টি, ( স্কটিশ ফুটবলার ও ফুটবল ম্যানেজার)।
১৯২৯ – ইয়াসির আরাফাত, (ফিলিস্তিনী নেতা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী)।  .
১৯৪৭ – অ্যান আর্চার, (মার্কিন অভিনেত্রী)।
১৯৫৯ – আদ্রিয়ান কুইপার, (দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার)।
১৯৬৫ – মার্লি ম্যাটলিন, (মার্কিন অভিনেত্রী, লেখিকা ও সমাজকর্মী)।
১৯৯১ – পুনম যাদব,( ভারতীয় প্রমীলা ক্রিকেটার)।
১৮০৮ – জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় (বাঙালি সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ)।
১৮৫১ – টম কেন্ডল, (অস্টেলীয় ক্রিকেটার)।
১৮৯৩ – কৃষ্ণচন্দ্র দে (বাংলাসঙ্গীতের আদি ও প্রবাদ পুরুষ, কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী)।
১৮৯৮ – অ্যালবার্ট ক্লুঁদে (নোবেলবিজয়ী বেলজিয়ান-আমেরিকান চিকিৎসক ও কোষ জীববিজ্ঞানী)।
১৮৯৯ – হোর্হে লুইস বোর্হেস, (আর্জেন্টিনীয় সাহিত্যিক)।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯০২ – জোয়ান অব আর্কের মূর্তি উন্মোচন করা হয় সেইন্ট পিয়েরে-লে-তে।
১৯১৩ – ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে এই দিনে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় পরস্পরকে আক্রমণ না করার।
১৯১৪ – প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বাহিনী নামুর দখল করে।
১৯২৯ – বায়তুল মোকাদ্দাসে নুদবা প্রাচীর আন্দোলন শুরু হয়।
১৯৪৪ – জার্মান থেকে প্যারিস মুক্ত।
১৯৪৯ – উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) গঠিত হয়।
১৯৬৬ – ভারতীয় সাঁতারু মিহির সেন জিব্রাল্টার প্রণালী অতিক্রম করেন।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় পানামা ও উরুগুয়ে।
১৯৭৪ – ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ ভারতের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি হন।
১৯৮৮- সাংবাদিক, সাহিত্যিক আবু জাফর শামসুদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৮৯ – ৪৫ বছরের কমিউনিস্ট শাসনের পর পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন তাদেউজ মাজোউইকি।
১৯৯১ – তুর্ক মেনিয়ার সার্বভৌমত্ব ঘোষণা।
১৯৯১ – পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৮১৪ – ব্রিটিশ সেনাদল ওয়াশিংটন ডিসি অধিকার করে এবং হোয়াইট হাউস জ্বালিয়ে দেয়।
১৮১৫ – নেদারল্যান্ডসের আধুনিক সংবিধান এই দিনে গৃহীত হয়।
১৮২১ – মেক্সিকো স্পেনের উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে ।
১৮৭৫ – ক্যাপ্টেন ম্যাথুওয়েব প্রথম ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন সাঁতার কেটে।
১৬০৮ – প্রথম সরকারিভাবে ইংলিশ প্রতিনিধি ভারতের সুরাতে আসেন।
১৬৯০ – ইংরেজ ব্যবসায়ী জব চার্নক সদলে সুতানুটিতে ইংল্যান্ডের জাতীয় পতাকা ওড়ান। দিনটিকে কলকাতা নগরীর পত্তন দিবস হিসেবে ধরা হয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৪ – আইভি রহমান, (বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী)।
২০১৩ – নিউটন ডি সর্দি, (ব্রাজিলীয় ফুটবলার।)
২০১৪ – রিচার্ড অ্যাটনবারা (ইংরেজ চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক)।
১৯২৭ -( মিশরের জাতীয় নেতা) সাদ জগলুল পাশা।
১৯৫০ – আর্তুরো আলেস্‌সান্দ্রি, (চিলির রাষ্ট্রপতি)।
১৯৫৪ – (ব্রাজিলিয়ান স্বৈরশাসক) গেতুলিও বার্গাস।
১৯৫৬ – কেনজি মিজোগুচি, (জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার)।
১৯৬৮ – সিরিল ভিনসেন্ট, (দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার)।
১৯৮৮ – লিওনার্ড ফ্রে, (মার্কিন অভিনেতা)।
১৮৯৪ – (প্রথম বাঙালী স্থপতি) নীলমণি মিত্র।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

ত্রিলোকনাথ; তুমি আছ বিশ্বনাথ অসীম রহস্যমাঝে : শীলা পাল।।।।।।।

অনেক অনেকবছর আগে প্রায় চল্লিশ বছর তো হবেই ।তখন লাহুল স্পিতি উপত্যকা আমাদের কাছে একটা রহস্যময় অচেনা জগতের মতো ছিল।তবু ভবঘুরে মন আর পায়ের তলায় সরষে ।তাই বছরের কোনও না কোনও সময়ে হিমালয়ের ডাক কানে এসে পৌঁছতো আর আমরা ছয়জনের যে দলটি লোটা কম্বল নিয়ে  সব সময় রেডি থাকতাম বেরিয়ে পড়তাম।সেই বছর ত্রিলোকনাথ যেন আমাদের ডাক পাঠালেন।ব্যাস আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল।সেপ্টেম্বর মাস এমনিতেই বাতাসে শারদীয়ার সুর
আমরা চললাম মানালির উদ্দেশ্যে ।ওখান থেকেই যাত্রা শুরু করতে হবে।সেই সময়ের মানালি যেন কুমারী সুন্দরী।কী তার রূপ সবুজে শ্যামলে পাহাড়ে নদীতে যেন রূপসী অপ্সরা।আর তেমন পথঘাট সেইরকম সুন্দর ওখানকার লোকজন ।চোখফেরানো যায় না এমন সব রমণীয় রমণীদের পথে ঘাটে দেখি আর বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি।আমাদের একসঙ্গী সবে কলেজে ঢুকেছে তার চোখে ঘোর ।ওকে নিয়ে কি মজাটাই করেছি আমরা দুই সখী স্বপ্না আর আমি।বিপাশার কলকল ধ্বনি প্রথম দিনেই আমাদের মন জয় করে নিল।কীভীষন ভালো লাগায় মন ভরে গেল যেন।প্রাথমিক কিছু রসদ কেনাকাটা করা হল।চাল ডাল ফল সব্জি ইত্যাদি এটা আমাদের পাহাড়ি পথে সবসময়ই মজুত রাখা হয়।অভ্যাস অনেক রকম অভিজ্ঞ।তা থেকে বুঝেছি এটা সঙ্গে থাকলে রাস্তাতেও দিন কাটানো যায় ।পাহাড়ের রাস্তা বড়ই খতরনক ।মানালী থেকে বাস ছাড়লো সকাল আটটায় ।বিপাশাকে বাঁয়ে রেখে যাত্রা শুরু ।পাহাড়ি পথে পাক খেতে খেতে বাস এগিয়ে চলে।উৎসুক মন কখন রোটাংপাস দেখবো।ভয়ংকর রোটাং  হিমশীতল রোটাং।কিন্তু রোটাংপাস এ পৌঁছে মন ভরলো না।রিক্ত রুক্ষ কঠোর কেমন যেন সর্বস্ব হারা রূপ ।রোটাংপাস থেকে অনেকটা পথ নেমে প্রায় বারোটার সময় এসে পৌঁছলাম চন্দ্র নদীর তীরে খোকসারে।এখানে হিমালয় যেন গৈরিক সন্ন্যাসী ।ভাবগম্ভীর প্রশান্তিময় মৌন গিরিরাজ।
খোকসার থেকে রাস্তা দু ভাগে ভাগ হয়ে গেছে ।একটি চন্দ্র নদীর উৎস অভিমুখে অন্য টি আমরা যে পথে যাবো ত্রিলোকনাথ এর দিকে যে পথে আমরা যাবো।
খোকসারের প্রণাম জনপদ শিশু।শিশু নামের বিশেষত্ব ছড়ানো আছে পাহাড়ের গায়ে গায়ে ।কোন্ অদৃশ্য নিপুন হাতে রোপিত অজস্র শিশুগাছের শ্যামল বনানী ।বাস রাস্তার নীচে র দিকে অনেক বর্ধিষ্ণু পাহাড়ি গ্রাম ।ক্ষেতে ক্ষেতে সর্বত্র ই ফসল তোলার সাড়া ।আসন্ন শীতের জন্য এই তোড়জোড় ।শীত এদের কাছে বিভীষিকা ।তাই চাষবাস পশুপালন শীতের আগেই সঞ্চয় করার অভ্যাস বা রীতি নিয়ম সবকিছু ।ছোট ছোট অনেক জনপদ পেরিয়ে বেলা তিনটে নাগাদ এসে পৌঁছলাম তান্ডি তে।এখানে  ভাগা নদী মিলিত হয়েছে চন্দ্র নাম হয়েছে চন্দ্রভাগা।নদীর জল ঘন নীল ।পুরো রাস্তা টাই কাঁচা তান্ডি থেকে।সংকীর্ণ এবড়োখেবড়ো পথ তার মধ্যে ই বড়বড় লরি চলাচল করছে।বেশ ভয়ে ভয়ে এই রাস্তা পার হয়েছি ।থিরোট হুয়ে কীর্তিং প্রায় পাঁচটা নাগাদ এসে পৌঁছলাম ।রাস্তার ওপরেই লোকালয় ।জায়গা টি বেশ জনবহুল ।সামনেই চা আর পকৌড়ার দোকান।গোবিন্দ চেঁচিয়ে উঠল ফুলকাকা সামনেই চা আর পাকৌড়া নামুন  নামুন ।আমরা সবাই হুড়মুড়িয়ে বাস থেকে নামলাম। উফ্ একটানা বাসের গোঁ গোঁ আওয়াজ মাথা যেন কাজ করছে না ।মুক্ত হাওয়ায় চা টা খেয়ে বেশ ভালো লাগছে।এমন সময়  মি ঠাকুর নামে এক ভদ্রলোক পাশেই তার বাড়ি আমাদের ডাকলেন নিজের হাতে আপেল পাড়ার জন্য ।কী অপূর্ব তার বাগান।ওইটুকু সময়ের মধ্যে তাঁর বাড়ি বাগান ঘুরে এত্তো আপেল নিয়ে বাসে উঠলাম ।কি খুশী ওনার চোখে মুখে ।এরকম আন্তরিক মধুর ব্যবহার আমাদের চিরদিন মনে থাকবে।চলার পথে এগুলো ই পাথেয় ।সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ধূলিধূসরিত আমরা এসে হাজির হলাম চন্দ্র ভাগা উপত্যকার উদয়পুরে।রাস্তার ওপরেই পি ডব্লিউ ডির সুন্দর সাজানো বাংলো।জায়গাটা যেমন সুন্দর তেমনি নির্জন ।সামনেই চন্দ্র ভাগা চাঁদের আলোয় ঝলমল করছে ।মনোরম এই পরিবেশ আমাদের সব ক্লান্তি কোথায় মিলিয়ে গেল।স্বপ্না কি সুন্দর করে গাইল -পূর্ণ চাঁদের মায়ায় আজি ভাবনা আমার পথ ভোলে ।সব অবসাদ মুহূর্তে মুছে গেল ।
পরের দিন সকালে ত্রিলোকনাথ দর্শন ।উদয়পুর থেকে প্রায়  নয় কিলোমিটার ।ভোরের পাহাড় যে কি স্নিগ্ধ হয় মনে যেন কি শাস্তি আসে।চন্দ্রভাগার উপর সেতু পার হয়ে শুরু পাহাড়ি পাকদণ্ডি পথ।সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে মনে হল যেন তুষার শৃঙ্গের মুকুট পরে চন্দ্রভাগা উপত্যকা যেন তার সমস্ত সৌন্দর্য মেলে ধরেছে।একটা সরু নালার পাশ দিয়ে খুব পিচ্ছিল ভাঙাচোরা পথ।মাঝে মাঝে চড়াই ভেঙে দু তিনটে ছোট ছোট পাহাড় পেরিয়ে হঠাৎ দূর থেকে দেখতে পেলাম আমাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত ত্রিলোকনাথ মন্দির ।জায়গাটির নাম ত্রিলোকনাথ ।পাহাড়ের মাথায় জনবসতির একপাশে দেবালয় ।এখানে দেবতা রুদ্ধ দ্বারে বসে নেই একান্ত আপনজনের মতো সকলের সাথে মিশে রয়েছেন।মন্দির প্রাঙ্গণে দেখা হল এখানকার অধিবাসীদের সাথে।পরদেশি দেখে সবাই  ভীড় করে এলো।কি হাসিখুশি সহজ সরল মানুষ গুলি মন্দিরের সামনেরঅংশটি ভেঙে গেছে।তিব্বতি ধাঁচের  মন্দির ।ভাঙা অংশ টি পেরিয়ে আমরা জুতো মোজা খুলে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করলাম ।অসংখ্য প্রদীপের আলোয় মন্দির আলোকিত ।মৌণ মন্দির অভ্যন্তরে পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত কয়েক জন পাহাড়ি মেয়ে।এখানে সকলেই বৌদ্ধধর্মালম্বী।বুদ্ধকে স্মরণ করেই ত্রিলোকনাথ দেবের পুজো নিবেদিত হয়।ত্রিলোকনাথের মাহাত্ম্য এবং কিংবদন্তী অনেক  আছে।এই মুর্তিটি  অনেকবার চুরি করার চেষ্টা করা হয়েছে ।একবার কুলুর রাজা সেনা পাঠিয়ে বিগ্রহ তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু কিছুতেই পারেন নি।এখনও নাকি মুর্তিটির ডান পায়ের নীচে তরোয়ালের দাগ দেখা যায় ।আমরা পুজো দেওয়ার জন্য পুরোহিতের খোঁজ করতে জানলাম উনি বাইরে আছেন ।পুরোহিতের ছেলে আমাদের পুজো নেবে।অর্ঘ্য  তো সামান্য ।কিছু ধূপের বান্ডিল আর নতুন কাপড়ের টুকরো।ভগবান বুদ্ধের চরণে এই সামান্য ডালি নিবেদন করে ডক্তিভরে সবাই  প্রণাম করলাম ।তারপর পুরোহিতের কানে কানে আমাদের মনোবাঞ্ছা জানালাম ।আমরা এক বিখ্যাত হিমালয়প্রেমীর কাছে যা জেনেছিলাম ।পুরোহিত একবার চকিতে চারিদিক দেখে নিল।মন্দির পুরো ফাঁকা ।ইসারায় আমাদের একদম বিগ্রহের সামনে নিয়ে গেল।অজস্র পাথর মনি মুক্তোর মালা তুলে উন্মোচন করলো পুরো মুর্তিখানি।কোথায় গেল সেই সৌম্য শান্ত বুদ্ধ এ যে ভুবন ভোলানো নৃত্যরত নটরাজ! এমন সৌম্য রূপের সঙ্গে সংহার রূপের মিলন ।আমরা বিমোহিত হতবাক।প্রতিটি আঙুলের মুদ্রা আর ভঙ্গিমা  এতো ছন্দময় এতো প্রাণবন্ত যেন স্বয়ং নটরাজ নৃত্যরত বালকের মতো আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছেন ।ধন্য আমরা।ধন্য আমাদের ত্রিলোকনাথ দর্শন ।জয় ত্রিলোকনাথ ।তুমি আছ বিশ্বনাথ অসীম রহস্য মাঝে।
একরাশ আনন্দ নিয়ে ফিরে এলাম উদয়পুর ।বেলা একটা নাগাদ ।চাল ডাল সামনের চায়ের  দোকানে দিয়ে সুন্দর খিচুড়ি আর ওখানকার সুস্বাদু আলু ভাজি আমাদের দুর্দান্ত লাঞ্চ হয়ে গেল।কিছুক্ষণ এখানকার লোকজনদের সঙ্গে গল্প গুজব  করে বিশ্রাম  নিতে গেলাম বাংলোর ভিতর ।
পরের  দিন ভোরে মানালি ফেরা।সবাই খুব হৈ হৈ  করে দিনটা কাটালাম।তখনও বুঝি নি এই  অপূর্ব চাঁদের আলো এই উচ্ছল সন্ধ্যা গানে গানে মুখরিত রাত্রি ঢেকে যাবে কালোমেঘে।মাঝ রাতে শুনি বাইরে তান্ডবলীলা ।এমনিতেই এখানে প্রচন্ড ঠান্ডা হঠাৎ যেন দশগুণ বেড়ে গেল।সারারাত কম্বলের তলায় ঠকঠক করে কেঁপেছি আর ফেরার কথা ভেবে আকুল হয়েছি ।ভোরবেলায় উঠে দেখি প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়েছে ।আর উত্তুরে হাওয়া যেন সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেবে।একরাতের মধ্যে সামনের পাহাড় গুলো মুহূর্তে বরফে ঢেকে গেছে।বাস আসতেই উঠে বসলাম ।সব যাত্রীদের মুখে এক কথা এভাবে বরফ পড়তে থাকলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে ।রাহুল ও মানালির একমাত্র সংযোগ স্থল রোটাংপাস যদি বন্ধ হয়ে যায় আমরা এখানেই বন্দী হয়ে যাবো।বাস একটু একটু করে যায় আর থেমে যায় ।জিজ্ঞেস করলে ড্রাইভার বলে ডিজেল ফাঁস গিয়া।প্রচন্ড ঠান্ডাতে ডিজেল জমে যাচ্ছে । বাসের মধ্যে সবাই চুপচাপ বসে আছি।এত দুর্ভাবনার মধ্যে ও বাইরের দিকে তাকিয়ে অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সব ভুলে গেলাম ।কি হবে কি হতে পারে সব ভাবনা ভুলে দেখতে থাকি আকাশ থেকে ঝরে পড়া যেন মুঠো মুঠো শ্বেত টগরের পাপড়ির মতো তুষার বৃষ্টি ।আর চারিদিক সাদায় সাদা।ডিজেল ফাঁসতে ফাঁসতে অবশেষে বিকেল বেলা খোকসার এসে পৌঁছলাম ।চারিদিক অন্ধকার ।এরকম দুর্যোগে কোনও গাড়ি আর যেতে চাইছে না।সব লরি বাস বন্ধ ।আজ এখানেই রাত্রি বাস।স্থানীয় লোকজন বলছে এরকম আবহাওয়া চলতে থাকলে রোটাংপাস বন্ধ হয়ে যাবে।ছ দিন কি ছ মাস  কেউ বলতে পারবে না।উৎকন্ঠিত চিত্তে পি ডব্লিউ ডির  রেস্ট হাউসে রাত কাটানোর জন্য হাজির হলাম ।সেদিনের মতো পোড়া আলু আর পোড়া রুটি  ডিনারের জন্য চায়ের দোকানে পাওয়া গেল।এরপরে কি হবে জানা নেই।এর মধ্যে ই মলয় বললো কি আর হবে দিদি তোর মেয়েটা বড় হয়ে যাবে আর কাকীমার তোমার ছেলে এক ক্লাস এগিয়ে যাবে ।আর যত দিন কাফ সিরাপ আছে রুটি দিয়ে গুড়ের মত খেয়ে নেব।কি চিন্তা আমাদের ।উফ্ কি ছেলে রে বাবা ।আমরা একমনে বাবা ত্রিলোকনাথ কে ডেকে যাচ্ছি  আর প্রার্থনা করছি রক্ষা করো বাবা।রাত্রি নটার পর ঝড়ের বেগ একটু কমে গেল।বৃষ্টির আওয়াজ ও যেন কমেছে মনে হল।একটু রাতে হঠাৎ যেন কাঁচের জানালার ফাঁকে এক ঝলক আলো এসে পড়লো ।হৈ হৈ করে বারান্দায় বেরিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দেখি পরিপূর্ণ জ্যোৎস্নায় তুষারাবৃত হিমালয় স্নান করছে।অবর্ণনীয় সেই আলো সেই সৌন্দর্য ।আলোর ঝর্ণা ধারায় আনন্দে চোখে জল এসে গেল।মলয় আনন্দের চোটে গান গাওয়া শুরু করল–প্রেমের জোয়ারে ভাসাব দোঁহারে বাঁধন খুলে দাও দাও দাও যতো হাসি আর বলি ওরে এ যে  শ্যামার গান  প্রেমের গান কে কার কথা শোনে হাসতে হাসতে আমরা বাঁধন খোলার আনন্দে ভেসে গেলাম ।পরদিন বেলা দশটা নাগাদ বাস ছাড়লো।বরফ কেটে কেটে মন্থর গতিতে সন্ধ্যা সাতটায় রোটাং পাসের ভয়ানক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখন যেন মানালি এসে গেলাম ।একশ আশি কিলোমিটার শুধু সাদা দেখে দেখে সবুজের ছোঁয়ায় মন ভরে গেলো।জয় ত্রিলোকনাথ ।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২৩ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।।।

আজ ২৩ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) আন্তর্জাতিক দাস প্রথা বিলোপ দিবস৷
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০৮ – রুশ-ফরাসি নাট্যকার আর্থার আদমভ।
১৯১৮ – ভারতীয় পদার্থবিদ ও আবহাওয়াবিজ্ঞানী আন্না মনি।
১৯২৩ – এডগার কড, ইংরেজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
১৯৩১ – নোবেলজয়ী [১৯৭৮] মার্কিন অণুজীববিজ্ঞানী হ্যামিলটন ও থানেল স্মিথ।
১৯৬৮ – ভারতীয় নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী, কে কে নামে সুপরিচিত কৃষ্ণকুমার কুন্নথ।
১৯৭৮ – কোবি ব্রায়ান্ট, প্রখ্যাত মার্কিন বাস্কেটবল খেলোয়াড়।
১৮৫২ -রাধাগোবিন্দ কর ব্রিটিশ ভারতের একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ।
১৭৪০ – রুশ সম্রাট ষষ্ঠ আইভান।
১৭৭৩ – জার্মান দার্শনিক জ্যাকব এফ ফ্রাইস।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
২০০৭ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবস নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে সেনাবাহিনী ও পুলিশের আক্রমণের প্রতিবাদে এ দিনটি কালো দিবস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
২০১৬ – ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কলকাতার রাজভবনে আকাশবাণী মৈত্রী চ্যানেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
১৯১৪ – জাপান জার্মানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯২১ – প্রথম ফয়সাল ইরাকের বাদশা পদে অভিষিক্ত হন।
১৯২৫ – বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৩৯ – হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানী এবং ষ্ট্যালিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৪২ – স্তালিনগ্রাদের ঐতিহাসিক যুদ্ধ শুরু হয়।
১৯৪৪ – রুমানিয়ার সামরিক শাসক উৎখাত।
১৯৬২ – বাংলাদেশে প্রথম প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
১৯৭৩ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় আইভরি কোস্ট।
১৯৮৬ – পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য মস্কো ওয়াশিংটন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়
১৯৯১ – (ক) “ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন” প্রতিষ্ঠিত হয়।
(খ) – রুশ প্রজাতন্ত্রে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করেন।
(গ) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাসাদ ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয় এবং গর্বাচেভ পুনরায় ক্ষমতা ফিরে পান।
১৮২১ – মেক্সিকো স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
১৮২৫ – বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৩৩ – ব্রিটেন তার উপনিবেশগুলোতে ক্রীতদাস প্রথা বাতিল করে। ফলে ৭০ লাখ ক্রীতদাস মুক্ত হয়।
১৮৩৯ – ব্রিটেন চীনের কাছ থেকে হংকং দখল করে নেয়।
১৮৬৬ – প্রুশিয়া এবং অষ্ট্রিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক প্রাগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৮৭৫ – বাংলার প্রথম অভিনেত্রী-নাট্যকার গোলাপের সুকুমারী দত্ত সাহায্যার্থে তার রচিত ‘অপূর্ব সতি’ মঞ্চস্থ হয়। এটিই বাংলার প্রথম ফিল্মী-সহায়তা অভিনয় রজনী।
১৭৯৯ – নেপোলিয়ন মিসর ত্যাগ করে ফ্রান্সের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
১৬১৭ – লন্ডনে প্রথম ওয়ানওয়ে রাস্তা চালু হয়।
১৩২৮ – ফ্রান্সের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ সিংহাসনে অভিষিক্ত হন।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০১৮ – প্রথিতযশা প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার।
২০১৯ – (ক) অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।
(খ) কারী আব্দুল গণী, বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত ও কারী।
১৯৪৪ – দ্বিতীয় আবদুল মজিদ, সর্বশেষ উসমানীয় খলিফা।
১৯৭৫ – অমল হোম, বাঙালি সাংবাদিক এবং সাহিত্যিক।
১৯৮৭ – সমর সেন, ভারতীয় বাঙালি কবি এবং সাংবাদিক।
১৮০৬ – চার্লস অগাস্টিন কুলম্ব, ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী।
১৮৮৬ – পণ্ডিত দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং সমাজসেবক।
৬৩৪ – ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২২ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।

আজ ২২ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) মাদ্রাজ (চেন্নাই) দিবস, ভারত।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০২ – লিনি রিয়েফেন্সটাহল, জার্মান অভিনেত্রী ও পরিচালক।
১৯০৯ – জুলিয়াস জে. এপস্টাইন,মার্কিন চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক।
১৯১১ – দেবব্রত বিশ্বাস, স্বনামধন্য ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়ক ও শিক্ষক।
১৯১৫ – শম্ভু মিত্র,বাংলা তথা ভারতীয় নাট্যজগতের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব ।
১৯২০ – রে ব্যাডবেরি, মার্কিন লেখক ও চিত্রনাট্যকার।
১৯৩৯ – ভালেরি হারপার, মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়ক।
১৯৫৫ – চিরঞ্জীবি, ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক ও রাজনীতিবিদ।
১৯৫৮ – মুকুল চৌধুরী,বাংলাদেশী কবি ও গীতিকার।
১৯৬০- ফজলুর রহমান বাবু , একজন বাংলাদেশী অভিনেতা এবং সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৬৩ – টোরি আমস, মার্কিন গায়ক, গীতিকার, পিয়ানোবাদক ও প্রযোজক।
১৯৭১- কে এম মোশাররফ করিম, একজন বাংলাদেশী অভিনেতা।
১৯৭১ – রিচার্ড আরমিটাগে, ইংরেজ অভিনেতা।
১৯৮৫- রুমানা রশীদ ঈশিতা , বাংলাদেশের একজন টেলিভিশন অভিনেত্রী, পরিচালিকা এবং লেখিকা।
১৯৯১ – ফেদেরিকো মাচেডা, ইতালীয় ফুটবলার।
১৮৬২ – ক্লাউড ডেবুসয়,ফরাসি সুরকার।
১৮৭৪ – মাক্স সচেলের,জার্মান দার্শনিক ও লেখক।
১৮৭৭ – এ কে কুমারস্বামীর,সিংহলী শিল্পী।
১৮৯৪ – প্রগতিবাদী লেখক ও প্রতিষ্ঠাবান কবিরাজ রমেশচন্দ্র সেন।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯১০ – জাপান কোরিয়াকে চুক্তির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করে নেয় ও এভাবে চলতে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত।
১৯৩২ – বিবিসি প্রথম নিয়মিত টিভি সম্প্রচার শুরু করে।
১৯৪২ – ব্রাজিল জার্মানি ও ইতালির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৪২ – জার্মান নাৎসি বাহিনী স্তালিনগ্রাদে অবরোধ করে।
১৯৪৪ – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন রোমানিয়া দখল করে।
১৯৮৯: নেপচুন গ্রহে প্রথম বলয় দেখতে পাওয়া যায়।
১৬৪২ – ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু।
১৬৯৮ – সুইডেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া, ডেনমার্ক ও পোল্যান্ডের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০০ – অরুণ মিত্র বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রথিতযশা কবি ও ফরাসি ভাষা ও খ্যাতনামা অধ্যাপক ও অনুবাদক।
২০০৫ – সংগীত,নৃত্য ও অভিনয়ে পারদর্শিনী অমিতা সেন (আশ্রমকন্যা)
২০১৩ – আন্ড্রেয়া শেরভি, ইতালীয় ফুটবল খেলোয়াড়।
২০১৫ – আর্থার মরিস, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।
১৯০৪ – কেট ছপিন, মার্কিন লেখক।
১৯২২ – মাইকেল কলিন্স, আইরিশ রাজনীতিবিদ ও ২য় মন্ত্রী।
১৯৫৮ – রজার মারটিন ডু গার্ড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি লেখক।
১৯৭৭ – সেবাস্টিয়ান কাবট, ইংরেজ বংশোদ্ভূত কানাডীয় অভিনেতা ও গায়ক।
১৯৭৮ – কেনিয়ার নেতা জোমো কেনিয়াত্তা।
১৯৮২ – একনাথ রানাডে, ভারতের এক সমাজ সংস্কারক এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সংগঠক।
১৮১৮ – ওয়ারেন হেস্টিংস, ভারতের ব্রিটিশ গভর্নর জেনেরেল।
১৮৫০ – নিকোলাস লেনাউ, রোমানীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রীয় কবি।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

আরতি গুপ্ত : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক সাহসী নারী বিপ্লবী।

ভূমিকা:- ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে নারী বিপ্লবীদের অবদান আজও অনেকাংশে অপ্রকাশিত থেকে গেছে। তাঁদের জীবন ও সংগ্রাম কেবলমাত্র রাজনৈতিক স্বাধিকার অর্জনের জন্যই ছিল না, বরং তা ছিল আত্মমর্যাদা, জাতীয়তাবোধ এবং সামাজিক পরিবর্তনের এক অদম্য প্রয়াস। আরতি গুপ্ত ছিলেন সেই ধরনেরই এক সাহসী নারী, যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছিলেন। যদিও তাঁর নাম হয়তো অনেকের কাছে অপরিচিত, তবু তাঁর কর্মজীবন, সংগ্রামী মানসিকতা এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অমূল্য সম্পদ।

শৈশব ও পারিবারিক পটভূমি

আরতি গুপ্ত জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে (প্রায় ১৯১০–১৯১৫ সালের মধ্যে) তৎকালীন বেঙ্গল প্রদেশের (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের) একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারে। তাঁর পিতা ছিলেন এক সুপরিচিত শিক্ষাবিদ ও সামাজিক কর্মী, যিনি জাতীয়তাবাদী চিন্তায় বিশ্বাসী ছিলেন। মা ছিলেন শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা নারী, যিনি আরতিকে ছোট থেকেই দেশপ্রেমের গল্প শুনিয়ে বড় করেছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই আরতি সংস্কৃত ও বাংলা সাহিত্যে গভীর আগ্রহী ছিলেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি নাটক, আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান গাওয়ায় দক্ষ ছিলেন।

শিক্ষাজীবন ও রাজনৈতিক প্রেরণা

আরতির স্কুলজীবন কেটেছে কলকাতার একটি গার্লস’ স্কুলে। সেখানেই তিনি প্রথম গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিপ্লবী কার্যকলাপ এবং বাঘা যতীনের মতো বীরদের গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হন।
কিশোরী বয়সেই তিনি যুগান্তর দল ও অগ্নিবীণা সমিতি-এর মতো বিপ্লবী সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট হন। তাঁর এক সহপাঠিনীর মাধ্যমে তিনি গোপনে বিপ্লবী সাহিত্য পড়া শুরু করেন এবং অস্ত্র সংগ্রহ, গোপন বার্তা আদানপ্রদান ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন।

বিপ্লবী জীবনের সূচনা

আরতি গুপ্ত প্রথম সক্রিয় ভূমিকা নেন ১৯৩০ সালে সিভিল ডিসওবিডিয়েন্স মুভমেন্ট বা নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলনের সময়। তখন তিনি মাত্র কুড়ি বছরের এক তরুণী। কলকাতায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ মিছিলে তিনি সরাসরি অংশ নেন এবং পুলিশি লাঠিচার্জের মুখে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশবিরোধী স্লোগান দেন।
এই সময় তিনি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স ও মহিলা আত্মরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিপ্লবীদের জন্য গোপন আশ্রয়, অস্ত্র পরিবহন এবং গোপন নথি লুকিয়ে রাখার কাজে ভূমিকা রাখেন।

উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড

১. অস্ত্র পরিবহন অভিযান

১৯৩২ সালে বেঙ্গলে ব্রিটিশ পুলিশ যখন বিপ্লবী সংগঠনগুলোর উপর দমননীতি চালায়, তখন আরতি গুপ্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিশনে অংশ নেন। তাঁকে কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত একটি রিভলভার ও কয়েক ডজন কার্তুজ পৌঁছে দিতে হয়। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে তিনি গৃহবধূর ছদ্মবেশ নেন এবং নিজের শাড়ির আঁচলে অস্ত্র লুকিয়ে সফলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেন।

২. জেলবন্দী বিপ্লবীদের সহায়তা

ব্রিটিশ সরকার বহু বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠালে, আরতি তাঁদের পরিবারের জন্য অর্থ সংগ্রহ ও চিঠি-পত্র পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মহিলা কমিটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন।

৩. প্রচারণা ও নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি

তিনি বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীর ভূমিকা অপরিহার্য। তাই তিনি কলকাতা ও হাওড়া অঞ্চলে গোপন বৈঠক আয়োজন করে তরুণীদের বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন।

গ্রেপ্তার ও কারাবাস

১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ পুলিশ একটি অস্ত্র চক্রের খোঁজ পেয়ে বেশ কয়েকজন বিপ্লবীর সঙ্গে আরতি গুপ্তকেও গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে “ব্রিটিশবিরোধী ষড়যন্ত্র” ও “অস্ত্র আইন ভঙ্গ” করার অভিযোগ আনা হয়।
জেল জীবনে আরতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। কিন্তু তিনি কখনও সহযোদ্ধাদের নাম প্রকাশ করেননি। তাঁর দৃঢ়তা দেখে অনেক জেলবন্দী নারী অনুপ্রাণিত হন। প্রায় ১৮ মাস কারাবাসের পর তিনি মুক্তি পান, তবে ব্রিটিশ সরকার তাঁর উপর নজরদারি চালিয়ে যায়।

স্বাধীনতার পর জীবন

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর আরতি গুপ্ত সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি সামাজিক ও শিক্ষামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। বিশেষ করে গ্রামীণ নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও স্বনির্ভরতা বৃদ্ধিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি কলকাতায় একটি মহিলা শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে নারীদের সাক্ষরতা শিক্ষা, সেলাই, হস্তশিল্প ও প্রাথমিক চিকিৎসা শেখানো হতো।

ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ

আরতি গুপ্ত ছিলেন এক দৃঢ়চেতা, সাহসী ও ত্যাগী নারী। তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র ছিল— “দেশ আগে, নিজের জীবন পরে”। তিনি কখনও খ্যাতি বা পুরস্কারের জন্য সংগ্রাম করেননি, বরং নীরবে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।

উত্তরাধিকার

যদিও তাঁর নাম ভারতের মূলধারার ইতিহাস বইয়ে তেমনভাবে উল্লেখিত নয়, তবুও স্থানীয় পর্যায়ে ও বিপ্লবীদের স্মৃতিচারণায় তাঁর অবদান আজও সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করা হয়। অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবার তাঁকে “আরতি দি” নামে ডাকতেন।

উপসংহার

আরতি গুপ্তের জীবন আমাদের শেখায় যে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুধু সামনের সারির নেতাদের দ্বারাই সম্ভব হয়নি; অসংখ্য অজানা নারী-পুরুষ গোপনে, নিঃস্বার্থভাবে, জীবন বাজি রেখে সেই সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন।
তাঁদের আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে। আজকের দিনে যখন জাতীয়তাবোধ প্রায়শই রাজনৈতিক স্লোগানে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে, তখন আরতি গুপ্তের মতো মানুষদের জীবনের শিক্ষা আমাদের আবার মনে করিয়ে দেয়— “সত্যিকার দেশপ্রেম মানে ত্যাগ, সততা ও নীরব সংগ্রাম”।

Share This